#আমার_বাহুডোরে_আবদ্ধ_তুমি
#নুসাইবা_জান্নাত_আরহা
#পর্ব ২৪ [ অন্তিম পাতায় ]
ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় পড়া নিজের প্রতিবিম্বের পানে বারবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে মেহরুন। নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখাতে ব্যস্ত সে। জানালার কাচ ভেদ করে দুপুরের রৌদ্রজ্বল আলো এসে আছড়ে পড়ছে মেহরুনের চোখে মুখে। ফলে তার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মেহরুনের শাড়িটা যেন রৌদ্রের আলোয় ঝলমল করছে। এতে মেহরুনের সৌন্দর্য বহুগুনে বেড়েছে। নিজেকে দেখে নিজেই চোখ ফেরাতে পারছেনা যেন। ‘আসলে এই শাড়িটা সুন্দর নাকি মেহরুন সুন্দর ‘ ভেবে পায়না মেহরুন।
আজ আলভি এবং রিশতার বিয়ে। কিছুক্ষণ আগে অরনী এসে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়ে গেছে মেহরুনকে। পড়নে তার মেহরুন রঙের সেই শাড়িটা যেটা তার ভাইয়ের বিয়ের জন্য শখ করে কিনেছিল, যে শাড়িটা পরে আদ্রিশের হাত ধরে নিজের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল, আজ ঠিক সেই শাড়িটা পরেই আবার সেই বাড়িতে যাবে। আদ্রিশের সাথে বিয়ের পর ও বাড়িতে আর যাওয়া হয়নি, তবে আজ ভাইয়ের বিয়ের আবার যেতে হচ্ছে। এসব ভেবে মনের কোণে সুক্ষ্ম অনুভূতিরা হানা দিচ্ছে তার।
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে ধ্যান ভাঙে মেহরুনের। পেছন ফিরে আদ্রিশকে দেখে সুক্ষ্ম হাসে মেহরুন। আদ্রিশ অবশ্য এখনো খেয়াল করেনি মেহরুনকে। আজ শুক্রবার হওয়ায় মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়েছিল আদ্রিশ। তার পড়নে সাদা পাঞ্জাবি, পায়জামা আর সাদা টুপি। ওয়ারড্রবের উপর টুপিটা আর হাত ঘড়িটা রেখে ফিরতেই হঠাৎ নজর পড়ে মেহরুনের দিকে। মেহরুনকে দেখে থমকে যায় আদ্রিশ। সে নিজের চোখকে ফেরাতে পারছেনা যেন। প্রথমদিনের অনুভুতিরা আবারও জেগে উঠেছে মনের কোণে। তাদের বিয়ের রাতে সাজবিহীন মেহরুনের এই মেহরুন রঙের শাড়িতে দেখে সেইদিনই বুকের মাঝে তোলপাড় হয়ে যায়। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আজ আরও একদফা প্রেমে পড়তে হলো এই রমনীর। কি আছে এই রমনীর মাঝে তা জানা নেই আদ্রিশের।
আদ্রিশকে এমনভাবে স্থির দৃষ্টিতে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সমস্ত মুখশ্রীতে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ে মেহরুনের। মাথা নত করে শুকনো কাশি দেয় মেহরুন। আদ্রিশের চেতনা ফেরে মেহরুনের শুকনো কাশিতে।
আদ্রিশ স্মিত হেসে বলল
-‘ বরের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে বুঝি আপনার এমন মহৎ প্রচেষ্টা, মিসেস মেহরুন ইবনাত? তবে এতো কষ্ট না করলেও চলতো। তুমি যেমনই থাকো না কেন আমার তোমাকে তেমনভাবেই ভালো লাগে। আমি তো এমনিও তোমার রূপের ঝলকানিতে ছারখার হয়েছি সেই কবেই।
মেহরুন লজ্জায় মিইয়ে যায়। আদ্রিশের কথার বিপরীতে একটা টু শব্দ করতে পারল না সে। আদ্রিশ আরও একদফা হাসল। শিস বাজিয়ে গাইতে লাগল
-‘ ” প্রেমে পড়েছে মন প্রেমে পড়েছে।”
মেহরুন এবার আর চুপ থাকল না। কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলল
-‘ আপনি কি আগে কখনো ইভটিজার ছিলেন?
আদ্রিশ এবার মুখটাকে থমথমে করে বলল
-‘ বউকে বাগে আনার জন্যে একটু মজা করি। তাই বলে তোমার মুখ থেকে আমি ইভটিজার এই মিথ্যে অপবাদটা শুনতে হলো? কি আশ্চর্য মেয়ে তুমি!
আদ্রিশের কথা শুনে মেহরুন ফিক করে হেসে ফেলে।
ড্রেসিং টেবিলের উপর থাকা আদ্রিশের ফোনটা হাতে নেয় মেহরুন টাইম দেখার জন্য। ফোন অন করতেই ওয়ালপেপারে নিজের ছবি দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যায় মেহরুন। এই ছবিটা তো ফারজানা আপুর বিয়ের দিনকার ছবি। এই ছবি আদ্রিশের কাছে এলো কিভাবে?
আদ্রিশের দিকে ফিরে ফোনটা দেখিয়ে অবাক কন্ঠে মেহরুন বলল
-‘ আপনি আমার এই ছবি পেলেন কোথ থেকে?
আদ্রিশ সূক্ষ্ম হেসে বলল
-‘ কোন এককালে এই হতভাগা তার প্রেয়সীর ছবি সযতনে তুলে রেখে দিয়েছিল নিজের কাছে।
মেহরুন ভ্রু কুচকে বলল
-‘ কখন তুললেন আমি তো বিন্দুমাত্রও টের পেলাম না?
আদ্রিশ মুচকি হেসে এগিয়ে আসে মেহরুনের দিকে। মেহরুনের একদম গা ঘেষে দাঁড়িয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় আদ্রিশ। আদ্রিশের হঠাৎ এমন আচরণে হকচকিয়ে ওঠে মেহরুন। তার সমস্ত শরীর শিরশির করে ওঠে। অজানা সূক্ষ্ম অনুভুতিরা ডানা মেলে উড়ে যায়। এরই মাঝে মেহরুনের কাঁধে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় আদ্রিশ। মেহরুন থরথর করে কেঁপে ওঠে। তবুও নিজেকে ধাতস্থ করে মেহরুন নিজেকে ছাড়ানো ব্যর্থ চেষ্টা করে। উদ্বিগ্ন গলায় বলল
-‘ ছাড়ুন না, দেরি হয়ে যাচ্ছে তো।
আদ্রিশ ভরাট কন্ঠে বলল
-‘ আমি তোমায় স্পর্শ করলেই সবসময় এমন পালিয়ে বেড়াতে চাও কেন মেহরুন?
-‘ আপনার যা ইচ্ছে করুন, তবে এখন নয়। দেরি হয়ে যাচ্ছে। ওদিকে আবার কতো ব্যস্ততা পড়ে রয়েছে।
আদ্রিশ ভ্রু নাচিয়ে বলল
-‘ যা ইচ্ছে হয় তাই করতে দিবে তো বউ?
থতমত খেয়ে যায় মেহরুন। এ কোন অসভ্য লোকের পাল্লায় পড়লো? নিজেকে ধাতস্থ করে বলল
-‘ এখন ছাড়ুন, ওদিকটা সামলাতে হবে তো?
-‘ সব রেডি। অরনী আপু সামলে নিয়েছে সব। আর বিয়ে তো সন্ধ্যায়, এখনো অনেক সময় আছে। এখন তোমার প্রধান কাজ বরের সাথে রোমান্স করা। ফটাফট চুমু খাও তো আমায়।
মেহরুন চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে থাকে আদ্রিশের দিকে। তা দেখে আদ্রিশ টুপ করে মেহরুনের গালে চুমু খায়। মেহরুন এবার করুণ কন্ঠে বলল
-‘ অনেক কষ্টে সেজেছি, এখন এসব করবেন না। আমি কিন্তু এখন আবার সাজ পোশাক ছেড়ে গোসল করতে পারবো না।
আদ্রিশ ভ্রু নাচিয়ে বলল
-‘ আমি তো চুমু খাওয়ার কথা বলছিলাম মেহরুন। তুমি কি ভেবেছিলে, বলো তো? চুমু খেলেও বুঝি গোসল করতে হয়? আমি তো ছোট মানুষ, তোমার মতো অতশত বুঝিনা বাপু।
মেহরুন তব্দা খেয়ে যায়। এই সুযোগ আর হাতছাড়া করেনা আদ্রিশ। মেহরুনের ঠোঁট দুটোকে নিজের ঠোঁটের দখলে নিয়ে নিল আদ্রিশ।
.
.
বধু বেশে বসে আছে রিশতা। লজ্জায় তার মাথা যেন নুইয়ে পড়ছে। তার পাশেই বর বেশে বসে আছে আলভি। তার দৃষ্টি রিশতায় নিবদ্ধ। রিশতাকে একান্ত নিজের করে না পাওয়া অবধি কিছুতেই যেন শান্তি মিলছেনা আলভির। বহু প্রতিক্ষার পর আজকের এই দিনটা এলো। আদ্রিশের জন্য সবটা এমন সহজভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এসব ভাবতে ভাবতেই কাজি চলে আসে। তিনি বিয়ে পড়িয়ে দেন দুজনের। দুজনে এখন পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ।
বিদায়বেলায় অনেক কান্নাকাটি করে রিশতা। রিশতার বাবা আলভির হাত ধরে মেয়েকে আগলে রাখতে বলে শেষমেশ তিনি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারেননা। ডুকরে কেঁদে ওঠেন। রিশতা কাঁদে অনেক। সামলে নেয় আলভি। অবশেষে সকল নাটকীয়তার পর আলভির হাত ধরে নতুন পথে পা চালায় দুজনে।
এসব দেখে মেহরুনের মনটা খারাপ হয়। আদ্রিশ আর তার বিয়ের রাতের কথা মনে পড়ে যায়। মেহনত আকবরও আদ্রিশের হাত ধরে বলেছিলেন মেহরুনের খেয়াল রাখতে। পুরনো কথা ভেবে মেহরুনের চোখ ছলছল করে ওঠে। আদ্রিশ মেহরুনকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে সযত্নে চোখের পানি মুছিয়ে দেয়। মেহরুন আদ্রিশের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসে।
.
.
কিছুক্ষণ আগে মেহরুন আর অরনী মিলে আলভি এবং রিশতার বাসরঘর সাজিয়ে দিয়ে গেছে। আলভির বাড়িতে এসে এই মাত্র পৌঁছেছে আলভি এবং রিশতা। রিশতাকে ধরে মেহরুন আর অরনী আলভির রুমে দিয়ে যায়।
একহাত ঘোমটা টেনে বিছানায় বসে থাকে রিশতা। মনের মাঝে সূক্ষ্ম অনুভুতিরা ডানা মেলে উড়ে চলে। দরজায় খট করে আওয়াজ হওয়ায়, সেইদিক পানে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রিশতা। আলভিকে দেখে আবারও লজ্জায় মিইয়ে যায় সে।
আলভি এসে বসে রিশতার পাশে। ঘোমটা সরিয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠল
-‘ মাশাআল্লাহ, বউ তো আমার হেব্বি সুন্দরী। উফফ, তোমায় দেখে আমার হার্টবিট মিস হয়ে যাচ্ছে, জান।
রিশতা একটা কিল দেয় আলভির বুকে। আলভি হো হো করে হেসে রিশতাকে জড়িয়ে নেয় নিজের বাহুডোরে। রিশকে নিজের বাহুডোরে আগলে রেখে আলভি বলল,
-‘ আজ থেকে #আমার_বাহুডোরে_আবদ্ধ_তুমি। আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আগলে রাখবো তোমায়।
রিশতাও হেসে আলতো হাতে জড়িয়ে নেয় আলভিকে। আজ থেকে সূচনা হয় তাদের জীবনের নতুন অধ্যায়ের।
.
.
আরাভ আর অরনী দুজন দুজনের হাত ধরে ফাঁকা রাস্তায় হাটছে। বুক ভরে শ্বাস টেনে নেয় অরনী। শত বাঁধা বিপত্তির পর তাদের জীবনে পূর্ণতা পেয়েছে। অরনীর শাশুড়িও নিজের ভুল বুঝতে পেরে অরনীকে নিজের মেয়ের মতো আগলে রেখেছেন। অরনী আরাভের হাতটা শক্ত করে ধরে। আরাভও এক হাতে জড়িয়ে নেয় অরনীকে। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফেলে।
.
.
মেহনত আকবরের দরজায় কড়া নারে মেহরুন। দরজা খুলে দেন তিনি। আদ্রিশও এসেছে সাথে। মেহরুন গিয়ে জড়িয়ে ধরে বাবাকে। পরম যত্নে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন তিনি। মেহরুন বাবার হাত ধরে বলল
-‘ তুমি মোটেও বাবা হিসেবে ব্যর্থ নও, বাবা। একজন ভালো মানুষের হাতে তুলে দিয়ে আমার জীবন ধন্য করেছো, বাবা।
মেহরুনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে মেহনত আকবর গর্ব করে বললেন
-‘ দেখলে তো লাবিবা, আদ্রিশের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিয়ে কোনো ভুল করিনি আমি। আর আমার ছেলেটার জীবনেও পূর্ণতা পেল আজ। এখন আর আমার কোনো চিন্তা রইল না।
লাবিবা রহমান হেসে জড়িয়ে ধরেন মেহরুনকে। মেহরুনও জড়িয়ে ধরে বলল
-‘ সরি আম্মু, সেদিনকার ব্যবহারের জন্য।
-‘ সরি তো আমার বলা উচিত। কোনোকিছু না ভেবেই তোকে কড়া কথা শোনাতেও দুবার ভাবিনি আমি। আমায় মাফ করে দিস মা।
মেহরুন আলতো হেসে জড়িয়ে ধরে মাকে।
.
.
আদ্রিশের কাঁধে মাথা রেখে বেলকনির ডিভানে বসে আছে মেহরুন। আজ আকাশে উঠেছে থালার মতো চাঁদ। সাথে বইয়ে মৃদু মন্দ হওয়া। কিছুক্ষণ পর পর দমকা হাওয়া এসে মেহরুনের চুলগুলো উড়িয়ে দিচ্ছে। আদ্রিশ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকে। মেহরুনের দিকে সারাজীবন তাকিয়ে থাকলেও হয়তো কখনো বিরক্তি আসবেনা আদ্রিশের। মুখ থেকে মেহরুনের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে ভরাট কন্ঠে বলল
-‘ চাঁদের গায়েও কলঙ্ক আছে কিন্তু তোমার গায়ের কোনো কলঙ্ক নেই, মেহরুন।
মেহরুন ফিরে তাকায় আদ্রিশের পানে। হুট করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আদ্রিশকে মেহরুন। ধরা গলায় মেহরুন বলল
-‘ পৃথিবীর সকল শান্তি হয়তো আপনার বাহুডোরে আবদ্ধ আছে। এছাড়া আর কোথাও এই শান্তির ছিটেফোঁটাও আমি পাইনি। আপনিহীন আমি ভাবতে গেলে গলা ধরে আসে,শ্বাস আটকে যায়। এ জীবনে এর বেশিকিছু আমার চাওয়ার নেই। আস্ত আপনি আর একটা আটপৌরে জীবন, ব্যাস দিব্যি চলে যাবে।
মেহরুনের কথা শুনে সুক্ষ্ম হাসে আদ্রিশ। মেহরুনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আদ্রিশ বলল
-‘ এভাবেই নিজের সাথে আমায় জড়িয়ে রেখো মেহরুন। ভালোবাসি যে তোমায়। তবে হ্যাঁ আমায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ভুলেও মনে আনবেনা। আমার মৃত্যুর আগ অবধি আমি হতে নিস্তার মিলবেনা তোমার, মেহরুন। কারণ #আমার_বাহুডোরে_আবদ্ধ_তুমি 💖
__________________ #সমাপ্ত ___________________
অবশেষে শত প্রতীক্ষার পর সমাপ্তি ঘটল এই গল্পটির। পূর্ণতা পেল তিনজুটির। জানিনা আপনাদের মনমতো গল্পটা লিখতে পেরেছি কিনা? হয়তো কারো ভালো লেগেছে নয়তো কারো ভালো লাগেনি। আমার ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। তবে আমি আমার মতো চেষ্টা করেছি ভালোভাবে লেখার। অনেক কষ্ট করে লিখেছি তাই কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না। আপনাদের সবার মূল্যবান মতামত চাই। যারা এতোদিন কোনো রেসপন্স করেননি তারাও আজ রেসপন্স করবেন। আর হ্যাঁ লেখিকাকে ভুলে যাবেননা কিন্তু। আবারও নতুন গল্প নিয়ে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ। সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ 💖