#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_৫২
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
বাতাসে বিরহ বইছে। অনুভূতিরা শূন্য হয়ে গিয়েছে। মস্তিষ্কের একাংশ ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। মনের আনাচে কানাচে দুঃখরা আনন্দ করছে। এখন যে তাদের সময়! সব সময় যদি সুখই রাজত্ব করে, তাহলে তারা রাজত্ব করবে কখন? এখনই যে সুবর্ণ সুযোগ এই সুযোগটা বুঝি হাতছাড়া করা যায়! বিরহরা চৌধুরী বাড়ির প্রতিটি আঙ্গিনা দখল করে নিয়েছে। পাখিরা আর সুর তুলে না। ফুল গাছে ফুল ফুটে না। গাছ গুলো কেমন ঝিমতে শুরু করে দিয়েছে। অযত্নে রাখলে তো লাহায়ও মরিচা ধরে যায়। সেখানে ফুল গাছে সকালে পানি না দিলে বিকেলেই মিইয়ে যায়। একমাস ধরে পানি না দিলে তার অস্তিত্ব তো মুছে যাবেই। রাইমা বেগম চলে গিয়েছে একমাস হয়েছে। প্রাকৃতিক নিয়মে সবার জীবন আগের ন্যায় ছুটে চলেছে। সময় তো কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময়ের তো কোনো দুঃখ নেই। যদি থাকতো তাহলে এভাবে বিরতিহীন ভাবে ছুটতে পারত! কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকেনি। শুধু থেমে গিয়েছে মেহেভীনের মন৷ হাসোজ্জল মেয়েটা মুহুর্তের মধ্যে নিরব হয়ে গিয়েছে। সেই সাথে কেঁড়ে নিয়েছে কিছু মানুষের ভালো থাকা। সে কি জানে না! তার ভালো থাকার ওপরে একটা মানুষের ভালো থাকা নির্ভর করে। তবে কেন এত নিরবতা? মেহেভীন আস্তরণের বসে চিন্তায় মগ্ন ছিল। তখনই রিয়াদ চৌধুরী আসে। মেহেভীন রিয়াদ চৌধুরীকে দেখে উঠে দাঁড়ায়। ভদ্রতা বজায় রেখে বলল,
–কিছু বলবেন আব্বা?
–তোমার সমস্যা কি বলতে পারো? তুমি এমন ভাব করছ যেন পৃথিবীতে শুধু তোমার মা-ই মারা গিয়েছে। আমার ছেলেটার মা ছোট বেলায় মারা গিয়েছে। তুমি অর্ধেক জীবন তোমার বাবা-মাকে পাশে পেয়েছ। কিন্তু আমার ছেলে সেটাও পাইনি। মুনতাসিম বুক ভরা হাহাকার নিয়ে বড় হয়েছে। তোমার চিন্তায় ছেলেটা আমার আধমরা হয়ে গিয়েছে। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে তোমাকে আগলে রাখার চেষ্টা করছে। আর তুমি তাকে দুঃখ দিয়ে মুড়িয়ে ফেলছ! সব সময় নিজের কথা ভাবলেই হয় না। বিপরীত পক্ষের মানুষটার কথাও ভাবতে হয়। তোমরা দু’জন ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করো না। আগের মতো হাসো না। এগুলো কি মেহেভীন? আমার পরিবারকে ভালো রাখার দায়িত্ব আমি তোমাকে দিয়েছিলাম। আর তুমি পরিবারটাকে বিষাদে পরিপূর্ণ করে দিলে। আজ থেকে যদি তুমি স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা না করেছ। তবে আমাকে এ বাড়ি ছাড়তে হবে। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস সুখ দেখে ছাড়তে চাই, দুঃখ দেখে নয়। তোমরা যখন ঠিকই করে নিয়েছ। তোমরা সুখে নয় দুঃখেই সুখী। তাহলে আমিও না হয় সুখের সন্ধানে গৃহ ত্যাগ করব।
–আর হবে না আব্বা। আমি সবকিছু আবার আগের মতো করে দেওয়ার চেষ্টা করব। রিয়াদ চৌধুরী কোনো বাক্য উচ্চারন না করেই কক্ষ ত্যাগ করল। মেহেভীনের বুকটা ভারি হয়ে আসতে শুরু করেছে। কথা গুলো সত্য হলে-ও ধারালো অস্ত্রের মতো মেহেভীনের হৃদয় এসে বিঁধল। যে মানুষটার জন্য তার বাঁচতে ইচ্ছে করে। যে মানুষটা না থাকলে তার জীবন মূল্যহীন হয়ে যেত। ধরনীর সকল মানুষের কাছে তুচ্ছতাচ্ছিল্য পেত। যে মানুষটা তাকে তার সাম্রাজ্যের রাণী বানিয়েছে। তাকে দিয়েছে পাহাড় সমান সন্মান। সেই মানুষটাকে সে প্রতিনিয়ত আঘাত করে যাচ্ছে। মানুষটা তো আমার দেওয়া যন্ত্রনা সহ্য করে নিচ্ছে। সে আমাকে যেমন ভাবে সহ্য করছে। অন্য কেউ সহ্য করবে না এটাই স্বাভাবিক। এই যে তার মা মারা যেতে না যেতেই সবাই তাকে ভুলে গেল। সে মা’রা গেলেও বুঝি মানুষ তাকে ভুলে যাবে। আজকাল অদ্ভুত অদ্ভুত চিন্তাধারা এসে মস্তিষ্কে বাসা বাঁধে। আজকাল মুনতাসিমকে হারিয়ে ফেলার ভিষণ ভয় হয়। এই যে সে মুনতাসিমকে অবহেলা করছে। মুনতাসিম সেটা অমৃতের ন্যায় সদরে গ্রহণ করে নিচ্ছে। আচ্ছা মুনতাসিম না থাকলে তার কি হবে? কথাটা মস্তিস্কে হানা দিতেই অন্তর আত্মা কেঁপে উঠল। সে বুকে পাথর চাপা রাখবে। দুঃখ গুলো মাটি চাপা দিবে। আর মুনতাসিমকে দুঃখ দিবে না। মুনতািসমের ও ভালো থাকার অধিকার আছে। যে মানুষটা সবার ভালো চাইল। দিনশেষে সেই মানুষটার ভালো থাকাই সে কেঁড়ে নিল। আজ থেকে সে স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করবে। তবে কি চাইলেই স্বাভাবিক হওয়া যায়?
–আপনি কি মানুষ! আপনি মেয়েটার সাথে এমন ব্যবহার না করলেও পারতেন। সারাদিন খালি নিজের ছেলের ভালো থাকার কথা ভাবেন। মেয়েটার ভেতর দিয়ে কি যাচ্ছে। সেটা আপনি দেখতে পাচ্ছেন না। আপনাদের পুরুষ মানুষের এই একটা সমস্যা আপনারা নারীদের কিছুতেই বুঝতে চান না। আপনারা এতটা স্বার্থপর কেন বলেন তো? সাহেলা চৌধুরীর কথায় আড়দৃষ্টিতে অর্ধাঙ্গিনীর দিকে দৃষ্টিপাত করল রিয়াদ চৌধুরী। কণ্ঠে গম্ভীরতা এনে বললেন,
–মানুষ বেশি আদর পেলে কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা হারায়। এই মুনতাসিম তাকে এতটা ভালোবাসা দিচ্ছে, আগলে রাখছে। মেয়েটা কি স্বাভাবিক হতে পেরেছে? সে ভেতরটা আরো দুর্বল হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে দু’জনই শেষ হয়ে যাবে। একটা মানুষকে শক্ত করার জন্য কিছু বিষাক্ত বাক্যই যথেষ্ট। পর মানুষ পরের মতো আচরণ করেছি। আমারটা আমাকে বুঝতে দাও। আমি কেন এমন আচরন করেছি। সেটা সময় হলেই বুঝতে পারবে। মেয়েটাকে ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে মে’রে ফেলতে পারব না। বাক্য গুলো শেষ করে স্থান ত্যাগ করল রিয়াদ চৌধুরী।
ঘড়ির কাঁটায় রাত বারোটা ছুঁই ছুঁই। সারাদিনের ক্লান্তি কায়াতে নিয়ে বাড়িতে ফিরল মুনতাসিম। সমস্ত মুখশ্রী বিষন্নতায় আচ্ছন্ন। মনটা বিষাদে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। প্রেয়সীর ভালো থাকাটা যখন আঁধারে রুপ নেয়। তখন নিজের ভালো থাকাটা আমাবস্যার রজনীর ন্যায় হয়ে যায়। বুকভরা হতাশা নিয়ে নিজের কক্ষে প্রবেশ করল মুনতাসিম। চার দেওয়ালের আবদ্ধ কক্ষ জুড়ে অন্ধকারের রাজত্ব। এটা নতুন কিছু নয় অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। সে ফ্রেশ হতে চলে গেল। আজ কতগুলো দিন হয়ে গেল আনন্দ করে আহার করা হয় না। আনন্দ গুলো যেন বিলীন হয়ে গিয়েছে। সে ফ্রেশ হয়ে এসে নিঃশব্দে মেহেভীনের পাশে শুয়ে পড়লো। তখনই কর্ণকুহরে কারো গম্ভীর কণ্ঠ স্বর ভেসে এল,
–না খেয়ে শুয়ে পড়ছেন কেন?
–আপনি ঘুমাননি?
–আমাকে প্রতিদিন ঘুমের ঔষধ খাওয়ান কেন?
–আপনি যেন শান্তিতে রজনী পার করতে পারেন, তাই।
–আর নিজে অশান্তিতে থাকেন। নিদ্রাহীন রজনী পার করেন। এই যে আমার পেছনে এত ছুটেন ক্লান্ত হন না।
–মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হব না।
–খাবার উপরে নিয়ে আসব নাকি নিচে গিয়ে খাবেন?
–আপনি না খেয়ে ঘুমাবেন। আর আমি খেতে যাব!
–আমার সাথে আপনার সাথ?
–অবশ্যই।
–আমি দুই হাঁড়ি ভাত খাব। আপনি খাবেন?
–চলুন। কথা গুলো শেষ করেই মুনতাসিম আস্তরণ ত্যাগ করল। মেহেভীন উঠে কেশগুলো ঠিক করতে করতে কক্ষের আলো জ্বলিয়ে বাহিরে চলে গেল। মেহেভীনের পেছনে পেছনে মুনতাসিমও গেল। মেহেভীনের স্বাভাবিক আচরণে মুনতাসিম একটু অবাক হলো! তবুও মেহেভীনকে বুঝতে না দিয়ে সে মেহেভীনের সাথে ডাইনিং টেবিলে বসল। মুনতাসিমে সমস্ত মুখশ্রী কেমন চকচক করছে। মেহেভীনের স্বাভাবিক আচরণ ক্ষণিকের জন্য হলে-ও মুনতাসিমের বিষন্নতা দূর করে দিয়েছে। মেহেভীনের হাসোজ্জল মুখশ্রী মুনতাসিমের সারাদিনের ক্লান্তি এক নিমিষেই শেষ করে দিল। মেহেভীন খাবার বেড়ে মুনতাসিমের সামনে দিল। নিজেও কিছুটা খাবার বেড়ে নিল। খাবার সামনে নিয়ে মলিন মুখশ্রী করে বসে আছে। কণ্ঠ স্বর স্বাভাবিক থাকলে-ও মুখশ্রীতে বিষন্নতা বিদ্যনাম। মেহেভীনের দিকে দৃষ্টি যেতেই মুনতাসিম মেহেভীনের সামনে এক লোকমা ভাত তুলে ধরল। মেহেভীন কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই ভাত টুকু মুখে পুরে নিল। মেহেভীনের আঁখিযুগল রক্তিম বর্ন হতে শুরু করেছে। অশ্রুকণা এসে চোখের কার্ণিশে এসে জমা হয়েছে। মুনতাসিম যত্নসহকারে অশ্রু ঝড়ার আগেই মুছে দিল। আদুরে ভাবে মেহেভীনকে নিজের বুকের মধ্যে আগলে নিল। মেহেভীনকে বুকের মধ্যে রেখে খাইয়ে দিতে থাকলো। মেহেভীন অসহায়ত্ব মাখা কণ্ঠে বলল,
–আপনি না থাকলে আমার কি হতো? আপনাকে ছাড়া আমি বাঁচব কিভাবে? আপনি কখনো আমাকে ছেড়ে যাইয়েন না। আমি আপনাকে আর কখনো কষ্ট দিব না। আপনি আমাকে একটু সময় দিন। আমি নিজেকে স্বাভাবিক করে ফেলব।
–আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি। আপনি ততক্ষণ রানীর মতো বাঁচবেন। আপনি এমন এক রাজার রানী, যে রাজার রাণীকে আঘাত করার কথা স্মরন হতেই প্রতিটি মানুষের হৃদয় কাঁপে। এই রাজ্য আপনার আপনি আপনার রাজ্যে যেভাবে খুশি থাকবেন। আপনার দুঃখ হলে কাঁদবেন। আপনি সুখ অনুভব করলে, চারিদক হাসির প্রতিধ্বনিতে মুখরিত করে রাখবেন। আপানাকে কেউ গোপনে আঘাত করলে আপনি আমাকে গোপনে স্মরন করবেন। বাকিটা বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব আমার। এই মানুষটা মন খুলে কথা বলে এটা মেহেভীনের ভিষণ ভালো লাগে। হৃদয় শীতল করা তার প্রতিটি বাক্য। দুঃখ গুলো কিছু সময়ের জন্য চাপা পড়ে যায়। মেহেভীন দু’হাতে মুনতাসিমের আঁকড়ে ধরল। তা দেখে মুনতাসিমের অধরের কোণে হাসির রেখার দেখা মিলল। দু’জনের প্রণয় দেখে রিয়াদ চৌধুরী বুকটা প্রশান্ত হলো। সে চা খাবার জন্য আসছিল। দু’জনকে খাবার টেবিলে দেখে দু’টি চরন স্থির হয়ে যায়। সাহেলা চৌধুরী রাগান্বিত হয়ে বলল,
–এভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছেন? লজ্জা করছে না আপনার! আজকে আপনাকে চা খেতে হবে না। কক্ষে ফিরে চলুন। রিয়াদ চৌধুরী অর্ধাঙ্গিনীর কথায় লজ্জিত বোধ করল। সে কোনো বাক্য উচ্চারন না করেই হনহন করে চলে গেল। সাহেলা চৌধুরী এবার বুঝলেন। রিয়াদ চৌধুরী কেন মেহেভীনকে কড়া বাক্য শুনিয়েছিল। কিছু আঘাত ভালোবাসা দিয়ে নয় আঘাতপ্রাপ্ত মানুষটাকে আঘাত দিয়েই শক্ত করতে হয়।
চারদিকে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। শেহনাজ খুব সাবধানতা অবলম্বন করে বাড়ি ফিরল। কতগুলো প্রহর কাটিয়ে দু’টি মানুষ মন খুলে কথা বলার মুহূর্তটা ভিষণ সুন্দর। কিন্তু কিছু সুন্দর মুহূর্তের সাক্ষী হতে গিয়ে কিছু সত্যের মুখোমুখি হবার যে ব্যাপারটা! সেটা ভিষণই অদ্ভুত। শেহনাজ সাবধানতা অবলম্বন করে-ও শেষ রক্ষা পেল না। অন্ধকারের মধ্যেই কারো সাথে ধাক্কা খেল সে। মেহেভীন চিৎকার করার আগেই শেহনাজ মেহেভীনের মুখ চেপে বলল,
–ভাবি আমি শেহনাজ চিৎকার করো না। কথা গুলো বলেই মেহেভীনের মুখ থেকে হাত সরিয়ে দিল। মেহেভীন বিস্ময় নয়নে শেহনাজের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। শেহনাজের মুখশ্রীতে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। মেহেভীন গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
–তুমি এতরাত পর্যন্ত বাহিরে ছিলে শেহনাজ? তুমি এটা জানো না। চৌধুরী বাড়ির মেয়ে-বউরা সন্ধ্যার পর বাড়ির বাহিরে থাকে না। তোমার ভাই জানলে কি অবস্থা হবে, এটা কখনো ভেবে দেখেছ?
–আমার ভুল হয়ে গিয়েছে ভাবি। আমি আর কখনো এমন রাত করে বাড়ি ফিরব না৷ আমি মাকে জানিয়েছিলাম। আজকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্মদিন ছিল। ওর কথা ফেলতে পারিনি বলেই এত রাত হয়ে গিয়েছে।
–শেহনাজ তুমি কি ম’দ খেয়েছ? তোমার শরীর থেকে ম’দে’র গন্ধ আসছে।
–তুমি এভাবে আমাকে জেরা করছ কেন? আমি কেমন মেয়ে তুমি জানো না ভাবি? আমার ফ্রেন্ডরা খেয়েছে কসম করে বলছি ভাবি। আমি এসব খাইনি। তুমি ভাইকে কিছু বলো না ভাবি। ভাই জানলে আমাকে শেষ করে ফেলবে। আমাকে একটা সুযোগ দাও।
–তুমি নিজের কক্ষে যাও। আর কখনো এমন করো না। মেহেভীনের থেকে অনুমতি পেতেই শেহনাজ দ্রুত নিজের কক্ষে চলে গেল। মেহেভীনের মস্তিষ্ক বলছে। শেহনাজ মিথ্যা বলেছে। শেহনাজ কথা বলার সময় শেহনাজের মুখশ্রী দিয়ে মদের বিশ্রী গন্ধ নাসারন্ধ্রে এসে ঠেকছিল। মেহেভীন অশান্তি চায় না বলেই বিষয়টা চেপে গেল।
লা’শে’র ফ্রিজিং ড্রয়ারটা খুলতেই রক্তবিহীন সাদা বর্ণের দেহটা বের করল যুবক। সে খুব দ্রুত লা’শ’টা বের করতে চাইছে। যেকোনো মুহূর্তে এই লা’শ’টার খোঁজ মুনতাসিম পেয়ে যেতে পারে। এই লা’শে’র সন্ধান তো মুনতাসিমকে পেতে দেওয়া যাবে না। মুনতাসিম লা’শ পর্যন্ত পৌঁছে যাবার আগেই লা’শ’টা’কে সরাতে হবে। যুবকের সমস্ত কায়া ভয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে। যুবকে তাড়াহুড়ো করতে দেখে লা’শ পাহাড়া দেওয়া গার্ডটা বলল,
–লা’শ নিয়ে কোথায় যাবেন?
–আমার রেখে যাওয়া লা’শ আমি যেখানে খুশি সেখানে রাখব। আপনাকে এত কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না। আমার সামনে থেকে সরে যান না হলে খু’ন করে ফেলব। যুবকের কথায় সরে দাঁড়াল মানুষটা। বরফের ন্যায় শীতল দেহটা নিয়ে ছুটে চলেছে যুবক। কিছু পথ যেতেই কালো পোশাক পড়া ভারি সুঠাম দেহের লোক এসে যুবককে ধরে ফেলল। যুবক বজ্রকণ্ঠে হুংকার দিয়ে উঠল।
–আমাদের আশিটা মেয়ে দেওয়ার কথা ছিল স্যার। আমরা ঊনআশি মেয়ে জোগাড় করতে পেরেছি। আর একটা মেয়ে খুঁজে পাচ্ছি না। এত দ্রুত এত মেয়ে তোলা অসম্ভব ব্যাপার ছিল স্যার। জিহানের কথায় জাফর ইকবাল গা-ছাড়া ভাব নিয়ে আস্তরণে শায়িত হলেন।
–তোমরা এত চিন্তা কেন করছ? মুনতাসিমের অর্ধাঙ্গিনী আছে না। তাকে দিয়েই আমরা আশিটা পূর্ণ করে দিব। এবার সময় এসে গিয়েছে। তোমরা চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে। সুযোগ পেলেই মুনতাসিমের অর্ধাঙ্গিনীকে তুলে নিয়ে আসবে। জাফর ইকবালের কথায় জিহান সম্মতি জানিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করল।
চলবে…..
(কতগুলো ঘটনা স্কিপ করে দিলাম। তা-ও যেন সমাপ্তি পর্ব ছুঁইতে পারছি না। এটায় হাজার রেসপন্স না হলে গল্প লেখতে বসছি না। আগের পর্বে হয়নি তা-ও দিয়েছি। কারন দেওয়ার কথা ছিল। এবার কিন্তু দিব না হু।)