#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৮৪
.
🍂
—” অপশন নাই কুমারী হওয়ার (কপাল কুচকে)
.
—” নাহ সেই সুযোগটা আপাতত তোমার জন্য নেই…….
.
রিদের এমন কাটকাট গলার উত্তরে হতাশ হয় মায়া,, রিদের কথায় উত্তরে কি বলা উচিত সেটা ভেবে না পেয়ে থেমে গিয়ে চুপ করে যায় মায়া,, রিদ মায়াকে চুপ করতে দেখে নিজের দৃষ্টি মায়ার থেকে সরিয়ে আস্তে করে তার দাদা-দাদির দিকে তাকায় পরে তাদরকে উদ্দেশ্য করে কাটকাট গলায় বলে উঠে………
.
—” আমি দ্বিতীয় বার বিয়ে করছি আর এতে করে কারও সমস্যা হবে না বলে মনে হচ্ছে না আর যদিও কারও সমস্যা হয় আমার বিয়ে নিয়ে তো সেটা সেই ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত সমস্যা বলে ঘর্ণ করা হবে এতে আমার কিছুই করার নেই, কারণ সমস্যা যেহেতু তার তাই সমাধানও সেই ব্যাক্তি নিজ দ্বায়িত্বেই করবে,, এতে আমার কিছুই করার নেই,,, আর বিয়েটা হবে আজ থেকে পনেরো দিন পরে, মানে আরিফ আর ফিহার বিয়ের ঠিক এক সাপ্তাহ পরে,, তাও আমার ঠিক করা সময়ে আমারি বউকে……
.
রিদের কাটকাট গলায় কথায় ড্রাইনিং টেবিলে সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিদের দিকে,, কারণ এমন একটা সময় কেউ রিদের কাছ থেকে এমন কিছু শুনবে সেটা তাদের ধারণা বাহিরের ছিল,, সবাই যেখানে ফিহা আর আরিফকে নিয়ে ব্যাস্ত ছিল সেখানে হুট করে রিদ নিজের বিয়ের কথাটা শুনাবে সেটা ভাবতেও পারিনি কেউ,, তাই আবাক করা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রিদের দিকে,,,,,
.
রিদের দাদা-দাদি রিদের কথায় শুনে মূহুর্তেই খুশি হয়ে যায় দুজনেই তবে হেনা খাঁন রিদের জন্য খুশি হলে মায়ার কথা চিন্তা করে থেমে যায়,, হেনা খাঁন সবসময় রিদের চিন্তাটাই বেশি করতো তাইতো রিদকে জোর করেই মায়ার সাথে বিয়ে করায়,, যাতে করে রিদ সবার মতো সংসারিক হয় ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করে কিন্তু রিদকে জোর করে বিয়েটা করালেও মায়াকে বউ হিসাবে মেনে নেই উল্টো দিন দিন মায়ার ওপর আচরণ করে থাকে অতিরিক্ত তাই এখন হেনা খাঁনকে রিদের আশেপাশে বিড়তে দেওয়া পছন্দ নয়,,, কিন্তু মায়ার এক্সিডেন্ট পর থেকে রিদের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখেছে মায়াকে নিয়ে,, তাই রিদের বিয়ে নিয়ে হেনা খাঁনের তেমন একটা আপত্তি না থাকলেও রিদকে নিয়ে উনার মধ্যে ভয়টা কাজ করছে বরাবর মতোই মায়ার জন্য আর সবচেয়ে বড় কথা আয়ন কি করবে এটা শুনলে,, হেনা খাঁন তো জানে আয়নে ফিলিংস সম্পর্কে মায়াকে,, কিভাবে বুঝাবে সে আয়নকে মায়ার দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারটা নিয়ে,, কথা গুলো ভেবেই হেনা খাঁন রিদের দিকে তাকিয়ে থেকে সুপ্ত কন্ঠে বলে উঠে……..
.
—” তোর কি মনে হয়, তুই যাহ বলবি তাই….
.
হেনা খাঁনের এমন কথায় রিদের কোনো রকম প্রতিক্রা হলো রিদ হেনা খাঁনের দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে আস্তে করে নিজের খাবার প্লেট দিকে তাকায় পরে নিজের স্বাভাবিক দৃষ্টি বগিতে খাবার খাবার খেতে খেতে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে…….
.
—” হুমমম……
.
রিদের এমন দায়সারা ভাব উত্তরে খানিকটা রেগে যায় হেনা খাঁন তিনি রেগে চাপা সুরে রিদকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……..
.
—” আমরা কি কোনো কিছুতে বাঁধ্য তোর কাছে যে এখন তোর কথা আমাদের শুনতে হবে………
.
তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে……
.
—” কেন বাঁধ্য নও কি তোমরা……
.
রিদের খাপছাড়া উত্তরে হেনা খাঁন মূহুর্তেই রেগে যায় পরে রেগে রিদকে কিছু বলবে তার আগেই ড্রাইনিং টেবিলের সবার দিকে নজর যেতেই থেমে যায় বিশেষ মায়ার পরিবারের কথাটা চিন্তা করে কারণ এখন পযন্ত মায়ার আর রিদের বিয়ের সম্পর্কে সত্য কথা গুলো কেউ জানতে পারে না,, কথা গুলো ভেবে হেনা খাঁন মায়ার পরিবারের কথাটা চিন্তা ভাবনা করে রিদের দিকে তাকিয়ে থেকে চাপা সুরে বলে উঠে………..
.
—” তাই, আমরা কোনো কিছুতে বাধ্য না তোর কাছে…….
.
হেনা খাঁনের কথায় রিদ চোখ তুলে তাকায় পরে হেনা খাঁনের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে রিদ স্বাভাবিক দৃষ্টি বংগিতে বলে উঠে……
.
—” কেন প্রথমে আমাকে বিয়ে করানোর সময় এই কথা মনে ছিল না তোমাদের,, তখন আমি বাধ্য ছিলাম তোমাদের জন্য,, আট এখন তোমরা বাধ্য আমার জন্য এতে এতটা কার্বযাব করার কিছুই নেই,, এটাই প্রকৃতির নিয়ম আজ আমিতো কাল তুমি,, তাই শুভ কাজে বাঁধা সৃষ্টি না করে দোয়ার হাতটা বাড়িয়ে দাও দাদীমা, কারণ আমি তোমাকে ছাড়া শূন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন আর সবচেয়ে বড় কথা আমি তোমার সোনামাকে সবসময় হেপাজত করবো সবকিছুতে তাই তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা মুক্ত থাকতে পারো দাদী,, তোমার শত চেষ্টা কাজে লেগেছে দাদীমা আমি ভালোবাসতে শিক্ষে গেছি তাই আমাকে নিয়ে তোমার আর ভয় পেতে হবে না,,,,
.
রিদের কথা গুলো যেন মূহুর্তে মধ্যে হেনা খাঁনেট সাথে সাথে খাবার টেবিলের সবার মন ছুঁয়ে যায় গভীর ভাবে,, মায়ার পরিবারের সবাইও রিদের প্রতি গভীর ভাবে ভালোবাসা সাথে সাথে একটা বিশ্বাসও সৃষ্টি হয় মায়াকে নিয়ে,, আর সেটাই কাজটা হেনা খাঁনেরও হয় তিনি যেন এমন কিছুই শুনতে চেয়েছিলেন রিদের মুখে শুনার জন্য,, হেনা খাঁনের খুশিতে চকচক করছে তার দুটো চোখ কারণ অবশেষে তিনি স্বাথর্ক হয়েছে রিদকে নিয়ে তিনি পেরেছে রিদকে দিয়ে সংসার করাতে,,, পাশ থেকে আরাফ খাঁন স্ত্রী মনের কথা গুলো বুঝতে পেরে পাশ থেকে রিদকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……..
.
—” এতটা তাড়াতাড়ি করার কি আছে রিদ,, আমরাও পরেও বিয়েটা ধরতে পারি তাই না…..
.
আরাফাত খানের সুমতি পেয়ে রিদ পাশ ফিরে তাকায় পরে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে……
.
—” না দাদাভাই তাড়াতাড়ি হচ্ছে না কোনো কিছু সবটাই ঠিক আছে আমি সবকিছু মেনেছ করে নিব,, তবে বিয়েটা হবে দেশের বাহিরে সুইজারল্যান্ডের,,, তবে সুইজারল্যান্ডের কোথায় হবে সেই লোকেশনটা এখনো ঠিক করেনি,,,
.
—” বাংলাদেশ না করে হঠাৎ বাহিরের করার প্লেনিং কেন হলো তোর……. (কপাল কুচকে)
.
—” দুটো অনুষ্ঠান হবে একটা বাংলাদেশ অন্যটা সুইজারল্যান্ডের,,, তবে মূল বিয়েটা হবে সুইজারল্যান্ডের,, ফিহার আর আরিফের বৌভাতের পর পরই আমরা সবাই সুইজারল্যান্ডের চলে যাবো সেখানেই আরিফ ও ফিহার হানিমুন স্পট বুকিং করে রেখেছি আমি আর বাকি বাংলাদেশের সকল গেস্ট ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের আমার সব কাইন্ড গুলো সব আমাদের দ্বায়িত্বে যাবে সুইজারল্যান্ডে তাদের প্লেনের টিকেট থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচ থাকবে আমাদের হাতে,,,,, বাকিটা আমি তোমার সাথে পরে সব ডিসকাস করে নিব,,,
.
—” আচ্ছা……
.
—” হুমমম…..
.
আরাফাত খানের সুমতির সাথে সাথে পাশ থেকে ফিহা লাফিয়ে উঠে আনন্দে,, রিদের বিয়ে বলে কথা সাথে বাকিরা সবাইও সুমতি জানিয়ে খুশি হয় তবে মায়া এতক্ষণ নির্রব দর্শকের মতো সবটাই শ্রবন করে গেল,, কারও ওপর কোনো রকম প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে অজানা এক কষ্টে আস্তে করে উঠে যায় খাবার টেবিল থেকে,, মায়াকে খাবার টেবিল ছাড়তে দেখে সবাই ভাবে হয়তো মায়া লজ্জা পেয়েছে নিজের বিয়ের কথা শুনে কিন্তু রিদ মোটাও স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারিনি মায়ার এমন অস্বাভাবিক কাজে,, কারণ রিদ জানে তার বউ কতটা পাগল তার জন্য,, আর এতক্ষণে বিয়ে কথাটা শুনে লাফিয়ে পরতো তার গায়ে কিন্তু সেরকম কিছুই করলো না মায়া উল্টো চুপচাপ উঠে যায় খাবার টেবিল থেকে বিষয়টি ভেবেই রিদ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মায়ার যাওয়ার দিকে……..
চলবে…………