তবে_ভালোবাসো_কী ২ #Mehek_Enayya(লেখিকা) পর্ব ২৩

0
293

#তবে_ভালোবাসো_কী ২
#Mehek_Enayya(লেখিকা)
পর্ব ২৩

উত্তপ্ত রোদের মধ্যে আনমনে হাঁটছে অহনা আর রিদ। রিদ নিজে নিজেই বক বক করে চলেছে। অহনার মন এলোমেলো। তার মনে বাসা বাঁধছে রিদকে হারানোর ভয় আরেকবার ভাবছে রিদ সত্যি তাকে ভালোবাসে তো! অতিরিক্ত নরম আর প্রসেসিভ মানুষদের এই একটা ঝামেল্লা। তারা অল্প বিষয় অত্যাধিক পেনিক হয়ে উঠে। ধানমন্ডির লেকে এসে একসাথে বসে দুইজন। রিদ এতক্ষণে অহনার উদাসীন মুখ দেখে। কপালে দুই ভাঁজ পরে তার।
-আমি বুঝতে পারছি না আসলে তোমার হয়েছে টা কী? প্লিজ বলবে আমায়?
-আসলে আ আমি মানে আমার কেমন যেনো একটা ফীল হচ্ছে।
-অসুস্থ লাগছে জান? আবার এতো রোদের মধ্যে হাঁটার জন্য মাথা ঘুরাচ্ছে না তো?
অহনা পিটপিট তাকিয়ে থাকলো রিদের অস্থির হয়ে উঠা মুখের দিকে। কিছুটা লালচে হয়ে আছে ফর্সা মুখ। গলা ভিজিয়ে বলল,
-না আমি ঠিক আছি।
-তাহলে কী হয়েছে?
অহনা রিদের কাঁধে মাথা রাখলো। চোখ বন্ধ করে বড় বড় নিঃশাস নিয়ে বলে,
-আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি রিদ।
-আমিও ভালোবাসি জান। এখন বলো আসলে কী হয়েছে?
-আমি ভীষণ ভয় পাচ্ছি। কেমন যেনো একটা আতঙ্ক আমার মনে গেঁথে আছে!
-কেমন?
-যদি তুমি তোমার বাবার জন্য আমাকে ছেড়ে দেও! আবার তোমাকে অন্য মেয়ের সাথে দেখলেও আমার খারাপ লাগে। থিঙ্ক তোমার বাবা অনেক বেশি সুন্দরী একটা মেয়ে তোমার জন্য খুঁজে নিয়ে আসলো আর তুমিও তাকে বিয়ে করে ফেললে তাহলে আমার কী হবে? আমি সত্যি মাহানুরের মতো স্ট্রং না মরেই যাবো?
শেষের কথাটা বলতে গলা ধরে এলো অহনা। রিদ হাসলো অহনার কথা শুনে। অহনার একহাত নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নিলো। অনড় ভঙ্গিতে বলল,
-চলো এখনই বিয়ে করে ফেলি।
অহনা চমকে গেলো। রিদের কাঁধ থেকে মাথা সরিয়ে মুখোমুখি বসে জিগ্যেস করলো,
-পাগল হয়ে গিয়েছো?
-হয়তো! আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি আর তুমি আমার জন্য কতোটা ইম্পরট্যান্ট সেটা আমি শুধু বিয়ের মাধ্যমেই তোমাকে বোঝাতে পারবো।
-আমি এইরকম বিয়ে চাই না। আমাদের দুইজনের পরিবার নিয়ে অনেক হাসিখুশিতে আমাদের বিয়ে হবে।
রিদ তাচ্ছিল্যা হাসলো। তার বাবাকে সে চেনে। সে বেঁচে থাকা পর্যন্ত অহনার স্বপ্ন পূরণ হবে কী না অনিশ্চিত সে। অহনা কথা পাল্টে বলল,
-ওহ আমি তো বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম আগামীকাল আমার বাবা আর মেজো বোন আসছে ঢাকায়।
-ভালো তো। কয়দিন থাকবে?
-আমার ফুপ্পির বাসায় আসছে এক সপ্তাহ তো থাকবে। জানো আমি না কথায় কথায় তোমার কথা বলে দিয়েছি আম্মুকে। সে হয়তো বাবাকেও বলেছে।
-শিট! কী বলছো তুমি!
চটে উঠলো রিদ। মুখ ভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে গেলো তার। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে চিন্তিত কণ্ঠে বলল,
-এতো জলদি কেনো বলে দিলে তাঁদের?
-আজব! এতো রিএক্ট করছো কেনো তুমি? আমি চাই খুব জলদি তোমার বউ হতে তাই তো বলে দিয়েছি।
অহনাও উঠে দাঁড়ালো। রিদ চুল খামচে ধরলো। টেনশনে মাথা ফেটে যাচ্ছে তার। এখন পর্যন্ত সে তার আব্বাকে মেনেজ করতে পারলো না আর অহনা তার পরিবারকেও জানিয়ে দিয়েছে! যদি অহনার বাবা তার বাবার সাথে কথা বলতে যায় তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে! না না কখনই এমনটা হতে দেবে না রিদ। অহনাকে কষ্ট পেতে দেবে না সে। রিদকে বিচলিত দেখে অহনা শক্ত মুখে বলল,
-তোমার কী আবার আপসোস হচ্ছে আমার সাথে রিলেশনে যেয়ে? তুমি কী আমাকে বউ হিসেবে চাও না?
-দুর! কিসব বলছো পাগল! বিষয়টা সেরকম না এখন আমি তোমাকে কিভাবে বুঝাই!
-কী বুঝাবে?
-কিছু না। এক কাজ করো তুমি এখন হোস্টেলে চলে যাও রোদে অসুস্থ হয়ে যাবে।
-কী কথা লুকাচ্ছ?
-আরেহ বাবা কিছুই না। চলো তোমাকে দিয়ে আসি।
-আমি একা যেতে পারবো। আর তুমিও রাগারাগি ঝেরে বাসায় যাও।
-হুম যাবো।
______________
ক্রোধ! মানুষের অন্যতম বড় শত্রু হলো তাঁদের নিজের ক্রোধ। অত্যাধিক ক্রোধে বসে মানুষ এমন সকল কান্ড করে বসে যেটার জন্য পরে তাঁদের অনুতপ্তের শেষ নেই। একটা সুন্দর স্বাভাবিক সম্পর্ক ধ্বংস করতে ক্রোধই যথেষ্ট!
রাত নয়টা বাজে। ভারী বাতাসের সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কিছুক্ষন আগেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। চেয়ার পেতে বেলকনিতে বসে বর্ষণ উপভোগ করছে মাহানুর। কানে ইয়ারফোন গুঁজে রেখেছে। চোখ বন্ধ অবস্থায় নিজেও গুনগুন গান গাইছে। ক্রোধদ্বিত মনকে ঠান্ডা করার প্রয়াস চালাচ্ছে সে। আচমকা কয়েক ফোঁটা পানি চোখ, মুখে আসতেই ঠোঁটে মৃদু জ্বালাপোড়া অনুভব করলো মাহানুর। বিরক্ত হয়ে চোখ খুলে ফেললো। নরম হাত দিয়ে ঠোঁট ছুঁতেই জ্বালা আরেকটু বেড়ে গেলে যেনো। তবে ঠোঁটের জ্বালা চেয়ে চিত্তের জ্বালাই হয়তো বেশি!
সকালে আরহামের ঘোর ভাঙতেই বাস্তবে ফিরে আসে সে। চোখে মেলে মাহানুরকে দেখতেই চিত্ত ধক করে উঠলো তার। রাগের বসে কতবড় ভুল করে ফেললো সে! অনুতপ্ত আরহাম বড়বড় পা ফেলে সেখানে থেকে চলে যায়। মাহানুরের বুক লাফাচ্ছে। শরীর অকেজো হয়ে গিয়েছে তার। চোখ মেলে তাকায়। ঠোঁটের কিনারে হাত দিয়ে সামনে আনতেই লাল বর্ণের তরল পদার্থ দেখতে পায় সে। রাগে সেইসময় কেঁদে দেয়। সময় নিয়ে কোনোরকম চোখের পানি মুঝে ড্রেস পরিবর্তন করে। ঠোঁট ঢাকার জন্য মুখে ম্যাক্স পরে নেয়। আরহামের সাথে কথা তো দূরে থাক তাকানোও প্রয়োজন মনে করলো না সে। সবাই একসাথে সন্ধ্যা সন্ধ্যায় বাসায় আসে। আরহাম নিজেও তার ব্যবহারে লজ্জিত। মাহানুরের সামনে যেতেও বিবেকে বাঁধছে তার। হোটেলে এসে কাঁথা মুড়িয়ে ঘুম দেয় মাহানুর। আজ সে ভীষণ ক্লান্ত। ঝগড়া করার শক্তি নেই তার। টানা অনেকক্ষণ পর ঘুম থেকে উঠে একসাথে ডিনার করে নিজের মতো রুমে এসে পরে মাহানুর। এখন শান্ত হয়ে বেলকনিতে বসে আছে। বাসায় কল দিয়ে সবার সাথে কথা বলেছে। অহনাকে কল দিলে তার ফোন বন্ধ আসে তাই মাহানুর আর কল করলো না।
আরহাম উস্কোখুস্ক করছে বিছানায় বসে। মাহানুর তার সাথে কথা বলছে না। আর না কোনো ঝগড়া করছে। কিভাবে মাহানুরের কাছে মাফ চাইবে সে। জীবনে প্রথমবার কোনো বিষয় নিয়ে ভীত সে। মাহানুর রুমেও আসছে না এই বৃষ্টির মধ্যেই বেলকনিতে বসে আছে। আরহাম বিছানায় ছেড়ে নামলো। পরিহিত শার্ট টেনে ঠিক করে বেলকনির দিকে অগ্রসর হলো। দরজা কিছুটা ফাঁক করতে দেখতে পায় চোখ বন্ধ করে বসে আছে মাহানুর। বৃষ্টির ফোঁটাফোঁটা পানিতে অনেকটা ভিজে গিয়েছে সে। আরহাম মনে সাহস জোগাড় করে গলা ঝেরে বলল,
-নুর রুমের ভিতরে এসো।
কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না মাহানুর। আরহামের কথা যেনো তার কর্ণকুহরই হয়নি। আরহাম তপ্ত নিঃশাস ছাড়লো। নরম কণ্ঠে আবারও বলল,
-নুর ভিজে যাচ্ছ তো জ্বর আসবে তাই প্লিজ রুমের ভিতরে এসো। তোমার অসুবিধা হলে আমি এখানে বসে সারারাত কাটিয়ে নেবো।
মাহানুর তাচ্ছিল্যা হাসলো। একই ভাবে বসে রইলো। আরহাম এবার কিছুটা অধয্য হয়ে শক্ত কণ্ঠে বলল,
-নুর?
-গেট লস্ট ফ্রম হেয়ার।
চোখ বন্ধ রেখে কঠোর স্বরে বলল মাহানুর। আরহাম অবাক বটে মাহানুরের এতো শান্ত রুপ দেখে। কিছু বলতে যেয়েও থেমে গেলেন সে। বেলকনিতে এসে আকস্মিক মাহানুরকে বসা অবস্থাই পাঁজাকোলে তুলে নেয়। মাহানুর স্তব্ধ। ক্ষণেই রাগাদ্বিত হয়ে আরহামের বক্ষে কিলঘুষি দিতে থাকে। আরহামের চুল টেনে ধরে। আরহাম মাহানুরকে রুমে নিয়ে এসে সাবধানে বিছানায় বসিয়ে দেয়। চুল টেনে মাথা ব্যাথা করে ফেলেছে মাহানুর তার। কপালে হাত দিয়ে রুক্ষ চোখে মাহানুরের পানে তাকালো আরহাম। মাহানুর বিছানার চাদর খামচে ধরে ফুসছে। রক্তলাল আঁখিজোড়া দিয়ে আরহামের দিকে তাকিয়ে আছে। মাহানুরকে দেখে আরহামের মনে হলো সত্যি কোনো ক্ষুধার্ত বাঘিনী। তাকে এমন ভাবে দেখছে যেনো সে তার খাবার, একমাত্র শিকার! মাহানুর খানিকটা সময় নিয়ে চেঁচিয়ে বলল,
-কু’ত্তার বাচ্চা আমাকে টাচ করেছিস কোন সাহসে? কিছু বলছি না বলে হাতে আসমান পেয়েছিস!
আরহাম দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করলো। পা ছড়িয়ে সোফায় বসে পরলো। নিজেকে রাগাতে চাচ্ছে না সে। এমনেই সকালে ভুল করে ফেলেছে এখন আর কোনো ভুল করতে ইচ্ছুক না সে। মাহানুর এখন আর শান্ত হতে পারলো না। তপ্ত মেজাজে বিছানা থেকে নেমে আরহামের স্মুখীন যেয়ে দাঁড়ায়। শক্ত কণ্ঠে চিবিয়ে বলে,
-কিসের এতো দেমাগ আপনার? একটুও অনুতপ্তবোধ আছে আপনার মধ্যে?
-আমি সত্যি দুঃখিত সকালের জন্য তবে আমার মধ্যে কোনো অনুতপ্তবোধ নেই। হয়তো অনেকটা বাড়াবাড়ি করে ফেলেছিলাম কিন্তু আমি অন্যকাউকে কিস করিনি সেটা তোমারও মাথায় রাখতে হবে।
-আজ পর্যন্ত কোনো ছেলে আমার হাত ধরার সাহস পায়নি!
-পায়নি কারণ তারা ছিল বেগনা পুরুষ আর আমি তোমার হাসব্যান্ড। তাঁদের সাথে আমাকে ভুলেও মিলাতে যেয়েও না।
-আপনাকে আমি অধিকার দেইনি আমাকে ছোঁয়ার। আমার বিনা অনুমতিতে এতবড়ো কাজ করার সাহস আপনার কিভাবে হয়?
মাহানুরের চিৎকারে পুরো রুম কেঁপে উঠলো। তাঁদের ভাগ্য ভালো ছিল রুম সাউন্ডপ্রুফ হওয়ায়। আরহাম ঠোঁট কামড়ে রুক্ষ ভঙ্গিতে বসে থাকলো। ঠান্ডা স্বরে বলল,
-গলার আওয়াজ কমাও। এটা তোমার বাপের বাড়ি না যেখানে তুমি বেয়াদবের মতো চিল্লাবে আর সবাই তোমাকে প্রশ্রয় দেবে!
-যদি আজ আমি কোনো ভালো পরিবার থেকে বিলং না করতাম তাহলে এতক্ষণে কমপক্ষে চারটা জুতোর বারি আপনার গালে পরতো আরহাম চৌধুরী।
ভয়ংকর রেগে মাহানুর। চোখ, মুখ ফুলে আছে তার। রক্তিম হয়ে আছে তার আঁখিজোড়া। আরহামের ধয্যের বাধ ভাঙছে। হাত মুঠি করে রাগ দমানোর কার্য চালাচ্ছে সে। মাহানুরকে কিছুদিনে অনেকটা চিনেছে সে। এই মেয়েকে রাগী হয়ে কিছু বললে তার উল্টো করে তাকে শান্ত, ভদ্র ভাবে সবটা বোঝাতে হবে। শুধুই তার একটু পেশেনের দরকার। আরহাম বসা থেকে দাঁড়ায়। পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলে,
-তুমি মাহানুর খান হলে আমিও তোমারই স্বামী তাই আমার সাহস একটু বেশিই। একবার বলেছি আবারও বলছি আমাকে অধিকার দিতে হবে না আমি নিজেই নিজের অধিকার আদায় করে নেবো।
-আপনার মতো মানুষের সাথে আমি সংসার করতে পারবো না! আমার জীবনের সবচেয়ে জঘন্য ডিসিশন ছিল আপনাকে বিয়ে করা।
-কী চাও তুমি? ডিভোর্স?
মাহানুর কিছুটা পিছিয়ে ধপ করে বিছানায় বসলো। দুইহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো সে। একজন ডিভোর্সি মেয়েকে সমাজ কখনই ভালো নজরে দেখে না। তার ডিভোর্স হলে সবাই তাকেও খারাপ ভাববে। তার বাবা, বড়বাবার অসম্মান হবে! মাহানুর ভেবেচিন্তে ফট করে বলল,
-আমি ডিভোর্স চাই না।
-চাইলেও পেতে না।
-তাহলে জিগ্যেস কেনো করেছিলেন?
-তোমার মনের কথা শুনতে।
মাহানুর নাক ফুলালো। নিঃশাস ত্যাগ করে বলল,
-আমি ডিভোর্স চাই না। তবে নিজের মতো থাকতে চাই। আপনার ইলেগেল ওয়াইফ হিসেবে আপনার পরিবারের সব দায়িত্ব আমি নিতে প্রস্তুত কিন্তু দিনশেষে বদ্ধ রুমে আমি আপনার ওয়াইফ হতে পারবো না। আপনি চাইলে আরেকটা বিয়ে করতেই পারবেন আমার কোনো আপত্তি নেই।
আরহাম চুপচাপ শুনলো। কতটা নির্বোধ হলে একজন মেয়ে তার স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ের কথা বলে! ভিতর ভিতর রাগ তার আকাশে চড়েছে। মাহানুরকে চড়িয়ে লাল করে দিতেও মন চাইলো তার। তবে রাগে, জেদে মাহানুর আরো বিগড়ে যাবে তাই আরহাম কিছু না বলেই রুম থেকে প্রস্থান করলো। মাহানুর আড়চোখে তাকিয়ে থাকলো। সে নিজের ওপর নিজেই ভীষণ বিরক্ত। কত মুভি, কাহিনীতে দেখেছে এইরকম হুট করে বিয়ে হয় তারপর ধীরে ধীরে নায়ক নায়িকা দুইজন দুইজনকে ভালোবেসে ফেলে। তাহলে তার মনে কেনো আরহামের প্রতি কোনো আহামরি ফিলিংস নেই! আরহাম রাগে হলেও তাকে কিস করেছে। তাও আবার লিপ কিস! অথচ তার এখানে কোনো রোমান্টিক ফিলিংস হচ্ছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে লাজুক হাসি আসছে না তার। লাজে রাঙা হচ্ছে না তার দুই গাল। যেটা আসছে সেটা হলো শুধুই রাগ। অস্বাভাবিক রাগ!
ফোনের তীব্র আওয়াজে ধেন ভাঙে মাহানুর। হাত বাড়িয়ে ফোন হাতে নেয়। অহনা কল করেছে তাও আবার ভিডিও কল। মাহানুর কোনোরকম নিজেকে স্বাভাবিক করে কল রিসিভ করে। অহনা ঐপাশ থেকে বলল,
-কিরে কল ধরতে এতো সময় লাগে?
-ওয়াশরুম ছিলাম।
-ওহ আচ্ছা। তোর ঠোঁটের কিনারে কী হয়েছে? আবার পাহাড় থেকে পরেটরে যাসনি তো?
অনেকটা মজার ছলেই বলে অহনা। মাহানুর মুখে নকলি হাসি ফুটিয়ে বলল,
-আসলে পরে গিয়েই ব্যাথা পেয়েছি।
-আরহাম জিজু থাকতে আবার কিভাবে পরিস গাঁধী!
মাহানুর নিশ্চুপ রইলো কিছু বলল না। অহনা বুঝেছে এটা কোনো পরে যাওয়ার আঘাত নয় হয়তো অন্যকিছু। কিন্তু মাহানুর যেহেতু বলতে চাচ্ছে না তাই অহনা আর কিছু জিগ্যেস করলো। মাহানুর বিছানায় আরাম করে বসে জিগ্যেস করে উঠলো,
-এখন বল ঐখানে সবাই ঠিক আছে তো? তুই কেমন আছিস?
-সবাই ভালো আছি কিন্তু আমার মনে শান্তি নেই।
-কী হয়েছে?
-রিদকে নিয়ে চিন্তায় আছি। আবার আগামীকাল আব্বু আসছে ঢাকায়।
-ওয়াও এটা তো ভালো! আন্টিও আসছে নাকি?
-না। শুধু আব্বু আর বোন আসছে।
-ওহহ!
-আমি না ভুলে একটা আকাম করে ফেলেছি।
-কী করলি আবার?
-আমি আম্মুকে রিদের কথা বলেছিলাম সেটা হয়তো আব্বুও জানে। কিন্তু রিদ চাচ্ছে না এখন আমাদের সম্পর্ককে আগে বাড়াতে।
-আজব! সে যদি তোকে সত্যি ভালোবাসে তাহলে চাইবে না কেনো?
-সেটাই বুঝতে পারছি না। ওর কী ফ্যামিলি প্রবলেম সেটাও ক্লিয়ারলি বলছে না! তুই একটু আরহাম ভাইকে জিগ্যেস করিস প্লিজ।
-হুম।
-আর তুই জলদি আয় আমার একা একা টেনশনে ভালো লাগছে না। তোকে ভীষণ প্রয়োজন আমার।
-আগামীকালই আসছি।
অহনা চমকিত কণ্ঠস্বরে বলল,
-আগামীকাল কিভাবে! তোদের না পাঁচদিনের ট্যুর?
-এখানে ভালো লাগছে আমার আর তুই জানিস কেনো ভালো লাগছে না তাই কিছু জিগ্যেস করিস না।
-আচ্ছা আয়।

আরো কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রাখে মাহানুর। সাদাফ ফোন করে বলে দিলো তারা অতি প্রয়োজনে আগামীকাল সকালেই চলে যাবে। সাদাফ তাকে অনেক রিকোয়েস্ট করে কিন্তু মাহানুর শুনতে নারাজ। ফোন রেখে ব্যাগ গোছাতে লাগলো। আরহাম রুমে প্রবেশ করে। দরজা লাগিয়ে ভিতরে আসে। মাহানুর মৃদু কণ্ঠে বলল,
-আমরা আগামীকাল সকালে চলে যাচ্ছি।
আরহাম কিছু বলা প্রয়োজন মনে করলো না। ধুরুম ধুরুম পা ফেলে বেলকনিতে চলে আসলো। বাহিরে গিয়েছিলো রাগ কমাতে। ঠান্ডা হাওয়ায় ভালোই লাগছিলো। ক্ষণেই দেখা হয় হেবার সাথে। সেই গায়ে পরা মেয়ের সাথে কিছুক্ষন থেকে তার রাগ কমা তো দূরে থাক বিরক্তিও বেড়ে গেলো। তাইতো রুমে চলে আসলো সে। পেন্টের পকেট থেকে একটি সি’গা’রেট আর লাইটার বের করলো। সি’রা’গেট জ্বালিয়ে দুই ঠোঁটের মধ্যখানে চেপে ধরলো।
সি’গা’রেটের স্মেল শুকতে পারে না মাহানুর। সাথে সাথেই বমি এসে পরে তার। হঠাৎ রুমে সিগা’রে’টের স্মেল নাকে আসতেই টনক নড়ে মাহানুরের। ওড়না দিয়ে নাক চেপে ধরে বেলকনিতে আসে। বিরক্তিকর চোখে আরহামের দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে তার হাত থেকে সি’গা’রেট টা নিয়ে নিলো। একপ্রকার ছুঁড়ে ফেললো বাহিরে। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
-আমার সামনে স্মো’কিং করার মতো ভুল করতে যাবেন না। এটার স্মেল সয্য হয় না আমার।
ভিতরে চলে গেলো মাহানুর। আরহাম রেলিংয়ে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস নিলো।

পরেরদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে নেয় তারা বের হওয়ার জন্য। সবাই আজ আরেকটা পয়েন্টে ঘুরতে যাবে আর মাহানুররা বাসায়। সকলের থেকে বিদায় নেয় তারা। রাকা পার্সোনালি মাহানুরের ফোন নাম্বার নিয়ে নিলো। হেবাও দুঃখ প্রকাশ করলো আরহামের জন্য। অতঃপর তারা জিপে উঠে চললো ডাউকির উদ্দেশ্যে। যেভাবে এসেছিলো সেভাবেই যাবে। মাহানুরেরও মন খারাপ। তার স্বপ্নের জায়গায় এসেছিলো। ভেবেছিলো অনেক ঘুরবে, ফিরবে। কিন্তু এখন মন খারাপ করে বাসায় যেতে হচ্ছে। আরহামেরও একটু খারাপ লাগলো মাহানুরের উদাসীন মুখ দেখে তবে এখন চলে যাওয়াই শ্রেয়।
____________________

আয়নার সামনে বসে তৈরি হচ্ছে সুনহেরা। নীল রঙের ফ্রক পরেছে সে। মাথায় হিজাব। আয়াস ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়। সুনহেরা আয়নায় তাকে দেখে বলল,
-শুনছেন, কিছু কথা ছিল আপনার সাথে।
আয়াস শার্ট বোতাম লাগাতে আকস্মিক নজরে তাকায় সুনহেরার দিকে। এমন ডাক সে আশা করেনি একদম। থমথমে কণ্ঠে বলল,
-বলুন?
-আপনি মেডিকেলে অনেক বেশি সাজগোজ করে যান! আজ থেকে একদম সাধারণ ভাবে যাবেন।
-আমি কী মেয়ে যে সাজগোজ করে যাই?
-এটা ঐ সাজগোজ না বুদ্ধু! এইযে এতো স্টাইল করে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
আয়াস নিজের দিকে তাকালো। সে তো প্রতিদিনই অনেক সিম্পল ভাবে যায়। তাহলে সুনহেরা কোন স্টাইলের কথা বলছে!
-আমি বুঝলাম না!
-উফফ! কিছু না যেভাবে মন চায় যান। বিরক্তকর মানুষ!
-হঠাৎ রেগেই বা গেলেন কেনো?
সুনহেরা কিছু বলল না। তার ফ্রেন্ডরা আয়াসের স্মার্টনেসের অনেক তারিফ করে যেটা একদম অপছন্দ সুনহেরার। তার হাসব্যান্ড সে একাই তারিফ করবে, একাই নজর দেবে। অন্য মেয়ে কোন দুঃখে তাকাবে! এই কারণেই এই চটে আছে সুনহেরা। গায়ে এপ্রোন জড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে পরলো সে। আয়াস আহাম্মকের মতো শুধু তাকিয়ে থাকলো।
আয়াসের লেট হওয়ায় সুনহেরা আজ ড্রাইভারের সাথে একাই বের হয়েছে। মাঝ পথে হঠাৎ থেমে যায় তাঁদের গাড়ি। ড্রাইভারকে জিগ্যেস করলে বলে ম্যাম আপনি একটু বসুন আমি দেখছি। কিন্তু ততক্ষণে অনেকবেশি দেরি হয়ে যাবে তাই সুনহেরা পায়ে হেঁটেই যেতে থাকে। মানুষজন দেখতে দেখতে ফুটফাত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আচমকা একজনের সাথে ধাক্কা খায় সে। সামনের মানুষটিকে খেয়াল না করে সুনহেরা ত্বরিত বলে উঠলো,
-সরি সরি আমি দেখিনি।
-সুনহেরা!
পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনে স্মুখীন তাকায় সুনহেরা। অতি পরিচিত মুখশ্রী দেখতেই ধক করে উঠলো সুনহেরার বুক। হাত, পা তিরতির করে কাঁপতে থাকলো তার। এতো মাস পর এই মানুষটার এভাবে দেখা হয়ে যাবে ভাবতে পারেনি সে। পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে অজ্ঞাত লোক উপহাস স্বরে বলল,
-বাহ্! বিয়ে করে ভাব বেড়ে গেলো নাকি তোমার সোনা? দেখেও ইগনোর করে চলে যাচ্ছ!
সুনহেরা পিছনে ফিরলো। মুচকি হেসে বলল,
-তোর মতো কীটপটঙ্গ আমার নজরে পরে না এখন আমি কী করবো!
-আগের থেকেই তো তোমার দাপট ছিল এখন দেখছি বেড়ে আকাশ সমান! আরো সুন্দরী হয়ে গিয়েছো!
-অফ কোর্স। শ’য়তা’নদের হাত থেকে রক্ষা পেলে মানুষ এমনেও সুন্দর হয়ে যায় হয়তো তুই জানিস না।
-কত হাস্যকর না? একদিন এই শ’য়তা’নের প্রেমে পাগল ছিলে তুমি! হাহাহাহা ভেরি ফানি।
-আমাকে পাগলা কু’ত্তায় কামড়িয়েছিল তাই তোকে পছন্দ করেছিলাম! অ্যাকচুয়ালি তুই তো আমার নখেরও যোগ্য নয়!
সুনহেরা আর দাঁড়ালো না চলে গেলো। অজ্ঞাত লোক অর্থাৎ ফুয়াদ রাগে ফুসতে থাকলো। এই মেয়ে আজও তাকে অপমান করে চলে গেলো অথচ সে চুপচাপ শুনলো! একদিন সব অপমানের প্রতিশোধ নেবে সে।
____
পাক্কা তিন ঘন্টায় ডাউকি এসে পৌঁছায় তারা। জিপ থেকে নেমে পরলো দুইজন। আরহাম ফোনে একজনকে কল করলো। মাহানুর ছোট ছোট চোখে আশেপাশে নজর বুলালো। আরহামকে বলল,
-দাঁড়িয়ে না থেকে একটা গাড়ির ব্যবস্থা করুন।
-আমি একজনকে বলেছি কিছু সময়ের মধ্যেই গাড়ি নিয়ে আসবে সে।
মাহানুর আর কিছু বলল না। তার ভীষণ খিদে পেয়েছে। ব্যাগে কিছু শুকনো খাবার আছে ভেবেছে গাড়িতে বসেই খাবে কিন্তু গাড়ি আসার নামগন্ধও নেই। প্রায় দশ মিনিট পর দূর থেকে একজন লোক আরহামকে হাতের ইশারা দিচ্ছে। আরহাম মাহানুরকে নিয়ে সেদিকে এগিয়ে গেলো। ভদ্র পোশাক পরিহিত ফিটফাট একজন লোক। মাহানুর সন্দীহান নজরে লোকটাকে পরোক্ষ করলো। কোনোদিক দিয়ে ড্রাইভার লাগছে না আবার মালিকও লাগছে না। আরহাম মৃদু ঝাড়ি দিয়ে বলল,
-ইটস টু মাচ লেট শিবু।
-এক্সট্রিমলি সরি স্যার। অনেক জ্যাম ছিল তাই লেট হয়েছে।
-ওকে। ব্যাগ কারে রাখো।
-ইয়েস স্যার।
শিবু নামের লোকটা আরহামের ব্যাগ গাড়িতে রেখে মাহানুরের দিকে তাকালো। সরু চোখে তাকিয়ে আছে সে। শিবু চমৎকার একটি হাসি দিয়ে বলল,
-আসসালামু ওলাইকুম ম্যাম। আমি শিবু। স্যারের বিশ্বস্ত সাথী, বডিগার্ড অথবা তার ডানহাতও বলতে পারেন আপনাকে।
-ওলাইকুম আসসালাম।
-কারে উঠে বসুন ম্যাম।
গাড়ির দরজা খুলে দিলো। মাহানুর ভিতরে যেয়ে বসলো। অন্যপাশের দরজা খুলে আরহামও তার পাশে বসে পরলো। শিবু ড্রাইভিং করতে থাকলো। মাহানুর ফোন টিপছে আর আরহাম বাহিরে তাকিয়ে আছে। মুখে চিন্তার রেখা তার। কিছুক্ষন পর পর ফোনে কারো সাথে কথা বলছে। তাঁদের সম্পূর্ণ কনভারেশন ইংরেজিতে তাই আড়চোখে মাহানুর আরহামকে দেখছে।অনেকটা সুনসান নীরব রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলছে তাঁদের গাড়ি। মাহানুরের বোরিং লাগছে বসে থাকতে। আবার আরহামের সাথে কথা বলতেও ইচ্ছুক না সে। শিবুকে জিগ্যেস করলো,
-আপনি কোথায় থাকেন শিবু ভাইয়া?
-চট্টগ্রাম আমার বাসা ম্যাম। কিন্তু বর্তমান আমি স্যারের বাসায়ই থাকি।
-ওওও!
-হ্যাঁ ম্যাম। আর আপনি আমাকে শিবু বলেই ডাকতে পারেন।
-না। ভাইয়া ডাকটা সুন্দর। তা শিবু ভাইয়া সুনহেরার বিয়ের সময় তো আপনাকে দেখিনি। আসেননি কেনো?
-একটু বাসায় গিয়েছিলাম ম্যাম।
-ওহ আচ্ছা।
মাহানুর চুপ হয়ে যায়। জানালার বাহিরে তাকাতেই দেখতে পায় তাঁদের পিছনে একটি জিপ গাড়ি। একটু অন্যরকম দেখতে। কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই একটি ব’ন্দুকের গু’লি জানালার কাচ ভেদ করে মাহানুরের চোখের সামনে দিয়ে অপর জানালা দিয়ে চলে গেলো। কলিজা কেঁপে উঠলো মাহানুরের। চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। ভয়াত মুখে আরহামের দিকে তাকায়। আরহাম ততক্ষণে মাহানুরকে নিজের নিকটে টেনে নিয়েছে। মাহানুর বাকরুদ্ধ। আরহাম মাহানুরকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো। উৎকণ্ঠা কণ্ঠে শিবুকে বলল,
-ড্রাইভ ফার্স্ট শিবু।
স্প্রিড বাড়িয়ে দিলো শিবু। আরহামের কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে। তার মন বলছিলো এইরকম কিছু একটা হতে পারে। শত্রুরা ওৎ পেতে থাকে কখন সুযোগ পাবে তাকে শেষ করবে। এইরকম নির্জন রাস্তা তাঁদের কাজ আরো সহজ করে দিলো। পর পর কয়েকবার তাঁদের গাড়িতে জিপ দিয়ে ধাক্কা দিলো। মুখে কালো কাপড় মুড়ানো। আঁকাবাঁকা ভাবে চলছে তাঁদের গাড়ি। মাহানুরের শরীর কাঁপছে। নিজ চোখে গু’লি প্রথমবার দেখেছে সে। কম্পিত কণ্ঠে বলল,
-এইসব কী হচ্ছে আরহাম?
-চুপচাপ বসো নুর। ভয় পেয়ো না তোমার কিছু হতে দেবো না আমি।
আরহামের নিজের ওপর রাগ হলো। বেকুবের মতো বের হয়েছে সে। কোনো হাতিয়ারই আনেনি সে। শিবু অবস্থা আরো বিগড়ে যেতে দেখে বলল,
-স্যার শুট প্লিজ।
-আই ক্যান্ট হ্যাভ মাই বুলেট রাইট নাউ।
শিবু বিচলিত হয়ে পরলো। আচমকা একটি গু’লি এসে লাগলো আরহামের বাহুতে। আরহাম ঠোঁট কামড়ে ব্যাথা সহ্য করে নিলো। এই পর্যন্তই ঠিক ছিল। টাটকা লাল র’ক্ত দেখে মাহানুর আর স্বাভাবিক থাকতে পারলো না। জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পরলো আরহামের বুকে। আরহাম চোখ খিচে মাহানুরের ব্যাগ থেকে একটি ওড়না বের করে নিজের বাহুতে শক্ত করে বেঁধে নিলো। তারপর মাহানুরকে সযত্নে নিজের পায়ের ওপর শুইয়ে দিলো। শিবু এবার রাস্তা রেখে জঙ্গলের ভিতরে গাড়ি ঢুকিয়ে নেয়। ফুল স্প্রিডে ড্রাইভ করতে থাকে। আরহাম আজ নিরুপায়। এক তো তার কাছে কিছুই নেই আর দ্বিতীয় তো মাহানুর তার সাথে যদি এই বন্দুকের গু’লি মাহানুরের লাগতো তাহলে তার কলিজার পানি শুকিয়ে আসতো। তার এইরকম গু’লিতে কিছুই হবে না। অভ্যাস আছে। আরহাম জানালা দিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখলো এখন তাঁদের পিছনে কোনো জিপ নেই। ব্যথার্ত শরীরে মাথা এলিয়ে দিলো গাড়ির সিটে।

>>>চলবে।
(আসসালামু ওলাইকুম। আপনারা অনেকেই গল্প পড়েন অথচ মন্তব্য করেন না! ইটস ভেরি ব্যাড। আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলবেন। ওকে? ধন্যবাদ❤)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here