অসম্ভবেও আমার তুমি নুসরাত সুলতানা সেজুথি পর্ব–১৭

0
347

#অসম্ভবেও আমার তুমি
নুসরাত সুলতানা সেজুথি
পর্ব–১৭

রক্তে ভেসে যাচ্ছে সাদা ঝকঝকে মেঝে।একটু পরপর কেঁপে কেঁপে উঠছে তনয়া।জ্ঞান পুরোপুরি যায়নি।কিন্তু চোখ গুলো মেলে রাখার মত সামান্য শক্তি টুকুও পেয়ে উঠছে নাহ।
ঝাপসা দৃষ্টিতে নিজের থেকে সামান্য দুরুত্বে স্নিগ্ধার অচেতন দেহ দেখেও কোন অভিব্যাক্তি জানান দিতে পারছেনা নিজের।

কয়েক মুহুর্ত বাদেই বাড়ির সামনে কারো গাড়ি পার্ক করার শব্দ এলো। একটু পরেই বুটের গটগট শব্দ তুলে সদর দরজার দিকে এগিয়ে এলো কেউ একজন।এর বেশি কোনও কিছুই মস্তিষ্কে নাড়া দিতে পারলোনা তনয়ার।বিকল হয়ে এলো সব কিছু।
_________________________________________

আবরার আসছে।মুখ তার হাসিহাসি,,, দুহাতে জড়ানো পার্পেল রঙ -য়ের অর্কিডের বুকে।
দরজা খোলা দেখে ঈষৎ সন্দেহে ভ্রু কোঁচকালো আবরার।
“”””” দরজাতো এভাবে খুলে রাখা হয়না? তবে কে খুললো? স্নিগ্ধাকি ভুলে খুলে রেখেছে? হতেও পারে! মহারানী হয়তো ভেবেছেন আমার ওনার কাছে পৌঁছাতে দেরি হবেনা এতে!

এটুকু বলে মুচকি হাসলো আবরার।এক হাত দিয়ে চাপানো দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো।দরজার লক টেনে দিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই চমেক উঠলো একেবারে।

চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো কাঁচ,, আর তার মধ্যে তনয়া উপুড় হয়ে আছে,,মাথার দিক টা চুলের সাথে রক্তে মাখামাখি ,,তনয়ার পাশেই ঝাড়বাতিটার ভাঙা অংশ।

এমন পরিস্থিতিতে কৌতুহলে মাথায় চক্কর কাটলো আবরারের। তনয়ার অবস্থা দেখে ওর দিকে পা বাড়িয়ে এগোতে ধরলে,,এর আগে খানিকটা দূরে স্নিগ্ধাকে পরে থাকতে দেখলো। ধুক করে বিট করলো হৃদযন্ত্রটা।হাত থেকে ফুলের বুকে ফেলে দিয়েই ওর দিকে এক ছুট লাগালো আবরার।

হাটু মুড়ে বসে স্নিগ্ধার মাথা কোলে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে বলল
— পরি? এই পরি কি হয়েছে? এই পরি??

আবরারের বুক কাঁপছে। টিপ ঢিপ করছে স্নিগ্ধার জ্ঞান শূন্যতায়। স্নিগ্ধার মাথা কোল থেকে অতি সন্তর্পণে নামিয়ে রেখে দৌড়ে ডায়নিং টেবিলের কাছে এলো আবরার। গ্লাস ভর্তি পানি নিয়ে আবারো গিয়ে হাটু মুড়ে বসলো স্নিগ্ধার অচেতন দেহের পাশে।
গ্লাসের পানিতে আঙুল ডুবিয়ে ফোটা ফোটা করে দিতে শুরু করলো স্নিগ্ধার মুখ চোখের ওপর।
মৃদূ আওয়াজে ডাকতে লাগলো,

— পরি চোখ খোলো! এই পরি?

কয়েক বার পানির ছিটেফোঁটা দিতেই নড়ে উঠলো স্নিগ্ধা।স্নিগ্ধার হুশ ফিরতে দেখে প্রানে পানি ফিরে পেলো আবরার।

কিন্তু অপেক্ষা করলোনা।স্নিগ্ধার পুরোপুরি জ্ঞান ফেরার আগেই ওকে রেখে ছুটে এলো তনয়ার কাছে।তনয়ার এখন আর জ্ঞান নেই।মরার মত পরে আছে।আবরার এসেই কোনও কিছু না ভেবে কোলে তুললো ওকে।

ততক্ষনে চোখ মেলেছে স্নিগ্ধা।মাথাটা ঝিমঝিম করছে।মাথার এক পাশ চেপে ধরে উঠে বসলো। পাশ ফিরতেই আবরারের কোলে তনয়াকে দেখে বিস্ময়কর চাহনীতে তাকালো।এক মুহুর্তের জন্য অবাক হয়ে এলেও,পরক্ষনে তনয়ার অবস্থার কথা মনে পড়তেই নিজেও ধড়ফড় করে উঠে দাড়ালো।
আবরার স্নিগ্ধাকে উঠতে দেখে অধৈর্য হয়ে বলল,

–দরজাটা খুলে দাও পরি। ফাস্ট।

স্নিগ্ধা তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে এসে দরজার লক টেনে খোলে। তনয়াকে কোলে নিয়েই দ্রুত পায়ে বেরিয়ে পরে আবরার। স্নিগ্ধাও পিছু পিছু দৌড়ায়।
এক পর্যায়ে গাড়ির কাছে আসতেই আবরার উদ্বেগ নিয়ে বলল,
— গাড়ির দরজা খোলো,,

স্নিগ্ধা মুখ ছোট করে নিয়ে বলল,
— আমিতো এটা খুলতে পারিনা।

আবরার এই প্রথম বিরক্ত হলো স্নিগ্ধার ওপর। বিরক্তিতে তেতো হয়ে এলো তার মুখ।ঝাঁঝালো স্বরে বলে উঠলো,
— এত দিন বসে এটাও শেখোনি? কি পারো টাকি তুমি?

স্নিগ্ধা মাথা নিচু করে নিলো।আবরার কয়েক সেকেন্ডে রাগ নিয়ন্ত্রণ করে নরম গলায় বলল,

— চেষ্টা করো পরি,,তনয়ার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে,এত ব্লিডিং হলে হাসপাতালে নিতে নিতেই খারাপ কিছু হতে পারে।এটা খোলা তেমন কিছুই নয়।চেষ্টা করে দেখো।

স্নিগ্ধা চোখ উঠিয়ে কাপা হাত এগিয়ে গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা চালালো খানিকক্ষণ। আবরার সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে তনয়ার মুখের দিকে তাকালো। কপালের চারপাশ বেয়ে রক্ত পরছে ফোটা ফোটা। থামছেইনা।

“” কিন্তু তনয়ার এই অবস্থা কেন? যতটুকু আজ ঘটেছে তাতে তো তনয়া তাকে সাবধান করছিলো কোনও এক বিষয় নিয়ে।তাহলে কি ঘটলো এর মধ্যে?

আবরারের ভাবনার ফাকে খট করে আওয়াজ হলো।আবরার শব্দের উৎসের দিকে ফিরলো।স্নিগ্ধা দরজা খুলে নিয়েছে দেখে তাড়াহুড়ো করে তনয়াকে ব্যাক সিটে সুইয়ে দিলো ।স্নিগ্ধা উঠে বসে তনয়ার মাথা কোলে নিয়ে নিলে আবরারও ঘুরে গিয়ে বসলো ড্রাইভ করতে।

_____________________________________

_________________________

এই মকবুল ফোন কেন ধরছেনা?

তোফায়েল তীব্র বিরক্তি নিয়ে কথাটা বলেই ফোন টাকে ছুড়ে মারলো টেবিলের ওপর।

আমিনুল সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বলল,
— আহ স্যার।শুধু শুধু খেপে যাচ্ছেন। মার্ডার করা কি মুখের কথা বলুন? কাজ শেষ হলে ওই আপনাকে জানাবে।

কথাটায় আশ্বস্ত হতে পারলোনা তোফায়েল।ভ্রু কুচকে বলল,
— দেড় ঘন্টা পার হয়েছে। বুঝতে পারছো? এতক্ষনে আবরার আসেনি? নিশ্চয়ই এসেছে।আর মকবুল নিশ্চয়ই বসে নেই।কাজ শেষ করেছে,,,তাহলে কেন আমাকে ইনফর্ম করলোনা?

এটুকু বলে থামলো তোফায়েল।পরক্ষনে চিন্তিত চেহারা নিয়ে বলল,
— এক মিনিট। ও আবার টাকা নিয়ে,, কাজ না করেই পালায় নিতো??

আমিনুল খানিক ক্ষন ভেবে বলল,
— এরকম ও হতে পারে।আপনি আরেক বার কল করুন।

আমিনুল দ্রুত হাতে ফোন উঠিয়ে তোফায়েলের দিকে এগিয়ে দিলো। তোফায়েল এই নিয়ে সতেরো বারের মত ডায়াল করলো মকবুলের নম্বরে।
এতক্ষন রিং হলেও এবার ফোনের ওপাশ থেকে চিকন মেয়েলী গলার আওয়াজে বললো ,

“” দ্যা নাম্বার ইজ সুইচড অফ…………………………

এটুকু শুনতেই চোয়াল শক্ত হয়ে এলো তোফায়েলের। আমিনুলের দিকে শক্ত চাহনী দিয়ে বলল,
— বাস্টা***ফোন টাও অফ করে রেখেছে এখন।

আমিনুল উদ্বিগ্ন হয়ে বলল,
— তার মানে স্যার? আমরা কি ঠিক ভাবছি? ওই ব্যাটা ঠকালো আমাদের?

তোফায়েল উত্তর না দিয়ে ফোন নামালো কান থেকে,,ঠোঁট কামড়ে কিছু একটা ভেবে মুখ হা করে কিছু বলতে ধরলে পুনরায় ফোন বেজে উঠলো,আমিনুল ব্যাস্ত হয়ে বলল,
— দেখুন স্যার মকবুলের ফোন কিনা..?

তোফায়েল কপাল কুঁচকে ফোনের স্ক্রিনে চোখ বোলালো।ল্যান্ড ফোনের নম্বর দেখে গাঢ় হয়ে এলো ভাজগুলো।আমিনুল কে উদ্দেশ্য করে বলল,

— এটা আবার কার নম্বর? চিনিনা তো!

আমিনুল উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হলো।বলল,
— ধরে দেখুন স্যার।হতে পারে মকবুল অন্য কোনও নম্বর থেকে কল করেছে।

ফোন রিসিভ করলো তোফায়েল।কানে ঠেকানো মাত্রই ওপাশ থেকে আবরারের প্রগাঢ় গলা ভেসে এলো।

— হ্যালো মিস্টার পাঠান। ভালো আছেন তো..??

তোফায়েল বিস্মিত হয়।
আবরারের স্বর চিনতে অসুবিধে হয়নি তার।কিন্তু আবরার কল কিভাবে করলো?? ওকি এখনও বেঁচে আছে?
সন্দেহ কাটাতে প্রশ্ন ছুড়লো।

— তুমি???

আবরার ঠোঁট এলিয়ে হেসে বলল,
— আমিই তো।আবরার,,,,যাকে জামাই বানানোর খুব শখ ছিলো আপনার।

তোফায়েল বিস্ময় নিয়ে বলল,
— তুমি কি করে ফোন করলে আমায়?

আবরার ভ্রু নাঁচালো।বলল,

— কেন?? ফোন তো ফোন থেকেই করে? আমিও তাই করেছি। ও আচ্ছা, আচ্ছা? ল্যান্ড লাইন থেকে ফোন করেছি, কারণ আপনাকে একটু জ্বালাতে চেয়েছিলাম।বাট আনফরচুনেটলি আপনি তো আমাকে ধরে ফেললেন।
সে যাই হোক- আসল কথা শুনুন।

তোফায়েল কৌতুহল নিয়ে বলল,
— কি কথা?

— আপনার মেয়ে তনয়া এখন অপারেশন থিয়েটারে।মাথার ওপর আস্ত একটা ঝাড় পরায় অবস্থা আসংকাজনক।বাঁচতেও পারে আবার মরতেও পারে।সবই আল্লাহর ইচ্ছে।
আই থিংক আপনার একবার আসা উচিত।

এটুকু শুনতেই বসা থেকে দাড়িয়ে পরলো তোফায়েল।হতবিহ্বল হয়ে বলল,
— কি বলছো কি তুমি? ফাজলামোর একটা স্বীমা আছে? আমার মেয়েতো….

মাঝপথে ওপাশ থেকে উত্তর এলো,
— বিশ্বাস না হলে মেডিকেল কলেজ হস্পিটালে আসুন।

আবরার লাইন কেটে দিয়েছে। তোফায়েল বাকরুদ্ধ হয়ে আসে।মাথায় ঝাড়বাতি পরেছে মানে? এরকম টাতো আবরার কে মারার পরিকল্পনায় ছিলো? কিন্তু তনয়া কি করে? তবে কি তনয়া সব জেনে নিজেই বিপদের মুখে পা বাড়ালো? মেয়েটা এত বোকা!
তোফায়েলের নির্বাক চোখ দেখে আমিলুন জিজ্ঞাসা নিয়ে বলল

— কি হয়েছে স্যার?

তোফায়েল কিছু বললোনা।দ্রুত পায়ে সদর দরজার দিকে পা বাড়ালো।আমিনুল কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে নিজেও পিছন পিছন হাটা ধরলো তোফায়েল এর।

,,
,,
,,

এখানকার কাজ শেষ। সব ফরমালিটিস পূরন করে দিয়েছি। আর ওনার বাবাকেও জানিয়ে দিয়েছি। এবার আমাদের বাড়ি ফেরা উচিত!

আবরার থামলে স্নিগ্ধা ব্যাস্ত গলায় বললো

— কিন্তু আমি এখনও বুঝতে পারছিনা, তনয়া আপু আমাদের বাড়িতে কি করছিলো? আর ওনার এমন অবস্থা হলোই বা কি করে?

আবরার ডান ভ্রু নাঁচিয়ে বলল
— কি জানি! আর অতো বড় ঝাড় টা পরলোই বা কি করে? তাও ওর মাথার ওপর?
যাক গে ছাড়ো এসব,চলো বাসায় যাওয়া যাক।সারা শরীর রক্তে মেখে আছে,,উই হ্যাভ টু চেঞ্জ!

স্নিগ্ধা মাথা কাত করে স্বায় দিলো।স্নিগ্ধার পিঠ এক হাতে জড়িয়ে হাটা ধরলো আবরার।হুট করে কোথা থেকে হাওয়ার বেগে এসেই আবরারের কলার চেপে ধরলো তোফায়েল।
ঘটনাক্রমে ভড়কে গেলো আবরার স্নিগ্ধা দুজনেই। তোফায়লে কলার ঝাকিয়ে ক্রুদ্ধ গলায় বলল,

— ইউ ব্লাডি বিচ! তোমার সাহস কি করে হলো আমার মেয়ের গায়ে আচড় কাটার?

আবরার ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো,
— আমি কি আপনাদের মত বিড়ালের বাচ্চা যে আঁচড় কাটবো?

এটুকু বলে নিজের কলার ছাড়িয়ে নেয় আবরার।হাত দিয়ে ঠিকঠাক করে শান্ত ভাবে তাকিয়ে বলে,

— আমার কলার টা কি আপনার খুব বেশিই পছন্দ? আগের বারই বলে দিয়েছি যা বলবেন মুখে, ,গায়ে হাত দিয়ে নয়।ভদ্রতা বজায় রাখতে শিখলেন না এখনও..??

তোফায়েল পাল্টা জবাবে কিছু বলতে গেলে পেছন থেকে কাধের এক পাশে হাত রেখে থামিয়ে দেয় আমিনুল।বলে ওঠে,
— স্যার।মাথা ঠান্ডা করুন।ওনার সাথে লাগার থেকে আগে তনয়া ম্যাডামের খবর নেয়াটা জরুরি।

তোফায়েল আবরারের দিকে তাকায়। দাঁত চিবিয়ে বলে,
— আমার মেয়ে কোথায়?? কি করেছো ওকে?

পাশ থেকে স্নিগ্ধা ধৈর্য হীন হয়ে বলে,
— উনি আপনার মেয়েকে কি করবেন? আপনারা সব সময় কিছু হলেই ওনাকে দোষারোপ করেন কেন?

স্নিগ্ধার কথায় তোফায়েল গরম চোখে তাকিয়ে বলল,
— এই মেয়ে তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি আমি? পায়ের জুতো পায়ে থাকতে শেখো,,আমার মুখের ওপর প্রশ্ন করছো? থাপড়ে গাল লাল করে দেবো।

তোফায়েলের কথায় আবরার ক্ষিপ্ত হয়ে বলল

— ব্যাস,,নো মোর ওয়ার্ডস,,,,আমার স্ত্রীকে অপমান করার দুঃসাহস দেখাতে আসবেন না। ওর গায়ে কেউ একটা দাগ ফেলার আগেই তার হাত মুচড়ে দেবো আমি। তাই আপনার পরিনাম খুব খারাপ হওয়ার থেকে ভালো এটাই হবে আপনি জ্বিহ্বাতে লাগাম টানুন।

তোফায়েল উত্তেজিত হয়ে বলল,,
— কিসের লাগাম? আমার মেয়ের এই অবস্থা কি করে হলো?? বলো? কি করেছো তুমি ওর সাথে?

আবরার আশ্চর্যকিত হয়ে হেসে উঠলো। বলল,
— আজব তো ! আপনার মেয়ে আমার বাড়ির দরজায় আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পরে ছিলো।মানবিকতার খাতিরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলাম,আর এখন কিনা আপনি সব ব্লেম আমাকে দিচ্ছেন? বাহ! অবশ্য আপনার মত লোকের থেকে এসবই আশা করা যায়!
সব স্বাভাবিক। আমার অবাক হওয়াটাই অস্বাভাবিক এই যা ।কারণ আপনারা তো এরকমই,নাহলে যে উপকার করলো তাকেই আস্বামী বানাচ্ছেন? কি মন,মস্তিষ্ক আপনাদের? জবাব নেইতো! এর থেকে তো তনয়াকে বাড়ির সামনে ফেলে রাখাটাই বেটার ছিলো।অন্তত আপনার এত বড় বড় কথা ফুটতোনা মুখে,,উল্টে দেখা যেত হাত পা ছড়িয়ে মরা কান্না কাঁদছেন,

— তুমি নিজেকে ঠিক কি ভাবো আবরার? সুপার হিরো? দ্যা কিং?আর এসব বলে কি প্রমান করতে চাইছো তুমি? এটুকু করে মহাভারত উদ্ধার করে ফেললে?
ভুলে যেওনা আজ যা কিছু ঘটছে সব টা তুমি আর তোমার এই সো কল্ড থার্ড ক্লাশ ওয়াইফের জন্যে। বিশেষ করে তুমি…!!
আমার মেয়ের এই অবস্থা হয়েছে তোমার জন্যে।তুমিই এর জন্যে শতভাগ দ্বায়ী।আমার মেয়ের বর্তমান,, ভবিষ্যত,, ওর মন- মস্তিষ্ক সব কিছুতে এমন ভাবে দখলদারি করে আছো যে এখন আর তুমি ছাড়া ও কিছুই বুঝতেই পারেনা।
আশেপাশে কি হচ্ছে কি ঘটছে,কোনটাতে নিজের ভালো, কোনটাতে ক্ষতি কিছুই নাহ? শুধু মাত্র তোমাকে বাঁচাতে শেষ মেষ নিজে মরতে বসলো।প্রানের মায়া অব্দি করলোনা? যে ফাঁদ তোমাকে মারতে পেতেছিলাম আমি,ভালোবাসায় উন্মাদ হয়ে নিজেই জেনেশুনে পা বাড়ালো সেই ফাদে।হাড়িকাটে বলি হওয়ার জন্যে মাথা বাড়িয়ে দিলো??
কার জন্যে করলো এসব? যার জন্যে নিজের জীবন বিপন্ন করলো সেকি আদৌ ওর ভালোবাসার মূল্য দেয়? দেয়না। উল্টে পায়ে ঠেলে দূরে সরায় ওকে,,,
আর এই যে এখন এত বড় বড় কথা বলছো না? হাহ! ভাগ্যবশত তুমি আজ বেঁচে গিয়েছো আর সেটাও আমার মেয়ের জন্যে।নাহলে তোমাকে ওপরে পাঠাতে আমার আজ যাস্ট দু সেকেন্ড সময় লাগতো।বুঝলে??

ক্ষোভের বশে গলগল করে কথা গুলো আওড়ে দিয়ে থামলো তোফায়েল।আমিনুল চোর ধরা পরে যাওয়ার মত মুখ করে আছে,,,কতবার চেষ্টা করলো তোফায়েলের কথায় ব্রেক কষতে অথচ লোকটা বলেই যাচ্ছে, বলেই যাচ্ছে?

“””” আচ্ছা,নিজের বলা কথা কি মানুষ নিজের কান দিয়ে শুনতে পায়না? সেকি বুঝতে পারেনা আমি কি বলছি আমার মুখ দিয়ে? গর্দভ অনেক দেখা হলেও এরকম বুড়ো গর্দভ দুটো দেখিনি আমি ।কথাটা ভেবেই আমিনুল নাক মুখ কুঁচকে একটা দম নিলো ছোট্ট করে।

স্নিগ্ধা বাকরুদ্ধ হয়ে একবার আবরারের মুখের দিকে তাকালো আরেকবার তোফায়েলের মুখের দিকে।

“””” এই লোকটা এত্ত খারাপ তার স্বামীকে মারার পরিকল্পনা করেছিলো শেষ মেষ? আজ যদি সত্যিই তনয়ার জায়গায় আবরার থাকতো তাহলে? ভাবতেই ভয়ে গায়ে কাটা ফুটলো স্নিগ্ধার।

অন্যদিকে
আবরার বুকের সাথে দুহাত ভাজ করে দাড়ালো । বাকা হেসে ভ্রু নাঁচিয়ে বলল,
— তার মানে আপনি আমায় মারার প্ল্যান সাজিয়েছিলেন?

কথাটা শুনে চকিত হলো তোফায়েল।এতক্ষন বোকার মত সব কথা উগড়ে দিয়েছে? তাও আবরারের সামনে?এই যা! এখন কি হবে?

চলবে…

আজ ২০০ রিয়্যাক্ট না পেলে ১৮ পর্বের খোজ পাবেন না হুহ😒😒

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here