#অদৃষ্টের_মৃগতৃষ্ণা (১৪)
#লেখনীতে_প্রোপীতা_নিউমী
১৪. (Edited)
সময়কাল: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯
(অতীত)
কাশফিদের দোতলার বসার ঘরটায় সে, অন্তু, তরী আর মাহিন বসে একাডেমিক ওয়ার্কে ব্যাস্ত। তাদের সবার কেন্দ্রমণি পড়ুয়া অন্তু, যে এটা ওটা খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে পড়া চোর ফারাবী চুলে কলম প্যাঁচিয়ে আটকে ফেলেছে এখন আপাদত সে চুল থেকে কলম উদ্ধার করতে ক্রিয়ারত। ঈশান বইয়ের দিকে তাঁকিয়ে কলম দিয়ে একবার আঁকিবুকি করছে তো আরেকবার পড়ছে। মোটামুটি দুইজন শান্ত কারণ কাশফির কঠিন নির্দেশ জারি করেছে — ‘ যে পড়া ব্যতীত টু শব্দ করবে তাকে বিনা বাক্যে বের করে দিবে।’
আতিকুল রহমান ছেলে মেয়ে গুলোকে একবার দেখে আসলেন এরপর কিচেনে গিয়ে তিনকাপ চা করে নিলেন। বাসায় কিছুক্ষণ পর তার এক পরিচিত এস্টেট এজেন্ট আসছেন, তিনি অবশ্যই এস্টেট এজেন্সি (Estate Agency) গুলোতে এতদিন খবর দিয়ে রেখেছিলেন। তাছাড়া ডেভেলপারদের কাছে গেলে হাতে মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হবে, সেই সামর্থ্য তার এখন নেই।
মিনিট খানেক বাদেই বেল বাজলে তিনি দরজা খুলে দাঁড়ান। সুট পরিহিতা দুইজন ত্রিশ ঊর্ধ্ব লোক ভিতরে প্রবেশ করে। তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় জন তাকে সালাম দিতেই তিনি পিছনে ফিরে চমকে দাঁড়ান। পরপর চিনতে পেরে মুখে হাঁসির রেখা ফুটে উঠলো,
“একি দিগন্ত যে!”
তাদের এলাকার নামকরা চৌধুরী বাড়ীর ছেলে, দিগন্তের বাবা সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে আতিকুর রহমানকে ভীষন শ্রদ্ধা করেন এবং তার মা নীলা চৌধুরী, তিনিও বেশ আন্তরিক।
“আমি তো নাম জিজ্ঞেস করলাম না ক্লায়েন্টের নাম। তুমি অন্তত জানিয়ে দিতে। এখন তো কিছু আয়োজন করতেই পারব না।”
“তার প্রয়োজন নেই আঙ্কেল, আপনি চিন্তিত হবেন না প্লিজ, আপনার সাথে দেখা হয়েছে এই অনেক।”
তিনি দিগন্তের ভদ্রতায় মোহিত না হয়ে পারলেন না, ছেলেটাকে কিনা তার ভীষন পছন্দের। তিনি মেহমানদের বসতে বলে হালকা চা, নাস্তা নিয়ে এলেন। এরপর বসে আলাপ আলোচনা শুরু করলেন।
এক ঘণ্টা পার হতে না হতেই ফারাবীর হাত পা নিশপিশ করছে, এদের পড়ার চোটে কিছু করতেও পারছেনা। বাহানাবাজি করে বের হতেই তার মুখে হাঁসি ফুটে ওঠে, গুনগুন সুরে নামতে গিয়ে চোখ যায় নিচে দাড়িয়ে থাকা দিগন্তের পানে। অতঃপর সে আটকে গেলো যেন, দিগন্ত তার আশেপাশে থাকা মানে নিয়ম করে সে প্রতি বেলায় প্রতি পদে বকা খাবে। হুট করে দিগন্ত মাথা একপাশে করে তাকাতেই ফারাবীর থমকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পেলো তারপর ফারাবীকে আর কে পায় এক ছুট দিয়ে সে আবার রূমে এসে পড়ায় মনোনিবেশ করে। এই ঝামেলা দিগন্ত থেকে তার অপছন্দের পড়ালেখা ঢের ভালো।
হবু জামাই না ছাই!
***
অন্তুর মনের সাদা পাতার কালো কালিতে এখন রংধনুর রঙ খেলা করে। আজকাল সব ঋতু বসন্তময় মনে হয়। এই যে কাশফি তার কাছ থেকে পড়া বুঝে নিতে চায় সেটা তার ভালো লাগে। সে বুঝিয়ে দেয় আর কাশফি শান্তশিষ্ট হয়ে বুঝে নেয় সেটাও তার ভালো লাগে। এখন সে পড়া বুঝানোর পর কাশফি একটা মিঠা হাঁসি দিয়েছে সেটাও ভীষন ভালো লাগছে। খাতাটা বন্ধ করে কাশফি তার নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে পরক্ষণে টেবলের দিকে চেয়ে কিছুটা আফসোস নিয়ে বলল,
“আমার মতো বেয়াক্কেল কে বোঝাতে বোঝাতে তোমার তো পড়াই হলো না।”
“কি যে বলো! কাউকে বুঝিয়ে দিলে নিজের পড়াটা আরো ভালো মনে থাকে?”
কাশফির চোঁখে খুশির ঝলক,
“সত্যি?”
কাশফিকে কনভিন্স করার জন্য সে হেসে মাথা নেড়ে জানালো। তৎক্ষনাৎ কাশফি ছোট টেবিল থেকে আরো কিছু বই অন্তু আর তার মাঝ বরাবর এনে রাখে। এরপর উদ্যমী চোঁখে অন্তুর উদ্দ্যেশ্যে বলে,
“তাহলে প্লিজ এগুলোও বুঝিয়ে দেবে?”
“এক দিনে তো সম্ভব না।”
“তাহলে অন্য কোনো দিন?”
“ইনশা’আল্লাহ।”
পড়া শেষ করতে করতে আরো ঘন্টাখানেক লাগলো। অন্তু কাশফিকে কয়েকটা বইয়ের নাম বলছে, তারা দুইজন এখনো পড়ার টপিক নিয়ে বলাবলি করছে। তরী ব্যাগ বই গুছিয়ে সবার আগেই নেমে পরেছে তাই বসার ঘরে দিগন্তকে দেখে প্রথমে চমকে গেলেও পরে ফারাবীর চুপচাপ থাকার কাহিনী সহজেই উদঘাটন করতে পেরেছে। কাশফি বন্ধুবান্ধবদের বিদায় দিতে নেমে এসেছে, এসেই দিগন্তকে দেখে তার চোখ ছানাবড়া এরপর কাছে গিয়ে সুন্দর করে টেনে সালাম দিয়ে দাঁড়ায়। তার চোখে মুখে দুষ্টুমির আভাস, কাশফি ভ্রুদয় নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“দিগন্ত ভাইয়া, ফারাবীকে নিতে এসেছেন বুঝি?”
এজেন্টের সাথে দিগন্তের কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগে সে আসলেই ফারাবীর অপেক্ষা করছিল।
“না কাজে এসেছি তবে আপনার বান্ধবীকে একবার দেখেছিলাম বটে। তো কোথায় রানী ভিক্টোরিয়া?”
তরীর হিসাব মিলে গেছে দেখে, কিছুটা বিরক্ত প্রকাশে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পরক্ষণে চোখ উল্টে বলে,
“তাই তো ভাবছি কিভাবে আপনার বউ এতক্ষন শান্ত হয়ে আছে? How?”
মাথায় শয়তানি বুদ্ধি চেপে ঈশান আর দেরী করল না। বেশ জোর গলায় স্বর খানিকটা উচুঁ করে বলে —
“দিগন্ত ভাইয়া আপনি বরং বসার ঘরটায় যান, সেখানটা ফাঁকা কেউ নেই আপনি সেখানেই রেস্ট করুন।”
দিগন্তের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এতক্ষন অন্তুর দিকে ছিল, ছেলেটা কাশফির সাথে গা ঘেষার স্বভাব। এই নিয়ে ঝামেলা কম হবে না। সে তৎক্ষণাৎ সিঁড়ি দিয়ে চিরচেনা নুপুরের ধ্বনি পেতেই সেদিকে দৃষ্টি ফেলে। বুকে ব্যাগ জড়িয়ে নাক ফুলিয়ে ফারাবী নামছে। ভাবখানা এমন যে আজ দিগন্তের দিকে তাকাবেই না। কিন্তু যেই দিগন্ত গম্ভির স্বরে ‘ফারাবী’ বলে ডাক দিয়েছে সে ভদ্র মেয়ের মতো গিয়ে দিগন্তের সামনে দাঁড়ায়। দিগন্তকে অমান্য করার সাধ্য ভীতু ফারাবীর নেই।
বিনা বাক্যে তার শক্ত পেশল হাতে ফারাবীর ছোট নরম হাত খানা ঢেকে ফেলে, আর এদিক ওদিক না ফিরে ফারাবীকে নিয়ে হাঁটা ধরল। যাওয়ায় পথে অবশ্য কাশফি লাঞ্চ করার কথা বলেছিল কিন্তু দিগন্ত তাড়া দেখিয়ে চলে যায়।
হাঁসফাঁস করতে থাকা অন্তু বার বার পিছনে ফিরে কাশফির দিকে চায়। কাশফি তরীর সাথে কি কি নিয়ে কথা বলছে আর দুইজন মুখে হাত চেপে হাসছে। সে কাশফিকে নরম স্বরে ডাকলো। কাশফি মাথা তুলে চাইতেই সে ঘাড়ে হাত রেখে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বলে,
“কাল লাইব্রেরীতে কিছু কাজ ছিল তুমিও সাথে যাবে? মানে…”
অন্তুর কথা শেষ হওয়ার আগেই তরী কাশফির উদ্দেশ্যে বলে— “হ্যা রে কাল আমারও কিছু বই কিনার আছে বের হবি?”
“বের হওয়া যাবে তবে কায়েসকে একা রেখে যেতে হবে।”
“কায়সের জন্য ঈশান আছে। কিরে রাখতে পারবি না?”
তরীর ভ্রু নাচানোর দিকে ঈশান কটমট করে তাকায়। রাগে ফুলেফেঁপে উঠলেও এখন কিছু করার নাই। গত সপ্তাহে সে ফারাবীর পাঁচশত টাকা মেরে খেয়েছিল এসব ভুলোমনা ফারাবী মানেই রাখেনি ভেবে ঈশান মনে মনে বেজায় খুশী। তবে বিপত্তি ঘটেই গেলো, এই গুপ্ত বিষয় নিয়ে তরী জেনে যাওয়ার পর থেকেই যথারীতি ব্ল্যাকমেইল করে আসছে।
তাঁদের হতে কিছুটা দূরে দিগন্তের গাড়ী পার্ক করা। হনহন করে এসে দিগন্ত গাড়ির দরজা খুলে ফারাবীর গাড়ীতে ওঠার অপেক্ষা করছে। ফারাবীকে অনড় দেখে তার অঙ্গবিন্যাস অনমনীয় রেখে তার একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। পরপর নতমস্তক ফারাবীর দিকে দৃষ্টি ফেলে, তার শক্ত কন্ঠ খানিকটা নামিয়ে বলে— “কোন কথা না বলে সোজা গাড়ীতে উঠ।”
“যাব না।”
কালো ছায়ায় আচ্ছাদিত মুখ খানা আড়াল করে ফারাবী ছোট্ট স্বরে প্রতিবাদ করলো। দিগন্ত কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে চায়, ফারাবীর হাবভাব লক্ষ্য করে ভ্রূ জোড়া কুঁচকে বলল — “কী?”
তৎক্ষণাৎ ফারাবীর সম্পূর্ন উওর পাল্টে গেলো,
“এই জামায় আমি বেরোবো না।”
“প্রয়োজন পড়লে এক আলমারি লেহেঙ্গা কিনে দিবো এখন কথা বাড়াবি তো নির্ঘাত কপালে শনি আছে।”
ফারাবী মুখ দিয়ে বিরক্ত সূচক শব্দ বের করে বলল,
“আমি লেহেঙ্গার কথা বলেছি নাকি?”
“তো কি নাইটি লাগবে?”
“ছিঃ!!!”
“সেটাও কিনে দিবো প্রয়োজনে। বেশি কথা কম, চল!”
***
কাশফির পিঠ ছেয়ে যাওয়া মোটামুটি লম্বা চুল উচুঁ ঝুটিতে বেঁধেছে, স্কুল ড্রেস ছাড়া আজ সে প্রথম কাশফিকে দেখছে। হাঁটু সমান ঢিলাঢালা টপস আর জিন্স পরে কায়েস সহ বেরিয়েছে প্রথমে খুশী হলেও আশেপাশে চোখ পরায় তার মুখের কোমল হাসি উবে গিয়েছে। অন্তু আগে এসেই এতক্ষন তার জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল, সে ভেবেছিল তার আর কাশফির কিছুক্ষণ না হয় একা থাকা হবে। তা আর হলো কই? ঈশান আর তরীকে কাশফির সাথে বের হতে হতে দেখে সে বেজায় বিরক্ত হলো।
লাইব্রেরীতে আসার পর অন্তু এটা ওটা দেখিয়ে বুঝিয়ে কাশফির ধ্যান নিজ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছে। অবশ্যই অতো বেগ পোহাতে হয়নি তার। তরী একটা বই খুলে যে পড়তে বসেছে তার হেলদোল নেই আর ঈশান ও কায়েস এক পাশে নিরীহর মতো আছে। তারা আদো জানে না তাদের কেন এখানে আনা হয়েছে।
কাশফি আর অন্তু কয়েকটা বই বাছাই করে নিয়ে টেবিলে রেখে বসেছে মাত্র। তরীকে বাইরের দিকে তাকিয়ে দাঁত কড়মড় করতে দেখে সে সেদিকে দৃষ্টি ফেলে। তৎক্ষনাৎ তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো। পুরাতন শার্ট গায়ে, ছিপছিপে গড়নের একটা লোক লাল লাল চোখে তাদের চেয়ে অনবরত বাজে ইশারা ছুঁড়ছে। তার দৃষ্টিতে নোংরামি, নারী দেহের প্রতি ক্ষুদা আর কামুকতা। দেখে বুঝাই যাচ্ছে দিনে দুপুরে গাঁজা খেয়ে মাতাল হয়ে ফিরছে। তার দেখাদেখি তার দলবলের ছেলে পেলেরাও লাই পেয়েছে তারা বাজে মন্তব্য ছুঁড়ছে। এই লাইব্রেরীতে তারা আগেও এসেছে তবে আসেপাশে এমন বিশ্রী কিছুর স্বীকার কখনই হয়নি।
কাশফির সম্পূর্ন চেহারা পাল্টে যেতে দেখা গেলো। মনে হচ্ছে তার সারা দেহে ময়লা এসে ভিড়েছে। ঘর্মাক্ত হাত পা এখন ধোঁয়ার জন্য নিশপিশ করছে। এমন সবসময় হয় তা না, মাঝের মধ্যেই হয়। তার অস্বস্থি আরো বেড়ে যাওয়ায় পূর্বেই সে হাত মুষ্টিমেয় করে সবাই কে শক্ত কন্ঠে জানায়,
“আমরা এক্ষুনি বের হচ্ছি।”
এতক্ষণে অন্তুরও চোখে পড়ে গিয়েছে তাই সে আর কথা বাড়ালো না।
কাশফি বই গুলো নিয়ে উঠতে যাবে তার আগেই চি’ল্লা’চি’ল্লি শোনা যায়। তাকাতেই বখাটে ছেলেগুলোর মুখে স্পষ্ট আতঙ্ক দেখতে পেলো। এক এক জন ছুটে চলেছে পালানোর উদ্দ্যেশ্যে। সবকটা পালানোর পরপরই একটা কলো গাড়ী এসে থামে তাদের দাঁড়ানো জায়গাটায়, গাড়ীর গ্লাস রোল ডাউন হতেই একজন পুরুষের শক্ত মুখশ্রী দেখা গেলো, বাম গাল জুড়ে বাকা একটা কাটা দাগ, দাগটা পুরনো মনে হচ্ছে। গায়ের বর্ণটা চকচকে তামাটে। তীক্ষ্ণ শিকারী চোঁখের নিচে তার বাঁকা নাকের পাটাতন রাগে লাল হয়ে আছে। সুঠাম দেহের বডিবিল্ডারের ন্যায় পেশল শক্ত হাত বের করে আঙুল দিয়ে একজন কে ইশারা দেয়। একজন মধ্যবয়স্ক লোক গুটিশুটি মেরে বসে ছিল সে এক ঈশারায় বের হয়ে আসে।
“কিরে মিজান, কু’ত্তা’র বা’চ্চা গুলো কোথায় পালিয়েছে রে?”
সম্পূর্ন জায়গাটা যেন কেঁপে উঠলো তার ভয়ংকর রাগী কন্ঠে। তার কথাগুলোর মধ্যে সিলেটের ভাষার টান আসছিল যেন। মিজান ভয়ার্ত চোঁখে একটা ঢোক গিলে আঙ্গুলের ঈশারায় ছেলে পেলে গুলোর প্রস্থানকৃত রাস্তার পানে দেখায়,
“স্যার হেরা কইসে আপনি ব্রিজের ঐদিকে যাইবেন না হেই ধারেই গেছে লাগের।”
লোকটা ততক্ষনে ফোনে কল করে নেয়, ইয়ারপডস কানে গুঁজে হাতে ঈশারায় মিজানকে চলে যেতে বলে সে। অপর লাইনের লোকটা হয়ত কল রিসিভ করা মাত্রই সে নিজের পুরুষালী শক্ত কর্কশ শব্দে বলে উঠলো—
“ইরহাম হকি স্টিক আর তায়েফকে নিয়ে ব্রিজের সামনে পৌঁছা, আমি আসছি।”
আশেপাশের ধুলোবালি উড়িয়ে গাড়ী তীব্র গতিতে সামনে চলে গেলো। লোকটা যাওয়ার পর ঈশান বলে ঊঠে —
“ আজ নির্ঘাত এইগুলো মরেছে।”
“উনাকে তুই চিনিস?”
কাশফির প্রশ্নে ঈশান যেনো আকাশ থেকে টপকে পড়ল।
“তাকে চিনেনা কে? তার নাম লেভিন আফসার, কৌশিক মির্জার রাইট হ্যান্ড। মানুষ তাকে কৌশিক মির্জার Cold Embody বলে কারণ কৌশিক মির্জার করা অন্যায়, সকল অনৈতিকতা সব কিছুর প্রমাণ লেভিন খুবই সূক্ষভাবে মুছে কিনা।”
ঈশান বলার পর পর তরী নীরবতা ভাঙ্গলো, কণ্ঠে চিন্তা আর গম্ভিরয্য টেনে বলল,
“আমি শুনেছি লেভিন আফসার একসময় দুর্দান্ত আন্ডারগ্রাউন্ড ফাইটার ছিলেন, একবছর জেল খাটানোর পরপরই কৌশিক হায়ার করে নিয়েছে।”
তরীর কথায় ঈশান সায় দিল,
“কৌশিক মির্জা চালাক আর তুখোড় ব্যক্তিত্বের, ব্যাটা ঠিকই কয়লার ময়লা ভেদ করে হীরা দেখতে পেয়েছিল।”
“গুজব এমনও আছে যে, কৌশিকের সব রকমের ইলিগ্যাল ধান্ধা লেভিনের নিয়ন্ত্রণে।”
“এসব গুজব বলতে নেই।”
#চলবে…