এই_অবেলায়_তুমি #পর্ব_৩৭ লেখিকা #Sabihatul_Sabha

0
286

#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_৩৭
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

নূরের অপেক্ষার প্রহর গুনছে রুদ্র। বাইরের অবস্থা যতই শান্ত ঠান্ডা দেখাক না কেনো, সে ঠিক নেই। ভেতর ভেতর নির্ভীক মনটা চিন্তায় উতলা হয়ে আছে। বার বার নীলের মোবাইল ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোন ধরছে না। সব আশা ছেড়ে দিয়ে রাগে- ক্ষোভে চূর্ণ হয়ে ক্রুর চোখে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে। কখন নূর দরজা ঠেলে রুমে ঢুকবে।

নূর আর নীল বসে আছে ইরিনের বাসার ড্রয়িং রুমে।

ইরিনের আম্মু অনেক ধরনের খাবার নাস্তা ওদের সামনে রাখলো।
নূরঃ আন্টি এত কষ্ট করে কেনো এত কিছুর আয়োজন করছেন। আমি ইরিনের সাথে দেখা করেই চলে যাবো।
~ তা কি করে হয়। বিয়ের পর এই প্রথম জামাই নিয়ে আসলে আজ যেতে দিচ্ছি না।

নূর রেগে তাকানোর আগেই নীল রেগে নূরের দিকে তাকালো।

নূরও পাল্টা চোখ রাঙ্গিয়ে নীলের দিকে তাকালো। বেয়াদব ছেলেটাকে বার বার বলেছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে। না সে আসবে এখন দিলো তো সব মান সম্মান শেষ করে।

~ আরে বাবা নাও না কেনো। কিছুই তো খাচ্ছো না। নূর আমার মেয়ের মতো নিজের শশুর বাড়ি ভেবে খাও।

নীল বিরবির করে বললো,’ সেটাই তো, শশুর বাড়ি ভাবতে হবে কেনো। এটা তো আমার পার্মানেন্টলি শশুর বাড়ি।

পিছন থেকে ইরিন বলে উঠলো,’ আম্মু কে এসেছে??

নূর জোর পূর্বক একটা হাসি দিয়ে পিছন ফিরলো।

ইরিনঃ দুস্ত তুই!! আর জিজুকে নিয়ে আসছিস?? আমি বিশ্বাস করতে পারতেছি না। ওহ মাই গড!! বলে নূরকে জড়িয়ে ধরলো।
নূর ফিসফিস করে বললো, ‘ গাঁধি ছেলেটার দিকে তাকা তাহলে বুঝবি কাকে নিয়ে আসছি।
নূরের কথা শুনে নূরকে ছেড়ে সামনের ছেলেটার দিকে তাকালো। পিঠ দেখা যাচ্ছে। সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই ঠোঁট দুটো অজান্তেই ফাঁক হয়ে গেলো। শিরদাঁড়া বেয়ে ছুটে চললো শীতল হাওয়া। সামনে বসে থাকা মানুষটিকে দেখে বুকের ভেতরটা টগবগ করে উঠলো। সেই মুখটা এখন চোখের সামনে যাকে দেখার জন্য যার কন্ঠ একবার শুনার জন্য নিজেকে পাগল পাগল লেগেছে। এখন সেই মানুষটা ওর সামনে চাইলেই এখন তাকে ছোঁয়া যাবে, স্পর্শে অনুভব করা যাবে।
ইরিন কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নীল একটু নড়েচড়ে বসলো।

পিছন থেকে ইরিনের আম্মু বলে উঠলো, ‘ ইরিন ওদের মিষ্টি দে।’
নীল বলে উঠলো, ‘ আন্টি আপনি কি মিষ্টি একটু বেশি পছন্দ করেন??’
ইরিনের আম্মু হেসে বললো,’ না বাবা আমি মিষ্টি একদম কম খাই। আর এটা তো ইরিন কে আজকে দেখতে এসেছিলো সেই মিষ্টি। ‘
নীল থমকে গেলো,কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেললো,ওকি আজ কানে বেশি শুনছে??
নূর অবাক হয়ে বললো,’ ওরা কি বলে গেলো আন্টি??’

~বিয়ের ডেট ঠিক করা হয়ে গেছে। ইরিনকে সবার পছন্দ হয়েছে৷ ছেলে আর্মি খুবই ভালো।
নূর আরেকদফা অবাক হলো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে শুনে।
নীল ক্রোধ দৃষ্টিতে ইরিনের দিকে তাকিয়ে নিজের রাগ সংযোজন করার জন্য আবার নিচের দিকে তাকালো।
সারাদিন হাসি খুশিতে মেতে থাকা মানুষটা হঠাৎ রেগে গেলে নিজের মধ্যে থাকে না।
নূর নীলের দিকে তাকিয়ে আরেক দফা থমকে গেলো। হচ্ছে টা কি?

নূর মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললো,’ এটা ঠিক না আন্টি আমি জানি না আর আমার বেস্টুর বিয়ে ঠিক। এটা মানতে পারলাম না আন্টি।

~ জানোই তো ওর বাবা নেই। ওর চাচারা বিয়ে ঠিক করেছে ছেলে ভালো তাই আর অমত করিনি।

নূরঃ ওহহ আচ্ছা আমি কি ওর সাথে রুমে গিয়ে পড়াশোনার বিষয়ে কিছু কথা বলতাম।

~ এটা জিজ্ঞেস করার কি আছে যাও।

নীল বলে উঠলো,’ আমি এখানে একা বসে কি করবো??

~ জামাইকে ও সাথে নিয়ে যাও।

ইরিন ওর মার দিকে তাকিয়ে রেগে বললো,’ কিসের জামাই?? কার জামাই??

নূরঃ আন্টি নীল আমার ভাই।

ইরিনের আম্মু তাজ্জব বনে গেলেন নূরের কথা শুনে। উনি কি ভাবলেন আর কি হলো। লজ্জায় রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো।

ইরিনের রুমে নূর আর নীল বসে আছে।

নীল চেয়ারে বসে এক দৃষ্টিতে ইরিনের দিকে তাকিয়ে আছে।

ইরিন মাথা নিচু করে রেখেছে।

নিরবতা ভেঙে নূর বললো,’ তা বিয়ে ঠিক হলো৷ একটা ফোন দিয়ে ও তো বলতে পারতি। এখনি এত পর করে দিলি। বিয়ের পর তো চিনবি এই না।

ইরিন কথা পালটানোর জন্য নূরকে বললো,’ এত রাতে তুই কেনো কষ্ট করে আসতে গেলি। কাল সকালে ও তো আসতে পারতি।

নূরঃ আমাকে নিয়ে আর তোর ভাবতে হবে না।

নীল পলকহীন ভাবে ইরিনের দিকে তাকিয়ে আছে।

ইরিন নীলের তাকানো লক্ষ করে। অস্বস্তিতে নূরকে বললো,’ কি খাবি? কি আনবো?

নীল এবার বললো,’ নূর তুই বারান্দায় যা…

নূরঃ কেনো??

নীলঃ যেতে বলেছি যা। এত বেশি কথা কেনো বলিস..

নূর নীলের দিকে তাকিয়ে বুঝলো৷ নীল ইরিনের সাথে একান্ত কিছু কথা বলতে চায়।

নূর উঠে বারান্দার দিকে যেতে নিলে ইরিন ও ওর পিছু পিছু যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।

নীল শান্ত দৃষ্টিতে ইরিনের দিকে তাকিয়ে বললো,’ ইরিন আমি তোমাকে যেতে বলিনি।’

ইরিনের পা আপনা আপনি থেমে গেলো। এই প্রথম হা এই প্রথম সে নীলের মুখে নিজের নামটা শুনে থমকে গেলো। এত বিশ্রি কেনো লাগছে নিজের কাছে নিজের নামটা। নীলের মুখে যে হরিণ নামটাই মানায়।
নূর ইরিনের দিকে তাকিয়ে আছে। সে নিজেও অবাক হলো। সেই প্রথম দেখা থেকে আজ পর্যন্ত নীল কখনো ইরিনের নাম ধরে ডাকেনি। এই হরিণ নাম নিয়ে প্রতি দিন ঝগড়া করেছে তাও এই নামেই ডেকেছে। আর আজ কি-না…

নীল আবার বলে উঠলো,’ নূর অনেক রাত হয়ে গেছে ভাই মনে হয় চলে এসেছে বাসায়। তুই হেবলার মতো দাঁড়িয়ে থাকলে সময় আরো নষ্ট হবে।

নূরের রুদ্রের কথা মনে পরতেই দ্রুত বারান্দায় এগিয়ে গেলো।
ইরিনের এবার হুঁশ আসলো৷ সে একবার বারান্দার দিকে তাকালো আরেক বার নীলের দিকে তাকালো। আচ্ছা আজ ও এত ভয় পাচ্ছে কেনো নীল কে?? নীল তো এখনো কিছুই বলেনি। ফ্যান চলছে রুমে তাও সে ঘামছে।

নীল গিয়ে ইরিনের সামনে দাঁড়ালো।
ইরিনের ভয়ে চুপসে যাওয়া মুখটার দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আরো কাছে গেলো।
নীলঃ তাহলে বিয়ে করে নিচ্ছো ইরিন সুলতানা।
ইরিনের চোখ ছলছল করে উঠলো কিন্তু না সে কিছু তেই কারো সামনে ভেঙে পরবে না। নিজের নামটা আজ ওর কাছে এত জঘন্য লাগছে কেনো?

ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে নীলের দিকে তাকিয়ে আর সেই হাসি ধরে রাখতে পারলো না। সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলো।
নীলঃ তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো??
ইরিন মাথা নেড়ে বুঝালো সে ভয় পাচ্ছে না।
নীল এবার নিজের রূপ পালটে ফেললো। শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ তাহলে আমার চোখের দিকে তাকাও। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলো।’
ইরিন শুনলো না নীলের কথা। নত মুখে বললো,’ আ…আমি আস..সছি।
নীলঃ আমার কথা শেষ হয় নি। এই একমাস কলেজ যাওনি কেনো? মোবাইল বন্ধ কেনো??
ইরিনঃ মোবাইল নষ্ট হয়ে গেছে। আর কলেজ তো আমি গিয়েছি মাঝে মাঝে।
নীলঃ আচ্ছা বুঝলাম হঠাৎ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছো কেনো??
ইরিনঃ ছেলে ভালো…
নীলঃ তো??
ইরিনঃ ছেলে ভালো। পরিবার ভালো আর কি চাই।
নীলঃ ওহহ আচ্ছা। ছেলে ভালো, একদিন দেখেই বুঝে গেলে ছেলে ভালো আর এত বছরেও আমাকে বুঝতে পারলে না বাহ্।
ইরিনঃ আপনাকে বুঝার কি আছে। আর আমি কেনো বুঝবো? বুঝার মানুষের কি কম আছে?
নীলঃ আমি এখন তোমার সাথে তর্ক করতে চাই না। তুমি কালকেই আন্টিকে বলবে তুমি বিয়ে করতে চাও না।
ইরিন এবার নীলের চোখে চোখ রাখলো,’ কেনো বলবো?? কার জন্য বলবো? আর আপনার কথা কেনো শুনবো? আপনি কে হন আমার??আপনার আর আমার মধ্যে এমন কোনো সম্পর্ক বা অধিকার নেই যে আপনার এক কথায় আমি বিয়ে থামিয়ে দিবো।

নীল থমকালো আসলেই তো সে কে? তার কি অধিকার আছে বিয়ে থামানোর। ইরিনের প্রতিটি প্রশ্নে ওর আত্মসম্মানে লাগলো। কিছু না বলে সরে গেলো নিরবে। বলার অনেক কথা ছিলো কিন্তু থেমে গেলো একটি কথার মধ্যে “অধিকার ” এই শব্দটার কাছে তার এই ঠুকনো অনুভূতি গুলোকে ধামাচাপা দিয়ে দিলো।

ইরিন পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে।

নূর রুমে এসে দেখলো সব স্বাভাবিক আছে। ওতো কতো কিছু ভেবে ছিলো কিন্তু এখন তো দেখছে ওর ধারনার ১%ও কিছু হয়নি। এখন বেশি কিছু না বলে বাসায় গিয়ে ঠান্ডা মাথায় জিজ্ঞেস করতে হবে।

নূর আর নীল বেড়িয়ে গেলো ইরিনের বাসা থেকে। নীল একবারও আর ইরিনের দিকে তাকালো না। তাকানোর প্রয়োজন মনে করলো না। ইরিনের কথায় স্পষ্ট বুঝে গেলো। ইরিন আর যা-ই হোক ওকে ভালোবাসা তো দূর পছন্দ ও করে না। ভালো থাকুক না কিছু প্রিয় মানুষ ওদের প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে৷ সবাই যদি তার ভালোবাসার, ভালোলাগার মানুষটাকে পেয়ে যায় তাহলে না পাওয়ার যন্ত্রণা কেমন সেটা বুঝবে কিভাবে…?

নীলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে ইরিন ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে, চোখ জ্বালা করছে। ভেতর থেকে চিৎকার করে চাপা কান্না গুলো বেড়িয়ে আসতে চাচ্ছে।
ইরিন নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। সে ভেবে ছিলো হয়তো প্রশ্নের উত্তরে নীল জোর খাঁটিয়ে বলবে, ” হরিণ আমি তোমার সব। আমার অধিকার আছে কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি বিয়েতে নিষেধ করে দাও।আমার দিকে তাকাও। আমি তোমাকে আমার সবটা দিয়ে আগলে রাখবে।তুমি বিয়ে করো না। ” কিন্তু না ইরিন বুঝলো নীল কখনো ওকে ভালোবাসেনি ওর মনের ভুল সব। সব ভুল…অঝোরে কেঁদে উঠলো ইরিন কেনো ভালোবাসলেন না আমায়?? কেনো?কেনো? আমি যে আপনার জায়গাটা অন্য কাউকে দিতে পারবো না। হয়তো সময় বদলে যাবে কিন্তু ভালোবাসা বদলাবে না।

রুদ্র ব্যালকনি থেকে দেখলো নূর গেইট দিয়ে বাসায় ঢুকছে।

নূর রুমে এসে দেখে রুদ্র রুমে নেই। তারমানে এখনো বাসায় আসে নি। হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে মাথায় হাত ১টা বেজে গেছে।
ফ্রেশ হয়ে দেখলো বিছানার মধ্যে রুদ্র বসে আছে।
নূর একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো,’ কখন এসেছেন??’
রুদ্রঃ কোথায় গিয়ে ছিলে??
নূরঃ ইরিনের বিয়ে ঠিক হয়েছে ওদের বাসায় গিয়ে ছিলাম।
রুদ্রঃ ওহহ আচ্ছা।
নূরঃ হুম।

নূর রুমের এদিকে সেদিকে মোবাইলটা খুঁজছে।

রুদ্রঃ কি খুঁজছো??
নূর হেসে বললো,’ দেখুন না মোবাইলটা খুঁজে পাচ্ছি না।
রুদ্রঃ ওহহ আচ্ছা। দেখোতো এটা কি না..
নূর হেসে বললো,’ হে এটাই।
রুদ্র উঠে এসে নূরের চারপাশ ঘুরে পিছনে নূরের চুলগুলো কানের কাছ থেকে সরিয়ে ফিসফিস করে বললো,’ আমাকে দিয়ে বুঝি হচ্ছে না। আরো কয়জন লাগবে তোমার?
নূর রুদ্রের কথার কিছুই বুঝলো না।
নূরঃ আপনাকে দিয়ে হচ্ছে না মানে? বুঝলাম না..
রুদ্র তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,’ রাত জেগে কথা বলতে পারবে তো না-কি আমার জন্য প্রবলেম হবে? আমি কি অন্য রুমে চলে যাবো?
নূর রেগে বললো,’ কি বলছেন কি আপনি? মাথা ঠিক আছে তো..
রুদ্র এবার আর শান্ত থাকতে পারলো না রেগে চিৎকার করে বলে উঠলো,’ আমার মাথা একদম ঠিক আছে। আমি একটু ছাড় দিয়ে রেখেছি বলে এই নয় যে তোকে অন্য কারো সাথে রংঢং করে বেড়াতে দিয়ে রেখেছি। নিজের ঘরে স্বামী থাকতে যে নারী অন্য পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে আর যা-ই হোক সে কখনো রুদ্র চৌধুরীর বউ হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।
নূরের চোখ জলে ভরে উঠলো। সে এই কাকে দেখছে? এ কোন রুদ্র!
নূরঃ আমি কি কোনো অপরাধ করেছি রুদ্র ভাইয়া?
রুদ্রঃ চুপ! একদম চুপ.. ছেলেটা কে ছিলো?
নূরঃ কোন ছেলে?
রুদ্র রেগে বলে উঠলো,’ একদম অভিনয় করবে না। অনেক অভিনয় করেছো।
নূর এবার আর চোখের জল ধরে রাখতে পারলো না। শব্দ করে কেঁদে বলে উঠলো,’ প্লিজ কোন ছেলে? কিসের ছেলে সেটা তো বলবেন? আপনি আমাকে শুধু শুধু রাগ কেনো দেখাচ্ছেন?
রুদ্র এবার নিজেকে শান্ত করলো। কিছু না বলে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে নিলে। নূর রুদ্র কে আচমকা জড়িয়ে ধরলো ।
রুদ্র নিজেকে শান্ত করলো। নূরকে আসতে করে বললো ছেড়ে দিতে।কিন্তু না নূর আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
রুদ্রঃ ভালোবেসে একবার জড়িয়ে ধরতে আজ আমাদের মধ্যে এত দূরত্ব তৈরি হতো না।
নূর রুদ্রকে না ছেড়েই বললো,’ কি হয়েছে বলবেন প্লিজ?
রুদ্রঃ শুভ কে??
থম মেরে গেলো নূর। শরীর কাঁপছে অনবরত। আকস্মিত এত ভয় আসলো কোথায় থেকে? তাহলে আজ এত কিছু হয়েছে এই শুভ লোকটার জন্য। ছাড়বো না এই লোক কে৷ শুধু সকালের অপেক্ষা।
নূর রুদ্র কে নিজ থেকে ছেড়ে দিলো।
নূরঃ বাহিরের এক জন ফোন দিলো আর কি না কি বললো। আপনিও বিশ্বাস করে নিলেন। আপনি একজন ডক্টর হয়ে মুর্খের মতো আচরণ করেছেন বলে মনে হচ্ছে না আপনার??
রুদ্রঃ অপরিচিত লোক ফোন দিলে অবশ্যই জান, সোনা,কলিজা, ডার্লিং এই গুলো বলবে না।
নূরঃ আপনি আমাকে সন্দেহ করছেন?
রুদ্রঃ এটা সন্দেহ না নূর যেটা সত্যি সেটাই বলছি।
নূরঃ ভালোবাসেন আমাকে??
রুদ্র থেমে গেলো এর উওর কি বলবে? যদি নূর অন্য সময় এই প্রশ্ন করতো হাসতে হাসতে উত্তর দিতো রুদ্র। কতটা ভালোবাসে,তার ভালোবাসা কতটা গভীর তুলে ধরতো নূরের সামনে। রুদ্র নূরের চোখের জল মুছে দিয়ে বললো, শুয়ে পড়ো। অনেক রাত হয়েছে। ‘
রুদ্র সরে যেতে নিলে নূর রুদ্রের শার্টের কলার ধরে বললো,’ আমার প্রশ্নের উত্তর চাই??’

চলবে….

ভুলত্রুটি মার্জনীয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here