উধয়রনী #লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ ||পর্ব-৪৪||

0
560

#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-৪৪||

৮৮।
ক্লান্ত শরীরে বাসায় পা রাখতেই মুনিয়া খালা হন্তদন্ত হয়ে আহির কাছে এলেন। আহি মুনিয়া খালার উদ্বিগ্ন মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কি হয়েছে, খালা?”

তিনি ভীত কন্ঠে বললেন,
“তুমি ঘরে কেন আইছো, মা। পালাইয়া যাও। ওদের মতলব ভালো লাগতেছে না।”

আহি কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই মিসেস লাবণি দম্ভভরে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলেন। তার ঠোঁটে ফুটে উঠেছে শয়তানি হাসি। আহি তার দিকে ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়ে আছে। মিসেস লাবণি আহির সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললেন,
“প্রেমিকের বাসায় রাত কাটিয়ে এসেছো?”

আহি রাগী স্বরে বলল,
“উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না। আপনি কি জানেন গতকাল রাতে আমার সাথে কি হয়েছিল?”

“কি আর হয়েছিল? তোমার হবু স্বামী তোমাকে একটু ভালোবাসতে চেয়েছিল, ব্যস।”

“জোর করতে চেয়েছে, ভালোবাসতে চায় নি। এটাকে ভালোবাসা বলে না।”

“তবে তোমার চোখে ভালোবাসা কি?”

এদিকে রিজওয়ান কবির আহির গলার স্বর শুনে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলেন। তার চোখে মুখে ভয়ংকর রাগ। আহি বাবার রাগী চেহারা দেখে বলল,
“বাবা, আমি বিপদে পড়েছিলাম। তাই বাসায় আসতে পারি নি। রাতে পদ্মের বাসায় আশ্রয় নিতে হয়েছে।”

রিজওয়ান কবির গম্ভীরমুখে বললেন,
“এখন কেন এসেছো?”

আহি বাবার প্রশ্নে কি উত্তর দেবে বুঝতে পারছে না। সে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। তখনই সে খেয়াল করলো তাজওয়ার খান সিঁড়ি বেয়ে নামছে। আহি তাজওয়ারকে বাসায় দেখে রাগী স্বরে বলল,
“এই মানুষটার জন্য আমি কাল রাতে বাসায় আসতে পারি নি।”

রিজওয়ান কবির বললেন,
“তাজওয়ার তোমার কি ক্ষতি করেছে?”

“কাল রাতে গাড়িতে ও আমার সাথে বেয়াদবি করেছে। আমি নিষেধ করার পরও আমার সাথে বাজে ব্যবহার করেছিল।”

রিজওয়ান কবির তাজওয়ারের দিকে তাকালেন। তাজওয়ার আহির কাছে এগিয়ে আসতে আসতে বলল,
“কাছে আসতে চেয়েছি। আর এর যথেষ্ট কারণ আছে। এর প্রধান কারণ এই মেয়ে আমাকে বিয়ে না করার জন্য তার বন্ধুদের সাথে মিলে আমার বিরুদ্ধে প্ল্যান করছে। আমাকে তো সে ভালোই বাসে না। কারণ তার মনে এখনো তার পুরোনো প্রেমিক।”

তাজওয়ার শেষ কথাটি বলেই আহির গাল চেপে ধরলো। আহি তাজওয়ারের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল,
“ছাড়ো আমাকে। প্লিজ, ব্যথা লাগছে আমার।”

মুনিয়া খালা ব্যস্ত হয়ে বললেন,
“স্যার ছাইড়া দেন। বুঝে নাই মাইয়াডা।”

তাজওয়ার রাগী দৃষ্টিতে মুনিয়া খালার দিকে তাকালো। চুনি তা দেখে ভয়ে কুঁকড়ে উঠলো। তাজওয়ার এবার লাবণির দিকে তাকালো। ইশারায় কি যেন বললো। এরপর লাবণি মুনিয়া খালার হাত ধরে তাকে পাশের রুমে নিয়ে গেলেন। আহি তা দেখে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলো। সে বুঝতে পারলো, হয়তো আজ তার গায়ে হাত তুলবে সবাই। আহি প্রস্তুত ছিল বাবার মার খাওয়ার জন্য। এই কয়েক বছরে উল্টোপাল্টা কিছু হলেই সে বাবার চড় খেয়েছে। অনেক বছর আগে আফিফের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলায়, আহি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল। তখন রিজওয়ান কবির মেয়ের পাগলামো দেখে তাকে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন। আহি বাবার কাছে এসে তার হাত ধরে বলল,
“প্লিজ, বাবা। আমাকে একটু বোঝার চেষ্টা করো। আমি বিয়ে করবো না বলি নি। কিন্তু তাজওয়ারের সাথে স্বাভাবিক হতে আমার সময় লাগবে। আমাকে একটু তো সময় দেওয়া উচিত।”

রিজওয়ান কবির মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বললেন,
“তোমাকে আর কোনো সময় দেওয়া হবে না। এখন আমার দায়িত্ব তোমাকে মুক্তি দেওয়া।”

আহি ভ্রূ কুঁচকে বললো, “মানে?”

“তাজওয়ারের সাথে তোমার বিয়ে হোক না হোক, এখন থেকে আমি তাজওয়ারকে সেই স্বাধীনতা দিচ্ছি। ও এখন থেকে তোমার সাথে যা চায়, তাই করতে পারবে।”

“তুমি বাবা হয়ে এ কথা বলছো? বাবা, ও আমার ক্ষতি করতে চায়ছে।”

এদিকে মিসেস লাবণি চুনি এবং মুনিয়া খালাকে পাশের ঘরে আটকে দিলেন। মুনিয়া খালা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে দরজা খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে লাগলেন। কারণ তিনি জেনে গেছেন, আজ আহির সাথে কি হতে যাচ্ছে।

(***)

আহি রিজওয়ান কবিরের সামনে হাতজোড় করে বলল,
“এভাবে বলো না, বাবা। তুমি আমার অভিভাবক। একটা মেয়ে তার বাবার কাছেই তো নিরাপদ থাকে।”

তখনই পেছন থেকে তাজওয়ার আহিকে জড়িয়ে ধরে তার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,
“আজকের দিনটা আমার জন্য খুব স্পেশাল। কারণ আমি তোমাকে পুরোপুরি পেতে যাচ্ছি।”

আহি তাজওয়ারকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রিজওয়ান কবিরের পেছনে এসে দাঁড়িয়ে নিজেকে আড়াল করে নিলো। খুব ভরসা নিয়ে সে তার বাবার বাহু আঁকড়ে ধরে আছে। তার চোখ ভেজা। সে কাকুতি ভরা স্বরে বলল,
“বাবা, আমার সম্মান নষ্ট হতে দিও না, প্লিজ। তুমি কি আমাকে একটুও ভালোবাসো না?”

রিজওয়ান কবির আহির হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চেঁচিয়ে বললেন,
“না, আমি তোমাকে ভালোবাসি না। আমি তোমাকে ঘৃণা করি। তোমার মা, আর তোমাকে ঘৃণা করি।”

“কি বলছো এসব, বাবা?”

“হ্যাঁ। মিস্টার আফসার কবির, তোমার দাদা আমার সাথে প্রতারণা করেছিলেন। আর সেটা তোমার মায়ের জন্য হয়েছে। তোমার নানা আর আমার বাবা বন্ধু ছিলেন। তাই তো বাধ্য হয়ে তোমার মাকে বিয়ে করতে হয়েছিল। এরপর তোমার দাদা, মৃত্যুর আগে সব সম্পদ তোমার মা আর তোমার নামে লিখে দিয়ে যায়। এই কাজ করে আমাকে অপমান করেছেন তিনি। আমার কোনো প্রয়োজন ছিল না এই সম্পদের। কিন্তু সবার কাছে আমি ছোট হয়ে গিয়েছিলাম। মিস্টার আফসার কবির মৃত্যুর আগে তোমার মাকে বলে গিয়েছিলেন, আমার মতো শয়তানের হাত থেকে তিনি তার সম্পদ বাঁচাতে চান। আমি না-কি শয়তান। তিনি চেয়েছেন তোমার মা এই নরক থেকে সারাজীবনের জন্য মুক্তি পাক। তিনি তো জানতেন আমি কেমন? আফটার অল, বাবা-মার চেয়ে তার সন্তানদের আর কেউ ভালোভাবে চিনতে পারে না। আর আমিও তার ধারণা ভুল প্রমাণ করি নি। তিনি তো তোমার মাকে মুক্তি দিয়ে শান্তি পেতে চেয়েছেন। আমার মতো শয়তানের সাথে বিয়ে দিয়ে তো বেশ অনুতপ্ত ছিলেন তিনি৷ আর আমি তার কবরের শান্তি আরো বাড়িয়ে দিয়েছি। তোমার মাকে তো মুক্তি দিয়েছি। তবে শারীরিক ভাবে দিলেও মানসিকভাবে দেই নি। তুমি আমার অপমানের শোধ তুলবে। তুমি আমার ইনভেস্টমেন্ট, আহি। তোমাকে তাজওয়ারের সাথে বিয়ে দিলে তোমার মা আর আমার পরলোকগত বাবার জীবনের চরম ব্যর্থতা আমাকে মানসিক শান্তি দেবে।”

রিজওয়ান কবিরের কথা শুনে আহির চোখ ভিজে উঠলো। সে বাবার হাত ধরে বলল,
“এসব মিথ্যে জেদের কারণে তুমি তোমার মেয়ের জীবন ধ্বংস করে দেবে?”

“হ্যাঁ। তোমার মাকেই আমি আমার স্ত্রী মানি নি, তাহলে তার সন্তানকে আমি নিজের মেয়ে কেন মানবো? তোমার কি মনে হয়, আমি তোমাকে নিজের কাছে কেন রেখেছি?”

“কেন রেখেছো?”

“তোমার মাকে মানসিক ভাবে কষ্ট দেওয়ার জন্য।”

“তা যাই হোক, আমি তো তোমারই মেয়ে।”

“আই ডোন্ট কেয়ার।”

রিজওয়ান কবির এবার তাজওয়ারের দিকে তাকালেন। তাজওয়ার আহির হাত ধরে তাকে জোর করে টেনে সিঁড়ি বেয়ে উঠাতে লাগলো। তাজওয়ারের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে আহি রিজওয়ান কবিরের পা ধরে বসে বলল,
“বাবা, প্লিজ। তুমি আমার সাথে এমন অন্যায় করো না। আমি তোমার মেয়ে। তুমি আমাকে এভাবে কারো কাছে বিক্রি করে দিও না। আমি এই লোকটাকে বিয়ে করতে চাই না। যাকে আমি বিয়েই করবো না, সে আমাকে কেন স্পর্শ করবে? আর বিয়ে হোক না হোক, একটা মেয়ের সাথে জোরাজুরি করার অধিকার কারো নেই, তার স্বামীরও নেই।”

রিজওয়ান কবির আহির কথায় কান দিলেন না। তিনি আহিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলেন। লাবণিও তার পিছু পিছু উপরে যেতে লাগলো। আর যাওয়ার আগে আহির দিকে তাকিয়ে তীর্যক হাসি হেসে বলল,
“তোমার চ্যালেঞ্জে তুমি হেরে গেছো।”

আহি স্তব্ধ হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে রইলো। তাজওয়ার আহির কাছে এসে তাকে পাঁজা কোলা করে তুলে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো। উঠতে উঠতেই বলল,
“কংগ্রাচুলেশনস, আজ তুমি পুরোপুরি আমার হতে যাচ্ছো। একবার আমার স্পর্শ পেলে, আর কোনো পুরুষের স্পর্শ সহ্য হবে না তোমার।”

আহি কথাটি শুনেই যেন মনে জোর ফিরে পেলো। সে হাত-পা ছোঁড়াছুড়ি করতে লাগলো। তাজওয়ার তাকে টেনে উপরে এনে তারই বিছানায় ছুঁড়ে মারলো। আহি উলটো দিকে ঘুরে তাজওয়ারের হিংস্র চেহারার দিকে ঘৃণাভরে তাকালো।
তাজওয়ারের ঠোঁটে বিশ্রী হাসি। সে শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো। তা দেখে আহির হাত মুঠো হয়ে এলো। সে নিজেকে বিছানা থেকে টেনে তুললো। তাজওয়ার আহিকে উঠতে দেখে তার হাত ধরে ফেললো। আর আহি তাজওয়ারের হাতে কামড় বসিয়ে দৌঁড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। তাজওয়ার দরজা চেপে ধরতেই আহি কাঁপা হাতে দরজাটা ভালোভাবে আটকে দিলো। তাজওয়ার জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দিচ্ছে। ওয়াশরুমের দরজা এতোটাও শক্ত না। এভাবে ধাক্কা দিতে থাকলে আজ আহির রক্ষা নেই। তাই সে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। কারো কাছে যে সাহায্য চায়বে, সেই উপায়ও নেই। আহি ক্লান্ত হয়ে ওয়াশরুমের মেঝেতে বসে পড়লো৷ তাজওয়ার এবার আরো জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দিচ্ছে। এবার দরজার লকটা আলগা হয়ে যাচ্ছে। আহি মুখে হাত চেপে কাঁদছে। নিজেকে ভীষণ অসহায় মনে হচ্ছে তার। তার আপন বাবা তার সাথে এতো বড় ছল করেছে? তিনি একবারও নিজের মেয়ের সম্মানের কথা ভাবলেন না? এমন জঘন্য মানুষকে সে এতোদিন বাবা বলে ডেকেছে, ভাবতেই তার মরে যেতে ইচ্ছে করছে।

আহি হঠাৎ উঠে দাঁড়ালো। তার চোখ-মুখ শক্ত হয়ে গেছে। সে দৃঢ় স্বরে বলল,
“আমি চ্যালেঞ্জে হারবো না। আমি মরে যাবো, তবুও ধর্ষিতা হবো না। আহি এতোটাও ফেলনা নই যে কেউ এসে আমাকে স্পর্শ করে দিয়ে যাবে। এটা আমার সম্মান, আমার শরীর। এখানে শুধু আমার অধিকার। তাই আমি আমার সাথে যা ইচ্ছে করবো, কিন্তু অন্যদের সেই সুযোগ দেবো না।”

আহি এবার এদিক-ওদিক তাকালো। দেয়ালের সাথে লাগানো তাকের উপর হাত হাতড়ে একটা ব্লেড খুঁজে পেলো। ব্লেডটা সে কিছুদিন আগেই সুতা কাঁটার জন্য রেখেছিল। ব্লেডটা হাতে নিয়েই সে চোখ বন্ধ করে শরীরের সব শক্তি দিয়ে হাতের উপর চালালো। একবার নয়, দুইবার নয়, চার-পাঁচবার হাতের উপর ব্লেড চালালো সে। ততোক্ষণে তাজওয়ার দরজা ভেঙে ফেলেছে। সে ভেতরে ঢুকে আহির হাতে রক্ত দেখে তব্ধা খেয়ে গেলো। সেকেন্ড খানিক সে নির্বাক দাঁড়িয়ে ছিল। আহি তাজওয়ারের কাছে এসে তার বুক পকেটে ব্লেডটা ঢুকিয়ে দিয়ে কাঁপা কন্ঠে বলল,
“তোমার হিংস্র মন কি মৃত মানুষকে ছাড় দেয়?”

তাজওয়ার আহিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
“কি করলে তুমি এটা?”

“তোমাকে হারিয়ে জিতে গেছি। আজ যদি আমি বেঁচে ফিরি, আল্লাহর কসম তোমাদের সবাইকে আমি জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বো।”

তাজওয়ার আহিকে কোলে নিয়ে দ্রুত পদে নিচে নেমে এলো। তাজওয়ারের চেঁচামেচি শুনে মিসেস লাবণি ও রিজওয়ান কবির রুম থেকে বেরিয়ে এলেন। তারা বেরিয়েই দেখলেন মেঝেতে রক্ত। আহির হাত থেকে রক্ত বেয়ে বেয়ে মেঝেতে পড়ছে, আর মেঝে লাল হয়ে যাচ্ছে। আহির এখনো জ্ঞান আছে। কিন্তু বেশ ঘুম পাচ্ছে তার। নিভু নিভু দৃষ্টিতে সে আকাশের দিকে তাকালো। মনে মনে বলল,
“সরি, হয়তো মৃত্যুর পর আমার জন্য অনেক বড় শাস্তি লিখে রেখেছো তুমি। কিন্তু আমি নিরুপায়। আমাকে একটু যদি সাহায্য করতে তুমি! কতোবার তোমার কাছে কেঁদে কেঁদে চেয়েছি, মুক্তি দাও। মুক্তি দাও। তবে এটাই কি আমার জীবনের মুক্তি ছিল?”

চলবে-

(দুঃখিত, গল্পে এতোদিন অনেক প্যারা ছিল। ইনশাআল্লাহ আর মাত্র কয়েক পর্ব। পরবর্তী পর্বগুলো গল্পের মূল ক্লাইমেক্স। এরপর গল্প শেষ হয়ে যাবে। আর কিছুদিন অপেক্ষা।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here