অদৃষ্টের_মৃগতৃষ্ণা (১৭) #লেখনীতে_প্রোপীতা_নিউমী ১৭. (Edited)

0
61

#অদৃষ্টের_মৃগতৃষ্ণা (১৭)
#লেখনীতে_প্রোপীতা_নিউমী
১৭. (Edited)

(কল্পনা এবং অতীত)

ছেলেটা নিপুণ হাতে পিয়ানো কিবোর্ডে সফট নোট তুলছে, তার নোটের তালে টুটু পরিহিতা এক সদ্য কিশোরী ব্যালেরিনা নাচছে। সে এখন একজন White Swan হয়ে Dying Swan নৃত্য পরিবেশন করছে। মেয়েলী কন্ঠের নিচু টোনের গুনগুনের শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে স্টুডিওর এক দেওয়াল হতে আরেক দেওয়ালে। প্রতিটা অঙ্গভঙ্গি এমন যেন সে তার আত্মা কে ছেড়ে দিয়ে মুক্ত আকাশে ভাসতে চায়। ব্যালে জুতা পরা পা খাড়া রেখেই উপরে তুলে নিয়ে তার ব্যালে নাচ এক মুহূর্তের জন্য থামে।
রুমে থাকা ছেলের অন্ধকার অবয়ব ফোঁস করে একটা নিশ্বাস ছাড়ে, তার অন্ধকার মূর্তি দৃঢ়, মেরুদন্ড কঠোর নিয়মে সোজা। পরপর তার লম্বা লম্বা আঙুল পিয়ানোর কিবোর্ডে রেখেই এবার নোট দ্রুত থেকে দ্রুততর করতে থাকে আর ধীরে ধীরে কিশোরী ব্যালেরিনার নাচের গতি বাড়ছে। তার ক্লাসিক্যাল টুটু ড্রেসের হাঁটুর উপরের ফ্যাব্রিক হাওয়ার বিপরীত সংঘর্ষে উড়ছে। পিয়ানোর নোটস উপরে তোলার সাথে কিশোরীর শ্বাস প্রশ্বাসে যেনো সুর বাজছে।
একপর্যায়ে এসে ছেলেটার হাত আর মেয়েটার নাচ একসাথে থেমে যায়।

কিশোরীর পা থেমে গেলো দাঁড় করানো স্ট্রেইট লাইনে, আবির্ভাব ঘটেছে ব্যালের জুতোর উপরে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ঠিক দশ সেকেন্ড পর কিশোরী বসে পরে। তার ব্যালে জুতো খুলতেই জুতোর কারণে পায়ের কাঁটা দাগটা দেখে নেয়। চোঁখে টলমলে পানি নিয়ে দাগটায় আঙুল বুলিয়ে দেয়।

“এইটুকু জ খ ম ব্যালেরিনা হয়ে সহ্য করা স্বাভাবিক ব্যাপার, নীলাম্বরী।”

কিশোরী হেলদোলহীন। ইদানিং ছেলেটা নরম স্বরে কঠিন বাক্য প্রায় বলে তবে কিশোরী তোয়াক্কা করেনা। সে আজও ছেলেটার দিকে চোখ তুলে চায় না, হাতের উল্টো পিঠে চোঁখের কর্ণিশ ছোঁয়া পানি মুছে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। সে এখন আর আট বছরের বাচ্চা না যে ব্যালের জুতো খুলেই মুখ ফুলিয়ে কান্না জুড়িয়ে দেবে।

“তোমার মতো পাথরের গায়ে কংকর কিছুইনা হিমাদ্রী। আমি মানুষ, না চাইতেই মাঝে মাঝে ভেঙে পরি তবে আবার ঠিক ভাঙ্গা টুকরো উঠিয়ে নিয়ে মাথা তুলে চলি।”

তৎক্ষণাৎ একটা হাঁসির শব্দ হলো, যেন কিশোরী কোন মজার জোঁক বলেছে। ছেলেটা তার গা কাঁপিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে।

“তুমি কখনইবা মাথা তুলে বেঁচে ছিলে নীলাম্বরী?”

কিশোরী নীলাম্বরী মাথা তুলে চায় তবে প্রত্যুত্তরে কিছু বলে না। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে চোখ অন্যপাশে ফিরিয়ে নেয়। এক দৃষ্টিতে গ্লাস দেয়ালের বাইরে রাতের আকাশে মনোযোগ দেয়, অগণিত তাঁরা সেথায়, তবে কি তারার মাঝে তার সুখ নিহিত? ঠিক কতটুকু সাধনার পর পরিবার পরিজন ফিরে পাবে? তার জুবায়ের ভাইকেও কি ফিরে পাবে?
আজকাল জুবায়ের তার স্বপ্নেও ধরা দেয় না, শুধু পালিয়ে বেড়ায়। তার প্রাইভেট স্কুল পুষ্পকুঞ্জ একাডেমী একটা স্বপ্নের ন্যায়। কিন্তু স্বপ্নের মাঝে থেকেও যেন নীলাম্বরীর সুখ নেই। নীলাম্বরীর বিষাদে ভরা জীবনে এক টুকরো শান্তি এই ব্যালেতে নাচ।

দাঁড়িয়ে ধ্যানমগ্ন থাকা কিশোরীর পায়ে আলতো স্পর্শে ধ্যান ভগ্ন হয়। মাথা নিচু করে দেখে নেয় হিমাদ্রী কে, হ্যাংলা পাতলা গড়নের ছেলেটা ঝুঁকে তার পায়ের ক্ষতে মলম ডলছে, চোঁখে মুখে একনিষ্ঠতা। তার মলম লাগানো শেষে সে তার শুকনো মুখ উপরে তুলে নীলাম্বরীর চোঁখে চোঁখ রেখে তাকায়,

“বিশ্রাম নিলেই ব্যাথা সেরে যাবে কাশফি।”

কাশফি হালকা হাসে। ছেলেটা পুষ্পকুঞ্জ একাডেমীর হয়ত, মাঝের মধ্যেই একাডেমীর হোস্টেল থেকে কিছুটা দূরের এই নির্জন জায়গার ছোট্ট স্টুডিওতে সে আসে। তাদের মধ্যকার সম্পর্কটাও তাদের মতোই নামহীন। কোন এক তাঁরা ভরা রাতে হিমাদ্রীর ভায়োলিনের সুরে নীলাম্বরী মোহিত হয়েছিল, তারপর থেকেই মাঝে মাঝে তাদের দেখা হয়।

হিমাদ্রী উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ায়,
“আমি উঠছি, তোমারও যাওয়া উচিত।”

হিমাদ্রী উত্তরের অপেক্ষায় থাকে না, নিঃশব্দে বেরিয়ে পরতে উদ্যত হয়। যদিও ছোট্ট স্টুডিওটার চাবি দুইজনের কাছেই আছে তবে ভয়ের কারণে নীলাম্বরী দাড়ায় না সুরসুর করে হিমাদ্রীর পিছন পিছন বেরিয়ে পরে। এরপর অন্ধকার রজনীতে দুই কিশোর কিশোরীর ছায়া মিলিয়ে যায়।
অতীতের অতল গভীরে…

(কাশফির স্বপ্নের/কল্পনার সমাপ্তি)

এলার্মের তীক্ষ্ণ শব্দে কাশফি চোঁখ জোড়া কুচকে খুলে নেয়, ঘুমুঘুমু চোঁখে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করে দেখে। সকাল সাড়ে পাঁচটা বাজে সে এবার এলার্ম অফ করে শোয়া থেকে উঠে পরছ। ব্যালে আর পিয়ানোর এই স্বপ্নটা এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দেখা। বছর খানেক আগে প্রথমবার শুধু সে একটা ব্যালের নৃত্য দেখেছিল। আজ দ্বিতীয়বার দেখছে। তার মাথাটা ঝিম ধরে আছে, সর্বমোট মিলিয়ে চার ঘণ্টা ঘুমিয়েছে কিনা সন্দেহ। তার উপর আজ থেকেই তার টেস্ট পরীক্ষা শুরু। কাশফি ঝটপট অজু করে সালাত আদায় করে নেয় তারপর মাথা ব্যাথা উপেক্ষা করে রিভাইস দিতে বসে।

কলেজে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আটটা পনেরো, পরীক্ষার হলে প্রবেশ মাত্রই অন্তুর সাথে দেখা হয় তবে অন্তু মুখ ফিরিয়ে নেয় যেনো সে চিনেই না। কাশফিও প্রতিদিনের মতো কোন রকম প্রতিক্রিয়া দেখায় না। অন্তুর এমন আচরণ প্রায় বছর খানেক আগ থেকেই দেখে আসছে।
একদিন হুট করেই অন্তু কাশফির সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়, তারপর থেকে তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। কাশফি কনফিউজড ছিল ঠিক তবে অবশ্যই খারাপ লাগেনি দুইদিনের সঙ্গীর জন্য।

অন্তর মতো তার জীবনে ক্ষণিকের জন্য আসা আরেকজন মানুষের প্রস্থান ঘটেছে। সেই রজনীর পর হতে কেটে গেছে বহু মাস। তবে কৌশিক মির্জা যেন ধুলোয় মিশে গিয়েছে, না কোন ফোন কল না টেক্সট মেসেজ পেয়েছিল কাশফি। কাশফি নিজেও মেনে নিয়েছে। তবে এইসব মেনে নিতে পারেনি কাশফির sub conscious mind। তার হুট করে দেখা দুঃস্বপ্ন জুড়ে ছিল কৌশিকের বিচরণ। কৌশিকের ঠাণ্ডা মাথায় করা খু ন। বাধ্য হয়ে স্লিপিং পিল নিতে হয়েছে অনেকবার।

কাশফি সিটে বসে পরে, তার সামনে তরী, পিছনে ফারাবী আর ঈশান। গরমে ফারাবী ফকফকে সাদা মুখ লাল টমেটোর মতো হাল হয়েছে। কাশফি তরীর সাথে বসে আবার বইয়ে চোখ বুলিয়ে নেয়।

***

সময়কাল: ২০২১ সাল,

“নাঈমা, তুমি হিরণের আরেকটু কাছে গিয়ে কাঁধের হাতটা আলগা করো— ”

“হ্যাঁ, হ্যাঁ, ঠিক এইভাবে… ডোন্ট মুভ!”

“ওয়ান, টু, থ্রী এন্ড…” — ক্যামেরার ‘স্ন্যাপ’ শব্দ — “পারফেক্ট শট”

“আমেজিং নাঈমা! ওয়ানস মোর।”

“পোস্টার ঠিক রেখে গলা উচুঁ করো, ইয়াপ… হিরণ, তুমি নাঈমার হাত ধরে চোখে চোখ রাখো লাইক লাভিডাভি লুক।”

“পারফেক্ট!”

ফটোগ্রাফার মডেল দুজনকে বিভিন্ন পোজে ছবি তোলার ভঙ্গিমা দেখিয়ে দিচ্ছে। মডেল হিরণ কাজে মনোনিবেশ করলেও নাঈমা বারবার আড়চোখে পায়ের উপর পা তুলে রাখা জোভানকে দেখছে আর বাঁকা হাসছে।

সামার কালেকশান নিয়ে কয়েকটা ফ্যাশন লাইন অ্যান্ড টেক্সটাইল কোম্পানির কোল্যাবোরেট চলছে। জোভান ছাতার ছায়ায় বসে থাকতে থাকতে মহা বিরক্ত। তার উপর বসে বসে নাঈমার ঢং দেখার আদো কোন মানে আছে?
নাঈমা তার এক্স গার্লফ্রেন্ড, তার প্রতি কোন অনুভুতি কাজ করে না ঠিক, তবে নাঈমার বর্তমান উদ্দেশ্য তাকে জেলাস ফিল করানো। যা জোভানের কাছে চরম বিরক্তিকর ঠেকছে। এমনিতেই গায়ে পরা লোক তার পছন্দ না।
জোভান তার বাবার প্রতি একপ্রকার বিরক্ত হয়ে দুই মাসের এই সম্পর্কে জড়ায়। তাছাড়া নাঈমা যথেষ্ঠ সুন্দরী আর নিজের পাশে সুন্দরী নারী কে না দেখতে চায়? তার বাবার ইচ্ছে ছিল তিনি তার বোনের মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দিবেন কিন্তু বাঁধ সাধে জোভান। কাজিন ম্যারিজে তার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। এরপর থেকেই বাবা ছেলের মাঝে দ্বিধা দ্বন্দ।

জোভান চেয়ার থেকে উঠে তার পোলো শার্ট ঠিক করে নেয়। ফের কোনো দিকে দৃষ্টি না ফেলে গটগট পায়ে হাঁটা ধরলো। ম্যানেজার অবশ্যই তাকে থামানোর জন্য আসছিল তবে তার চোখ পাকানো দেখে আর সাহস হলো না।
রেগে গিয়ে চড়ে বসে বন্ধুর জিপে, তার বন্ধু সিনান বইয়ে মুখ গুঁজে ছিল এতক্ষন। জোভানকে আসতে দেখে বই মুখ থেকে নামিয়ে একটা গা জ্বালানো হাসি দেয়।

“বছর খানেক পর আপনার প্রাক্তন প্রেমিকার সাথে দেখা হয়েছে স্যার। অনুভূতিটা কেমন যদি একটু জানাতেন?”

সিনানের টিটকারী শুনে জোভান চোঁখ উল্টিয়ে বেশ গমগমে সুরে বলে,
“একদম ফা’ইজ’লা’মি করবিনা শা’লা।”

“বন্ধু তুমি রাগো ক্যা! আমাগো নাঈমা ভাবী শুধু তোমার।”

সিনান বলে শেষ করেই পিছনে তাকিয়ে একটা লোক দেখানো রকমের মিষ্টি হাসি দেয়।

“আরেহ নাঈমা!”
জোভান পিছনে তাঁকিয়ে দেখে আসলেই নাঈমা দাঁড়িয়ে আছে। এবার দাঁত কড়মড় করে সিনানের দিকে ফিরে। সিনানের এক্সপ্রেশন এমন যে সে মাত্রই আকাশ থেকে টপকালো যেনো। রাগে শক্ত হাতে সিনানের পিঠে চাপড় মেরে গাড়ী স্টার্ট করার নির্দেশ দেয়। সিনান মহা বিরক্ত, তার গাড়ীতে উঠে তাকে শাসানো! এটা কেমন বিষয়? তাই সিনান মুখ কালো করে ড্রাইভিং সিটে থেকে লাফিয়ে পিছনে চলে গেলো।

“বন্ধু তুমি প্রকৃতির মাঝে গিয়ে বিরহের গান ধরো, আমি সিঙ্গেল ভেজালমুক্ত মানুষ।”

জোভান মাথা ঘুরিয়ে দুই সিটে আয়েশী ভঙ্গিমায় হাত পা ছিটিয়ে বসে থাকা সিনানকে দেখে নেয়, যে এখন বই বুকে রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে গুনগুন সুরে গান ধরেছে। জোভান কথা বাড়ালো না। জিপ স্টার্ট করতেই ধোয়া উড়ে চলতে শুরু করলো।

বোর্ড পরীক্ষা শেষ হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। ফারাবীর মন পহেলা বৈশাখ উদযাপন না করতে পারার বোঝা টানতে টানতে ক্লান্ত। প্রতিবার শাড়ি পরে তার কাজিন, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মেলায় ঘুরে বেড়িয়েছে কিন্তু এইবার বোর্ড পরীক্ষার জন্য কিছুই হলো না। তাই ফারাবী নিজের মনের পাথর সমান বেদনা কমাতে আজ শাড়ি পরে বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরতে যাবে। তরীর এসব পছন্দ না হওয়া সত্বেও ফারাবীর জন্য না করার উপায়ন্তর পেলো না। তরী ভোঁতা মুখে ফারাবীর সাথে দাঁড়িয়ে আছে আর ফারাবী তাদের বাড়ীর গেইটের সামনে দাড়িয়ে কাশফির জন্য হাক ছাড়ছে,

“পেয়েছিস, ঈশিতা?”

ফিরোজ রঙ্গা শাড়িতে কাশফিকে দেখা গেলো দাঁতে দাঁত চেপে বেরিয়ে আসতে। তার চোখে মুখে অবিশ্বাস্য লেপ্টে। হাতের কাঁচের চুড়ি ঝন ঝন করে শব্দ তুলছে, ঘন চুলের খোঁপায় বাঁধা বেলি ফুল আর হাতে একটা শুভ্র পদ্ম।

“তুই এই পদ্ম ফুল আনার জন্য আমাকে ভিতরে পাঠিয়েছিস? Unbelievable!”

তরী হালকা হেসে কাশফি কে বলল,
“আমি প্রথমেই বলেছিলাম এই আ বা লের কথা ধরে ভিতরে যাস না।”

“এই পদ্ম ফুল কথায় হয় জানিস? খালে বিলের ময়লা অবজনায়।”
ঈশানের গম্ভির মুখের কথা শুনে ফারাবীর চোঁখ মুখ শুকিয়ে গেলো। সে তৎক্ষণাৎ ফুল তরীর হাতে ধরিয়ে দিলো। ফারাবীর কর্মকান্ডে ঈশান খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো।

ঠিক তখনই ফারাবীর বাড়ির সামনে রাস্তা হয়ে জোভান আর তার বন্ধুর চড়া জিপ থামে। সামনে নাকি খুব সুন্দর একটা হ্রদ আছে তবে পথ তাদের দুজনের কেউই চিনে না।

হ্রদের নাম মহুয়াবনী। এই নাম নাকি দুইবোনের নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছিল। মহুয়া আর অবনীর মা তাদের বাবার পরকীয়া ধরতে পারার পর সেই হ্রদের জলে ডুবে আত্ম হ ত্যা করে। তারপর অতি শীগ্রই তাদের বাবা পরকীয়ায় লিপ্ত সেই নারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তবে সৎ মায়ের অত্যাচার নিতে না পেরে দুইবোন তীব্র ঘৃণায় আর মায়ের মৃ ত্যু র জন্য শাস্তি স্বরূপ তাদের বাবা আর সৎ মাকে কু পি য়ে হ ত্যা করে নিজেরা সেই হ্রদে ঝাঁপ দিয়ে আ ত্ম হ ত্যা করে। এসব কতটুকু সত্য? তা কেউ জানে না।

জোভান বাড়ীর বাইরে ছেলে মেয়েদের দাড় করানো দেখে গাড়ি থামাতেই কাশফির হেসে উঠার শব্দ কানে আসে। এক নজরে চেয়ে থাকে মেয়েটার দিকে। মুখে রাজ্যের মায়া লেপ্টে রয়েছে, যেন চোঁখ ফিরানোর দায়। জোভানকে থমকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সিনান বিরক্তির শব্দ উচ্চারণ করে গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমে পড়ে।

“এক্সকিউজ মী!”
ঈশান তৎক্ষণাৎ পিছনে ফিরে তাকায়। কাশফিরও হাঁসি বন্ধ হয়ে গেছে। তারা সবাই এখন সিনানের দিকেই চেয়ে আছে। জোভান জড়তা ঠেলে সিনানের পূর্বেই কাশফির উদ্দেশ্যে বলে,

“মহুয়াবনী লেকটা কোন দিকে কাইন্ডলী জানাবেন?”

কাশফির পরিবর্তে ঈশান চট করে উওর দিলো,
“সামনে কালী মন্দির দেখবেন, সেটা পার হয়ে বামে মোড় নিয়েই মহুয়াবনী লেক পেয়ে যাবেন।”

“ধন্যবাদ।”
জোভান আগের ন্যায় কাশফির দিকে তাঁকিয়ে থেকেই ধন্যবাদ জানালো যা ফারাবীর কাছে হ্যাবলার মতো মনে হলো। এদিকে জোভান এক দেখাতেই কাত, ভাবছে ইনিয়ে বিনিয়ে নাম জিজ্ঞেস করবে তবে তার পূর্বেই কাশফি সৌজন্যতা মূলক হাঁসির রেখা টেনে হাঁটা ধরলো। ইশ্ মেয়েটার কন্ঠ পর্যন্ত শোনা হলো না।

জোভান ভালো করে এই পথ ঘাট চিনে রাখে তাহলে সে কি খুব শীঘ্রই আবার আসতে চলেছে? জোভান হেসে জিপে চড়ে বসলো। তারপর চওড়া গলায় গান ধরে গাড়ি চালানো শুরু করে। তার ভাবমূর্তি দেখে বিহবল হয়ে যায় সিনান।

“মামা, তোর কি জ্বর জ্বর লাগছে?”
জোভান প্রত্যুত্তরে কেবল একটা মিষ্টি হাঁসি দেয়।

#চলবে…

কল্পনা এবং অতীত দিয়েছি কারণ অতীতে তার স্বপ্নের একটা মুহূর্তের বর্ণনা ছিল সেখানে। টানা তিন চারদিন ভীষন রকমের ব্যস্ত ছিলাম। এমন পরিস্থিতি আর ব্যস্ততায় মাথা একদমই কাজ করছিল না। মন্তব্য করতে ভুলবেন না। এই ঠাণ্ডায় আপনারা সবাই কে কেমন আছেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here