#রণরঙ্গিণী_প্রেমরঙ্গা |৫০|
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা
[প্রাপ্তবয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত]
ভারী ফর্সা মুখে সহসাই চিন্তার ভাজ৷ আম্মাকে নিয়ে ভীষণ চিন্তা হয় ভূমির। মাধুরী সুযোগ পেলে কটু কথা বলতে ছাড়েন না। তবুও চুপচাপ সব হজম করে নিচ্ছে। এতটা ধৈর্যশক্তি ভূমি তার মায়ের কাছ থেকেই পায়। মায়ের জন্য অতশত চিন্তার মাঝেও মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলেছে ভূমি। আস্তে আস্তে মানুষজন আসতে শুরু করেছে৷ স্টেজে নিয়ে গিয়ে বসানো হয়েছে তাকে। ক্যামেরাম্যান রাফি নিজেই সকলের সঙ্গে ছবি তুলে দিচ্ছে৷ মেহমানদের খাওয়াদাওয়ার পালা চলছে৷ প্রলয় নিজে দায়িত্ব নিয়েছে কারণ তার অতি গুরুত্বপূর্ণ নিমন্ত্রিত একজন এসেছেন। সেই বিশেষ ব্যক্তি হচ্ছে বিরোধী দলের নাজিম চৌধুরী। ব্যক্তিগত ভাবে লোকটাকে একদমই পছন্দ না। তবুও অনেক হিসেবনিকেশ রয়েছে এই লোকের সঙ্গে। জনগণও তো দেখুক প্রলয় বিরোধী দলের লোকেদেরও আপ্যায়ন করতে পিছুপা হয় না। ভূমির সঙ্গে ছবি তুলবেন বলে ফিরোজা মেহরাব শিকদারকে ধরে নিয়ে এসেছেন। ভূমি আড়চোখে একবার মেহরাব শিকদারকে দেখে নিল৷ কিছুই বলার নেই তার। এত অন্যায় করার পরও লোকটার চোখমুখে অনুতাপসূচক কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। দিব্যি নিজের মতো রয়েছেন। রাফি ওদের তিনজনের ছবি তোলার জন্য উদ্যত হতেই ভূমি বলে উঠল‚
“রাফি ভাইয়া একটু অপেক্ষা করুন।”
“কী হয়েছে ভাবি? কোনো সমস্যা?”
“না ভাইয়া কোনো সমস্যা না। আমি আরও দুজনকে ডেকে আনতে চাই।”
এই বলে স্টেজ থেকে নেমে গেল ভূমি এরপর অর্পণ আর মহুয়াকে জোর করে স্টেজে নিয়ে এলো৷ এরপর হাসি মুখে বলল‚
“আমার অনেক ইচ্ছে আপনাদের সঙ্গে আমার আর আমার আম্মার একটা ছবি থাকবে।”
ভূমি সরল আবদারে ফিরোজা হেসে উঠলেন৷ ভূমিকে মাঝখানে রেখে একপাশে মেহরাব শিকদার আরেকপাশে মহুয়া দাঁড়ালেন। মহুয়ার অন্য পাশে অর্পণ আর মেহরাব শিকদারের পাশে ফিরোজা দাঁড়ালেন৷ রাফি উনাদের পাঁচজনের গ্রুপ ছবি তুলে দিল৷ এবার ভূমিকে মাঝেখানে রেখে একপাশে মেহরাব শিকদার আরেকপাশে অর্পণ দাঁড়াল। ওদের দুপাশে আবার ফিরোজা আর মহুয়া দাঁড়ালেন। এভাবেই অনেকগুলো ছবি তোলা হলো। সুযোগ বুঝে সিঙ্গেল ছবিও তুলিয়ে নিল ভূমি। বিষয়টাকে কেউই তেমন গুরুত্ব দেয়নি৷ সকলে স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছেন। তবে মেহরাব শিকদার ঠিকই বুঝে নিলেন ভূমি সব সত্যিই ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছে।
আবহাওয়া শীতল। মৃদুমন্দ সমীরণে বাগানে থাকা গাছের পাতাগুলো দুলে উঠছে। তারাও যেন পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে খিলখিলিয়ে হাসছে৷ মেহমানদের খাওয়াদাওয়ার পর্ব শেষ৷ সকলেই খেয়ে নিয়েছে। রিসেপশনের আয়োজন তো সবে শুরু হয়েছে। সকলের দৃষ্টি এখন ❝প্রলমি❞ জুটির দিকে আটকে রয়েছে৷ হঠাৎ ভূমির সামনে হাঁটু গেড়ে বসেছে প্রলয়। শেরওয়ানির পকেট থেকে ছোটো একটা বক্স বের করল। এরপর ভূমির দিকে নিজের হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বলতে শুরু করল‚
“আমার জন্য ভালোবাসা হচ্ছে একটা পদক্ষেপ‚ জীবনকে দ্বিতীয় ধাপে এগিয়ে নেওয়ার। তুমি কী আমার সঙ্গে জীবনের প্রত্যেকটা ধাপ অতিক্রম করবে নির্মলা ভূমি কন্যা?”
ছোটো একটা বক্তৃতা দিয়ে প্রলয় নিজের কথা শেষ করতেই জাহিদ আর নাঈম শিস বাজাতে শুরু করল। প্রলয়ের গম্ভীর কণ্ঠে আজ শঙ্কা‚ আসক্তি‚ মন্ত্রমুগ্ধতা সবকিছুই মেশানো ছিল। কথাগুলো বলতে গিয়েও সময় নিয়েছে অনেকটা। উপস্থিত সকলে একসঙ্গে “স্যে ইয়েস!” বলছে৷ ভূমি একবার ঘাড় ঘুরিয়ে আশেপাশে নজর বুলাল। মহুয়া দাঁড়িয়ে রয়েছেন নাজমার সঙ্গে৷ মায়ের উচ্ছ্বসিত হাসি মুখটা দেখে ভালো লাগল তার৷ ভূমি তার বাঁ হাতটা প্রলয়ের দিকে এগিয়ে দিল৷ অনামিকায় ছোটো ছোটো পাথরের সোনার আংটি পড়িয়ে দিল প্রলয়৷ ফর্সা হাতে জ্বলজ্বল করছে আংটিটা৷ লাইটের আলোতে চিকচিক করে উঠছে ক্ষণে ক্ষণে।
❑
মিউজিক বক্সে “পারাম সুন্দারী” গানটা বাজছে৷ ইরা‚ লামিয়া‚ পূর্ণতা আর পুষ্পিতা সমান তালে নাচছে৷ রাতে একটুখানি রিহার্সাল করেছিল ইরা আর লামিয়ার সঙ্গে। অডিয়েন্সরা একটু পরপর শিস বাজিয়ে উঠছে৷ এই গানটা তাদের প্ল্যানের বাহিরেই ছিল৷ যেহেতু পূর্ণতা পুষ্পিতা উপস্থিত ছিল না৷ শেষ সময়ে এসে গানটাকে যোগ করা হয়েছে৷ অল্প সময়েই যতটুকু পেরেছে রিহার্সাল করেছে ওরা৷ তিন মিনিটের গানটা শেষ হতেই সবাই করতালি দিতে শুরু করল৷ এরপর ছেলেদের অর্থাৎ অর্পণ‚ আরশ‚ রাফি আর লামের পারফরম্যান্সের পালা৷ মেয়েরা সরে গিয়ে ছেলেদের নাচের জন্য জায়গা করে দিল। গান বাজতে শুরু করল। “জামাল কুদু” গান বাজছে৷ গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকে হাত তালি দিচ্ছে৷ এদিকে ছেলেদের নাচ দেখে হাসছে মেয়েরা। এরা মূলত একটা বাজি ধরেছিল। অডিয়েন্স থেকে ভোট নেওয়া হবে। কোন দল বেশি সুন্দর নাচতে পারে৷ তারউপর আবার কাপল ডান্সও রয়েছে। দুই মিনিটের গানটা শেষ হতেই সকলে করতালি দিল৷ এই রাউন্ডে মেয়েরা এগিয়ে গিয়েছে৷ এবার কাপল ডান্স দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড উদ্ভোদন হবে। আর উদ্ভোদন হবে ❝প্রলমি❞ জুটির মিষ্টি একটা কাপল ডান্স দিয়ে। সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাগানে শুধুমাত্র মরিচ বাতি গুলো জ্বলছে। স্টেজের সামনে খালি জায়গাটায় প্রলয় আর ভূমি দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ সকলের দৃষ্টি আর্কষণের জন্য দুজনের উপর আলো এসে আছড়ে পড়ল। প্রলয় ভূমির দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷ ইশারায় হাতটা ধরতে বলছে বারবার। মনে সাহস সঞ্চার করে ভূমি তার কম্পিত হাত খানা প্রলয়ের হাতের দিকে বাড়িয়ে দিল। অতি সাবধানে ভূমির সঙ্গে পায়ে পা মেলাচ্ছে প্রলয়। রাতে যতটুকু শিখেছিল তাতে দুজনে বেশ ভালো নাচছে৷ এত মানুষের সামনে নাচতে গিয়ে বারবার লজ্জায় মূর্ছা যাচ্ছে ভূমি।
হতে পারে রূপকথার এক দেশে‚ রাতের এ আকাশে এক ফালি চাঁদ;
তোমার আমার চিরকাল..
তুমি আমি হাতে রেখে হাত‚ ছুয়ে দিয়ে আঙুলে আঙুল;
দেখতে পারো কিছু আদুরে সকাল..
হতে পারে এ পথের শুরু‚ নিয়ে যাবে আমাদের অজানায়;
তুমি আমি আমাদের পৃথিবী‚ সাজিয়ে নিব ভালোবাসায়;
ভালোবাসি বলে দাও আমায়‚ বলে দাও হ্যাঁ সব কবুল!
তুমি শুধু আমারই হবে‚ যদি কর মিষ্টি এ ভুল;
হাতে হাত রাখতে পারো‚ সন্ধি আঙুলে আঙুল;
ভালোবাসা বাড়াতে আরও হৃদয় ভীষণ ব্যাকুল!
করতালিতে মেতে উঠল আজকের আয়োজন। সকলের মাঝেই ভীষণ উল্লাস। জাহিদ আর নাঈম শিস বাজিয়ে ‘ফাটিয়ে দিয়েছিস মামা’ চেঁচিয়ে বলছে বিধায় এত কোলাহলের মাঝেও প্রলয় তা আবছা শুনতে পেল। প্রলয় আর ভূমি সেখান থেকে সরে গেল। এবার অর্পণ আর ইরার নাচ৷ মিউজিক বক্সে “তুমি আমার অনেক শখের” গানটার টোন বাজতে শুরু করেছে৷ বাকিরা অর্থাৎ আরশ‚ রাফি‚ লাম‚ লামিয়া‚ পূর্ণতা আর পুষ্পিতা উৎসাহ দিচ্ছে৷ ইরা নিজে থেকেই অর্পণের হাতটা ধরল৷ পায়ে পা মেলাতে শুরু করল দুজনে।
কেউ তোমাকে ভীষণ ভালোবাসুক‚
তুমি আর শুধু তুমি ছাড়া‚ অন্য কিছু না বুঝুক;
কেউ তোমার কোলে মাথা রেখে ভীষণ হাসুক;
তুমি একটু দূরে গেলে‚ লুকিয়ে আনমনে ভীষণ কাঁদুক;
তুমি তো চেয়েছিলে ঠিক এমনই একজন‚
দেখ না আমি পুরোটাই তোমার ইচ্ছে মতন;
তুমি আমার অনেক শখের খুঁজে পাওয়া এক প্রজাপতি নীল‚
আমি রংধনু রঙে সাজিয়েছি দেখ একাকাশে স্বপ্নীল!
নাচ শেষ হতেই আবারও করতালি দিতে শুরু করল সকলে৷ এবার পালা আরশ‚ রাফি‚ পূর্ণতা‚ পুষ্পিতা‚ লাম এবং লামিয়া৷ ওরা ছয়জন গ্রুপ হয়ে নাচবে৷ ওদের নাচের পর “আভি তো পার্টি শুরু হুয়ি হ্যে” এই গানে সবাই একসঙ্গে নাচবে। এদিকে প্রলয় ভূমিকে নিয়ে গিয়ে একটা চেয়ারে বসাল। ভারী লেহেঙ্গা‚ গহনা আর মেকআপে নিজেকে আরও বেশি ভারী মনে হচ্ছে ভূমির। তবে সব সহ্য করে নিচ্ছে। এমন দিন তো আর ফিরে আসবে না৷ প্রলয় নিজে পছন্দ করে এই লেহেঙ্গাটা কিনেছিল সেদিন। সঙ্গে ম্যাচিং করে নিজের জন্য শেরওয়ানি। এতসব বেহায়াপনা আদিখ্যেতা সহ্য হলো না মাধুরীর। তবুও তিনি হজম করে নিচ্ছেন সব। এত মানুষের মাঝে আজ আর নতুন করে সিনক্রিয়েট করলেন না মাধুরী। বাড়ির সম্মান নিয়ে তিনি বেশ কঠোর। উপস্থিত সকলকে উপস্থিত রেখে প্রলয় ভূমির সামাজিক বিয়েটা সেরে ফেলা হবে আজ৷
রাত সাড়ে বারোটা…
রিসেপশন পার্টি শেষ হয়েছে ঘণ্টা খানে সময় আগে৷ প্রলয় আর ভূমি কাউকেই ঘরে ঢুকতে দিচ্ছে না কাজিনমহলের কেউ। নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে ঘরটা সুন্দর করে সাজিয়েছিল৷ লেহেঙ্গা পাল্টে ভূমিকে জরজেটে লাল রঙা একটা শাড়ি পড়িয়েছে ইরা৷ লাল গোলাপ দিয়ে ভূমিকে ফুল কন্যা সাজিয়েছে৷ হালকা করে সাজিয়ে ঠোঁটে টকটকে লাল লিপস্টিক লাগিয়েছে ইরা৷ মনে মনে ভাবছে প্রলয় আজ ভূমিকে দেখে চোখই ফেরাতে পারবে না৷ পূর্ণতা পুষ্পিতা আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে। কাল থেকে তাদের পরীক্ষা শুরু। মাধুরী কঠোর ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার জন্য৷ ভূমিকে ঘরে দিয়ে আসা হলো। কিন্তু প্রলয়কে কিছুতেই ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না৷ কাজিনমহলের দাবি দশহাজার টাকা ছাড়া প্রলয়কে কিছুতেই ঘরের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না৷ বেশি তর্কাতর্কি করতে হয়নি। প্রলয় সঙ্গে সঙ্গেই টাকা পরিশোধ করে দিয়েছে ওদের৷ টাকা পেয়ে সব পালিয়েছে এখান থেকে৷
প্রলয় ঘরের ভেতরে প্রবেশ করল। বিছানার উপর বসে রয়েছে ভূমি। ঘরে ক্যান্ডেল লাইট জ্বালিয়ে রাখা৷ হরিদ্রাভ আলোয় নির্মলাকে ভীষণই অভিলাষিণী লাগছে। আজ কী করে প্রলয় নিজেকে সামলাবে? নিজেকে সামলে রাখা যে প্রতিনিয়ত দায় হয়ে পড়ছে৷ ভেতরে অনুভূতির তীব্র দহন। অর্ধাঙ্গিনীকে কাছে পাওয়ার তাড়নায় ব্যাকুল পূর্ণবয়স্ক শ্যাম পুরুষ। প্রেমোন্মত্ততায় জর্জরিত উষ্মা দেহ। পকেট থেকে একটা খাম ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে ভূমির খুবই সমীপে এগিয়ে গেল প্রলয়। মৃদু স্বরে সালাম জানাল ভূমি। সালামের উত্তর দিয়ে ভূমির হাত দুখানা ধরল প্রলয়৷ হাত দুটো ঘেমে একাকার অবস্থা। পুরুষ মানুষ হয়েও ঘাবড়াচ্ছে কিছুটা। লজ্জা জেঁকে ধরেছে সেই শ্যাম পুরুষকে। ভূমি উপলব্ধি করল মৃদু কম্পন। লাজে সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠল। কী করে সামলাবে সবটা? ভীষণ ভয় করছে তার। প্রলয়ের সামনে থাকতেও লজ্জা লাগছে ভীষণ। এদিকে প্রলয় নিজের অনুভূতিগুলোকে সহ্য করতে না পেরে ভূমির কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল‚
“জান আর সহ্য হচ্ছে না৷ প্লিজ! অনুভূতির তীব্র জোয়ারে প্রাপ্তবয়স্ক হৃদয় প্রেয়সীকে কাছে পাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ছে৷ নিজেকে নিয়ন্ত্রণে আনা বড্ড দায় হয়ে যাচ্ছে৷ নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে৷ মস্তিষ্ক অসাড় হয়ে পড়ছে। আমার এই অন্যায় আবদারকে প্রশ্রয় দেবে ভূমি কন্যা?”
পিলে চমকে উঠল ভূমির৷ এ কেমন অন্যায় আবদারের কথা বলছে প্রলয়? লজ্জা আর দোটানায় মূর্ছা যাচ্ছে ভূমি। রাত হয়েছে। সকলে নিশ্চয়ই এতক্ষণে শুয়ে পড়েছে৷ সে পালাবেই বা কোথায়? প্রলয়ের কাছ থেকে পালানোর সাধ্যি আছে নাকি? কদাপি নহে! প্রলয়ের আকুতিভরা কণ্ঠস্বর এড়াতে পারল না সে। প্রলয়ের হাতখানা আঁকড়ে ধরল সে। নীরবতায় উত্তর পেয়ে গেল প্রলয়। সিক্ত অধরোষ্ঠ জোড়ার আলিঙ্গন ঘটল। অর্ধাঙ্গের বিচলিত কামনীয় স্পর্শে ব্যাকুল অঙ্গনা নিজেকে সামলে রাখতে পারল না৷ পুরুষালি রুক্ষ হাতে স্পর্শ সর্বাঙ্গ জুড়ে বিচরণ করতে শুরু করল৷ স্পর্শ গুলো একটু একটু করে রুক্ষ হতে শুরু করল। আদুরে ব্যথার গোঙ্গাতে শুরু করল অঙ্গনা। প্রলয়ঙ্কারী বিচরণ সহ্য করতে পারছে না কিছুতেই। আবেশে চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা উষ্ণ অশ্রুকণা গড়িয়ে পড়ল৷ প্রলয় নেশালো কণ্ঠে বলে উঠল‚
“তুমি যে এতটা কোমল জানা ছিল না।”
লোকটার মুখে কিছুই আটকায় না। লজ্জায় দুহাত দ্বারা মুখ লুকাল ভূমি। মুখ থেকে হাত সরাল প্রলয়। গ্রীবায় প্রেমময় স্পর্শ ছুঁইয়ে দিল সঙ্গে সঙ্গে। চিনচিনে ব্যথায় চোখমুখ কুঁচকে এলো ভূমির। প্রলয় কিছুটা ঝুঁকে ব্লাউজের হুক খোলায় মনোনিবেশ করল। আবছা আঁধারে প্রলয়কে দেখে বুকটা ধক করে উঠল ভূমি। লোকটা উন্মাদ হয়ে উঠেছে। সমস্ত লাজ উঁকি দিল ভূমির গৌর কপোল জুড়ে। লাল টমেটো হয়ে গিয়েছে। আফসোস ঘরটা আঁধারিয়ায় আচ্ছন্ন। তা না হলে প্রলয় হয়তো গৌর কপোলে আরেক দফা অধর ছুঁইয়ে দিত। প্রলয় একবার মুখ তুলে ভূমিকে দেখে নিল। অধর কোণে হাসির রেখা প্রসারিত করে বলল‚
“লজ্জা পেলে তোমাকে বেশ লাগে ভূমি কন্যা। একটু সহ্য করে নিয়ো সবটা!”
কথাটা বলেই ভূমিকে নিজের সঙ্গে জড়িয়ে নিল। আবারও ভূমির অধরোষ্ঠে নিজের অধরোষ্ঠ মেলাল। সুখস্পর্শে দুচোখ মুদে এলো ভূমির৷ সারা শরীর জুড়ে অনুভূতির তীব্র বিচরণ। উন্মুক্ত দুটি দেহ মেতে উঠল অনুভূতির সুমধুর লীলায়। ব্যাকুল রজনি কিছু সুন্দর মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে রইল।
চলবে?…..