#রাগে_অনুরাগে
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব-১১
– শৈত্যপ্রবাহের দ্বারা চারদিকে শীতল শীতল ভাব,,এবারের শীতটা বেশ জেঁকেই এসেছে,,,,ভোরের আলো ফোটার মতো সময় বোধহয় হয়েই এসেছে,,,থেকে থেকে গুটিকয়েক লোকজনের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে,,,দিল্লি টু কলকাতা ফ্লাইট ৬.২০ তে আছে,,,আর তার জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে অভ্র এয়ারপোর্টৈর নির্ধারিত কপিসপে,,,,সামনে রয়েছে ধোঁয়া ওঠা একটা গরম কফিমগ,,,ও তার পাশে রয়েছে আট-দশটা খালি কফির মগ,,হ্যাঁ রাতে হোটেল থেকে তড়িঘড়ি করে এয়ারপোর্টে এসে অভ্র জানতে পারে এয়ারলাইন্সের কিছু সমস্যা থাকার দরুন সকালের আগে দিল্লি টু কলকাতা কোনো ফ্লাইট নেই,,তাই অগত্যা তখন থেকেই অভ্র এখানে অপেক্ষা করছে,,,,আর ফিরে যেতে ইচ্ছা করেনি হোটেলে,,,,
__________________________________________
– কেন বলতো অতক্ষন ধরে স্নান করতে গেলি??একের থেকে শীত পড়েছে এইকদিন তার উপর তুই প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে বাথরুমে ছিলিস,,মুন্নী না বললে তো আমি জানতেই পারতাম না,,,,এখন যে তোর শরীর টা খারাপ করেছে এবার কি হবে?? কষ্টটা কে পাচ্ছে?? জ্বর টাতো কিছুতেই কমছে না,,, হা কর অনু,,,তুই কি বাচ্চা যে কিছুতেই খাচ্ছিস না,,,অভ্র আসুক একবার দেখিস,,,(continue অনুর কানের কাছে আশা বকেই যাচ্ছে তাতে অনুর কোনো মাথা ব্যথা নেই,, ওর শুধু একটাই চিন্তা অভ্র আসবে তো?? যার জন্য ও এত কষ্ট করলো প্রায় দু ঘন্টা যাবত রোদে ছিল তারপর বাথরুমে আড়াই ঘন্টা জলে ছিল,,,)
– অনু মা কিছু খেয়ে নাও নাহলে তো আশা তোমাকে ওষুধ টা খাওয়াতে পারছে না,,,(অভ্রের বাবা)
– আমার তো কিছুই খেতে ইচ্ছে করছে না বাবা,,,আচ্ছা ঠিক আছে মা দাও কিন্তু অল্প করে,,(বলেই আশার কাছ থেকে খেয়ে নিলো কিন্তু সেটা পেটে বেশি সময় থাকলো না ওষুধ দেওয়ার সাথে সাথেই অনু বমি করে সব তুলে দিল)
-আশা আর মুন্নী অনু কে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়,,তারপর ভালো করে অনুকে পরিষ্কার করে একটা চুড়িদার পড়িয়ে দেয়,,,তারপর বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আশা জোড় করে দুটো বিস্কুট খাইয়ে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ পর ওষুধ খাইয়ে দেয় অনুকে,,,ওষুধ খাওয়ার পর অনু আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়ে,,,,
_________________________________________
– হ্যালো ডাক্তার দা অনুর শরীর তো আবার খারাপ করেছে,,, কিছুই খাচ্ছে না,,,যা খাচ্ছে বমি হয়ে যাচ্ছে,,,( ফোনে আশা ওদের পারিবারিক ডাক্তার কে বলে)
– হ্যাঁ আমি দুটো বিস্কুট খাইয়ে ওষুধ দিয়েছি,,ঠিক আছে রাখছি,,যদি অসুবিধা হয় তাহলে ফোন করবো,,,
– (এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে বাড়ির ভিতরে ঢোকে অভ্র,,বসার ঘরে মা আর বাবাকে দেখে দাঁড়িয়ে যায় তারপর মাকে জিজ্ঞাসা করে,,)
– মা অনুপমা এখন কেমন আছে???
– ও অভ্র তুই এসেছিস ভালো করেছিস বাবা,,অনু ভালো নেই অভ্র,,,এমনিতে কিছু খাচ্ছে না,,যদিও বা জোড় করে কিছু খাওয়াচ্ছি তা বমি করে দিচ্ছে,,,এখন দুটো বিস্কুট খাইয়ে দিয়ে ওষুধ দিয়েছি,,,
-কি করছে ও??আর ডাক্তার আঙ্কেল কি বললেন???
– ওষুধ টা খাওয়ানোর পর এখন একটু ঘুমাচ্ছে,,,আর ডাক্তার দা বললেন যে আজকের রাতটা দেখতে,,, জ্বর যদি না কমে তাহলে এডমিট করতে হবে,,,
– ও ঠিক আছে ,,আমি ঘরে যাচ্ছি,,,ফ্রেশ হয়ে আসছি,,
– দেখে তো মনে হচ্ছে কিছু খাসনি,,ফ্রেশ হয়ে আয় তোর মাকে বলছি খাবার দিতে একসাথে খাবো,,,(অভ্রের বাবা)
– ঠিক আছে বাবা,,,একটু অপেক্ষা করো,,,(বলেই চলে যায় অভ্র)
– অভ্র ঘরে এসে দেখে অনু ঘুমাচ্ছে,,,মেয়েটার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছেনা এই কদিনে কেমন শুকিয়ে গেছে,, অভ্র অনুর পাশে কিছু সময় বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়,,,তারপর খিদেটা টের পেতেই ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেস হতে,,,
___________________________________________
– অনু দেখ একটু ওঠার চেষ্টা করতো মা,,,৯টা বাজে,,অনেক রাত হয়ে গেছে একটু কিছু খেয়ে নে,,নাহলে ওষুধ টা দিতে পারবো না,,,আর এখন জ্বরটা অনেকটাই কম ,,ওষুধ গুলো খেলে আশা করছি কালকের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবি তুই,,,,
– না মা আমার ভালো লাগছে না,,,আমি একটু শুয়ে থাকি না,,,(আমার শরীর খারাপ শুনেও উনি একবারের জন্যেও আসলেন না,,ঠিক আছে আমিও সব খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেবো,,,,আরও বেশি করে শরীর খারাপ বাঁধাবো,,দেখি তখন উনি না এসে থাকেন কি করে,,,অবশ্য আমি উনার কে যে আসবেন,,কথাগুলো ভাবতেই চোখ ছলছল করে ওঠে অনুপমার,,, গলার কাছে কান্নারা আটকে থাকে মুক্তি পাওয়ার আশায়,,, ও নিজেকে সামলে বলে,,)মা আমাকে একটু একা ছেড়ে দাও ভালো লাগছে না কিছু,, একটু ঘুমাবো,,,
– তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও বৌদিভাই,,,তুমি যদি না খাও তাহলে দাদাভাই বাড়ি এসে আমাকে দেবে,,,(মুন্নী ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলল)
– তুই ফালতু টেনশন করছিস মুন্নী তোর দাদাভাই এখন অনেক ব্যস্ত মানুষ,, বাড়ি আসার সময় তিনি পাবেন না,,, সুতরাং তোর ভয় পাওয়ার দরকার নেই আর উনি জানবেন কি করে আমি খেয়েছি কি খায় নি,,,মা তুমি যেন তোমার ছেলেকে ফোন করে বলো না,, উনি খুব ব্যস্ত মানুষ,,,
– ঠিক আছে তোকে খেতে হবে না,, আবার জ্বর আসলে কষ্ট তুই পাবি,,আমার হয়েছে যত জ্বালা,,, চল মুন্নী,,, অনু দরজা ভেজিয়ে দিচ্ছি,,,লক করতে হবে না,, আমি মাঝে মাঝে এসে দেখে যাবো(বলেই মুন্নীকে নিয়ে চলে যায় আশা,,,আর এই দিকে অনু রাগে অভিমানে কাঁদতে কাঁদতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে)
___________________________________________
– আচ্ছা কর্তামা তুমি বৌদিভাই কে না খাইয়ে চলে এলে কেন?? আর বললে না কেন যে দাদাভাই বাড়ি এসেছে,,
– এমনি তুই যাতো এখন,,জ্বালাতন করিস না আমাকে,,,
– ও কর্তামা আমরা সবাই রাতে খেলাম,,বৌদিভাই খেলো না আর তুমিও জোড় করলে না কেন??কি হয়েছে বলো না,,
– সাধে কি আমি বলি যে তোর ঘটে কিছু নেই,, ছেলে মেয়ে দুটোর মধ্যে এখন মান-অভিমানের পালা চলছে,,,প্রত্যেক স্ত্রী চাইবে তার শরীর খারাপ এর সময় তার পাশে তার স্বামী থাকুক,,আর দেখো আমার ছেলেটা বাড়িতে এসেও আবার দরকারি কাজের জন্য অফিসে চলে গেল বেচারি টা জানেও না যে অভ্র বাড়ি এসেছে,,, রাতে যখন দেখবে তখন কত আনন্দ হবে,,,
– ওও এই ব্যাপার,,তোমার মাথায় কিন্তু খুব বুদ্ধি কর্তামা,, আমাকে একটু ধার দিওতো,,,না মানে তুমিই তো বলো আমার ঘটে কিছু নেই,,,
– হ্যাঁ দেবো অনেক বেশি করেই বুদ্ধি দিয়ে দেব বদমাইশ,,এখন যা ঘুমা,,,আর বৌদিভাই এর জন্য চিন্তা করতে হবে না আমার ছেলে ঠিক খাইয়ে দেবে অনু না করতে পারবে না,,,
-অনেক রাত করেই অভ্র বাড়ি ফেরে,,,এইদিকের এত দিনের কাজ জমে যাওয়ার জন্যেই অনুকে এই অবস্থায় ছেড়ে ওকে যেতে হয়েছে,,,ড্রয়িংরুমে মাকে বসে থাকতে দেখে অভ্র বলে,,,
– মা তোমাদের খাওয়া হয়ে গেছে??আর বাবা কোথায়??
– হ্যাঁ খাওয়া হয়ে গেছে,, বাবা ঘুমাচ্ছে,,অভ্র টেবিলে দুটো প্লেটে খাবার দেওয়া আছে,,,খেয়ে নিস,,,
– দুটো প্লেট কেন??এই তো বললে খেয়েছো তোমরা,,
– হ্যাঁ আমরা খেয়েছি,, অনু খায় নি,,দেখ কিছু খাওয়াতে পারিস কিনা,,,কিছু খাইনি বলে ওষুধ খাওয়াতে পারিনি,,ওর জন্যে স্যুপ করা আছে,,,
– ঠিক আছে আমি দেখছি,তুমি যাও শুয়ে পড়ো,,,,(বলেই উপরে চলে আসে অভ্র,,ঘরে এসে দেখে অনু বেঘোরে ঘুমাচ্ছে,,অভ্র তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নেয়,,তারপর নিচে থেকে খাবারের প্লেট দুটো এনে ঘরের সেন্টার টেবিলের উপর রাখে,, অনুর পাশে গিয়ে আস্তে আস্তে অনুর মাথায় হাত দিয়ে ডাকতে গেলে দেখে জ্বরে পুরো শরীর যেন পুড়ে যাচ্ছে,,,,থার্মোমিটার দিয়ে মেপে দেখে দুই এর বেশি জ্বর,,,)
-এখনই যদি ওষুধ না খাওয়ানো হয় তাহলে আরো খারাপ অবস্থা হবে অনুর সেই ভেবে ও অনুকে ডাকে,,
– অনু,,অনু,,, চোখ খোলো,,অনু,,(অভ্রের ডাকে অনুর ঘুম ভেঙে যায়,, ধিরে ধিরে চোখ খুলে অভ্রকে দেখে ওর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে,,, কিন্তু মুখে কিছু না বলে ও আবার চোখ বন্ধ করে নেয়)
– অনু কি হল ডাকছি তো,,,ওঠে অল্পকিছু খেয়ে নাও,,,ওষুধ খেতে হবে,,আবার জ্বর এসছে তোমার,,,
-……….(আপনি কি সত্যি সত্যিই এসেছেন??কেন এসেছেন??কে আমি আপনার,,, আপনার সাথে আমার কোনো কথা নেই)
– কি হল অনু আমি তো কিছু বলছি,,,উত্তর দিচ্ছো না কেন?
-….(ও তাহলে উনি সত্যিই এসেছেন,,, এত দিন খোঁজ না নিয়ে এখন কি করতে এসেছেন আপনি,, দরকার নেই আপনার এই কেয়ার)
– অনু এবার কিন্তু আমার মাথাটা গরম হয়ে যাবে,,, আমার কথার উত্তর কেন দিচ্ছো না,,আমাকে কি মানুষ বলেও ভাবো না??(ধমক দিয়ে)
– আমাকে আপনি কাল বাবার কাছে দিয়ে আসবেন,,(চোখের জল মুছে অনু বলল)
-(অনুর মুখে এমন কথা শুনে অভ্র অবাক হয়ে যায়,,তারপর গলার স্বর নরম করে বলে)কি বলছো তুমি পাগলের মতো,,, বাবার কাছে কেন দিয়ে আসবো??তোমার শরীর ঠিক হোক তখন আমি ঘুরিয়ে নিয়ে আসবো ,,আর তুমি কাঁদছো কেন?? কোথায় কষ্ট হচ্ছে??
– দেখুন মি.চৌধুরী ফালতু মায়া বাড়াবেন না,,এমনিতেও আর কয়েক মাস পর আমাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে,,,
– আমি তোমাকে কি প্রশ্ন করলাম?? আর তুমি কি বলছো??দেখো অনুপমা এসব কথা বলার জন্য পরে অনেক সময় পাবে তুমি,,,এখন তুমি অসুস্থ আর আমি শুনলাম তুমি কিছুই খাওনি,,,,এখন একটু উঠে বসো কিছু খাবে,,তারপর মেডিসিন দিতে হবে,,,
– মি.চৌধুরী আমি কিছু খাবো না,,,অযথা জোড় করবেন না আমাকে,,, আমার ভালো লাগছে না,,,
– অনু কেন জেদ করছো বাচ্চাদের মতো?? চলো একটু কিছু মুখে দেবে,,,আর আমার ভীষণ খিদে পেয়েছে,,,
– আমি তো বললাম মি.চৌধুরী যে আমি খাবো না,,, প্লিজ জোড় করবেন না,,আপনি খেয়ে নিন,,, সারাদিন অনেক কাজ করেছেন অফিসে,,,
– তোমার কি মনে হচ্ছে না এবার একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে বিষয়টা??
– না মনে হচ্ছে না,,,সত্যিই মনে হচ্ছে না কারণ আমি এমন কিছু করিনি যা বাড়াবাড়ির মতো,,,
-দেখো আমি অনেক ক্ষন থেকেই সহ্য করছি,,তোমার শরীর খারাপ বলে কিছুই বলছি না,,অনুপমা আমাকে বাধ্য করো না তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে,,,
-আপনি আমার সাথে কবেই বা ভালো ব্যবহার করলেন মি.চৌধুরী??
-আচ্ছা ঠিক আছে আমি খারাপ,, এবার হা করো(বলেই স্যুপের বাটি থেকে এক চামচ স্যুপ তুলে সেটা ফু দিয়ে ঠান্ডা করে অনুপমার মুখের সামনে নিয়ে যায়,,)
– বললাম তো মি.চৌধুরী আমি খাবো না,,কেন জোড় করছেন??(অভ্রের হাতটা মুখের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে কথাটা বলে)
– অনু তুমি কি আমার সহ্যের পরীক্ষা নিচ্ছো??(বলেই হাতে থাকা স্যুপের বাটিটা ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে দেয়,,, তারপর ঘরের আলোটা নিভিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়,,,)
-(অভ্রেরর এমন আচরণে অনু বেশ ভয় পেয়ে যায় আর তখনই কাঁদতে কাঁদতে জোড়ে বলে,,)যখন চলে গিয়েছিলেন আমাকে একা ফেলে তখন তো একটাবারের জন্যেও বলে যাননি?? এই এতগুলো দিনতো খবর নেন নি আমি খেয়েছি কিনা??আমার শরীর ঠিক আছে কিনা??এখন আমার শরীর খারাপ হয়েছে বলে এসেছেন খবর নিতে,,,কেয়ার করতে,,,দয়া দেখাচ্ছেন আমাকে??দরকার নেই আমার এমন কেয়ার নামক দয়া,,, যেদিন মরে যাবো সেদিন বুঝবেন,,, বুঝবেন সেদিন,,,
– অনুর মুখে এমন কথা শুনে অভ্র আর এক মুহূর্তের জন্য হলেও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না,,,ঘরে এসে দেখে অনু সেন্টার টেবিলের উপর থেকে জলের গ্লাস নিচ্ছে,,অভ্র অনুকে কিছু বলতে যাবেই তার আগেই অনু মাথা ঘুরে পড়ে যায়,,আর ফ্লোরে গ্লাস পড়ে যাওয়ার দরুন কাঁচের টুকরো চারপাশে ছড়িয়ে যায়,,, আবির তাড়াতাড়ি অনুকে কোলে করে বিছানায় শুইয়ে দেয়,,তারপর অনুর চোখে মুখে জলের ছিটা দেয়,,তবুও অনুর জ্ঞান ফেরে না দেখে ও নিচে চলে যায়,,,নিচে থেকে আবার স্যুপ গরম করে নিয়ে আসে,,তারপর আবার অনুকে ডাকে,,, অনু চোখ খুলতেই অভ্র আলতো করে অনুকে তুলে পিঠের নিচে বালিশ রেখে হেলান দিয়ে বসিয়ে বলে,,
-একদম চুপ করে থাকবে কোনো কথা বলবে না,,,আর চুপচাপ খেয়ে নেবে,,জ্বর বেশি বলে তখন জ্ঞান হারিয়ে ছিলে(বলেই অভ্র টেবিলের উপর থেকে স্যুপের বাটিটা নিয়ে অনুকে নিজের হাতে খাইয়ে দেয় তারপর ওষুধ গুলো দেখে ঠিক করে খাইয়ে দেয়,,)
– ঘুমানোর চেষ্টা করো অনু,,, আর সরি আমার খোঁজ নেওয়া উচিত ছিল,,, ভুল হয়ে গেছে,, আমার একটা মাত্র বৌ তাকে ফেলে যাওয়া আমার উচিত হয়নি,,
– ( অভ্রের মুখে এমন কথা শুনে অনু লজ্জা পেয়ে যায়,,,তবুও নিজেকে সামলে বলে ওঠে,,,)মি.চৌধুরী আমি দুঃখিত এত কিছু বলার জন্য,,,আসলে তখন জ্বরের ঘোরে কি বলেছি,, যান আপনি গিয়ে খেয়ে আসুন,, আর তখনকার কথা গুলো প্লিজ মনে রাখবেন না,, আমি ওই ভাবে বলতে চাইনি,,,যান আপনি খেয়ে আসুন,,(অভ্রের দিকে তাকিয়ে আর কিছু বলতে পারলো না অনু,,)
– ঠিক আছে তুমি ঘুমিয়ে পড়ো আমি আসছি(আমি জানি অনুপমা তুমি আমাকে ভালো বেসে ফেলেছো,,তার জন্যই তো এত অভিমান করে ছিলে আমার উপর,, তবে বিশ্বাস করো এতে আমি খুব খুশি হয়েছি,,প্রথম ধাপে তুমি পাশ করে গেছো,,আরো কটা ধাপ বাকি আমার কাছে আসার,,, আমি তোমাকে ভালো করে বাজিয়ে দেখবো অনুপমা,,, বারবার আমি ঠকতে পারবো না,, আর সেই ক্ষমতা আমার নেই সহ্য করার,, বিরহের যন্ত্রণা কটাদিন একটু ভোগ করো,,,তারপর আর কোনো বাধা থাকবে না আমাদের মধ্যে কথা গুলো ভেবেই অভ্র ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল আর অনুপমা অভ্রের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘুমানোর চেষ্টা করতে লাগলো,,,,)
চলবে…
( যারা যারা গল্প পড়বেন প্লিজ রিয়্যাক্ট ও গঠনমুলক মন্তব্য করবেন,,,, যেহেতু আমি রেগুলার গল্প দিয়ে উঠতে পারছি না সেহেতু পেজের রিচ কমে যাচ্ছে,,, সবার কাছে গল্প নাও পৌঁছাতে পারে,,, আর দুঃখিত ফোনে নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য পেজ ওপেন হচ্ছিলো না,,আর সেই কারণে দেরি হয়ে গেল গল্প দিতে)