নিশীভাতি #৬১তম_পর্ব

0
398

#নিশীভাতি
#৬১তম_পর্ব

পুলিশকে দেখতেই কিছুটা অবাক হলো হুমায়রা। ইলহা বাসায় আসে নি। রাশাদ তখনো দোকানে। ফাইজান শহরে গিয়েছে পার্টির কাজে। তাদের দেখে হুমায়রা শুধালো,
“কি চাই আপনাদের?”
“রাশাদ সাহেব কোথায়? উনাকে একটু আমাদের সাথে থানায় যেতে হবে”

সাথে সাথেই ত্রস্ত কন্ঠে হুমায়রা শুধালো,
“কেনো? আমার ভাইজান তো কিছু করে নি”
“সেটার সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে দিন ম্যাডাম”

প্রচন্ড বিরক্তি প্রকাশ পেলো যেনো এস.আই এর কন্ঠে। বাম পকেটে হাত নিয়ে একটি কাগজে মোড়া কিছু বের করলো সে। কাগজ খানা খুলে ছোট একটি পানের অংশ মুখে পুড়লো। চিবুতে চিবুতে ফ্যাসফ্যাসে স্বরে বললো,
“এখানে খু/ন হয়েছে, কোনো গরু চুরি নয়। আপনার বাবাই তো খু/ন হয়েছে। তাই আপনাদের সহযোগীতা প্রয়োজন”

আতিয়া খাতুন হুমায়রার বাহু চেপে ধরলো। তার ভ্রান্ত, উদ্বিগ্ন দৃষ্টি অনেক কিছু বলে দিচ্ছে। হুমায়রা ধীর স্বরে উত্তর দিলো,
“ভাইজান তো দোকানে”
“নেই, গিয়েছিলাম ওখানেই। কিন্তু উনি নাকি শহরে গেছেন। তাই ঘরে খোঁজ নিতে এসেছি”

হুমায়রা বুঝে উঠলো না কি করবে। বাসায় ফাইজানও নেই। সে পার্টির কাজে গিয়েছে। লোকটির হাত এখনো ঠিক হয় নি, ফোন আসতেই বেরিয়ে পড়েছে। সে থাকলে হয়তো ভালো হতো। অন্তস্থলে দীর্ঘশ্বাসটা গোপন করে নিলো হুমায়রা। এদিকে এস.আই এর ব্যস্ততা অনেক। সে বারে বারে ঘড়ি দেখছে। একটা সময় অপ্রসন্ন স্বরে বললো,
“আপনার ভাই এলে থানায় যেতে বলবেন। কিন্তু প্রশ্ন রয়েছে। বুঝেছেন?”

হুমায়রা মাথা কাত করলো। পুলিশ চলে যেতেই আতিয়া খাতুন পীড়িত স্বরে শুধালেন,
“ওরা রাশাদরে কি জিগাইবো বুবু?”
“তুমি চিন্তা করো না দাদী, ভাইজান কিছু করে নি। প্রশ্ন উত্তর ই তো। চিন্তার কারণ নেই”

চিন্তার কারণ নেই বললেও তার নিজের চিন্তা হচ্ছে। আমান ভাই বারবার ভাইজানের উপর আঙ্গুল উঠাচ্ছিলেন। ফাঁসানোর মতলব থাকলে সব কিছুই সম্ভব। হঠাৎ স্মরণ হলো,
“ তুমি আমার কাছ থেকে অন্তত কিছু লুকাবে না”

ফাইজান বেশ জোর দিয়ে কথাটা বলেছিলো। ফাইজানের কথার ভার অনেক। তাই পুলিশ যেতেই হুমায়রা তাকে ফোন করলো।

পার্টি অফিসে প্রায় পচিশ দিন পর এসেছে ফাইজান। অনেকের সাথে কথা হয়েছে। তার উপর আক্রমণকারী অবশেষে ধরা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে বেশ লেখালিখি এবং টিভি নিউজে আলোচনা হচ্ছে। যে ছেলেটি ধরা পড়েছে তার পরিচয় জানা গেছে। ঢাকায় ডেলিভারী বয়ের কাজ করতো সে। তার ফাইজানের উপর ক্ষোভ থেকেই এই কাজ করেছে। ক্ষোভের কারণটা কেমন যেনো ধোয়াশা। একজন ডেলিভারি বয়ের কাছে সাইলেন্সার সহ পিস্তল কিভাবে এলো এটা জানা গেলো না। ছেলেটি কোনো রাজনৈতিক দলের অংশ নয়। তার ব্যাংক ব্যালেন্স ফাকা। তাই অবশেষে বোঝা গেলো এটা নিজের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। ফাইজান অবশ্য এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। বিষয়টা নিয়েই দলের লোকের মাঝে বেশ আলোচনা হচ্ছে। এর মাঝেই হুমায়রার ফোন আসলো। সে সবটা খুলে বলতেই বেশ নির্লিপ্ত স্বরে ফাইজান বললো,
“হুমায়রা পুলিশ তার কাজ করছে। সেটা করতে দাও। রাশাদ সাহেব একবার ঘুরে এলে তো ক্ষতি নেই”

ফাইজানের এরুপ কথা মনোঃপুত হলো না হুমায়রার। সে সাথে সাথেই শুধালো,
“কিন্তু, যদি কেউ ভাইজানকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে?”
“পরিকল্পনা অনেক কিছুই হচ্ছে, এখন পরিকল্পনার আসলে মাথাটা ধরা প্রয়োজন। সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ। এতে এত ভয় পাবার কিছু নেই। আমি রাখছি”

বলেই ফোন রেখে দিলো ফাইজান। ঠিক তখনই অফিসে প্রবেশ করলো ফরিদ। বাসায় যাবার পর থেকে ফরিদের সাথে তার দেখা হয় নি। ফরিদ তার সামনের চেয়ারে বসলো। বেশ ফুরফুরে লাগছিলো ফরিদকে। বেশ পরিপাটি তার আচারণ। দেখে মনে হচ্ছে বেশ ভালো কিছু ঘটেছে। ফাইজান কিছুসময় নির্লিপ্ত চেয়ে রইলো। অতঃপর অপ্রতীভ স্বরে শুধালো,
“খুব ব্যস্ত হয়ে গেছো না ফরিদ ভাই। একবার দেখাও করতে এলে না”
“একটু ব্যস্ত ছিলাম”
“আমি যতদূর জানি মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজ তোমাকে দেই নি”
“তোমার কাজ বাদেও আমার একটি ব্যক্তিগত জীবন আছে ফাইজান। সেই জীবনের কাজে ব্যস্ত ছিলাম”

বেশ দরাজ স্বরেই উত্তর দিলো ফরিদ। ফাইজান হাসলো। হাসিটা খুব দায়সারা। হাসি অক্ষত রেখেই বললো,
“তোমাকে খুব ফুরফুরে লাগছে, কারণ জানতে পারি?”
“তেমন কিছু না, বাবার জমিটার ফয়সালা হয়েছে। পার্টি খুঁজছি। বিক্রি করে দিবো”
“তাহলে তো ভালোই, এবার কাজে নামতে হবে ফরিদ ভাই”
“আমাকে বিশ্বাস করার দুঃসাহস দেখাচ্ছো তুমি?”
“আমি তোমাকে অবিশ্বাস করি নি কখনো ফরিদ ভাই”

ফরিদ চুপ করে রইলো। তার মুখোভাব বদলে গেলো। খুব শান্ত এবং গম্ভীর স্বরে বললো,
“তাহলে একটি উপদেশ দেই, সাপের লেজ নিয়ে নাড়াচড়া করো না। ছোবল দিতে সময় নিবে না”
“তুমি কিছু সন্দেহ করছো?”
“তোমার উপর হামলাটা যে কেতাব ই করিয়েছে তাতে সন্দেহ আছে? কিন্তু প্রমাণ নেই। গভীর জলের মাছ সে। শুধু তাই নয়, মামামশাইয়ের সাথেও কেতাবের সম্পর্ক খারাপ নয়। শত্রুর শত্রু বন্ধু হয়, ভুলো না। ওরা তোমার উপর শোধ নেবার জন্য ওত পেতে রেখেছে। সবসময় আক্রমণ তোমার উপর হবে সেটা কিন্তু ঠিক নয়। হাফসাও এই শত্রুতার মাঝেই বলি গেছে। স্মরণ করিয়ে দিলাম। বাকিটা তোমার সিদ্ধান্ত। আর সর্ষের ভেতর ভুত থাকে”

ফরিদের কথার উত্তর দিলো না ফাইজান। মস্তিষ্কে অনেক প্রশ্ন ঘুরঘুর করছে। কিন্তু কোনো প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছে না। দেলোয়ার সাহেব ফাইজানের কাছে সাহায্য না পেয়ে কেতাব চৌধুরীর থেকে সাহায্য নিয়েছে। কিন্তু এর মাঝে কাওছারকে কে খু’ন করলো। তার উদ্দেশ্য কি? কাওছারকে খু’ন হলে কার সুবিধা? কাওছারের মতো খুত চাল কারোর কাজে লাগতে পারে সেটাও যেনো গোলমেলে লাগছে। সন্দেহের তালিকা থেকে ফরিদ ভাইকেও ফেলতে পারছে না। কারণ বিগত সাত-আটদিন যাবৎ তার গতিবিধি খুব সন্দেহজনক। জমি উছিলা। সে কেতাব চৌধুরীর সাথে দেখা করছে প্রতিদিন। কিন্তু কি উদ্দেশ্য, সেটা বুঝতে পারছে না। “সর্ষের ভুতটি” কি ফরিদ ভাই নিজেই? ফাইজান চিন্তা ছেড়ে দিলো। হুট করে মস্তিষ্কে একটি নাম ভেসে উঠলো। এই মানুষটিকে কি করে সে সন্দেহ থেকে বাহিরে রেখেছিলো। ফরিদকে বললো,
“ফরিদভাই একটা তথ্য লাগবে, দিতে পারবে?”

*******

সাথীর অবস্থা আগের মতোই আছে। কোনো ইম্প্রুভমেন্ট হচ্ছে না। প্রতিক্ষণ যেনো মৃত্যু প্রতীক্ষা। তার কেবিনের বা দিকে বিশাল জানালা আছে। সেই জানালা দিয়ে দেখা যায় বিশাল অম্বর। যেখানে ভেসে আছে সফেদ বারিদকুঞ্জ। সাথী নিষ্প্রাণ চোখে তাকিয়ে আছে সেই বিশালাকার গগনের দিকে। এর মাঝেই দরজায় কড়া নড়লো। কাজের মেয়েটা খুলে দিলেই ইলহা প্রবেশ করলো। তার সাথে নার্স ও এসেছে। মৃদু স্বরে সাথীকে শুধালো,
“কেমন আছেন?”

সাথী চোখ সরিয়ে নিলো। মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেই মুখের ভাব বদলে গেলো। ইলহাকে দেখে চোখে মুখে ফুটে উঠলো অবিশ্বাস। কত দিন পর দেখছেন মনে পড়ছে না। প্রেসার, অক্সিজেন সবকিছু পরিমাপের পর নার্সকে বললো,
“আপা আপনি চলে যান, আমি উনার সাথে একটু কথা বলে আসছি”

সাথীর মুখখানা শক্ত হয়ে আছে। নার্স ইলহার কথা মেনে চলে গেলো। ইলহা চেয়ার টেনে বসলো সাথীর বিপরীতে। কাতর, পীড়িত স্বরে বললো,
“মা, কেমন আছো?”

সাথী তাচ্ছিল্যভরে হাসলো। হাসি না থামিয়ে বললো,
“ভালো”
“তুমি এখনো কি সেই মানুষটির প্রতীক্ষায় আছো?”

ইলহার প্রশ্নের উত্তর দিলেন না। বরং দায়সারাভাবে বললেন,
“এতোদিন পর কি আমার অবস্থায় হাসতে এসেছো?”

মায়ের এমন কথায় দারুনভাবে হতবাক হলো ইলহা। অবাক কন্ঠে বললো,
“আমি তোমার অবস্থায় হাসবো?”
“কেনো? ভুল বললাম নাকি? সব জেনেশুনে তুমি আমাকে আগুনে ঠেলে দিয়েছো ইলহা। তুমি জানতে তোমার একটা সিদ্ধান্ত সব পালটে দিবে। জানতে না? আজ আমার অবস্থা কার জন্য একবার ভেবে দেখো তো? তোমার ঘর ছাড়ার পর মানুষটিও আমাকে ছেড়ে দিলো। আমার সুখের সংসার দাবানলের আগুনে পুড়ে গেলো। একাকীত্ব আমাকে শেষ করে দিলো। আচ্ছা, আমার কি এমন জীবন প্রাপ্য ছিলো ইলহা? মা হিসেবে আমি তোমার কাছে কি চেয়েছিলাম বলতো? শুধু চেয়েছিলাম তুমি তোমার বাবার কথা মেনে নাও। আমাদের ভঙ্গুর সম্পর্কটা গুছিয়ে দাও। তোমার দ্বারা সেটুকুও হলো না। এখন কেন এসেছো? সর্বহারা আমাকে দেখে শান্তি কুড়াতে এসেছো?”

বরফ শীতল স্বরে কথাগুলো বললো সাথী। প্রতিটি কথা চাবুকের ন্যায় শানিত প্রহার করছিলো ইলহার হৃদয়ে। কাঁপা স্বরে শুধালো,
“ওই তাসের ঘর বাঁচাতে তুমি আমাকে বলি হতে বলছো মা? কোন সুখের নেশায় তুমি আমাকে শেষ হতে বলছিলে? ওই লোকটা যার কাছে তুমি পন্য ছাড়া আর কিছু নও, তার জন্য আমাকে দোষাচ্ছো?”
“ভুল কি বলেছি? আজ যদি তুমি তোমার বাবার কথা মেনে নিতে আমার পরিস্থিতি কি এমন হত? নিজের স্বার্থপরতায় আজ আমাকে শেষ করেছো তুমি?”

ইলহা ভাষা হারালো। ঝাপসা হয়ে উঠলো দৃষ্টি। আঁখিযুগলের প্রান্তরের বিষাদসিন্ধু আড়াল করে নিলো সে নিপুন ভাবে। খুব ঠান্ডা স্বরে বললো,
“হ্যা, মা। আমি স্বার্থপর। কারণ আমি তোমার মত সুখী হতে চাই নি। জানো মা, আমার মনে খুব অপরাধবোধ ছিলো। আমি নিজের সুখ খুজতে তোমাকে নরকে ফেলে এসেছি। কিন্তু আজ গ্লানিটা অনেক কমে গেছে। আমিও মা হতে চলেছি মা। প্রতিটা মুহূর্তে আমি অনুভব করি একটা প্রাণের জন্য কতটা কষ্ট করতে হয়। কিন্তু একই সাথে এক অদ্ভুত টান অনুভূত হয়। আমি তার জন্য পৃথিবীর সাথে লড়তে পারবো। আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ সে। আমি কখনোই চাইবো না সে বিন্দুমাত্র কষ্ট পাক। মাতৃত্ব মানে বোধ হয় এটাই। আচ্ছা মা, আমার জন্য তোমার বিন্দুমাত্র টান অনুভূত হয় না? ওই লোকটা যখন দিনের পর দিন আমাকে মারতো, আমার উপর নির্মম মানসিক, শারীরিক অত্যাচার করতো তোমার কষ্ট হতো না?”
“সে তোমাকে শাসন করার অধিকার রাখে, তোমার বাবা সে। তুমি দিনের পর দিন তার অবাধ্য হবে আর সে মেনে নিবে? তুমি যদি ভালো বাধ্য মেয়ে হতে সেও তোমাকে ভালোবাসতো”
“আর তোমাকে সে মারতেন? তার বেলায়? সবার সামনে তোমার গায়ে হাত তুলতো তার বেলায়?”
“সেটাও আমার প্রাপ্য। আমি তোমাকে মানুষ করতে পারি নি। তোমার জন্যই আমাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। আর তোমার বাবা তো ভুল নন, একটা দোকানীকে বিয়ে করলে, লাভ কি হলো? রাজরাণী হয়ে থাকতে ওই বাড়িতে, সেখান থেকে ভিখারিনী হয়ে গেলে। আর আমাকেও একটা অসহনীয় জীবন দিলে”

কঠিন স্বরে উত্তর দিলেন সাথী। ইলহা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। দীর্ঘশ্বাসের সাথে মুক্ত করে নিলো অন্তঃস্থলের গ্লানি। উঠে দাঁড়ালো সে। মৃদু স্বরে বললো,
“তুমি কখনো ভালো পুরুষ মানুষ দেখোই নি মা। পুরুষের শক্তি নারীর উপর দেখানোকে পুরুষত্ব বলে না। আমার স্বামীকে কখনো দেখলে বুঝতে স্বামীর অর্থটা কেমন হয়। আসছি মা। আমি স্বার্থপরই ভালো, শেষজীবনটা একাকীত্বে কাটানোর চেয়ে সারাজীবন ভিখারিনী হওয়া ঢের ভালো”

ইলহা অপেক্ষা করলো না। বেরিয়ে গেলো কেবিন থেকে। আগামী সপ্তাহ থেকে তার ম্যাটার্নিটি লিভ শুরু হবে। শারীরিক অবস্থার জন্য খুব দ্রুত ই এপ্ল্যাই করেছে সে। সেই ফাঁকে বিসিএসের পড়াটাও শেষ করার ইচ্ছে। আর হয়তো মায়ের সাথে দেখা হবে না। হ্যা সে স্বার্থপর সন্তান। কিন্তু কেন এই স্বার্থপরতায় গ্লানি হচ্ছে না? ইলহা কেবিনের চেয়ারটায় গা এলিয়ে দিলো। চোখ বেয়ে নেমে এলো জমাট কষ্ঠকুপ।

*******

পুলিশ স্টেশন থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ বাড়ি ফিরছে রাশাদ। ধরণী জুড়ে তখন মৌন তমসামেলা। দূরের শেয়ালের ডাক কানে আসছে। ঝিঝিপোকার শব্দ মিলিয়ে যাচ্ছে সমীরণে। মোটর সাইকেলটার হেডলাইটের আলোতেই যা নজরে পড়ছে। মাটির রাস্তায় চাকার দাগ পরে যাচ্ছে। রাশাদের মোটরসাইকেলের শব্দ শুনতেই হুমায়রা গামছা নিয়ে বেরিয়ে এলো। গাড়িটা রেখে, কল পাড়ে গেলো ভাইজান। হাতমুখ ধুয়ে বললো,
“খাবার দে”
“তুমি থানায় গেছিলে?”
“হ্যা”

ছোট করে উত্তর দিলো রাশাদ। হুমায়রা উদ্বিগ্ন স্বরে বলল,
“কেনো ডেকেছিলো তোমায়?”
“সাধারণ জিজ্ঞাসাবাদ। আর কিছু না”

হুমায়রার মন উশখুশ করছে। রাশাদ এগিয়ে গেলেও আবার পিছু ফিরলো। স্মিত স্বরে হুমায়রার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
“চিন্তা করিস না, কিছু হবে না”

বলেই ভেতরে চলে গেলো সে। হুমায়রা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। হঠাৎ পাতার শব্দ শোনা গেলো। ঝোঁপের দিকটা অন্ধকার বেশি। কেউ দাঁড়িয় থাকলেও বোঝার উপায় নেই। হুমায়রার নজর সেখানে গেলো। কিন্তু তার পূর্বেই মানুষটা সরে পড়লো। হুমায়রা মনের ভুল ভেবে ভেতরে চলে গেলো। মানুষটি অপেক্ষা করলো সঠিক সময়ের।

****

দুদিন বাদে পুলিশ এলো তল্লাশীতে। সারা বাড়ি তল্লাশী করে অবশেষের পুকুরের পাশের ঝোঁপের গর্তে পাওয়া গেলো একটি রক্তমাখা চাইনিজ চপার…………

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here