আমার_একাই_যে_তুই #সুরাইয়া_সাত্তার_ঊর্মি #পর্ব-৩

0
377

#আমার_একাই_যে_তুই
#সুরাইয়া_সাত্তার_ঊর্মি
#পর্ব-৩

পিছনে ফিরে ইউসুফ ভাইকে দেখে প্রান যেন ফিরে পাই আমি। এই মুহূর্তে তাকে আমার কাছে সুপার মেনের চেয়ে কম মনে হচ্ছে না । দৌড়ে তার কাছে গেলাম। তিনি পূর্ণদের দিক রাগি চোখে তাকিয়ে আছেন।এখন মজাই হবে। ভাইয়া সব কটাকে ডিসুম ডিসুম করে মারবে ইয়াহু।আমি হাপাতে হাপাতে বললাম,

–” ভাইয়া দেখুন তারা আমাকে বিরক্ত করতেসে ধরে মারুন গিয়ে। একদম ডিসুম ডিসুম করে।”

ইউসুফ ভাই তখন আমার দিক ভ্রু কুচকে তাকালেন। তারপর চোখে মুখে বিরক্তি ছাপ ফুটিয়ে বললেন,,

–” আমাকে বাংলা সিনেমার হিরো পাইছিস? যে কথা নাই বার্তা নেই এদের ধরে মারবো?যতসব আজাইরা চিন্তা।”

তাহার কথায় একরাশ দুঃখের মেঘ জমা হলো মনে।কি এমন হতো? তিনি তাদের ধরে মারতেন! আর আমি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে দেখতাম।মারামারির এক পর্যায় তিনি তার শুভ্র পাঞ্জাবীটা খুলে ফেলতেন সালমান খানের মতো। তার জিম করা বডি হা করে দেখতাম।

কিন্তু তিনি বরাবরের মতো আমার ভাবনায় এক বালতী বালি ঢেলে দিলেন তিনি।মুখটা চুপসে দাড়িয়ে রইলাম তার পাশে।তখনি “ওয়া” “ওয়া” চিৎকারে পুলিশের গাড়ি হাজির..! আশ্চর্য সিনেমায় প্রতিবার পুলিশের ক্যারেক্টার হয় সিনের লাস্টের দিক কিন্তু আমাদের সিন শুরু হওয়ার আগেই পুলিশ হাজির। হাউ?

আমি আড়চোখে তাকে দেখতে লাগলাম তিনি বাঁকা হাসচ্ছেন। পূর্ণ ও তার দল বল এখনো দাড়িয়ে, হয়তো আমার মতো তারাও চিন্তিত এখানে পুলিশ কিভাবে এলো?কি কাজ তাদের??

ইউসুফ এগিয়ে গেলেন পুলিশদের দিক। হাত মিলিয়ে বললেন,,

–” স্যার ধন্যবাদ এতো শর্ট টাইমে আসার জন্য। এই যে পোলাদের দেখছেন? তারা আমার বোনকে ইভটিজিং করছিল।এদের ধরে নিয়ে যান।”

তখনি পাশ থেকে পূর্ণ হাসতে হাসতে বলল,,

–” হে হে হে! বলরেন আর হয়ে গেল না..! আর এমনিতেও আপনার কাছে প্রুফ আছে নাকি? যে আমি করেছি কিছু? পুলিশ তো মামা বাড়ি! কি বলিস রফিকককা?

সাথে সাথে তখনি দাঁত কেলিযে বলল,,
–“যে বস! হে হে!””

পুলিশ বলল,,

–” স্যার আমরা একে ৬ বার ধরেছি..! ৬ বারেই প্রুফ নেই বলে শাস্তি দিতে পারি নাই। এখন প্রুফ ছাড়া কিছু করতে পারবো না আমরা!”

ইউসুফ পুলিশের দিকে রাগে যায়। আর বলল,,

–” এটা কি বলছেন আপনি? আপনাদের এসব কথার জন্যই আজ কাল এরা লাই পেয়ে মাথায় উঠে ধেই ধেই করে নাচে! ”

পুলিশ মাথা নত করে রইল। তা দেখে ইউসুফ ভাই বিরক্তি নিয়ে বলল,,

–” এদের ধরেন! প্রুফ দিচ্ছি। (আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে ফোন বের করে) এই নিন এখানে ভিডিও আছে তাদের করা কীর্তিকর্মের।

আমি তার কথা শুনে অবাক হয়ে রইলাম মুখ টা হা হয়ে গেল আমার। পূর্ণদের সঙ্গ পঙ্গ নিয়ে গেলেন মারতে মারতে পুলিশ।পূর্নের মুখ চুপসে আছে। তা দেখে হাসি হাসি পাচ্ছে।আর চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে,,” পূর্ণ বাবু এখন কেমন লাগে? মামা বাড়ি পার্মানেন্ট শশুর বাড়ি, মধুর হাড়ি খান এবার! একদিন আসবো সময় করে শুনবো কিন্তু শশুর বাড়ির আপ্পায়নের কথা..!

ইউসুফ ভাইয়া আমার দিক এগিয়ে এলেন। তাকে দেখে মুখটা ভার করে রইলাম তখন তিনি হেসে ফোন নাড়াতে নাড়তে বললেন,,

–” বুঝলিরে বাবুইপাখি! আমি তোর মতো এতো বুদ্ধু না। আমি হার্ডওয়ার্ক করিনা স্মার্ট ওয়ার্ক করি! গাধা না তোর মতো গর্ধব। ”

তারপর আবার ধমকে বলে উঠলেন,,

–” কলেজে উঠেই পাঙ্খা গজাইছে তোর তাই না? তাই তো রাত বিরাতে ধেঁই ধেঁই করে নাচছিস! বেদ্দপ মেয়ে! চল বাসায়, আজকে থেকে তোর বাহিরে যাওয়া বন্ধ। একদম বন্ধ! ”

তার কথায মনটা খারাপ হয়ে এলো আমার চরম খারাপ। এই লোকটা এমন কেন? একটি সুযোগও বাদ দেয় না সে আমাক অপমান করার হু…!

হলুদের অনুষ্ঠান শেষের দিক ফটোশপ চলছে।নানা এঙ্গেলে। তারপর গ্রুপ ফোটো। আবার ফ্যামিলি। তারপর নাচ গান। এর মাঝে লিয়া এসে হাজির। এসেই দখলে নিয়ে নিলো ইউসুফ ভাইয়াকে এই বজ্জাত মহিলা।এসব দেখে ভাললাগে না মোটেও আমার মনে হয় ঝাটা পিটা করি এরে। কিন্তু ব্যর্থ আমি এই মাইয়া হয় তার দুর সম্পর্কের খালাতো বোন তাই চুপ।

এক পর্যায় শেষ হতেই যে যার রুমে আমিও চলে গেলাম আমার রুমে। ফ্রেশ হয়ে গা এলিয়ে দিলাম বিছানায়। আর তখন কার কথা ভাবতে লাগলাম। “ইশশ” তখন ইউসুফ ভাইয়া না আসলে কি হালটাই হতো! মনে মনে হাজারো ধন্যবাদ দিলাম আমার কিউটের ডিব্বাটারে..!সব ভাবতেই মুহূর্তেই চোখ জুড়ে নামলো ঘুম।

গভীর ঘুমে যখন আচ্ছান্ন তখন মনে হলো কেউ অতি আদরে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।তারপর অনুভব করলাম কেউ ঠান্ডা কিছু আমার গালে স্পর্শ করছে। এমন স্পর্শ কেঁপে উঠলাম আমি। মন চাইছে ব্যক্তিটিকে দেখতে। আর সেই স্পর্শের আবেশে আরো গভীর ভাবে জড়িয়ে যেতে। কিন্তু চোখ গুলো যে বেইমানি করলো খুললো না একটা বারো।

কিছুক্ষণ পর কঁপালে সেই ব্যক্তিটির ঠোঁটে ছোঁয়া পেলাম। সে এতো নিকটে থাকাতে গায়ের স্মেল আছড়ে পরছে মুখে খুব পরিচিত সেই স্মেল। ধীরে ধীরে স্মেলটি হারিয়ে গেল। সাথে সাথে আমিও ডুবে গেলাম গভীর ঘুমে।

সকালে ঘুম ভাঙ্গলো খুব ভোরে। কেন জানি আজ ফুর ফুরে লাগচ্ছে। রাতের স্বপ্নটার কথা ভেবে লাল, নীল হচ্ছি আমি? আচ্ছা এটা কি সত্যি স্বপ্ন? তাহলে বাস্তবের মতো কেন লাগচ্ছে?সত্যিকি সেই ব্যক্তিটি ছিল? সাথে সাথে আয়নার দিক ছুটে যাই আমি। ও মা…. এটা তো…!

চলবে,

ছোট বলে বকবেন না প্লীজ। কারেন্ট অনেক জালাচ্ছে। ফোনটাতেও চার্জ দিতে পারছিনা। তাই যতটুকু পাড়চ্ছি লিখচ্ছি!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here