#রাগে_অনুরাগে
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ১৫
গত দুদিন ধরে অনুপমার সাথে অভ্রের ঠিক ভাবে দেখা হচ্ছে না,,,, সকালে কখন অফিসে চলে যায়,,,,আবার রাতে কখন বাড়ি ফেরে,,, তার হিসাব এখন আর অনুপমা ঠিক মতো দিতে পারে না,,,, অভ্রের এই রকম আচরণ অনুপমার ভিতর টাকে বিরহের আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে নিয়ত,,,,,,,
অনুপমা ছাদে থাকা ফুল গাছ গুলোকে জল দিচ্ছে আর ভাবছে অভ্রের মনের মতো হয়তো সে হতে পারে নি,,,, হবেই বা কি করে সেখানে যে নীলাঞ্জনার বাস,,,,হঠাৎ পিছন থেকে আশার গলার আওয়াজ শুনতে পাই,,,
“অনু অনু তুই কি উপরে মা”??? আশার প্রশ্নে অনুপমা বেশ জোড়ে বলে ওঠে,,,
” হ্যাঁ মা আমি উপরে,,,,গাছে জল দিচ্ছি,,,,” অনু কথাটা বলে জলের মগটা নীচে রেখে পিছনে ফিরে দেখে আশা দাঁড়িয়ে হাফাচ্ছে,,,,তাই দেখে ও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায় আশার কাছে,,,তারপর ভালো করে আশাকে ধরে বলে,,,
“মা তুমি কেন উপরে আসতে গেলে,,,জানোতো শরীর টা তোমার খারাপ,,, এখন চলো ওইদিকে গিয়ে একটু বসবে,,,,” অনুপমাকে এইভাবে ব্যস্ত হতে দেখে আশা বলে,,,
“আমাকে নিয়ে অত ব্যস্ত হতে হবে না তোকে,,, তুই সন্ধ্যের সময় রেডি হয়ে থাকিস,,,,”
আশার কথা শুনে ভ্রুযুগল কুচকে অনু বলে ওঠে”কেন মা??কোথাও যেতে হবে নাকি”??
“হ্যাঁ,,, তোর পিসি ফোন করে ছিলো আমাকে,,,তোকে নাকি ফোনে পাচ্ছে না,,,, তোর বাবার শরীর টা হঠাৎ করে খারাপ হয়েছে,,,তোকে নাকি দেখতে চাইছেন,,, আমি বলি কি তুই কটাদিন না হয় ওখানে গিয়ে থেকে আয়,,,তোর বাবার ভালো লাগবে,,,,”
“সে ঠিক আছে,, আমি না হয় যাবো,,,কিন্তু সন্ধ্যের সময় কেন যাবো?? এখন রেডি হয়ে চলে যায়”??
” না অভ্র তোকে দিয়ে আসবে,,,এ বাড়ির বৌরা একা কোথাও যায় না,,, বুঝেছিস,,,আমি অভ্রকে ফোন করেছিলাম,, ও বললো সন্ধ্যের সময় এসে তোকে নিয়ে যাবে,,,” কথা গুলো বলেই আশা চলে যায় আর এইদিকে অনুপমা আপনমনে বলে ওঠে,,,
” কেন বলোতো মা উনাকে এসবের মধ্যে জড়াতে গেলে,,আমি একাই চলে যেতাম,, উনি শুধু শুধু বিরক্তবোধ করবেন,,, আর হয়তো এই বাড়ি ছেড়ে যাওয়া হলো আমার একেবারের জন্য যাওয়া,,, কি জানি আর ফিরে আসতে পারবো কিনা”??
___________________________________________
গাড়ি চলছে আপন গতিতে,,,,চারপাশের অন্ধকারাচ্ছন্ন থমথমে পরিবেশ যেন গাড়ির ভিতরেও বিরাজমান,,,প্রায় আধাঘন্টার বেশি সময় গাড়ির ভিতরে দুই জন মানব মানবী যে রয়েছে তা বোঝার জো নেই,,, কারণ একজন ড্রাইভ করতে ব্যস্ত তো আর একজন মিথ্যে রাতের আকাশ দেখার ভান করে চোখের জল ফেলতে ব্যস্ত,,,,গাড়ির ভিতরে আলোটা ইচ্ছা করেই অভ্র অফ করে রেখেছে পাছে ধরা না পড়ে যায় সে,,,কারণ ড্রাইভের পাশাপাশি সে তার প্রেয়সীকে দেখতে ব্যস্ত,,,,,রাস্তার ল্যাম্পপোষ্টের আলোয় অনুকে মায়াবী লাগছে অভ্রের কাছে,,,,
সত্যিই কি উনি আমাকে একেবারেই রেখে আসছেন,,,না না এটা উনি করতে পারেন না,,, কিন্তু আমার কেন মনে হচ্ছে এইসব কথা,,,, আমি উনাকে ছেড়ে একটুও থাকতে পারবো না,,, প্লিজ মি.চৌধুরী আপনি আমাকে রেখে আসবেন না,,, আপনার সাথে করে আবার নিয়ে আসবেন,,,,অনুপমা একমনে এইসব কথা ভাবছে আর অভ্রের আড়ালে চোখের জল মুছছে,,,,
অভ্র ড্রাইভিং এর ফাঁকে ফাঁকে যখন অনুকে দেখছিল,, তখন ও খেয়াল করে অনুর চোখের কোণে জল চিকচিক করছে রাস্তার মৃদু আলোতে,,,হঠাৎ ওর বুকটা ধক করে ওঠে,,,,বুকের ভেতর হালকা চিনচিন ব্যাথা অনুভব করে,,নিজেকে সামলে গলা খাকারি দিয়ে অনুপমার উদ্দেশ্যে বলে,,,
“অনুপমা”
অনু এতক্ষণ নিজের ভাবনার জগতেই আটকে ছিলো,,, হটাৎ কাঙ্ক্ষিত পুরুষের কন্ঠে নিজের নাম শুনতেই চমকে ওঠে,,, আজ কতগুলো দিন পর অভ্র তাকে এইভাবে নরম স্বরে ডেকেছে,,, অজান্তেই চোখ থেকে অশ্রু চিবুকে গড়িয়ে পড়লো,,,অভ্রের আড়ালে সেটাকে মুছে দ্রুত নিজেকে সামলে বলে ওঠে,,,
“কিছু বলবেন মি.চৌধুরী”???
“হ্যাঁ বলছিলাম কি তোমার ওই বাড়িতে যতদিন ইচ্ছা হয় থেকো,,,আর ডিভোর্সের পেপার টা দু-একদিনের মধ্যেই চলে আসবে,, তখন আমি সেটা তোমাকে পাঠিয়ে দেবো,,,,ঠিক আছে”??
অভ্রের মুখে আবার ডিভোর্সের কথা শুনে অনুপমার কথা বলার মতো শক্তি থাকে না তবুও মুখে বলে,,,
“হমম”
“ওই বাড়ি নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না,, মা বাবাকে আমি সামলে নেবো,,,আশা করি তোমার আর হৃদয়ের মাঝে আর কোনো বাঁধা থাকবে না,,, আর তুমি যদি না চাও তাহলে আর ফিরতে হবে না,,,বুঝেছো”???
অভ্রের কথা গুলো শুনে নিজের চোখের জলকে আর আটকে রাখতে পারেনি অনু,,, কিন্তু অভ্রের সামনে নিজের দুর্বলতাকে প্রকাশ করবে না বলেই জানালার দিকে তক্ষণাৎ তাকিয়ে চোখের জল মুছে নিজেকে বৃথা সামলানোর চেষ্টা করে,,,তারপর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে ওঠে,,,,
“বুঝেছি মি.চৌধুরী,,, আপনি এত সুন্দর করে বুঝিয়ে বললেন,, না বুঝে থাকি কি করে বলুন তো”
অনুপমার কথার পরিপ্রেক্ষিতে আর কিছুই বলেনি অভ্র,,,নিরাবতার মাঝে কখন যে অভ্র অনুদের বাড়ির সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছে সেটা আর খেয়াল করেনি অনু,,,ও যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিল,,, কিন্তু অভ্রের ডাকে সম্বিৎ ফেরে অবিলম্বে,,,,
“অনুপমা”
“হমম”
“চলে এসেছি আমরা”
অভ্রের কথা শুনে অনু বাইরে তাকিয়ে দেখে যে সত্যিই ওরা চলে এসেছে,,, অনুপমা নিজের ব্যাগটা নিয়ে গাড়ি থেকে নামে কিন্তু অভ্র সেই ভাবে ড্রাইভিং সিটে বসে থাকে,,,তাই দেখে অনু বলে,,,
” আজকের রাতটা না হয় এখানে থেকে যান মি.চৌধুরী,,, বাবা আর পিসির ভালো লাগবে,,”
কথাটা বলে অনু অপেক্ষা করে অভ্রের উত্তর শোনার জন্য,,, কিন্তু অনুকে অবাক করে দিয়ে অভ্র কিছু না বলেই গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যায়,,,, অভ্রের কাছ থেকে এই রকম ব্যবহার অনু আশা করেনি,,,ভিতর থেকে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে অভ্রের কিছু না বলে চলে যাওয়া দেখে,,,,অগত্যা মুখে একটা নকল হাসি নিয়ে বাড়ির ভিতরে যায়,,,,,,
___________________________________________
“না বাবা আমি তোমার একটা কথাও শুনবো না,,,যে কটা দিন এই বাড়িতে আছি আমি,, তোমাকে আমার কথা মতো চলতে হবে,,,, এই জুস আর ছানাটা তোমাকে পুরোটাই খেতে হবে,,, তারপর ওষুধ আছে,,,”
“অনু মা প্লিজ আমাকে জোড় করিস না,,,আর আমি এতটা খেতেই পারবো না,,, এই ছুটকি তুই কিছু বল না,,”
“বাবা পিসি কি বলবে,,,আমার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর থেকে তুমি খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দিয়েছো,,,পিসি আমাকে সব বলতো ফোন করে,,, তখন তো আমার ইচ্ছা হতো একছুটে বাড়ি চলে আসি তোমার কাছে”
” ও তার মানে আমার আড়ালে তুই এইসব করতিস ছুটকি”??
“প্লিজ দাদা ওইভাবে বলোনা,,, আমি একটা কথাও যে মিথ্যে বলিনি অনুকে সেটা তুমি ভালো করেই জানো,,,আমি নিজের চোখে তো দেখতাম তোমার খাওয়া,,,”
“হয়েছে হয়েছে থাক আর বলতে হবে না,,,, এই অনু আমি জ্যান্ত মাছের ঝোল দিয়ে কতটা ভাত খেলাম,,তারপরেও তুই আমাকে ছানা আর জুস খেতে বলছিস”??
বাবার কথা শুনে অনুপমা ওষুধ বার করতে করতে চোখ রাঙিয়ে বলে ,,,
“একদম বাচ্চাদের মতো করবে না,,, খেয়েছো তো অল্প ভাত আর এক পিসের থেকে হাফ মাছ,,,তাতেই এত নাটক,, এখন চুপচাপ ওগুলো শেষ করো আমি ওষুধ দেবো”
বাবার খাওয়া শেষ হলে অনুপমা তাকে ওষুধ খাইয়ে দেয়,,তারপর ঘরের আলো অফ করে মৃদু আলোটা জ্বালিয়ে দিয়ে দরজা ভেজিয়ে চলে আসে ড্রয়িংরুমে,,, সেখানে এসে দেখে ওর পিসি খাবার নিয়ে অপেক্ষা করছে ওর জন্যে,,,দুজনে একসাথে খেয়ে রান্নাঘরের সব কিছু গুছিয়ে নেয়,,,,
“পিসি তুমি তাহলে ঘুমিয়ে পড়ো অনেক রাত হয়েছে,,,আমি গেলাম ঘরে,,”
অনু চলে যেতে নিলেই ওর পিসি পিছন থেকে বলে “অনু তোকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করার ছিল,, আর আশা করি তুই আমার প্রশ্নের ঠিক উত্তর দিবি” বেশ গম্ভীর হয়েই বলেন কথাটি,,,
“হ্যাঁ পিসি বলো কি জানতে চাও”??
“তোর আর অভ্রের মধ্যে সবকিছু ঠিক আছে তো মা”??
হঠাৎ পিসির মুখে এমন কথা শুনে অনু থতমত খেয়ে যায়,, তবুও নিজের যথাযথ ভাবে সামলে বলে ওঠে,,,
“হঠাৎ এই প্রশ্ন?? আর মি.চৌধুরীর সাথে আমার সবকিছু ঠিক আছে পিসি,,,তুমি অযথা ভাবছো,,,”
“অযথা ভাবছি না আমি,, আগের দিন অভ্র তোকে এই বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে গেল,,অথচ একবার ভিতরে আসলো না,,,তুই এই বাড়িতে আজ এক সপ্তাহের বেশি আছিস,,কই অভ্রকে তো একবারের জন্য হলেও ফোন করতে দেখলাম না?? তাই মনে এই প্রশ্নটা আসলো,,,আচ্ছা বাদ দে”
“পিসি উনি ভীষণ ব্যস্ত আছেন এখন,,, আর সেইদিন উনার একটা দরকারি মিটিং ছিল বলেই আমাকে তাড়াতাড়ি নামিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন,,, আর রোজ রাতেই তো আমাদের ফোনে কথা হয়,,,তুমি অযথা চিন্তা করছো,,,উনি আমাকে খুব ভালোবাসেন,,,”
“ওওও আচ্ছা,, ভালো হলেই ভালো মা,,,এখনকার দিন কাল খারাপ,, চোখের সামনে দেখি কত মেয়ের সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে,,, তাই মনে সব সময় খারাপ চিন্তা টাই আগে আসে,,,আচ্ছা আমি ঘুমাতে গেলাম,, তুইও তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়িস,,,আবার বেশি রাত জেগে অভ্রের সাথে ফোনালাপ করিস না যেন,,বেচারার কিন্তু অফিস থাকে সকালে”
“ঠিক আছে,,”
কথা গুলো বলেই অনুপমার পিসি চলে যায় তার ঘরে আর সেইদিকে তাকিয়ে অনুপমা বলে ওঠে,,,
“আমাকে ক্ষমা করে দিও পিসি মিথ্যে কথা বলার জন্য,,, এছাড়া যে আর কোনো উপায় ছিল না,,সত্যিটা তো এই যে সেদিনের পর থেকে উনার সাথে আমার একটা বারও কথা হয়নি,,উনি মুক্তি দেবেন আমাকে তাড়াতাড়ি,,,, তাই পারিনি তোমাকে সত্যিটা বলতে,,,সত্যিটা জানলে তুমি সহ্য করতে পারতে না,,আর বাবা জানলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে,,আমার উপর দিয়ে যা হয় হোক কিন্তু তোমরা কষ্ট পাবে এমন কোনো কিছু তোমাদের সামনে আসতে দেবো না আমি,,,”
অনু ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে শোয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিতেই দেখে ওর ফোন বাজছে,,, এত রাতে কে ফোন করেছে ভেবে বিছানার উপর থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে আশা দেবী ফোন করেছেন,,, ও রিসিভ করে বলে,,
“হ্যাঁ মা বলো”
“দাদা এখন কেমন আছেন অনু??
“ভালো আছে এখন”
“আচ্ছা তা তুই কবে বাড়ি ফিরবি?? তুই না থাকলে বাড়িটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে,,,অভ্র কি তোকে কিছু বলেছে যে কবে তোকে নিতে যাবে”??
আশার কথা শুনে অনুপমা ঢুকরে কেঁদে ওঠে,,, তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে থাকে,,,অনেকক্ষণ যাবদ সময় নিয়ে বলে,,,
“মা উনি মনে হয় ভীষণ ব্যস্ত আছেন,,, আমি নাহয় এইদিকের কাজকর্ম মিটিয়ে তারপর চলে যাবো,,,”
“অনু আমি জানি তোর আর অভ্রের মধ্যে হয়তো কোনো সমস্যা চলছে,,,সমস্যাটাকে বেশি বাড়তে দিস না মা,,অভ্র আজকাল কেমন মনমরা হয়ে থাকে জানিস?? আমার একটা কথা শুনবি”??
“হ্যাঁ বলো মা”
” আমি তোর চোখে অভ্রের জন্যে ভালোবাসা দেখেছি,,দেখেছি একজন স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ব্যাকুলতা,,,যাকে এত ভালোবাসিস,,,যার সাথে সারা জীবন থাকতে চাস তাকে কেন ভালোবাসার বাঁধনে বেঁধে রাখতে পারছিস না তুই?? নিজেকে তার কাছে উজাড় করে দে,,,নিজের সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে তার মনের সব জায়গা টুকু জুড়ে নিজের নাম খোদাই করে দে,,,দেখবি সে তোর ডাকে সাড়া দেবে,,, একজন স্ত্রীর ডাকে সাড়া না দিয়ে কোনো স্বামী থাকতে পারে না,,, নিজেদের মধ্যে রাগ অভিমানকে কখনো বেশি বাড়তে দিবি না যা দিনশেষে ভালোবাসার থেকে বড়ো না হয়ে দাঁড়ায়,,,,”
আশার কথা শুনে অনুপমা ফোনের মধ্যেই জোড়ে কেঁদে ফেলে,,,আশা অনুকে আটকায় না,,বরং কাঁদতে দেয়,, তার মতে এতে মনের বোঝা অনেকটা হালকা হয়,,বেশ কিছুক্ষণ পর অনুপমার কান্নার গতি কমে আসলে ওর আর অভ্রের মধ্যে কিছু কিছু সমস্যার কথা বলে আশাকে,,,অযথা হৃদয়ের কথাটা বলে না,,,,অনুর কাছ থেকে সব কিছু শুনে আশা বলে,,
“শোন অনু নারকেল দেখেছিস,,নারকেলের উপরটা দেখেছিস কেমন শক্ত,,কিন্তু ভিতরটা ঠিক তেমনই নরম,,,অভ্র ঠিক তেমনই,,, ওর বাইরে টা শক্ত কিন্তু মনটা ওই নারকেলের ভিতরের অংশের মতোই নরম,,,ওকে বোঝার চেষ্টা কর তুই,,, কি চাই ও??কেন এমন করছে??ওর সাথে খোলাখুলি কথা বল,,,দেখবি ও তোর কাছে ধরা দেবেই,,, আর আমার ছেলেটা ভীষণ ভালোবাসার কাঙ্গাল অনু,,,একবার যদি তোকে ভালোবাসতে শুরু করে তবে সেই ভালোবাসার চাদরে তোকে আজীবন জড়িয়ে রাখবে,,কোনো আঁচ আসতে দেবে না তোর গায়ে,,,আর আমি দেখি ওকে ওই বাড়িতে পাঠাতে পারি কিনা,,,ঠিক আছে রাখছি এখন,,, ঘুমিয়ে পড়,,,বেশি চিন্তা করতে হবে না,,,,
___________________________________________
খুব ভালো আছো ওখানে তাই না,,,এই কদিনের মধ্যে কি একটা বারের জন্যেও মনে হয়নি যে তোমার একটা স্বামী আছে,,যার খোঁজ নেওয়া উচিত তোমার,,,তোমার বিরহে আমি বেঁচে আছি কি না সেটা জানার তো একটাবার দরকার ছিল অনু,,, অবশ্য জানতে ইচ্ছা হবে কেন, ওখানে তো তুমি তোমার পুরোনো প্রেমিকের সঙ্গে ভালোই দিন কাটাচ্ছো,ভালো ভালো ,,, আমিই শুধু সম্পর্ক টা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলাম,,,কিন্তু তুমি তো চলে যাবে আমাকে ছেড়ে,,, আরও একবার প্রেমে পড়েছিলাম নতুন করে,,, তোমাকে না দেখে আমি থাকতে পারছি না অনু,,,হয়তো শেষ বারের মতো তোমাকে দেখতে যাবো,,,
অভ্রের ভাবনার মাঝে তার পি-এ নক করে বলে,,”স্যার আসবো”??
“হ্যাঁ এসো কিছু বলবে”??
“স্যার আজকে একটা মিটিং ছিল বিকেলে,,,”
“আমার আজকে একটা কাজ আছে,,,এই মুহূর্তে আমি বেরোবো,,,তুমি মিটিং টা ক্যানসেল করে দাও,,,ওটা কাল সকালে দেখো করা যায় কিনা”??
“ওকে স্যার”
চলবে,,,,,
(কপি পেস্ট করবেন না,, সবাই রিয়্যাক্ট ও কমেন্ট করবেন,,, যাদের যাদের কাছে গল্প পৌঁছাবে তারা সবাই রিয়্যাক্ট ও গঠনমূলক মন্তব্য করবেন দয়া করে,,,,)
বিঃদ্রঃ – এরপরের দুই তিন পর্ব আমি আমার গ্ৰুপে দেবো,,,,