#গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি
#পর্ব১৩
#Raiha_Zubair_Ripti
বিছানায় উপর হয়ে শুয়ে আছে রোহান। মাথায় ব্যান্ডেজ। মাথায় ঠিক পেছন দিকটায় বারি খাওয়ার দরুন ফে’টে গেছে। পাশেই রোহানের চ্যালা রবিন বসে আছে। রবিন এসেছে ভার্সিটির খবর দিতে। দু’দিন পরই রুয়াত দের ডিপার্টমেন্ট কুয়াকাটা যাবে। কথাটা শুনেই রোহান শোয়া থেকে উঠে বসে। পিঠের নিচে বালিশ টা দিয়ে আধশোয়া হয়ে বলে-
-“ রুয়াত যাবে?
-“ জানি না ভাই।
-“ খোঁজ নিস তো।
-“ আপনিও কি এই শরীর নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান করছেন ভাই?
রোহান রবিনের পিঠে থাপ্পড় দিয়ে বলে-
-“ ব্রিলিয়ান্ট হয়ে গেছিস।
রবিন হেঁসে উঠলো। আর তখনি দরজা খুলে কেউ হুড়মুড়িয়ে রুমে ঢুকে। রোহান পাশ ফিরে তাকায়। নীতি এসেছে। নীতির মুখ টা দেখেই বিরক্তি তে চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো। নীতি রোহানের পাশে বসলো। রোহানের মাথার ব্যান্ডেজের দিকে কিয়ৎ ক্ষন তাকিয়ে থাকলো। কেমন কান্না পাচ্ছে তার। মানুষ টা একটু আঘাত পেলে আর সেটা নীতির কানে আসলে নীতির সারাটা দিন ছটফট করতে করতে যায়।
-“ সাবধানে চলতে পারেন না রোহান ভাই আপনি? যদি মাথা টা ফেটে দু ভাগ হয়ে যেত?
রোহান গম্ভীর কন্ঠে বলল-
-“ ম’রে যেতাম।
নীতি রেগে উঠলো। কন্ঠে ঝাঁঝ এনে বলল-
-“ ম’রার খুব শখ আপনার? কি দরকার এসব ঝুটঝামেলা তে থাকার?
-“ আমার ইচ্ছে।
-“ সব তো আপনার ইচ্ছের উপরই ছেড়ে দিছি। সকালে ঔষধ খেয়েছেন?
-“ না।
-“ ঔষধ কোথায়?
-“ ঔষধ দিয়ে তুই কি করবি?
-“ আপনাকে গিলাবো। বলেন ঔষধ কই?
-“ ফেলে দিছি।
-“ আশ্চর্য ফেলে দিছেন কেনো?
-“ আমার ইচ্ছে।
-“ আপনি বড্ড ঘাড়ত্যাড়া জানেন?
-“ জানি। একা এসেছিস?
-“ না ভাইয়া এসেছে।
কথাটা বলতে না বলতেই নেহাল রুমে প্রবেশ করে। রোহান নীতির দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ এসেছিস যখন কাজ কর। কফি বানিয়ে নিয়ে আয়।
নীতি বাধ্য মেয়ের মতো রান্না ঘরে চলে যায় কফি বানাতে।
নেহাল হাতের ফোন টা বিছানায় রেখে বসতেই রোহান বলে-
-“ ওরে নিয়ে আসছিস ক্যান?
-“ খুব দেখতে চাইছিলো তাই নিয়ে আসলাম।
-“ আবার যাবে কবে?
-“ সমস্যা কি তোর রোহান। আমার বোনের সাথে এমন করিস ক্যান? ও কি এসে তোর বাড়িতে থাকে? নাকি তুই খাওয়াচ্ছিস। যে এ শহরে আসলেই তুই শুধু জিজ্ঞেস করিস যাবে কবে।
-“ আচ্ছা রাগ করিস না। একটু সামলিয়ে রাখিস তোর বোন কে, সামনে বিয়ে করলে যেনে এসে না বলে রোহান ভাই আপনি বিয়ে কেনো করছেন।
নেহাল অন্য দিকে মুখ ঘুরালো। নীতি কফির ট্রে নিয়ে আসলো। তিনজনের হাতে দিয়ে রোহানের উদ্দেশ্যে বলল-
-“ রোহান ভাই রাতে কি খাবেন? বলেন রেঁধে দিয়ে যাই।
নেহালের রাগ হলো বোনের উপর। এতো যেচে রোহানের কাজ করে দিতে হবে কেনো? ধমক দিয়ে বলে উঠল-
-“ তোকে বলছে রোহান রান্না করার কথা?
-“ না।
-“ তাহলে আগ বাড়িয়ে এতো সাহায্য করতে চাইছিস কেনো?
-“ এটা কেমন কথা ভাইয়া। অসুস্থ মানুষ তাকে একটু হেল্প করবো না?
-“ না তোর করা লাগবে না। দেখা শেষ এবার বাড়ি চল।
-“ আসলামই তো কেবল। আর একটু থাকি না। রোহান ভাই আর একটু থাকি?
রোহান ঠোঁট কামড়ে বলে-
-“ না বাসায় চলে যা। তোর হেল্প করতে হবে না আমায়।
নেহাল বসা থেকে উঠে নীতির হাত ধরে বলল-
-“ চল বাসায় যাব।
রোহান তাকিয়ে রইলো নেহালের দিকে। নেহাল নীতি কে নিয়ে চলে গেলো। রবিন নেহালের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ নেহাল ভাই কি রেগে চলে গেলো?
রোহান আয়েশ করে শুয়ে বলে-
-“ যাক রেগে। কয়েক ঘন্টা গেলেই রাগ কমে যাবে।
-“ নীতি আপু মনে হয় পছন্দ করে আপনাকে ভাই।
রোহান তাকালো রবিনের পানে।
-“ সত্যি?
-“ না ভাই আন্দাজে বললাম। দেখেন না কেমন ছুটে ছুটে আসে আপনাকে দেখতে।
-“ পাগল, তাড় ছিঁড়া মহিলা। ছোট থেকে জ্বালিয়ে খেলো।
নেহাল গেট অব্দি গিয়ে ফিরতি এসেছে। ফোন টা রেখে গেছে সেটা নিতে। কিন্তু দরজা অব্দি এসে রবিন আর রোহানের কথা শুনে দাঁড়িয়ে গেলো। রোহানের কাছে তার বোন এমন নিচু পর্যায়ে চলে গেছে! ভালোই না হয় বেসে এতো কেয়ার করে তারজন্য পাগল তাড় ছিঁড়া বলবে! নেহাল নীরবে রুমে ঢুকে ফোন টা বিছানা থেকে তুলে নেয়। রোহান তাকায়। তারপর চোখ বন্ধ করে ফেলে। নেহাল রোহানের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ আজ যাকে এতো তাচ্ছিল্য করছিস। দেখিস সময়ের ব্যবধানে না আবার তার কাছে গিয়েই দাঁড়াতে হয়।
রোহান চোখ মেলে তাকালো সহসা। ততক্ষণে নেহাল চলে গেলো।
নীতি ভাই কে আসতে দেখে রাগ করে বলল-
-“ আর একটু থাকলে কি হতো ভাই?
নেহাল দাঁতে দাঁত চেপে বলল-
-“ মা’ডার হয়ে যেত।
নীতি অবুঝের ন্যায় বলল-
-“ কার মা’ডার হয়ে যেত ভাই?
-“ তোর গাধির বাচ্চা। আর একবার যদি তোরে রোহানে কাছে আসতে দেখছি তো কষিয়ে চড় লাগাবো।
নীতি মুখ ভেঙচি দিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। নেহাল গাড়ি স্টার্ট দিলো। গাড়ি চালিয়ে কিছুটা দূরে যেতেই আকস্মিক এক মেয়েকে দৌড়ে গাড়ির সামনে আসতে দেখে তাড়াতাড়ি করে গাড়ির ব্রেক কোষে।
এমনি তে রেগে ছিলো। এমন এক ঘটনা ঘটায় রাগ টা হুড়হুড় করে মাথায় চেপে বসলো। বিশ্রী রকমের একটা বকা দিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে সাদা এপ্রন পড়া একটা মেয়ে বিড়াল ছানা কে কোলে তুলে নিচ্ছে।
নেহাল রেগে বলল-
-“ এই মেয়ে ম’রার জন্য আর জায়গা পাও না? আমার গাড়ির সামনে এসেই ম’রতে হবে?
সানজিদা বিড়াল ছানা টাকে কোলে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। মিনমিন করে বলল-
-“ সরি আঙ্কেল আসলে আমি খেয়াল করি নি। ও দৌড়ে চলে আসছিলো তো তাই নিতে এসেছি।
নেহাল নিজের দিকে তাকালো। তাকে আঙ্কেলের মতো লাগছে! এই মেয়ে কি তাকে দেখেছে চোখ তুলে? কোন এঙ্গেল দিয়ে তাকে আঙ্কেল বলে?
নীতি গাড়ি থেকে সানজিদার বলা কথাটা শুনে হেঁসে ফেললো। নেহাল চোখ রাঙিয়ে তাকালো।
নীতির হাসি থেমে গেলো। নেহাল ধমক দিয়ে বলল-
-“ এই মেয়ে আঙ্কেল কাকে বলছো? আমাকে তোমার আঙ্কেল মনে হয়?
সানজিদা চোখ তুলে তাকালো।
-“ মনে হয় আমাকে আঙ্কেল?
সানজিদা ডানে বামে মাথা ঘুরালো।
-“ তাহলে আঙ্কেল ডাকলে কেনো?
-“ আপনাকে খেয়াল করি নি ভাইয়া। এগেইন সরি।
নেহাল চলে আসলো। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে গেলো। সানজিদা বিড়াল ছানা টাকে নিয়ে চলে আসলো মেডিক্যাল কলেজে।
—————————–
সন্ধ্যার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ের আগমন হলো। রুয়াত শ্বাশুড়ির সাথে রাতের রান্না করছে। শাফায়াত ল্যাপটপ টা নিয়ে ড্রয়িং রুমে এসে গলা ছেড়ে রুয়াতের উদ্দেশ্যে বলল-
-“ এক কাপ কফি দিয়ে যান তো রুয়াত।
রুয়াত ভাতের মাড় গালতে দিয়ে কফিটা বানিয়ে নিলো। তারপর রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে কফিটা শাফায়াত এর হাতে ধরিয়ে দিলো। সাদমান হাই তুলতে তুলতে শাফায়াত এর পাশে এসে বসলো৷ শাফায়াত কফির মগ টা নিয়ে ধন্যবাদ জানালো। রুয়াত চলে গেলো। সাদমান শাফায়াত কে বউয়ের সাথে এতো ফর্মালিটি করতে দেখে বলল-
-“ আশ্চর্য ব্রো তুমি রুয়াতের সাথে এতো ফর্মালিটি মেইন্টেইন করো কেনো?
শাফায়াত কফির মগে চুমুক দিয়ে বলে-
-“ কি করলাম?
-“ এই যে আপনি,থ্যাংকস,আসুন,দিন। এসব কি?
-“ কি এসব?
-“ তুমি এখনও আপনিতেই থেমে আছো? বউ কে কেউ আপনি বলে?
-“ তুমি করে বলতে বলছিস তাহলে?
-“ অবশ্যই।
-“ আচ্ছা চেষ্টা করবো।
-“ বাহ্ তর্ক ছাড়াই মেনে নিলে যে? ব্যপার কি?
-“ বড্ড প্রশ্ন করিস তো তুই।
-“ আচ্ছা আর করবো না প্রশ্ন।
শারমিন বেগম রান্না ঘর থেকে খাবার নিয়ে টেবিলে সাজালেন। সোফায় বসা শাফায়াত এর দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ শাফু শোন।
শাফায়াত মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ হু বলো।
-“ তোর দাদা ভাই ফোন দিয়েছিলো আজ। সে রুয়াত আর তোকে দেখতে চায়। যেতে বলছে গ্রামে। নেক্সট উইক যেতে পারবি?
-“ এই উইকেই তাহলে যাই। ভার্সিটি থেকে ওদিকেই যাচ্ছি দিন কয়েকের জন্য। ওখান থেকেই চলে যাব।
শারমিন বেগম ভ্রু কুঁচকালো।
-“ কোথায় যাবি?
-“ কুয়াকাটা।
-“ একা?
-“ না উনিও যাবে।
-“ উনি টা কে?
সাদমান হতাশ হলো।
-“ উনি টা কে তুমি বুঝো নি খালা মনি? রুয়াত কে বুঝিয়েছে।
-“ বউ কে যদি কেউ উনি বলে সম্বোধন করে তাহলে কে বুঝবে বল।
-“ সেটাও ঠিক। তোমার ছেলেটার নাম শাফায়াত ইমতিয়াজ নোয়াস রেখেছো কেনো? নাম রাখা উচিত ছিলো, নিরামিষ ইমতিয়াজ রসকষহীন কাঠখোট্টা।
শাফায়াত রাগী চোখে তাকালো। সাদমান পাত্তা দিলো না। শারমিন বেগম ভেজে রাখা স্ন্যাকস গুলো রুয়াতের হাতে দিয়ে বলল-
-“ অনেক কাজ করেছো বাকি টুকু আমি করে নিবো। তুমি গিয়ে ওদের পাশে বসো। সানজিদা কে পাঠিয়ে দিচ্ছি আমি।
রুয়াত স্ন্যাকস এর বাটি নিয়ে শাফায়াত দের পাশে বসলো। কিছুক্ষণ পরে সানজিদা ও যোগ হলো। রুয়াত স্ন্যাকস এর বাটি টা শাফায়াত দের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে-
-“ নিন খান।
শাফায়াত এসব স্ন্যাকস খুব কমই গিলে। সে খেলো না। সাদমান খাওয়া শুরু করলো। রুয়াত ভ্রু কুঁচকে বলল-
-“ আপনি খাবেন না?
শাফায়াত কে বলার সুযোগ না দিয়ে সাদমান বলে উঠে –
-“ তোমার নিরামিষ সাহেব এসব একটু কম গিলে রুয়াত। তাই জোর করো না আমাদের ভাগে কম পড়ে যাবে।
শাফায়াত সাদমানের উপর বিরক্ত হয়ে চলে গেলো রুমে। সাদমান স্ন্যাকস মুখে দিয়ে রুয়াতের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে-
-“ রুয়াত ব্রো মেবি রেগে গেছে। যাও উপরে।
-“ আমি?
-“ তো আমি যাব?
-“ আচ্ছা যাচ্ছি। আচ্ছা ভাইয়া আপনার ভাইয়ের মুখে কি আম্মা মধু ঢালেন নি জন্মের পর?
-“ আরে ভাবি ভাইয়া তো সুইটস লাইক করে না ছোট থেকেই। মা বলেছিল মধু মুখে দিতে না দিতেই নাকি ভাইয়া বু’মি করে দিয়েছিল।
রুয়াত তাকালো সানজিদার দিকে।
-“ এর জন্য ই মিষ্টি কথা বের হয় না তোমার ভাইয়ের মুখ দিয়ে তাই না?
-“ হ্যাঁ কাঠখোট্টা মানুষ। সব সময় মুখ টারে পেঁচার মতো করে রাখে।
রুয়াত বসা থেকে উঠে নিজের রুমে চলে আসলো। রুমে ঢুকে দেখলো শাফায়াত বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে। রুয়াত পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। শাফায়াত রুয়াতের উপস্থিতি টের পেয়েও তাকালো না। রুয়াত তাকালো শাফায়াত এর দিকে।
-“ স্যার শুনুন।
শাফায়াত বিরক্তিকর চোখে তাকালো।
-“ আম্মা বললো গ্রামে যাওয়ার কথা। আপনাদের গ্রাম টা কোথায়?
-“ পটুয়াখালী।
-“ আচ্ছা স্যার আপনাদের গ্রামের বাড়ি কে কে আছে?
-“ বড় কাকা,ফুপি,তাদের ছেলেপেলে,দাদা দাদি সবাই।
-“ ওহ্ আচ্ছা। আচ্ছা স্যার জবা টা কে?
শাফায়াত অনেক টাই বিরক্ত হলো এই স্যার স্যার ডাক শুনে। বৃষ্টি দেখার মুড নষ্ট করে দিয়েছে এই মেয়ে। শাফায়াত কে চুপ থাকতে দেখে রুয়াত ফের বলে উঠলো-
-“ স্যার চুপ কেনো?
শাফায়াত রাগী চোখে তাকালো৷ দাঁত চেপে বলল-
-“ হোয়াটস মিন স্যার? এটা ভার্সিটি নাকি ক্লাসরুম?
-“ বেডরুম।
-“ তো স্যার স্যার বলে মাথা খাচ্ছো কেনো?
-“ অভ্যাস।
-“ চেঞ্জ করো অভ্যাস।
-“ আচ্ছা এখন বলুন না জবা টা কে। ও আছে গ্রামে?
-“ আমার কাজিন। ফুপির মেয়ে।
-“ বেশ সুন্দরী তাই না?
-“ হ্যাঁ।
-“ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছন তাকে তাই না?
-“ খুঁটিয়ে দেখতে যাব কেনো? ছোট থেকে চোখের সামনে বড় হতে দেখছি নজরে এসেই যায়।
-“ আমি আপনার বউ । আপনার নজরে এসেছি আমি?
শাফায়াত বাঁকা চোখে তাকালো।
-“ নজরে আসতে চাও?
-“ অবশ্যই।
-“ সামলাতে পারবে তখন?
-“ কেনো পারবো না? অবশ্যই পারবো।
-“ সময় বলবে সে কথা।
শাফায়াত রুমে চলে আসলো। রুয়াত ও পেছন পেছন রুমে আসলো। অবাক হওয়ার ভান করে বলল-
-“ এখন একটা জিনিস খেয়াল করলাম জানেন?
-“ কি?
-“ রুমে আসার পর একটুর জন্য ও আপনি করে কথা বলেন নি! বাহ্ বেশ চেঞ্জ তো।
-“ আরো চাও চেঞ্জ?.
-“ সে আর বলতে?
-“ আচ্ছা।
-“ কি আচ্ছা?
-“ কিছু না। এ বাড়ি আসার পর তো আমি তোমাকে একবারের জন্য ও পড়তে বসতে দেখলাম না। বই খাতা তো আনা হয়েছে।
-“ আশ্চর্য বিয়ের চার দিন হলো মাত্র । এরমধ্যে কোন বিবাহিত মেয়ে পড়তে বসে? কয়েক সপ্তাহ যাক ঘুরে আসি তারপর পড়তে বসবো।
-“ বেশ মনে যেনো থাকে।
-“ আমার স্মৃতি শক্তি বেশ ভালো। ভুলি না কিছু সহজে।
-“ আচ্ছা বেলকনিতে দরজা টা লাগিয়ে দাও বৃষ্টির পানি ছিটে রুমে আসছে।
-“ আমি বৃষ্টি দেখবো। দরজা লাগালে দেখবো কি ভাবে?
-“ জানালা দিয়ে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দেখলে ভিজে যাবে।
-“ চেঞ্জ করে নিব ভিজে গেলে।
-“ ঠান্ডা লাগবে।
-“ ঠান্ডা লাগলে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবেন। নাকি ঠান্ডা লাগলে বউয়ের পেছন টাকা ঢালতে হবে সেজন্য ভয়ে না করছেন।
শাফায়াত আশেয় করে সোফায় বসে বলল-
-“ বউয়ের পেছন টাকা ভাঙার মতো টাকা পয়সা আলহামদুলিল্লাহ শাফায়াত ইমতিয়াজ নোয়াসের আছে।
-“ বাহ্ বড়লোক জামাই আমার।
-“ উমমম হই নি এখনও বড়লোক।
-“ যে লোক বউয়ের পেছন টাকা ভাঙায় কৃপণতা করে না সে ব্যক্তি নিঃসন্দেহে বড়লোক।
-“ কে বলেছে এ কথা?
-“ আমি নিজেই নিজেকে বলে প্রাউড ফিল করাচ্ছি। যে আব্বা আমার জন্য সুপাত্র ই সিলেক্ট করেছে।
-“ সুপাত্র কে আমি?
-“ আমার বিয়ে টা কি তাহলে অন্য কারো সাথে হয়েছে আপনি বাদে?
-“ আমি মোটেও সুপাত্র নই।
-“ আশ্চর্য প্রশংসা করছি আপনার,আর আপনি যেচে নিজেকে বলছে আপনি সুপাত্র নন!
-“ হুম। সত্যি বললাম।
-“ আচ্ছা চলেন কালবৈশাখীর ঝড়ের বৃষ্টি দেখি বসে।
-“ বৃষ্টি দেখার কি আছে?
রুয়াত বেলকনিতে যেতে যেতে বলে-
-“ সাদমান ভাইয়া ঠিকই বলেছে আপনার নাম পাল্টে নিরামিষ ইমতিয়াজ রসকষহীন কাঠখোট্টা রাখা উচিত। খাবারে বেশি বেশি আমিষ খাবেন।
কথাটা বলে প্রতিত্তোরে শাফায়াত এর কোনো রেসপন্স না পেয়ে পেছন ফিরে দেখে শাফায়াত তার ঠিক পেছনে দাঁড়ানো। রুয়াত আকস্মিক পেছনে দেখে চমকে যায়। বুকে ফু দিয়ে বলে-
-“ ভয় পাইয়ে দিয়েছেন। শব্দ করে আসতে হয় তো।
শাফায়াত কেমন একটা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে রুয়াতের দিকে। রুয়াত শাফায়াত কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সামনে তাকালো। এমন ভাবে তাকানোর কি আছে? আর কথা বলছে না কেনো? রুয়াত আড় চোখে তাকিয়ে শাফায়াত কে সেই দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভ্রু নাচিয়ে বলে-
-“ এমন ভাবে তাকায় আছেন কেনো? এই দৃষ্টি তো ভালো না। মতলব কি?
শাফায়াত দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। বিরবির করে ইডিয়ট বলে পাশ থেকে রশিতে ঝুলানো টাওয়াল টা নিয়ে চলে গেলো।
( প্রথম পর্বে আমি বলেছিলাম শাফায়াত রুয়াতের ভার্সিটির প্রফেসর। আমি ভেবেছিলাম প্রফেসর আর লেকচারারার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য। নেই কয়েক জন আপু আমার ভুল টা ধরিয়ে দিছে। থ্যাংকস তাদের। আমি আমার গল্পে প্রফেসর টা এডিট করে লেকচারার দিয়েছে। যারা কপি করেছেন তাদের বলবো এডিট করে দিতে। কারন আমি আমার গল্পে আমি এডিট করে দিয়েছি। যারা কপি করে এডিট করে দিবেন না, পাঠক রা যদি দু জায়গায় দু রকম লেখা দেখা তাহলে তার দায়ভার আমি নিব না। আমি কাউকে অনুমতি দেই নি আমার লেখা কপি করার জন্য। আই হোপ বিষয় টার দিকে খেয়াল রাখবেন।)
#চলবে?
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/