হৃদয়_জুড়ে_শুধু_আপনি #পর্ব_৬ #জান্নাত_সুলতানা

0
179

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_আপনি
#পর্ব_৬
#জান্নাত_সুলতানা

কালর রাতের পর প্রিয়তা আর সাদনানের সামনে আসেনি। মেয়েটা বেশ লজ্জা পেয়েছে। একটু বেশি বেশি হয়ে গেলো কি? হয়তো। ইশ যদি তার প্রিয়তা বড় হতো। কবে বড় হবে এই মেয়েটা? কবে বোঝবে তার ভালোবাসা? এসব ভেবে সাদনান নিজের হাতে পরিহিত হাত ঘড়িটার দিকে দৃষ্টি দিলো। সন্ধা ছয়টা বাজে। এখনো অনুষ্ঠান শুরু হতে ঢের সময় বাকি। কিছু কিছু অতিথিরা এসছে। আসেপাশের প্রতিবেশীরাও অনেকেই চলে এসছে। আর সবাই যে যাঁর মতো করে কাজ করছে। সাদনান নিচে আসার সময় মাইশার রুম পার করে আসবার সময় ওদিকে একবার আঁড়চোখে তাকিয়ে ছিল। যদি একটাবার প্রিয়তাকে দেখতে পায় সেই আশায়। কিন্তু আফসোস সেখানে সবাই থাকলেও তার প্রিয়তাটা ছিল না। মেয়েটা শুধু কিস করার পিকচার দেখেই ওর সামনে আসছে না। বিয়ের পর বাসর রাতে না জানি কি করবে? হুম কাল সাদনান প্রিয়তাকে এটা পিকচার দেখিয়েছে যেখানে একটা মেয়েকে একটা ছেলে জড়িয়ে ধরে কিস করছে। ব্যাস এতেই তার প্রিয়তার এই দশা। তাহলে বাসর করবে কি করে? আদৌও কি তার বাসর করা হবে? এসব ভেবে সাদনান ধপ করে সোফায় বসে পরলো। সাদনান সোফায় বসে ফোনটা হতে নিলো। অনুষ্ঠানের আয়োজন ছাঁদে করা হয়েছে। শফিক একবার এসে সবাইকে ছাঁদে যাওয়ার তাড়া দিলেন। আস্তে আস্তে সবাই উপরের দিকে চলে গেলো। নিচে শুধু কাজের লোক আর ডেকোরেশন এর লোকজন বাড়ির বাহিরে দিকে আছে।
-“ভাই? ”
-“হ্যা বল।”
রাহান সাদনানের সামনে দাড়িয়ে। মাথাটা নুইয়ে রাখা। এই ছেলেটা অনেক সম্মান করে তাকে এমপির ছেলে বলে কি? উঁহু একদম নয়।একজন আদর্শ বড় ভাই হিসেবে। সাদনানের রাজনৈতি পছন্দ নয়। তাই সে বাবার যে ব্যবসা আছে সেটাই দেখা সোন করে।তবে বাবা এমপি বলে নিজ এলাকার সব ছেলেপেলে তার সঙ্গে সব সময় থাকে। তবে সাদনান কুমিল্লা খুব কমই থাকে। সে প্রায়ই ঢাকা থাকে।রাহান সাদনানকে কিছু বলতে না দেখে আবারও বল
-“ভাই?”
সাদনান বুঝলো উপরে থেকে হয়তো আবারও ডাক পরেছে তাই সোজাসাপটা বলল
-“হুম চল।
তার পর দুজনেই ছাঁদে চলে গেলো।

——————————

মাইশাকে সাজিয়ে আয়না নিজের সঙ্গে করে নিয়ে উপরে এলো। আয়ান আগে থেকে সেখানে ছিল। মাইশা কালো একটা লেহেঙ্গা পড়েছে। সাথে হালকা সাজুগুজু। মাইশার বেশি সাজ পছন্দ নয়। তাই আয়না প্রিয়তা সারা মিলে হালকা করে সাজিয়েছে। আয়ানও কালো পাঞ্জাবি পরেছে। বেশ লাগছে দুজনকে। আজ সকালেই সবার জন্য শপিং করা হয়েছে। আর সব শপিং করেছে সাদনান, আয়ান, রাহাত,সাথে রাহান।সবাইর বেশ পছন্দ করেছে। প্রিয়তা তখন নিজের জন্য আনা কাপর ও আনতে যায়নি। সারা নিয়ে এসছিলো প্রিয়তার জন্য আনা ড্রেস। মাইশাকে রেডি করে দিয়ে। সারা আর প্রিয়তা রেডি হতে নিজের রুমে গেলো। সারা আর প্রিয়তাও রেডি হয়ে নিলো। ওদের জন্য সাদনান সেম ডিজাইন লেহেঙ্গা এনেছে। তার পর দুজনে ছাঁদে চলে গেলো। ছাঁদে প্রবেশ করেই প্রিয়তার নজর আঁটকে গেলো দক্ষিণ সাইডে রেলিং এ ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোন কথা বলতে থাকা ব্যাস্ত সুদর্শন পুরুষটার উপর। প্রিয়তা এক দৃষ্টিতে সাদনানের পানে চেয়ে রইলো। সাদনান ফোনে কথা বলতে বলতে সামনে তাকিয়ে দেখলো তার প্রিয়তা তারওই দিকে তাকিয়ে। সাদনান মুগ্ধতা নিয়ে হাসলো। মেয়েটা এখন আর ওর দিকে তাকাতে কোনো আড়ষ্টতা করে না। আগে ভয়ে কখনো সামনে আসতো না। আর এখন যখননতখন তার দিকে তাকিয়ে থাকে। সারা ছাঁদে এসেই মাইশার কাছে চলে গিয়েছে। সাদনান আলগোছে হেঁটে এসে প্রিয়তার সামনে দাঁড়াল। মেয়েটা গায়ের রং টা বেশি উজ্জ্বল নয়। আবার বেশি চাপাও নয়। এতেই যেনো আরো বেশি সুন্দর লাগে। এইযে চোখের নিচে হালকা কালচে দাগ। বেশি সাদা সুন্দর ভালোলাগে না সাদনানের। সাদনানের বেশ রাগ হয় তার গায়ে রংটা কেন এতো সাদা? প্রিয়তা সাদনানকে দেখতে এতোটাই বিবর যে সাদনান যে মেয়েটার সামনে দাঁড়িয়ে সে খেয়াল কি আছে? উঁহু নেই। থাকলে এতোখনে নিশ্চয়ই লজ্জা নুইয়ে পড়তো।ভেবেই সাদনান শব্দহীন হাসলো।প্রিয়তার কাছ দিয়ে অন্য পাশে যেতে যেতে বল
-“আমাকে সব সময় দেখতে পাবেন। কিন্তু আপনার চারপাশের এতো সুন্দর মূহুর্তো গুলো হয়তো না পেতে পারেন। ”
কথাটা সমাপ্ত করে সাদনান হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিয়ে রাহান, আর রাহাতের সাথে আয়ানের পাশে ধারালো।

সাদনানের কথায় চমকে উঠলো। আল্লাহ কি লজ্জা ওকি এতোখন এই অসভ্য লোকটার দিকে তাকি ছিল? ছি: সাদনান ভাই কি ভাবছে? নিশ্চয়ই বলবে এ মেয়ের লাজ লজ্জা নেই। ততক্ষণে সাদনান ওর চোখের আড়াল হয়েছে। তাই লজ্জাটা বেশিখন স্থায় হলো না। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে চার দিকে চাইলো। এর মধ্যে একটা দৃশ্য দেখে প্রিয়তাও বেশ অবাক হলো। আর বুঝতেও পারলো সাদনান কেন ওই কথাটা বলেছে। কারন সুফিয়া আর সালেহা বেগম কি সুন্দর এক সঙ্গে সব দিক সামলাচ্ছে। প্রিয়তা এই প্রথম ও ওর ফুফিকে সাদনানের মায়ের সঙ্গে এতো সুন্দর করে কথা বলতে দেখলো।আগে কখনো এমন দেখেনি।

সালেহা বেগম আর সুফিয়া বেগমের বেশ ভাব হয়েছে। দুজনেই কতো সুন্দর করে সব কিছু সামলাচ্ছে। যেনো দুবোন। শফিক সওদাগরের এসব দেখে মুচকি হাসলেন। ইস যদি আজ্জম আজ এখানে থাকতো তা হলে কতোই না খুশি হতো। কিন্তু আফসোস আজ্জম নেই।থাকবে কি করে এমপি বলে কথা। কত কাজ থাকে। আজ সকালেই হুট করে কল আসে রাজনৈতিক কিছু সমস্যা হয়েছে। তাই তো না চাইতোও বাধ্য হয়ে ঢাকা যেতে হয়েছে। কবে আসবে ঠিক নেই।
-“চাচা সব অতিথিরা তো এসে পরেছে? ”
কারোর কথায় বাস্তবে ফিরেলো শফিক। সামনে চেয়ে দেখলো সাদনানের সঙ্গে যে থাকে রাহান নামের যুবকটা দাঁড়িয়ে। শফিক রাহানকে বলল
-“চলো।”
বলেই তিনি কেদার ছেড়ে উঠে নিজে আগে হাঁটা ধরলো রাহানও ওনার পিছন পিছন হাঁটতে লাগলো।

আয়ান আর মাইশাকে একসাথে দাঁড় করিয়ে দিয়ে আয়না আয়ানের হাতে একটা রিং ধরিয়ে দিলো।আয়ান মাইশার দিকে নিজের বাম হাতটা বাড়িয়ে দিলো। মাইশাও মুচকি হেসে বাম হাতটা আয়ানের হাতের তালুতে রাখলো। আয়ানও মুচকি একটা হাসি দিয়ে মাইশার অনামিকা আঙুলে রিংটা পড়িয়ে দিলো।তার পর মাইশাও আয়ানের হাতে পড়িয়ে দিলো। চার পাশ থেকে সবাই কর্তালি দিলো। তার পর সবাই একে একে মাইশা আর আয়ানকে অভিনন্দন জানায়। অনুষ্ঠান শেষ বড়রা সবাই খাবার খেয়ে যার যে চলে গিয়েছে। এখনে শুধু প্রতিবেশী চার পাঁচ জন মেয়ে আর প্রিয়তারা সবাই আড্ডা দিচ্ছে। এক পর্যায়ে মাইশা সাদনান হঠাৎই বলে উঠে
-“ভাইয়া একটা গান গাইবেন প্লিজ? ”
কি সুন্দর আবদার। তবে সাদনান তা নাকচ করে দিতে গিয়েও কেন যে পাড়লো না। এখন এতো মানুষের সামনে না করলে মাইশা নিশ্চয়ই কষ্ট পাবে। আজ মেয়েটা একটা খুশির দিন। থাক এক দিন নাহয় নিজের জীবনের রুলস এর বাহিরে গেলো। সাদনামের গানের গলা বেশ সুন্দর। কিন্তু সে কখনো কারোর সামনে গান করেনি। যা করে নিজের রুমেই সীমাবদ্ধ থাকে। আসলে মাইশারা কেউই জানতো না সাদনান গান পাড়ে। কিন্তু কাল কথার কথায় সারা ব’লেছিলো মাইশাকে। তবে মাইশা যে এমন কিছু করবে সারা ভাবেনি। আল্লাহ ভাইয়া নিশ্চয়ই না করে দিবে, ভাবে সারা।কিন্তু সারাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমান করে দিয়ে সাদনান মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলো
-“আচ্ছা। ”
তার পর রাহানের দিকে তাকিয়ে বলল
-“যা বাড়ি থেকে আমার গিটার টা নিয়ে আয়।”
রাহান ছোট্ট করে বলল
-“আচ্ছা ভাই।”
বলেই রাহান হাঁটা ধরলো। সাদনানদের বাড়ি প্রিয়তাদের বাড়ি থেকে বেশি দূর নয় এই সাত কি আট মিনিটের রাস্তা। মাইশা অনেক খুশি হয়েছে। আর প্রিয়তা ভাবছে ওনি গান গাইতেও পারে কই সারা তো কখনো বলেনি? অবশ্য বলবে কি করে আগে তো প্রিয়তা সাদনানের নাম শুনলেই ভয় পেতো। তাই হয়তো সাদনানের ব্যাপারে কোনো কিছুই জানে না ।
বেশ কিছুখন পর রাহান সাদনানের গিটার নিয়ে ফিরে এলো। সাদনানের দিকে গিটার টা এগিয়ে দিয়ে রাহান বলল
-“ভাই। ”
সাদনান রাহানের দিকে তাকিয়ে গিটারটা নিলো।রাহানকে নিজের পাশে বসতে ইশারা করলো রাহানও কোনো বাক্য প্রয়োগ না করে চট জলদি সাদনানের পাশে বসলো। সাদনান গিটার টা নিয়ে একবার প্রিয়তার পানে চাইলো। মেয়েটা ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো বিধায় দুজনের চোখাচোখি হয়ে গলো। তবে প্রিয়তা আর আজ অন্য দিনের মতো চোখ ফিরিয়ে নিলো না। চেয়ে রইলো হালকা বাদামী বর্ণের চোখের মনি জোড়ার দিকে। আজ বুঝি ভয় করছে না? ভিতর থেকে উত্তর এলো না আজ মুগ্ধ হচ্ছে। এই মানুষটার প্রতিটা রুপে, গুনে সবকিছুতে প্রিয়তা এখন ভালো লাগা, মুগ্ধতা খুঁজে পায়।প্রিয়তার ভাবনার মাঝেই গিটারের টুংটাং শব্দে ভাবনা ছেঁদ হলো। সাদনান এখনো তার পানে চেয়ে। এবার অবশ্য প্রিয়তা কিছু টা লজ্জা পেয়ে মাথা নুইয়ে নিল। এর পর পর-ই সাদনানের মিষ্টি কন্ঠে শুনা গেলো সুন্দর একটা হিন্দি গান

***
Dua bhi lage na mujhe
Dawa bhi lage na mujhe
Jabse dil ko mere tu laga hai

Neend raaton ki meri
Chaahat baaton ki mari
Chain ko mere toone yun thaga hai

Jab saansein baroon main band
Aankhein karun main
Nazar tu yaar aaya kar

Dil ko karaar aaya
Tujhpe hai pyar aaya
Pehli pehli baar aaya
Oh yaara

Dil ko karaar aaya
Tujhpe hai pyar aaya
Pehli pehli baar aaya

Oh yaara
Har roz puchhein yeh hawayein
Hum to bata ke haare
Kyun zikar tera karte hain
Humse taare

***

[বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন ]

আড্ডা শেষ সবাই নিচে চলে গিয়েছে।রাত একটা বাজে সবার চোখ ঘুমে ঢুল ঢুল করছে তাই সবাই কোনো মতে ছাঁদ থেকে নেমেছে।সাদনান উঠে ফোন হাতে রেলিং এর ধারে দাঁড়িয়ে ছিলো। সবাই বেশ অনেকটা আগে চলে গিয়েছে। এবার সাদনান পিছনে ফিরে যে-ই না নিচের দিকে যাওয়ার জন্য আগাবে অমনি দেখলো প্রিয়তা যায়নি। মেয়েটা এখনো নিচে বসে ওর পানে চেয়ে। ছাঁদে লাইটিং করার কারনে ছাঁদটা বেশ লাগছে।আর সেই সোডিয়াম আলোয়ে তার প্রিয়তাকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে। সাদনান কি বলবে ভেবে পেলো না। সে যেনো কথার খেয়া হারালো। আস্তে করে এগিয়ে গিয়ে প্রিয়তার সামনে হাঁটু মুড়ে বসলে। মেয়েটা এখনো তার পানে এক দৃষ্টিতে চেয়ে। সাদনানের চোখ দুটো মেয়েটার সারা মুখে বিচরণ করলো। গলার কাছটা এসে যেনো থমকে গেলো। ছোট একটা তিলে চোখ আঁটকালো।খুব করে টানছে এই তিলটা। সাদনান শুকনো একটা ঢোক গিলে। একবার ছুঁয়ে দিবে কি? বেশি ক্ষতি কি হবে? এসব ভাবতে হাতটা আলতো করে প্রিয়তার গাল ছোঁয়াল। মেয়েটার সর্বাঙ্গে কাঁপুনি দিলো। প্রিয়তার যেনো এতোখনে হুস এলো কি করছিল ও?ইস সাদনান ভাই কি ভাবছে নিশ্চয়ই খারাপ? কিন্তু সাদনান ভাই আমার এতো কাছে কেন এসছে?প্রিয়তা ভাবনা শেষ কিছু বলবে। তার আগে গলদেশ এ চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলো। হুম সাদনান তিলটা কামরে ধরেছে। প্রিয়তা গলা দিয়ে না চাইতেও হাল্কা সুরে বেরিয়ে এলো
-“আহ।”
ততক্ষণে সাদনান কামরে ধরে রাখা জায়গায় টুপটাপ কয়েকবার তার অধর জোড়া ছুঁয়ে দিয়েছে। প্রিয়তার ছোট্ট দেহপিঞ্জরায় যেনো সাদনানের সন্নিত্য চাইলো নখ ডুবিয়ে খামচে ধরলো সাদনানের কাঁধ। এতে যেনো আরো উন্মাদ হলো সামনে থাকা প্রেমিক পুরুষ। আবারও কামরে ধরলো তিলটা। মেয়েটা দিশেহারা। হঠাৎই খেয়াল হলো এটা কি ঠিক হচ্ছে? কিন্তু সাদনান ততক্ষণে তার ওষ্ঠ আকরে। কিন্তু মেয়েটা সারা দিলো না। সামনে থাকা পুরুষ টা অসন্তুষ্ট হলো। ওষ্ঠযোগল ছাড়লো দৃষ্টি দিলো সামনে থাকা রমনীটার দিকে। মেয়েটা কাঁদছে। কিন্তু কেন?সাদনাম অস্তির হয়ে জিজ্ঞেস করলো
-“কি হয়েছে প্রিয়তা আপনি কাঁদছেন কেন?”
প্রিয়তার হেঁচকি উঠে গেছে ততক্ষণে। ফুফাতে ফুফাতে বল
-“ঠিক হয়নি এটা।”

#চলবে………

[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here