ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ #writer_sumaiya_afrin_oishi #পার্টঃ৩৮

0
140

#ভালোবাসা_নামক_প্রিয়_অসুখ

#writer_sumaiya_afrin_oishi

#পার্টঃ৩৮

“ফজরের আযানের মধুর ধ্বনি কানে আসতেই ঘুম ভেঙে গেলো রাফিনের।চোখ মেলে তাকাতেই দেখতে পেলো ঐশী তার গায়ে হাত-পা তুলে কাচুমাচু করে বেঘোর ঘুমাচ্ছে। রাফিন মুচকি হাসলো, অপলক নয়নে তাকিয়ে রইলো তার মায়াবিনী’র ঘুমন্ত মুখশ্রী’র পানে। আজকের সকাল টা প্রিয় মানুষটার মায়াবী মুখটা দেখেই শুরু হলো। এই সকালটা একটু বেশীই স্পেশাল। ভাবতেই অধর কোণে মিষ্টি হাসি ফুটলো রাফিনের। কিয়াৎক্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে টুপ করে ঐশীর কপালে একটা ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো। তারপরে নিঃশব্দে ওয়াশরুমে গেলো ওজু করার জন্য।

রুমে এসে ঐশী’কে ক্ষীণ স্বরে ডাকলো,

“এ্যাই ঘুম পাগ’লী! আর কতো ঘুমাবে সোনা? এবার উঠো? আযান দিয়েছে নামাজ আদায় করতে হবে তো।”

কিন্তু ঐশী’র কোনো রেসপন্স নেই। রাফিন বিছানায় উঠে হালকা করে জড়িয়ে ধরে আবার বললো,

“ঘুম পাগলী বউ আমার উঠুন, উঠুন।”

ঐশী চটজলদি উঠে বসলো ঘুম ঘুম কন্ঠে বললো,

“হয়েছে টা কী আপনার? এতো সাজ সকালে ডাকেন কেনো?”

“নামাজ আদায় করে নেও। উঠো এবার, আযান দিয়ে দিয়েছে। হাতে বেশি সময় নেই। বললো রাফিন।”

“ঐশী হাই তুলতে তুলতে বললো,

“আজকে ভালো লাগছে না। কাল থেকে পড়া শুরু করবো। আর একটু ঘুমাই প্লিজ!”

রাফিন এবার গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

“নামাজ নিয়ে কোনো আহ্লাদ হবে না সোনা বউ। আমরা আমাদের নতুন জীবনের প্রথম দিনের সূচনা নামাজ পড়ে শুরু করতে চাই। দুনিয়ায় সমস্ত অশান্তি’র একমাত্র মেডিসিন হলো নামাজ। এখন থেকে নিয়মিত নামাজ আদায় করতে হবে। বলেই ঐশী কে হাত ধরে ওয়াশরুম কাছে নিয়ে আসলো।”

ঐশী আর কিছু বললো না। মুচকি হাসি দিয়ে ভিতরে চলে গেলো। দুজন মিলে নামাজ আদায় করে নিলো। নামাজ পড়ে ঐশী’র মন’টা ফুরফুরে হয়ে গেলো। ঐশী বেশ উচ্ছাস নিয়ে বললো,

“রাফিন ভাই চলুন না আমরা একটু বাহিরে যাই। এই কুয়াশার মধ্যে আপনার হাত ধরে হাঁটলে কিন্তু মন্দ হবে না।”

রাফিন ক্ষীণ কন্ঠে শুধালো,

“এই ঠান্ডায় যেতে হবে না।বাহিরে হিমশীতল বাতাস, ঠান্ডা লেগে যাবে তোমার বউ। আমরা অন্য এক সময় যাই।”

“উঁহু আজকে’ই যাবো। প্লিজ না করবেন না, আমার ভীষণ ইচ্ছে ছিলো, একটা শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল আপনার হাত ধরে হাঁটবো। এক সাথে ছন্নছাড়া হয়ে উপভোগ করবো এই মিষ্টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আর রইলো ঠান্ডা, আমার ঘরেই’তো ডক্টর আছে। ঠান্ডা লাগলে আপনি আমার যত্ন নিবেন। ক্ষীণ হেসে বললো ঐশী।

রাফিন মিষ্টি হেসে বললো,

“আচ্ছা চলুন বেগম সাহেবা! বউ যখন বায়না ধরেছে তখন না গিয়ে উপায় আছে। একমাত্র বউ আমার! তার সব রকমের ইচ্ছে পূরণ করতে আমি প্রস্তুত।”

“বিনিময়ে দুজনে”ই এক সাথে হাসলো।”

“প্রকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দুজন বেরিয়ে পড়লো। রাস্তার পাশ ধরে দুজন হাতের উপরে হাত রেখে উদ্দেশ্য’হীন হয়ে হাঁটছে। হিমশীতল বাতাস ছুঁয়ে দিচ্ছে দু’জনার শরীরে। ঠান্ডায় কেঁপে কেঁপে উঠছে ঐশী, তা দেখে রাফিন নিজের চাদরে’র মধ্যে জড়িয়ে নিলো তার মায়াবিনী কে। বিনিময়ে ঐশী তার মায়াবী হাসি উপহার দিলো।
রাস্তা পুরোপুরি জনমানবহীন,কোলাহল মুক্ত। এই সময় প্রিয় মানুষের সাথে হাঁটতে বেশ ভালোই লাগছে দুজনার। কিছুদূর গিয়ে দেখতে পেলো একটা টঙ্গের চায়ের দোকান খোলা , দুজন মিলে ধোঁয়া উঠা গরম গরম চা খেয়ে নিলো। আরো কিছু সময় ঘুরাঘুরি করে, সকালের নাস্তা সেরে রুমে আসলো।”

“সকাল নয়টা রাফিন কে থাকার জন্য বাসা খুঁজে বের করতে হবে। তাই ঐশী কে উদ্দেশ্য করে বললো,

“আমার তো বাসা খুঁজতে বের হতে হবে সোনা৷ তুমি কী যাবে আমার সাথে? থাকতে পারবে একা, কতদূরে হাঁটতে হবে কে জানে। তুমি বরং থেকে যাও এখানে।”

ঐশী আর জেদ করলো না। কতদূর হেঁটেছে এখন আর ভালো লাগছে না তার। তাই বললো,

“সমস্যা হবে না, আমি থাকতে পারবো। আপনি চিন্তা করবেন না। অনেকটা সময় হয়ে গিয়েছে এবার যাওয়া উচিত আপনার।”

রাফিন দুষ্ট হেঁসে বললো,

“ঘরে এমন সুন্দরী বউ থাকতে কী বাহিরে যেতে মন চায়। আমার তো ইচ্ছে করে সারাদিন আদর,,,,”

রাফিন আর বলতে পারলো না। ঐশী ক্রোধিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,

“দিনদিন ভীষণ নির্লজ্জ হচ্ছেন আপনি। বউ কে পরে দেখিয়েন, সে তো সারাজীবন আপনার সাথেই আছে। আগে আমাদের একটা থাকার ব্যবস্হা করতে হবে।”

“আচ্ছা স্যরি বউ! যাচ্ছি তো, তুমি সাবধানে থেকো। যে কোনো সমস্যা হলে আমাকে সাথে সাথে ফোন দিবে। খবরদার ভুলেও রুম থেকে বের হবে না কিন্তু, কেউ নক দিলেও একদম দরজা খুলবে না। আমি যখন আসবো তোমাকে কল দিয়ে বললো দরজা খুলতে তার আগে খুলবে না। মনে থাকবে?

রাফিনের এমন পাগ’লা’মি দেখে ঐশী হাসলো। হেসে’ই বললো,

“আচ্ছা ঠিক আছে, মনে থাকবে। আমি কী ছোট বাচ্চা এতোকিছু বলতে হয় বুঝি। ”

ঐশী’কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে রাফিন বললো,

” আমার যত ভয় তোমাকে নিয়ে’ই মায়াবিনী! এই শহরে মুখোশ পড়া কত ভদ্রলোক আছে। সুযোগ পেলে’ই নিজের কুৎসিত রূপটা দেখিয়ে দেয়।”

“আচ্ছা বুঝেছি আমি রুমেই থাকবো।”

“রাফিন আর কথা বাড়ালো না। উপর থেকে নরমাল দেখালেও ভিতরে ভিতরে বেশ চিন্তিতো সে।বাবার হোটেল থেকে বের হলে বুঝা যায় দুনিয়া’টা এতো সহজ না। এখানে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়। তবেই না জীবন যু’দ্ধে সফলতা আসে। সেখানে সে বেকার, নিজেই একজন স্টুডেন্ট। মাথা ভর্তি চিন্তা হলেও প্রিয় মানুষের সুখের জন্য সব কিছু তাকে করতেই হবে। সে শুধু এখন একজন স্টুডেন্ট নয়, একজন স্বামী ও। তাকে সব কিছু পারতেই হবে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো,

“আমাকে সব কিছু পারতে’ই হবে। এই সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিবো, সব পুরুষ স্বার্থে’র জন্য প্রিয় মানুষটাকে ছেড়ে যায় না। কেউ কেউ যেকোনো পরিস্থিতিতে প্রিয়জন কে সাথে নিয়ে জীবন যু’দ্ধে এগিয়ে যায়।দিনশেষে আমার মায়াবিনী’র একটু’করো হাসির কাছে সব পরিশ্রম ফিকে যায়।”

নিজেকে একটু পরিপাটি করে বেরিয়ে পড়লো রাফিন। আবার ভিতরে এসে উচ্চস্বরে ঐশী কে বলল,

“এ্যাই ঐশী মনি! জান একটু শুনে যাও?”

ঐশী চটজলদি রাফিনের কাছে এসে বললো,

“কি হয়েছে? বলুন।”

“রাফিন ঐশী’র কপালে টুকুস করে শীতল অধর ছুঁয়ে দিয়ে বললো,

” ভালোবাসি বউ!ভীষণ ভালোবাসি আমার মায়াবিনী কে।”

ঐশী বিস্মিত কন্ঠ বললো,

“এটা কি হলো? আপনি চুমু দিবার জন্য আমাকে ডেকেছেন? আমি তো মনে করেছি কিছু বলবেন।”

রাফিন ঐশী’র গাল ধরে বললো,

“বাহিরে বের হবার আগে বউয়ের কপালে চুমু খাওয়া সুন্নত”। হঠাৎ মনে হলো, আমার ঘর জুড়ে ও রঙিন একটা চাঁদ আছে। আমি কেনো শুধু শুধু নবী’র (সাঃ) সুন্নত’টা মিস করবো।”

“রাফিনের কথা শুনে মুচকি হাসলো ঐশী। বউয়ের এই হাসি মুখ’টা দেখে বেরিয়ে পড়লো রাফিন, এই হাসিটা তার সমস্ত চিন্তা ভুলিয়ে দেয় । প্রথমে হলে এসে নিজের বাইকটা ও কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জামাকাপড় নিয়ে নিলো। তারপরে অলিতে-গলিতে খুঁজতে লাগলো থাকার জন্য একটা বাসা। অনেক খুঁজা’র পরে ও মিলছে না। যেগুলো পছন্দ হয় সে গুলো ভাড়া অনেক বেশি। নিজের একাউন্টে জমা আছে ৬৫ হাজারের মতো টাকা। যতদিন না কিছু একটা কাজ মিলছে ততদিন এইটা দিয়ে’ই চলতে হবে। শুধু বাসা হলেও তো আর হবে না, সাংসারিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও তো কিনতে হবে। আরো কিছু সময় খুঁজতে লাগলো,সাইনবোর্ডে’র বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে ফোন করছে, বরাবরই নিরাশ হচ্ছে। পরক্ষণে আরাফ কে ফোন দিয়ে বিষয়টি খুলে বললো। এবং ওকেও খোঁজ নিতে বললো। এরি মধ্যে একবার ঐশী’কে কল দিয়ে খোঁজ নিয়েছে।”

” আরো কিছু সময় খুঁজার পরে না পেয়ে, আজকে আর খুঁজবে না বলে সিদ্ধান্ত নিলো। ঐশী’র জন্য কিছু জামাকাপড় কিনতে হবে, তাই মার্কেটে চলে গেলো। বাড়ি থেকে একটা কিছু সাথে করে নিয়ে আসতে দেয়নি রাফিন। পকেটে টাকা না থাকলেও তার আত্মা-সম্মান বোধ প্রখর। দুজনে হাত ধরে এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছে নিজের শহর থেকে।”

“দুপুর প্রায় শেষ হতে চলছে রাফিন এখনো রুমে ফিরলো না। একা একা ভীষণ বোরিং ফিল করছে ঐশী। এমন এক রুমে’র চার দেয়ালের মাঝে একা একা কতক্ষণ থাকা যায়। ফোন হাতে নিয়ে মায়ের কাছে ফোন দিলো। দুই রিং হতেই সানজিদা শেখ ফোন রিসিভ করে কান্না ভেজা কন্ঠে বললো,

“কেমন আছিস মা?”

“বাবা-মা কে ছাড়া থাকতে একটু কষ্ট হলেও তা প্রকাশ করলো না ঐশী। মুখে ক্ষীণ হাসি টেনে বললো,

” আমি খুব ভালো আছি আম্মু। তুমি কান্না করো না। আমার জন্য কোনো চিন্তা করো না, রাফিন ভাই আমার অনেক কেয়ার করে।
এখন তুমি কেমন আছো আম্মু? আব্বুর খেয়াল রেখো।”

“তোদের ছাড়া বাড়িটা শূন্য মা’রে। আমার একদম ফাঁকা বাসায় দম বন্ধ হয়ে আসছে। মুখে বললো না এসব, সানজিদা শেখ নিজেকে সামলে নিলো। এভাবে কান্না করলে তার মেয়ে যে ভেঙে পড়বে। উনি একটু হেসে বললো,

“আমরা ভালো আছি মা। তোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো? খেয়েছিস?”

“আমি একদম ঠিক আছি। কোনো অসুবিধা হচ্ছে না আম্মু। তুমি নিজের ও আব্বুর খেয়াল রেখো। ঠিক ভাবে খাওয়া-দাওয়া করিও।”

আরো কিছু সময় মায়ের সাথে কথা বলে রেখে দিলো।
তারপরে গ্রুপ কলে বন্ধুদের সাথে কিছু সময় আড্ডা দিলো।

“রুমের সাথে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চাতক পাখির মতো বাহিরে দৃষ্টি রেখে, অপেক্ষা করতে লাগলো রাফিনের জন্য। কিছু সময়ের মধ্যে কাঙ্খিত পুরুষ’টি কে দেখে অধর কোণে হাসি ফুটলো ঐশী’র।”

“দূর থেকে বারান্দায় ঐশী’কে দেখে রাফিন বুঝতে পারলো তার জন্য অপেক্ষা করছিলো ঐশী। ভাবতেই মুখশ্রী জ্বলজ্বল করছে, হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে “হায়!” দিলো। তার জন্য অধির আগ্রহ নিয়ে কেউ একজন অপেক্ষা করে, বাসায় ফিরে প্রিয়জনে মিষ্টি হাসি উপহার পাওয়া। এইটুকু’ই যেন পুরুষের কাছে যথেষ্ট। এই হাসি টুকু’র বিনিময়ে সারাদিনে’র সমস্ত পরিশ্রমের মাঝে অদ্ভুত শান্তি অনুভব করছে রাফিন ।”

“রুমে এসে ঐশী’কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,

“আমার বউ বুঝি আমাকে মিস করেছিলো।”

ঐশী অভিমান করে বললো,

“না আমি কাউকে মিস টিস করিনি। এত দেরী করলেন কেন?”

এই কথাটার মাঝে ও যেন গভীর ভালোবাসা লুকানো। রাফিন মুচকি হাসলো। তারপরে দুঃখী দুঃখী করে বললো,

“কি তুমি আমাকে টিস করতে চাও বউ? না এভাবে আমার মতো হতভাগা অবলা পুরুষের ইজ্জত ছিঁনিয়ে নিবেন না বউ। আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দিন!”

রাফিনের এমন কথা মুখো ভঙ্গি দেখে হেসে দিলো ঐশী। পরক্ষণে হাসি থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

“বাসা পেয়েছেন?”

রাফিন হতাশ কন্ঠে বললো,

” না। এখনো কোনো ব্যবস্হা হলো না।”

ঐশী রাফিনের কাঁধে হাত দিয়ে ভরসা দিয়ে বললো,

“পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ! নিরাশ হবেন না। আল্লাহ সবকিছু ঠিক করে দিবে। আল্লাহ ভরসা। ”

রাফিন মুচকি হাসি দিয়ে বললো,

“তুমি পাশে থাকলে অসম্ভব কে ও সম্ভব করতে পারবো মায়াবিনী। তুমি এসব নিয়ে মোটেও ভেবো না। আমি আছি তো।”
বলেই কিছু শপিং ব্যাগ হাতে দিয়ে আবারো বললো,

“এগুলো তোমার জন্য। দেখতো পছন্দ হয় কি-না? কোনো কিছু বাদ পড়েছে? তাইলে বলিও আমাকে।””

ঐশী সবগুলো প্যাক খুলে দেখলো। তার প্রয়োজনীয় সব কিছু রয়েছে। অনেক গুলো জামা সহ যাবতীয় সবটা দেখে বললো,

“এক সাথে এতোকিছু আনতে গেলেন কেনো?আপাতত অল্প কিছু আনলেই তো হতো। শুধু শুধু এতো গুলো টাকা নষ্ট করলেন কেনো?”

রাফিন কিছুটা মন খারাপ করে বললো,

“তোমার টাকা’র চিন্তা করতে হবে না। তোমাকে কিছু’ই দিতে পারিনি। এগুলো কিছুই না, এখন একটু কষ্ট করে মানিয়ে নেও। কথা দিলাম! একটা সময় তোমাকে সুন্দর একটা সংসার উপহার দিবো বউ।”

“আপনি একদম মন খারাপ করবেন না। হয়তো আল্লাহ কোনো ভালো কাজের বিনিময়ে, খুশী হয়ে আপনাকে আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে উপহার দিয়েছ। আপনাকে পেয়ে আমার জীবন ধন্য। এজন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজার বার শুকরিয়া আদায় করি। আমার জীবনে কোনো আক্ষেপ নেই। আপনার ভালোবাসা’র কাছে এসব জিনিস-পএ খুবই নগন্য, তুচ্ছ। আমার এসব কিছু চাইনা, শুধু সারাজীবন আপনার পবিত্র ভালোবাসা চাই। আমি শুধু আপনার ভালোবাসা’র ভাগ অন্য কাউকে দিতে পারবো না। তাছাড়া আপনার সাথে সবকিছু মানিয়ে নিবো। এমনটা আর দ্বিতৃয় বার বলবেন না।”

রাফিন মুচকি হেসে বললো,

“আচ্ছা বলবো না। এখন চলো গোসল করে খাবার খেতে হবে, অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে। আমি খাবার নিয়ে আসছি।”

“দুজন মিলে দুপুরের খাবার খেয়ে নিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। গোধূলির আকাশে বিকালের সোনালী রোদ’টা চিকচিক করছে। হঠাৎ করে মুঠো ফোন’টা বেজে উঠলো রাফিনের, রিসিভ করতেই আরাফের কন্ঠ স্বর শুনতে পেলো রাফিন। আরাফ বললো,

“দোস্ত একটা বাসা পেয়েছি, মোটামুটি পছন্দ হয়েছে আমার। কিন্তু একটু গলির ভিতরে, তোরা এসে দেখা যা একবার।”

“আচ্ছা বলে ফোন কেটে দিলো রাফিন। দুজন রেডি হয়ে চলে গেলো। বাসা মোটামুটি পছন্দ হয়েছে। চারতলা বিল্ডিং এ তাদের ফ্লাট তিন তলায়, একটা বেড রুম,একটা গেস্ট রুম, রান্না ঘর রয়েছে আলাদা।
ফ্ল্যাট ভাড়া ঠিক হলো ষোল হাজার টাকা। কিছু এডভান্স দিয়ে কনফার্ম করে আসলো। রাত হয়ে গিয়েছে তাই তিনজন মিলে রেস্টুরেন্টে একসাথে ডিনার করে নিলো।

চলবে….……..

[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here