#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-৪০(২য় ভাগ)||
৮০।
লিনাশাকে দেখে মিসেস লাবণি বাকরুদ্ধ হয়ে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছে। আহি লাবণির সামনে এসে বলল,
“মাম্মা, কেমন সারপ্রাইজ দিলাম? খালামণিকে বাসায় নিয়ে এসেছি।”
লিনাশা বুকে হাত গুঁজে লাবণির সামনে এসে দাঁড়ালো আর বলল,
“আপু, কেমন আছো?”
লাবণি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বলল, “তুই এখানে?”
“কেন বিশ্বাস হচ্ছে না?”
“বিশ্বাস তো হচ্ছে না। নিশ্চয় এখানে আসার কোনো কারণ আছে।”
লিনাশা হাসলো। আহির দিকে হাত বাড়িয়ে দিতেই দু’জনে জোরে করতল স্পর্শ করে হাসলো। লাবণি বলল,
“ষড়যন্ত্র করছো তোমরা?”
আহি বলল,
“আরেহ, মাম্মা। খালামণি বিয়ের দাওয়াত দিতে এসেছে। আর সে প্রথম বার বোনের শ্বশুড় বাড়িতে এসেছে, আর তুমি এমন রিয়েক্ট করছো?”
“কি মাম্মা, মাম্মা লাগিয়ে রেখেছো?”
“কেন আপনিই তো নিজেকে নিজের বয়সের চার বছরের ছোট একজনকে মেয়ে বলে দাবি করেন। ভাবতেই অবাক লাগছে আপনার যখন চার বছর বয়স তখনই আপনি মা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।”
লিনাশা মুচকি হেসে বলল,
“আপু, তুমি এখনো যথেষ্ট স্মার্ট রয়ে গেছো। দুলাভাইয়ের সাথে বাইরে বের হলে নিজেকে কি বলে পরিচয় দাও?”
লাবণি চোখ পাকিয়ে বলল,
“রিজওয়ান আমার স্বামী।”
“আই নৌ। বাই দা ওয়ে, আমার হবু বরটা যথেষ্ট হ্যান্ডসাম। তুমি ছবি দেখবে?”
লিনাশা ফোন বের করে নায়ীবের ছবি দেখালো। লাবণি ভ্রূ কুঁচকে লিনাশার ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। আহি বলল,
“লিনু, তোর বিয়েতে তো সেই মজা করবো। এনগেজমেন্ট, হলুদ, মেহেদি, আক্দ, এরপর একটা গার্লস পার্টি, তারপর বিয়ে। আফটার অল বিয়ে নিয়ে সব মেয়েদেরই স্বপ্ন এমন থাকে।”
লিনাশা হেসে বলল,
“হ্যাঁ, সবই হবে। ধুমধাম করে বিয়ে করবো আমি।”
লিনাশা এবার লাবণির দিকে তাকিয়ে বলল,
“আপু তোমারও তো সেই স্বপ্ন ছিল!”
লাবণি তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
“আয়োজন করে বিয়ে হয় নি তো কি হয়েছে? চট্টগ্রামের নামকরা ব্যবসায়ীর স্ত্রী আমি। আমি চাইলে এর চেয়ে বেশি আয়োজন করে বিয়ে করতে পারি।”
আহি শব্দ করে হেসে উঠলো। লিনাশা আহিকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
“আহি, দিস ইজ নট ফেয়া’র। এভাবে হাসছিস কেন? আপু চাইলে দুলাভাইয়ের সাথে আবার বিয়ে করতে পারে। সমস্যা তো অন্যদিকে। দুলাভাইকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ কন্ট্রোভার্সি হবে। আর আপুকে শুনতে হবে সুগা…”
আহি লিনাশাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
“খালামণি, দিস ইজ নট ফেয়া’র। ভালোবাসা কি বয়স মানে, বলো?”
“রাইট আহি, ভালোবাসা বয়স মানে না। কিন্তু লোকে বলে এসব ভালোবাসা নয়। এসব….টেকা”
এরপর লিনাশা গানের সুরে বলল,
“টেকা ও পাখি তুমি উইড়া উইড়া আসো,
উইড়া উইড়া আইস্সা তুমি আমার ডালে বসো।”
লাবণি চেঁচিয়ে বলল, “জাস্ট শাট আপ।”
লিনাশা আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট চেপে বলল,
“ওপস, ভয় পেয়েছি। কি হবে এখন আমার? গণপিটুনি দিয়ে আমাকে উপরে পাঠিয়ে দেবে?”
আহি বলল,
“থাম না লিনু, বাদ দে। টাকা কি শুধু বয়ষ্ক শিল্পপতির কাছেই থাকে? আমাকে দেখ। তাজওয়ার খান আমার ফিয়োন্সে। সে খানস গ্রুপের এমডি প্লাস হ্যান্ডসাম, ড্যাসিং, আর খুব রিচ। সে তো উল্টো আমার প্রেমে ডুবে মরছে। বিয়ের পর না-কি তার কোম্পানির অর্ধেক শেয়ার আমার নামে লিখে দেওয়া হবে। আমেরিকাতে বাড়ি কিনছে আমার জন্য। কষ্ট করে আর বুড়ো শিল্পপতির দিকে নজর দেওয়ার কি দরকার বল? আমি তো উলটো বিয়েই করতে চাচ্ছি না। কিন্তু বাবা আর বাবার মিসেস তো আমাকে জোর করেই বিয়ে দিচ্ছে। ভালোই হলো, তাজওয়ার আমাকে রানীর মতো করে রাখবে। আর সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে, মিসেস লাবণি আমার সৎ মা হয়েও আমার জন্য একটা ইয়াং রাজা খুঁজে এনেছে।”
লিনাশা আহির হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে বলল,
“আপুর মন একটু বেশিই বড়। আমি আপুর জায়গায় হলে রিজওয়ান কবিরকে নয়, তাজওয়ার খানের মতোই একটা রিচ ছেলেকে খুঁজে নিতাম।”
আহি বলল,
“আরেহ কি যে বলিস! এটা তো ভালোবাসা। ভালোবাসা তো বয়স মানে না।”
আহি লিনাশাকে নিজের রুমে এনে দরজা বন্ধ করে দিলো। তারপর দু’জনই গলা জড়িয়ে লাফাতে লাগলো। আহি লিনাশাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
“মাম্মা, তো জ্বলে-পুড়ে ছাই ছাই হয়ে যাচ্ছে।”
লিনাশা হেসে বলল,
“এবার যদি মিসেস লাবণি একটু নড়েচড়ে বসে!”
“যদি বসে, সেদিন ব্রেকিং নিউজ আসবে। নিজের স্বামীকে তালাক দিয়ে, সৎ মেয়ের ফিয়োন্সেকে বিয়ে করে নিলো এক লোভী মহিলা। দুইটা আপদ থেকে মুক্ত হলো মিস ওয়াসিকা কবির আহি।”
“হিপ হিপ হুররে।”
“সিরিয়াসলি লিনু, কাল হুট করে আমার মাথায় এই উদ্ভট বুদ্ধিটা কীভাবে যে এলো! যদিও খুব খারাপ বুদ্ধি। কিন্তু এদের নিয়ে ভালো কোনো চিন্তায় আমার মাথায় আসে না। এরা সবাই স্বার্থপর। এবার আমি একটু স্বার্থপর হয়ে নিজেকে বাঁচাই। আর ওই তাজওয়ার খান এখনো আমার স্বামী হয় নি। এর আগেই যদি একটা সেট আপ করতে পারি, তাহলে আমি আমার বাবাকে ফিরে পাবো। আর ওই তাজওয়ার খানকেও আর বিয়ে করতে হবে না।”
“ইনশাআল্লাহ তোর ইচ্ছেটা যাতে পূরণ হয়। চিন্তা করিস না। আমি তোর পাশে আছি। ওই তাজওয়ারকে আমি আমার দুলাভাই বানাবো না। আমার দুলাভাই হবে সুইট।”
আহি হাসলো। বলল,
“দুলাভাই টুলাভাই হবে না। আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নেই। মায়ের কাছে যেতে পারলে, আমি মায়ের সাথেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেবো।”
“বিয়ে না করে থাকা যায় না। বিয়ে তো সমাজেরই একটা নিয়ম। সমাজে থাকলে বিয়ে করতেই হবে। তোর কোনো পছন্দ নেই?”
আহি মলিন হাসলো আর বলল,
“আপতত তো নেই।”
লিনাশা আহির গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
“আমি খুঁজে এনে দেবো। দেখিস, রাজকুমার আসবে আমার টুনুমুনুর জন্য।”
আহি চোখ বড় বড় করে বলল, “টুনুমুনু!”
“মনে আছে, আমাদের কলেজের আমিনা ম্যাম তোকে টুনুমুনু বলে ডাকতো! কিছুদিন আগে ম্যামের সাথে দেখা হয়েছিল। তোর কথা জিজ্ঞেস করলো। আরো বলছিলো, উনার ছেলে না-কি বেশ নামকরা উকিল। বউ খুঁজছে ছেলের জন্য।”
আহি ভ্রূ কুঁচকে বলল,
“আমিনা ম্যাম? পুষ্পের চাচী?”
“হ্যাঁ, হ্যাঁ। উনিই। পুষ্পের কথাও জিজ্ঞেস করলো।”
“উনার ছেলেই হয়তো উজ্জ্বল। উজ্জ্বল পুষ্পের কাজিন। উনিই আমাকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। উনার কারণেই আমার কনফিডেন্স বেড়েছে।”
“তাই না-কি! ছেলেটা দেখতে কেমন রে?”
“আছে, ঠিকঠাক।”
“হুম হুম, তোর সাথে মানাবে তো?”
“লিনু, প্লিজ। আমি ওভাবে চিন্তা করি নি।”
“রাদকে নিয়ে কি চিন্তা করিস?”
আহি ভ্রূ কুঁচকে বলল,
“এখানে রাদ এলো কেন?”
“নায়ীব বললো, রাদ বেশ কেয়ার করে তোর।”
“রাদ আমার বন্ধু। শুধু বন্ধু না, খুব ভালো বন্ধু।”
“বন্ধুত্বে কি প্রেম হয় না? জ্ঞানী-গুণীদের মতে ছেলে-মেয়ে শুধু বন্ধু থাকতে পারে না। তারা প্রেমে পড়েই।”
“আমি তো পড়ি নি।”
“তোর মাথাটা ঘেঁটে আগের স্মৃতিগুলো বের করতে হবে। দেখিস, তারপর প্রেমে পড়বি।”
“না রে, প্রেমে আর পড়তে চাই না। এবার যদি কিছু হয় দায়িত্ববোধ থেকেই হোক। অনেকে তো দায়িত্ব নিয়েই মায়ায় জড়ায়। কিন্তু প্রেম বড্ড খারাপ রোগ। একবার প্রেমে পড়লে অনেক কষ্ট পেতে হয়। মানুষটার দেওয়া সব আঘাত মনে হয় পাহাড়ের চেয়েও ভারী, সমুদ্রের চেয়েও গভীর, পাথরের চেয়েও শক্ত। প্রেমে আর পড়তে চাই না। এবার কেউ অধিকার বোধ নিয়েই হাত এগিয়ে দিক। অন্তত প্রেম না থাকলেও বলতে পারবো, মানুষটা আমার। আমার মানুষ, আমার স্বামী, আমার বলতে যেই শান্তিটা অন্যদের পেতে দেখেছি, শুধু সেই শান্তিটা অনুভব করতে চাই। নয়তো দেখা যাবে, আবার প্রেমে পড়েছি, আর মানুষটা হাত ছেড়ে দিলো। সে অন্যের হাত ধরে সুখী হলো, আর আমি আবার সেই অন্ধকারে হারিয়ে গেলাম।”
লিনাশা আহিকে জড়িয়ে ধরলো। আহি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। মিনমিনিয়ে বললো,
“আমার জীবনে আর কেউ প্রেম হয়ে না আসুক।”
(***)
পলি আপু আজ অনেক বছর পর একত্র হয়েছে। চারজনের চেঁচামেচিতে একপাশে চুপচাপ বসে আছে নায়ীব, রাদ, লাবীব আর আফিফ। আলাদা টেবিলে বসেছে তারা। লিনাশা, আহি, পদ্ম আর পুষ্প নিজেদের সাথে তাদের বসতে দেয় নি। পদ্মের শাশুড়ি আফিফা বেগম পুত্রবধূকে একা বের হতে দেওয়া পছন্দ করেন না। তিনি বেশ রক্ষণশীল মানুষ। তাই আফিফকে বাধ্য হয়ে পদ্মকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে আসতে হলো। এদিকে আফিফ আসবে শুনে লিনাশা নায়ীবকে সাথে নিয়ে এসেছে। আর পুষ্প তো লাবীবকে ছাড়া কোথাও যায় না। আর লাবীব আর আহি যেখানে যাচ্ছে রাদ তো যাবেই।
মোটামুটি হট্টগোল বাঁধিয়ে দিয়েছে চার বান্ধবী। পুষ্পের চঞ্চল স্বভাবটা তার হাঁটা-চলায় দৃশ্যমান। কিন্তু পদ্মকে এমন উচ্চস্বরে হাসতে দেখে আফিফ রীতিমতো ঘুরেফিরে দেখছে। তবে এসবের মধ্যে আহিকে অনেকটা শান্ত দেখাচ্ছে। বরাবরের মতোই তার চঞ্চলতা থামিয়ে দেওয়ার জন্য আফিফের এক দর্শনই যথেষ্ট ছিল। নায়ীবও আজ সামনা-সামনি তার রোগীকে আক্রমণ করা ভাইরাসটিকে আবিষ্কার করলো। সে একবার রাদের দিকে তাকাচ্ছে, আরেকবার আফিফের দিকে। নায়ীবের এবার বেশ অস্বস্থি লাগছে। তার আশেপাশে এতো এতো মানসিক রোগী যে তার এই মুহূর্তে নিজেকেই রোগী মনে হচ্ছে। আফিফের চোখ-মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে বেশ মানসিক চাপে আছে, রাদের চোখেমুখেও উদ্বেগ। একমাত্র লাবীবকে দেখেই দু’দণ্ড কথা বলার ইচ্ছে জাগলো নায়ীবের। কিন্তু লাবীব একটু বেশিই ফুরফুরে মেজাজে আছে। সে ব্যস্ত ফোনে গেইমস খেলায়। তা দেখে কৌতুহল নিয়ে নায়ীব রাদকে জিজ্ঞেস করল,
“রাদ, তুমিও কি ফোনে গেইমস খেলো?”
রাদ অবাক হয়ে নায়ীবের দিকে তাকালো। লাবীব নায়ীবের প্রশ্নে ফোন বন্ধ করে একপাশে রেখে দিলো। তার মনে হলো, নায়ীব তাকে খোঁচা মেরে বলেছে। কারণ রাদের কাছেই শুনেছে, নায়ীব একজন ডাক্তার। লাবীবের মনে হয়, ডাক্তাররা বেশিক্ষণ ফোন চালানো পছন্দ করে না। কারণ লাবীবের বাবাও একজন ডাক্তার। তিনি যখনই ঘরে আসেন, লাবীবকে ফোন না চালিয়ে বাইরে ঘুরে আসতে বলেন। লাবীবের কয়েক মুহূর্তের জন্য মনে হলো সে বাবার সামনে বসে আছে। সে মনে মনে বলল,
“আমাকে এ কোন গম্ভীর গোল টেবিল বৈঠকে বসিয়ে দিয়েছে, পুষ্প। মনে হচ্ছে আংকেলদের ভীড়ে বসে আছি। বেশি দেরী হলে হয়তো এখানেই ঘুমিয়ে যাবো।”
এদিকে নায়ীব রাদের দিকে উত্তরের অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে। রাদ লাবীবের দিকে তাকিয়ে বলল,
“হ্যাঁ আমিও খেলি।”
নায়ীব এবার আফিফের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আপনি খেলেন?”
আফিফ ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলল, “না!”
নায়ীব লাবীবকে ইঙ্গিত করে বলল,
“ওকে দেখে মনে হলো, বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে। আর আমার দু’পাশে বসা বাকি দুই জন বেশ গম্ভীর। তাই জানার ইচ্ছে হলো, শুধু ফুরফুরে মেজাজের মানুষগুলো গেইমস খেলে না-কি গম্ভীর মানুষেরাও খেলে। রাদ যখন বললো, খেলে। তখনই বুঝলাম, গেইমস খেলা না খেলা নিয়ে কারো মনের অবস্থা বোঝা যায় না।”
আফিফ আর রাদ এবার স্বাভাবিক হয়ে বসলো। নায়ীব তা দেখে মুচকি হাসলো। আফিফ পরিচয় পর্ব দিয়েই কথাবার্তা শুরু করল। এবার রাদ আর লাবীব হাঁ করে অপর দুই ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে আছে। আফিফ আর নায়ীব বেশ জমিয়ে কথাবার্তা বলছে। পদ্ম সেটা খেয়াল করে বলল,
“আমাদের মতো ওদের মধ্যেও বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।”
লিনাশা এক বার আফিফের দিকে তাকালো। আরেকবার নায়ীবের দিকে। বেশ রাগ উঠলো তার। ইচ্ছে করছিলো নায়ীবের মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দিতে, আর আফিফের ঠোঁটে আলতারাপ লাগিয়ে দিয়ে বলতে,
“আমার বান্ধবীকে কাঁদিয়েছিস, খচ্চর পোলা। এখন আমার হবু বরের সাথে ভাব জমাচ্ছিস? তুই কখনো আমার বরের বন্ধু হতে পারবি না। শুধু আহির বরই আমার বরের বন্ধু হবে। ইচ্ছে তো করছে স্টেপলার দিয়ে মুখটা একদম বন্ধ করে দিতে।”
আহি লিনাশার হাত ধরে ফিসফিস করে বলল,
“মনে মনে কাকে গালি দিচ্ছিস?”
“তুই কীভাবে বুঝলি?”
“বাক্য উচ্চারণ না করলেও তোর এক্সপ্রেশন দেখলে যে কেউ বুঝবে।”
লিনাশা হেসে বলল,
“আমার মায়ের প্রথম সন্তানের বোনের দুলাভাইয়ের প্রাক্তন শাশুড়ির ছেলের বোনের মেয়ের জন্য দোয়া করছি, যাতে খারাপ দৃষ্টি থেকে মুক্তি পায়।”
আহি ভ্রূ কুঁচকে লিনাশার প্যাঁচানো সম্পর্কটা মেলানোর চেষ্টা করছে। যদিও আহি বুঝতে পেরেছে, মেয়েটা আহি নিজেই। কিন্তু সম্পর্কের সূত্রটা মেলানোর আগ্রহ দমাতে পারলো না সে। বেশ আগ্রহ নিয়েই সে সম্পর্ক মেলাচ্ছে। এর মধ্যে পদ্ম আর পুষ্পও যোগ দিয়েছে।
চলবে-