স্নিগ্ধ_প্রিয়া #সাদিয়া_শওকত_বাবলি #পর্ব_৫২

0
443

#স্নিগ্ধ_প্রিয়া
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_৫২

( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )

আজ দেখা যাবে, মেয়েটাকে আজ নাকানিচোবানি না খাইয়ে যদি ছেড়ে দিয়েছে তবে তার নামও তৃষাম না। ছেলেটা গেটের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে ভীষন আগ্রহ নিয়ে। কিছু সময়ের মধ্যেই তার আগ্রহের ইতি টেনে মেয়ের বাড়ির লোক এসে উপস্থিত হলো জায়ানদের বাড়িতে। তৃষাম হাসিমুখেই লেগে পড়লো আতিথেয়তায়। সাথে দুই চোখ বুলিয়ে খুঁজছে সেদিনের মেয়েটাকে। খুব একটা কষ্ট তাকে করতে হলো না একটু সময় অতিবাহিত হতেই মেয়েটার দেখা পেল তৃষাম। যদিও মেয়েটার নামটা এখনও অজানা তার তবে মেয়েটার প্রতি তৃষামের ক্ষোভ সীমাহীন। তাকে কিনা নিজের বন্ধু প্লাস ভাই এর গায়ে হলুদের দিনটা উপভোগ করতে না দিয়ে লুঙ্গি পড়িয়ে ঘরের মধ্যে বসিয়ে রেখেছিল এই মারাত্মক রমনী। হৃদয়ের তীব্র ক্ষোভ দমন করতে ব্যর্থ হয়ে যখন সাপের মতো ফোঁস ফোঁস আওয়াজ তুলেছিল তৃষাম তার কন্ঠে তখনই দেখা পেল বাড়ির কাজের ছেলে রহিমের। ছেলেটা শরবত নিয়ে এসেছে পূর্বাশাদের বাড়ি থেকে আসা অতিথিদের জন্য। তৃষামের মাথায় চট করে একটা বুদ্ধি খেলে গেল। রহিমের পানে এগিয়ে গিয়ে বলল – শরবত নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?

– মেহোমানগো দিতে।

উত্তরটা জানাই ছিল তৃষামের। শুধু শুধুই একটা ভাব জমানোর জন্য সে জিজ্ঞেস করেছিল এই কথা। তৃষাম ঠোঁট টেনে হাসলো একটু। অতঃপর রহিমকে বলল – তোর নিশ্চই বিয়ে বাড়িতে আরও অনেক কাজ আছে। যা তুই সেগুলো কর, শরবতটা বরং ওদের আমিই দিচ্ছি।

রহিম যেন খুশি হলো। হাসিমুখে বলল – আইচ্ছা।

কথাটি বলেই শরবতের ট্রেটা সে এগিয়ে দিল তৃষামের পানে। তৃষামও ধরলো ট্রেটা। রহিম চলে যেতেই ট্রের মধ্যভাগে থাকা বড় বড় পানি ভর্তি গ্লাস হাতে নিয়ে তা থেকে পানি ঢাললো নিজের পায়ে অতঃপর সেই পা ধোয়া পানি কিছুটা পরিমান দিয়ে দিল একটা শরবতের গ্লাসে। ব্যস কাজ শেষ তার, হেলে দুলে মেয়ের বাড়ির সকলের সম্মুখে শরবত নিয়ে উপস্থিত হলো তৃষাম। এক এক করে হাস্যজ্জ্বৌল মুখশ্রী নিয়েই সকলের হাতে শরবতের গ্লাস তুলে দিল ছেলেটা। তার প্রতিপক্ষ অর্থাৎ সেই মেয়েটার হতে শরবত তুলে দিতেই মেয়েটার ভ্রু কুঁচকে এলো। প্রথমে একটু সন্দিহ লাগলেও পরবর্তীতে শরবতের রং, স্বাদ দেখে আর সন্দেহ রাখলো না। ঢকঢক করে খেয়ে ফেললো শরবতটা। তৃষামের ওষ্ঠে ফুটে উঠলো বিশ্ব জয়ের হাসি। যাক অবশেষে নিজের প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয়েছে সে। এর থেকে শান্তির আর আছে কি? কিন্তু ঐ শরবতে যে তার পা ধোয়া পানি ছিল তা তো জানাতে হবে মেয়েটিকে নয়তো মেয়েটা বুঝবে কিভাবে সে কি খেয়েছে? তাকে তো বুঝাতে হবে তৃষাম কি জিনিস। কত বড় সাহস এর? তার সাথে পাঙ্গা নিতে আসে। তৃষাম একটু এগিয়ে গিয়ে পাশাপাশি দাঁড়ালো সেই মেয়েটির, কন্ঠ খাদে নামিয়েই বলল – আমার পা ধোয়া পানি কেমন লাগলো?

মেয়েটি চমকালো। তৃষামের কথার মানে বুঝতে না পেরে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো তার পানে। ছেলেটা হাসলো অতঃপর বলল – আপনার শরবতটা আমার পা ধোয়া পানি থেকে বানানো। আর এটা সেদিন আমাকে কাঁদা পানির মধ্যে ফেলে দেওয়ার প্রতিশোধ, বুঝেছেন?

মেয়েটি স্তব্ধ হলো যেন। শেষ পর্যন্ত সে কিনা কারো পা ধোয়া পানি খেয়েছে? পেটের মধ্যে মোচড় মেরে উঠলো যেন। কিঞ্চিৎ সময় নিয়ে মেয়েটি গোল গোল চোখে কতক্ষন তাকিয়ে রইলো তৃষামের পানে অতঃপর হুট করেই হরহর করে ব’মি করে দিল তৃষামের গায়ের উপর। হকচকিয়ে উঠলো ছেলেটা। এটা কি হলো? প্রতিশোধ নিতে এসে নিজেই ভুক্তভোগী হয়ে গেল? ইসস ছিঃ মেয়েটা ব’মি করে ভাসিয়ে দিল তার শরীর? গা গুলিয়ে উঠলো তৃষামের। ব’মি দিবে আগে সংকেত তো দিয়ে নিবে তা না সরাসরি একদম ব’মি করে দিল? তৃষামের জানা মতে একজন মানব ব’মি দেওয়ার আগে ওক ওক করবে তারপর ব’মি দিবে তা না সরাসরি পেট পরিষ্কার করে ফেললো? এখন আবার ব’মি দিয়েও ওক ওক করছে। ঘৃনার রি রি করে উঠলো তৃষামের শরীর। নাক ছিটকে দৌড় লাগালো সে ঘরের ভিতরে। এখনই পোশাক পরিবর্তন করতে হবে তাকে নয়তো দেখা যাবে ঘৃনায় নিজেই ব’মি করে দিয়েছে। মেয়েটির এমন অবস্থা দেখে ব্যস্ত হয়ে পড়লো আশেপাশের সবাই। তার সাথে আসা অন্যান্য মেয়েরা এসে ধরলো তাকে। ব্যস্ত কন্ঠে শুধালো – কি হয়েছে প্রিয়ন্তি? শরীর খারাপ লাগছে?

প্রিয়ন্তি উত্তর দিল না কোনো। সে ওক করে যাচ্ছে এখনও। ইচ্ছে করছে পেটের নাড়ি ভুড়ি শুদ্ধ সব বের করে দিতে। সে শেষ পর্যন্ত কিনা এই ব’দ’মা’ই’শ পুরুষের পা ধোয়া পানি খেল?

_____________________________________

সময় গড়ালো। প্রাকৃতি তার বসন্ত নিয়ে এখনও স্থীর থাকলেও জায়ানদের ছুটি স্থীর রইলো না। বিয়ের কেনাকাটা, গাঁয়ে হলুদ, বিয়ে, বউভাত সব মিলিয়ে ছুটির দিন গুলো যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। জায়ান, পূর্বাশা, তৃষাম আর চ্যাং অবশেষে বাংলাদেশ ছেড়ে আবারও পাড়ি জমালো সুদূর চীন দেশে। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিজেই ভুক্তভোগী হওয়া এক বেদনায় স্মৃতি বক্ষে সামলে নিয়ে তৃষাম বাংলাদেশ ছাড়লো আর চ্যাং তার প্রিয় লুঙ্গি নিয়ে। গুনে গুনে পাঁচটা লুঙ্গি লাগেজে ভরেছে সে। সামনে গরমকাল, গরমে এই নিচ থেকে হাওয়া চলাচলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা সম্পন্ন লুঙ্গিগুলো কাজে আসবে দারুন ভাবে।

বাংলাদেশের এয়ারপোর্ট থেকে প্লেনে চেপে বসার মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই চীনে পৌঁছে গেলো তারা। কলেজের সম্মুখ পর্যন্ত এক সাথে চারজন গেলেও সেখান থেকে আলাদা হয়ে গেল তারা। তৃষাম এবং চ্যাং গেল হোস্টেলে আর পূর্বাশা এবং জায়ান নিজস্ব ফ্ল্যাটে। পূর্বাশা এখন থেকে জায়ানের সাথে সেখানেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিয়ে হয়েছে তাদের এখনও কি দূরে দূরে থাকবে নাকি? তাছাড়া জায়ানের কোর্স শেষ হতেও দেরী নেই বেশি। কোর্স শেষ হলে সম্ভবত চাকরির দিকে ঝুঁকবে না সে। মায়ের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ব্যবসার হাল ধরবে। যদিও ইতমধ্যে হাল ধরে ফেলেছে সে এবং সে জন্যই বেশ কিছু সময় আগেই হোস্টেল ছেড়ে সে ফ্ল্যাটে উঠেছে আর এবার পূর্বাশাও উঠলো। পূর্বাশাকে নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে এলো জায়ান। যদিও মেয়েটাকে নিয়ে আগেও কয়েকবার এসেছিল ফ্ল্যাটে তবুও আজ অনুভূতি ভিন্ন। আগে এসেছি সাধারন একজন শুধুমাত্র ভালোবাসার মানুষ হিসেবে আর আজ এসেছে ভালোবাসার মানুষ আবার সাথে সাথে বউ হিসেবে। ফ্ল্যাটের দরজা খুলে পূর্বাশার আগে আগে ভিতরে ঢুকলো জায়ান। দুই পাশে হাত ছড়িয়ে হাসি হাসি মুখে বলল – তোমার ঘর, তোমার সংসার কৃষ্ণময়ী।

“তোমার ঘর, তোমার সংসার” বাক্যটা যেন ঝংকার তুললো পূর্বাশার কর্ণে। প্রশান্তিতে ছেয়ে গেল মেয়েটার বক্ষস্থল। তার সংসার, এই ছোট্ট সংসারটা তার। পূর্বাশা পা বাড়িয়ে ঘরে ঢুকলো। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে নিল তার নতুন সংসারটা। এ বাসায় আগে আসা হলেও ভলোভাবে দেখা হয়নি কখনও। বাসার সবটা তার শ্বাশুড়ি মিসেস শীও সাজিয়েই রেখে গেছেন এখন শুধু তাকে হালটা ধরতে হবে। পূর্বাশাকে ফ্ল্যাটে ঢুকে এদিক ওদিক দেখতে দেখে জায়ান বলল – ফ্রেশ হয়ে নাও, অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছি আমরা।

পূর্বাশা দ্বিরুক্তি করলো না। লাগেজ খুলে জামা কাপড় নিয়ে ফ্রেশ হতে ঢুকলো ওয়াশ রুমে। ক্ষানিক সময় নিয়ে একদম গোসল সেড়ে বেরিয়ে এলো পূর্বাশা। জায়ানও এতক্ষনে বাসার অন্য ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়েছে। পূর্বাশা এগিয়ে গেল তার পানে অতঃপর বলল – খাওয়া দাওয়ার কি ব্যবস্থা? বাসায় আছে কিছু রান্না করার মতো নাকি অর্ডার করবেন?

জায়ান তাকালো মেয়েটার পানে। সদ্য গোসল কর ভেজা চুলে মেয়েটাকে আজ যেন একটু বেশিই সুন্দর এবং স্নিগ্ধ লাগছে। এই মেয়েটাকে তার দৃষ্টিতে এত মায়াবী কেন লাগে? আচ্ছা সবার দৃষ্টিতেই কি এমন লাগে নাকি শুধু তার? হয়তো শুধুমাত্র তার দৃষ্টিতেই এমন লাগে। কারন সে যে ভালোবাসে এই মেয়েটাকে। আর

“পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃষ্টি হলো ভালোবাসার দৃষ্টি। সত্যিকারে ভালোবাসতে জানলে পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎসিত নারীকেও পরীর সমতুল্য মনে হবে।”

জায়ান মোহিত ভঙ্গিতে হেঁটে গেল পূর্বাশার পানে। নিজের দুই হাত বাড়িয়ে মেয়েটার নরম কোমল দুই গাল নিল হাতের ভাঁজে। অতঃপর পূর্বাশার নরম কোমল ওষ্ঠ জোড়া আবদ্ধ করলো নিজ ওষ্ঠের ভাঁজে। খুব সাবধানে নিজ ওষ্ঠ দ্বারা নমনীয়ভাবে সিক্ত করলো প্রিয়তমার ওষ্ঠজোড়া। বেশ ক্ষানিকটা সময় নিয়ে ছাড়লো জায়ান মেয়েটাকে, প্রিয়তমার কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিল বার কয়েক। চোখ বন্ধ করে মুগ্ধ কন্ঠে বলল – এত সুন্দর কেন তুমি?

জায়ানের এমন স্পর্শে কেঁপে উঠেছিল পূর্বাশ, নিজের অনুভূতিতে জর্জরিত হয়ে নাজুক হয়ে পড়েছিল সে। তবে পরক্ষনেই ছেলেটার এমন কথা শুনে চমকালো মেয়েটা। সে সুন্দর? কে বলেছে সে সুন্দর? যদি সুন্দরই হতো তবে ছোট বেলা থেকে এই সমাজের মানুষদের দ্বারা এতটা লাঞ্চনা, বঞ্চনা কিংবা এতটা তিরস্কারের স্বীকার হতে হতো না তাকে। লোকটার মাথার সাথে নিশ্চই চোখ জোড়াও গেছে এবার। আগে তো তার জন্য মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর মতো আচরন করতো আর এখন অন্ধের মতো আচরণ করছে। পূর্বাশা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো। মৃদু কন্ঠে বলল – আপনাকে তো এবার মানসিক ডাক্তার দেখানোর সাথে সাথে চোখের ডাক্তারও দেখাতে হবে মশাই।

জায়ান পূর্বাশার কপাল থেকে নিজের কপাল সরালো। ভ্রু কুঁচকে শুধালো – এই যে আমাকে সুন্দর বলছেন।

জায়ান হাসলো পূর্বাশার কথায়। একটু এগিয়ে চু’মু খেল মেয়েটার কোমল গালে অতঃপর বলল – আমার দৃষ্টিতে তুমি ঠিক কতটা সুন্দর তা তুমি কখনওই বুঝবে না কৃষ্ণময়ী।

পূর্বাশা ওষ্ঠ ফাঁক করলো হয়তো বলতে চাইলো আরও কিছু কিন্তু জায়ান তার আগেই তাকে ঘুরিয়ে দিল। কপট রাগ দেখিয়ে বলল – চুল মোছোনি কেন? ঠান্ডা লেগে যায় যদি?

– লাগবে না, অভ্যাস আছে আমার।

জায়ান ভ্রু কুঁচকালো। তীক্ষ্ম কন্ঠে বলল – চুল ভেজা রাখাটা আবার কারো অভ্যাস হয় কিভাবে? যতসব উদ্ভট কথা।

এইটুকু বলেই প্রস্থান করলো জায়ান। কিঞ্চিৎ সময় পরই একটা টাওয়েল নিয়ে আবার ফিরলো সে। আলতোভাবে মুছে দিতে শুরু করলো পূর্বাশার লম্বা চুলগুলো। চুল মুছতে মুছতেই জায়ান গম্ভীর স্বরে বলল – তোমার মতোই তোমার চুলগুলোও সুন্দর।

পূর্বাশা ভরকালো কিছুটা। এটা কি জায়ান তার প্রসংশা করলো? হয়তো প্রসংশা করেছে। কিন্তু এমন গম্ভীর স্বরে কেউ কখনও প্রসংশা করতে পারে জানা ছিল না মেয়েটার। প্রশংসার স্বর থাকবে নরম, মিষ্টি, মোহিত তা নয় গম্ভীর স্বর। পূর্বাশার ভাবনার মধ্যেই কলিং বাসার কলিং বেলটা বেজে উঠলো। জায়ান স্ত্রীর চুল মোছা বাদ দিয়ে এগিয়ে গেল দরজার দিকে। দরজা খুলেই দৃশ্যমান হলো একজন ডেলিভেরি ম্যান। হয়তো জায়ান খাবারের অর্ডার করেছিল তা নিয়েই এসেছে।

______________________________________

রাতের আঁধারে ঢেকে গেছে চারপাশটা। যদিও এখনও খুব বেশি রাত হয়নি। ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে জানান দিচ্ছে রাত ১০ টা প্রায়। ব্যস্ত শহরের কোলাহল কমেনি এখনও। ঐ তো যানবাহনের তীব্র প্যা পো ধ্বনি শোনা যাচ্ছে এখনও।

চলবে…….

ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি লিংক –
https://www.facebook.com/profile.php?id=100090661336698&mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

গ্রুপ লিংক –
https://www.facebook.com/groups/233071369558690/?ref=share_group_link

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here