#অভিমানে_তুমি
#ফারিয়া_আফরিন_ঐশী
#পর্বঃ১৮(পূর্ববর্তী পর্ব ডিলিট করা হয়েছে)
নতুন পর্ব😊
মিথির স্ট্রোক করেছে কথাটা শুনে সাদির যেন সবকিছু থমকে যায়।।
এটুকু বলেই চোখ খুলল তিশা।তার দিকে এতোক্ষণ তীব্র দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে ছিল ইভান।ইভান এখন ১৪ বছরের বালক।।তাদের পুরোনো ছবির এ্যালবাম থেকে সাদি-মিথির ছবি দেখে তিশাকে তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে।।তারপর তিশা তাকে সাদি-মিথি সম্পর্কে জানায়।।ইভান আবার তার মাকে জিজ্ঞেস করে–মামনি,,তারপর??মিথির কি হলো??আর সাদি??আয়মান চৌধুরীকে কি ধরতে পেরেছিলো??আর ইশানের বা কি হলো??
তিশা–আমি জানি না বাবু।।ঐদিন মিথিকে ঐ অবস্থাতে রেখেই আমি তোকে নিয়ে সিলেট চলে আসি।।আর এই ১১ বছর ওদের সাথে যোগাযোগ করা হয় নি।।
ইভান এবার তিশার হাত ঝাঁকুনি দিয়ে বলে–মা!!তাহলে তো স্টোরির ইন্ডিং জানতে আমাদের উচিত ঢাকাতে যাওয়া।।
ঢাকার নাম শুনেই কেঁপে ওঠে তিশা।।
তিশা–না!!বাবু,,ওই অভিশপ্ত জায়গায় আর ফিরতে চাই না আমি।।
ইভান তাও জেদ করতে লাগল।।তিশা না পেরে ধমকে চুপ করালো ইভানকে।তবে ইভান চুপ করে গেলেও ব্যাপারটা ঝেড়ে ফেলল না।।সে রাতে শুয়েও ভাবতে লাগল কিভাবে তার মাকে রাজি করাবে।
পরদিন আবার ইভান তিশাকে রাজি করানোর কাজে লেগে পড়ল।।কিন্তুু কোনো লাভ হলো না।।তিশা অনড়।। সে কিছুতেই ঢাকা ফিরবে না।।
ইভানের মনটা খারাপ হয়ে গেল।।ইভান যেন মনমরা হয়ে ঘুরতে লাগল কারণ তার মাথায় তো ঘুরতে সাদি-মিথি।
১ সপ্তাহ ধরে ছেলেকে এমন মনমরা দেখার পর তিশা সিদ্ধান্ত নিল যে সে ঢাকা ফিরবে।।সাদি-মিথির সাথে যোগাযোগ করবে।।
রাতে ঘরে এসে দেখল ইভান চুপ করে শুয়ে আছে।।তিশা ইভানের কাছে গিয়ে বলল–তো ইভু বাবু,ঢাকা যেতে আপনার কোন কোন জামা নিবো??
ইভান লাফিয়ে উঠে বলল–সত্যি মা!!আমরা ঢাকা যাচ্ছি??
তিশা–হুমম।পরশু সকালের বাসে।।
ইভান তিশাকে জড়িয়ে ধরল।।
ঐ রাতটা ইভান ভাবতে লাগল সাদি-মিথির ব্যাপারে।
আর তিশা সে ভাবতে লাগল পুরোনো জায়গা গুলোতে কি এখনো সাদি-মিথি আছে!!!
পরদিন সারাদিন বিভিন্ন কাজে কাটল ইভান,তিশার।
এরপর যথারীতি দিনে সকাল ৭ টায় তারা বাস স্টান্ডে পৌঁছাল। ঢাকার বাসের টিকিট কেটে উঠে পড়ল বাসে।।সারা রাস্তা ভাবনা চিন্তার পর রাতে তারা পৌঁছাল ঢাকা।তিশা বাস থেকে নেমে তার বাপের বাড়িতে গেল।।বেল বাজাতেই তিশার মা দরজা খুলে দিল।।দীর্ঘ ১১ বছর পর তিশাকে দেখে সে রীতিমতো শকড।।চোখের জল ফেলে মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন।।
তিশার বাবাও।। ইভানকে দেখে তারা তো অবাক।।কতো বড় হয়ে গিয়েছে।। তারপর তারা ভিতরে এসে ফ্রেস হয়ে নিল।।রাতে খেতে বসে তিশা জিজ্ঞেস করল–আচ্ছা মা!!ইশানের কোনো খোঁজ জানো??
তিশার বাবা–শুনেছিলাম ওর ১০ বছরের জেল হয়েছে।।তারপর আর জানিনা।।
তিশা–ও ও আচ্ছা।।
খাওয়া শেষ করে ঘুমাতে গেল।।
ইভান তখন তার মাকে জিজ্ঞেস করল–আচ্ছা মা!!আমরা কি কাল সাদি-মিথিকে খুঁজতে যাব??
তিশা–হুমম,,যাব।।তুমি এখন ঘুমাও।
ইভানও খুশি হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
তিশা ভাবতে লাগল–আচ্ছা,ইশানের সাজার তো ১০ বছর সম্ভবত পূরণ হয়েছে।।ও কি কখনো খুঁজেছে আমাদের!!ওর কি এখনো মাফিয়াদের সাথে যোগাযোগ আছে!!!মিথি কেমন আছে??আদৌতে কি বেঁচে আছে??আর সাদি??
এসবের মাঝেই কেটে গেল রাতটা।।
সকালে ফ্রেস হয়ে ব্রেকফাস্ট করে তিশা,ইভানকে নিয়ে বের হলো আহমেদ ভিলার উদ্দেশ্যে।
ঢাকা শহরের বিরক্তিকর জ্যামে ইভান রীতিমতো বিরক্ত।।
তিশা আর ইভান ৩০ মিনিট পর আহমেদ ভিলাতে পৌঁছাল।।তবে পৌঁছে দেখল মেইন গেটে বিশাল বড় তালা ঝুলছে।তিশা যেন দিশেহারা হয়ে গেলো।।
আশেপাশে জিজ্ঞেস করতেই জানা গেল সাদিরা ১০ বছর আগেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে।।
ইভান–মা!!তাহলে কি মিথির খোঁজ পাবো না??
তিশা–খোঁজ তো পেতেই হবে ইভু।।এবার ইভান আর তার মা ডিটেকটিভ হবে।।
ইভান–ইয়াহ।।মিশন–সাদি-মিথি।
তিশা–হুমম।
তিশা আর ইভান আশেপাশে জিজ্ঞেস করল কিন্তুু কোনো সুরাহা পেল না।।অবশেষে বাড়ি ফিরে গেল।।
তিশার বাবা–এতো বছর পর আবার ওদের কেনো খুঁজছিস মা??
তিশা–বাবা!!সেদিন তো ওদের পাশে না দাঁড়িয়ে আমি পালিয়ে ছিলাম।।ইভানের ও অধিকার আছে ওর পরিবারের সাথে দেখা করার।।
তিশার বাবা–বুঝলাম।।তবে ওরা তো পুরানো বাড়িতেও নেই,আর কোথায় খুঁজবি??
তিশা–ভাবছি কাল একবার সাদির অফিসে যাব।।ওখানে নিশ্চিত কোনো খবর পাবো।।
তিশার বাবা–দেখ যা ভালো বুঝিস।।
পরদিন,,
তিশা আর ইভান ইনটেলিজেন্স অফিসে পৌঁছে সাদির ব্যাপারে জানতে চাইলে।।সবাই জানাল যে ওরা কেউ জানে না।।রবিন,রিদান,রুহির ব্যাপারে বললেও জানালো তারা অনেক আগেই বদলি হয়েছেন।।আর কিছু বলল না।।
তিশা হতাশ হয়ে ফিরে এলো।।হঠ্যাৎ তিশার ফোন এলো যে তিশার বাবা সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে গুরতর আহত হয়েছেন। তিশা, ইভানকে নিয়ে ছুটে হসপিটালে গেল।।ডাক্তার জানালো তার বাবার পা মচকে গিয়েছে আর হাত ভেঙে গিয়েছে।। তিশা ইভানকে তার মায়ের কাছে রেখে গেল ওষুধ কিনতে।তিশা প্রেসকিপশন দেখতে দেখতে বের হতে গিয়ে একজনের সাথে ধাক্কা লাগল। তিশা সরি বলে মাথা উঁচু করে সামনে থাকা ব্যক্তির মুখ দেখে থমকে গেল।।সেই পরিচিত মুখ,,তবে মুখে নেই কোনো হিংস্রতা।।মলিন মুখটা তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।।
তিশা মনে মনে বলল–ইশান।।
পরক্ষণেই ভয়ে তিশার গা কাঁটা দিয়ে উঠল।।তিশা দৌড়ে চলে গেল।ইশান বেশ কয়েকবার ডাকলেও তিশা সাড়া দেয়নি।।
তিশা ওষুধ কিনে এনে ভাবতে থাকে ইশানের ধরা ছোঁয়ার বাইরে যেতে হবে।।নয়তো ইশান আবার কোনো ক্ষতি করতে পারে।।তিশা তার বাবার কেবিনে এসে দেখে ইশান।।
তিশা রাগীভাব ফুটিয়ে বলে–একি!!এখানে কেনো??বেরিয়ে যাও আর তোমার করা ক্ষতি আমরা মানতে পারব না।।
ইশান-ট্রাস্ট মি তিশা আমি কোনো ক্ষতি করবো না তোমাদের।।জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তোমাদের খুঁজে যাচ্ছি৷ আমি তোমাদের চাই তিশা।।
তিশা–আমরা তোমাকে চাই না।।
ইশান–প্লিজ আমাকে বোঝানোর সুযোগ দাও একবার।।
তিশা–প্লিজ চলে যাও।।প্লিজ।।
ইশান–ওকে বাট আমি তোমাদের চাই তিশা।।নতুন করে শুরু করতে চাই সব।।আমাদের সন্তানকে নিয়ে।
তিশা চিল্লিয়ে বলে-যাস্ট গো ইশান প্লিজ।।
ইশান চোখের জল মুছে বেরিয়ে যায়।
ঐদিন বাসায় এসে তিশা অস্থির হয়ে পড়ে আচমকা ইশানের আগমনে।।
তিশা ভেবে নেয় যে কোনোরকমে সাদি-মিথির খোঁজ নিয়েই এখান থেকে চলে যাবে।।আর না।।ইশানকে কোনো সুযোগ দিবে না আর সে।।
ইশান যা করেছে তার ক্ষমা হয় না।তিশা ভাবে কাল একবার সাদির পারিবারিক ব্যবসায়ের ফ্যাক্টিরিতে গিয়ে খোঁজ নিবে।।সারারাত পুরানো স্মৃতির মধ্যে দিয়ে কেটে যায় তিশার রাত।।
অন্য দিকে,,
ইশান ঘরে পায়চারি করছে আর ভাবছে –তিশাকে বোঝাতে হবে।।আই নিড দেম।।
এরইমধ্যে দরজা খুলে কেউএকজন প্রবেশ করে বলল–কি রে খাবি না??
ইশান–সাদি ভাই??
সাদি–হুমম আমি।।চল তোর ভাবি অপেক্ষা করছে।।
ইশান–আসছি।।ভাবি কি রান্না করলো আজ??
সাদি-জানি না।।চল গিয়ে দেখি।।
তারপর সাদি ইশান নিচে গেল ডিনার করতে।
#চলবে
১১০০ শব্দের পর্ব😊
বিঃদ্রঃ আচ্ছা পূর্ববর্তী পর্বে আপনাদের অভিযোগ যে রোদেলা আপুর গল্পের সাথে হুবহু মিলে গিয়েছে।। সত্যি কি তাই??কয়েকজন তো কমেন্ট করেছেন যে আমি কপি করে আপুর পোস্ট টি ছাপিয়ে দিয়েছি।।আমিও আপুর গল্প পড়ি।।আমার প্লট সাজাতে গিয়ে আপুর গল্পের কোনো একটা পার্টের সাথে ২০%মিল রয়ে গিয়েছে।। তারজন্য আমি ক্ষমা চাইছি।।মাফ করবেন।।