#Your_psycho Part_01

0
1621

#Your_psycho Part_01
#A_DevilsLove

#Written_by_Aruhi_khan (ছদ্মনাম)

.

.

.

ফোনটা সেই কখন থেকে বেজে চলেছে কিন্তু ধরার কোনো নামই নেই।

বেশ কয়েকবার কল টা কেটে দেওয়ার পরও আবারও বেজে উঠে।

এবার বিরক্তির মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে
তাই না চাইতেও রিসিভ করতে হলো

— কে?

— তোরে সেই কখন থেকে যে কল করতাছি, রিসিভ করস না কেন? (রেগে)

— ওহ তুই, এখন বেশি কথা না বইলা ক কি হইছে

— টাইম দেখছস কয়টা বাজে?

— তোগো বাসায় ঘড়ি নাই? আমারে এই ভোর বেলায় সময় জিগানের লেগা কল করছোস। (দাঁতে দাঁত চেপে)

— ugh! সবাই ঠিকই বলে, তোরে দিয়ে কিছু হবে না
এখন ভোর তাই না? যায় হোক তুই কি আজ ভার্সিটিতে আসবি না?

— না কাল সারারাত হ্যাংআউট এ ছিলাম অনেক লেইট করে বাসায় ফিরছি, নাও পুরা মাথাটায় জাস্ট অসহ্য যন্ত্রনার গোডাউন হয়ে আছে।

— কি বলস এগুলা জানোস না আজ মিস ডাইনির ক্লাস আছে?

— সো হোয়াট? এই পৃথিবীতে এখনো এমন কেউ জন্মায় নাই যাকে রশ্নি এনায়াত খান ভয় পাবে।
এখন ফোন রাখ আর আমারে ঘুমাইতে দে।

— জানু আমার এগুলা বলিস না প্লিজ, আর অনুও আজকে থেকে ভার্সিটিতে জইন করবো
তাই বুঝতাসস তো?
প্লিজ আয় না প্রানু।

— উফফ,,, আচ্ছা আইতাছি কিন্তু শুধু অনুর জন্য।

তারপর রশ্নি ফোনটা কেটে দিলো।

(আপনারা তো একে চিনেনই,
আমাদের রশ্নি এনায়াত খান, কিন্তু এবারের রশ্নি
প্রচুর বদ মেজাজি, জেদি, আর দুষ্ট
না না দুষ্ট বললে ভুল হবে
মানে শি ইজ কাইন্ডা স‍্যাভেজ🥴
সত্যিটা মুখের উপর বলে দিতে জানে
তাই অনেকে তার জন্য তাকে বেয়াদবের উপাধিও দিয়ে দিয়েছে

বাবা মার এক মাত্র মেয়ে তাই আদরের দুলালী
বেশি তার বাবার,
তার বাবা সব কিছুতে তাকে সাপোর্ট করবে

আগে তার ব্যাপারে আরো জানতে পারবেন)

রশ্নি রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলো

রেহেনা বেগম (রশ্নির মা)
— কিরে কই যাস?

— কলেজ ব্যাগ নিয়ে নিশ্চই আমি আমার জামাইর বিয়ে খেতে যাবো না।

— তো কথাটা সোজা ভাবে বললে কি সমস্যা হয়

রশ্নি আর বেশি কথা না বাড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল
তখনই তার মিষ্টি টাকে ডেকে উঠলো

(রশ্নির ফুপ্পির নাম নিলাসা চৌধুরী
কিন্তু রশ্নি তাকে মিষ্টি বলেই ডাকে)

রশ্নি– হ্যা মিষ্টি বলো!

নিলাসা– যাওয়ার আগে কিছু খেয়ে যাও।

রশ্নি– না আমার লেট হচ্ছে।

নিলাসা– আমার কথায় রাখবে না?

রশ্নি জানে তার সাথে বাড়াবাড়ি করে পারবে না
তাই টেবিল থেকে একটা কলা আর এক পিস পাউরুটি উঠিয়ে নিলো।

(উপস ওর ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে তো পরিচয়ই করাইনি

রশ্নিরা জয়েন্ট ফ্যামিলি।
রশ্নির বাবারা দুই ভাই দুই বোন।
ওর চাচারা আর ওরা একসাথেই থাকেন

ওর চাচার এক ছেলে এক মেয়ে
আর বড় ফুপ্পির দুই ছেলে

আর ছোট ফুপ্পির কোনো সন্তান নেই)

.

বাড়ি থেকে বেরোনোর সাথে সাথেই দুই টা কুকুর দৌড়ে তার কাছে আসলো!

রশ্নিও নিচু হয়ে তাদের জড়িয়ে ধরলো।

এই দুইজনকে নিজের পরিবারের সদস্যই ভাবে রশ্নি
আর ওরা দুইজনও ওকে খুব ভালোবাসে!

সাদাটার নাম শিরো আর বাদামি রঙের কুকুরটার নাম শিশিমারু
আর অবশ্যই এগুলো কার্টুন দেখেই রাখা হয়েছে😂

রশ্নি তাদের আদর করে উঠে গেল

তারপর নিজের বাইকটার উপর গিয়ে বসে
তার উপর একটু হাত বুলিয়ে নিলো।

(And yes she is a lady biker😉)

বাইক বললে যন্ত্র হয়ে যাবে
কিন্তু এটা শুধু বাইক না
এটা ওর কলিজার টুকরা, জান, প্রাণ সব কিছু
নিজের বাচ্চার মতো আগলে রাখে এটাকে

আর হ্যা বাইকটারও একটা বিশেষ নাম আছে🙄😂
এবং তার নাম হলো “ধান্য” 😌

.

কিছুক্ষনের মধ্যেই সে ভার্সিটিতে পৌঁছে গেল!

গিয়েই নিজের ফ্রেন্ডস গ্রূপের কাছে গেল

রশ্নি: এ্যাই মাম্মারা!!! 😍😍

রশ্নির ডাক শুনে সবাই ওর কাছে গিয়ে গ্রূপ hug করলো।

(আসুন এবার রশ্নির বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই

কাশিকা, রাতুল, সানা, সুপ্তি, অনু, অন্তর, দিপু।

আর এদের এক এক জনের একেক পার্সনালিটি,
কেমন সেটাও আগে জানতে পারবেন)

কাশিকা: ওহ বেবি তুমি জানো আমি তোমাকে কত্তটা মিস করেছি!!

রশ্নি: আই মিসড ইউ টু বেইব!!

রাতুল: নেও আবার এদের চুন্নু মুন্নু শুরু।

কাশিকা: তোমার কেনো জ্বলেরে বন্ধু তোমার কেনো জ্বলে..😒

অনু: তোরা একটু চুপ কর না।
আজকে আমার ফার্স্ট ডে তাই একটু ভার্সিটিটা ঘুরায়া দেখাবি কি না বকবক শুরু।

রাতুল: আচ্ছা চলো আমি দেখাচ্ছি।☺️

সবাই: 🙄🙄🙄

রাতুল: এভাবে তাকানোর কি আছে আজব।😒

সানা: কুছ কুছ
সুপ্তি: হোতা হ্যা🥴

সবাই এক সাথে হেসে উঠলো।

দিপু: আচ্ছা এসব বাদ এখনো ভিতরে চল সবাই
অন্তর: হুম চল।

সবাই এক সাথে স্টাইল করে যেতে ভিতরে যাচ্ছিল😎

কিন্তু হঠাৎই রশ্নি চিৎকার করে উঠে।

রশ্নি– আ আআআ আআআ!!

রাতুল: আবার কি হইলো😑

রশ্নি: আমার কেইডসের ফিতা খুলে গেছে
আর ওটার মধ্যে পা বাজাই পইড়া যাইতে নিছিলাম।🤦

(আর হ্যা রশ্নি এভাবে শুধু নিজের ফ্রেন্ডসদের সাথেই কথা বলে 😑)

রাতুল: তোরে দিয়া কিছু হইবো না।😑

রাতুল রশ্নিকে হেল্প করতে গেল
আর ওদের বলে দিল যেন ওর এগিয়ে যায়

আর ওদিকে নিউ কমার দেখে অনুকে র‍্যাগিংএর শিকার হতে হলো।

বাকিরাও সাথে ছিল কিন্তু ওরাও এই গ্রূপটাকে ভয় পায়

ওদের মধ্যে শুভ নামে একজন এগিয়ে আসলো

— হে ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট নাকি

বাকিরা ভয় পাচ্ছে দেখে অনুও কিছু ঘাবড়ে গেল।

অনু: জি ভাইয়া। (তুতলিয়ে)

শুভ: নো নো নো প্লিজ ভাইয়া বলো না
দিলে লাগে

শুভর কথায় ওর গ্রূপের সবাই হেসে উঠলো

শুভ: ওকে কি ডেয়ার দেয়া যায় রে?

নিহার: কানে ধরে উঠ বস কেমন হবে?

অধরা: না যাহ এত ফাজলামোও আবার ভালো না।
পরে দেখা যাবে পুরো ভার্সিটিতে বেচারি আর মুখই দেখাতে পারবে না।

রীত: হ্যা রে ঠিক বলছিস।

রাহুল: তোরাও না, দেখ তো বাচ্চা মেয়েটা ভয় পাচ্ছে।

অধরা: ইয়েস ভার্সিটিতে পড়ুয়া বাচ্চা মেয়ে।🥴

সবাই: 🤣🤣

অনু প্রায় ভয় কাঁপছে,
আর এখানে সবাই হাসতে হাসতে শেষ।

কিন্তু শুভই এক মাত্র বেক্তি যে হাসছে না,
ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে অনুকে লক্ষ করছে।

শুভ: চল ওকে আজ অন্য রকম একটা ডেয়ার দিব।

রীত: কেমন ডেয়ার?

শুভ: আমার সাথে কাপল ডান্স করতে হবে।

নিহার: oh damn…..😐

অনু: নো প্লিজ!

শুভ: ডেয়ার তো ডান করতেই হবে ভীতু পাখি,
নয়তো সবার সামনে কানে ধরে উঠ বস করতে হবে।

অনু: আমি কোনোটাই করবো না (নিচের দিকে তাকিয়ে)

রীত: তাহলে আমরা তোমাকে যেতেও দিব না। 😁

শুভ আস্তে আস্তে অনুর দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো!!

তখনই সেখানে রশ্নি আর রাতুল উপস্থিত হলো!

রশ্নি: কিরে সালা কখন থেকে দেখতাছি আমার অবলা বান্ধুপিটারে ভয় দেখাইতাছস।😑

এবার সবাই একসাথে হেসে দিলো।

অনু: তোরাও হাসছিস।🥺

রশ্নি: আরেহ এটা আমারই ভাই শুভ
ও জাস্ট তোর সাথে মজা করছিল আর কিছু না

অনু এবার রশ্নিকে ধরে কেঁদেই দিলো!

রশ্নি: দেখ বেচারির কি অবস্থাটাই না করছে,
শুভ তুই কি জীবনেও ভালো হবি না?

শুভ: এই জনমের কথা জানি না বাট নেক্সট জনমে ট্রাই করে দেখতে পারি।

রশ্নি: সালার বেটা…..😬

শুভ গিয়ে অনুর সামনে দাঁড়ালো তারপর একটা টিসু ওর হাতে ধরিয়ে দিল

শুভ: সুন্দরী রমনীদের হাসলেই সুন্দর লাগে, তাই চোখের পানিটা মুছে নাও। আর আমি যদি তোমায় hurt করে থাকি তাহলে আই এ্যাম এক্সট্রেমলি সরি

অনু হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে

শুভ আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে
গেল, আর যাওয়ার আগে ইচ্ছে করে অনুর কাঁধে নিজের বাহু দিয়ে ধাক্কা দিয়ে গেল।

রাতুল: হা করে না থেকে ক্লাসে চলো।😒

তারপর সবাই ক্লাসে গেল।

কিছুক্ষনের মধ্যেই ক্লাসে আসলেন মিস ডায়না যাকে রশ্নিরা ডাইনি বলে ডাকে।

এসেই ট্রান্সফার স্টুডেন্ট মানে অনুকে সবার সাথে পরিচিত করিয়ে দিল।

রশ্নি: দোস্ত দোস্ত…..
রাতুল: ক
রশ্নি: এইটা কি ক্লাস চলে?
রাতুল: ইংলিশ
রশ্নি:ওকে

কিছুক্ষন পর……

রশ্নি: দোস্ত দোস্ত……
রাতুল: বল
রশ্নি: ম্যাডাম কি পরাইতাছে?
রাতুল: তোরে না কইলাম “ইংলিশ”😡
রশ্নি: আরেহ ওটা তো বুজছি কিন্তু কোন চ্যাপ্টার থেকা?
রাতুল: ঐটা আমি নিজেও জানি না, হুদ্দাই বইয়ের দিকে চাইয়া থাক।
রশ্নি: উকে ফাইন😑

কিছুক্ষন পর…..

রশ্নি: দোস্ত দোস্ত……
রাতুল: বল
রশ্নি: ম্যাডাম কখন যাইবো?
রাতুল: ক্লাস শেষ হতে এখনো বিশ মিনিট আছে
রশ্নি: উকে পাইন😭

কিছুক্ষন পর…….

রশ্নি: দোস্ত দোস্ত…..
রাতুল: উফ আবার কি😭😭
রশ্নি: আমায় খুদা লাগছে কিছু কর।🥺
রাতুল: আমার ব্যাগে দেখ চিপস আছে ঐটা খা আর চুপ কইরা বইয়া থাক।😡

রশ্নি তাই করল।

কিছুক্ষন পর এবার কাশিকার কাছে গেল

রশ্নি: কাশু বেইবি!
কাশিকা: হ্যা রশ্নি বল
রশ্নি: আয় না আমরা কথা কই
কাশিকা: সরি রে বাট আমি এখন আমার বি এফ এর সাথে কথা হলছি

রশ্নি দেখলো কাশিকার কানে সরু চিকন ইয়ার ফোন আর ও একদমই ফিস ফিস করে কথা বলছে
যাতে কারো ধরার ক্ষমতা নেই যে ও এখন কারো সাথে কলে আছে

রশ্নি বুঝলো একে আর বলে লাভ নেই

তাই এবার গেল দিপুর কাছে

রশ্নি: ভাইটু শুন না
দিপু: বল বোনু
রশ্নি: আমার ভাল্লাগতাছে না তাই আমার সাথে এখন কথা বল কারন আমাকে তুইই ডাইকা আনছস নাহলে এতক্ষন আমি ঘুমাইতাম
দিপু: আমি বলতাম কিন্তু এখন আমার লেকচার এটেন্ড করা বেশি প্রয়োজন
রশ্নি: হুহ আইছে আমার ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যা সাগর

রশ্নি ওকেও ভেংচি কেটে চলে আসলো

সানা আর সুপ্তিকে বলে লাভ নেই
কারন এই দুইজন আগের থেকে ঝগড়া করছে আর এদের মাঝখানে ঢুকা মানেই দুই বাঘের যুদ্ধের মাঝে হরিণ হয়ে রেফারি গিরি করা

আর অন্তরও দিপুর সাথে পড়ছে তাই শেষে জ্বালানোর জন্য রাতুলকেই অবশিষ্ট পেলো

রশ্নি: দোস্ত দোস্ত…….😙
রাতুল: এবার কিন্তু আমি গলায় দড়ি দিমু😡

ডায়না: এটেনশন প্লিজ

মিস ডায়নার কথায় সবাই তার দিকে তাকালো

ডায়না: আজ আমি তোমাদের সবার সারপ্রাইজ টেস্ট এর রেজাল্ট দিব

রশ্নি: খাইসে রে🥺

রাতুল: আজকে আমরা শেষ

সুপ্তি: খুব খারাপ ভাবে মরুম😪

সানা: এগুলা বলিস না প্লিজ আমি কাইন্দা দিমু😭

দিপু: এর জন্যই তোদেরকে বলি একটু পরা লেখা কর না কথাই শুনে না

রশ্নি: এই একদম জ্ঞান দিবি না

অন্তর: হুহ আরেকটার তো খবরও নাই দেখো কেমনে এখনো বয়ফ্রেন্ডের সাথে কলে বিজি

সবাই: 🤦
.

ডায়না: হুম সবার রেজাল্ট মোটামোটি ভালোই
কিন্তু দুইজন বাদে
আর ওরা কারা তোমরা নিশ্চই জানো

ক্লাসের সবাই একসাথে বলে উঠলো
— রশ্নি এনায়াত খান

রশ্নি: সব কয়টা মীরজাফরের দল🥺

ডায়না: হুহ তোমাকে আর কি বলবো,
এটা তো কমনই কিন্তু রাতুল তুমি?
তুমিও এর সাথে থেকে খারাপ রেজাল্ট করেছ

রাতুল: ম‍্যাম আমার রেজাল্টের জন্য আমিই দায়ী প্লিজ ওকে কিছু বলবেন না

ডায়না: বাহ, এমন ফ্রেন্ডশিপ থাকা ভালো তো কিন্তু দেখো পরে যেন এই ফ্রেন্ডশিপই তোমাকে না ডোবায়

ওরা কিছু বললো

ডায়না: দুইজন অফিস রুমে আসো প্রিন্সিপাল স্যার দেখা করতে বলেছেন

বলেই ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেন

রশ্নি আর রাতুল এবার সানা সুপ্তির আর কাশিকার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো

সানা: তোরা এমনে তাকাইতাছস কেন 😨

রশ্নি: কাশিকার টা নাহয় বুঝলাম
স্যারের উপর লাইন মারে তাই পাশ করাই দিছে কিন্তু তোরা করলি কেমনে

— কজ, আমরা পড়া লেখা করি😎

রশ্নি: দেখ আমার মুখ খারাপ করিস না এখন😡

সুপ্তি: আমি তো একের লেগে ফেইল করি নাই🤒

রাতুল: আচ্ছা এসব বাদ দে চল অফিস রুমে যাই

— হুম

রশ্নি আর রাতুলের সাথে ওদের পুরা গ্রূপও গেল

.

বাহ বাহবাহ বাহ!!!

কি অসাধার, একজন আনসার শিটে আশিক বানায়া গান লিখেছে।
আর এই মহারানীর তো আলাদাই স্টাইল,
আনসার শিটএর সাথে একশ টাকার নোট স্টেপলার দিয়ে লাগিয়ে দিয়ে লিখেছেন:-

“স্যার পাশ করিয়ে দেন তাহলে এর পর থেকে ডোজ টা আরো বাড়িয়ে দিব”

এবার আপনারাই বলেন এদের কি করা যায়।

রাতুলের বাবা: ছি ছি রাতুল তোমাকে দিয়ে এগুলো আশা করি নি।

রাশিদ: আর তুমি একশ টাকার নোট স্টেপলার দিয়ে লাগাতে গিয়েছিলে কেন যদি খোলানোর সময় ছিড়ে যেত? 😡

ডায়না: স্যার?

(আরেকটা কথা, রশ্নির বাবা কিন্তু এই ভার্সিটির প্রিন্সিপাল)

রাশিদ: ইয়ে মানে..!!

রাশিদ খান এবার মুখ শক্ত করে বললেন
— রশ্নি তোমায় লজ্জা করে না একজন প্রিন্সিপালের মেয়ে হয়ে এমন ধরনের কাজ করতে?

রশ্নি: তখন তো লজ্জা করে নাই।🙄

রাশিদ: জাস্ট শাট আপ!!

আমার মেয়ের টা নাহলে বুঝলাম ও ছোট থেকে এমনই কিন্তু তুমি এমন করলে কেন রাতুল?

রাতুল: স্যার রশ্নি আমাদের #Team_Tufan এর বস
তাই ওর পথ অনুরসন করাই আমাদের কাজ। 😌

রশ্নি: সাবাস আই এ্যাম প্রাউড অফ ইউ।😊

রাশিদ: চুপ করো তুমি!!

ডায়না: হুহ টিম তুফান😏

রাশিদ: আচ্ছা রশ্নি যদি কোনো কুয়া তে ঝাঁপ দেয় তাহলে কি তুমিও দিবে নাকি

রশ্নি: হোয়াট ইজ “কুয়া”🙄

রাতুল: চুপ থাক, (আস্তে করে বললো)

রাশিদ: কি হলো বলো?

রাতুল: স্যার কুয়া টা কি বেশি গাঢ়?

রাশিদ: ওহ আল্লাহ… I just can’t tolerate them more😫

.

অনেক বকা ঝকা খাওয়ার প্রায় অনেক্ষন পর ওরা ক্লাস থেকে বের হতে পারলো।

অফিস রুমের বাহিরে এসে ওদের গ্রূপের কাছে গেল।

তখন ডায়না ম‍্যাম ওদের কাছে গেলেন।

ডায়না: দেখো তোমাদের ভালোর জন্যই বলছি
এই মেয়েটার সঙ্গ ছেড়ে দাও!
জীবনে ভালো থাকবে, ভালো কিছু করতে পারবে।

অন্তর আর দিপু এগিয়ে গিয়ে বললো:
— ম‍্যাম আমরা তো নিতান্তই ভালো রেজাল্ট করে আসছি, আর রশ্নির সাথেও ছোট থেকেই বড় হয়েছে। কই আমাদের স্টাডিতে তো কোনো ব‍্যাড ইফেক্ট পড়েনি।

সুপ্তি–আর আমরা তো আগের থেকেই খারাপ স্টুডেন্ট😆

কাশিকা– আমি তো আমার রশ্নি বেইবিকে ছাড়া থাকতেই পারি না।

সানা– ম্যাম আমরা এই ভার্সিটি ছেড়ে দিতে পারব, কিন্তু আমাদের গ্রূপের একটা মেম্বারকে ছাড়াও থাকতে পারবো না।

ডায়না– হুহ কেন যে মানুষের ভালো করতে যাই,
এখন বুঝছো না কিন্তু একদিন ঠিকই বুঝবে যে আমি ঠিক ছিলাম।

বলে ভেংচি দিয়ে সেখান থেকে চলে গেল।

আর উনি যাওয়া মাত্র সবাই জোরে হেসে দিলো।

রাতুল– টিম তুফানিকো তোরনা মুশকিলহি নেহি না মুমকিন হ্যা।😎

অনু– হ্যা তার জন্যই তো আমি টিসি নিয়ে এখানে চলে এসেছি।😁

রশ্নি– সো হোয়াই আই লাভ ইউ গাইজ সো মাচ!

তারপর সবাই আবার একসাথে গ্রূপ Hug করলো

.

সবাই মিলে ক্যান্টিনে আড্ডা দিচ্ছিল তখন সেখানে শুভ আসে!

এসেই অনুর পাশে বসে।

কিন্তু কেন যেনো এই জিনিসটা রাতুলের কাছে ভালো লাগে নি।

— কেমন আছো ভীতু পাখি?

অনু– জি ভালো।

শুভ– যাক মানলে তাহলে যে তুমি ভীতু।😂

অনু– জি না মানে।

রাতুল– ভাইয়া আপনার কি কোনো কাজ ছিল?

শুভ– হ্যা রশ্নি।

রশ্নি– তোর সামনেই আছি!😑

শুভ– হুম! এখন তোকে আমার সাথে বাসায় যেতে হবে।

রশ্নি– কিনু?🙄

শুভ– জানি না, মিষ্টি কল করে বাসায় আসতে বললো।

রশ্নি– এখনই যেতে হবে?😩

শুভ– হ্যা মিষ্টির বলেছে যখন যেতে তো হবেই।

রশ্নি– আচ্ছা চল, টাটা ফকিন্নিগন।

.

রশ্নি টেবিলে বসে খাচ্ছিলো তখন নিলাসা বেগম এসে ওদের মাঝে বসেন।

রশ্নি– আজকে তাড়াতাড়ি আসতে বললে কেন?

নিলাসা– তোকে শুভ জানায়নি?

রশ্নি শুভর দিকে তাকালো!
তা দেখে শুভ অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।

রশ্নি– না মিষ্টি, ও তো আমাকে কিছু জানায়নি।

নিলাসা– আরেহ দেখছিস না আজ সকাল থেকে বাড়িতে কত ডেকোরেশন, রান্না বাড়ার
তোর জোর চলছে

রশ্নি– কারন?

নিলাসা– আজ নীল আর কাব্য দেশে ফিরেছে!
রাতে এয়ারপোর্ট থেকে আমরা সবাই ওদের রিসিভ করতে যাবো।

“নীল আসছে” কথাটা শুনা মাত্র ওর খাবার নাকে মুখে আটকে গেলো

শুভ তাড়াতাড়ি ওকে পানি দিলো

কিছুক্ষন বাদে রশ্নি নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে
খাবার রেখে উঠে উপরে চলে গেল

নিলাসা– এর আবার কি হলো রে?

শুভ– কি জানি!

.

রশ্নি নিজের রুমে এসে দরজাটা বন্ধ করে দিলো।

তারপর আয়নার সামনে গিয়ে
শার্টের সামনের দুটো বোতাম খুললো।

তারপর আস্তে আস্তে বাম সাইডের কাপড়টা সরিয়ে দিল।

আয়নায় নিজের শরীরের প্রতিচ্ছবি দেখা মাত্র তাড়াতাড়ি খিচে চোখ বন্ধ করে নিলো।

এবার নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়ে
আবারও আয়নার দিকে তাকালো।

তার ক্লাভিকাল হাড্ডিটার কিছুটা নিচের
স্পষ্ঠ ভাবে এখন “Neil” নামটা ফুটে আছে।

এই পাঁচ বছরে প্রায় অনেকটা শুকিয়ে এসেছে ঠিকই, কিন্তু খুব গাঢ় করে লেখার কারনে এখনো তা পরিষ্কার ভাবে বুঝা যাচ্ছে।

রশ্নির এখনো সেই দিনটার কথা মনে পড়লে রুহু কেঁপে উঠে।

এমন কিছু নেই যাকে রশ্নি ভয় পায়।
কিন্তু বলে না সবাইই,
নাকি কিছুনা কিছু একটাকে ভয় পেয়েই থাকে।
রশ্নিরও তেমনই হলো এই “নীল” নামের মানুষটি

যার এক চাহনিতেই রশ্নির কাপাকাপি শুরু হয়ে যায়
মানে নীল ওর জন্য এক ধরণের ফোবিয়ার ন্যায়



To be continued……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here