ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ #writer_sumaiya_afrin_oishi #পার্টঃ৩৫

0
167

#ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ

#writer_sumaiya_afrin_oishi

#পার্টঃ৩৫

“লোকটি যখন হিংস্র রুপে ঐশী’র শাড়ি হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলো, ঠিক তক্ষণই ঐশী শব্দ করে কেঁদে উঠলো।লোকটি এক হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো।
ততক্ষণাৎ রুমের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো পাশের বাসার এক বয়স্ক মহিলা। রুম থেকে পুরুষালী কন্ঠ শুনতে পেয়ে,বুঝার চেষ্টা করছে কারা ভিতরে। উনি তড়িঘড়ি করে রুমের ভিতরে উঁকি দিয়ে চোখ মুখ কুঁচকে ফেললেন। “ঐশী’র শাড়ি’র আঁচল লোকটির হাতের মুঠোয়। কপালে আঘাতের কারণে র’ক্ত পড়ছে। শাড়ী এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে কিছুটা ! এমন দৃশ্য দেখে উনি বিকট শব্দে হা হুতাশ করেতে লাগলো। চিৎকার করে বলে উঠলো,

” হায় আল্লাহ গো! কি স’র্ব’না’শ হয়ে গেলো গো! কে কোথায় আছো তাড়াতাড়ি আহো। দেইখা যাও এই মাইয়া দিন দুপুরে ব্যাডা মানষের লগে কি ন’ষ্টা’মি শুরু করছে। আমি হাতে নাতে ধরছি এদের দু’জন কে। অ’প’য়া নষ্টা মাইয়া কোথাকার। বোনের বিয়েতে ও পরপুরুষ নিয়া রুমে আসে। ছিঃ! ছিঃ! না জানি আরো কত কি করে।”

-মহিলা’র এমন কথায় যেন ঐশী’র মাথায় আকাশ ভে’ঙে পড়লো। লজ্জায়, ঘৃণা’য় ম’রতে ইচ্ছে করছে তার। বাকরুদ্ধ হয়ে বরফের মতো জমে গেলো ঐশী। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে।”

” অপরপ্রান্তে থাকা লোকটির মুখশ্রী জুড়ে উৎফুল্লতা ফুটে উঠলো। যখনই মহিলাকে দেখতে পেলো আতংকিত হয়ে ধা’ক্কা দিয়ে ছেড়ে দিলো ঐশীকে। চটজলদি উঠে পালানোর চেষ্টা করছে, মুহূর্তে’ই দরজার দিকে এগিয়ে এসে পথ আঁটকে দাঁড়ালো মহিলা’টি। লোকটি আতঙ্কিত হয়ে ভয়ার্ত চেহারা নিয়ে কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। হঠাৎ মহিলার এমন বাক্যে পাংশুটে মুখশ্রী জ্বলজ্বল করছে, অধর কোণে দুষ্ট হাসি ফুটলো ।”

“মুহূর্তে’ই বাসা ভর্তি লোক জড়ো হয়ে গেলো। বিয়ে বাড়ি বলে কথা। বর পক্ষ, কনে পক্ষের লোকজন গিজগিজ করছে। পুরো বাসা ভর্তি লোক। ভরা সমাজে এমন একটা লজ্জা জনক সিচুয়েশনে পরতে হবে ঐশী’কে, কখনো চিন্তা ও করেননি। ঐশী’কে একটা ছেলের পাশে এক রুমে, মাথা নিচু করে কান্না করতে দেখে মুহূর্তে’ই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিবেশী’র কানাঘুষা। কেউ সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই গায়ে লাগিয়ে দিলো এক মিথ্যে কলঙ্কিত অপবাদ!”

“ঐশী’র পাশে দাঁড়ানো যুবকটিকে দেখে পরিচিত মানব-মানবীর চোখ যেন কোঠা থেকে বেরিয়ে আসছে। সবাই বিস্মিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মিনিট খানিক রোবটের মতো দাঁড়িয়ে রইলো। সাইফ মিনিট দুইয়ে’ক পরে অবাক কন্ঠে লোকটির নাম উচ্চারণ করলো,

“সায়েম!”

“সাইফের চোখ মুখ মূহুর্তেই রক্তিম বর্ণ ধারণ করলো। সায়েমের কাছে এসে শার্টের কলার চেপে ধরে কয়েকটা থা’প্প’ড় লাগিয়ে দিলো। সায়েম ছিটকে গিয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলো। ফের টেনেহিঁচড়ে তুললে সাইফ দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

“মানুষের স্বভাব কখনো পরিবর্তন হয়না। তুই আবার তা প্রমান করে দিলি। ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে, ভরা সমাজে সম্মান নষ্ট করলি। তোর মনে এমন কু’বুদ্ধি ছিলো। ছিঃ! তোকে ক্ষমা করাটাই ভুল হয়েছে। না হলে আজ এমন দিন দেখতে হতো না।” বলেই যেইনা আবার গায়ে হাত তুলবে। ঠিক ঐ সময় সায়েমের “মা” চেঁচিয়ে বললো,

“সাইফ!” একটা বাহিরের মেয়ের জন্য আমার ছেলের শরীরে আর একটা ও আঘাত করবে না খবরদার! দোষ শুধু আমার ছেলের একার নাকি? ঐ মেয়ে আশকারা না দিলে ছেলেরা আবার চান্স পায় নাকি। আমার তো মনে হয় এই মেয়ে’র চরিত্রে সমস্যা আছে।”

“সাইফের হাত থেমে যায়, অবাক হয়ে মামি’র দিকে তাকিয়ে রইলো। এতবড় একটা অন্যায় করার পরে-ও, একজন মেয়ে হয়ে কি ভাবে নিজের ছেলের পক্ষ নিয়ে কথা বলছে ভেবে পেলো না সাইফ।”

তার সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিবেশী কিছু মহিলারা নাক ছিটকিয়ে বললো,

“এই মাইয়া তেমন ভালো না। ছেলেদের সাথে চলা ফেরা আগে থাইকা’ই । না জানি আরো কতো পোলার লগে এসব ফ’ষ্টি’ন’ষ্টি করে বেড়ায়। আমার আগে থাইকাই এই মাইয়া সন্দেহ ওইতো ”

“আরো একজন তাছিল্য করে হেসে বললো, এই মাইয়ার বাপ মা ও কোনো খেয়াল রাখে না। মা যেমন হয় মাইয়াও তেমন হইবে!”

“আরো একজন মহিলা পান চিবাতে চিবাতে বললো, আরে দেখলি না মাস খানেক ধইরা দুই’ডা পোলা ঘরে রাখছে। যার ঘরে দুই’ডা আ’বি’য়া’ওা (অবিবাহিত) মাইয়া। বাপ মা যেমন মাইয়া বানাইবে, মাইয়া তেমন ওইবে সেমপেল (সিম্পল)!”

এরি মধ্যে চৈতী চিৎকার দিয়ে বললো, খবর’দার আর একটাও বাজে কথা বলবেন না। বেরিয়ে যান এখান থেকে।

“এ্যা! নিজের বোন ন’ষ্টা’মি করে ধরা পড়ছে তাতে কিছু না৷ আমরা কইলেই দোষ! মুখ বাঁকিয়ে বললো এক মহিলা।”

” চৈতী অবাক হয়ে দেখছে এই সমাজের মানুষ গুলো কে। একটা সময় এই মানুষ গুলোই তাদের দুই বোনের কত প্রশংসা করতো। আজ এই মানুষ গুলো এমন অদ্ভুত বানোয়াট কথা কি ভাবে বলছে। অথচ এই মানুষ গুলোর ছেলে মেয়েরা কত কৃতকর্মে করে বেড়ায়।”

“শফিকুল সাহেব এখনো বাকরুদ্ধ,উনি শুধু তাকিয়ে দেখছে সবটা। সানজিদা শেখ মুখে আঁচল চেপে চোখের পানি ফেলছে।”

“চৈতী এসে অস্হির হয়ে ঐশী কে জাপ্টে ধরলো। ঐশী চৈতীকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে উঠলো। ঐশী সাথে সমান সুরে কান্না করছে বন্ধু মহল। আলিফ, রবিনের চোখে ও পানি চিকচিক করছে। মেয়ে হলে হয়তো ওরা ও শব্দ করে কান্না করতো। বড়দের সামনে তারা স্হির হয়ে রোবটের মতো দাঁড়িয়ে আছে। এতো এতো মানুষের মধ্যে তিহান এবং রাফিনকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।”

এলাকার এক সম্মানিত ব্যক্তি সবাই কে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বললো,

“আপনাদের এসব কথা বন্ধ করুন। শফিকুল ভাইয়ের মেয়েরা এমন হতেই পারে না। এখনো আসল ঘটনা না শুনে এসব অদ্ভুত কথা বলছেন কি করে? যারা এসব বলছে আপনাদের ও ছেলে মেয়ে আছে। তাদের সঠিক ভাবে মানুষ করতে পেরেছেন তো? সবাই আপাতত চুপ করেই আছে।”

“রুম জুড়ে পিনপতন নীরবতা। নিরবতা ভেঙে এলাকার মেম্বার, “জাফর ইকবাল” ভীড় ঠেলে ঐশী’র কাছে গিয়ে নরম সুরে জিজ্ঞেস করলো,

“কি হয়েছে তোমার সাথে মা? কে এই ছেলে? তোমার সাথে কি কোনো সম্পর্ক আছে। নাকি তোমার সাথে অসামাজিক আচরণ করতে চাইছে। নির্ভয়ে বলো মা। আসল ঘটনা টা আসলে কি?”

ঐশী মুখ তুলে তাকালো। কিছু বলছে না। তার ইচ্ছে করছে ম’রে যেতে। লজ্জা, অপমান আর নিতে পারছে না।

ঐশী কে চুপ করে থাকতে দেখে এক মহিলা বললো,

“কি বলবে? নিজের কৃতকর্মের কথা। দেখেই তো ব………….. বাকিটা আর বলতে পারলো না। জাফর ইকবাল ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলো। চৈতী বোনের মাথা হাত বুলিয়ে বললো,

“চুপ করে থাকিস না বোন। বল কি হয়েছে? ঐ জা’নো’য়া’রে’র বাচ্চা তোকে কি বলেছে? তোর কপালে আঘাত লাগলো কি করে?”

“হঠাৎ ঐশী কান্না থেমে গেলো। ঘৃণা ভরা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো এই মানুষ গুলোর উপরে। যেখানে একটা মেয়েকে অসম্মান করা হয়েছে। মেয়েটা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। ভালো মন্দ না দেখে, কী ভাবে একটা মেয়েকে দোষ না করেও দোষী বানাচ্ছে এই সমাজের মানুষ গুলো। যেখানে মেয়েটাকে মানসিক ভাবে সাপোর্ট করা প্রয়োজন। সেখানে তারা আরো অদ্ভুত বানোয়াট কথা বানিয়ে মেয়েটাকে ভেঙে ঘুড়িয়ে দেয়। যারা দোষী, তারা বুক ফুলিয়ে হেসে হেসে জীবন পাড় করে মাথা উঁচু করে। একের পর এক অপরাধ, জ’গ’ন্য কাজ করে ও তারা হয় সমাজ সেবক, উচ্চ পদে মাথা উঁচু করে বাঁচে। হায়রে আমাদের দেশ! আমাদের সমাজ! সমাজের মানুষ গুলো কি অদ্ভুত! এসব ভাবতেই তাছিল্য করে শব্দ করে হেসে উঠলো ঐশী।”

“ঐশী কে এমন ভাবে এই পরিস্থিতিতে হাসতে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সবাই। মিতু কান্না জড়িতো কন্ঠে ঐশীর হাত ধরে বললো,

“চুপ করে থাকিস না ঐশী! ” বল সত্যি’টা কী? ”

ঐশী যেইনা কিছু বলবে তক্ষণি শফিকুল সাহেব উচ্চ স্বরে ক্রোধিত কন্ঠে বলে উঠলো,

“কি বলবে ঐশী? কিছু বলতে হবে না ওকে।”

সবাই শফিকুল সাহেবের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে। অবাক কণ্ঠে জাফর ইকবাল বললো,

“কেনো বলবে না?”

” যে চেনা মানুষ গুলো যখন আপনাকে নিয়ে অদ্ভুত ভয়ানক বানোয়াট কথা বলে মজা পায়। আপনি তখন সেটা মিথ্যা তা প্রমান করতে গিয়ে নিজের এনার্জি নষ্ট করবেন না। একমাত্র নীরব থাকাই তার শ্রেষ্ঠ সমাধান। কারণ, তারা জানে সত্যিটা কি। এ ধরনের কথা বলে আপনাকে শুধু মাএ দ’ম’ন করার উদ্দেশ্য। তাই তাদের মতবাদে এটা প্রমান করতে হবে না, আপনার পরিচয় কি? আপনাকে হেয় করতে তারা যে সব পদ্ধতি অবলম্বন করবে, সেগুলো তাদের কর্মের ফল হিসেবে প্রকৃতি তাকে ব্যাগ পাঠিয়ে দিবে। যেখানে সৃষ্টিকর্তা নিজে’ই বিচার করবেন। সেখানে আমরা কেন শুধু শুধু নিজেদের এনার্জি নষ্ট করে, এই ধরনের জগন্য মন মানসিক লোকদের সাথে অহেতুক কথ বলবো।”
“এধরনের মানুষ ছাড়া ও আপনার পৃথিবীতে কিছু মানুষ অবশ্যই আছে, যাদের কাছে আপনাকে ব্যাখা করতে হবে না। তারা আপনার হাজারো মিথ্যা সমালোচনা বিশ্বাস করবে না। কারণ, তারা আপনার আ’ত্মা কে ভালোবাসে। তারা অবশ্যই জানে আপনি কেমন। তেমনি আমি ও জানি আমার মেয়েরা কেমন। ঠিক সেই মানুষগুলো কে নিয়ে বাঁচতে হবে , তাদের অসম্ভব ভালোবাসতে হবে। কারণ জীবন ভয়ংকর সুন্দর! ”

“সো, আপনাদের দরকার হবে না এখান।আপনারা এখন আসতে পারেন। প্রতিবেশী’দের দিকে তাকিয়ে বললো শফিকুল সাহেব।
_____________________

“আশেপাশে যখন কোথাও রাফিন কে দেখা গেলো না। মিতু ফোন দিলো রাফিন কে। কান্না করতে করতে বললো,

“রাফিন ভাই! কই তুমি। ঐশী, সায়েম,,,,,,,, আর বলতে পারলো না মিতু। ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলো।

ঐশী, সায়েম নাম দুটো শুনে কলিজা মোচড় দিয়ে উঠলো রাফিনের। আশেপাশে’র মানুষ জনের কথার, চেঁচামেচির শব্দ পেয়ে বুঝেছে তার মায়াবিনীর সাথে খুব খারাপ কিছু ঘটেছে।
বিয়ে’তে মানুষ হিসেবে মিষ্টি কম হতে পারে বলে মনে হচ্ছে তিহানের। এজন্য তিহান কাউকে কিছু না বলে রাফিনকে নিয়ে বেড়েয়ে ছিলো মিষ্টি আনার জন্য। রাফিনের ইচ্ছে না থাকা সত্যেও তিহানের সাথে যেতে হলো। এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে সায়েম।

“মিতুর থেকে এমন খবর পেয়ে ঝড়ের বেগে ছুটে আসছে রাফিন। মনে হচ্ছিলো তার প্রাণ’টা বেরিয়ে আসছে। এিশ মিনিটের রাস্তা পনেরো মিনিটে ঝড়ের গতিতে বাইক চালিয়ে আসছে। বাজারের মধ্যে দু’জন আলাদা থাকার কারণে তিহানকে শুধু ফোন করে বলছে বাসায় আসতে, বাসায় ঝামেলা হয়েছে। তিহানের বাইক নিয়ে’ই চলে এসেছিলো রাফিন। বাসায় এসে ঐশী’র মলিন মুখ’টা দেখে বুকটা ধক করে উঠলো তার। যে ভয়টা পাচ্ছিলো সেটাই হলো। পনেরো মিনিটের মতো ভীড়ের পিছনে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। শফিকুল সাহেবর কথায় যেন ধ্যান ভাঙলো রাফিনের।

“পিছন থেকে রাফিন রাগান্বিত কন্ঠ চেঁচিয়ো বললো, দাঁড়ান আপনারা। অবশ্যই ঐশী সবকিছু বলবে,

“এই জা’নো’য়া’র জন্য আমার পবিত্র ফুলকে, সারাজীবন মিথ্যে কলঙ্কিত অপবাদ বয়ে বেড়াতে আমি দিবো না।”

“রাফিন দ্রুত ভীড় ঠেলে ঐশী’র কাছে আসলো। তার চোখ মুখ অসম্ভব লাল হয়ে আছে, রাগে থরথর করে কাঁপছে শরীর। রাফিনের এমন আচরণে অনেকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।”

“সবকিছু খুলে বলো ঐশী। প্লিজ চুপ করে থেকো না। গম্ভীর কণ্ঠে বললো রাফিন। ঐশী চোখ মুখ শক্ত করে শুরু থেকে সব বলে দিলো। সবটা শুনে রাফিন তেড়ে গিয়ে সায়েম’কে মা’র’তে শুরু করলো। সায়েম চিৎকার দিয়ে বললো,

“সব মিথ্যা বলছে এই মেয়ে। এই মেয়ে আমাকে নিজেই রুমে ডাকছে। আমার সাথে রিলেশন আছে ঐশী। নিজের দোষ ঢাকতে আমাকে ফাঁসাচ্ছে।”

“সায়েমের এমন কথায় রাফিনে রাগ যেন দ্বিগুন বেড়ে গেলো। নাক বরাবর কয়েক ঘু’সী দিয়ে গলা চেপে ধরছে। সাথে সাথে নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়ছে সায়েমের । কামাল চৌধুরী সহ তাদের পুরো পরিবার বিয়েতে উপস্থিত ছিলো। কামাল চৌধুরী নিজের ছেলে কে ছাড়িয়ে আনলো। তারপরে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

“শান্ত হও রাফিন।”

“বাবার সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে সায়েমকে ধা’ক্কা দিয়ে ফেলে দিলো। রোবটের মতো দাঁড়িয়ে আছে। শরীর অনবরত দরদর করে ঘামছে তার।”

“সায়েমের “মা” সবাইকে উদ্দেশ্য করে। ন্যাকা কান্না করে বললো,

“এই মেয়ে যে সত্যি কথা বলছে তার প্রমান কি? নিজের চরিত্রের ঠিক নেই, শুধু শুধু আমার ছেলেটা কে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।”

তার কথা ধরে প্রতিবেশী বৃদ্ধা এক মহিলা সায়েমের মা’কে কড়া গলায় বললো,

“এই মাইয়ার নাকি আফনার পোলার লগে লা’ই’ন (সম্পর্ক) আছে। আফনার পোলা নিজে কইছে। আমারা সবাই নিজ চক্ষে (চোখে) দেখছি হেরা এক সাথে ছিলো। তার চাইয়া (চেয়ে) হেগো বিয়া দিয়া দেন। এই মাইয়ার একটা মানইজজাত আছে। এই ঘটনার পরে বিয়া দেয়ন যাইবে না। আফনার পোলা’রই বিয়া করন লাগবে।”

“যার বিয়ে তার খবর নাই! পাড়া-প্রতিবেশির চোখে ঘুম নাই!”

“প্রতিবেশীরাই যেন এখন গার্ডিয়ান হয়ে গেলো। পরিবার এমনকি যার জন্য বিয়ে ঠিক করলো। তাদের কোনো মতামত নিবার প্রয়োজন মনে করছে না। আর না তাদের কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে।

“এরি মধ্যে সবাই সায়েম কে প্রশ্ন করলো, তুমি এই বিয়ে রাজি?”

সায়েম যেন আকাশে চাঁদ পেলো। এটার জন্য’ই যেন অপেক্ষা করছিলো। রাফিনের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে ততক্ষণাৎ উওর দিলো,

“হ্যাঁ আমি রাজি।”

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]

কেমন হয়েছে আজকের পর্ব জানাবেন কিন্তু সবাই। সবাই রেসপন্স করিয়েন প্লিজ! আজ সবাই মিলে ৫০০ রিয়েক্ট তুলে দিলে কালকে সকালে বোনাস পর্ব দিবো।🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here