#সুখের_ঠিকানা
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব১৯
“এই রুপম চারটা লুঙ্গি আর সাথে কালো চশমার ব্যবস্থা কর দোস্ত।”
রোহান একটা চেয়ারে বসে সামনে আরেকটা চেয়ারে পা টান করে গা এলিয়ে ফোন স্ক্রল করছিলো।শাওনের কথার মাঝেই রোহান ফোড়ন কে’টে বলল,,”কেনো এই রাতের বেলা এসব দিয়ে কি করবি?রাতে লুঙ্গি পরে সাথে কালো চশমা চোখে দিয়ে আশেপাশের পরিত্যক্ত ডোবা থেকে মাছ ধরতে যাবি নাকি?”
রোহানের কথাশুনে সামনের টেবিলে বসা মেয়েরা মুখ টিপে হাসতে থাকে। শাওন দাঁতে দাঁত চেপে ফের বলল,,”বললাম না ব্যাচেলর পার্টি করবো। আজকের রাতটাকে স্মরনীয় করে রাখার জন্য লুঙ্গি,চশমা পড়ে লুঙ্গি ডান্স আর কালা চশমা গানে উরাধুরা ডান্স হবে।”
রুপম ভ্রুযুগল কিঞ্চিৎ কুঁচকে ফেলল। অতঃপর গলা ঝেড়ে বলল,,”হুম। লুঙ্গি পড়ি আর উরাধুরা ডান্স করতে গিয়ে মানসম্মানের বারোটা বাজাই।এটা সম্ভব নয়।অন্যকিছু বল।”
“আজকের ব্যাচেলর পার্টিতে নাচ গান চলবে দোস্ত।আরে নাচ-গান বাজনা ছাড়া পার্টি জমে না ইয়ার।সাথে বিয়ার হলে আরো জমতো ভালো।”
শাওনের কথা শুনে জারিফ ফোন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে একনজর শাওনের দিকে চাইলো। অতঃপর জারিফ শান্ত কন্ঠে বলতে থাকলো,,”পার্টি মানেই গান বাজনা।সাথে ড্রিংকস এসব বেজাতীয় কালচার (অপসংস্কৃতি) অনুকরণ ,অনুসরণ না করাই বেটার।ইনজয় শালীনতা বজায় রেখে ভদ্রতার মধ্য দিয়েও করা যায়।এইযে আমরা বন্ধুরা রুপমের বিয়ে উপলক্ষে এক জায়গায় একত্রিত হয়েছি।আড্ডা দিয়ে সময়গুলো স্পেন্ট করছি এটা কি ইনজয়েবল নয়?”
শাওন মৃদু আওয়াজে বলে উঠলো,,”আসলে আমাদের দেশে এখন সবাই তো এরকম করে থাকে। পার্টি মানেই তো গান বাজনা, হইহুল্লোড় সাথে ড্রিংকস।এসব তো এখন কমন ব্যাপার।”
জারিফ স্বাভাবিকভাবে স্পষ্টস্বরে বলল,,”মানছি অনেকে করে থাকে।তবে অনেকে করলেই যে সেটা রাইট এমন তো নয়।অনেকে ঘু’ষ, দূর্নীতি এরথেকেও বেশি কিছু অহরহ করছে তার মানে কি সেটা রাইট হয়ে গিয়েছে? অনেকের সাথে কম্পিয়ার না করে ভালো – মন্দ বাছবিচার করতে হয়।উচ্ছৃংখলভাবে হইহুল্লোড় এইগুলো আসলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।যা মূলত অশান্তি বয়ে আনে।মূলত এটা পা’প কাজ।ছোট ছোট পাপের থেকেই বড়বড় পাপের সৃষ্টি হয়। একজন পার্সোনালিটি সম্পন্ন মানুষ কখনো অসাড় কাজ করে সময় ন’ষ্ট করে না।এখন বিনোদনের কথা বললে,আমি বলবো এটা কখনো সুস্থ বিনোদন না।দেখা যায় বিভিন্ন পার্টিতে ম’দ খেয়ে হইহুল্লোড় করে অবাধ চলাফেরা করে।যা আসলে অশান্তিই সৃষ্টি করে।তাই এসব থেকে বিরত থাকাই বেটার।”
জারিফের কথায় রোহান,রুপম সহমত পোষণ করে বলল,ঠিক বলেছিস।লিয়া এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে জারিফের কথা শ্রবণ করছিলো এরমধ্যে লিয়ার ফোনে আলো জ্বলে কেঁপে উঠলো।লিয়া ফোনটা রিসিভ করে একটু দূরে যায় কথা বলতে।রাজিয়া সুলতানা ফোন দিয়েছেন।ভালো মন্দ কথা বলে মেয়ের খোঁজ খবর নিলেন।লিয়া কথা বলে কল কে’টে আসতেই রুপন্তী পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,,”এই লিয়া চল ডিনার করে নিবি।আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে।দুচোখ ভেঙ্গে রাজ্যের ঘুম আসছে।”
লিয়া কপাল কুঁচকে বলল,,”একটু আগেই তো এটাসেটা খেলাম।এখন আমার আর কিচ্ছু খেতে ইচ্ছে করছে না। এমনিতেই রাতে আমি হালকা খাবার খাই।তাই প্লিজ জোর করিস না।”
“ওকে”বলে রুপন্তী আর লিয়া ছাঁদ থেকে প্রস্থান করতে থাকে।লিয়া ছাদের গেইট বরাবর গিয়ে কেনো জানি একবার ঘাড়টা হালকা ঘুরিয়ে পিছনে তাকায়।লিয়ার সিক্স সেন্স লিয়াকে ভুল প্রমাণ করেনি।লিয়া পিছনে তাকাতেই জারিফের সাথে চোখাচোখি হয়।জারিফ খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ দৃষ্টি ঘুরিয়ে নেয়।লিয়ার মনে হচ্ছিলো কেউ যেনো গভীরভাবে লিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।লিয়া একপলক সেদিকে দেখে ফের পা বাড়ায়।নিচে নামতে থাকে।রুপম আর ওর ফ্রেন্ডরা নিচে না গিয়ে ছাদে বসেই KFCথেকে অর্ডার করা খাবার খায়।এইতো কিছুক্ষণ আগেই ডেলিভারী বয় এসে দিয়ে গিয়েছে। বন্ধুরা মিলে গল্প গুজব করতে করতে রাত একটা বেজে যায়।রুপম বড় করে হামি দিয়ে বলল,,
“এই চল ঘুমাবি।আমার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে।”
রোহান ফা’জ’লা’মো করে বলে উঠলো,,”তোর তো আজকে ঘুম পাবেই।আজকে তো বেশি করে ঘুমিয়ে নিবি।কালকে সারারাত জাগতে হবে না।”
রুপম কটমট চোখে তাকায়।তারপর বলল,,”দিন এখানেই শেষ নয়।আজ তোদের দিন বলে নিচ্ছিস নে।তোদের সময় কিন্তু সামনে আছে।তাই একটু ভেবে চিন্তে বল।রোহান তোর বাসর রাতে তো আমি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগিয়ে রাখবো।তুই টেরও পাবিনা।”
বিয়ে বাড়িতে গেস্টরুম সহ প্রত্যেকটা রুম বুকড। আত্মীয়-স্বজনসহ বাড়ির লোকজন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে এতক্ষণ।কালকে বিয়ে।বাড়িতে কতশত কাজ আছে।সকাল সকাল উঠতে হবে।রুপম ফ্রেন্ডদেরকে উদ্দেশ্য করে বলল,,”তোরা আমার সাথে আমার রুমে থাকবি।মনেহয়না কোনো রুম আর ফাঁকা আছে।চারজন এক বেডে একটু অসুবিধা হবে।আজকের মতো একটু মানিয়ে নিস,কেমন।”
রোহান বলে উঠলো,,”আরে দোস্ত এটা কোনো বিষয় হলো।আরে আমরা জানি তো বিয়ে বাড়িতে থাকা খাওয়া এসব নিয়ে ধরতে নেই।আমাকে সারারাত ছাদে কাটাতে বললেও আমি মাইন্ড করবো না।”
লিয়া রুপন্তী আর ওর এক কাজিন একসাথে রুপন্তীর রুমে আছে।মাঝরাতে লিয়ার ঘুম ভেঙ্গে যায়। প্রচন্ড পানি পিপাসায় গলাটা একেবারে শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসছে।লিয়া শোয়া থেকে উঠে বসে।রুমে হলুদ রঙের ডিম লাইট জ্বলছে।যার মৃদু আলোতে সবকিছু স্পষ্ট। রুপন্তী আর ওর কাজিন গুটিশুটি হয়ে বিভোর ঘুমাচ্ছে।দেখে মনে হচ্ছে চোর এসে এদেরকে চুরি করে নিয়ে গেলেও বুঝি টের পাবে না।এটা ভাবতেই লিয়া শব্দহীন হাসলো।রুমের চারিদিকে নজর বুলালো লিয়া। কোথাও এতটুকু পানি দেখা গেলো না।পানির বোতল বা গ্লাস কিছুই লিয়ার চোখে পড়ল না।এখন পানি না খেলেও ঠিকঠাক চোখে ঘুম ধরবে না লিয়ার।তাই অবশেষে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য লিয়া নিচে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। রুপন্তী পইপই করে বলেছিলো কোনো দরকার পড়লেই যেনো ডেকে দেয়।এত সুন্দর ঘুমটা ভেঙে রুপন্তীকে জাগাতে ইচ্ছে করলো না লিয়ার।তাই লিয়া নিঃশব্দে কাঠের ভারি দরজাটা খুলে বের হয়।বাইরে উপরের করিডোরে সব লাইট অফ থাকায় বিদঘুটে অন্ধকার।কয়েক পা যেয়ে লিয়ার মনে হলো মোবাইলটা সাথে আনলে হয়তো ভালো হতো।এখন আর ফিরে মোবাইল আনার ইচ্ছে হলো না।আরো কিছুটা এগিয়ে সিঁড়ির কাছে যেতেই মৃদু আলো আসলো।নিচে লিভিং রুমে জ্বলে থাকা লাইটের আলো আসছে।লিয়া নির্ভয়ে নিচে নামতে থাকে।এই বাড়িতে এর আগে বেশ কয়েকবার আসা হয়েছে তাই প্রায় সবকিছুই চেনা জানা লিয়ার।তবে এর আগে কখনো রাত কাটানো হয়নি।লিয়া গুটিগুটি পা ফেলে কিচেনে যায়।একটা গ্লাস নিয়ে ফিল্টার থেকে পানি নেয়। অতঃপর ঢকঢক করে পানি খেয়ে তৃষ্ণা মেটায়।
মধ্যরাত চারিদিকে নিস্তব্ধতা সাথে শুনশান নীরবতা। সবাই হয়তো অতল ঘুমে অচেতন হয়ে আছে। পানি খেয়ে কিচেন থেকে বের হয়ে নিজের ছায়া দেখে লিয়া খানিকটা চমকে উঠে।পড়ে বিষয়টা টের পেলেও মনের ভেতর কেমনজানি একটা ভয় ঢুকে যায়। অন্ধকারে থাকা দরজার সামনের পর্দাগুলো কেমন জানি পেত মুর্তি লাগছে লিয়ার কাছে। অন্ধকারে কোনো কিছুর অবয়বকেই লিয়ার কাছে ভূতুড়ে আকৃতি মনেহচ্ছে।এটা নিতান্তই নিছক মনের ভ্রম।তবুও লিয়া বারংবার শুকনো ঢোক গিলতে থাকে।আর মনেমনে দোয়া দরুদ পড়ে আসতে থাকে।সিড়ি দিয়ে আসতে কোনো সমস্যা ছিলো না।যত সমস্যা এই দোতলার করিডোরে।লাইট না থাকায়।
জারিফের বেড শেয়ার করে ঘুমানোর অভ্যাস নেই বললেই চলে।তবে যেকোন পরিস্থিতিতেই চমৎকারভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে জারিফ।কোনো প্রকারের ইতস্তত বোধ ছাড়াই সুন্দর করে বন্ধুদের সাথে একই বেডে শুয়েছে।তবে একবেডে চারজন থাকায় যায়গার বেশ সংকট হয়।তার উপরে আজকে গরমটা একটু বেশিই পড়ছে।গরম লাগছিলো আর নতুন জায়গা হওয়ায় ঠিকঠাক ঘুম আসছিলো না।তাই জারিফ ছাদে যাওয়ার কথা ভাবে।যেমন ভাবা তেমন কাজ। বন্ধুদেরকে না জানিয়ে উঠে রুম থেকে বের হয়। রুপন্তী আর রুপমের রুম পাশাপাশি।রুপমের রুমের পরের রুমটাই রুপন্তীর।জারিফ মাত্রই রুম থেকে বের হয়েছে এমন সময়
লিয়া করিডোর দিয়ে যাচ্ছে আবার ভয়ে ভয়ে পিছনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখছে।এমন সময় আচমকা কারো সাথে ধাক্কা লাগে। ধাক্কা লাগার সাথে সাথেই লিয়া কাঁপাকাপা গলায় চিৎকার দেয়,,”ভূ ভূ ভূত।”
জারিফ ফোন স্ক্রল করতে করতে যাচ্ছিল। দৃষ্টি ফোনে থাকায় ঠিকমতো খেয়াল করেনি।এমন সময় ধাক্কা লাগে।গলার আওয়াজ শুনে মূহূর্তেই জারিফ বুঝে এটা লিয়া ।আর হাতে থাকা ফোনের আলোয় পুরোপুরি স্পষ্ট না হলেও ভালই লিয়াকে দেখতে পায়।লিয়া চোখ বন্ধ করে জোরে চিৎকার দিতে চাইছে।বাট গলা দিয়ে শব্দ যেনো আজ বের হতে চাচ্ছে না।ভয়ে লিয়ার সারা শরীর কাঁপছে।লিয়ার এরকম চিৎকারে জারিফ ভড়কে যায়।জারিফ সাথে সাথে ফোনের টর্চ অন করে।এতরাতে চিৎকার শুনে বাকিরা জেগে এসে কিহয়েছে জানতে চাইলে বিষয়টা বিশ্রী হবে।এটা ভেবে জারিফ লিয়ার একদম কাছাকাছি গিয়ে একহাত দিয়ে লিয়ার মুখটা চেপে ধরে।দুজনের মাঝে তেমন দূরত্ব নেই।ঘটনার আকস্মিকতায় লিয়া আরো বেশি ভীত সন্ত্রস্ত হয়।ভয়ে লিয়া ঘামতে থাকে। জারিফ মৃদুস্বরে বলে,,
“লিয়া এই লিয়া আমি। চিৎকার করো না, প্লিজ।আর ভ’য় পাচ্ছ কেনো?আমি আছি তো।”
লিয়া চোখ খুলার সাহস পাচ্ছে না।কত ভূতুড়ে গল্প শুনেছে লিয়া।ভুতেরা নাকি খুবই ভয়ংকর দেখতে হয়।আর হরর মুভিতে ভূতদের যেভাবে তুলে ধরা হয়।সত্যিকারের ভূত যদি সেইরকম দেখতে হয়। তবে লিয়ার বিশ্বাস দেখার সাথে সাথেই আ্যটাক ফ্যাটাক করে বসবে।তাই বাপু চোখ বন্ধ করে, না দেখে যতক্ষণ বেঁচে থাকা যায় ততটাই লাভ।এই ভেবে লিয়া আরো কষে চোখ বন্ধ করলো।তবে কন্ঠের স্বর শুনে লিয়ার একটু সাহস হলো।তবুও লিয়া ফের বোকাবোকা ভাবনায় নিমজ্জিত হলো।লিয়া মনেমনে ভাবে,শুনেছি ভূত জ্বীনেরা সরাসরি না এসে কারো রুপ নিয়ে আসে।তাহলে কি এই ভূতমহাশয়ও উনার আকৃতিতে আমার সামনে আসছে নাকি?
জারিফ ফের বলল,,”ভ’য় পাওয়া বাদ দাও।আর এতরাতে চিল্লাচিল্লি করো না প্লিজ।সবাই কি ভাববে।চোখ খোলো।একদম চেঁচাবে না।”
লিয়া শুকনো ঢোক গিলে নেয়। অতঃপর সাহস করে ঘন পল্লব তুলে তাকায়।চোখ মেলে কয়েকবার পলক ঝাপটায়।জারিফকে দেখে খানিকটা স্বস্তি বোধ করে।জারিফ একহাতে এখনো লিয়ার মুখটা চেপে ধরে আছে।জারিফের নিঃশ্বাস লিয়ার মুখে পড়ছে।জারিফ লিয়ার এতটা কাছাকাছি সেটা উপলব্ধি করতেই লিয়ার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।সারা শরীর জুড়ে শিহরণ খেলে যায়।লিয়া চোখ ঘুরিয়ে ইশারা করে সাথে উমম উমম করে।যাতে মুখটা ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়ায়।লিয়ার ছটফটানি সাথে ইশারা করার সেকেন্ড পরই জারিফ লিয়ার মুখ থেকে নিজের হাতটা সরিয়ে নেয়।আর এতক্ষণ লিয়ার একদম কাছাকাছি ছিলো সেটা খেয়াল হতেই অস্বস্তি হয়।লিয়ার মুখের থেকে হাতটা সরিয়ে একটু দূরত্বে সরে দাঁড়ায় জারিফ।জারিফ শীতল চাহনিতে চেয়ে অপরাধীর স্বরে বলল,,
“সরি।”
লিয়া নিজেও খানিকটা লজ্জিত হয়। লজ্জায় আপনাআপনি লিয়ার মাথাটা নুইয়ে যায়।লিয়া দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে নিশ্চুপ রয়।দুজনের মাঝেই কিছুক্ষণ নিরবতা চলে। নীরবতা ভেঙ্গে জারিফ মৃদুস্বরে শুধালো,,”তুমি এখন এখানে?”
লিয়া মাথাটা তুলে জারিফের দিকে চাইলো।জারিফের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে লিয়া কৌতুহলী গলায় প্রশ্ন করে উঠলো,,”এই আপনি না ঘুমিয়ে এতরাতে ভূতের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেনো?”
জারিফ ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলল। স্বাভাবিকভাবে শীতল গলায় পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ল,,”এই একই প্রশ্ন যদি আমিও করি। মাঝরাতে না ঘুমিয়ে উয়িচ এর মতো ঘুরছো কেনো?”
লিয়া চঞ্চল কন্ঠে বলল,,”আমার তো পানি পিপাসা পেয়েছিলো পানি খেতে নিচে গিয়েছিলাম।”
জারিফ স্মিত হাসলো। শান্ত কন্ঠে বলল,,”ঘুম আসছিলো না।গরমটা একটু বেশিই লাগছিলো।তাই ভাবলাম ছাদ থেকে একটু ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া গায়ে মেখে আসি।”
লিয়া ঠোঁট উল্টে বলল,,”ওহ্”
কিয়ৎকাল পরে কিছু মনে হতেই লিয়া সন্দেহের চোখে তাকিয়ে ফের ঠোঁট চেপে বলল,,”বাই দ্যা ওয়ে আপনি আমাকে ফলো টলো করছিলেন না তো?আর নাতো আপনার খা’রাপ কোনো ইন্টেনশন ছিলো?কোনটা?”
লিয়া কপাল কুঁচকে উত্তরের অপেক্ষায় থাকে। জারিফ মৃদু ধমকের স্বরে বলে,,”সাট আপ।বাজে কথা রাখো।আর কি যেনো বলছিলে?ওহ হ্যা মনে পড়েছে। কোনো খা’রাপ ইন্টেনশন ছিলো কিনা।সেরকম কোনো ইন্টেনশন যদি থাকতো তবে সেটা তো আর খা’রাপ আখ্যায়িত হতো না।তুমি ছাড়া অন্যকেউ হলে সেখানে খা’রাপ ওয়ার্ডটা এপ্রুপেইট হতো।এটলিস্ট তোমার ক্ষেত্রে নয়।কারন তুমি তো আমার জন্য বৈধ।”
জারিফের কথাশুনে লিয়া অপ্রস্তুত হয়ে যায়।দুইগালে লজ্জায় লাল আভা ছড়ায়।জারিফ নিজেও কথাটা বলে ভ্যাবাচেকা খায়।জারিফের মুখটাও হা হয়ে যায়।জারিফ মুখ ফস্কে কথাটা বলে ফেলেছে। কিন্তু কথাটার ওয়েট এখন মনে হতেই জারিফ নিজেও লজ্জিত হয়।জারিফ সাথে সাথেই এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে। ক্ষীন আওয়াজে বলল,,”সরি।”
চলবে,,,
(শব্দ সংখ্যা:১৪০০+ পর্ব ছোটো হয়েছে জানি। বাচ্চার পরিক্ষা ছিলো সেই নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।আজকে দুপুরে তাড়াহুড়ো করে খুব ফাস্ট এইটুকু লিখেছিলাম। পর্বটা হিবিজিবি লাগতে পারে মানিয়ে নিয়েন। নেক্সট পরশু দিবো ইন শা আল্লাহ।আর রোজা থেকে সব কাজ করে এতএত শব্দ লিখি।আর আপনারা কয়েক শব্দের কমেন্ট করতে কার্পণ্য করেন। ভালমন্দ মন্তব্য করবেন ,প্লিজ।আবার অনেকে তো কমেন্ট করা দূর চুপিচুপি পড়ে চলে যায় রিয়েক্টও দেয় না 😒 গল্প টা কি বোরিং লাগছে?ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন।আমি শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করবো।হ্যাপি রিডিং।)