হৃদয়_জুড়ে_শুধু_আপনি #পর্ব_২০ #জান্নাত_সুলতানা

0
155

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_আপনি
#পর্ব_২০
#জান্নাত_সুলতানা

-“সোনা উঠে যাও। আমরা চলে এসছি। ”

সাদনান ডাকে মেয়ে টা আরো একটু গুটি শুটি মেরে ওকে জড়িয়ে ধরলো।
সাদনান মুচকি হাসলো। আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়া মেয়ে টার মাথার তালুতে।

প্রিয়তা ঘুমিয়েছে ঘন্টা খানিক সময় হয়ে এলো।
সাদনান চাইলে বউ কে কোলে করে ফ্ল্যাট এ নিয়ে যেতে পারে। গেটের দারওয়ান কে বলে গাড়ির দরজা খুলে দিবে। কিন্তু সাদনান চাইছে না ওর বউ কে
এই এলোমেলো অবস্থা কেউ দেখে।
তাই তো জাগ্রত করতে চাইছে।
কিন্তু এই মেয়ে তো বিড়াল ছানার মতো আরও একটু মুচড়া মুচড়ি করে বুকের ভিতর ঢোকে যেতে চাইছে।

সাদনান চুপ করে কিছু ভাবলো। তার পর একটা বাঁকা হাসি দিলো।
হুট করে মেয়ে টার গলায় একটা চুমু খেলো মিনিট দুই এক এর সময় মতো এভাবে ছিল।
প্রিয়তা নড়েচড়ে উঠলো তবে তন্দ্রা এখন ছুটে নি।
সাদনান এবার বেজায় বিরক্ত হলো।
এই মেয়ে তো ঘুম থেকে উঠছেই না। কিন্তু না উঠলে তো হবে না উঠতে হবে। শরীরের বস্ত নামক জিনিস গুলো ঠিক করতে হবে। এভাবে কিছুতেই গাড়ি থেকে নয়তো বের হওয়া যাবে না।

-“আহ,,,

ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করতেই আর্তনা করে উঠলো প্রিয়তা।
সাদনান তখন মেয়ে টার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে রাখা।

প্রিয়তা সাদনানের চুল শক্ত করে খামচে ধরে। মেয়ে টার তন্দ্রা এখন একদম ছুটে পালিয়েছে। বেশি সময় লাগলো না ব্যথার কারণ বুঝতে। চুলে টান পড়ায় সাদনান যেনো আর বেসামাল হলো। পাগলের মতো অধর স্পর্শ দিতে লাগলে মেয়ে টার গলায়।
হুট করেই থেমে গেলো।
মাথা তুলে দৃষ্টি দিলো প্রিয়তার মুখের দিকে ।
মেয়ে টার চোখ এখনো বন্ধ আছে।
সাদনান নিজের হাত প্রিয়তার কোমর হতে ছাড়িয়ে নিলো।
হাত মুঠো বন্দি করে। লম্বা লম্বা কটা শাস টানে।
নিজে কনট্রোল করে।
অতঃপর প্রিয়তার গালে আলতো করে হাত রাখে
শক্ত হাতের স্পর্শ মেয়ে টার নরম গালে পড়তে চোখ জোড়া মেলে সামনে চায়।
দৃষ্টি মিলে দু’জনেরই।
সাদনান এক দৃষ্টিতে চেয়ে।
প্রিয়তা লজ্জা পেলো। দৃষ্টি ঘুরালো এলোমেলো।
আশেপাশে তাকিয়ে বুঝলো গাড়ি টা এক টা ছয় তলা বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে।
প্রিয়তা কিছু বুঝতে পারছে না। হয়তো সাদনান এখানে থাকে। সব ভাবনা বাদ দিয়ে
প্রশ্ন করলো

-“আমরা কি এসে পরেছি?”

সাদনান যেনো এতোখন একটা ঘুরে ছিল। প্রিয়তার প্রশ্নে সম্মতি ফিরে
পেলো। নিজে কে স্বাভাবিক করলো।

বেশ মিহি কণ্ঠে উত্তর করে

-“হুম। আরো আধঘন্টা আগে। ”
বলতে বলতে প্রিয়তা কে পাশের সিটে বসি দিলো।
তার পর গাড়ির দরজা খোলে
বেড়িয়ে প্রিয়তার পাশের দরজা টাও খোলে দিলো।

প্রিয়তা নামতে নিবে তার আগেই সাদনান বলল

-“সব কিছু গুছিয়ে,,
এতো টুকু বলতেই প্রিয়তা ঝটপট নিজের কাপড় ঠিক করতে ব্যাস্ত হয়ে পরে।

অতঃপর আঁড়চোখে তাকালো সাদনানের দিকে। সাদনান এখন চেয়ে পলকহীন চোখে।
প্রিয়তা বেচারি আবারও লজ্জা পেলো।
ইস সারা রাস্তা ওনার সামনে এভাবে বসে ছিল?

-“এখন লজ্জা পেতে হবে না। রাতের জন্য তোলা রাখুন। ”

মেয়ে টা কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো না । তবে মনে মনে বেশ কিছু কটু কথাও আওড়ে নিলো।

বিরবির করতে করতে প্রিয়তা গাড়ি ভিতর হতে নেমে সাদনানের পাশে দাঁড়াল।
আশে পাশে তাকিয়ে সব কিছু দেখছে।
সাদনান গাড়ি লক করে।
ঘুরে মেয়ে টার হাত নিজের হাতের মুঠোয়ে পুড়ে নিলো।
পা বাড়ায় সামনের দিকে।
মিনিটের মতো হাঁটার পর একটা লিফটের সামনে এসে দাঁড়ায়।

সেকেন্ড এর মধ্যে দরজা টা খোলে। সাদনান প্রিয়তা কে নিয়ে ভিতরে যায়।
একটু পর সেটা চার তালায় এসে থামে।
সাদনান এতখন প্রিয়তার হাত ধরে ছিল।
কিন্তু লিফট থেকে বেড়িয়ে হাত টা ছাড়ে।
নিজ পরিহিত পেন্ট হতে পকেট হাতরে কিছু খুঁজে? হয়তো। হুম চাবি।
একটু এগিয়ে গিয়ে সামনের ফ্লাট এর দরজা টা খোলে পিছনে ফিরে দেখলো প্রিয়তা ওর থেকে কিছু টা দূরে দাঁড়িয়ে।

-“এসো।”

ডাকলো সাদনান।

প্রিয়তা আস্তে আস্তে করে এগিয়ে গেলো।
সাদনান আবারও মেয়ে টার হাত টা আঁকড়ে ধরে। দরজা টা খুলে ভিতরে এলো।

বাসা অন্ধকার। সাদনান ডানে হাত দিয়ে হাতরে সুইচ টিপে লাইট অন করে।
প্রিয়তা চার দিকে তাকালো। অনেক সুন্দর বাসা টা রান্না ঘরটা দরজা থেকে বরাবর দেখা যাচ্ছে। তিন টা রুম আর ডাইনিং একটা ড্রয়িং নেই ডাইনিং এর পাশেই সোফায়।

প্রিয়তার ভাবনার মাঝেই হাতে টান অনুভব করে।
সাদনান হাঁটছে।
একটা রুমে সাদনান প্রিয়তা কে নিয়ে এলো।

-“ফ্রেশ হয়ে নেও।আমি পাশের রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসছি।”
বলেই নিজে আলমারি থেকে কাপড় নিতে নিতে আবারও বলে

-“এখানে কাপড় রাখা আছে। যে টা ভালো লাগে পড়ে নিও।”

বলতে বলতে প্রিয়তাকে ইশারা করে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে গেলো।

প্রিয়তা রুম টাকে দেখতে লাগলো। অনেক বড় এই রুম টা সাথে একটা ছাঁদহীন বেলকনিও আছে। আর অনেক সুন্দর করে গোছানোও।
যে কেউ দেখলে নিসন্দেহে বলতে পারবে এই রুমের মানুষ টা বেশ পরিষ্কার।

প্রিয়তা এর বেশি কিছু পর্যবেক্ষণ করতে পারলো না।
শরীর বেশ ক্লান্ত লাগছে।
ফ্রেশ হলে হয়তো ভালো লাগবে। তাই আলমারি দিকে এগিয়ে এলো।
সেটা খোলে প্রিয়তা বেশ অবাক হলো। এক সাইডে অনেক গুলো শাড়ী অনেক সুন্দর করে বাজ করে রাখা।
প্রিয়তা সেখান থেকে একটা শাড়ী নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

——————–

-“সত্যি করে বলুন আপনি এতো শাড়ী কার জন্য নিয়েছেন? ”

সাদনান ফ্রেশ হয়ে মাত্র রুমে এসছে।তখনই প্রিয়তা পিছন থেকে কথা টা বলে উঠলো।
সাদনান পিছনে চাইলো। মেয়ে টা শাড়ি টা কোনো রকম গায়ে পেচিয়ে দাঁড়িয়ে।

সাদনান আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো।
এক টানে মেয়েটাকে নিজের বুকে নিয়ে এলো। মেয়ে টা কেপে উঠে।ছোট্ট বুকটায় ঝর উঠে।

-“আমার বউয়ের জন্য। অনেক আগে থেকে এগুলো কিনে রেখেছি। মূলত যখন মার্কেট যেতাম নিজের জন্য কাপড় নিতে তখন একটা করে নিতাম। মানে পছন্দ হলেই নিয়ে নিতাম।”

প্রিয়তা অনেক খুশি হলো। তবে প্রকাশ করলো না।
সাদনান প্রিতার কিছু বলতে না দেখে।
নিজের শক্ত চওড়া বুক হতে দু হাত ধারা আলগা করে।
প্রিয়তা লজ্জা পেলো। পাবারই কথা শরীরে যে শুধু শাড়ীর সাথে প্রয়োজন জিনিস পরিহিত আর শাড়ী টা কোনো রকম পেচানো।
সাদনান হাসলো শব্দহীন হাসি।
অতঃপর আঁচলে হাত রাখে।
প্রিয়তা ফট করে চোখ তোলে চাইলো সাদনানের দিকে।
পর পর চোখ বন্ধ করে নিলো। এই চোখে যে বেশিখন তাকাতে পারে না মেয়ে টা।
প্রিয়তা কে চোখ বন্ধ করতে দেখে রাগ হলো সাদনানের। আগে না হয় ভয়ে তাকাতো না কিন্তু এখন তো ভালোবাসে তা হলে এখন কেন তাকাতে পারে না?
কিন্তু রাগলে চলবে না।

-“তাকান।”

মিহি কণ্ঠে বলে সাদনান।

-“না আমার লজ্জা করে।

-“লজ্জার কি আছে আমি তো আপনারি।তাকান। ”

-“না প্লিজ। ”

-“প্রিয়তা?”

ব্যাস কাজ হয়ে গেলো। ফট করে চোখ তোলে তাকালো। সাদনান উন্মুক্ত। শুধু তোয়ালে পড়ে।
প্রিয়তা চোখ নামালো না। চেয়ে রইলো প্রিয় পুরুষ টার শক্ত চওড়া বুক টার দিকে। এখন লোভ হচ্ছে মেয়ে টার মনটা চাইছে ওখানে একবার নিজের পাতলা অধর জোড়া ছুঁয়ে দিতে।
সাদনান
এখনো মেয়ে টার মুখ পানে দৃষ্টি।

প্রিয়তা কিছুখন চেয়ে রইলো। একটা মন বলছে একবার ছুঁয়ে দিতে আরেক টা মন বলছে একদম না।আবার নিজেই নিজে বেশ বিরক্ত হলো। স্বামী হয়। একবার ছুঁয়ে দিলে কিছু হবে না।
আস্তে করে মুখ টা উচু করে নিজের অধর জোরা হালকে করে ছুঁয়ে দিলো।

সাদনান নিজেও মেয়ে টার মাথায় তালুতে চুমু খেলো।
প্রিয়তার মুখ টা নিজের দু হাতের আঁজলো নিলো।

কপালে ছোট করে একটা ভালোবাসার পরশ দিলো।
পর পরই নিজের অধর জোড়া দিয়ে মেয়েটার অধর জোড়া আবদ্ধ করে নিলো।বেশ অনেক টা সময় নিয়ে গাঢ় একটা চুম্বন করলো।
প্রিয়তা শাস নিতেও পারছে না। হাতের নখ সাদনানের বুকে বিঁধে। নিজের ঠোঁটেও ব্যাথা অনুভব করে। হুম সাদনান দাঁত বিঁধিয়েছে মেয়েটা অধরে।প্রিয়তা ছটফট করে।
তবে সাদনান কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না।
নিজের ইচ্ছে মতো ছাড়ে।

নিজের বুকের দিকে একবার তাকিয়ে প্রিয়তার
দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।
মেয়ে টার মুখের অবস্থা করুন৷ অধর জোড়া ফোলা। চোখে পানি চিকচিক করে । সাদনান মুচকি হাসে।

-“এটা কি করলেন আপনি? ”

মিনমিন করে প্রশ্ন করে প্রিয়তা। সাদনান চোখে হাসির রেশ স্পষ্ট। আরো একটু কাছে টানে মেয়েটাকে

-“ভালোবাসা সোনা।”

#চলবে…….

[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ। গল্প টা আর “এক পর্ব ” হবে । ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here