#তোমার_জন্য_সিন্ধুর_নীল
#পর্ব_১৪
#সারিকা_হোসাইন
সকাল সাতটা বেজে পনেরো মিনিট।
আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা পরিলক্ষিত হচ্ছে।যেকোনো মুহূর্তে ধরনীতে বরষার জল আছড়ে পড়বে ঝুমঝুম শব্দে।থেকে থেকেই শো শো শব্দে বাতাস বইছে।বাতাসের প্রকোপে গাছপালা গুলো হেলে দুলে ঢলে পড়ছে।সাথে আকাশে সোনালী আলোর ঝিলিক দেখা যাচ্ছে।দেখেই বোঝা যাচ্ছে বৃষ্টির সাথে সাথে বজ্রপাতও হবে।
সাদা টি শার্ট আর সাদা ট্রাউজার সাথে স্পোর্টস শো পরে কোয়ার্টার এর মাঠে দৌড়াচ্ছে মেজর মুহিত ওয়াসিফ।দৌড়ের গতিতে তার হাতের পায়ের রগ গুলো ফুলে উঠেছে।এই ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যেও তার শরীর ঘামে ভিজে একাকার।কপাল,চিপ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে মোটা মোটা ঘাম।
মুহিত থামতে ভুলে গেছে,আনমনে দৌড়ে চক্কর কেটে যাচ্ছে পুরো মাঠ।
এতদিন মুহিত মরীচিকার পিছে দৌড়ে বেড়িয়েছে।এতোগুলো বছর অযথা নষ্ট হয়েছে।
আহিয়ানের মুখ থেকে তার বাবা ভাইয়ের খুনির নাম শোনার পর থেকে বুকের ভেতরে যেনো পাথর চেপে বসেছে।
এতদিন ধরে সেই খুনি তার আশেপাশে ঘুরে বেড়িয়েছে অথচ সে কতো দেশ বিদেশে তাকে খুঁজে চলেছে।
যার কথা আহিয়ান বলেছে তাকে সাক্ষী, প্রমান ,ব্যাতিত কিভাবে আটক করবে মুহিত?
ফাঁসির দড়ি গলায় নিয়ে কেউ অন্ততঃ নিজের বাবা সম্পর্কে এমন মিথ্যে বলবেনা।
যখন আহিয়ান মুহিতকে বলেছিলো মুহিতের বাবা আর ভাইয়ের খুনি তার বাবা স্বয়ং আশরাফ চৌধুরী যিনিই কিনা ছদ্দবেশে আহমেদ খান!
তখনই মুহিতের পুরো দুনিয়া দুলে উঠছে,
মানুষটি চমৎকার অমায়িক,।
সমাজ,মানুষ ,দেশ নিয়েই যেনো তার সকল চিন্তা।
মুহিত নিজেও বিভিন্ন কাজে তার সান্নিধ্যে এসেছে।
কখনো মুহিতের মনে হয়নি লোকটি একজন নরঘাতক।
আহিয়ান যখন তার বাবার অপকর্মের কথা গুলো মুহিতকে বলছিলো, তখন মুহিত তার চোখে চিকচিক করা মুক্তোর ন্যায় জ্বল দেখতে পেয়েছে।
আহিয়ান কথা গুলো মুহিতকে বলার পর অনুরোধ করে মুহিতের হাত চেপে ধরে বলেছে
―মেজর আমাকে আজই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন।কয়েদের প্রত্যেকটা মিনিট আমার কাছে সর্প দংশনের মতো মনে হচ্ছে,
―আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে মেজর।
―প্লিজ আমাকে আজকেই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন।প্লিজ
একই কথা বার বার বলতে বলতে হাসতে হাসতে লাফানো শুরু করে আহিয়ান।
দ্রুত দুজন পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়,এর পর মুহিত কাউকে কিছু না বলে সিক্ত নয়নে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে আসে জেল থেকে।
আশরাফ চৌধুরী সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করার পথ এতোটাও সুগম হবে না।
আশরাফ চৌধুরীর দিকে আঙ্গুল তোলার আগে মুহিতকেই সমাজের মানুষ আঙ্গুল তুলে বসে থাকবে।
―কিভাবে হবে বাবা ভাইয়ের হত্যার খুনির শাস্তি?
নাহ মুহিত আর ভাবতে পারছে না।এক ঘন্টা ধরে দৌড়ানোর ফলে তার বুকে প্রচুর ব্যাথা অনুভূত হয়।
দৌড়ের গতি কমিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
মাঠের নরম ঘাসে শরীর এলিয়ে দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে পড়ে।
এই পৃথিবী,এই সময়,এই জীবন সবকিছুই তার কাছে বিষাক্ত লাগছে।
হাতে থাকা স্মার্ট ওয়াচ এর স্ক্রিনে টাচ করে সময় টা দেখে নিলো মুহিত।আজ আর অন্য কোনো এক্সারসাইজ করার প্রয়োজন নেই।
অলরেডি সে আটশত আশি ক্যালোরি লস করেছে শুধু দৌড়ে।
একটু আগে যেই আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেছিলো তা এখন সূর্যের তেজে পরিপূর্ণ।
কথায় আছে
যতো গর্জে ততো বর্ষে না।
আসলেই তাই।
নিজের বরাদ্দকৃত রুমে এসে টাওয়েল নিয়ে মুহিত ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
লম্বা একটা শাওয়ার নেবার পর বেরিয়ে এলো মুহিত।
এখন ভালো লাগছে।
ব্রেকফাস্ট করার জন্য ডাইনিং টেবিলে গিয়ে সবাইকে গুড মর্নিং জানালো।
টেবিলে সবাইকে দেখলেও স্বর্গকে না দেখে মনে চিন্তার উদ্রেক হলো।তবুও কিছু প্রকাশ করলো না।
মুহিত প্লেটে একটি পরোটা আর ভাজি নিয়ে নিলো।
পরোটা ছিড়ে মুখে পুড়তে পুড়তে মিসেস তারিন কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো
―মা ,সোহাগ ভাই ফোন করেছিলো।
নামিরার যখন তখন লেবার পেইন উঠতে পারে।ভাইয়া একা ভয় পাচ্ছে।তোমাকে নামিরার পাশে থাকতে বলছে।
তুমি কি যাবে??
মিসেস তারিন কিছু ক্ষণ মৌন রইলেন।এর মধ্যেই নাফিজ মাহমুদ বলে উঠলেন
―আপা যাও না!
মেয়েটা একা একা আছে,তোমার ও শরীর টা এখন অনেক ভালো।ঘুরে এসো ভালো লাগবে।
তনুজা চুপচাপ সবার কথা শুনে বলে উঠলো
―আহা এভাবে কেনো বলছো তোমরা?
আপার সিদ্বান্ত আপাকেই নিতে দাও।
মিসেস তারিন লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস নিলেন।
মুহিতকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন―
এখানে আছি মনে হচ্ছে তোমার বাবার কাছাকাছি আছি,তার গন্ধ আমার নাকে লাগে।মনে হয় সে আমার সাথে আছে।
নামিরা আমার মেয়ে তার প্রতি আমার কর্তব্য অবশ্য পালনীয়।
আমি অবশ্যই যাবো।
তবে মুহিত তোমার কাছে আমার একান্ত অনুরোধ থাকবে তোমার সকল সমস্যার সমাধান করে ঘরে একটা বউ আনো।
সোহাগ নামিরাকে দেশে আনার ব্যাবস্থা করো।
তোমার বাবা কেনো তাদের দূরে সরিয়ে রেখেছিলো তা আমার কাছে সেদিন ই স্পষ্টমান ছিলো।তবুও সব জেনে বুঝে আমি চুপ ছিলাম।
কারন কোনোদিন তোমার বাবার কথার উপর আমার গলার আওয়াজ তুলিনি আমি।কখনো আমি তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করিনি ,যার উত্তর দিতে গিয়ে তিনি মাথা অবনত করবেন।
মানুষটা নেই,তার স্মৃতি নিয়ে আমি কোনোরকম বেঁচে আছি।আমি তোমাদের এক সাথে সুখে দেখে হাসি মুখে মরতে চাই।
যে কটা দিন বাঁচবো তুমি,নামিরা,তোমার বউ,সোহাগ কে নিয়ে বাঁচতে চাই।
মাম্মা তো বেশি কিছু আবদার করিনি রে বাবা!
মিসেস তারিন আবার বলে উঠলেন―
আমি যেতে চাই আমার মেয়ের কাছে।
―কিন্তু ফেরার সময় আমাকে একা ফিরিয়ে এনো না।আমি ওদের সাথে নিয়ে ফিরতে চাই।
বলেই মুহিতের দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে রইলেন মিসেস তারিন।
সবার চোখের কোনেই জমা হলো জল।কারোর ই আর পেট ভরে খাওয়া হলো না।
মুহিত মিসেস তারিনের হাতের উপর হাত রেখে আশ্বস্ত করলো।
★★★★
স্বর্গ ঘরে দরজা আটকে বসে আছে।আজ কয়েকদিন ধরেই সে মুহিতের সাথে কথা বলে না।মুহিত অনেক বার সুযোগ পেতে ই কথা বলার চেষ্টা করেছে।কিন্তু স্বর্গ পাত্তা দেয়নি।
কেনো দেবে,??
প্রেমিকা হিসেবে সে কি বেশি কিছু আবদার করেছে,?
একটু আদর করে কথা বললে কি এমন ক্ষতি হয়?একটু বেশি ভালোবাসলে কি খুব লস হয়ে যায়?
স্বর্গ যথেষ্ট ম্যাচিউর একটা মেয়ে।সে জানে তার মতো মেডিকেল অফিসার এর এসব মানায় না।
তবুও ভালোবাসার ব্যাপারে সে ইমম্যাচিউর হয়েই থাকতে চায়।মুহিত কে এসব ব্যাপারে এক বিন্দু ছাড় ও দেবেনা।
মুহিত তাকে আদর কেনো করবে না?
নানী দাদির মতো সারাক্ষন আপনি আপনি করে বেড়ায়।
ব্যাটা খাটাশ।
নাহ আর ভাত ও খাবোনা,কথাও বলবো না।
এরই মাঝে তনুজা এসে দরজায় নক করে স্বর্গ বলে ডাকে উঠলো।
অনেক ক্ষণ ডাকার পর দরজা খুললো স্বর্গ।
ঝাঁঝালো কন্ঠে তনুজার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো
―কি চাই?
ব্রেকফাস্ট করবি না?
না করবো না,খিদে নেই,চলে যাও।
বলেই তনুজাকে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে আবার দরজা বন্ধ করে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লো।
————–
ক্যাপ্টেন সৌম্য চোরের মতো দাঁড়িয়ে আছে মুহিতের সামনে।কিভাবে কথা শুরু করবে সেটাই গুছিয়ে উঠতে পারছে না।
একজন মেজরের ব্যাক্তিগত বিষয়ে একজন ক্যাপ্টেন হয়ে কিভাবে কথা বলবে সেটা ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছে না সৌম্য।
তবুও বলতে হচ্ছে,!
এক দিকে প্রেমিকার চাপ,অন্য দিকে ডাক্তার সাহেবা।
সৌম্যের কাচুমাচু দেখে মুহিত কপাল কুঁচকে ভরাট কন্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠলো কি ব্যাপার ক্যাপ্টেন?
এমন চোরের মতো ভান ধরে আছো কেনো?
পাঁচ মিনিটের মধ্যে ঘটনা খুলে না বললে বিদেয় হও।
কাজ আছে আমার বলেই ঘস ঘস করে কলম দিয়ে লিখতে শুরু করলো মুহিত।
জিভ দিয়ে শুষ্ক ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে নিলো সৌম্য।এর পর মিনমিন করে বলে উঠলো―
স্যার বিষয় টা খুব সেনসেটিভ,বললেও শাস্তি পাবো না বললেও শাস্তি পাবো।
অনেকটা শাঁখের করাতের মতো।
মুহিত এবার সোজা হয়ে বসে বলে উঠলো
―নাটকবাজি করা ছাড়া আর কিছু জানোনা ক্যাপ্টেন?
জী স্যার জানি !
সেটাই এখন বলবো।
বলেই সৌম্য মুহিতের সামনের চেয়ার টেনে নিয়ে বসে পড়লো।
টেবিলের উপর থেকে পানির বোতল নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে গলাটা ভিজিয়ে নিলো।
স্যার আমার হালুয়া টাইট করার চিন্তা বাদ দেন,আপনার চিন্তা করেন।আপনার তো সামনে ভীষন বিপদ!
মেজর জেনারেল এর মেয়ে,মানে ডাক্তারনী বলেই মুহিতের চোখের পানে চাইলো সৌম্য।
মুহিতের প্রশ্নবিদ্ধ চাহনি দেখে সৌম্য বুঝে নিলো মেজর পুরো ঘটনা শুনতে চাচ্ছে।
সৌম্য এবার নিজেকে মেলে ধরে আয়েশ করে বলতে শুরু করলো
―স্যার মেয়েটা বোধ হয় আপনাকে ভালোবাসে।
সে একটু কেয়ার চাচ্ছে আপনার থেকে।বিষয় টা ঠিক কেয়ার না!উম কিভাবে যে বলি?
অন্যপাশে মুখ ফিরিয়ে মিনমিন করে বলে ফেললো―
“”আদর বলতে পারেন!””
কথাটা শোনা মাত্র খুকখুক করে কেশে উঠলো মুহিত।
সৌম্য পানি এগিয়ে দিয়ে বললো লজ্জার কিছুই নেই স্যার,পানিটা খেয়ে নিন।
সৌম্য লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে মুহিত কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো―
বয়সে আপনার থেকে ছোট হলেও প্রেমের অভিজ্ঞতায় বড়।
আমার কথা মাথায় রাখবেন।
আজ আমি গেলাম।
ম্যাডাম কে একটু কেয়ার মানে ঐটা আরকি দিয়েন।
বলেই রাজাদের যেমন সৈন্যরা কুর্নিশ করে ঐভাবে সৌম্য প্রস্থান নিলো।
সৌম্য যাওয়া মাত্র মুহিতের ফর্সা গালে লজ্জার আভা ছড়িয়ে পড়লো।
লাজুকতায় আপনা আপনি ই হাসি চলে আসছে তার।
এমন সময় মুহিতের ক্যাবিনে প্রবেশ করলেন নাফিজ মাহমুদ।
নাফিজ মাহমুদ কে হঠাৎ তার কক্ষে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেলো মুহিত।
স্যালুট দিতেও ভুলে গেলো।
নাফিজ মাহমুদ সেসব গায়ে মাখলেন না।গদগদ হয়ে মুহিতের উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন―
তোমার মা অস্ট্রেলিয়া যাবার আগেই তোমার হবু বউকে যদি তাকে দেখিয়ে দেই কেমন হবে মুহিত?
মামার এমন ভিত্তিহীন কথায় চিন্তিত হয়ে মুহিত জিজ্ঞেস করলো ―কিসের বউ স্যার?
নাফিজ মাহমুদ খুশিতে গদগদ হয়ে জিজ্ঞেস করলো
―ক্যাপ্টেন তুলিকা ফার্নাজ কে তোমার কেমন লাগে?
মুহিত ভাষা হারিয়ে ফেললো মুখের।
এরা বাপ মেয়ে তাকে পেয়েছে কি?
যখন যার যেভাবে খুশি অত্যাচার চালাচ্ছে।
এ আবার কোনো নতুন মুসিবত হাজির করতে চাইছে?
স্বর্গ জানলে তো মুহিতকে সরাসরি ক্রসফায়ার দিবে।
নাফিজ হাসি মাখা কন্ঠে বলে উঠলো কি ভাবছো মুহিত?
স্যার আমি ক্যাপ্টেন তুলিকা কে সেই ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখিনি।মিনমিন করে জবাব দিলো মুহিত।
দেখোনি কি হয়েছে ?একটু পরেই দেখার ব্যাবস্থা করে দিচ্ছি,।
বলেই ফোন টিপে হ্যালো বলে মুহিতের কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলেন ।
মুহিত অসহায় এর মতো বসে রইলো ।মাথায় কিছুই ঢুকছে না তার।
**********
পিউ কে নিয়ে একটা কফিশপে যাবার জন্য তৈরি হচ্ছে স্বর্গ।
কফিশপ টা নতুন খোলেছে।ফেসবুকে বেশ হাইপ উঠেছে ।
এখানে ছবি তোলার কর্নার রয়েছে।আর তাদের রুফটপ টা নাকি অনেক সুন্দর।
স্বর্গ আর পিউ ঠিক করেছে আজ তারা শাড়ি পরবে আর সুন্দর সুন্দর ছবি তুলবে।
পিউ পড়বে গোল্ডেন কালার এর জর্জেট শাড়ি আর স্বর্গ পরবে ব্ল্যাক।
আয়নার সামনে বসে আছে স্বর্গ,শাড়ি পরেছে সে,ম্যাচিং অর্নামেন্টস পরেছে তার সাথে।বাদামি চুল গুলো কাঁধের দুই পাশে ছেড়ে দিলো এক পাশে সিঁথি করে।ঠোঁটে লাগালো টকটকে লাল লিপস্টিক।
চোখে ভালো ভাবে মাসকারা লাগিয়ে নিলো।
মুখে ব্লাশনের টাচ আপ দিলেই সাজ কমপ্লিট।
হাতে চুরি পড়তে পড়তে পিউ কে কল দিলো স্বর্গ।
পিউ উত্তর দিলো রাস্তায় গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে।
তনুজার কাছে বলে বেরিয়ে গেলো স্বর্গ।
কাঙ্খিত রেস্টুরেন্টের দুতলায় এসে উপস্থিত হলো পিউ আর স্বর্গ।
খাবার ওর্ডার করে বসে গল্প করছে তারা দুজন।
হঠাৎই স্বর্গের চোখ যায় কর্নারে থাকা টেবিলে।
সেখানে দেখতে পায় মুহিত একটি মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
আর মেয়েটি ঠাট্রার ছলে বারবার মুহিতের গায়ে হালকা করে ছুঁয়ে দিচ্ছে।
এসব দৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারলো না স্বর্গ।মাথা ঘুরে উঠলো তার।
চোখের কোনে জমা হলো জ্বল।এক সময় তা বর্ষনের রূপ নিলো।
দম বন্ধ হয়ে হাঁসফাঁস লাগছে।এখানে থাকলে মরে যাবে সে।মুহিতের পাশে অন্য মেয়েকে দেখে কষ্টে বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে তার।
চেয়ার ছেড়ে উঠে বাইরে বের হতে চাইলো।
শরীর সায় দিলো না।
লুটিয়ে পড়লো রেস্টুরেন্ট এর মেঝেতে।
#চলবে।