#অদৃষ্টে_তুমি_আমি
#পর্ব_২
#লেখিকা_সিনথীয়া
স্বাধীনের কথায় একেবারে থমকে চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো পৃথা। আক্ষি যুগল একে অপরের মাঝে আবদ্ধ। মুখ পুরোপুরি বন্ধ। কি বলবে?
স্বাধীন সময় নিল। আল্তো হাতে পৃথার চেহারার ওপরে পরে থাকা অল্প চুলের গোছা সরিয়ে দিল। তারপর হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে নরম ভাবে ছুয়ে দিল ওর গাল। সাথে সাথে কেঁপে উঠলো পৃথা। সচল হয়ে গেল ওর শরীর। স্বাধীনের বাধন থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা শুরু করলো। কিন্তু ছাড়লোনা ওকে স্বাধীন, চোখে দুষ্টুমির দৃষ্টি নিয়েই জড়িয়ে রাখলো ওকে। এতোক্ষণে পৃথার চেহারায় রাগ ফুটে উঠেছে,
– ছাড়ো আমাকে।
মুচকি হাসলো স্বাধীন, অর্ধাঙ্গিনী তার নিজের রুপে ফিরেছে বলে,
– মমমহম! তুমি জানো তোমাকে একবার ধরলে আমি সহজে ছাড়ি না। কখনোই ছাড়িনি। ভুলে গেছ?
– দেখ, আমি এখানে কোনো তামাশা চাচ্ছি না। বাইরে মানুষ আছে অনেক। এভাবে কেউ দেখে ফেলতে পারে।
– তো দেখলে সমস্যা কি? নিজের স্ত্রীকেই তো ধরছি, পরনারী কে তো আর না।
পৃথা এই কথায় আরও রেগে গেল। তবে ও বেশী রেগে গেলে ওর মুখ দিয়ে কথা বের হয় না। এখনো তাই হলো। চুপ হয়ে গেল পৃথা। স্বাধীন পৃথার এই চরিত্র জানে। তাই কিছুক্ষণ পরে ঠোটে দুষ্টু একটা হাসি মেখে ছেড়ে দিল ওকে। ছাড়া পাওয়ার সাথে সাথে ফুশতে লাগলো পৃথা। রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো স্বাধীনের দিকে কিছুক্ষণ। স্বাধীনও ওর দিকে তাকিয়ে সেই হাসিটাই দিয়ে আছে। এটা দেখে পৃথার আরও গা জ্বলে উঠলো।
– হুহ্!
এই বলে গট্ গট্ করে রুম থেকে বের হয়ে গেল পৃথা। পেছনে রেখে গেল হাসতে থাকা স্বাধীনকে।
———————-
নিজের ডিপার্টমেন্টে সোজা গেল না পৃথা। এমন রাগী চেহারা নিয়ে ঢোকাটা ঠিক হবে না। তবে এখন শান্তও হতে পারবে না ও। রাগে, কষ্টে গা জ্বলছে। তাই তাড়াতাড়ি রেস্টরুমের দিকে ও পা বাড়ালো।
রেস্টরুমের দরজা লক করে বেসিনের সামনে গেল পৃথা। কল খুলে পানি ছিটালো মুখে। যেন বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার চেষ্টা চলছে। কারণ এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে স্বাধীন ওর সামনে এসে দাড়িয়েছে। কপাল টান টান করে রাগ ঝারলো,
– এতদিন পর এসেছে স্বামী হওয়ার অধিকার জমাতে? রাগে গা কিরকির করছে আমার!
কল বন্ধ করে পৃথা। ব্রিদিং এক্সারসাইজ করে কিছুক্ষণ। কাজ হয় তাতে। আস্তে আস্তে ওর রাগ নামছে। শেষে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো ও। হ্যা, স্বাধীন আজ ওর সামনে এসেছে। এতবছর পর….
আয়নার দিকে তাকিয়ে পৃথা দেখলো ওর স্মৃতির পাতা খুলতে । আস্তে আস্তে হারিয়ে গেল ও সেটায়।
পৃথার দাদা, আবদুল্লাহ্ চৌধুরী আর স্বাধীনের দাদা মনসুর হাসান ছিলেন ছোটবেলার বন্ধু এবং প্রতিবেশী। একসাথে বেড়ে ওঠা এই দুই বন্ধুর খুব শখ ছিল তাদের বন্ধুত্বকে আরও পাকাপোক্ত করবে। ইচ্ছে ছিল, যার আগে ছেলে হবে আর যার পরে মেয়ে হবে, ওদের বিয়ে দিবেন তারা। সম্মন্ধি হয়ে যাবেন। তবে ভাগ্য তা হতে দেয়নি। আবদুল্লাহ্ চৌধুরীর ঘরে আসলো প্রথমে মেয়ে তারপরে মনসুর হাসান ছেলের বাবা হলেন। পরে চৌধুরী সাহেবের একটা ছেলে হলো। আর মনসুর সাহেবের ঘরেও ছেলে হলো আরও দুজন। হিসাবে কিছুই মিললো না। তাই নিজেদের ইচ্ছা নিজেদের ছেলেমেয়েদের দিয়ে ওনারা পূরণ করতে পারলেন না। তবে যখন মনসুর সাহেবের বড় ছেলের ঘরে ছেলে অর্থাৎ স্বাধীন হলো এবং তার পাঁচ বছর পর আবদুল্লাহ সাহেবের ছেলের ঘরে মেয়ে আসলো পৃথার রুপে তখন তাদের মনের সেই আশা পূরণ করতে দুই বন্ধুই আবার উঠে পড়ে লাগলেন। দুই পরিবারকে একসাথে করে এ বিষয়ে কথা বললেন তারা। জানালেন যে তারা স্বাধীন আর পৃথার বিয়ে দিতে চান। দুই পরিবারের মাঝে সর্বদাই খুব ভালো সম্পর্ক থাকায় কারও এই প্রস্তাবে দ্বীমত ছিল না। ঠিক হয়ে রইলো তাদের বন্ধন। আর এই অঙ্গীকারের মাঝেই বড় হতে লাগলো পৃথা আর স্বাধীন। যখন স্বাধীন তেরো বছরের আর পৃথা আট, তখন বড়দের আলোচনার মাঝ দিয়ে তারা জানতে পেরেছিল নিজেদের বিয়ের কথা। আজও পৃথার মনে আছে স্বাধীনের বলা কথা গুলো,
– পৃথা, বড় হয়ে তোর আমার সাথে বিয়ে হবে, বুঝেছিশ?
– বিয়ে হলে কি হবে স্বাধীন ভাইয়া?
– বিয়ে হলে তুই আর আমি সবসময় একসাথে থাকতে পারবো।
– ইয়েএএএ। আমি খুব খুশি, আমি খুব খুশি। তোমাকেই আমি বিয়ে করবো স্বাধীন ভাইয়া। তাহলে তোমার সাথে থাকতে পারবো সবসময়।
পৃথার যখন দশ বছর তখন ওর মা মারা যায়। মা হারা বাচ্চাটাকে তখন আগলে রেখেছিলেন স্বাধীনের মা। তবে সেই আঁচলটাও উঠে যেতে লাগে যখন স্বাধীনের বাবার এমেরিকায় চাকরীসুত্রে চলে যাওয়ার খবর আসে। পুরো পরিবার এমেরিকাতে শিফ্ট হচ্ছে এটা শুনে আবদুল্লাহ সাহেব আর মনসুর সাহেব চিন্তায় পরে যান। যেহেতু এখন বাচ্চারা দূরে থাকবে, যদি বড় হয়ে ওদের মনে অন্য কেউ চলে আসে? এইটা যাতে না হয়, তাই বড়রা আলোচনা করে ঠিক করলো এখনই বাচ্চাদের কাবিন তারা করিয়ে রাখবে। দুজনে প্রাপ্তবয়স্ক হলে ঘটা করে প্রোগ্রাম করে তুলে নেওয়া হবে পৃথাকে।
পৃথার তখন মাত্র বারো বছর আর স্বাধীনের সতেরো যখন লাল রঙের একটা শাড়ি আর সাদা পাঞ্জাবি পরে দুজন বিয়ের পিড়িতে বসে। পরিবারের সব বড়দের উপস্থিতিতে ওদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর তিনদিন পরেই ছিল স্বাধীনদের ফ্লাইট। চলে যায় স্বাধীন ওর পৃথাকে রেখে।
হঠাৎ খেয়াল করলো পৃথা, যে ও কাঁদছে। স্মৃতির পাতা থেকে বের হয়ে এসেছে ও। চোখের পানিটা ছুয়ে দেখলো। আজও স্বাধীনের সেই চলে যাওয়ার দিনটা মনে করতেই ও কেঁদে দেয়। সেইদিন পাগল কান্না কেঁদেছিল বারো বছরের পৃথা। স্বাধীন ছিল ওর সবকিছু। সেই সবকিছুই ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
সেই স্বাধীন আজ পৃথার সামনে এসেছে। পৃথার স্বামী হওয়ার অধিকার জমাচ্ছে!
এতোটা বছর পর…
নিজেকে ঠিক করে পৃথা রেস্টরুম থেকে বের হলো। মুখের ভাব একদম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো। কিছুক্ষণ আগে যে ও কেঁদেছে সেটা ওকে এই মুহূর্তে দেখলে কেউ বুঝবে না।
ডিপার্টমেন্টে ঢোকার সাথে সাথে নুপুর সিটে সোজা হয়ে বসে পৃথার দিকে তাকালো,
– কি ব্যাপার পৃথা? এতো দেরী হলো যে? সব ঠিক আছে তো?
নুপুরের চিন্তিত চেহারার দিকে তাকিয়ে স্মিত একটা হাসি দিল পৃথা। বাকিরাও যারা গোল হয়ে বসে ছিল তাদের উৎসুক চেহারার দিকে তাকিয়েও হাসলো,
– হ্যা আপু। সব ঠিক আছে। আমি স্যারের রুম থেকে বের হয়ে একটু ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম। তাই দেরী হলো।
– ও, তাই বলো। আমরা তো টেনশনে পরে গিয়েছিলাম যে তোমার আবার এতো দেরী লাগছে কেন। এই এখানে আসো, আমার পাশে বসো। আমরা ডিসকাস করছি নতুন বস কে নিয়ে।
পৃথা অনিচ্ছাকৃত ভাবেই বসতে হলো সবার মাঝে। না চাইতেও শুনতে পেল ইমরান কি বলছে,
– তো যা বলছিলাম। রিতভিক স্যার একদম বাঘা একজন ব্যক্তিত্ব। নেট ঘেটে যেটা পেলাম তা হলো, তিনি পরিবারের সাথে এমেরিকাতে চলে গেছেন খুব কম বয়সে। সেখানেই কলেজ, ইউনিভার্সিটি পাশ করেছেন।
পৃথা এটা শুনে নিচু স্বরে বিড়বিড় করে তাচ্ছিল্য ঝাড়লো,
– সতেরো বছর কি খুব কম বয়স নাকি? কি সব ভুল ইনফো যে লেখে নেটে!
নিতা পাশ দিয়ে বলে উঠলো,
-কিছু বললা পৃথা আপু?
সতর্ক হলো পৃথা,
– হম? না না। কিছু না।
ইমরান আবার শুরু করলো,
– হ্যা, তো যাই হোক। বিদেশের মাটিতেও বেশ সাফল্য এচিভ করেছে এই ভদ্রলোক। কম্পিউটার সফ্টওয়েআরের দুনিয়ায় ভালই নাম ডাক আছে তার। বিদেশে একটা বিশাল নামিধামি সফ্টওয়েআর ফার্মের সাথে কোলাবরেট করে কাজ করতেন তিনি। তবে নিজের কম্পানি বলতে এটাই প্রথম তার জন্য।
সবাই,এসব শুনে মনে হলো অনেক ইম্প্রেস্ড হয়েছে। পৃথাও যে সেই কাতারের একজন না তা বললে ভুল হবে। না চাইলেও, স্বাধীণের এচিভমেন্ট শুনে ভালো লাগলো ওর। তবে মনের ভেতরে অভিমানের পাহার একটুও ভাঙলো না। নিজের মাঝেই রাগ ঝাড়তে লাগলো ও,
– দশটা বছর ধরে আমার সামনে আসে নি। আমার খোজ না নিয়ে নিজের ক্যারিয়ার বানিয়েছে। এর জন্য কখনোই ওকে আমি মাফ করবো না।
একসময় ওদের মাঝের গোল টেবিল বৈঠক ভাঙ্গলে সবাই নিজ নিজ কিউবিকালে কাজ করতে বসে পরলো।
পৃথা নিজের কাজে সেদিন মনই দিতে পারলো না। যদিও স্বাধীনের সাথে সেই রুম থেকে বের হওয়ার পর আর দেখা হয়নি তবু্ও পৃথার মন পরে আছে সেই রুমের ভেতর। অনুভূতির রোলার কোস্টার চলছে মনে। রাগ, ক্ষোভ,কষ্ট, অভিমান ছেয়ে আছে পুরো জায়গা জুড়ে। তবে…. এক ধরনের চাওয়াও কোথাও যেন উঁকি দিচ্ছে। স্বাধীনকে দশ বছর ধরে দেখেনি পৃথা। ওরা এমেরিকা চলে যাওয়ার তিন বছর পর এসেছিল একবার দেশে। স্বাধীনের দাদার মৃত্যুর খবর শুনে এসেছিল ওরা। তখন পৃথার দাদা বেঁচে ছিলেন। সেই সময় পৃথা পনের বছর আর স্বাধীনের হয়েছিল বিশ। সেই যে দেখা তারপর দেখা হলো আজ। মাঝ খানে কেটে গেছে এক দশক। পৃথার অপেক্ষার দশটা বছর।
যখন একদিকে পৃথা এসব নিয়ে চিন্তা করছিলো, তখন নিজের কেবিনে বসা স্বাধীনের মন জুড়েও ছিল পৃথা। ঘটনার এক পাশ যেরকম পৃথার কাছে আছে, সেরকম অপর পাশ টা আছে স্বাধীনের কাছে। নিজের সিটে হেলান দিয়ে ছাদের পানে চেয়ে সেই সব স্মৃতির পথেই স্বাধীনের মন হাটছিল তখন।
পৃথার যখন জন্ম হয় তখন স্বাধীনের পাঁচ বছর বয়স। পৃথিবী বুঝতে শেখার পর থেকেই পৃথাকে পাশে পেয়েছে স্বাধীন। পৃথাকে ছোট্ট স্বাধীনের কাছে একটা পুতুল মনে হতো, তাই ও পৃথাকে পুতুল বলেই ডাকতো। স্বাধীন যখন জানতে পারে পৃথার সাথেই বড় হয়ে বিয়ে হবে ওর তখন বিয়ে জিনিসটার মান কতোটুকু তাই বোঝে না ও। তবে পৃথাকে যে নিজের পাশে পাবে সবসময় এই খুশিতেই আত্মহারা হয়ে যায়। এক অধিকার নিয়ে ভালোবাসতে শুরু করে ও পৃথাকে। হয়তো ভালোবাসা আগেই ছিল, বুঝেছে পরে। স্বাধীনের সতেরো বছর বয়সেই পৃথার সাথে ওর বিয়ে হয়। ওর তখন এই বুঝটা হয়েছে যে পৃথা এখন থেকে ওর স্ত্রী। কিন্তু তখনো অপ্রাপ্তবয়ষ্ক থাকায় সেই নতুন বউটাকে রেখেই স্বাধীনকে চলে যেতে হয় ওর পরিবারের সাথে। নিজের মতামত দেওয়ার অধিকার ছিল না ওর আর না ছিল দায়িত্ব নেয়ার মতন ক্ষমতা। পরিবারের মাঝে কথা থাকে পাঁচ বছর পর যখন দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাবে তখন পৃথাকে নিজেদের কাছে নিয়ে আসবে স্বাধীনের পরিবার। এই স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষাতেই ছিল স্বাধীন।
তবে মাঝ পথে একটা ঝড় স্বপ্নটাকে ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিল।
হঠাৎ রুমের দরজায় নক্ পরায় চিন্তার সুতা কাটে স্বাধীনের। চেয়ার সোজা করে ফিরে তাকিয়ে দেখে সিয়াম ঢুকেছে রুমে।
-স্বাধীন ভাই, আসতে পারি?
– আরে আসো সিয়াম।
– চিন্তায় ডুবে ছিলেন মনে হয়। ডিস্টার্ব করলাম?
– না, না। সেরকম কিছু না।
সিয়াম এবার একটু নড়েচড়ে বসলো,
-তা পৃথার… উপস্ সরি, ভাবীর সাথে দেখা হয়েছে? কেমন হলো সাক্ষাত?
সিয়ামের উত্তেজনা দেখে হাসলো স্বাধীন, কিছুটা ঝুকে এলো টেবিলের দিকে,
– সিয়াম, তোমাকে এখনো ঠিক ভাবে ধন্যবাদ দেয়াই হয় নি ভাই। তোমার সাথে পরিচয় না হলে পৃথা যে এখানে আছে জানতেই পারতাম না।
হাসলো সিয়াম,
– আরে ভাই সবই আল্লাহ্ র ইচ্ছা। আল্লাহই চেয়েছেন এভাবে আপনার আর ভাবীর দেখা হোক। আপনার সাথে তিন মাস আগে আমার এমেরিকাতে সেই কনফারেন্সে পরিচয় হওয়া, আমার কম্পানি ব্রশিওরে এম্প্লোয়িদের মাঝে পৃথাকে খুজে পাওয়া, সবই তো কাকতলীয়। আল্লাহর ইচ্ছা আছে বলেই তো হয়েছে তাই না? আর সত্যি কথা বলতে আপনার কাছে তো আসলে আমিই কৃতজ্ঞ স্বাধীন ভাই। আমার বাবার এই কম্পানিটাকে শেষ মুহূর্তে আপনি ডুবা থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আপনি না থাকলে কি যে হতো?
– এটাও আল্লাহরই ইচ্ছা সিয়াম। আমাদের দুজনের জন্যই তিনি পথ সহজ করে দিয়েছেন।
কিছুক্ষণ হাসলো ওরা। তারপর সিয়াম বললো,
– ভাই আপনার থেকে আপনাদের লাভ স্টোরির সবটুকুই শুনেছি। জানি পৃথাকে মানাতে এসেছেন আপনি। কিন্তু কিভাবে করবেন এসব?
– এটা এতোটা সহজ কাজ না সিয়াম। পৃথা ছোট থেকেই ভীষণ অভিমানী মেয়ে। তারওপর ভীষণ চাপা স্বভাবেরও। জানি আমার ওপর অনেক রেগে আছে ও, সহজে মানবে না।
– যা হয়েছে তাতে আপনার তো কোনো দোষ নেই ভাই। আপনিও তো পরিস্থিতির শিকার।
একটু হাসলো স্বাধীন,
– মিয়া, বিয়ে করোনাই তো, তাই বুঝো না। দোষ যারই হোক, শিকার যেই হোক, স্ত্রীকে স্বামীরই মানাতে হয়। স্বামীকেই ঝুকতে হয় আগে।
হোহো করে হেসে দিল সিয়াম,
-ভাই আপনে ভীষণ রোম্যান্টিক দেখি। হাহাহা। যাই হোক, অল দা বেস্ট। চেষ্টা চালিয়ে যান। এখন আসি, কিছু লাগলে জানাবেন।
সিয়ামকে বিদায় দিয়ে নিজের সিটে এসে বসলো স্বাধীন। নিজেই নিজেকে বললো,
– চেষ্টা তো করবোই আমি। আর সফলও হবো। এতো বছর অনেক কষ্ট দিয়েছি ওকে আমি, নিজেও তার থেকে বেশী কষ্ট পেয়েছি। তবে আর না। এবার আমার পৃথাকে নিজের করে নিবোই আমি, তা যেভাবেই হোক।
চলবে।