#আমার তুমি ২
#পর্বঃ২১
#তানিশা সুলতানা
বেশ খানিকটা সময় নিয়ে শান্ত হয় সায়ান। এতোখন অশান্ত উম্মাদের মতো মোজে ছিলো তুলতুলের ওষ্ঠে।
তুলতুল রীতিমতো হাঁপিয়ে গেছে। শ্বাস আটকে ছিলো যেনো। দুজনই জোরে জোরে শ্বাস টানছে। এই নিস্তব্ধ পরিবেশে দুজনের নিঃশ্বাসের শব্দ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
হাত পায়ের কাঁপন রীতিমতো বেড়েই চলছে তুলতুলের। হার্ট দ্রুত লাফাচ্ছে। মস্তিষ্ক ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। নিচের ঠোঁটটা খুব জ্বলছে। কে*টে গেছে মনে হচ্ছে।
পিটপিট করে চোখ খুলে তাকায় তুলতুল। সায়ানের লম্বা চুল গুলো ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না। অসব্ভ্যটা এখনো তুলতুলের ছোট্ট গলায় মুখ ডুবিয়ে আছে।
নরার চেষ্টা করে তুলতুল। পারে না। এরকম হাতির মতো দুটো হাত দিয়ে ছোট্ট তুলতুলকে ধরে রাখলে নরাচরা করা সম্ভব? একদম সম্ভব না।
সায়ান এবার জোরে শ্বাস টানে। কেঁপে ওঠে তুলতুল। এতখন একটু একটু শ্বাস পড়ছিলো গলায়। এখন একদম গভীর শ্বাস। হৃদয় কাঁপিয়ে তুলে তুলতুলের। লোকটা কি মে*রে ফেলার ধান্দা এঁটেছে?
চোখ দুটো আবারও বন্ধ করে ফেলে তুলতুল। হাত দুটো এতখন সায়ানের পিঠে ছিলো। কখন পিঠে চলে গেছে হাত জানা নেই তুলতুলের। এখন চুলের ভাজে নিয়ে নেয়। চুলে টান দিয়ে সরাতে চায় নিজের থেকে। কিন্তু এক চুলও নরাতে পারে না। উল্টে ঠোঁটের ছোঁয়া গাড়ো হয়ে যায়। ছোট ছোট করে দেওয়া চুমু গুলো অনুভব করে মন দিয়ে। বুকটা ধুপবুক করছে। সারা শরীর শির শির করে উঠছে।
সায়ান ঠোঁটটা গলা থেকে খানিকটা নিচে নামাতেই তুলতুল অস্পষ্ট স্বরে আর্তনাদ করে ওঠে “প্লিজ”
সাথে সাথে সায়ান শান্ত হয়ে যায়। চুলের ভাজে নাক ডুবিয়ে বসে।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে তুলতুল। একে সরানো ওর কাম্য নয়। চুলের ভাজে থাকা নিজের হাতটা আলগা করে নেয়। আলতো করে ছুঁয়ে থাকে।
একটু পরে সায়ান নিজে থেকেই চুল থেকে মুখ তুলে নেয়। তুলতুলও সায়ানের চুল ছেড়ে দেয়। ডান হাতটা আপনাআপনি গলায় চলে যায়। এতখন এখানে এই হনুমানের ওষ্ঠ ছিলে।
তুলতুলের মুখের ফু দেয় সায়ন। সাথে সাথে আবার চোখ বন্ধ করে নেয় তুলতুল।
“থা*প্প*ড় দিয়ে শুধু শুধু হাত নষ্ট
আর করছি না। এভাবেই চুপ করাবো।
দুই হাতে তুলতুলকে শূন্যে তুলে পাশের সিটে বসিয়ে দিয়ে বলে সায়ান।
তুলতুল ফুঁসে ওঠে। গলা আর ঠোঁট ভেজা ভেজা অনুভব করছে। ঠোঁটে হাত দিয়ে তরল পদার্থ অনুভব করে। হাতটা সামনে এনে দেখে র*ক্ত। ত
আরও ফুঁসে ওঠে তুলতুল। অতিরিক্ত জ্বলার কারণ বুঝতে পারে। কি একটা অবস্থা? কেমন একটা পুরুষ পুরুষ গন্ধ ছড়িয়ে গেছে নিজের চার পাশে। অসয্য একটা অনুভূতি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে ওকে।
সায়ান নিজের লম্বা মুখের ওপর পড়ে থাকা চুল গুলো বা হাতে পেছনে ঠেলে পকেট থেকে সিগারেট বের করে নেয়। পকেটে দুই এক প্যাকেট সিগারেট সব সময় থাকেই ওর।
লাইটার দিকে সিগারেট জ্বালিয়ে গাড়ির কাঁচ নামিয়ে দেয়। তুলতুল রাস্তার দিকে তাকিয়ে গুনগুনিয়ে কাঁদছে আর সায়ানকে বকছে।সাথে ওড়নার কোণা দিয়ে ঠোঁট মুছছে।
এখন সিগারেটের গন্ধে কপালের তিনটে ভাজ ফেলে সায়ানের দিকে এক পলক তাকায়।
” আপনি একটা অসব্ভ্য জানেন?
রাগে গজগজ করতে করতে বলে তুলতুল।
“জানলাম।
নাক দিয়ে মুখ দিয়ে সমানে ধোঁয়া বের করতে করতে জবাব দেয় সায়ান।
তুলতুল ফুঁসে ওঠে। কোন লেভেলের খারাপ লোকটা ভাবা যায়?
“আমাি বাসায় যাবো।
হাতের উল্টো পিঠে চোখ মুছে গাল ফুলিয়ে বলে তুলতুল।
” ধরে রাখছে কে?
সিগারেটে শেষ টান দিয়ে বলে সায়ান। রাগটা তরতর করে বেরে যায় তুলতুলের। মুখ ঘুরিয়ে বাইরে তাকায়। একবার ইচ্ছে হলো গাড়ি থেকে নেমে যে দিকে দুচোখ যায় চলে যেতে। কিন্তু পারলো না। যদি হারিয়ে যায়? ছেলে ধরা যদি ধরে নিয়ে যায়?
তবে প্রতিজ্ঞা করে নেয়। আর জীবনেও এই এমপির বাড়িতে পা রাখবে না। এই লোকটার ছায়াও দেখবে না।
সায়ানের মাথায় এবার চিনচিন করে ব্যাথা করছে। ড্রাইভ করার সময় ঝাঁকি লেগেছে অনেকবার।
🥀🥀
“আপনাকে কতোবার বললাম মা? এখন বারাবাড়ি করা ঠিক হবে না। কি হলো এতে? আমার বাচ্চাটা অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথায় গেলো আল্লাহ জানে।
চোখের পানি ফেলতে ফেলতে খুকি বেগমের পাশে বসে বলে সালমা। শুকনো ঢোক গিলে খুকি। ওনারও খুব চিন্তা হচ্ছে। কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে নারাজ। প্রকাশ করলে ছেলের বউরা আরও ভেঙে পড়বে।
” আপনার জন্য হলো সব। কেনো আমাদের এসব বলতে বললেন? ছেলেটা খেলোও না। ঔষধও তো আছে।
মনি বলে।
সোনালী হামিদা বেগমের পাশে বসে আছে। নাম সোনালী হলেও সবাই সোনা বলে ডাকে। মেয়েটা অত্যাধিক সুন্দর। ধবধবে গায়ের রং, টানা টানা চোখ, ঠোঁট দুটো একদম লাভ এর মতো। লিপস্টিক নিলে মতো হয় লাভ এঁকেছে। কোমর ছাড়িয়ে চুল গুলো মারাক্তক ঘনো। সব মিলিয়ে মাথা নষ্ট করার মতো সুন্দরী।
আর এই সুন্দরী তার মনটা দিয়ে বসে আছে সায়ানকে। বাড়ির বাকি সবাই সেটা জানে। সোনার বাড়ির অবস্থা খুব ভালো। চাঁদপুরের এমপি তার বাবা। বড় একটা গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি আছে। একটাই মেয়ে।
“আহহা মেঝো বউ চিন্তা করো না। তোমার আব্বা চপে আসবে।
খুকি বলে ওঠে। ফুঁসে ওঠেন সালমা। গুরুজন বলে কিছু বলতে পারছে না।
” সোনা কল কর সায়ানকে। তুই এসেছিস জানলে চলে আসবে।
হামিদা বলে ওঠে। সোনা অলরেডি কয়েকবার কল করেছে রিসিভ হয় নি। তাই অসহায় চোখে তাকায় ফুপির দিকে।
“আবার চেষ্টা কর।
চোখের ইশারায় আশ্বাস দিয়ে বলে।
সোনা উঠে যায়। ছাঁদে গিয়ে কল করবে।
তন্ময়কে নিয়ে হাসিব বেরিয়ে গেছে ঘুরতে। যদি গুনাহ্মরেও জানতে পারে তুলতুলকে সায়ান তুলে নিয়ে গেছে তাহলে আর রক্ষা থাকবে না। সুমু হিমুর সাথে বেরিয়ে ওদের খুঁজতে।
বড় মুখ করল ননদকে নিয়ে এসেছে। এখন কোনো অঘটন ঘটে গেলে কি জবাব দেবে? তন্ময় একদম ডিভোর্স দিয়ে দেবে। শশুড় শাশুড়ী বিমুখ করবে।
🥀🥀
“কান্না কাটি শেষ হবে কখন?
পরপর ছয়টা সিগারেট শেষ করে গাড়িটা সিটে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে বলে সায়ান।
তুলতুল ফুঁস করে ওঠে। এতোখন গুনগুনিয়ে কাঁদলেও এখন শব্দ করে কেঁদে ওঠে।
” আপনি খুব খারাপ একটা মানুষ। আমার সাথে খালি ঢলাঢলি করেন। তারপর চলে যান। আর আমার খালি আপনার কথা মনে পড়ে। কথা বলার জন্য মন আনচান করে। আবার ছুঁতে ইচ্ছে করে। তখন আপনাকে কল করলে ফোন বন্ধ থাকে। আর কথাও বলেন না।
আমার কষ্ট হয়।
ভীষণ খারাপ আপনি। একদম আমার সাথে ঘেসাঘেসি করবেন না। আমি আপনাকে নিয়ে ভাবতে চায় না। আপনি খারাপ মানুষ। খুব খারাপ মানুষ।
কাঁদতে কাঁদতে বলে তুলতুল। তুলতুলের কথা শুনে নিঃশব্দে হাসে সায়ান। চোখ খুলে না।
তুলতুল এখনো শব্দ করে কাঁদছে।
“আচ্ছা ঘেসাঘেসি করবো না। কান্না থামা।
সায়ান নরম গলায় বলে ওঠে। তুলতুল আরও জোরে কাঁদতে শুরু করে। মন বলছে এই লোকটা গিরগিটির থেকে বেশি খারাপ। একদম এর কথা ভাববি না। এই লোকটা তোর ছোট্ট মনটাকে ভেঙে দিতে এমনটা করে। তোকে শক্ত হতে হবে। এই লোকটাকে নিয়ে ভাবা যাবে না।
হঠাৎ করে কান্না থামিয়ে দেয় তুলতুল। ওড়নার এক কোনা দিয়ে চোখের পানি মুছে নেয়। একদম কান্না করা যাবে না। ফুটপাতে থাকে। কান্না থামলেও ফুঁপানি থামছে না।
সায়ান দুই হাতে মাথা চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। তুলতুল বাইরের পরিবেশ দেখছে। সম্ভবত একটা ব্রিজের ওপর গাড়ি থামানো হয়েছে। জায়গাটা বেশ ফাঁকা। এতোখন যাবত আছে এখন পর্যন্ত একটা গাড়ি যাওয়ার শব্দ পায় নি।
গাড়ির কাঁচ খোলা থাকায় বাতাস ঢুকছে। প্রচন্ড শীত লাগছে তুলতুলের। গাউন খুলে কালো কামিজ পড়েছিলো। এই কামিজের ওড়নার থেকে গাউনের ওড়না দিয়ে কামিজ পড়তে বেশি ভালো লাগছিলো তাই গাউনের পাতলা ওড়নাটাই গায়ে জড়ানো ছিলো।
তুলতুল পাতলা ওড়নাটা দিয়েই গা ঠেকে নেয়। নেহাৎ লোকটার সাথে কথা বলবে না। নাহলে বলতো কাঁচটা বন্ধ করুন। ঠান্ডা লাগছে।
“তুলা
চমকে ওঠে তুলতুল। এরকম নরম মধু মেশানো কন্ঠ তো কখনোই ছিলো না সায়ানের। আজকে ভুতে ধরেছে না কি?
কয়েকবার পরপর চোখের পলক ফেলে মুখ বাঁকিয়ে এক পলক তাকায় সায়ানের দিকে। সাথে সাথে দৃষ্টি সরিয়ে ফেলে। কারণ সায়ান ওর দিকেই তাকিয়ে আছে৷ চোখ গুলো কেমন লাল লাল হয়ে গেছে। মুখটাও শুকনো লাগছে।
“শরীর খারাপ লাগছে না কি হনুমানটার?”
মনে মনে আওড়ায় তুলতুল। মুখে বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু বলছে না। দ্বিধায় ভুগছে।
“আমার কান খোলা আছে। কানে তুলো লাগায় নি। আর ময়লাও জমে নি। সব কথা কান দিয়ে ঢোকে আমার। এতো আয়োজন করে ডেকে বলতে হবে না। নরমালি ফটফট বললেই শুনতে পাবো। আর বুঝতেও পারবো।
কথা শেষ করে আমাকে বাড়ি দিয়ে আসা হোক। আমার ঠান্ডা লাগছে। সাথে তো চোখ কান নাক অনুভূতি কিছুই নেই। থাকলে নিজে থেকেই বুঝে যাওয়া হতো বাচ্চা মেয়েটার ঠান্ডা লাগছে। রীতিমতো ঠান্ডায় কাঁপছে। পিচ্চি বাচ্চাটার ঠোঁটও জ্বলছে। এখনই লিপজেল লাগাতে হবে। একটু আগে তো আমার ঠোঁটকে চকলেট ভাবা হয়েছিলো।
কিছুই তো মাথায় ঢোকে না। মাথা মোটা কি না?
যাই হোক, আমি কোনো কথা বলতো চায় না। এখন কথা বলার মুড বা ইচ্ছে কোনোটাই নেই। আমি অপ্রয়োজনীয় কথা বলি না শুনতেও পছন্দ করি না। যা বলা হবে তা যেনো শটকার্টে বলা হয়। লম্বা বক্তৃতা শোনার সময় নেই।
খিধেও পেয়েছে আমার। কেমন কিপ্টা মানুষের বাড়িতে আত্নীয় করেছি আল্লাহ মালুমই জানে। একটু খানি জুস আর ফল ছাড়া এখন পর্যন্ত কিছুই খেতে দেয় নি। সাধেও কি। এসেছি থেকেই সবাই খালি ড্যাপ ড্যাপ করে তাকিয়ে আছে। যেনো আমি বিশ্ব সুন্দরী নেইমারের বউ।
একদমে কথা শেষ করে থামে তুলতুল। ভেবেছিলো দুই চারটা থা*প্প*ড় পড়বে কিন্তু পড়ে না। পিট পিট করে পাশে তাকায়। সায়ান চোখ বন্ধ করে ঠোঁট প্রসারিত করে রেখেছে। লোকটা কি হাসছে?
সব জায়গায় কিপ্টামি। একটুখানি মন খুলে খিলখিল করে হাসবে তা না ঠোঁট চিপে কিপ্টামি করে হাসছে। ইচ্ছে করে চুল গুলো টে*নে সব গুলো তু*লে ফেলি।
মুখ বাঁকিয়ে অন্য দিকে তাকায় তুলতুল। এতো ঢং দেখার সময় নাই। কতো কাজ আছে তুলতুলের।
“মুড নাই তাই পাঁচশো আর মুড থাকলে যে কি হতো? এই পাগল মানুষ করতে অনেক কাঠখোর পোড়াতে হবে।
সায়ান বিরবির করে বলে।
“আজকের পর থেকে তোর যত খালাতো মামাতো ফুপাতো পাড়াতো ভাই আছে কারো সাথে কোনো কথা বলবি না। এমনকি আমার ভাইদের সাথেও না। কলেজ টিউশনি কোথাও কোনো ছেলের সাথে কোনো কথা চলবে না। জাস্ট ইগনোর। আমি স্যার ঠিক করে দেবো তার কাছেই পড়বি। মাথায় ঢুকেছে?
আবার সেই শক্ত কন্ঠ। একটু আগে না তুলার মতো নরম মধু মেশানো গলা ছিলো। সেই ভয়েস কোথায় গেলো?
তুলতুল হা করে তাকিয়ে আছে। কি বলা উচিৎ ওর বুঝতে পারছে না। কি রকম রিয়েক্ট করা উচিৎ সেটাও ভুলে গেছে। একদম গিরগিটি। একটুও পরিবর্তন নেই দুজনের মধ্যে।
সায়ান এখনো চোখ বন্ধ করে আছে। কথা গুলোও মনে হয় চোখ বন্ধ করেই বলেছে।
” মাথায় ঢুকেছে?
চোখ খুলে তুলতুলের দিকে তাকিয়ে ধমক দিয়ে বলে সায়ান।
তুলতুল হা করে তাকিয়ে ছিলো। ঠাস করে মুখ বন্ধ করে। এদিক ওদিক চোখ ফিরিয়ে বুক ভরে শ্বাস নেয়। তারপর বুকে থু থু দেয়।
শুকনো ঢোক গিলে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজায়।
সায়ান দেখছে সবটা। ঠোঁটের ঠিক মাঝখান টায় ছোট্ট লাল তিল আছে একটা। ঠোঁট ভেজানোর সাথে সাথে জ্বল জ্বল করে ওঠে তিলটা। নিচের ঠোঁটের মাঝখানে একটুখানি কে*টে গেছে। সেখানে র*ক্ত জমাট বেঁধে গেছে।সব কিছুই খুব করে টানছে সায়ানকে।
সায়ান চোখ ফিরিয়ে নেয়।
“পাগল করে ছাড়বে আমায়”
বিরবির করে বলে।
“না মানে বলছিলাম কি
আমার আব্বু যদি জানতে পারে আমি টিচার পাল্টে ফেলেছি একটা মা*ইর ও মাটিতে পড়বে না। সব গুলো আমার পিঠে। আমি একদম এটা করবো না। তাছাড়াও আপনার কথা কেনো শুনবো?
শুনবো কেনো?
আপনি আমার মানসম্মান টেনে হিঁচড়ে মাটিতে নামিয়ে ফেলেছেন। চরিত্রে দাগ লাগিয়ে দিয়েছেন। ঠোঁটটা পর্যন্ত কে*টে দিছেন। থা*প্প*ড়ে দাঁত নরিয়ে দিয়েছেন। আপনার কথা শুনবো?
শখ কতো।
আমি ছেলেদের সাথে কথা বলবো। প্রেম করবো। ডেটিং এ যাবো। বিয়ে
ব্যাসসস হয়ে গেছে। ঠাসসস করে তুলতুলের বা গালে থা*প্প*ড় বসিয়ে দেয়। তুলতুল গালে হাত দিয়ে হু হু করে কেঁদে ওঠে।
রাগে মাথা গরম হয়ে যায়। কেনো শুধু কথায় কথায় মা*রবে? মানুষ মনে হয় না?
তুলতুল দাঁতে দাঁত চেপে সায়ানের হাতটা টেনে নিয়ে কা*মড় বসিয়ে দেয়।
সায়ান শান্ত ভঙিতে বসে আছে। তুলতুল নিজের সব টুকু শক্ত প্রয়োগ করে কা*মড় দেয়।
কিছুখন কা*মড়ে ধরে রেখে ছেড়ে দেয়। সায়ান একটু টু শব্দও করে না।
তুলতুল মুখ তুলে হাতের দিকে তাকায়। র*ক্ত বের হয়ে গেছে। সব গুলো দাঁতের ছাপ স্পষ্ট।
আবারও কেঁদে ওঠে তুলতুল। মুখের ওপর ওড়না দিয়ে কাঁদতে থাকে।
সায়ান পকেট থেকে টিস্যু বের করে হাতে লাগিয়ে নেয়।
” আপনারও ব্যাথা লাগছে কিন্তু আপনি গন্ডার কি না তাই স্বীকার করবেন না।
তুলতুল সায়ানের হাত থেকে টিস্যু ফেলে দিয়ে নিজের ওড়না দিয়ে চেপে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে।
চলবে