#রাগে_অনুরাগে
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ১৮
নিস্তব্ধ ঘরে শুধু মাত্র উপরে ঘুরতে থাকা সিলিং ফ্যানের শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না,,প্রায় আধা ঘন্টা ধরে ডাক্তার চেকআপ করছে অনুপমাকে,,,অনুপমা বিছানায় শুয়ে আছে,, আর তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে অভ্র,,,নিস্তব্ধতা ভেঙে অভ্র বলে ওঠে,,
” এনিথিং সিরিয়াস ডাক্তার রায় ?? ওর এখনো সেন্স আসলো না,,”
” মি.চৌধুরী চিন্তা করবেন না,,,মিসেস চৌধুরীর শরীর ভিষণ দুর্বল,, উনি মনে হয় ঠিক মতো খান না,,আর দীর্ঘক্ষণ যাবদ বৃষ্টিতে ভেজার ফলে উনি সেন্স হারিয়েছেন,,, তবে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই,,আপনাকে একটু মিসেস চৌধুরীর খাওয়া দাওয়ার প্রতি নজর দিতে হবে,, নাহলে উনি আবার হয়তো অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন,,”
” ওকে ডাক্তার রায়” অনুপমার দিকে এক নজর তাকিয়ে ডাক্তারের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে অভ্র,,,,
” আমি একটা ইনজেকশন দিয়েছি,,উনার এক ঘন্টার মধ্যেই সেন্স আসবে মেইবি,,,আর কিছু মেডিসিন লিখে দিয়েছি,,কাইন্ডলি এগুলো আনিয়ে নেবেন,,,মিসেস চৌধুরীর সেন্স আসলেই উনাকে অল্প কিছু খাইয়ে এই মেডিসিন গুলো খাইয়ে দেবেন,, আশা করি আর কোনো সমস্যা হবে না,,, বাই চান্স যদি কোনো প্রবলেম হয় তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন মি.চৌধুরী,,, আজ তাহলে আসি,,”
ডাক্তারের সাথে কথা বলে অভ্র তাকে বিদায় দেয়,,, তারপর কাছাকাছি রেস্টুরেন্ট থেকে নরমাল চিকেন উইথ ভেজিটেবল স্যুপ অর্ডার করে আনিয়ে নেয়,,,
“অভ্রবাবা বলছি ওষুধ গুলো তো পিকু আনতে গেল,,ও ফিরে এলে বলো যে আমি ওকে পড়তে যেতে বলেছি,,,আর হ্যাঁ তোমার চা টা টেবিলের উপর ঢাকা দেওয়া আছে,,, আমি তাহলে এখন আসি,,,” কথা গুলো এক নিশ্বাসে বলেন পিকুর মা,,,
” ঠিক আছে কাকিমা,,,”
” বাবা কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই আমাকে ডাকবে,,ইতস্তত করবে না,, ঠিক আছে,,”
“ঠিক আছে কাকিমা”
পিকুর মা চলে যেতেই অভ্র বাড়ির সদর দরজা বন্ধ করে দেয়,, তারপর পড়নের ভিজে জামাটা খুলে সেটা চেয়ারের পিছনে মেলে দেয়,,,ডাইনিং টেবিলে থাকা চায়ের কাপ টা নিয়ে অনুপমার ঘরে আসে,,তারপর এদিক সেদিক তাকিয়ে একটা চেয়ার দেখতে পেয়ে সেটাই বসে থাকে অনুপমার সেন্স না আসা পর্যন্ত,,,
__________________________________________
প্রায় এক ঘন্টা পর অনুপমার জ্ঞান ফেরে,,,আস্তে আস্তে চারপাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে ও কোথায়,, যখন বুঝতে পারলো যে নিজের ঘরে আছে তখন ও অবাক হলো,,,কারণ ওর যতদূর মনে আছে ও ছাদেই ছিল,, তারপর আস্তে আস্তে সব কিছু মনে পড়তেই ও তড়িৎ বেগে বিছানা ছেড়ে উঠতে যায়,,ফলে মাথাটা ঘুড়ে পড়তে যেয়েও যায় না তার আগেই অভ্র ওকে নিজের বলিষ্ঠ বাহুবন্ধনীতে নিবদ্ধ করে,,,
অনুপমার এইরকম চাঞ্চল্যকতায় বিরক্ত হয়ে অভ্র বলে “ঠিক এই কারণে আমার মাথাটা গরম হয়ে যায় অনুপমা,, এতো তাড়াহুড়ো কিসের জন্য?? কোনো ট্রেন ধরবে তুমি ইডিয়ট?? শরীর যে দুর্বল তোমার সেটা বোঝো না”???
অভ্রের কাছে এইরকম ধমক খেয়ে মাথা নিচু করে নেয় অনুপমা,, তারপর রিনরিনে কন্ঠে বলে,” আমি আসলে বুঝতে পারিনি যে মাথাটা হঠাৎ ঘুড়ে যাবে”
অনুপমার কথা শুনে অভ্র ওকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে,,”তোমার শরীর দুর্বল,,, ডাক্তার বলেছে কিছু খেয়ে মেডিসিন নিতে,,তুমি বসো আমি স্যুপ নিয়ে আসছি,”
অভ্রের কথা শুনে অনুপমা দ্বিধান্বিত কন্ঠে বলে,,” স্যুপ আপনি এখন কোথায় পেলেন?? আর ডাক্তার?? ডাক্তার এসেছিল নাকি বাড়িতে”??
” হ্যাঁ,, তুমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলে,,,অনেকবার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করেছি,,কিন্তু কোনো লাভ হয়নি,,,তখন বাধ্য হয়েই আর কি ডাক্তার ডাকতে হলো,,আর স্যুপ টা আমি রেস্টুরেন্ট থেকে অর্ডার করে আনিয়েছি,,,”
ছোট্ট করে “ও” বলে অনুপমা ,,,তারপর নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে যে শাড়ি পড়েছিল ও সেটার বদলে অন্য শাড়ি পড়া,,ও শুকনো ঢোক গিলে অভ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে অভ্র খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে ওর সামনে,,, মুহূর্তেই ওর মনে উল্টো পাল্টা চিন্তার আর্বিভাব হয়,,,প্রশ্নবিদ্ধ চোখে অভ্রের দিকে তাকিয়ে বলে ” আমার শাড়ি কে বদলালো?? আর আপনি এইভাবে কেন আছেন”??
অভ্র নিজের ফোনে কি একটা করছিল, কিন্তু অনুপমার কথা শ্রবণ হতেই তক্ষণাৎ ও অনুপমার দিকে তাকায়,,,দু সেকেন্ড লাগে অনুপমার কথার মানেটা বুঝতে,,এবং বুঝতে পেরে আপনাআপনি কপাল কুঁচকে আসে ওর,,,হাত দিয়ে নিজের কপাল স্লাইড করে বলে ” তোমার ওই ছোট্ট মাথায় এত প্রেশার দিও না,,,পিকুর মা এসেছিলেন,, তিনিই তোমার শাড়ি বদলে দিয়েছে,,, আর আমার শার্ট ভিজে বলে এই দেখো,,, ‘চেয়ারের দিকে দেখিয়ে’ এখানে মেলে দিয়েছি শুকানোর জন্যে,, বুঝতে পেরেছো”???
অনুপমা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দেয় যে সে বুঝতে পেরেছে,, অভ্র আবার বলে,,,
” আর তাছাড়া যে জিনিস আমার নয়,, আমার কাছে আছে শুধুমাত্র অন্যের গচ্ছিত সম্পদ হিসাবে,,, সে জিনিসে এই অভ্র চৌধুরী ফিরেও তাকায় না,,,তুমি বসো আমি স্যুপ নিয়ে আসি,,”
অভ্রের প্রত্যেকটা কথার ধার অনুপমার হৃদয়কে ক্ষত বিক্ষত করে,,, বুকের ভেতর তীব্র ব্যাথা অনুভব করে অনু,,,ক্রমেই হৃদয়ে তৈরি হয় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সুপুরুষ টির প্রতি তীব্র অভিমান,,, কেন সে বোঝে না তার সামনে বসে থাকা নারী হৃদয়ের কথা??? নিজেকে সামলে অনু বলে,,
” থাক মি.চৌধুরী তার আর দরকার নেই,,, আমি ওইসব স্যুপ খাবো না,,”
“তাহলে কি খাবে?? মানে তুমি কি চাইছো আবার অসুস্থ হতে?? আর আমি তোমার সেবা করবো বাড়ি না ফিরে?? মেডিসিন গুলো তো নিতে হবে “??
” আমার সেবা করতে আপনাকে বলিনি,,আর এখানে থাকতেও আপনাকে বলিনি,,,আমি শুধু বলেছি স্যুপ খাবো না,,দুপুরের জন্য আমি রান্না করেছিলাম সেটাই খাবো আর তারপর মেডিসিন নিয়ে নেবো”
” ও তাহলে তো ভালোই হলো,,ঠিক আছে আমার জন্যেও খাবার রেডি করো,,আমি হাত মুখ ধুয়ে আসছি”
” আপনি দুপুরে খাননি?? আর ভালো কথা আপনি এই বাড়িতে কি করছেন?? আপনার তো আসার কথা না”
” দুপুরে কাজের ব্যস্ততার জন্যে আর খাওয়া হয়নি,,আর এই পথ দিয়েই ফিরছিলাম বলে ভাবলাম একেবারে আঙ্কেলের সাথে দেখা করে যায়,, আর,,,”
” আর কি”??
” সেটা খাওয়ার পরে বলবো,,, তোমার সাথে আমার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আছে একটা,,,”
“ঠিক আছে,, তার আগে আপনি আমার আলমারিতে দেখুন আপনার একসেট জামা পান্ট আছে,,বিয়ের পর যখন এখানে এসেছিলেন তখন বাবা কিনেছিলো আপনার জন্যে,,, কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আপনাকে আর দেওয়া হয় নি কারণ আপনি একবেলা থেকেই আমাকে রেখে চলে গিয়েছিলেন,,”
” নিশ্চয়ই ইচ্ছা করে যায়নি সেদিন অনুপমা”??
“সেটা আমি বলিনি,,,আপনি আসুন ডাইনিং টেবিলে আমি অপেক্ষা করছি,”
____________________________________________
গোলাপি রঙের কাগজী ফুলে ও পাতায় বৃষ্টির ফোঁটা যখন পড়ে তাদের সতেজ করতে ব্যস্ত ঠিক তখনই ঝিঁঝিঁ পোকারা দল বেঁধে তাদের উপস্থিতি জানান দিতে ব্যস্ত,,, অনুপমার ঘরে বড়ো জানালা টার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অভ্র,,হাতে তার ধোঁয়া ওঠা গরম কফি,,,অনুপমাকে তাড়াতাড়ি কাজ গুছিয়ে এই ঘরে আসতে বলেছে সে,,,কিছু দরকারি কাজ আছে যা তাকে আজকেই শেষ করতে হবে,,,,
প্রায় আধাঘণ্টা পর অনুপমা ঘরে আসে,,,এসে দেখে অভ্র ঘরের বড়ো জানালা খুলে দাঁড়িয়ে আছে,, তা দেখে ও সেদিকে এগিয়ে যায়,,,
“আপনি এই জানালা খুলে রেখেছেন কেন মি.চৌধুরী?? দেখছেন না বৃষ্টির ছাট আসছে,,নিজেও তো অল্প অল্প ভিজে গেছেন” কথা গুলো বলে জানালা বন্ধ করে দেয় অনুপমা,,
অভ্র কিয়ৎক্ষণ অনুপমার দিকে তাকিয়ে থাকে,,তারপর কফির মগটা টেবিলের উপর রেখে দেয়,,,অভ্রের এইরূপ নিরবতা দেখে অনুপমা বলে,,,
” কি বৈঠক করবেন বলছিলেন আমার সাথে”??
অভ্র টাউজারের পকেটে হাত রেখে বলে ” হ্যাঁ দরকারি কিছু কাজ বাকি আছে অনুপমা,, সেই গুলোয় শেষ করতে এসেছি আজ এখানে,,সবকিছু তো শেষ করতেই হতো একদিন,,”
অভ্রের কথাগুলো শুনে অনুপমার বুকটা কেঁপে ওঠে,, সেই সাথে চোখ ছলছল হয়ে আসে তবুও চুপ করে থাকে,,,অভ্র আবার বলে,,
” আমি মূলত পেপারস গুলো নিতে এসেছি এখানে,,,কাল যখন সাইডের কাজ দেখতে এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম তোমাকে আর মি.মুখার্জি কে দেখলাম পার্কের সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে,,,আমি তোমাদের কাছেই যাচ্ছিলাম তারপর ভাবলাম তোমাদের কোয়ালিটি টাইম নষ্ট করার কোনো মানেই হয় না,,তাই আর যায়নি,, কিন্তু,,”
“কিন্তু কি”??নিজের চোখের জল আড়াল করে বলে অনুপমা,,,
” কিন্তু আজ ফিরে আসার সময় মনে হলো ডিভোর্সের পেপারস গুলোতে হয়তো তোমার সাইন করা হয়ে গেছে,, তাই ভাবলাম,,”
অভ্রকে কথা বলতে না দিয়েই অনুপমা বলে ওঠে,,” তাই ভাবলেন যাওয়ার সময় নিয়ে যায়,,, এত তাড়া মি.চৌধুরী?? এতটাই তাড়া আপনার যে লাস্ট দু সপ্তাহ ধরে এটার পিছনেই পড়ে ছিলেন”
” হমম হুহু অনুপমা তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে,, তাড়া টা আমার না,,,তোমাদের আই মিন তোমার আর ওই হৃদয়ের,,, যাক সে সব কথা,,,তার আগে তুমি বলো পেপারস গুলো ওইভাবে এলোমেলো হয়ে কেন পড়ে ছিলো ডাইনিং টেবিলের উপর?? আর সাইন কেন করোনি?? তুমি কি হৃদয়ের জন্যে অপেক্ষা করছিলে??? ও এবার বুঝতে পেরেছি তুমি বাড়ির সদর দরজা খুলে হৃদয়ের জন্যে অপেক্ষা করছিলে তাইতো?? হৃদয় চলে আসলে তুমি সাইন টা করে দিতে,,কি সত্যি বলছি তো”???
অনুপমা স্তব্ধ হয়ে যায় অভ্রের কথা গুলো শুনে,,, সেই সাথে বেরিয়ে আসে আঁখিযুগল থেকে অবিশ্রান্ত বারিধারা,,, একটা মানুষ ওর সম্পর্কে এত নিচ ভাবনা কি করে ভাবতে পারে?? আর সে যদি হয় তার স্বামী,,, তার ভালোবাসার মানুষ,,,,
” কি হল অনুপমা চুপ করে আছো কেন?? তুমি কাঁদছো?? কাঁদছো কেন?? মি.মুখার্জির সাথে কিছু হয়েছে নাকি?? আমি কথা বলবো উনার সাথে”??
অভ্রের এমন কথা শুনে অনুপমা নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেনি,, কান্নারত অবস্থায় বলে ” দয়া করে আপনি চুপ করুন মি.চৌধুরী,, চুপ করুন,,, আর কত ভাবে আমাকে শাস্তি দেবেন?? বলুন আর কত ভাবে?? ভালোবাসা টা কি অপরাধ?? যদি অপরাধ হয়েই থাকে তাহলে আপনিও অপরাধী নীলাঞ্জনাকে ভালোবেসে,,”
“শাস্তি তোমাকে আমি কি ভাবে দিলাম অনুপমা,,, আর ভালোবাসা টা অপরাধ নয়,,,আমি তো তোমাকে শাস্তি দিচ্ছি না,,বরং তোমাকে সব বাঁধন থেকে মুক্ত করে দিচ্ছি,,, আর নীলাঞ্জনা সে আমার জীবনের সব থেকে বড়ো ভুল ছিলো,, এছাড়া কিছুই না,,”
অভ্রের কথা গুলো শুনে অনুপমা বলে ” সত্যিই কি একটা কাগজে সই করলে সব সম্পর্ক থেকে মুক্ত হওয়া যায় মি.চৌধুরী?? পিছুটান কি থাকে না”??
” মা বাবার সঙ্গে তো তোমার যোগাযোগ থাকবে অনুপমা,,,তারা তোমাকে কখনো ভুল বুঝবে না,, সেই কথাটা আমি তোমাকে দিতে পারি,,, আর এক মাস পরে হয়তো আমি বিদেশে চলে যাবো,,তখন তুমি মি.মুখার্জির সাথে যে সংসার করার স্বপ্নটা দেখতে সেটা বাস্তবায়ন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে,,,এক্ষেত্রে তো আমার মনে হয় তোমার কোনো পিছুটান থাকার কথা না অনুপমা,,, কি আমি ঠিক মানে সত্যি বলছি তো”??
” একটা মানুষ কি করে এত নিষ্টুর হতে পারে মি.চৌধুরী?? কি করে এত নির্দয় হতে পারে”?? অশ্রুসিক্ত নয়নে অভ্রের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে অনুপমা,,,
অনুপমার প্রশ্নে অভ্রের ভ্রুযুগল কুঞ্চিত হয়ে আসে,,অতঃপর বলে ওঠে” কি বলতে চাইছো তুমি”??
” কি বলতে চাইছি,, বলতে চাইছি যে আপনি যা জানেন যদি বলি সেসব সব ভুল,, মিথ্যে,,,”
” তাহলে সত্যিটা কি অনুপমা”
” সত্যিটা হল এটাই যে,,,না থাক সত্যিটা আপনার না জানলেও চলবে,,পেপারস গুলো কোথায়?? দিন সাইন করে দেবো,,”
“অনুপমা আমি কি জিজ্ঞাসা করছি,,কোন সত্যি মিথ্যের কথা বলছো?? সত্যিটা কি”??
চোখের জল মুছে বলে” সত্যিটা হল এই যে আমার কষ্টের দিন শেষ হতে চলেছে,,,দিন পেপারস গুলো,, আমি সাইন করে দি,,আপনার তো আবার দেরি হয়ে যাচ্ছে,,কোথায় রেখেছেন বলুন,,, ডাইনিং টেবিলে তো দেখলাম না” কথা গুলো বলে অনুপমা পাগলের মতো খুঁজতে লাগে কাগজ গুলো,,,অভ্র চুপচাপ শুধু অনুপমার পাগলামী দেখছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে,,,একটা সময় বিছানার উপর পেপারস গুলো দেখে অনুপমা বলে “ও এখানে রেখেছেন দাঁড়ান সাইন করে দিচ্ছি” বলেই পেনটা নিয়ে যেই নিজের নামটা লিখতে যাবে,, ঠিক তখনই অভ্র অনুপমার একটা বাহু ধরে নিজের দিকে টানে,,,আচমকা হাতে টান পড়ায় অনুপমার হাত থেকে পেনটা নীচে পড়ে যায়,, আর নিজের টাল সামলাতে না পেরে অভ্রের বুকের সাথে ধাক্কা খায়,,,
যে বুকটার জন্যে এতদিন অপেক্ষা করেছে,, আজ সেই বুকের মাঝে নিজেকে পেয়ে অনুপমা আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি,, ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে অনুপমা,,, অভ্র ওকে কাঁদতে দেয় কিছুটা সময়,,,,আজ অনুপমা কাঁদবে,,নিজের সব কষ্টকে উজাড় করে দেবে এই পাষাণ হৃদয়ের অধিকারীর কাছে,,,দীর্ঘসময় অতিক্রম হওয়ার পর যখন কান্নার গতি কমে আসে ঠিক তখন অভ্র অনুপমার মাথার উপর একটা হাত রেখে বলে,,,
” আমি যদি সব মিথ্যেই জানি,,তবে সত্যিটা কি অনুপমা?? আমার বুকের মাঝে কেন এইভাবে কাঁদলে তুমি”???
চলবে,,,
(কপি পেস্ট করবেন না,,, রিয়্যাক্ট ও গঠনমূলক মন্তব্য করবেন,,, আগামী পর্ব গ্ৰুপে দেবো)