রোদরঞ্জন #পর্ব_৪ #আসরিফা_মেহনাজ_চিত্রা

0
197

#রোদরঞ্জন
#পর্ব_৪
#আসরিফা_মেহনাজ_চিত্রা

[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ। কার্টেসি সহ কোনো পেজেও কপি করা যাবে না।]
.
.
জেহফিল চাদর হাতে ঘ্রাণ নিয়েই যাচ্ছে গত দুই ঘন্টা ধরে। এই চাদরে ইনানের ঘ্রাণ লেগে আছে..
তারপর নেশাগ্রস্তের ন্যায় বালিশটা হাতে নিলো যেটায় ইনান মাথা রেখেছিল। গভীরভাবে টেনে নিলো সকল ঘ্রাণ। কী মিষ্টি.. কী স্নিগ্ধ ঘ্রাণ!! ইনান স্বশরীরে উপস্থিত না থাকলেও সে যেন তার শরীরের ঘ্রাণ ছেড়ে গেছে…জেহফিলের কাছে। মিষ্টি সুবাস ভেসে বেড়াচ্ছে পুরো রুমটায়। জেহফিল বালিশটা আর চাদরটা ধরে মুখের সামনে আনে। অনবরত চুমু খেতে থাকে যেখানে যেখানে ইনানের স্পর্শ লেগেছিল। আর ভাবে, ইনানের কয়েক ঘন্টার উপস্থিতিতে রুমটা নেশাতুর ঘ্রাণে মাতোয়ারা চারিদিক। আর যখন ইনান চিরস্থায়ীভাবে এই রুমটায় থাকবে তখন কেমন হবে? স্বর্গ হয়ে যাবে রুমটা!! সুবাসিত হবে তার ঘর..তার মন..

জেহফিলের চোখ চকচক করে উঠে। তার বাটারফ্লাই আসবে.. তার এই নরক জীবনকে স্বর্গে পরিণত করবে.. তার কাছাকাছি থাকবে… সবসময়.. সারাজীবন…উফফ!! আর ভাবতে পারছে না জেহফিল! কেমন‌ শীতল বাতাসে তার ভেতরটা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। অদৃশ্য কিন্তু তীব্র অনুভূতিতে প্রগাঢ় হয়ে উঠছে তার হৃদয়। ইনানকে কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে। চাদর আর বালিশ নিজের বুকে শক্ত করে চেপে ধরে সে, যেন ইনানকে জড়িয়ে ধরেছে।

‘বাটারফ্লাই..আমার বাটারফ্লাই..ইনান…’ পাগলের মতো বিড়বিড় করে চলেছে জেহফিল, যেন প্রয়োজনীয় কোনো মন্ত্র পাঠ করছে, যেটা পড়া বন্ধ করলেই তার জীবন শেষ।

হুট করে জেহফিল চোখ খুলল, যেন তার খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা স্মরণে এসেছে। সে বালিশটা শক্ত করে এক হাতে চেপে ধরে রুমের বাহিরে আসলো। ব্যস্ত চোখে চারিদিকে নজর বুলালো। এই ঘরটাতে চারটা বেডরুম, ড্রয়িং, ডাইনিং রুম আর কিচেন। ঘরের সবকিছু এলোমেলো। জায়গামতো কোনো কিছুই নেই। কবে সে ঘরের যত্ন নিয়েছে? মনে পড়ে না জেহফিলের। হয়তো কোনোদিনই না। তার বাটারফ্লাই যখন আসবে তখন কী সে নাক সিঁটকাবে না? জেহফিলকে বকা দিবে? নাহ! সে তার বাটারফ্লাইয়ের কোনো কষ্ট হতে দেবে না। পরীর জায়গা তো স্বর্গে, তাহলে ইনান কীভাবে এই নরকে থাকবে! সব গুছাতে হবে, সব। ইনানের যাতে কোনো কষ্ট না হয় তার সব ব্যবস্থা করতে হবে। কিচেন কাউন্টার হতে জুতার ক্যাবিনেট সব সাজাতে হবে।

জেহফিল কাজে লেগে পড়ল। যে কিনা কোনোদিন ড্রয়িং রুমের লাইট পর্যন্তও জ্বালায়নি সে আজ সোফার নিচেও পরিস্কার করা বাদ দিলো না। ইনান যদি এমন অগছালো ঘর দেখে ক্ষুব্ধ হয়? যদি রেগে যায় তার উপর? না, তা হতে দিবে না সে।

জেহফিলের চুল উস্কখুস্ক, ধূসর মণিজোড়ায় মাদকতা, ভারী নিঃশ্বাসের সঙ্গে একাধারে একটাই নাম জপ করছে আর ঘর গুছাচ্ছে। এ এক অন্য জেহফিল যেন.. যার দুনিয়া সম্পর্কে কোনো ধ্যানজ্ঞান নেই, যার ধ্যান ধারণা জুড়ে আছে ইনান..ইনান এবং শুধুই ইনান।

.

.

শরৎ মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে। এইমাত্র তার গালে সপাটে চড় পড়েছে। সামনেই তার বড় বোন রুহি কোমড়ে হাত দিয়ে ফুঁসছে।

চাপা চিৎকার করে উঠে রুহি, ‘তোর এসব কাণ্ড যদি আম্মু আব্বু শুনে তাহলে কী হবে ভাবতে পারছিস? ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিবে। বাড়ির সম্মান সব ধুলোয় মিশবে যদি এসব জানাজানি হয়।’

শরৎও উল্টো চেঁচিয়ে উঠে, ‘তুই যদি কাউকে না বলিস তাহলে কার বাপের সাধ্য আছে এসব জানা..’

শরৎ এর কথা শেষ করতে দিলো না রুহি, তার আগেই আরেকটা চড় পড়ল শরৎ এর গালে।

‘একদম মুখে মুখে তর্ক করবি না বেয়াদব! বাজে কাণ্ড ঘটিয়ে আবার বড় বড় কথা! ভার্সিটি উঠেছ বলেই কি ছাড় পেয়ে গেছ নাকি? ডানা গজিয়েছে তাই না? কেমন ফ্রেন্ডদের সাথে মিশছো আমার খুব ভালো করেই জানা আছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এইজন্যই বাড়ি ফিরোনি তাই না? ফ্রেন্ডের বাসার নাম করে এসব করে বেরাচ্ছ? আব্বুকে বলে যদি পকেটমানি কেটে ফেলি তাহলেই একটা শিক্ষা হবে তোর, জানোয়া’র!’ ক্রোধান্বিত গলায় বলল রুহি।

এবার একটু দমলো শরৎ, স্তিমিত গলায় বলল, ‘আব্বুকেকে কিছুই বলবে না তুমি আপু। প্লিজ!’

‘তাহলে এসব বাজে আড্ডা ছাড়ো। মদ গাঁ’জা হাতে পুলিশের কাছে ধরা খেয়ে মার খেয়েছো, এটা যদি আব্বু জানে তোমাকে আস্ত রাখবে বলে ভেবেছ?’ দাঁতে দাঁত চেপে বলল রুহি।

‘আস্তে আপু আস্তে, প্লিজ দোহাই লাগে, এত চিৎকার করো না, আম্মু শুনতে পাবে।’ দুহাত জোড় করে অনুরোধ করল শরৎ।

রুহি ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করল। এক আঙুল তুলে শাসালো ভাইকে, ‘আমি যদি আর কখনোও দেখি তোকে ওসব ছেলেদের সাথে মিশতে, তাহলে মাথায় রাখিস, আমিও রুহি চৌধুরী, তোকে ঠিক পথে আনতে আর ঘরের সম্মান বাঁচাতে যা করার লাগে সবটা করব।’

‘আচ্ছা, আচ্ছা বুঝেছি। এখন তুমি শান্ত হও আপু। আম্মু যদি শুনতে পায়, মে’রে ফেলবে। প্লিজ আপু।’

‘মনে থাকে যেন।’ রুহি হুমকি দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

শরৎ বিরক্ত মুখে গিয়ে দাঁড়ালো আয়নার সামনে। তার কপালে ব্যান্ডেজ, ঠোঁটে কাটা, এক চোখ লাল। তার হ্যান্ডসাম ফেসটার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে শালার পুলিশ। রাগে হাত মুঠো করে দেয়লে আঘাত করল। তার শরীর কাঁপছে ক্রোধে। এই বয়সে একটু আধটু এসব করেই, তাই বলে মা’রা লাগবে!! তিনদিন হয়ে গেছে তাও তার মা’রের দাগ যায়নি! ছাড়বে না সে কাউকে!

কলিংবেলের শব্দ পেয়ে রুহি যায় দরজা খুলতে। দরজা খুলতেই দেখে ইনান আর ফারা দাঁড়িয়ে আছে। তারা পরিচয় দিলো শরৎয়ের ফ্রেন্ড হয়। রুহি হাসিমুখে তাদের ভেতরে আসতে বলল।

ইনান রুহিকে দেখেই একটু ধাক্কা খেল প্রথমে‌। এত সুন্দর মেয়ে হয় কীভাবে? কী নিখুঁত স্কিন! না আছে কোনো ব্রণ না আছে কোনো স্পট! চুলগুলো কাঁধ পর্যন্ত ছাঁটা, নিচের অংশ বাদামী রং করা।

ইনান মুগ্ধ হয়ে বিড়বিড় করে বলল, ‘মনে হচ্ছে ভুলে কোনো নায়িকার ঘরে এসে গেছি!’

ফারা ইনানের এমন আজগুবি কথা শুনে তার পেটে কনুই দিয়ে আঘাত করল, ‘আরে ছাগী, উনি নায়িকাই বলতে গেলে, মডেল উনি, টিভিতে অ্যাড দেখোস না?’

ইনানের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। তাইতো বলে সে, এত চেনা চেনা লাগে তবুও কেন অচেনা! বিস্ময়ে তার হাত মুখের কাছে চলে গেল, ‘ও গড! উনিই কি সেই রুহি চৌধুরী যে রামেনের একটা অ্যাড করেছিল?’

‘হ্যাঁ, এখন গাধীর মতো আচরণ করা বন্ধ কর। এত গলে যাস না, তাহলে তোর দাম কমে যাবে।’

ইনান কাশি দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। রুহি তাদের সোফায় বসতে বলে।

‘আমি শরৎয়ের বোন, রুহি। তোমরা নিশ্চয়ই একই ডিপার্টমেন্টের?’

‘জি আপু, আজ আমাদের একটা প্রোগ্রাম ছিল, কিন্তু শরৎ গত এক সপ্তাহ ধরেই ভার্সিটি আসেনি আর না ফোন করে পাওয়া গেছে। তাই ওর খোঁজেই এসেছিলাম।’ স্মিত হেসে জবাব দিলো ইনান।

রুহির নজর বারবার ইনানের দিকেই যাচ্ছিল। খুঁটে খুঁটে দেখছিল সে ইনানকে। ইনানকে সে চিনে, ভালো করেই চিনে।

শরৎ সেই মুহুর্তে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো। তার মুখ থমথমে। ফারাদের দেখে সে কেমন নীরসভাবে বলল, ‘তোরা এখানে কেন?’

ইনান আর ফারা দুজনেই শরৎকে দেখে কিছুটা অবাক হয়, ‘তোর কী হয়েছে? মুখে ব্যান্ডেজ কেন?’

শরৎ থতমত খেয়ে বলল, ‘ওই ইশে, হালকা পাতলা অ্যাক্সিডেন্ট করেছিলাম। বাদ দে। তোরা হঠাৎ?’

‘আজকে যে প্রোগ্রাম আছে ভুলে গেছিলি?’

‘ওহ, আমি যাবো না, তোরা যা। ভাল্লাগতেছে না।’ এই বলে শরৎ রুমে ফেরার জন্য পা বাড়াল। তারপর হঠাৎ কী মনে করে থমকে দাঁড়াল। ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকিয়ে বলল, ‘আচ্ছা আসবোনে, বিকেল তিনটায় থাকবো জায়গামতো।’

.

.

ইনান, ফারা, টয়া, মুগ্ধ, শরৎ একজোট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের হাত সাইকেলের উপরে আর কাঁধে ছোট্ট ব্যাগ, এমন মাঝেমধ্যেই তারা এদিকসেদিক ঘুরতে বেরোয়।‌ তবে আজ তারা সাইকেল নিয়ে যেদিকে দুচোখ যায় সেদিকে ঘুরবে‌। অ্যাডভেঞ্চার বলা চলে এক প্রকার। ইনান কালো টপ আর জিন্স পরে মাথায় হেলমেট চড়িয়ে সাইকেলে বসল।

‘ফাঁকা কোনো রাস্তায় সাইকেল চালালে ভালো হয়।’

শরৎ ঠেস মেরে বলল, ‘ভয় পাস নাকি? পাছে কোনো গাড়ি ঠুয়া মেরে দেয়?’

ইনান চোখ রাঙায়, ‘বাজে বকিস না, ছোটোবেলা থেকেই রাস্তাঘাটে সাইকেল চালানোর অভ্যাস আছে আমার, আমি বলছি কারণ সবাই একসাথে পাশপাশি চালাতে পারবো, ভিডিও করতে সুবিধা হবে।’

ফারা তাড়া দিলো, ‘তোরা ঝগড়া বাদ দে তো। আকাশের অবস্থা ভালো ঠেকছে না।’

সবাই আকাশের দিকে তাকালো। কালো মেঘ ধীরে ধীরে নীল আকাশকে ঢেকে দিচ্ছে।

‘মেঘ কেটে যাবে বোধহয়, প্যারা নিস না।’ ইনান বলল।

মেঘ সরে যাবে এই আশায় সবাই শুরু করল সাইকেল চালানো। চালাতে চালাতে তারা হঠাৎ জঙ্গলে চলে আসলো, লতাপাতা চাকায় পিষ্ট করে একে একে যেতে লাগল অদূরে। বাতাসের ঝাপটায় ইনানের মন পুলকিত হয়, নতুন অভিজ্ঞতায় রোমাঞ্চিত অনুভব করে। প্যাডেলে পা চালিয়ে যত দ্রুত যাওয়া যায় সেই চেষ্টা করতে থাকে সে। পেছনের বন্ধুরা কে কী বলছে কিছুই মাথায় ঢুকে না তার।

ইনান ছাড়া বাকি সবাই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়েছে।

‘এই মেয়ে কি কালা হয়ে গেল নাকি, এত করে ডাকছি শুনে না কেন?’ ফারা বিরক্ত গলায় বলল।

‘ও তো অ্যাডভেঞ্চার ফ্রিক, নেইচার দেখেছে এখন তাই মাথাও আউলিয়ে গেছে।’ টয়া বলে।

‘আকাশের অবস্থা একদমই ভালো না। আই ডোন্ট থিংক আমাদের বেশিদূর যাওয়া উচিত হবে। অলরেডি গুড়িঁগুড়িঁ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। উই শ্যুড গো ব্যাক।’ ফারা চিন্তিত গলায় বলল।

শরৎ বলে উঠে, ‘তোরা ব্যাক কর। এইখান থেকে মেবি মেইন রাস্তায় যাওয়া যাবে, ওইখানেই বোধহয় ইনান থাকবে। আমি যাচ্ছি ওর কাছে। একা একা যাওয়াটা ওর জন্য রিস্ক।’

মুগ্ধ বলল, ‘যেতে পারবি? নাকি সাথে যাওয়া লাগবে?’

‘নো প্রব, তুই এই দুটো চুন্নিকে নিয়ে চলে যা, আমি আরেক চুন্নিকে নিয়ে আসছি। আর তোরা সোজা তোদের বাসাতেই চলে যা। ওয়েট করা লাগবে না।’

ফারা বলে,’তুই ইনানকে দেখতে পেলে কল দিয়ে জানাস আমাদেরকে। বাড়িতে পৌঁছালেও কল দিস।’

‘আচ্ছা, গেলাম। বাই‌।’

শরৎ সাইকেল টান দিলো ইনানের যাওয়ার পথে। বাকিরা সব ফিরে গেল আকাশের বেগতিক অবস্থা দেখে।

বিকেল পাঁচটা, ঝুম বৃষ্টি পড়তে আরম্ভ করল। হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকে উঠছে। ভেজা মাটির রাস্তায় সাইকেল চালাতে বেশ বেগ পোহাতে হলো ইনানের।‌সাইকেল আরেক হাতে ধরে ছাতা মাথায় সাবধানে হাঁটতে লাগল। শরৎ একটু আগে ফোন করেছে তাকে, বলেছে যেখানে আছে সেখানেই থাকতে, বাকিরা নাকি সব চলে গেছে। ইনানের অবশ্য তাতে মাথা ব্যথা নেই। সে যে উপভোগ করছে এটাই মেইন কথা। তবে এবার সত্যিই যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। শরৎ সেই কখন আসবে বলেও আসছে না। আবার তাকে ধোঁকা দিয়ে চলে গেল কিনা কে জানে! নেটও নেই এই জঙ্গলে। এর চেয়ে ভালো মেইন রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ানো, একটা গাড়ির সন্ধান পেলেই হয়েছে। ইনান হাঁটতে হাঁটতে কোথায় চলে এলো জানে না, তবে মাটির রাস্তাটা যেদিকে গিয়েছে সেই পথেই যাচ্ছে সে। আরেকটু হাঁটতেই অদূরে পাকা রাস্তা দেখতে পেল সে।

এপাশের মাটির রাস্তাটা ঢাল বেয়ে নিচে চলে গেছে। কিছুটা পাহাড়ের মতো। অসাবধানে পা ফেললেই কুপোকাত। বৃষ্টিও বেড়ে চলেছে ক্ষণে ক্ষণে। ধীরে ধীরে আঁধারে ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ। এই নিঝুম নীরব জঙ্গলে হঠাৎ একা হয়ে যাওয়াতে ইনানের কেমন ভয় ভয় শুরু করল। গাছের বড় বড় পাতাগুলোতে বৃষ্টির পানি পড়ার আওয়াজ তার ভয়কে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল। বারবার মনে হচ্ছে কেউ তাকে ফলো করছে, পেছন ফিরে তাকাচ্ছে হে বারবার। কিন্তু এই ঘন ঝোপের কারণে কাউকেই নজরে আসছে না। অজানা আশঙ্কায় ইনানের সারা শরীর কেঁপে উঠল। তাও নিজেকে সামলে হাঁটতে শুরু করল।

বড় রাস্তার দিকে সে যতই এগিয়ে যাচ্ছিল ততই রাস্তার পাশের গাছগুলো কেমন চেনা চেনা লাগছিল। আকাশ ছোঁয়া গাছ, যেগুলো রাস্তাকে আড়াল করে রেখেছে দিনের আলো হতে।

হাঁটার মাঝেই ইনান পেছনে কারো উপস্থিতি টের পেলো। পেছনে ফেরার সময়টুকু না দিয়েই পেছনে থাকা আগন্তুক ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো ইনানকে। গগন কাঁপিয়ে চিৎকার করে উঠল ইনান। গাছের খোঁচা খোঁচা ডালের উপর গড়িয়ে গড়িয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছে ইনান। এতকিছুর মাঝেও ইনান আগন্তুককে দেখতে পেল না ঠিকভাবে, শুধু দেখল অন্ধকারে বৃষ্টিতে ভেজা এক অবয়বকে।

.
.
চলবে..

(দয়া করে মন্তব্য করবেন)

গ্রুপ লিংক
https://facebook.com/groups/1031660127365464/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here