দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৮৫

0
804

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৮৫

.
🍂
রাত একটা ছুঁই ছুঁই, ব্যস্ততার সহিত নিজের রুমে বসে ল্যাপটপে কিছু ফাইল চেক করছে রিদ। মনোযোগ সবটা সেদিকেই। নিস্তব্ধতা চেয়ে আছে চারপাশে। নিস্তব্ধ পরিবেশে নিজের নিশ্বাসের শব্দটাও যেন কানে লাগছে রিদের। চোখ দুটো তার দৃঢ়ভাবে ল্যাপটপের স্ক্রিনে স্থির। নিস্তব্ধ থমথমে পরিবেশে হঠাৎ করে নিজের রুমের সিকিউরিটি এর্লাম বাজতেই মনোযোগ ভস্ম হলো রিদের। ফোনের সিকিউরিটি এর্লাম থেকে চোখ সরিয়ে তাকাল দরজার দিকে, এত রাতে কে আসতে পারে তার রুমে? বিষয়টি দেখার জন্য দরজার দিকে তাকাতেই কপাল কুচকে এলো রিদের।

.

রিদের এমন করে তাকানোর মধ্য দিয়েই মায়া চাপানো দরজাটি আস্তে করে খুলে রিদের রুমের ভিতর প্রবেশ করে নিজেকে কালো চাদরে মোড়ানো অবস্থায়,,, মায়া পা থেকে হাঁটু অবধি বিশাল বড় কালো চাদরে নিজেকে ঢেকে রিদের রুমে চুপিচুপি ডুকতে গিয়ে রিদের সামনে ধরা পরে যায়,, মায়া মনে করেছিল এত রাতে হয়তো রিদ ঘুমিয়ে পরেছে তাই বিষয়টিতে এতটা মনোযোগ না দিয়ে রিদের রুমে ঢুকে,,,,, রিদের রুমের দরজাটি আগের নেয় চাপিয়ে দিয়ে পিছনে ঘুরতে চমকে উঠে মায়া চোখের সামনে রিদের কপাল কুচকে আসার ফেসটি দেখে,, রিদকে নিজের দিকে এমন করে তাকাতে দেখে খানিকটা ইতস্তত বোধ করে মায়া,,,

.

মায়া রিদের দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে হঠাৎ করেই অ্যাটিটিউড সাথে চাদরে ওপর দিয়ে দুইহাত কামড় রেখে মডেলদের নেয় পা বাঁকা করে হেঁটে এগিয়ে আসল রিদের দিকে। রিদের কুঞ্জত কপালের ভাজ একধাপ বেড়ে যায় মায়ার এমন অদ্ভুত কান্ড দেখে,, মায়া কি করতে চাইছে সেটা বুঝার জন্য সেদিকে তাকিয়েই রইল।
.

মায়া খুব কষ্টে স্টাইল করে হেঁটেও রিদের কোনো রকম হেলদোল বা প্রতিক্রা দেখতে না পেয়ে যায় সে। হতাশার দৃষ্টিতে রিদের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করল রিদ কেন কিছু বলছে না। কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে রিদের দৃষ্টি অনুসরণ করে নিজের দিকে তাকাতেই হঠাৎ মনে পরল ভুলে যাওয়া বিষয়টি। তৎক্ষনাৎ মায়া দ্রততা সঙ্গে নিজের গায়ের মোড়ানো বিশাল কালো চাদরটি উড়িয়ে ফেললো পাশে। তাড়াহুড়ো আবারও আগের নেয় কোমর বেঁকে পোজ নিল যেন এই মূহুর্তে রিদের সামনে বিশাল কোনো শুটিং স্পট হচ্ছে আর তাতে মায়া অডিশন দিচ্ছে একের পর এক পোজ দিয়ে।

.

রিদ এতক্ষণ স্বাভাবিক দৃষ্টিতে কপাল কুচকে তাকিয়ে থাকলেও কিন্তু মায়ার গায়ের চাদরটা ফেলে দেওয়ার সাথে সাথে থমকে গেল সে,, চোখের সামনে মায়াকে ভিন্ন রুপে দেখে অটোমেটিক হা হয়ে যায় রিদের মুখ,,,,

চোখের সামনে মায়াকে অদ্ভুত সব সাজে দেখে অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে যায় রিদ। তার অবশ্য যথাযত কারণও আছে। কারণ এই মূহুর্তে তার আর্ধা পাগল বউ কালো নেটের শাড়ির পরে তার সামনে দাঁড়িয়ে। জ্বাল সুতোয় কালো নেটের শাড়িটি এতোই সূক্ষ্ম পাতলা যে মায়ার পেট পিঠ বডি সবই দৃশ্যমান। তাছাড়া শরীরের জড়ানো কালো শাড়িটি যে কোনো রকম পেচিয়ে পরে চলে এসেছে সেটা মায়ার অবস্থা দেখেই বুঝতে পারছে রিদ। আর কিছুক্ষণের মধ্যে হয়তো শাড়িতে মায়ার পা বেজে সম্পূর্ণ শাড়িটি খুলে নিচে জলাঞ্জলী হয়ে যাবে নিশ্চিত। এতো পাতলা শাড়ির সাথে তার আধা পাগল বউ কি ব্লাউজ পরেছে সেটা মায়াই বলতে পারবে ভালো। কারণ রিদ এই মূহুর্তে বুঝতে পারছে না তার বউ যেটা পরে আছে সেটা আদৌও ব্লাউজ নাকি অন্য কিছু। মায়ার সাদা কাঁধে ঐ একটু করে চিকন ফিতার দেখা ছাড়া আর কিছু চোখে পরছে না রিদের। পিঠের পিছনেও দু’টো ফিতাই দেখাই পেল রিদ। এছাড়া আর বিশেষ কিছু কাপড়ে নেয় চোখে পরল না তার।
.

মোটামুটি বেশ লম্বা সম্বা হাই হিল পরে রিদকে পটানোর চেষ্টা করেও বিফলে যাচ্ছে মায়া। কারণ এতো উঁচু হিলে মায়া অবস্থ না থাকায় বারবার পা মোচড় খাচ্ছে সে। তারপরও মায়া হাল ছাড়ল না। হাটার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হেলতে দোলতে। কিন্তু সমস্যা মায়া হাই হিলে হাঁটতে পারছে না সেটা না। সমস্যা হচ্ছে মায়ার এতো চেষ্টা করে হাঁটতে গিয়ে শাড়ি জায়গায় থাকছে না সেটা মূলত রিদের সমস্যা। এই যে তার বউ এতো মোচড়ামুচড়ি করে হাঁটতে চাইছে আর এতে করে মায়ার কোমর হতে শাড়ির আচল সরে উম্মুক্ত উদরে চকচকে চিকন কোমর বেল প্রকাশিত হচ্ছে রিদের চোখে যার জন্য রিদ দারুণ বেকাবু হচ্ছে। তীব্র আর্কষিত বোধ করছে বউয়ের প্রতি। মায়ার কালো লম্বা হাঁটু অবধি চুল গুলো এলোমেলো করে পিঠের ওপর ছাড়া হয়তো চুলের স্টাইল করতে গিয়ে সব গুলো চুল যর্ট পাকিয়ে পাগলের বাসা বানিয়ে রেখেছে অগোছালো অবস্থায়,, দুহাত ভরতি কালো রেশমি চুড়ির পরলেও মুখে মেখেছে একগাধা মেকাপ হয়তো রিদকে ইমপ্রেস করতে গিয়ে নিজে নিজে সাজতে গিয়ে সং সেজে বসে আছে,,

.

রিদ দুই চোখ দিয়ে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থেকে মায়াকে ভালো করে পযবেক্ষন করে নেয়,, বউ তার এই মূহুর্তে শত চেষ্টা করেও তার সামনে মডেল হওয়া বিষয়টি প্রেজেন্ট করতে চাওয়াটা বুঝতে পেরে আরও আবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মায়ার দিকে, কিন্তু কেন যে এমন অদ্ভুত কাজটা করতে চাচ্ছে সেটাই বুঝতে পারছে না রিদ,, বউ তার এমন ভাবেও সাজতে পারে তা চিন্তা ভাবনায় বাহিরের ছিল। মায়া আবারও রিদের দিকে স্টাইল করে হেঁটে আসতে চেয়ে ধুপ করে পরল রিদের সামনে, রিদ মায়াকে হুমড়ি খেয়ে পরতে দেখে তৎক্ষনাৎ চমকে উঠে দাঁড়াতে যাবে তার আগেই মায়া দ্রুততার সঙ্গে উঠে বসল।

.

মায়া নিজেকে ঠিক ঠাক করে আস্তে করে উঠে দাঁড়িয়ে আবারও আগের নেয় স্টাইল করে হাটতে গিয়ে পায়ের হিলের সাথে পেচিয়ে সম্পূর্ণ শাড়িটি খুলে ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে রিদের সামনে,, রিদ মায়াকে এমন অবস্থায় দেখে টায় জায়গায় বসে পরে দ্বিগুণ হা হয়ে,, এখন যেন হা করে নিশ্বাসটা নিতে পারছে না মায়াকে এমনত অবস্থায় দেখে রিদ,, রিদের সামনে সবকিছু রঙ্গিন স্বপ্নের মতো মনে হতে লাগে যা দেখে রিদের শ্বাসরুদ্ধকর রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বারে বারে,,,,,

.

রিদের সামনে মায়ার শাড়ীটি খুলে পরতেই মায়ার চোখ তুলে রিদেকে এক পলক দেখেই আবার শাড়ীটির দিকে তাকায় রাগে দুঃখের গাল ফুলাতে ফুলাতে হঠাৎ করে ভ্যাঁ ভ্যাঁ শব্দের কান্না করে বসে জোরে জোরে,, চার ঘন্টা যাবত নিজেকে একা একা সাজিয়ে রিদের সামনে নিজেকে সুন্দরী রমণীর প্রজেন্ট করতে গিয়েও বিষয়টি ভালো করে করতে না পারায় তার ওপর রিদ সামনে এই ভাবে শাড়ীটি খুলে পরার মায়ার আর কষ্টে নিজেকে শান্ত রাখতে পারিনি সাথে সাথে শব্দ করে কান্না করে বসে,,,, মায়ার কান্না ধ্যান ভাঙ্গে রিদের পরে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে আসে মায়াকে কান্না করতে দেখে,, দুহাতে মায়াকে জরিয়ে ধরে নিজের সাথে শান্তনা দিতে থাকে মায়া কিছুক্ষণ রিদের বুকে মাথা রেখে কান্না করে ভেজা গলায় হিচকি তুলে বলে উঠে…….

.

—” আমাকে আর সুন্দর দেখাবে না, আপনিও আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন এখন,,,,

.

মায়ার এমন কথায় রিদ চমকে উঠে রিদ মায়াকে নিজের বুকের থেকে তুলে সামনে দাড় করার, পরে কপাল কুচকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে,,,,

.

—” তোমাকে সুন্দর না দেখালে আমি কেন তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো আমি, আর আমার এমনটা পছন্দ তোমাকে কে বলেছে…

.

রিদের এমন কথায় মায়া হিচকি তুলে কান্না করতে করতে বলে উঠে……

.

—” কেউ বলেনি তবে আমি দেখেছি নিজের চোখে……

.
মায়ার এমন কথায় দৃঢ়ভাবে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে…….

.

—” কি দেখছো, আর কোথায় দেখলে শুনি……

.

—” দেখেছি তো আমার ফোনে ছবি গুলো একটা মেয়ের সাথে তাই তো আমি আপনার জন্য এমন করে সেজে এসেছি……..

.

.

.

চলবে………

.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here