হৃদয় জুড়ে শুধুই তুই
পর্বঃ- ২০
_________
রাতে মাহমুদ মেনশনের সবাই একসাথে বসে ডিনার করছিলো৷ তখনই খাওয়ার মাঝখানে হঠাৎ আয়াশ বললো—–
” চাচ্চু! ছোট মা! তোমাদের একটা কথা বলার ছিলো।
” কি কথা বল না?? আমাদেরকে কথা বলতে হেজিটেড করছিস কেন??
হাসান মাহমুদের কথা শুনে আয়াশ আমতা আমতা গলায় বললো — ” না মানে আসলে হয়েছে কি, আমার ফ্রেন্ড আরিফ আছে না! কাল ওর বোনের বিয়ে। তাই আমাদের ফ্যামিলির সবাইকে দাওয়াত দিয়েছে। বাট আগামী দুই দিন তো তোমার আর বাবার কিছু ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে। তাই আমি জানি যে তোমরা যেতে চাইবেনা। আর তোমরা না গেলে তো মা আর ছোট মা-ও যাবেনা। তাই বলছিলাম কি, কাল আমার সাথে ইশাকে নিতে চাই। তোমাদের কোনো আপত্তি নেই তো?? টেনশন করোনা,, আমি ওকে চোখে চোখে রাখবো।
” আয়াশ! এতে অনুমতি নেওয়ার কি আছে?? আমরা কি কখনো ইশার কোনো কিছুতে তোকে বাঁধা দিয়েছি যে আজ দিবো??
স্ত্রীর সাথে তাল মিলিয়ে হাসান মাহমুদ ও সম্মতি জানালেন।
” হ্যাঁ আয়াশ! তোর ছোট মা ঠিকই বলেছে। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে ভাইজান যদি মত না দেয় সেটা ভিন্ন কথা। ভাইজান! তুমি কি বলো?? তোমার কোনো আপত্তি আছে?? ”
রায়হান মাহমুদ এক নজর ছেলের দিকে তাকিয়ে ইশার দিকে তাকালেন। ইশাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে ও অনেক খুশি। কিন্তু উনার উত্তরের আশায় বসে আছে। তাই রায়হান মাহমুদ সরশ গলায় বললেন —–
” ইশা যদি যেতে চায় আমি বাঁধা দিবোনা। তবে যেই কথাটা আয়াশ বলেছে সেটা যেন আয়াশের মাথায় থাকে। আমার ইশা মায়ের যেন কিছু না হয়। ওকে একদম চোখে চোখে রাখবি।
” আরে ভাইজান! আমাদের আয়াশের উপর আমার পুরো বিশ্বাস আছে। ও ইশাকে ঠিক দেখে দেখে রাখবে আমি জানি। (হাসান মাহমুদ)
” বাবা! তুমি একদম টেনশন করোনা। তোমার মেয়েকে যেভাবে নিয়ে যাবো আমি সেভাবেই ফেরত আনবো। ডোন্ট ওয়েরি।
” ঠিক আছে দেখা যাবে। ”
এরপর খাবার টেবিলে আর তেমন কোনো কথা হয়নি। ডিনার শেষ করে যে যার মতো রুমে চলে গেলো। আয়াশ আধ শোয়া হয়ে বসে বসে মোবাইল টিপছিলো। তখনই ইশা ওর রুমে আসে।
” কি ব্যাপার?? তুই হঠাৎ আমার রুমে??
” বাপ রে, এমন ভাবে বলছিস আ ব ব আই মিন এমন ভাবে বলছো যেন আগে কখনো আসিনি??
” না তা এসেছিস। বাট প্রতিবারই তো তোর আমার রুমে আসার পিছনে কোনো না কোনো রিজন থাকে। তা আজ কি কারণে এসছিস শুনি??
” আজ তোমার রুমে থাকতে এসেছি। লাগবে আর কোনো কারণ?? ”
বলতে বলতে ইশা আয়াশের পাশে এসে বসে পড়লো।
” সে কি? তুই বসছিস কেন??
” বলেছিনা আজ তোমার সাথে থাকতে এসেছি।
” নট এক্সেপ্টেড। কারণ এইটা তুই চাইলেও আমি চাই না।
” আজাইরা।
” আজাইরা আমি নয় তুই বকছিস। আচ্ছা তোকে না আমি কতোবার বলেছি তুই ডিনারের পর আমার রুমে আসবিনা??
” কেন?? পুরোদিন আসতে পারলে ডিনারের পর কেন আসতে পারবোনা?? তুমিও না! আচ্ছা যেই জন্য এসেছিলাম সেটা বলেই চলে যাবো। ডোন্ট ওয়েরি।
” কি বলবি তাড়াতাড়ি বলে আমার রুম থেকে বিদায় হ।
” বলছিলাম যে কাল কি আমরা সত্যিই বিয়েতে যাচ্ছি??
” তোর কি মনে হয়?? আমি বাবা, চাচ্চু, মা, ছোটা মা সবার সাথে ইয়ার্কি করেছি??
” না মানে আমি বলতে চাইছিলাম যে, তুমি তো নিশি আপুর বিয়ে থেকে আসার পর আমাকে আর কোনো বিয়েতে যেতে বারণ করেছিলে। তাহলে আজ হঠাৎ বলছো যে কাল আমরা বিয়েতে যাবো। ইভেন বড় আব্বুর থেকেও পারমিশন নিলে আমার জন্য। তাই জিজ্ঞেস করছিলাম আর কি।
” নিশির বিয়ে থেকে আসার পর যে আমি তোকে আর কোনো বিয়েতে যেতে বারণ করেছিলাম সেটা আমার মনে আছে। ইনফ্যাক্ট কালও নিয়ে যেতাম না আমার সাথে। আরিফ আনহা স্পেশালি আরিফের আব্বু আম্মু খুব করে বলেছে তোকে যেন নিয়ে যায়। তাই তোকে নিয়ে যাচ্ছি। নয়তো আমার জান গেলেও নিয়ে যেতাম না। এবার যা আমার রুম থেকে বের হ।
” যাচ্ছি। আমি তোমার রুমে থাকতে আসিনি। বড় আম্মু বোধহয় তোমাকে জন্মের পর মধু না দিয়ে নিম পাতার রস দিয়েছিলো; তাই না?? নয়তো সবসময় কেউ এমন তিতা তিতা কথা বলে?? হুহ্। “”
বলেই ইশা চলে যেতে নিলে আয়াশ ডেকে উঠলো।
” শোন! দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে যাস।
” কেন? নিজে উঠে লাগাতে পারছোনা??
” আমার আর উঠতে ইচ্ছে করছে না।
” আমার আর উঠতে ইচ্ছে করছে না। (ব্যঙ্গ করে)
মুখ বাঁকিয়ে কথাটা বলে ইশা ধুরুম করে দরজাটা টেনে দিয়ে চলে গেলো। আয়াশ মুচকি হাসলো।
” ম্যাডাম কি চলে গেছে?? ”
হঠাৎ কানে কারো আওয়াজ আসতেই আয়াশের মনে পড়লো ও তো অয়নের সাথে কথা বলছিলো। আসলে আয়াশ এতক্ষণ কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে অয়নের সাথে কথা বলছিলো। হঠাৎ ইশা রুমে চলে আসায় ওর সাথে কথা বলতে বলতে ও যে লাইনে আছে সেটা ভুলেই গিয়েছিলো। এখন হঠাৎ অয়নের কণ্ঠ কানে আসতেই ওর মনে পড়লো যে ও তো ফোনে কথা বলছিলো।
” আব ব হ্যাঁ চলে গিয়েছে।
” ওওও, আচ্ছা ও যে বললো ডিনারের পর তুই নাকি ওকে তোর রুমে আসতে বারণ করেছিস, সেটা কি সত্যি??
” হুমমম।
” কেন?? নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিস না বুঝি??
” আরে তেমন কিছু না।
” তাহলে কেমন কিছু??
” আরে যদি সবসময়ের মতো আসতো তাহলে আমি বারণ করতাম না। কিন্তু ম্যাডাম আসে নাইট ড্রেস পড়ে। নাইট ড্রেস গুলো কোনো পোষাক হলো?? শরীরের উঁচু নিচু সব বুঝা যায়। তুই ই বল কেমন লাগে?? তাই আমি বারণ করেছি যাতে ডিনারের পর আমার রুমে না আসে।
” তার মানে আমার ধারণাই ঠিক। মামা আমার নিজের কন্ট্রোলনেস নিয়ে ভয় পাচ্ছে। বুঝি বুঝি, সব বুঝি। তবে যাই বলিস বিয়েটা যখন করে ফেলেছিস, সো নিজেকে এতোটা কষ্ট না দিলেও পারিস। আই মিন ইশা তো তোর বউ। তাহলে নিজের করে নিতে প্রবলেম কোথায়??
” আচ্ছা তোর কি আমাকে লুচু মনে হয়?? আমি বিয়েটা করেছি জাস্ট নিজের ভিতর থেকে ইনসিকিউরড ফিলটা দূর করার জন্য। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ঘুড়ির নাটাইটা যেন আমার হাতে থাকে তার জন্যই বিয়েটা করেছি। ইশাকে ভোগ করার জন্য নয়। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আমি ইশার শরীরকে নয় ইশাকে ভালোবাসি। বুঝেছিস?? আমি ওকে নাইটি পড়ে আমার রুমে আসতে বারণ করেছি তার কারণ হলো, আমি চাই না যে ওর প্রতি আমার খারাপ দৃষ্টি পড়ুক। তাই বারণ করেছি। নয়তো ইশা যদি আমার সাথে পুরো রাত থাকেও না; আমি কোনো রকম খারাপ কিছু করবোনা কিংবা খারাপ কোনো ইনটেনশন আমার মনে আসবেনা, সেটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবো। আয়াশ নিজেকে কন্ট্রোল করার মতো সেই ক্ষমতা রাখে। আয়াশ অতোটাও চিপ মাইন্ডের নয়। বুঝলি??
” তোর দ্বারাই শুধু এসব সম্ভব ভাই। আর কারো পক্ষে সম্ভব না। মানুষ যেখানে গার্লফ্রেন্ডকে পর্যন্ত ছাড়েনা, সেখানে তুই বিয়ে করা বউকে কিনা….. ইউ আর গ্রেট। ইশা অনেক লাকি যে ও তোর মতো একটা ভালোবাসার মানুষ পেয়েছে। তবে একটা কথা কি জানিস…? তুই যতোই বল না কেন তুই ইশার শরীরকে নয়, বরং ইশাকে ভালোবাসিস। কিন্তু আমিও তো একটা ছেলে; তাই তুই যে ভিতরে ভিতরে কতোটা ঝড় ঝাপটা সামলাস সেটা আমি বেশ ভালো করেই জানি। ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেয়েও দূরে থাকা যে কতোটা যন্ত্রণার সেটা আমাকে বুঝাতে হবেনা।
” বাপ রে, অনেক বুঝদার হয়ে গেছিস মনে হচ্ছে??
” তা তো হয়েইছি। এখন তুই আমাকে এটা বল যে, তোরা বিয়েতে কোথায় যাচ্ছিস??
” ঐ যে আমার ফ্রেন্ড আরিফ আছে না! ওর বোনের গায়ে হলুদ কাল; আর পরশু বিয়ে। সেখানেই যাবো।
” ইশাকেও নিয়ে যাচ্ছিস??
” বোকার মতো প্রশ্ন করিস না। তুই জানিস না ওকে ছাড়া এক মুহূর্তও আমি কোথাও গিয়ে থাকতে পারিনা??
” তাহলে ওকে মিথ্যা বললি কেন??
” মিথ্যা না বলে কি করতাম?? যদি বলতাম আমি তুকে ছাড়া সেখানে থাকতে পারবোনা। তাহলে ম্যাডাম আমার সাথে ভাব নিতো।
” ওওও। তবে যাই বলিস, এতোই যখন ভালোবাসিস চাইলেই কিন্তু একটু সুন্দর করে কথা বলতে পারিস ওর সাথে। সবসময় এভাবে রেগে রেগে কথা বলিস কেন??
” নয়তো কি করতাম?? ম্যাডামকে একটু লাই দিলেই মাথায় চড়ে বসে। তাই ইচ্ছে করে রাগ দেখায়। আচ্ছা তোর সাথে তো এইবার তেমন সময়ও কাটাতে পারিনি। সময় করে আবার আসিস না!
” দেখি ট্রাই করবো।
” তবে হ্যাঁ, মিলিকে আনিস না। তুই একাই আসিস। নয়তো ভাইরে ভাই! অকালেই আমার সংসারটা ভেঙ্গে যাবে। তাই বলছি, তুই একা আসিস। মিলিকে ভুলেও আনিস না।
” হাহাহাহা, কেন?? তোর ম্যাম সাহেব জেলাস ছিলো বুঝি??
” সেই আর বলতে?? মিলিকে একটু সময় দিয়েছি বলে ও যতোদিন ছিলো ততোদিন আমার সাথে রাগ করে কথায় বলেনি। কাল কি হয়েছে জানিস?? কাল আমার ল্যাপটপের জন্য ম্যাডাম আমার রুমে এসেছিলো। কিন্তু তখন আমার ল্যাপটপে মিলি একটা মুভি দেখছিলো। আর মুভির মাঝখানে হঠাৎ একটা কমেডি সিন দেখে মিলি আমাকেও সিনটা দেখতে বলে। আমিও মিলির কথা মতো সিনটা দেখি। আর বুঝিসই তো, কমেডি সিন মানেই হাসিতে গড়াগড়ি খাওয়া। আমরা যখন সিনটা দেখে দেখে হাসছিলাম; তখনই ম্যাডাম আমার রুমে আসে। আর এসে আমাকে আর মিলিকে একসাথে বসে কিছু একটা দেখে দেখে হাসতে দেখে ম্যাডাম সেই রেগে গিয়েছে। আমি তো মুখ দেখেই বুঝে গিয়েছি ম্যাম সাহেবা আমার আমার উপর রাগ করেছে। তবে মিলি যাতে বুঝতে না পারে তার জন্য হাসি মুখে আমার কাছে ল্যাপাটপ চাইলো। ও যে আমার সাথে রেগে আছে সেটা শুধু আমিই জানি। মিলি তো আর জানেনা। আর তাই মিলির সামনে তো এটা নিয়ে কথা বলতে পারিনা, তাই না?? তুই জানিস সব কিছু,, মিলি তো আর জানেনা। তাই আমি ফর্মালিটিস দেখানোর জন্য, সেই সাথে ম্যাডামকে আরেকটু রাগানোর জন্য ল্যাপাটপ কেন লাগবে সেটা জানতে চাইলাম। যদিও ও যখনই ল্যাপটপ লাগবে বলেছে আমি বুঝতে পেরেছি যে এ্যাসাইনমেন্টের জন্য হবে। আর তুই তো জানিসই, ইশা আমার কাছে কিছু চাইলে আমি সেটা না করতে পারিনা কখনো। ও তো আমার প্রাণটা চাইলে আমি সেটাও হাসতে হাসতে দিয়ে দিবো। আর সেখানে ল্যাপটপ তো সামান্য ব্যাপার। কিন্তু ম্যাডাম আমার দুষ্টুমিটা বুঝতে পারিনি। রেগে আমার গলা টিপে ধরে।
” হাহাহাহা, কি বলিস?? তারপর….?
” তারপর আর কি। আমার গলা টিপে ধরে নিজের সব রাগ ঝাড়তে থাকে। ও আসার পর মামির কল পেয়ে মিলি বেলকনিতে মামির সাথে কথা বলতে যায়। আর ইশা যখন আমাকে গলা টিপে ধরে রাগ ঝাড়ছিলো; তখনই মিলি রুমে আসে। আর ইশাকে ঐভাবে আমার গলা টিপে ধরতে দেখে ওকে একটু ঝাড়ি মারে। আর বলে যে ও আর আমি মুভি দেখছিলাম, তাই ল্যাপটপটা এখন দেওয়া যাবেনা। ব্যাস, আগুনে ঘি পড়ে আগুনটা আরও বেশি করে জলে উঠলো।
” ওওও। তার জন্যই কি কাল ইশা ডিনার টেবিলে আঙ্কেলকে ল্যাপটপ আনতে বলেছিলো??
” হুমমমম। আমার সাথে রাগ করে বাবাকে ল্যাপটপ আনতে বলেছে।
” তা তুই তো ওকে তোর রুমে যেতে বলেছিলি। রাগটা কমাতে পেরেছিস??
” সেই আর বলতে?? পুরো এক ঘন্টা লাগিয়ে দিয়েছি শুধু ম্যাডামের রাগ ভাঙ্গাতে।
” পেরেছিস তাহলে?? হাহাহা।
” অবশেষে। আয়াশ পারবেনা এমন কিছু আছে???
” তা ভাই! এক ঘন্টা ধরে করলিটা কি?? না মানে, তুই তো আবার ধমক দেওয়া ছাড়া আর কিছু পারিস না। তা ১৫ দিনের রাগ এক ঘন্টায় ভাঙ্গালি কি করে?? কি এমন করেছিস যে ইশার ১৫ দিনের রাগ এক ঘন্টায় ভেঙ্গে গিয়েছে??
” তুই এটা জেনে কি করবি??
” যদি শিখে রাখি তাহলে কোনো এক সময় হয়তো কাজেও আসতে পারে। তাই জিজ্ঞেস করছিলাম।
” কাউকে ভালোবাসিস??
” তা বাসি। কিন্তু মনে হয়না এই জন্মে তাকে পাবো। শুধু এই জন্মে কেন; হাজার বার জন্ম নিলেও মনে হয়না আমি তাকে পাবো।
” কি বলিস? তুই কাউকে ভালোবাসিস আর সেটা আমি জানিনা?? কে সে, যাকে তুই ভালোবাসিস??
” আছে একজন।
” আমাকে বলা যাবেনা??
” তোকে বলেই বা কি হবে?? আমি যাকে ভালোবাসি, তাকে কখনও পাবোনা। আর অন্য মেয়েদের কাছে গেলে তো আমার হাঁটু কাঁপে। তাই এই জন্মে মন হয় আর আমার দ্বারা প্রেম ভালোবাসা হবেনা।
” তাই নাকি??
” হা***হ, হুমমম। আচ্ছা একটা কথা বলবো??
” কি কথা??
” তুই যে ইশাকে বিয়ে করে নিয়েছিস সেটা তো ইশা জানেনা। রাইট??
” হুমমমম। তো….??
” না মানে বলছিলাম যে, যদি ধর ইশা কোনো কারণে তুদের বিয়েটা জেনে গিয়েছে। তখন ও যদি বিয়েটা মেনে না নেই?? আর উল্টো রিয়েক্ট করে তখন কি করবি?? তখন তো ইশা তোকে ভুল বুঝবে।
” টেনশনের কোনো কারণ নেই। যদি বাই এনি চান্স ও বিয়েটা জেনে যায় আর মেনে না নেই, তাহলে আমাদের ডিভোর্সটা অটোমেটিক হয়ে যাবে।
” মানে?? তুই কি বলছিস আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা।
” মানে হলো ইশা যদি বিয়েটা মেনে না নেই, আর ও যদি বলে যে ও এই বিয়েতে রাজি না; তাহলে বিয়েটা আর থাকবেনা। আই মিন আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। আমি রেজিস্ট্রি পেপারটা সেভাবেই রেডি করেছিলাম।
” বাহ! তোকে তো দেখছি আমি যতোটা স্মার্ট ভাবি, তুই তার থেকেও কয়েক গুণ বেশি স্মার্ট।
” সে তো অবশ্যই। তবে আমি এটা নিয়ে একদম টেনশন করিনা। কারণ আমি জানি, ইশা কখনো বিয়ে নিয়ে রিয়েক্ট করবেনা। বরং শুনলে খুশিই হবে।
” তুই এতোটা জোর দিয়ে কিভাবে বলছিস?? দেখ, এটা কোনো চিপস কিংবা চকলেট নয় যে এনে লুকিয়ে রাখলি আর পরে দিয়ে দিলি। আর ইশাও পেয়ে লাফাতে লাগলো। এটা বিয়ে। আর মেয়েরা কিন্তু এই জিনিসটা নিয়ে একটু বেশিই পজেজিব হয়। হয়তো তুই যা ভাবছিস তার উল্টো ও তো হতে পারে। হতে পারে ইশা তোকে বিয়ে করতেই চায়না। বলা তো যায় না তাই না??
” আরে এতো প্যারা নিস না। তুই আমার প্রতি ইশার দূর্বলতাটা সম্পর্কে জানিস না বলেই এমনটা বলছিস। কিন্তু আমি তো চিনি ইশাকে। তাই আমি কোনো রকম নেগেটিভ ভাবছিনা। আর তুইও ভাবিস না।
” তুই শিওর??
” ডেম শিওর। ইশাকে আমার থেকে ভালো আর কে বা চিনে?? যে মানুষটা আমি বলতেই অন্ধ, সে বিয়েটা অস্বীকার করবে সেটা আমার মনে হয় না। তুই জানিস?? আমি যখন ওকে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করতে বলেছিলাম, আই মিন যখন বললাম যে আমার কিছু শর্ত এই পেপারটিতে উল্লেখ আছে। আর তোকে এখানে সাইন করে প্রুভ করতে হবে যে তুই আমার সব শর্ত মানবি। ও প্রথমে রাজি হয়নি। কিন্তু যখন বললাম যে, যদি সাইন না করে তাহলে আমি ওর সাথে আর কখনো কথা বলবোনা। তখন আর কোনো কথা না বলে বিনা বাক্যে সাইনটা করে দিয়েছিলো। এমনকি পেপারটিতে কি লিখা ছিলো সেটা পর্যন্ত দেখতে চায়নি। কিন্তু যদি আমার জায়গায় অন্য কেউ ওকে এমন একটা শর্ত দিতো, আর এমন একটা পেপারে সাইন করতে বলতো, তাহলে আমি ডেম শিওর ও আগে ১ ঘন্টা ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পেপারটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বে। আমার ইশার উপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। ওকে যদি কেউ আমার বিনিময়ে পুরো বাড়িটাও লিখে দিতে বলেনা, তাহলে ও পুরো বাড়িটাই দিয়ে দিবে।
” তার মানে তুই বলতে চাইছিস ইশা তোর জন্য সব কিছু করতে পারে। তাই তো??
” অফ কোর্স।।
” তুই শিওর ও তোর জন্য যে কোনো কিছু করতে রাজি হবে??
” বললাম তো আমার ইশাকে আমার থেকে বেশি আর কেউ চিনেনা।
” তাহলে চল একটা পরীক্ষা হয়ে যাক।
” ওকে ডান। তবে আমি যখন বলবো তখন করিস।
” ওকে। দেখি তুই কতোটা চিনিস ইশাকে?? ”
চলবে……
®আয়মন সিদ্দিকা উর্মি