#আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে
#লেখনিতে_সালমা_চৌধুরী
(২৩)
মেঘের পানে ক্ষিপ্ত নয়নে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবির দুপা পিছিয়ে সিঁড়ির দিয়ে নেমে গেছে। ডাইনিং টেবিলের উপর কাচ্চির বক্স রেখে দ্রুত পায়ে মেইনগেট পেরিয়ে চলে যেতে নিলে আদি পেছন থেকে ডেকে উঠলো,
“ভাইয়া..?”
আদির ডাক আবিরের কান পর্যন্ত পৌছাল কি না কে যানে, ফিরেও দেখলো না। আবিরের অক্ষি যুগল আগ্নে*য়গি*রির লা*ভার ন্যায় লাল টুকটুকে হয়ে গেছে, গেইট পেরিয়ে বাইকে উঠতে গিয়ে হাতে থাকা সানগ্লাস টা ডাস্টবিনের দিকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়, নিজের ভেতরের সবটুকু ক্রো*ধ যেনো সানগ্লাস টার উপর ঢেলে দিয়েছে। সানগ্লাস ভেঙে খণ্ডবিখণ্ড হয়ে গেছে, সানগ্লাসের ভাঙা অংশের চাপে হাত ও কেটেছে ২-৩ জায়গাতে। এই হাত নিয়েই বাইক স্টার্ট দিয়ে নিজের অফিসে চলে যায়।
অফিসে ঢুকতেই রাকিব ছুটে আসে,
“স্যার, আপনি এত তাড়াতাড়ি চলে আসলেন যে? বউ কে সময় দেয়া শেষ?”
আবির ক্রু*দ্ধ আঁখিতে চাইলো রাকিবের দিকে, কোনো কথা না বলে নিজের কেবিনে ঢুকে চেয়ারে চোখ ব*ন্ধ করে বসে পরলো।
রাকিবও পেছন পেছন আবিরের কেবিনে ঢুকলো,সহসা চোখ পরলো আবিরের হাতের দিকে, আঁতকে উঠে ছুটে গিয়ে আবিরের হাত ধরে বললো,
” হাত কাটছিস কিভাবে? ”
আবির হাত সরিয়ে বলল,
“তুই এখন যা! আমি একটু একা থাকতে চাই! ”
রাকিব আকুল স্বরে জানালো,
“চলে তো যাবই, আগে বল কি হয়ছে?”
আবির অনমনীয় কন্ঠে উত্তর দিলো,
‘কিছু হয় নি। ”
রাকিব ভাবুক স্বরে বললো,
“কিছু একটা তো অবশ্যই হয়েছে। আমি তোর বেস্টফ্রেন্ড এটা ভুলে যাইস না। এখন বল কি হয়ছে? মেঘ কিছু করেছে?”
ক্রো*ধে আবিরের নাকের ডগা ফুলে আছে, নয়ন জোড়া এখনও র*ক্ত বর্ণ হয়ে আছে। বক্ষস্থলে থাকা হৃদপিণ্ডটা যেন দ্বিকবিদিক ছুটে বেড়াচ্ছে। আবির দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কঠিন স্বরে বললো,
“আমি ওর জীবনে কা*টার ন্যায়। আবির নামক কা*টা টা ওর জীবনে না থাকলে ও হয়তো অনেক বেশি হ্যাপি থাকতো। ”
রাকিব ভ্রু কুঁচকে বললো,
“কি বলছিস এসব! মাথা ঠিক আছে তোর। ”
আবির শ্বাস ছেড়ে শক্ত কন্ঠে উত্তর দিলো,
“আমি ঠিক করেছি ওকে ওর মতো থাকতে দিবো। ওর ব্যাপারে কোনো কথা বলবো না। ”
রাকিব এবার স্ব শব্দে হেসে উঠলো। আবির ভ্রু কুঁচকে ক্রো*ধিত নয়নে চেয়ে রইলো৷ রাকিবের সেদিকে হুঁশ নেই। হাসতে হাসতে পেট চেপে ধরেছে।
আবির রাগান্বিত কন্ঠে বললো,
“অহেতুক হাসছিস কেন?”
রাকিবের হাসি যেনো থামছেই না, আবিরের কাছ থেকে দূরে গিয়ে বলে,
“বন্ধু এতকিছু করেও যখন প্রেমিকার মন পায় না তখন তার জন্য শুধু একটা গান ই গাইতে ইচ্ছে করছে…
যার কারনে ছাড়লাম আমি জগত সংসার
তবুও সে পাষাণ বন্ধু হইলো না আমার
আমার দুঃখে কান্দে আকাশ কান্দেরে জমিন
নিদয়া তুই পাষাণ বন্ধু এতোরে কঠিন
তোর মনের পিঞ্জিরায় তুই কারে দিলি ঠাঁই
কারে এতো করলি আপন পর করে আমায়
তুই ভালো থাকিস বন্ধু আমার সুখে থাকিস রোজ
তোর স্বপ্নে আমি আসবো ঠিকই নিতে তোর খোঁজ”
আবির বসা থেকে উঠে দাঁড়াতেই রাকিব হাসতে হাসতে কেবিন থেকে ছুটে বের হয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। সারাদিনের ব্য*স্ততায় সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেছে। অফিসের সবাই মোটামুটি চলে গেছে।
রাকিবের গার্লফ্রেন্ড কলের পরে কল দিচ্ছে। গার্লফ্রেন্ডের নাম রিয়া। আবির দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর রাকিবের সঙ্গে একই ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছিল রিয়া। সেই থেকে ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম। তাদের ২ বছরের রিলেশন চলছে। ৪-৫ বার কল করার পর রাকিব রিসিভ করে বলে উঠলো,
“কি হয়েছে এত কল দিচ্ছো কেন? জানো না এ সময় অফিসে থাকি৷ ”
রিয়ার গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। কোনোরকমে বললো,
“আমাকে একটা ইনহেলার আর কিছু ঔ*ষধ কিনে দিয়ে যেতে পারবা? ”
রাকিব এবার চিন্তিত স্বরে বললো,
“কি হয়েছে তোমার?”
“আজকে দুপুর পর্যন্ত বাসায় টুকিটাকি কাজ করছিলাম৷ বিকেল থেকেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আস্তে আস্তে বাড়তেছে মনে হচ্ছে। ”
রাকিব কন্ঠ ভারী করে বললো,
“তুমি জানো তোমার ডা*স্ট অ্যা*লার্জি তারপরও কেন যাও কাজ করতে? আমি এসে কল দিচ্ছি। সাবধানে থাকো, বাই। ”
রাকিব আবিরের কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
” তুই বাসায় কখন যাবি?”
আবির ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই উত্তর দিলো,
“একটু দেরি হবে। কেনো?”
রাকিব বললো,
“রিয়া অসুস্থ, ঔষধ নিয়ে যেতে হবে। আমি কি চলে যাব?”
আবির চোখ তুলে চেয়ে বললো,
“সিরিয়াস কিছু?”
রাকিব মৃদু হেসে উত্তর দিলো,
“না না তেমন না৷ ওর তো সেই একটায় সমস্যা। ”
আবির স্বাভাবিক কন্ঠে জানালো,
“ঠিক আছে তুই যা। কোনো সমস্যা হলে জানাইস। ”
রাকিব হাসিমুখে বললো,
“তুই কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি চলে যাস। ”
আবির মাথানিচু করে চুপচাপ কাজে মনোযোগ দিলো।
অন্যদিকে মেঘকে পড়াতে জান্নাত আপু এসেছেন।মেঘ মনের বিরুদ্ধে বাধ্য হয়ে পড়তে বসেছে।। জান্নাত আপু কি পড়াচ্ছেন তাতে মেঘের কোনো মনোযোগ নেই। এক রাশ বির*ক্তি নিয়ে শব্দহীন বসে আছে । জান্নাত আপুর দিকে তাকিয়ে দেখলো একবার। খুবই সাদামাটা একটা মেয়ে, গায়ের রঙ ধবধবে সাদা না হলেও, চেহারায় অন্যরকম সৌন্দর্য আছে। বোরকা পড়া, সাথে সুন্দর করে হিজাব দিয়েছেন। মেঘ মনে মনে ভাবছে,
“আমি কি ওনার মতো সুন্দরী না? আমি কি আপনার ভা*লোবাসা পেতে পারতাম না আবির ভাই?”
★★★★
পরদিন নাস্তার টেবিলে প্রত্যেকে উপস্থিত শুধু আবির ব্যতিত। আদির খাওয়া শেষ হতেই আকলিমা খান বললেন,
“তোর ভাইয়া উঠছে কি না দেখে আয় তো। ”
আদি দৌড়ে গেলো আবিরের রুমের সামনে। আদি বা মীম কেউ ই আবিরের রুমের ভেতরে ঢুকে না। দরজা থেকে ডেকে চলে আসে। আজও আদি দরজা থেকেই উঁকি দিয়ে দেখলো, কিন্তু আবির কোথাও নেই। দুবার ডেকেছেও কিন্তু সাড়া নেই। আদি করিডোর থেকে চিৎ*কার দিয়ে বললো,
“ভাইয়া তো রুমে নেই, আম্মু”
সবাই এবার মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। রুমে নেই মানে কি, সকাল থেকে তো বের হতে দেখলাম না।
তানভির গলা উঁচু করে বললো,
“ছাদে দেখ তো আদি ”
ভাইয়ের কথামতে আদি ছাদের দিকে গেলো। কিন্তু ছাদের গেইটেও তালা। আদি পুনরায় তা জানালো।
মালিহা খান চিন্তিত স্বরে বললেন,
“আবির কি রাতে ফিরে নি?”
মেঘ সহসা বড় আম্মুর দিকে চাইলো। এই বাড়িত ছেলেরা কখনো বাহিরে রাত কাটায় না। যত রাত ই হোক বাসায় ফিরে আসে এটায় খান বাড়ির রুলস। খুব প্রয়োজন হলে আলী আহমদ খানের থেকে অনুমতি নিয়ে থাকতে হয়৷৷
ইকবাল খান সঙ্গে সঙ্গে ফোন বের করে আবিরকে কল দিয়েছেন। প্রথমবার রিসিভ হয় নি। দ্বিতীয় বার রিসিভ হতেই,
ইকবাল খান শুধালেন,
“কোথায় আছিস?”
আবির ঠান্ডা কন্ঠে উত্তর দিলো,
“অফিসে”
ইকবাল খান: তুই বাসায় ফিরিস নি কাল?”
আবির: না।
ইকবাল খান: কেনো?
আবির গম্ভীর কন্ঠে জবাব দিলো,
“অফিসে কাজ ছিল। ”
ইকবাল খান তপ্ত স্বরে বললেন,
” ও আচ্ছা। আজ আমাদের অফিসে মিটিং আছে। আসবি না?”
আবির ভারী কন্ঠে জানালো,
“চলে আসবো। এখন রাখছি কাজ আছে”
আলী আহমদ খান রাগে বলে উঠলেন,
“দুদিন হয়নি নিজের কোম্পানি খুলেছে এখনই ব্য*স্ততা দেখায়, কই আমাদের তো রাতে অফিসে থেকে কাজ করতে হয় নি কখনো। ”
মালিহা খানের দিকে তাকিয়ে শ*ক্ত কন্ঠে বললেন,
“ছেলেকে বুঝাও, বাহিরে থাকাকালীন কি করেছে না করেছে সেসব আমার বাড়িতে চলবে না। ”
ডাইনিং টেবিলে নিস্তব্ধতা ছেড়ে গেছে। কারো মুখে কোনো শব্দ নেই। আলী আহমদ খান উঠে গেছেন। মালিহা খান ডাইনিং এ এসে ইকবাল খানকে শুধালেন,
“আবিরের জন্য কি খাবার দিয়ে দিবো? ও তো গতকাল সকালে না খেয়ে বেড়িয়েছিল। তারপর থেকে তো আর দেখি নি। ”
আদি ততক্ষণে ডাইনিং এর কাছে এসে উত্তেজিত কন্ঠে বললো,
“গতকাল দুপুরে ভাইয়া আসছিলো। আমি ভাইয়াকে ডাক ও দিয়েছি কিন্তু ভাইয়া শুনে নি। তারপর টেবিলে কাচ্চিবিরিয়ানির বক্স দেখে আমি সেটা নিয়ে উপরে আপুদের কাছে চলে গেছিলাম। তাই তোমাদের কাউকে জানাতে মনে নেই। ”
আদির কথা শুনে মেঘ বিড়বিড় করে বললো,
“কাচ্চিবিরিয়ানি আবির ভাই আনছিল? আগে জানলে ওনার আনা খাবার খাইতাম ই না৷ নিজের ইচ্ছে মতো মা*রবেন, ঝা*ড়বেন আবার মন চাইলে খাবার এনে খাওয়াবেন আর আমি সব ভুলে যাবো। এমন মেয়ে আমি না। ”
ইকবাল খান বললেন,
“বড়ভাবি আপনি খাবার দিয়ে দেন, আবির অফিসে আসলে খেয়ে যাবে নে। ”
রাত ১০ টার দিকে আবির বাসায় ফিরেছে। ততক্ষণে তিন কর্তী ব্যতিত সকলের খাওয়া শেষ। আবির ফ্রেশ হয়ে, মা কাকিয়াদের সাথে খেতে বসেছে। এইযে মা, মামনি আর কাকিয়া এত এত প্রশ্ন করছে আবির নিসাড়ায় সব শুনছে। কোনো উত্তর দিচ্ছে না। কোনোরকমে খাওয়া শেষ করে রুমে চলে এসেছে।
★★★★
সময় চলছে নিজস্ব গতিতে। মাঝখানে কেটে গেলো ১০ দিন। আবির আর মেঘের দেখা হলেও কেউ কারো সাথে কথা বলে না। আবির খাবার টেবিলে একসাথে বসলেও মেঘের দিকে একবারের জন্যও তাকায় না৷ মেঘ ঠিকই দু-একবার তাকিয়ে দেখে কিন্তু আবির যেনো নিজকে শক্ত আবরণে আবৃত করে রেখেছে। বুকের উপর পাথর চাপা দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। আবির যতক্ষণ বাসায় থাকে ততক্ষণ নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে রাখে। মেঘও নিজের মতো খাইতেছে, মীম আর আদির সাথে আড্ডা দিচ্ছে। জান্নাত আপু পড়িয়ে যাচ্ছে। কোচিং থাকলে কোচিং এ যাচ্ছে। বাসায় এসে পড়াশোনা করছে সবই নিজের মতো করছে। শুধু মাঝে মাঝে ভাবে,
“আবির ভাইয়ের কি কিছু হয়েছে!”
Salma Chowdhury – সালমা চৌধুরী
আজ মেঘের HSC রেজাল্ট পাবলিশ হবে। সকাল থেকে না খেয়ে বসে আছে মেয়েটা। আলী আহমদ খান আর মোজাম্মেল খান অফিসে চলে গেছেন, ইকবাল খান কোনো এক দরকারে আদির স্কুলে গিয়েছেন। আবিরও সকাল সকাল অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছে। আবিরের কিছুক্ষণ পর তানভিরও বেড়িয়েছে ।
ঘন্টাখানেক পর রেজাল্ট পাবলিশ হয়েছে, মাহদিবা খান মেঘ Golden GPA-5 পেয়েছে। খান বাড়িতে খুশির আমেজে ভরে উঠেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে মোজাম্মেল খান আর আলী আহমদ খান মিষ্টি নিয়ে বাসায় হাজির হয়েছেন। ইকবাল খানও আদিকে নিয়ে ফেরার পথে কয়েক কেজি মিষ্টি নিয়ে এসেছেন। আবিরের পর মেঘ ই পড়াশোনায় খান বাড়ির মুখ উ*জ্জ্বল করেছে। মাঝখানে তানভির 4.00+ রেজাল্ট নিয়ে SSC, HSC পাশ করেছে।
মালিহা খান ছেলেকে কল দিচ্ছেন, কিন্তু আবির কল ধরছে না। তানভিরকেও কল দিয়েছেন, কিন্তু ব্য*স্ত বলছে। বাড়িতে এত আনন্দ কিন্তু দু ভাই যেনো নিরুদ্দেশ।
বেশ কিছুক্ষণ পর আবির আর তানভির বাসায় ফিরেছে। তানভির একটা রেপিং করা বক্স মেঘের হাতে দিয়ে হাসিমুখে বললো,
“Congratulation my dear Bonu ”
মেঘ একগাল হেসে জানালো,
“Thank you Vaiya. ”
আবির কোনোদিকে না তাকিয়ে নিঃশব্দে দীর্ঘ পা ফেলে নিজের রুমে চলে গেছে। মেঘ আবিরের দিকে চেয়ে মনে মনে বললো,
“একটা মানুষ এতটা হৃ*দয়হীন হয়ে থাকে কি করে, সামান্য একটা Congress শব্দও কি বলা যেতো না…??”
তানভির মেঘের জন্য স্পেশালি রসমালাই নিয়ে আসছে। মেঘ তানভিরকে কয়েক পিস খাইয়ে বক্স নিয়ে দৌ*ড়ে গিয়ে ডাইনিং এ বসে খাচ্ছে যেনো অন্য কেউ ভাগ না বসায়। তানভির নিজের রুমে ফ্রেশ হতে চলে গেছে।
২০ মিনিটের মধ্যে আবির অফিসের জন্য রেডি হয়ে বের হচ্ছে। আবিরের পিছন পিছন তানভিরও নামছে। মালিহা খান আবিরকে ডেকে বললেন,
“এই সময় আবার কোথায় যাচ্ছিস?”
আবির ভারী কন্ঠে বললো,
“অফিসে কাজ আছে। ”
মালিহা খান আবারও বললেন,
“মিষ্টি খেয়ে যা ”
আবির কন্ঠ দ্বিগুণ ভারি করে বললো,
” সময় নেই। ”
মেঘ তখনও ডাইনিং এর চেয়ারে বসে আছে। আবির ভাইয়ের কাটখোট্টা জবাবে অষ্টাদশীর মন খারাপ হলো। মনে মনে ভাবলো,
“সত্যি ই কি আপনার সময় নেই? নাকি আমার রেজাল্টের মিষ্টি আপনি খেতে চান না,?”
আবির চলে যাচ্ছে, হালিমা খান আবিরের যাওয়ার দিকে চেয়ে, পুনরায় সিঁড়িতে থাকা তানভিরের পানে তাকিয়ে চিন্তিত স্বরে বললেন,
“আমি আরও ভাবলাম বোনের রেজাল্টের খুশিতে তোরা দু’ভাই মিলে এলাকায় মিষ্টি দিয়ে আসবি। ”
তানভির মৃদু হেসে প্রশ্ন করলো,
“এক বাড়িতে কতবার মিষ্টি দিতে হবে?”
হালিমা খান ছেলের কথার মানে বুঝলো না।। কপাল কুঁচকে বললেন,
“মিষ্টি তো দেয়া হয় নি এখনও। ”
তানভির হাসিমুখে জানালো,
“ভাইয়া আর আমি এলাকার সব বাড়িতে মিষ্টি দিয়েই বাসায় এসেছি। ”
মেঘ বিষ্ময়কর দৃষ্টিতে ভাইয়ার অভিমুখে তাকিয়েছে, অষ্টাদশীর চোখে মুখে উজ্জ্বলতা ফুটে উঠছে, ১০ দিনের দূরত্ব যেনো ১০ সেকেন্ডেই হাওয়া হয়ে গেছে।প্রিয় মানুষ বরাবরই প্রিয় থাকে, মাঝে মাঝে শুধু অভিমানের আবরণে ঢেকে যায়। মেঘ বিড়বিড় করে বললো,
” আমি কি ঠিক শুনেছি? আবির ভাই আমার রেজাল্টের খুশিতে এলাকায় মিষ্টি খাইয়েছেন? তাহলে বাসায় এমন মুড নিয়ে ছিলেন কেন? একটা মিষ্টি মুখেও দিলেন না কিন্তু কেনো? ওনি কি কোনো বিষয়ে রে*গে আছেন?”
মেঘের পাশাপাশি সবাই যেনো অবাক চোখে তাকিয়েছে তানভিরের দিকে। তানভিরের কথায় আকলিমা খান ভ্রু কুঁচকে বললেন,
“আমাদেরকে জানালে কি এমন হতো শুনি, আবির বা তুই কেউ তো বলতে পারতি ! ”
তানভির হাসিমুখে উত্তর দিলো,
“ভাইয়া লোক দেখানো কাজ পছন্দ করে না জানোই তো। তাছাড়া আমি তো এখন বললাম ই তোমাদের । ”
মোজাম্মেল খান আবিরের এমন কান্ডে খুশি হয়ে বললেন,
” যাক বড় ভাইয়ের দায়িত্ব পালনে আবির অবহেলা করে নি, এটায় তো দরকার। ”
আব্বুর মুখে এমন কথা শুনে মেঘের মুখটা মলিন হয়ে গেলো। আবির ভাইকে তো সে বড় ভাই হিসেবে ভাবেই নি কখনো। আবির ভাই হলে ক্রা*শ, না হলে বাঁ*শ। ভাই, টাই কিছু না।
★★★★
রাত ১০ টার দিকে আবির ফিরেছে, মেঘ তখন পড়ছিলো৷ আবির রাতে খাবার খেয়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ফেলছে। বেশকিছুক্ষণ পর মেঘ নিচে আসতেই আকলিমা খান বলে উঠলেন,
“কিরে আবিরকে মিষ্টি দিলি না?”
মেঘ আশ্চর্য নয়নে চেয়ে বললো,
“তোমরা দাওনি কেন?’
হালিমা খান স্বাভাবিক কন্ঠে জানালেন,
“আমরা তো বলেছি, ও তো খাবে না বলে চলে গেলো। তুই একটু নিয়ে যা, তুই বললে যদি খায়!”
একটা প্লেটে কয়েকটা মিষ্টি নিয়ে মেঘ গুটিগুটি পায়ে করিডোর পেরিয়ে আবির ভাইয়ের রুমের সামনে হাজির হলো। এক হাতে দরজা ধাক্কা দিতেই বুঝতে পারলো ভেতর থেকে দরজা ব*ন্ধ। দরজা বন্ধ দেখে মেঘের খটকা লাগলো, আবির ভাই আসার পর থেকে কখনও দরজা বন্ধ করে ঘুমায় না তাহলে ইদানীং দরজা বন্ধ করে রাখেন কেনো?
রুমের ভেতরে কম সাউন্ডে গান ভাজতেছে। মেঘ মনোযোগ দিয়ে শুনার চেষ্টা করলো,
“এই অবেলায় তোমারই আকাশে
নীরব আপসে ভেসে যায়
সেই ভীষণ শীতল ভেজা চোখ
কখনো দেখাইনি তোমায়
কেউ কোথাও ভালো নেই যেন সেই
কতকাল আর হাতে হাত অবেলায়
কতকাল আর ভুল-অবসন্ন বিকেলে
ভেজা চোখ দেখাইনি তোমায়ও”
মেঘ ওষ্ঠ উল্টে বিড়বিড় করে বললো,
“আবির ভাই এত কষ্টের গান শুনছে কেন? ব্যাপার কি!”
মেঘ দরজায় টুকা দিয়ে আস্তে করে ডাকলো,
” আবির ভাই”
ভেতর থেকে কোন জবাব না আসায় মেঘ উচ্চস্বরে আবার ডাকলো,
“আবির ভাই ”
সহসা গান বন্ধ হয়ে গেলো, সি*গারেট হাতে দরজা খুলে দিল আবির। পড়নে কালো টিশার্ট আর টাওজার, কপালে আর নাকে ঘামের বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে,সাথে ঘামে জবজবে পুরো শরীর, অগোছালো চুল, শ্যামবর্ণের মুখশ্রী মলিন হয়ে আছে।
নিরেট কন্ঠে বললো,
“কিছু বলবি?”
আবির ভাইয়ের হাতে দ্বিতীয় বারের মতো সি*গারেট দেখে মেঘের হৃ*দয় চূ*র্ণবিচূ*র্ণ হলো। হাজার রাগ, অভিমান থাকুক তারপরও আবির ভাইয়ের প্রতি মেঘের সুপ্ত ভালোবাসা এখনও বর্তমান ।
মেঘ আর্তনাদ করে বললো,
“আপনি আবারও সি*গারেট খাচ্ছেন?”
আবির গম্ভীর কন্ঠে শুধালো,
“তাতে তোর কোনো সমস্যা?”
মেঘ মাথা নিচু করে শীতল কন্ঠে জবাব দিলো,
“হ্যাঁ।”
আবির কপাল কুঁচকে তাকিয়ে শক্ত কন্ঠে বললো,
” কি সমস্যা? ”
প্রশ্ন করে দরজা থেকে সরে বিছানার পাশে বসে সি*গারেট ঠোঁটে ধরেছে, অকস্মাৎ মেঘ দ্রুত পায়ে আবিরের কাছে গিয়ে মুখ থেকে সি*গারেট টেনে ফ্লোরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে, রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে জবাব দিলো,
“আপনি সি*গারেট খান এটায় আমার সমস্যা।”
আবির আশ্চর্য নয়নে চেয়ে রইলো অষ্টাদশীর লালিত মুখবিবরের অভিমুখে । মেঘ রা*গে ফুঁসছে আর ঘন ঘন শ্বাস ছাড়ছে। আবার মনে মনে ভীত হচ্ছে,
“আবির ভাই যদি মা*রেন। ”
তৎক্ষনাৎ নিজেকে সাহস দিলো,
“মা*রলে মা*রবে কিন্তু ওনাকে সিগারেট খেতে আমি দেখতে পারবো না। ”
আবির ভারী কন্ঠে শুধালো,
“কেনো আসছিলি?”
মেঘের মাথা থেকে ঐসব চিন্তা সরে গেছে। তবুও কিছুটা চিন্তিত স্বরে বললো,
“আপনার জন্য মিষ্টি নিয়ে আসছি ”
আবির ঠান্ডা কন্ঠে উত্তর দিলো,
“আমি মিষ্টি খাব না, নিয়ে যা। ”
মেঘ ভ*য়ে ভ*য়ে জিজ্ঞেস করল,
” কেন খাবেন না? আমার রেজাল্টে কি আপনি খুশি না?”
আবির নিস্তব্ধ হয়ে ফ্লোরে পরে থাকা আধখানা সি*গারেটের পানে চেয়ে আছে।
মেঘ পুনরায় বললো,
“কিছু বলছেন না যে”
আবির গম্ভীর কন্ঠে উত্তর দিলো,
” তুই খুশি থাকলেই হলো। আমার খুশিতে কি আসে যায়। ”
আবিরের নিরুদ্বেগ কন্ঠে বলা কথায় মেঘের মনে কেমন যেনো খটকা লাগলো। মেঘ চিন্তিত কন্ঠে শুধালো,
“আবির ভাই, আপনি কি আমার উপর কোন কারণে রে*গে আছেন?”
আবির এক পলক তাকালো মেঘের দিকে তারপর তপ্ত স্বরে বললো,
“আচ্ছা মেঘ, আমি যদি দেশ ছেড়ে একেবারে চলে যায়, তাহলে তো তুই এই বাড়িতে আনন্দে থাকতে পারবি। তাই না? ”
মেঘ আশ্চর্য নয়নে চাইলো আবির ভাইয়ের দিকে, বুকের ভেতর হৃ*দপিণ্ড ভ*য়ংক*রভাবে কাঁপছে । এই দেড় মাসেই আবির ভাই অষ্টাদশীর হৃদয়ের সবটুকু জায়গা জুড়ে অবস্থান করছে। আবির ভাই দেশ ছেড়ে চলে যাবে, এই কথাটায় কোনোভাবে মা*নতে পারছে না মেঘ৷
মেঘের সিক্ত নয়নজোড়ায় আবির ভাইয়ের প্রতি এক সমুদ্র ভালোবাসা স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে। কন্ঠ খাদে নামিয়ে মেঘ বললো,
“আপনি কেনো চলে যাবেন?”
আবির রাশভারি কন্ঠে বললো,
“যদি সত্যি সত্যি এমন হয় যে আমি চলে গেলে তুই বাড়ি ছেড়ে যাবি না তাহলে আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিরকালের জন্য দেশ ছেড়ে চলে যাবো। তবুও তুই ভালো থাকিস আর এই বাড়ির রাজকন্যা হয়ে থাকিস সারাজীবন। ”
মেঘের সমস্ত আকাশ ঘুরছে, আবির ভাই এত কঠিন কথা কেনো বলছেন তার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না অষ্টাদশী। অনেক ভাবার পর মনে পরলো, ১০ দিন আগের ঘটনা, মনে মনে ভাবলো,
“তাহলে কি বন্যার সাথে বলা কথাগুলো আবির ভাই শুনে ফেলছিল?”
মেঘ বেশখানিকটা সময় নিরব থেকে শান্ত কন্ঠে বললো,
“আসলে ঐদিন আমার খুব রা*গ উঠছিল ।জান্নাত আপুর কাছে পড়তে চাই নি তবুও….”
আবির কন্ঠ দ্বিগুণ ভারি করে বললো,
” জান্নাত পড়াতে না পারলে, আমি আনতাম ই না। কেনো জান্নাত কে এনেছি, কেনো তোকে জান্নাতের কাছে পড়তে জো*র করছি সবটায় জানতে পারবি শুধু একটু ধৈ*র্য রাখ আর পড়াশোনা কর মন দিয়ে। আর এখন নতুন টিউটর আনলে তোর মানিয়ে নিতেও সময় লাগবে। এখন তোর হাতে এত সময় নেই। একটা কথা মাথায় রাখিস, আর যাই হোক আমি তোর খারাপ চাই না। এইটুকু বিশ্বাস আমার উপর রাখতে পারিস। ”
প্রথম কথাগুলো ভারি স্বরে বললেও শেষ কথাগুলো শীতল কন্ঠে বললো আবির। মেঘ মনে মনে ভাবলো,
“সত্যিই তো, জান্নাত আপু পড়ানো তে তো কোনো সমস্যা নেই। ওনাদের মধ্যে যাই থাকুক তাতে আমার কি৷ ”
মেঘ ছোট করে বললো,
“সরি, আবির ভাই৷ আর এমন করবো না”
আবির স্বভাব-সুলভ ভারি কন্ঠে উত্তর দিলো,
“সমস্যা নেই, এখন যা তুই। ”
মেঘ চিবুক নামিয়ে অভিমানী স্বরে বললো,
“আপনি মিষ্টি না খেলে আমি যাব না।”
আবির ঠান্ডা কন্ঠে বললো,
“বললাম তো খাবো না, তুই যা।”
মেঘ শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো,
“বললাম তো যাবো না, একটা খান। ”
আবির এবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চাইলো, কিছু বলার আগেই মেঘ আহ্লাদী কন্ঠে বলে উঠলো,
“প্লিজ, আবির ভাই! ”
সঙ্গে সঙ্গে আবিরের অভিব্যক্তি বদলে গেলো, মুচকি হেসে বললো,
“ঠিক আছে, দে।”
আবির ভাইয়ের হাসিতে মেঘ গলে পানি হয়ে গেছে। রোমান্টিক মু*ডে বললো,
“আমি খাইতে দেয় মিষ্টি? ”
আবির মৃদু হেসে জানালো,
“ঠিক আছে।”
মেঘ মিষ্টির প্লেট নিয়ে আবির ভাইয়ের কাছাকাছি এসে দাঁড়ালো। আবির ভাইয়ের শরীর থেকে আসা পুরুষালি গ*ন্ধে মেঘের সর্বাঙ্গে ঝাঁকুনি দিলো। আবির ভাইয়ের কাছাকাছি এলে মেঘ নিজের অ*স্তিত্ব হারিয়ে ফেলে, ১০ দিনের রা*গ, অভিযোগ, অভিমানরা যেনো নিমিষেই বিলীন হয়ে গেছে। আবির ভাই মানেই একপ্রকার নে*শা। কাছে আসলেই অষ্টাদশী সেই নে*শায় আ*সক্ত হতে বাধ্য। হৃ*দপিণ্ডের কম্পনের তীব্রতা ক্ষণে ক্ষণে বেড়েই যাচ্ছে। মেঘ ধীর হস্তে কা*টা চামচে একটা মিষ্টি তুলে আবির ভাইয়ের মুখের সামনে ধরলো। আবিরও চুপচাপ খেয়ে নিলো।
মিষ্টি খেয়ে আবির থমথমে কন্ঠে শুধালো,
“আরেকটা কি খেতে হবে? ”
মেঘ সঙ্গে সঙ্গে উপরনিচ মাথা নাড়লো।
আবির মনে মনে বললো,
“তোর এই পাগ*লামি যেনো সারাজীবন থাকে৷ ”
মেঘ আরেকটা মিষ্টি এগিয়ে দিলো আবির ভাইয়ের মুখের কাছে। আবির দ্বিতীয় মিষ্টি শেষ করে ছোট করে বললো,
“বস এখানে”
মেঘ সঙ্গে সঙ্গে বিছানার পাশে বসলো, আবির একটা মিষ্টি কেটে অর্ধেকটা মেঘের মুখে দিলো। মেঘ যেনো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আবির ভাই তাকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। মেঘ চুপচাপ মিষ্টি টা খেয়ে নিলো।
আবির দ্বিতীয় বার কিছুটা মিষ্টি মেঘের মুখের সামনে ধরে বললো,
“দু’বার না খাওয়ালে তো তুই আবার পানিতে পরে যাবি। নে হা কর।”
মেঘ মিষ্টি মুখে নিয়ে একগাল হাসলো। মিষ্টি খেয়ে মেঘ শান্ত স্বরে ডাকলো,
“আবির ভাই”
আবির দৃষ্টি মেঘের মুখ বরাবর নিয়ে সুমধুর কন্ঠে উত্তর দিলো,
“হুমমমমম। ”
সেই দরদ ঢালা কন্ঠে বলা হুমমমম টা অষ্টাদশীর মনের ভেতর উত্তাল-পাতাল ঢেউয়ের সৃষ্টি করেছে।। এই হুমমম তে মিশে আছে সীমাহীন ভালোবাসা।
আবিরের দৃষ্টি অষ্টাদশীর মুখমণ্ডলে। ডাগর ডাগর আঁখিতে দীর্ঘ মনোযোগ দিয়ে চাইলো, গভীর নলকূপের ন্যায় বিমোহিত সেই নয়নজোড়া আবিরকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না। আবির চাইলেও নিজেকে শক্ত খোলসে আবদ্ধ রাখতে পারছে না। দৃষ্টিতে নামিয়ে নিলো ফ্লোরে।
মেঘ ঢুক গিলে নিজেকে কন্ট্রোল করে শান্ত আঁখিতে আবির ভাইয়ের দিকে চেয়ে বললো,
“একটা কথা বললো?”
আবির নিচ দিকে তাকিয়ে থেকেই উত্তর দিলো,
“বল”
মেঘ ভীত স্বরে প্রশ্ন করলো,
“যদি বলি আপনি আর সি*গারেট খাবেন না, তাহলে কি আপনি মানবেন?”
আবিরের ঠোঁট কিছুটা প্রশস্ত হলো, দৃষ্টি তখনও ফ্লোরে,মনে মনে বললো,
“তুই বললে হাসিমুখে জীবনটাও দিয়ে দিতে রাজি, সেখানে সি*গারেট আর এমন কি। আজ এই মুহুর্ত থেকে আমি আবির সি*গারেট ছাড়লাম। আর কোনোদিন ছুঁয়েও দেখবো না। প্রমিজ। ”
মেঘ আস্তে করে বললো,
“কি হলো?”
আবির মেঘের দিকে আড়চোখে চেয়ে বললো,
“ঠিক আছে, চেষ্টা করবো। ”
এতটুকুতেই মেঘ মহাখুশি৷ না যে করেন নি সেই অনেক। মেঘ বুক ফুলিয়ে শ্বাস টেনে, সাহস নিয়ে বললো,
“আরেকটা কথা জিজ্ঞেস করি?”
আবির ঠান্ডা কন্ঠে বললো,
“বল”
মেঘ ঢুক গিলে শীতল কণ্ঠে প্রশ্ন করলো,
“চুল, দাঁড়ি বড় হয়েছে, কাটান না কেনো?”
মেঘের এমন প্রশ্নে আবির মূর্খবৎ হয়ে গেলো, মেঘের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে, ঠান্ডা কন্ঠে শুধালো,
“কেনো? এভাবে ভালো লাগে না?”
মেঘ মিষ্টির প্লেট হাতে নিয়ে চুপচাপ উঠে দরজা পর্যন্ত গিয়ে, পেছনে তাকিয়ে বললো,
“আপনাকে সব ভাবেই ভালো লাগে, তবে এখন আপনার ড্যাশিং লুক টা missing. ”
কথাটা বলেই করিডোর দিয়ে অন্তহীন ছুটে নিজের রুমে চলে গেলো। আবির দরজার দিকে চেয়ে নিঃশব্দে হাসছে।
সবাই লাইক দিবে
চলবে….