ভালোবাসা_তারপর #পর্ব:২৪ #তামান্না_শাহরিন_শশী

0
233

#ভালোবাসা_তারপর
#পর্ব:২৪
#তামান্না_শাহরিন_শশী

কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত।

অনুমতি ব্যাতিত কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

রোদসীকে চলে যাওয়া দেখার পরেই উচ্ছ্বাস কোনো মতো পকেট হাতড়ে ফোন বের করে শব্দকে কল দিয়ে এলোমেলো পায়ে বাহিরের দিকে হেঁটে আসে। শব্দ কল রিসিভ করতেই উচ্ছ্বাস ভাঙা ভাঙা ভাবে বলে,

“ভাই আমার বউকে মাত্র দেখেছি।”

“কি বলছিস? কই তুই?”

“হাসপাতালে। ওর সাথে একটা ছেলে আর বেবিও ছিলো। মাত্রই ছেলেটার সাথে বেড়িয়ে গেলো আমি আগাতে গেলেই হারিয়ে গেলো।ও বোধহয় বিয়ে করে নিয়েছে। কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।”

“আচ্ছা তুই দাঁড়া আমি আসছি।”

“তোর আসতে হবে না। আমিই তোর কাছে আসছি।”

———–

“ও কি তাইলে আমার সাথে চিট করছে! তাই বাসা থেকে পালানোর পরে ওকে আমি খুঁজে পাই নি।

“তুই শিওর কি করে যে তোর বউ তোকে চিট করেছে? বিয়ের আগে বা বিয়ের পর এমন কিছু দেখেছিস?”

“আমার জানামতে বিয়ের আগে এমন ছিলো না ওর লাইফে কেউ।তবে আমি নিজের চোখে দেখেছি। ওর সাথে একটা লোক ছিলো আর তার কোলে একটা বাচ্চা ছিলো।”

“তাহলে তুই সামনে যাসনি কেনো?”

“অনেক ভীড় ছিলো। আমি পিছন থেকে দেখেছি। সামনে দিকে যেতে যেতে হারিয়ে গেলো ওরা।”

“হুম বুঝেছি। তুই এক কাজ কর হাসপাতালে গিয়ে খবর নে ভালো মতো।আর দেখ তোর বউয়ের সাথে লোকটা আর বাচ্চা টা কে বা কার ছিলো।আগে খবর নিয়ে পরে জাজ কর।”

উচ্ছ্বাস সাথে সাথে শব্দের দিকে তাকালো। এই কথাটা তার মাথায় আসে নি। তারপর উচ্ছ্বাস শব্দের থেকে বিদায় নিয়ে তাৎক্ষণিক ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।

———-

হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রোদসী কেমন চুপটি করে রিন্তীহাকে কোলে নিয়ে বসে আছে। তাই সাঈফ বললো,

“তাবাসসুম পার্কে বসবে?”

রোদসী সাঈফের দিকে তাকালো সাইফের কথা শুনে। সাঈফ ধীরে বললো,

“তোমাকে দেখে মনে হলো তোমার মন খারাপ তাই বললাম আর কি।”

রোদসী মাথা নেড়ে বলে,

“আমি ঠিক আছি। পার্কে বসবো সমস্যা নেই।”

সাঈফ সম্মতি জানিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলো। গন্তব্য তাদের এখন আপাতত পার্কে।

——

হাসপাতালের রিশিপশনে গিয়ে তড়িঘড়ি করে উচ্ছ্বাস পৌঁছালো।

“এক্সকিউজ মি।”

রিসিপশনের মেয়েটি উচ্ছ্বাসের পানে চাইলো। উচ্ছ্বাসকে কেমন পাগলাটে লাগছে তবুও মুখে হাসি ফুটিয়ে মেয়েটি বললো,

“ইয়েস স্যার। হাউ ক্যান আই হেল্প ইউ?”

“আমার একজনের ব্যাপারে জানার ছিলো বলতে হয়তো প্রেসেন্ট হবে।আপনি কি একটু বলতে পারবেন, আমাকে সাহায্য করতে পারবেন?”

মেয়েটি এবার সিরিয়াস মুখে উচ্ছ্বাসের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। তারপর বলে,

“সরি স্যার। এটা আমাদের নিয়মের বাহিরে আমরা আপনাকে কারো ব্যাপারে বলতে পারবো না বা কোনো রিপোর্ট দেখাতে পারবো না। এটা আমাদের হাসপাতালের কতৃপক্ষ জানলে আমার সমস্যা হবে। ”

বলেই মেয়েটি ঘুরে কম্পিউটারে কাজ করতে শুরু করলো। তবুও উচ্ছ্বাস নিজেকে শান্ত রেখে বলে,

“আচ্ছা রিপোর্ট দেখাতে হবে না। আপনি জাস্ট একটু বলুন তো সকাল থেকে এখন পর্যন্ত রোদসী তাবাসসুম নামের কোনো মেয়ে এসেছিলো? সাথে একটা লোক আর বাচ্চা’ও ছিলো?”

মেয়েটি এবার আবারো উচ্ছ্বাসের দিকে তাকালো তারপর বললো,

“আপনাকে কতবার বলবো? হাসপাতালে প্রেসেন্ট দের খবর আমরা বাহিরে বলি না,এটা নিয়মের বাহিরে। তবে আপনি অনুমতি আনতে পারলে আমরা ব্যাপারটা বিবেচনা করে বলতে পারি।”

উচ্ছ্বাসের মেজাজ আরো খারাপের দিকে যাচ্ছিলো তবুও সে যার কাছে কাউন্সিলং করছে তাকে কল দিয়ে বলে, রিসিপশনে থেকে আমি একজনের ব্যাপারে জানবো আপনি একটু উনাকে বলে দিন তো। লোকটা মেয়েটির সাথে কথা বললো মেয়েটিকে বুঝিয়ে দিতেই মেয়েটি সম্মতি জানিয়ে ফোন ফিরিয়ে দেয় উচ্ছ্বাসের কাছে। তারপর বলে,

“স্যার, অনুমতি দিলেও আমার কাছে কাগজ নেই তবে আমি আপনাকে কিছু ডিটেইলস দিতে পারবো। প্রেসেন্টের নাম – তাবাসসুম। তার তিন মাস আগে সি জা রে মেয়ে বেবি হয়েছে এবং আমাদের কাছে বেবির জন্মের সময়ের একটা বন্ড পেপার আছে যেটায় ডা. সাঈফ আকন সিগনেচার করেছেন। সি জা রে র সময় ইমার্জেন্সি পড়েছিলো। মেয়েটা মনে হয় স্লিপ খেয়ে পড়ে গিয়েছিলো যার কারণে প্রচুর ব্লা ড যায় এবং বেবি উল্টে যাওয়ায় তাকে ইমিডিয়েটলি সি সেকশনে করা হয়। এবং যতটুকু সার্ভেতে শো করেছে তাতে বেবির হার্টে একটা ছিদ্র আছে। যার কারণে তার বেবিকে নিয়ে কাউন্সিলিং করতে আসা লাগে। এবং আজকেও তিনি এসেছিলেন। তার বেবির চেইক আপের জন্য। এতোটুকুই তথ্য আমার কাছে আছে। ধন্যবাদ স্যার।”

উচ্ছ্বাসের মাথা কাজ করছে না। রোদসী শেষ পর্যন্ত তাকে এভাবে ঠকালো?বিয়ে করে নিলো এভাবে? আর বাচ্চাটা? মেয়েটা আসলো কিভাবে? বাচ্চাটা কার? এতো সব ভেবেই পায় না উচ্ছ্বাস। ভাবতে ভাবতে হেটে এসে পাশের ওয়েটিং রুমে থাকা চেয়ারে ধপ করে বসে পড়ে নিজের মাথার চুল আঁকড়ে ধরে। তার মাথা মনে হচ্ছে ছিড়ে যাচ্ছে। এগুলো কিভাবে করলো রোদসী? আর বাচ্চাটা? বাচ্চাটা কার?

চলবে……

ভুলত্রুটি ক্ষমা মার্জনীয়। কাল রাত থেকে শরীরটা ভীষণ খারাপ। কি লিখবো একটা শব্দ মনে পড়ছিলো না। সব গড়মিলে লাগছিলো। আজকে ছোটো পর্ব হয়েছে একটু মানিয়ে নেবার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ 💝

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here