#তোমার_মনের_মধ্যিখানি 🌼
মিমি_মুসকান
#পর্ব_২৩
“মিস চশমিশ এভাবে আর কতোক্ষণ বসে থাকবে!
“যতক্ষণ ইচ্ছা, আপনার কি? – চেঁচিয়ে বলে উঠল নিঝুম!
শান্ত থতমত খেয়ে গেল। নিঝুম চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। শান্ত চোখে চোখ রাখতে পারল না। সরিয়ে ফেলল। রাগে ফুঁসছে নিঝুম। আজ নাকি আহনাফ আসবে না। তার গার্লফ্রেন্ড’র সাথে টাইম স্পেন করবে। কথাটা শুনেই মাথায় র*ক্ত চড়ে গেছে তার। এসব কোন কথাবার্তা। হুট করে এলো আর গার্লফ্রেন্ড হয়ে গেল নাকি। কিভাবে হয় এসব!
শান্ত হালকা কাশল । নিঝুম তার দিকে ফিরে কর্কশ গলায় বলে উঠল, “কি হয়েছে?
“কিছু না!
“তাহলে এখানে কি করছেন?
“কিছু না। আচ্ছা তোমার মন কি বেশি খারাপ!
নিঝুম দাঁতে দাঁত চাপল। ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল, “কেন? আপনাকে বলবো কেন? আপনি জানেন গতকাল কি হয়েছে আমার সাথে। কতোটা কষ্ট পেয়েছি আমি।
শান্ত মুখ বন্ধ করে নিল। নিঝুম মুখ সামনে ফিরিয়ে বলতে লাগলো, “এতোদিন কোন খবর ছিল না, হুট করেই এসে হাজির হলো। আর হলো তো কবে সেদিন কিনা আমি… ( বলেই ঠোঁট কামড়ে উঠলো )
“আসলে আমিও জানতাম না ও আসবে, হুট করেই..
নিঝুম মুখ ফিরে তাকাল শান্ত’র দিকে। শান্ত চুপ হয়ে গেল। নিঝুম বলে উঠল, আপনি জানতেন!
শান্ত উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “কোন ব্যাপারে?
“আহনাফের গার্লফ্রেন্ড ছিল, হ্যাঁ আপনি তো ওর বেস্ট ফ্রেন্ড আপনি তো জানবেন’ই! কিন্তু তবুও আপনি আমায় কেন বললেন..
বলেই দাঁড়িয়ে গেল। শান্ত পিছিয়ে যাচ্ছে। নিঝুমের মুখের রঙ পাল্টে গেল। সে রেগে যাচ্ছে, শান্ত ঠোক গিলল। নিঝুম চেঁচিয়ে উঠে বলল, “তবুও আপনি আমার সাথে এটা কিভাবে করতে পারলেন! অশান্ত’র বাচ্চা।
বলেই পিছনে ফিরে বেঞ্চি থেকে তার ব্যাগ নিয়ে অশান্ত’র দিকে ছুঁড়তেই দেখল অশান্ত নেই। পালিয়ে গেছে! নিঝুম তার পিছনে দৌড়াতে লাগল। নিঝুম আজ কুরুক্ষেত্র বাঁধিয়ে ছাড়বে। চোখে মুখে রাগের ছাপ। দৌড়ে যাচ্ছে অশান্ত’র পিছনে। চশমিশ আজ রেগে গেছে, পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ঘুরছে তারা। শান্ত দৌড়ে এসে আহিম কে তার সামনে দাঁড় করিয়ে দিল। নিঝুম এসে হাঁপাতে লাগল।
“আপনি কিভাবে পারলেন আমার সাথে এমনটা করতে!
“আরে চশমিশ আমার কথা..
“সব দোষ আপনার। আপনার জন্য হয়েছে সবকিছু!
বলেই ধপাস করে ব্যাগ দিয়ে বারি মা*রল। আ*ঘাত টা শান্ত:র না খেয়ে খেলো আহিম। সে লাফিয়ে বলে উঠল, “আরে এ কি করছো?
“আপনি সরুন সামনে থেকে। আজ তো এই অশান্ত:র কাবাব করে খাবো আমি।
“তো খাও না আমায় মার*ছো কেন? আর কি আছে তোমার ব্যাগে, খুব জোড়ে লাগছে আমার।
অশান্ত আহিম কে ধরে ঘুরিয়ে যাচ্ছে। নিঝুম তার পিছনে পিছন ঘুরছে। দূর থেকে তানিশা তাকিয়ে আছে। একটু পর পর’ই কোল্ড ড্রিংক এ চুমুক দিচ্ছে সে। রিয়া বলে উঠল, “বাহ কি বন্ধুত্ব দেখছিস!
“হুম খুব ভালোই দেখছি!
দিয়া ছুটে এসে খবর দিল, “এই শুনলি,
“কি?
“তিশা এসেছে!
রিয়া চেঁচিয়ে উঠে বলল, “কি?
তানিশা শান্ত ভাবেই বসে রইল। তার দৃষ্টি নিঝুমের দিকে। রিয়া আর দিয়া দুজনেই তাকিয়ে আছে তানিশার দিকে। কথা বলার সাধ্যি এখন কারো নেই। কিন্তু তারা দুজনেই অবাক, তানিশার নিশ্চুপতা দেখে। তানিশা এবার দুদিকে চোখ বুলিয়ে বলল, “কি হলো?
“না মানে তিশা এসেছে..
“হ্যাঁ আমি জানি, গতকাল এসেছে! আহনাফ তাকে পিক করতে গেছে আর তিশা এখন আহনাফের বাড়িতে তার সাথে!
দুজনেই চুপ হয়ে একে অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করল। তানিশা হুট করেই উঠে দাঁড়াল। অতঃপর সামনে হাঁটতে লাগল সে। তানিশার এমন নিরব থাকাটা তারা মেনে নিচ্ছে না!
শান্ত কোনমতে দৌড়ে ভার্সিটির পিছনে এসে থামলো। অনেকটা হাঁপিয়ে গেছে সে। সেখানে দৌড়াতে দৌড়াতে নিঝুমও চলে এলো । সেও হাপাচ্ছে। শান্ত দম নিয়ে বলল, “তুমি এখান অবদি এলে!
“আপ… আপনাকে ছাড়বো না আমি।
“আগে নিজে ঠিক মতো দাঁড়িয়ে নাও;
নিঝুম মাথা নেড়ে দু মিনিট ঠিক হয়ে দাঁড়াল। ঘন ঘন শ্বাস ফেলে তাকাল শান্ত’র দিকে। “আপনার সাথে বোঝাপড়া আছে আমার!
শান্ত চোখ ছোট ছোট করে বলল, “কোথাও যাচ্ছি না!
নিঝুম হুট করে ব্যাগ দিয়ে সজোরে বারি মারল অশান্ত কে। শান্ত বারি খেয়ে খানিকক্ষণ চুপ থেকে বলল, “কি আছে তোমার আগে, সত্যি অনেক লেগেছে আমার।
নিঝুম মুখ চেপে আবারো মারতে নিলো। তখনি শান্ত ব্যাগ টা ধরে ফেলল। ছুঁড়ে বাইরে ফেলতেই দেখা গেল এর ভেতর নানা রকমের পাথর। অবাক কন্ঠে জিজ্ঞেস করল, “তুমি এগুলো এনেছো আমায় মারতে!
নিঝুম মাথা নাড়ল। শান্ত এক পা এগিয়ে এসে বলল, “তোমার মাথা কি গেছে নাকি।
নিঝুম এবার হাত পা দিয়ে’ই মারতে শুরু করল। এক পর্যায়ে রেগে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো, “সব দোষ আপনার! আপনি জেনেও কেন আমায় এই কথা বললেন।
“চশমিশ আমার কথা শুন। আমি তোমায় মিথ্যে বলি নি। হ্যাঁ আমি তিশা’র কথা জানতাম কিন্তু এই কয়েক বছর ধরে ওর সাথে টাচ এ ছিলাম না। আর ও আসবে কি না এতেও শিউর ছিলাম না। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করেই..
“কি হঠাৎ করেই! কি হঠাৎ করেই! আপনি জানেন কতোটা কষ্ট লেগেছিল আমার। কতোটা কেঁদেছি আমি…
বলতে বলতে নিঝুমের গলা ধরে গেল। সে কেঁদে ফেলল।শান্ত নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। অতঃপর বলতে লাগলো, “এই চশমিশ! মিস চশমিশ কেঁদো না। কেঁদো না। ঝুম কাঁদছো কেন? কেঁদো না!
কিন্তু নিঝুম থামার নাম নিচ্ছে না। তার কান্না যেন আরো বেড়ে গেল। শান্ত তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কোন কথাই কানে দিচ্ছে না সে। নিঝুম কাঁদতে কাঁদতে বলতে শুরু করল, “আপনি জানেন না, আমি কতোটা কেঁদেছি। বাসায় ফিরতে ফিরতে কতোটা কেঁদেছি। বাসায় এসে কতোটা কেঁদেছি, সারারাত কতোটা কেঁদেছি।
নিঝুমের কথা শুনে শান্ত নিশ্চুপ। তার মনে হচ্ছে সে খুব বড় অপরাধ করে ফেলেছে। সে এগিয়ে এলো। খানিকটা নিঝুমের কাছে গিয়ে তার মাথায় হাত বোলাতে লাগল। নিঝুমের কান্না আরো বাড়ছে। হেঁচকি উঠে গেছে তার। নাক আর কান দুটো লাল হয়ে গেছে মুহুর্তেই! শান্ত ঠোঁট ভিজিয়ে আরেকটু এগিয়ে তাকে এক হাত দিয়ে আগলে নিল। নিঝুম এসে ঠেকেছে তার বুকের সাথে। শান্ত অস্থির! নিঝুম হুট করেই শান্ত’র অন্য হাত খামচে ধরে বলল, “আপনি জানেন আমার কতোটা খারাপ লেগেছিল, যখন আহনাফ ওই মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরল। তাকে চুমুও খেল। বলতে বলতে সে চুপ হয়ে গেল।
শান্ত এখনো তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নিঝুমের কান্না এখন থেমে গেছে। কিন্তু তার পুরো শরীর এখনো কাঁপছে। শান্ত মুখ ফুটে বলে উঠলো, “আচ্ছা মিস চশমিশ আর কেঁদো না। সব দোষ আমার। আমার’ই উচিত হয় না জেনে তোমাকে বলা। আচ্ছা আই এম সরি!
সব কথাটুকু কানে না নিলেও এই কথাটা নিঝুম কানে নিল। সে মুখ তুলে খানিকক্ষণ অশান্ত’র মুখের দিকে তাকাল। অশান্ত’র কপালে ভাঁজ; “কি হলো?
নিঝুম স্পষ্ট স্বরে বলল,
“অশান্ত; আপনি আমায় সরি বললেন!
শান্ত যেন হতচকিয়ে গেল। সে দ্রুত সরে গিয়ে বলল, “হ্যাঁ মানে না! আমি কেন তোমায় সরি বলবো। এই কথা তুমি ভাবলে কি করে?
“না অশান্ত আমি ঠিক শুনেছি।
“কি শুনতে কি শুনেছ? পাগল নাকি! আমি বলবো তোমায় সরি! আহ..
“অশান্ত আমি ঠিক শুনেছি, আপনি আমায় সরি বলেছেন।
“আরে না!
*হ্যাঁ হ্যাঁ;
শান্ত পালিয়ে পালিয়ে বলতে লাগলো, “আরে না! ধুর কি বলছো।
নিঝুম তার পিছন পিছন যেয়ে বলছে, “না আপনি বলেছেন! অশান্ত!
“না।
হুট করেই হেসে এই ফেলল নিঝুম। অশান্ত’র বাহু শক্ত করে ধরে বলল, “আমি একদম ঠিক শুনেছি। আমার কান ঠিক আছে। আপনি আমায় সরি বলেছেন। হি হি হি অশান্ত সরি বলেছে আমায়!
বলেই সে হাসতে লাগলো। শান্ত অবাক চোখে সেই হাসির দিকে তাকিয়ে রইল। খুব ছোট ছোট কারণেই কেঁদে ফেলা মেয়েটা সহজেই হেসে ফেলে। নিঝুমের বিশ্বাস’ই হচ্ছে না অশান্ত তাকে সরি বলেছে!
——
নিঝুম জুসের প্যাকেট থেকে স্ট্র’টা খুলে তার ভেতর পুরো দিল। অতঃপর সেই স্ট্র মুখে পুড়ল। এদিকে শান্ত’র হাতে পানির বোতল। ছাদের গ্রিলের উপর বসে নিঝুম চুপ করে বসে আছে, পাশেই বসে আছে শান্ত। পানির বোতল টা তাদের মাঝে রেখে বলে উঠল, “তোমার জন্য আজ আমার খুব দৌড়ানি হয়েছে! আমি এখন খুব ক্লান্ত।
“আর আপনার পিছনে দৌড়ে আমি ক্লান্ত।
“কে বলেছিল তোমায় দৌড়াতে?
নিঝুম মুখ ভেংচি কেটে ঘুরে ফেলল। শান্ত ও মুখ ভেংচি কাটল। হঠাৎ দুজনের কানেই আওয়াজ আসতে লাগলো। কেউ তাদের ডাকছে। দুজনেই মাথা নিচু করল। ইফা, তিথি, আহিম আর নীলাভ্র দাঁড়িয়ে আছে। শান্ত জোরে বলে উঠল, “কি হয়েছে?
আহিম জোড়ে বলে উঠল, “তোদের মা*রামারি শেষ হলে এবার নেমে আয়। প্রিন্সিপাল খোঁজ করছে তোর!
তিথিও বলে উঠল, “নিঝুম তুইও আয় আদনান স্যারের ক্লাস আছে। ( অতঃপর মিনমিনিয়ে ) আমি তার ক্লাস বাদ দিতে চাই না। আয় না!
ইফাও হাত নাড়িয়ে ইশারা করল। নিঝুম চেঁচিয়ে বলল, “আমি আসছি!
বলেই শান্ত:র দিকে তাকাল। শান্তও চেঁচিয়ে এক কথাই বলল। নিঝুম ঘুরে ফুরল। এক টানে পুরো জুসের প্যাকেট খালি করল সে। শেষ দিকে কেমন গড় গড় শব্দ এলো। শান্ত লাফ দিয়ে নেমে বলল, “থামো এবার; সব টাকা অসুল করতে গিয়ে তো প্যাকেট টাও খেয়ে ফেলবে!
নিঝুম চোখ ঘুরিয়ে তাকাল। অতঃপর প্যাকেট টা হাতে নিল। নিচে রেখে ধপাস করে দু পা দিয়ে লাফ দিল তারপর। খুব অদ্ভুত একটা শব্দ হলো, সাথে সাথে নিঝুম হেসে একাকার। শান্ত তখন বাঁকা চোখে তাকিয়ে রইল তার দিকে। নিঝুম তার দিকে একবার ফিরল। শান্ত’র এমন রিয়েকশনে নিঝুম চুল উড়িয়ে চলে গেল। শান্ত ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইল। নিঝুম ভাব দেখিয়ে চলে গেল, অদ্ভুত!
সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে নিঝুমের বোধ হলো কেউ দৌড়ে নামছে। এটা অশান্ত ছাড়া আর কে হতে পারে। নিঝুম মুখ ফিরে তাকাল। অশান্ত’ই নামছে, তার অশান্তি আবার শুরু। অশান্ত নিঝুম কে ছাড়িয়ে নিচে নেমে গেলেও আবারও এক পা পিছনে হটে বলল, “নাও!
নিঝুম অবাক চোখে তাকাল। আহনাফ কে দেবার জন্য যে কার্ড তৈরি করেছিল সেটা। দ্রুত হাতে নিয়ে বলল, “আহনাফ পড়েছিল এটা!
“মনে তো হয় না, তবে পড়তেই যাচ্ছিল!
“কিহহহ?
“হুম কিন্তু আর পড়া হলো না। আচ্ছা আমি গেলাম ঝুম ঝুমাঝুম ঝুম!
বলেই ধপাস করে নিঝুমের মাথায় বারি মেরে চলে গেল। নিঝুম কার্ডটা কে দু হাতে আগলে রক্তশূন্য মুখে অশান্ত’র যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইল। আহ ভাগ্যিস আহনাফ দেখে নি এটা।
বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে। অতঃপর তাকাল কার্ডের দিকে!
সময়ের পুনরাবৃত্তি, আহনাফ কার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছে। ফুলের সাথে কার্ড ! এর মানে নিশ্চিত কারো জন্য উপহার ছিল এটা। কিন্তু কার? শান্ত ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কার্ডটার উপর। এটা সেটাই যেটা নিঝুম তৈরি করেছিল। আহনাফ লেখাগুলো পড়ে না ফেলে ভয় এইখানেই। কৌতূহল বশত আহনাফ কার্ডটা খুলতে যেতেই তিশা’র গলার আওয়াজ পেলো। মন ঘু্রে গেল তার। কার্ডটা এবার গাড়ির মধ্যে রেখেই গোলাপ গুচ্ছ টা নিয়ে এগিয়ে গেলো তিশার কাছে। এতো গুলো গোলাপ দেখে তিশার চোখ চকচক করছে। খুশিতে এক লাফে ফুল গুলো হাতে নিয়ে নিল সে। চোখ বন্ধ করে ঘ্রাণ নিতে লাগল। এদিকে শান্ত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
শান্ত তার বাইকে আর আর আহনাফ, তিশা একসাথে গাড়ি করে আহনাফের বাসায় ফিরল। শান্ত’র সেখানে এখন যাওয়ার একমাত্র কারণ ছিল ওই কার্ড টা। অতঃপর কিছুক্ষণ তাদের সাথে থেকে সুযোগ বুঝে সেই কার্ডটা নিয়ে আসে সে!
—–
তিশা এখনো বেডে, অনেক বেলা ঘুমানো তার অভ্যাস! তাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে গেস্ট রুমে। আহনাফের বাবা এতে অমতি না করলেও সম্মতি দেন নি। বিষয়টা তিনি জানেন, তিশা’র এখানে চেনা পরিচিত কেউ নেই। তাই একা একটা মেয়েকে অন্য কোথাও থাকার কথা ভাবতে চান না তিনি। যদিও এ যুগে মেয়েরা একা থাকা বিশাল বড় কোন ব্যাপার না। কিন্তু তিশা’র পরিবারের কেউই এখানে নেই। কিছু একটা হলে সবার প্রথমে দোষটা এসে আহনাফের ঘাড়েই পড়বে। বিধায় তিনি কিছু বলতে পারছেন না। তবুও তিশা মেয়েটা কে এতোটাও মন্দ লাগে না তার। শিক্ষিত, মার্জিত একটা মেয়ে। বড়দের সম্মান করতে জানে , এ যুগে এর চেয়ে ভালো মেয়ে আশা করা মুশকিল। ছেলের পছন্দের উপর কোন কথাই বলবেন না তিনি এটাই স্বাভাবিক!
আহনাফ কফি হাতে দাঁড়িয়ে আছে তিশার ঘরের বাইরে। একটু পর পরই দরজা ধাক্কা দিচ্ছে। কিন্তু তিশা’র ঘুম এতো সহজে ভাঙবার নয়। আহনাফ শেষমেষ দরজা খুলেই ভেতর খুলল। বাইরে থেকে লক করা ছিল না বোঝাই গেল। তিশা এখনো গভীর ঘুমে। বাইরে সূর্যের আলো চারদিকে পড়লেও তার ঘর এখনো আবছা আঁধারে ঢাকা। আহনাফ কফি দুটো রেখে জানালার পর্দা টেনে দিল। আলো এসে পড়ল তিশা’র মুখের উপর। আহনাফ মুগ্ধ চোখে সেই মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। এই রূপের জালে ধরা পড়েছিল সে। কোন কারণ ছাড়াই তাকে ভালোবাসতে ভালো লাগে তার। আহনাফ হেঁটে বিছানার পাশে বসল। চোখের পাতা ফেলে ফেলে তাকিয়ে রইল ঘুমেতে বিভোর স্নিগ্ধ মুখটার উপর। আহনাফ তার গাল হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিচ্ছিল। তিশা’র চোখ এতোক্ষণে মিনমিন করছিল। সে মুখ ঘুরিয়ে উপাশে শুয়ে পড়ল। আহনাফ কিঞ্চিত হেসে উঠে দাঁড়াল।
ঠোঁট দুটো তিশা’র ললাটে ছুঁইয়ে দিল। তিশা’র ঘুম ভেঙে গেছে। তবুও সে বালিশে মুখ গুজে বলল, “আমি আরো কিছুক্ষণ ঘুমাবো।
“সব ঘুম কি একদিনেই শেষ করে দিবে নাকি। দুপুর হয়ে যাচ্ছে।
“হোক! আমি তবুও ঘুমাবে।
“ডান ঘুমাও, আমি যাচ্ছি!
বলেই আহনাফ বের হয়ে গেল। তিশার উঠতে ইচ্ছে করছিল না। কিন্তু ফোনের আওয়াজ পেয়েই লাফিয়ে উঠল সে। তার রিপ্লাই না পেয়ে একের পর এক মেসেজ করে যাচ্ছে। ভয়ে তিশা’র হাত টা কাঁপছে। অনেকটা বিচলিত লাগছে তাকে। ভয়ে সে ফোনটাই অফ করে দিল। তবুও তার নার্ভাসনেস কমছে না। বিছানা ছেড়ে নামল তিশা। ওয়াশরুমে এসেই মুখ জল ছিটাতে লাগল। বার বার মুখে জল ছিটিয়ে যাচ্ছে। এদিকে আহনাফ আবারো এসে তাকে দেখতে না পেয়ে ওয়াশরুমে নক করে বলে, “উঠে গেছো তুমি!
তিশা দ্রুত নিজেকে সামলে বলে, “শাওয়ার নিচ্ছি!
“ওকে!
ঝর্ণার নিচে দাঁড়িয়ে এক নাগাড়ে ভিজতে থাকে তিশা!
একটু পর দরজা খুলে এদিক ওদিকে তাকায়। আহনাফ আছে কি না বুঝতে পারছে না। এর মাঝেই সে জামা কাপড় কিছু আনে নি। সে আওয়াজ দিল, “আহনাফ!
বেলকনিতে থেকে আওয়াজ ভেসে এলো, “আমি এখানে?
“ওখানেই থাকবে তাহলে, আমি রুমে আসছি।
আহনাফ কিঞ্চিত হেসে কফি মগে চুমুক দিল। তিশা বের হয়ে এলো। তার গায়ের জামাটা ভিজে একাকার! কোনমতে দৌড়ে জামাকাপড় নিয়েই আবারো দৌড় দিল সে। ধপাস করে দরজা বন্ধের আওয়াজ পেলো আহনাফ। সে হেসে এসে দাঁড়াল দরজার কাছে। খানিকক্ষণ পর বের হয়ে এলো তিশা। দরজার খুলতেই আহনাফ’র মুখটাই ভেসে উঠলো তার সামনে। তিশা কিঞ্চিত হেসে গলার তোয়ালে টা বিছানায় রেখে বলল, “ভার্সিটিতে যাও নি আজ!
“না।
“কেন?
“তোমাকে সময় দেবো বলে!
তিশা খানিকটা অবাক হয়ে তাকাল আহনাফের দিকে। অতঃপর ওদিকে থাকা কফি মগটা উঠিয়ে মুখে দিল সে। যদিও এতোক্ষণে সেটা ঠান্ডাই হয়ে গেছে। তবুও সেই চিন্তা নেই তার। অনায়াসে খেয়ে যাচ্ছে চুপ করে। আহনাফ এগিয়ে এসে বলল, “কফি টা কেমন হয়েছে?
“হুম দারুন, তোমার হাতের কফি অলওয়েজ দারুন হয়।
আহনাফ হেসে সামনে এগিয়ে এলো। তিশা সবে কফি মগটায় আরেকটা চুমুক দিতে যাবে অমনি আহনাফ হাত থেকে সেটা নিয়ে নিজে চুমুক দিয়ে বলল, “ভালোই! তবে এখন ঠান্ডা হয়ে গেছে।
“ওহ আমি খেয়াল করি নি।
“মন কোথায় তোমার!
তিশা থমতম খেয়ে গেল। মুখ ঘুরিয়ে হেসে বলল, “কিছু না এভাবেই…
আহনাফ তখনি তার হাত ধরে টেনে তার কাছে টেনে আনল। তিশা হতচকিয়ে গেল। হাত বাড়িয়ে তার ঘাড়ের চুল গুলো সরিয়ে বলল, “চুল থেকে এখনো পানি ঝড়ছে!
“ওহ হ্যাঁ !
আহনাফ এগিয়ে গিয়ে বিছানার থেকে তোয়ালে নিল। তিশা কে বিছানায় কোনো বসিয়ে দিয়ে তার মাথা মুছিয়ে দিতে লাগল। তিশা’র চোখে মুখে ভয়ের ছাপ! কিসের এতো ভয় তার। আহনাফের এতোটা কাছে আসা মেনে নিতে পারছে না সে, আর না পারছে তাকে আটকাতে।
যা সে করতে এসেছিল সেটাই দ্রুত করতে হবে কিন্তু আহনাফ কিভাবে মেনে নিবে সেটা। ভাবতেই তার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
আহনাফের ডাকে চমকে তাকাল তার দিকে। আহনাফ হেসে বলল, “এতো চমকে যাচ্ছ কেন? জিজ্ঞেস করছি কি খাবে ব্রেকফাস্টে, যদিও এখন আর ব্রেকফাস্টের টাইম নেই।
“তুমি খাও নি এখানো।
আহনাফের ঠোঁটের কোনে হাসি। তিশা উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “আমি এখনি বানাচ্ছি কিছু!
অতঃপর পা বাড়াল সে। দরজার কাছে যেতেই আবার হাত ধরে আটকে দিল কেউ। তিশা নির্বাক! তাকে টেনে দেওয়ালের সাথে মিশিয়ে দিল আহনাফ। কানের কাছে হাত রেখে বলল, “তুমি কেন বানাবে, আমি বানাবো!
তিশা কাঁপা স্বরে বলল,
“তাহলে চলো!
“হুম যাবো!
বলেও আহনাফ সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল। সে তাকিয়ে আছে তিশা’র চোখের দিকে। তার চঞ্চল চোখগুলো একবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। তিশা সারা শরীর কাঁপছে। এভাবে আহনাফের সামনে দুর্বল হয়ে পড়লে চলবে না। সে আবারো বলে উঠে, “আহনাফ!
“হুম;
“কি করছো?
“তোমায় দেখছি!
তিশা ঠোঁট কামড়ে দিল। আহনাফ আরেক হাত তিশা’র কোমড়ে এখন। হঠাৎ আহনাফ এগিয়ে এসে তার ঘাড়ের কাছে উষ্ণ ঠোট দুটো বসিয়ে দিল। তিশা সাথে সাথে কেঁপে উঠলো। আহনাফ কে সরানোর সাধ্যি এখন আর তার নেই। আহনাফের হাতের উপর হাত রাখল সে। আনহাফ মুখ সরিয়ে আনল। তিশা শেষবার চেষ্টা করতে গিয়ে বলল, “আহন… এর আগেই তার ঠোঁট দুটো এখন আহনাফের দখলে। ভয়ে, দুশ্চিন্তা আর এখানকার পরিস্থিতি’র কারণে চোখের কার্নিশ বেয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়ল তার। এসবের কিছুর:ই খেয়াল ছিল না আহনাফের। সে এখন তিশা’র ঠোঁটর স্বাদ নিতেই ব্যস্ত!
——
শুধুমাত্র মনটা ঠিক করার জন্য আজ তিথি আর নিঝুম এসেছে শপিং মলে। মনটা বড্ড খারাপ তার। হঠাৎ এই সময় কোথা থেকে এসে হাজির হলো আহিম। তাকে দেখে চমকে উঠলো দুজনেই। আহিম হাত নাড়িয়ে বলল, “কেমন আছো?
নিঝুম বলে উঠল, “সকালেই তো দেখলেন ভালো আছি!
*ওহ হ্যাঁ তাইতো! কিন্তু এখানে কেন তোমরা।
তিথি বলে উঠল, “শপিং মলে মানুষ কেন আসে?
“শপিং করতে! হ্যাঁ তাইতো। তা তিথি তুমি এসো আমার সাথে।
বলেই তার হাত টেনে ধরল। নিঝুমও ওপাশ থেকে হাত টেনে ধরে বলল,”ও কেন যাবে আপনার সাথে।
“আসলে আমার কিছু শপিং করার ছিল। আর সেটা একটা মেয়ের জন্য। তো মেয়েলী ব্যাপার তাই তিথি কে লাগবে।
“তো আমিও তো আসতে পারি।
“না না তোমার দরকার নেই। তুমি উপরে যাও!
বলেই তিথি হাত টেনে নিয়ে এলো। বেচারী তিথি আবার ফেঁসে গেলো তাদের জ্বালে। নিঝুম হা হয়ে তাকিয়ে রইল। উপরের দিকে তাকিয়ে পা বাড়াল সে। চলন্ত সিঁড়ির উপর দাঁড়িয়ে আশপাশ তাকাচ্ছে। হঠাৎই চোখ পড়ল সামনের দিকে। স্বয়ং যমরাজ মানে অশান্ত দাঁড়ানো। নিঝুম চোখ বড় বড় করে দেখছে। মুহুর্তেই মনে পড়ল সেবারকার কথা। তাকে কতোটা খাটিয়েছে এই অশান্ত! ভয়ে সে সামনে যাচ্ছে না বার বার পিছনে বার বার পা বাড়াচ্ছে। কিন্তু যতোই পিছনে যাচ্ছে ততোই এগিয়ে আসছে সে। শান্ত মিস চশমিশের কান্ড বেশ ইনজয় করছে। মানুষজন তাকিয়ে আছে, কেউ কেউ বিরক্ত বোধ করছো। এদিকে নিঝুম উত্তেজনায় পাগল হয়ে যাচ্ছে। শেষমেষ তার হাত ধরে টেনে শান্ত’র নিয়ে এলো। ঠোঁট কামড়ে দাঁড়িয়ে আছে। শান্ত টেনে যাচ্ছে কিন্তু এক পা বাড়াচ্ছে না নিঝুম!
“কি হচ্ছে টা কি?
“আজ আমার মন ভালো নেই, তাই আমি আপনার বোঝা বইতে পারবো না।
“তোমাকে সে কারণে নিয়ে যাচ্ছি না.
“তাহলে..
“চলো গেলেই দেখতে পারবে।
বলেই ধরে বেঁধে নিয়ে গেল একটা দোকানের সামনে। নিঝুম ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। তাকে ভেতরে নিয়ে যেতেই তার চক্ষু চড়কগাছ! তিশা আর আহনাফ এখানে, দুজনকে একসাথে দেখে রাগে তার শরীর জ্ব*লতে লাগল। অশান্ত কে চিমটি কেটে বলল, “আমাকে এখানে এনেছেন কেন?
“আহ! আমাকে ওরা এনেছে, একা একা বোর হবো বলে আহিম কে এনেছিলাম। কিন্তু এই প্রেমিক প্রেমিকার সাথে সে থাকবে না বলে পালিয়ে গেল। আমি একাও ফেঁসে গেলাম। তাই কম্পানি দিতে তোমাকে সাথে আনলাম।
“আমাকেই পেলেন আপনি! – কথাটা একটু চেঁচিয়েই বলল। আহনাফ আর তিশা মুখ ফিরে তাকাল তাদের দিকে। তিশা হেসে বলল, “শান্ত কে ও, তোমার গার্লফ্রেন্ড নাকি। বলেই এগিয়ে এলো।
আহনাফ মুচকি হাসল। তিশার কথায় গা জ্ব*লে যাচ্ছে। ঠোঁট কামড়ে ধরল সে। শান্ত মুখ ভেংচি কেটে বলল, “ও আর আমার গার্লফ্রেন্ড! শান্ত’র টেস্ট এখানো এতো খারাপ হয় নি তিশা!
নিঝুম ফোড়ন কেটে বলল, “আপনিও আমার টেস্ট এর না বুঝলেন!
“তাহলে কে ও?
আহনাফ হেসে বলল, “নিঝুম! তোমাকে যার কথা বলেছিলাম ও।
“আমার সাথে না দেখা করেই কেন চলে গেলে তুমি।
নিঝুম একটু হতভম্ব হয়ে গেল। আহনাফও তাকিয়ে আছে তার দিকে। সে হেসে বলল, “আসলে একটু কাজ ছিল তাই।
“তবুও দেখা করতে কতোক্ষণ লাগতো।
“খুব জরুরী ছিল তাই।
“যাই হোক এখন দেখা হলো। জানো তোমার ব্যাপারে আহনাফ কতো বলেছে আমায়।
“ওহ আচ্ছা!
বলেই আহনাফের দিকে তাকাল। তার চোখের বিষণ্নতা কি আহনাফ খেয়াল করেছিল। জানা নেই তার। নিঝুম হেসে বলল, “কিন্তু তোমার ব্যাপারে আমাকে কেউ বলেনি। অথচ আমি আহনাফ আর এই অশান্ত’র বন্ধু!
বলেই অশান্ত’র ঘাড়ে হাত রাখল। আহনাফ হেসে বলল, “কখনো সুযোগ হয় নি তাই!
শান্ত চোখ ঘুরিয়ে ঘাড় থেকে হাতটা সরিয়ে বলল, “এই নিয়ে কথা হয় নি কখনো তাই।
“যা আমার ব্যাপারে কেউই বললো না তোমায়।
আহনাফ বলে উঠল, “আচ্ছা এই নিয়ে পড়ে কথা বলা যাবে। তুমি চলো এই ড্রেস ট্রাই করতে।
বলেই তিশা:র হাত টেনে নিয়ে গেল অন্যদিকে। নিঝুম দাঁতে দাঁত চেপে তাকিয়ে রইল। শুধু একের পর এক শপিং করেই যাচ্ছে তারা। আর তাদের সাথে সাথে ঘুরছে এরা দুজন। হুট করে চলেও যেতে পারছে না সে। এদিকে জেন্স সাইডে শান্ত একের পর এক টি শার্ট দেখছে। এর মাঝেই হঠাৎ করে তাকে কেউ খামচে ধরল। শান্ত লাফিয়ে উঠে তাকিয়ে দেখল নিঝুম।
“এএই কি করছো তুমি, লাগছে আমার!
কিন্তু কথা বোধহয় কানেই যাচ্ছে না নিঝুমের। সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তিশা আর আহনাফের দিকে। রাগ তার মুখে স্পষ্ট। খামচির ব্যাথা সহ্যের বাইরে। শান্ত কোনমতে তার হাত সরিয়ে বলল, “পাগল হয়ে গেছো নাকি!
তিশা একটা শার্ট বাছাই করে আহনাফের দিকে ধরল।নিঝুম বলে উঠল, “আমার আর সহ্য হচ্ছে না।
অশান্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “এ কোন পাল্লায় পড়লাম না।
নিঝুম তার দুই হাত দিয়ে শান্ত’র এক বাহু আটকে ধরে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে বলল, “ভালো লাগছে না
“চলো যাও তাহলে!
এই মুহুর্তেই আহনাফ হাত বাড়িয়ে তিশা’র মুখের ছোট চুল গুলো কারণেই কানে গুঁজে দিতে চাইলো। নিঝুম রেখে অশান্ত’র বাহুতে মুখ গুজল। বলে উঠল, “অশান্ত এই কারণে বেঁচে ছিলাম না। হায় হায় কি দেখছে আমার চোখ এগুলো। আমার ক্রাশ এখন অন্যকারো। খুব রাগ লাগছে আমার।
অশান্ত চোখ বাঁকিয়ে বলল, “কামড় দেবার কথা ভুলেও ভাববেও না বলে দিলাম!
নিঝুম মুখ তুলে তাকাল। বলে উঠল, “আমি কি মনে করেন আমাকে।
“অনেক কিছু!
নিঝুম মুখ ভেংচি কাটত সামনে তাকাল। আহনাফ তিশা’ল হাত টা ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। নিঝুম এবার রাগ সংগত করতে পারল না। কামড় বসিয়ে দিল অশান্ত’র হাতে। অশান্ত ঠোঁট কামড়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিল। নিঝুম কে এখানে এনে কতোবড় ভুল করেছে এটা এখন হারে হারে টের পাচ্ছে সে। কামড়ের ব্যাথা সহ্য করতে না চোখ বন্ধ করে নিল সে। খানিকক্ষণ পরেই নিঝুম শান্ত হলো। শব্দ করে শ্বাস ফেলে অশান্ত’র দিকে তাকিয়ে বলল, “বেশি ব্যাথা পেয়েছেন!
দাঁতে দাঁত চেপে জবাব দিল, “না!
নিঝুম দাঁত কেলিয়ে হেসে ফেলল। শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “রাক্ষসী দাঁত! বলেই চোখ বাঁকিয়ে তাকিয়ে রইল!
#চলবে….