গল্পঃ_আশার_হাত_বাড়ায় #পর্বঃ_২৬ #লেখাঃ_ইশরাত_জাহান সুহাসিনী —

0
217

#গল্পঃ_আশার_হাত_বাড়ায়
#পর্বঃ_২৬
#লেখাঃ_ইশরাত_জাহান সুহাসিনী

🦋
শ্রেয়া আর এনির কথার মাঝে কিছু সাংবাদিক শ্রেয়ার সামনে আসে।ফ্যাশন হাউজের কাজ আর সাংবাদিক যুক্ত থাকবে না এটা তো অসম্ভব।এখানে এখন সেলিব্রেটি লোক আছে।আর যেখানে সেলিব্রেটি সেখানে সাংবাদিক।শ্রেয়ার কাছে এসে প্রশ্ন করে,”ম্যাম আপনার এই জার্নি সম্পর্কে আমরা জানতে চাই।কেমন লাগছে আজ কোম্পানির এত বড় সিদ্ধান্তে নিজেকে শামিল রেখে?”

শ্রেয়া একটু ঘাবড়ে হেলো।দুইজন মেয়ে এসে প্রশ্ন করছে।একজন মাইক নিয়ে কথা বলছে আরেকজন ক্যামেরা নিয়ে ভিডিও করছে।শ্রেয়ার চোখ গেলো ফারাজের দিকে।ফারাজ নিজেও তাকিয়ে আছে শ্রেয়ার দিকে।এবার যেনো শ্রেয়ার মাথায় আর কোনোকিছু কাজ করলো না।চাকরি বাঁচাতে হলে মুখ খুলতে হবে।নাহলে ফারাজ যে মানুষ।এ চাকরি চাকরি থেকে শ্রেয়াকে বের করে দিবে।সাহসের সাথে শ্রেয়া বলে,”লাইফের প্রথম জার্নিতেই আমার কোনো সিদ্ধান্তে ফ্যাশন হাউজের উন্নতি হলো।এটা আমার কাছে নতুন এক অজানা অনুভূতি।ভালো লাগছে বললেও কম হবে।এতটাই আনন্দ কাজ করছে যে বোঝানো সম্ভব না।”

“তো ম্যাম।আপনার এই সফলতা দ্বারা আপনি কি শিখতে পারলেন?”

“জীবন যুদ্ধে হার মানতে নেই।সৎ মনে জীবনে এগিয়ে যাও সফলতা একদিন আসবে।”

কথাটি শ্রেয়া ফারাজের দিকে তাকিয়ে বলে।সত্যি বলতে ফারাজের জন্যই শ্রেয়া এগুলো বলার সাহস পেলো।যেভাবেই হোক না কেনো কথাগুলো মুখ ফুটে আজ শ্রেয়া বলেছে।শ্রেয়ার কথা শুনে সবাই হাততালি দিতে থাকে।এনি শ্রেয়ার কাছে এসে বলে,”প্রাউড অফ ইউ শেহনাজ।এভাবেই বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এগিয়ে চলো।দেখবে তোমাকে নিচু করা লোকজন এক সময়ে তোমার মূল্য বুঝবে।”

স্মিত হাসলো শ্রেয়া।অর্পা এসে জড়িয়ে ধরে শ্রেয়াকে।সাংবাদিক এখন ফারাজের কাছে আসে।তারা প্রশ্ন করে,”আপনার ফ্যাশন হাউজ এখন টপ ফাইভ লেভেলে এসেছে স্যার।এই বিজনেস জার্নিটা আপনি দশ বছরের বেশি সময় নিয়ে শুরু করেছেন।আজ টপ ফাইভে এসে আপনার কেমন অনুভূতি স্যার?”

“জীবনে সাকসেস করতে গেলে সময় ও ধৈর্যের অনেক প্রয়োজন।তিলে তিলে গড়ে তোলা সম্পদ যখন নিজের আয়ত্তে আসে তখন সেটা এক্সপ্লেইন করা অনেক কঠিন।অনেক ত্যাগ স্বীকার করে এই সফলতাকে গ্রহণ করে আজ আমি অনেক বেশি আনন্দিত।”

“আপনার পরবর্তী প্ল্যান কি স্যার?সেকেন্ড ম্যারিড নিয়ে কিছু ভেবেছেন?”

ফারাজ তাকালো মিমির দিকে।হালকা হেসে বলে,”না।”

“সেকেন্ড ম্যারিড করার ইচ্ছা আছে স্যার?”

“বর্তমানে নেই।”

“আপনার জীবনের ঘটে যাওয়া মুহূর্ত থেকে আপনি কি শিখতে পারলেন এটা একটু আমাদেকে শেয়ার করুন।আমরাও জানতে চাই আপনার অনুভূতি।”

“পুরুষ মানুষ নিঃস্ব হলেও মনের অনুভূতি প্রকাশ করে না।তারা এক দমকা হাওয়ায় নিজেদের মনের সকল অনুভূতির উজাড় করে দেয়।মনের মধ্যেই চাপা দিয়ে রাখে তিক্ত অনুভূতি।”

ফারাজের কথা শুনে শ্রেয়া অবাক নয়নে তাকালো।লোকটার মনেও যে হাজারও কষ্ট বিরাজ করে এটা তাকে দেখলে বোঝা যায় না।শ্রেয়ার চোখ ফারাজকে দেখতে ব্যাস্ত। আর মনে মনে ফারাজের গুণাবলীকে ভাবাতে ব্যাস্ত।ফারাজ আর রনি এরা দুজনেই পুরুষ মানুষ।কিন্তু এদের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ।রনি যে টাকা পয়সা থাকলেও নিজের অহংকার নিয়ে পড়ে থাকত।দিনরাত নির্মম অত্যাচার করে যেতো।বউকে সম্মান দিতো না।আর ফারাজ যে কি না অর্থ সম্পদ গড়তে ব্যাস্ত একমাত্র তার পরিবারের জন্য।একজন পুরুষ মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম থাকে পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য।তারই এক বৈশিষ্ট্য ফারাজ।যে তার বউকে সম্মান দিতো ভালোবাসতো। আর এখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেও মনের মধ্যে সেই ভালোবাসাটা আছেই।মনে মনে শ্রেয়া আওড়ালো,”ভালোবাসার মানুষকে ঘৃণা করা যায়,কিন্তু ভালোবাসার পরিমাণ কমানো যায় না।”

শ্রেয়ার ভাবনার মাঝেই এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ফারাজ আবারও বলে,”অর্থ ব্যস্ততা বাড়ায়, আর ব্যস্ততা প্রিয়জন হারায়।”

ফারাজের কথাটিতে অহনার প্রতি ক্ষোভ মিশে আছে।অহনার প্রতি এখনও দুর্বল ফারাজ।কিন্তু এটা সে প্রকাশ করতে পারে না।জীবনের অর্ধেক সময় তো সে অহনাকে ভালোবেসে পার করলো।ভুলে থাকা কি এতই সহজ?অর্পা আর মিরাজ দেখছে ফারাজকে।সাংবাদিক আরো কিছু বলতে যাবে তার আগে পিছন থেকে কেউ বলে,”ব্যস্ততা যদি প্রিয়জনকে হারিয়ে দেয় তো সেই প্রিয়জন তোমার ব্যাক্তি জীবনের অপ্রাপ্তি কিছু।”

কণ্ঠ শুনে ফারাজ বুঝতে পারল এটা কে বলেছে।ফারাজের বাবা ফারহান চৌধুরী।মিমি সাথে সাথে দৌড়ে গেলো তার কাছে।দাদুকে জড়িয়ে ধরে বলে,”আই মিস ইউ দাদু।”

অনেকদিন পর নাতিকে পেয়ে জড়িয়ে ধরলেন ফারহান চৌধুরী। ফারাজের কাছে এসে দাড়ালেন।মিরাজ নিজেও এগিয়ে আসলো বাবার কাছে।দুই ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন ফারহান চৌধুরী।অর্পা শ্রেয়ার কানে কানে বলে,”এটা আমার শশুর।চল পরিচয় হবি।”

বলেই অর্পা যেয়ে সালাম দেয় ফারহান চৌধুরীকে।ফারহান চৌধুরী উত্তর দিতেই অর্পা শ্রেয়াকে দেখিয়ে বলে,”ও আমার ফ্রেন্ড শ্রেয়া।এখন এই ফ্যাশন হাউজে জব করে।বড়ভাইয়ের অ্যাসিসট্যান্ট পদে কাজ করে।”

ফারহান চৌধুরী দেখতে থাকেন শ্রেয়াকে।তারপর বলেন,”নাইস টু মিট ইউ।তাহলে সবাই সবার মত ইনজয় করো।আমি একটু ক্লায়েন্টদের সাথে কথা বলে নেই। ”

বলেই চলে গেলেন তিনি।শ্রেয়া এখন ইভার সাথে কথা বলতে ব্যাস্ত।নেক্সট ডিজাইন সম্পর্কে কথা বলছে।যেগুলো একটু পর ফারাজের কাছে জমা দিয়ে চলে যাবে।ফারহান চৌধুরী ক্লায়েন্টদের সাথে কথা বলে অর্পা ও মিরাজের কাছে আসলেন।তারপর বলেন,”তোমার শাশুড়ি কোথায় অর্পা?”

“মা চলে গেছেন কিছুক্ষণ আগে।মুড অফ আজ মায়ের।”

“সিনথিয়া কাজ পায়নি তাই?”

“হুম।”

“ওই মেয়েটার কথাই তোমরা আমাকে বলছিলে তাই না মিরাজ?যে এখন ফারাজের অ্যাসিসট্যান্ট।”

ঘাবড়ে গেলো অর্পা।মিরাজ ওর বাবার কাছে শ্রেয়া আর ফারাজের সম্মন্ধে কথা বলেছে।একটু কি অর্পার থেকে শুনেছে অর্পার ইচ্ছার কথা।ওমনি বাবাকে বলতে হবে।এখন বাবা কি মেনে নিবেন শ্রেয়াকে।নাকি তাকেও কথা শোনাবে।ভয় পাচ্ছে অর্পা।ফারহান চৌধুরী হো হো করে হেসে দেন।হাসি থামিয়ে বলেন,”আরে ভয় পাচ্ছো কেনো?মেয়েটাকে আমার পছন্দ হয়েছে।ইনফ্যাক্ট এমন নম্র ভদ্র মেয়েই তো ফারাজ আর মিমির জন্য চাই।”

“কিন্ত বাবা!মা তো এমন সাধারণ মেয়ে চান না।তিনি মডার্ন মেয়ে খুজছেন।”

“তোমার মাকে নিয়ে ওতো ভেবোনা।আমি আছি তো ঠিক হয়ে যাবে।”

*******
বাড়িতে এসে মাকে ঔষধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলো রিমলি।এখন সে একটু গোসল করে নিলো।ব্যালকনিতে বসে আছে রিমলি।গল্প রিচেক দিয়ে পোস্ট করলো।তারপর অন্ধকার আকাশের দিকে তাকালো।চাঁদ আর চারপাশে তারা।বামহাত উচু করে অর্ধ লাভ আকারে চাঁদের সামনে রাখলো।তারপর ফোন দিয়ে ছবি তুলে নিলো।ছবিটা দেখতে সুন্দর লাগছে।ভাবলো প্রোফাইলে দিবে। দিয়েই দিলো।এর মধ্যেই গিটারের টুং টুং আওয়াজ কানে আসলো রিমলির।শিহাব গিটার নিয়ে গান গাচ্ছে।রিমলি ঠিক তখনই বুঝতে পারল যখন এই গান পাশ থেকে ভেসে আসছে। আর দেওয়ালের ওপারে শিহাব আছে এটা রিমলি জানে।শিহাবের গান শুনতে শুনতে রিমলি ওখানেই ঘুমিয়ে গেলো।ক্লান্ত মন গোসল করার পর শীতল অনুভূতি সাথে গানের কথাগুলো মনটাকে স্বস্তি বানিয়ে দেয়।শিহাব অনেক সুন্দর গান গায়।যেটা শুনে রিমলি আর উঠতে পারেনি ওখান থেকে।ওঠার ইচ্ছেটা জাগলো না মনে।তাই ওখানে চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে থাকতেই ঘুমিয়ে যায়।শিহাব গান শেষ করে ফেইসবুকে আসলো।ফারজানা ইয়াসমিন গল্প দিয়েছে।ইতিমধ্যে কমেন্টের ঝড় পড়েছে।শিহাব নিজেও গল্পটি পড়লো।কিন্তু কোনো কমেন্ট করলো না।আজ অব্দি কোনো কমেন্ট করেনি শিহাব।কিন্তু ইনবক্সে প্রশংসা করে তার।গল্প পড়ার পর শিহাব প্রোফাইল দেখতে থাকলো। চাঁদের দিকে হাত দিয়ে ভালোবাসার চিহ্ন।চাঁদের পাশে একটি নারকেল গাছের কিছু পাতা দেখা যাচ্ছে।নারকেলের পাতা দেখে শিহাব এবার সামনের দিকে তাকালো।তার বাড়ির সামনেই তো এমন চাঁদ দেখা যায়।শিহাব এবার নিজেও হাতটা উচু করে অর্ধ ভালোবাসার চিহ্ন দেখিয়ে ছবি তুলে দেখতে থাকে।মনে মনে বলে,”লেখিকা তাহলে আশেপাশেই থাকে।”

******
আজকের মত সকল কাজ শেষ করে গাড়ির জন্য দাড়িয়ে আছে শ্রেয়া।এখন বাসায় যাবে।রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা।বাকিরা চলে গেছে।এনি ফারাজ মিমি আর শ্রেয়া থেকে যায়।ফারাজ তার কোম্পানির দায়িত্ব এখন এনি আর শ্রেয়াকে দিতে চায়।তাই কিছু কথা বুঝিয়ে দিলো। আর এই পুরো সময়টা শ্রেয়া ফারাজকে দেখতে থাকে। ফারাজের কথা বলা হাত নাড়িয়ে কাগজের উপরে আঁকতে থাকা এগুলো ভালোলাগা দিয়ে দেখছে শ্রেয়া।তারপর ফারাজ খাতাটি বন্ধ করতেই শ্রেয়া চকিত নয়নে তাকিয়ে থাকে।এতক্ষণ সে আনমনেই নির্লজ্জের মত ফারাজকে দেখতে থাকে।এটা ভেবেই শ্রেয়ার নিজেরই রাগ লাগে।সে তো এমন না।তাহলে হঠাৎ এমন করছে কেনো?ফারাজ বলে ওঠে,”তাহলে আজ এইটুকুই থাক।বাকি কাজ আমরা চট্টগ্রামে গিয়ে করবো।আর হ্যাঁ আমাদেরকে মিস্টার জায়ান ইনভাইট করেছেন।তার মেয়ের বিয়েতে আমরা ওখানে যাবো।তাই সেভাবে করেই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”

এনি এতক্ষণ শ্রেয়ার কীর্তি কলাপ দেখেছিলো।এনি বুঝতে পারলো শেহনাজ এখন হ্যান্ডসামের প্রতি আলাদা কিছু অনুভব করছে।মনোযোগ দিয়ে কিছু শুনেছে কি না শিওর না এনি।তাই নিজে থেকে বলে,”সবকিছু পারফেক্টলি হবে।ডোন্ট ওরি হ্যান্ডসাম।আমি আর শেহনাজ তো আছি।”

মিমি এতক্ষণ শ্রেয়ার পাশেই বসে ছিলো।ফারাজ সবকিছু প্যাক করছে আর এনি উঠে দাড়ালো দেখে শ্রেয়া বলে,”তাহলে আমরা আসি।সবকিছু গোছাতে হবে।”

এনি বলে,”ইয়াহ।বিকালেই ফ্লাইট।আমি দুপুরের লাঞ্চ করে তোমাদের বাসায় যাব শেহনাজ।রেডি থেকো।”

“ওকে এনি।”

কথা বলতে বলতে চলে যায় শ্রেয়া আর এনি।ফারাজ তার ফাইলগুলো নিজস্ব ডেস্কে রেখে দিলো।নিজের প্রয়োজনীয় কাজ ফারাজ নিজে করে।ওগুলোর দায়িত্ব কাউকে দেয় না।মিমি হামি দিতে দিতে দেখছে ফারাজকে।লিফটে উঠেও শ্রেয়া একবার ফারাজ আর মিমিকে দেখে নিলো।নিজের এক মন চাইছে না এমন করতে আরেক মন চাইছে একটু ফারাজকে দেখতে।এখন গাড়ির জন্য দাড়িয়ে থেকে এসব ভাবছে শ্রেয়া।মেজাজটা এখন খারাপ লাগছে।সারাদিন এত কাজ করে এখন বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়ি পাচ্ছে না।অন্তত একটা রিক্সা বা অটো আসলেও হত। যা আসছে সব যাত্রীসহ।একটু জোরেই শ্রেয়া বলে,”আজকে কুফা লাগছে।”

“কুফা কি আন্টি?”

পিছন থেকে বলে মিমি।শ্রেয়া পিছনে তাকিয়ে দেখে ফারাজ আর মিমি দাড়িয়ে।মিমির এমন প্রশ্নে শ্রেয়া ফারাজকে দেখে মাথা নামিয়ে নেয়।শুনে ফেললো ফারাজ।তাও আলাদা ব্যাপার কিন্তু বাচ্চা মানুষ শুনেছে দেখে আরো ইতস্তত লাগে।মিমি আবারও বলে,”কি হলো আন্টি বলো?”

“কুফা মানে বিপদ।কিন্তু তুমি কুফা শব্দটি যেনো আর উচ্চারণ করবে না।”
(ফারাজ বলে।)

“ওকে পাপা।”

মিমিকে নিয়ে গাড়িতে উঠে ফারাজ।এদিকে শ্রেয়া একবার ফারাজকে দেখছে আবার বাসায় যাওয়ার জন্য রিক্সা বা গাড়ি খুঁজছে।মিমি ফারাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”তুমি কি ভুলে গেছো পাপা?”

ভ্রুকুটি করে ফারাজ বলে,”আমি আবার কি ভুললাম?”

“কেউ বিপদে পড়লে হেল্প করতে হয়।তুমি ব্যাড বয় হয়ে গেছো পাপা।কিচ্ছু মনে রাখো না।”

“কে বিপদে পড়লো?”

“ওই যে আন্টি বিপদে আছে।কুফা মানে বিপদ।আন্টি এখন বিপদে আছে।বাসায় যেতে পারছে না।হেল্প করো তুমি।তোমাকে তো আন্টি অনেক হেল্প করে।”

বিড়বিড় করে ফারাজ বলে,”টাকার বিনিময়ে হেল্প করে রে মা।ওটা কাজ কোনো মানবিকতা না যে এভাবে পাপাকে কথা শুনিয়ে দিচ্ছো।”

বলেই ফারাজ গাড়ির হর্ন দিতে থাকে।শ্রেয়ার কানে শব্দ আসলেও পাত্তা না দিয়ে নিজের মত করে রাস্তায় তাকিয়ে আছে।ফারাজ আবারও হর্ন দিচ্ছে।শ্রেয়া কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না।এবার ফারাজ শ্রেয়ার কাছে এসে বলে,”মিস শ্রেয়া।”

ফারাজকে দেখে অবাক হয়ে বলে,”জি স্যার?”

“আমার গাড়িতে উঠুন।আমি আপনাকে পৌঁছে দিচ্ছি।”

“দরকার নেই স্যার।আমি পারবো বাসায় যেতে।”
সাহস নিয়ে বললেও শ্রেয়া জানে সে কিচ্ছু পারবে না।ভয়তে মনের ভিতর এমনিতেই কাপছে।একা একটি মেয়ে কখনও এত রাতে বাইরে থাকেনি।আজ প্রথম থাকছে বাইরে। ভয় তো লাগবেই।মিমি এবার বের হয়ে বলে,”মিথ্যা বলতে নেই আন্টি।দাঁতে পোকা হয়।তুমি ভয়তে ঘামছো।আমি দেখতে পাচ্ছি।”

মিমি মেয়েটি অতি পাকা।যদিও বলেছে সত্যি কথা।শ্রেয়া চোখ বড় বড় করে তাকালো ফারাজের দিকে।ফারাজ কাউকে আর কিছু বলতে না দিয়ে শ্রেয়াকে বলে,”গাড়িতে উঠুন।আমি পৌঁছে দিচ্ছি।একই এলাকায় বাসা।সমস্যা হবে না আমার।”

মাথা নাড়িয়ে শ্রেয়া রাজি হলো।ফারাজ ড্রাইভিং সিটে বসতেই শ্রেয়া গাড়ির পিছনের দরজা খুলতে নেয়।মিমি বলে,”সামনে বসো আন্টি।আমি তোমার কোলে বসবো।”

শ্রেয়া আলতো হেসে ফ্রন্ট সিটে বসে মিমিকে কোলে নিলো।ফারাজ ড্রাইভ করছে। আর শ্রেয়া মিমি খেলা করছে।মিমি শ্রেয়ার হাত নিয়ে খেলা করতে করতে বলে,”জানো আন্টি আমিও যাচ্ছি তোমাদের সাথে।”

“হ্যাঁ জানি তো।”

“পাপা তোমার আমার আর কাকীয়ার জন্য একটা রুম নিয়েছে আর পাপা কাকাই একটা রুমে থাকবে।অনেক মজা হবে তাই না বলো?”

“হ্যাঁ মা অনেক মজা হবে।”

মনের ভুলে মিমিকে মা বলেছে শ্রেয়া।বাচ্চাদের এমন বলতে বলতে অভ্যস্ত সে।ফারাজ বিষয়টি লক্ষ্য করলো।কিন্তু কিছু বললো না।কিছু বলার নেই তার।মিমি নিজেও খুশি হয়েছে।

চলবে…?
#আশার_হাত_বাড়ায়

| পরীক্ষার জন্য গল্প রেগুলার দেওয়া সম্ভব না।এই জন্য আমি দুঃখিত। সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করেন, ধন্যবাদ |

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here