অদৃষ্টের_মৃগতৃষ্ণা (২৯) #লিখনীতে_প্রোপীতা_নিউমী

0
118

#অদৃষ্টের_মৃগতৃষ্ণা (২৯)
#লিখনীতে_প্রোপীতা_নিউমী

“ধর লিপস্টিক, লাগিয়ে নে!”
তরীর হাতে কড়া গোলাপি কালারের লিপস্টিক দেখে কাশফি ভ্রু কুঁচকে ফেলে। এসব রিচ স্পয়েল্ড বারবি টাইপের কলার তরীকে দারুন মানায়, বলা যায় তাকে কোনো গোল্ডেন গার্লের কম মনে হয় না, তাই তো তার ভার্সিটি লাইফ আর সোশ্যাল মিডিয়া নতুন নতুন তরুণে ঝলমল। এসব ব্রাইট তরীকে মানালেও তার ভীষণ অপছন্দের। কাশফি নাক কুচকায়।

“লাগবে না।”
তরী বিরক্তিতে হিসহিস শব্দ করে চোখ পাকায়, তারপর ব্যাগ থেকে মেকআপ মিরর বের করে কাশফির সামনে তুলে ধরে, কাশফি তৎক্ষণাৎ লক্ষ্য করে দেখলো তার ঠোঁটে রক্ত জমে থাকার মতো লাল হয়ে আছে।

“কৌশিক ভাই আসলেই একটা চিজ, ঠোঁট চু ষে লিপস্টিক ছাড়াই লাল করে ফেললো।”

আয়নায় নিজেকে দেখে আর তরীর কথার টোন শুনে কাশফির গাল লাল হয়ে কান দিয়ে গরম বাতাস বের হওয়ার উপক্রম। তরীকে শাসিয়ে খ্যাক খ্যাক করে বলে উঠলো,
“তোকে কে বলেছে?! আমি কালকে ধাক্কা খেয়ে ছিলাম তাই ব্যথা পেয়েছি।”

“ঠিক আছে, ধরে নে আমি গাধা। ক্লাসের বাকি সবাই তো আর গাধা না।”
কাশফি মাথা তুলে আসেপাশে তাকাতেই দেখলো যে কয়েকজন ফুসুরফুসুর করছিল তারা তড়িঘড়ি করে সামনে ফিরে বসছে। হতবম্ব হয়ে সে তরীর দিকে চাইলো, কাল রাত কৌশিক বাসায় ফিরতে লেইট করে ফেলে তাই আজ ঘুম থেকে দেরীতে উঠেছে সে। আসার সময় গলায় কৌশিকের দেওয়া হিকি ঢাকতে কনসিলার লাগিয়েছিল কেবল তারপর কোনো রকম রেডি হয়ে এসেছে। আয়নায় অতকিছু খেয়াল করেনি।

“তুই আমাকে আগে বলবি না?!”
কাশফি আয়নায় দেখে লিপস্টিক লাগিয়ে নিলো তখন মুখে দুষ্টসুলভ হাসি নিয়ে ফারাবী উপস্থিত হয়,

“ব্রেকিং নিউজ কুমারী কাশফি আর রইলো না কুমারী।”

ফারাবীর গলা ফাটানো কণ্ঠে কাশফি লজ্জায় আড়ষ্ট। তাই ফারাবীর বাহু চাপড়ে দাতে দাত চেপে ক্ষ্যাপাটে গলায় বলে,
“দিগন্ত ভাই যদি সময়ের কাজ সময়ে করতো তবে এখনো তিনি বিবাহিত ব্যাচেলর থাকতেন না আর তুই ও কুমারী থাকতি না।”

কাশফির কথায় ফারাবী চোখ বড় বড় করে বলে,
“তুই কি বিয়ে শাদী করে দিনে দিনে বেহায়া হয়ে গেলি রে?”

তরী ফারাবীর স্বরে স্বর মিলিয়ে টিটকারী করে বললো,
“কৌশিক ভাইয়ের ইনফ্লুয়েন্স, বুঝিস তো!”

কাশফি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে নিরব থাকা শ্রেয় মনে করলো। আজ তাড়াহুড়োয় ফোনটা আনতে ভুলে গিয়েছে, এটা নিয়েও কৌশিক বাড়াবাড়ি ধরনের ফাইজলামি করবে হয়ত। ভাবতেই কাশফির লোম খাড়া হয়ে গেল। দুপাশে দুইজন কে তোয়াক্কা না করে সে তরীকে বলে উঠলো,
“কনসিলার আর লুজ পাউডারটা দে তো!”

তরী কনসিলার আর লুজ পাউডারটা দিলেও ফারাবী মুখে দুষ্ট হাসি রেখে ভ্রূ নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কি? লাভ বাইট ঢাকবি?!”

“এক সেকেন্ড তুই জানিস কিভাবে?”
কাশফির উল্টো কথায় ফারাবী থতমত খেয়ে যায়, তার মুখের হাসি আরো আগেই উধাও হয়ে গেলো। তবুও কোনো রকম হেসে অমতা অমতা করে বললো,

“স্ট্রাইটনার দিয়ে গলায় দাগ হয়েছিল সেটা ঢাকতে ইউজ করতে হয়েছিল।”

“আচ্ছা?!”

তরী অবাক হয়ে বিড়বিড় করে বললো,
“আমি তো যা করি সব সামনা সামনি আর তোরা তো দেখছি সব তলে তলেই করে ছাড়িস।”

দুপুরে, ক্লাস শেষে তাড়াহুড়োয় গাড়িতে উঠার পর পরই রবার্টের নাম্বার থেকে ম্যসেজ আর কিছু ছবি এলো। ছবি গুলো প্রথম কয়েকটা দেখে আশাহত হলেও পরক্ষণে একটা ছবিতে তার চোখ আটকে যায়,
দুর পাহাড়ের সারি সারি পাইন গাছ…

হঠাৎ করেই ফ্ল্যাশ ব্যাকে সে হিমাদ্রীর সাথে দুর পাহাড়ের পাইন গাছ দেখার একটা দৃশ্য দেখতে পেলো, সেগুন বাগিচায় তাদের হাঁটাহাঁটি, তার ব্যালট পারফরমেন্স দেখে হিমাদ্রীর মুগ্ধতা, তারা ভরা আকাশের নিচে হিমাদ্রীর পিয়ানোর প্রেমে পড়া…
কাশফির মাথা ধরে এলো, চোখে সব সাদা আর ঝাপসা দেখতে পেলো। তার কান ভো ভো করছে, মাথার পিছনের দিকে হাতুড়ি পেটানোর মতো throbbing pain উপলব্ধি করতে পারলো।

চোখ বন্ধ করে সে সিটে মাথা হেলান দিয়ে মনে মনে স্কুলের নামটা আওড়ালো—
‘Mohammadpur Ideal Academy’

***

মির্জা বাড়িতে ফিরে মাত্র সে টেবিলে লিয়া আর কায়েস কে দেখলো। লিয়া ফিস ফিস করে কি কি বুঝাচ্ছিলো, আর কায়েস মাথা নাড়ছিল। সে ফ্রেশ হতে রুমে যাওয়ার জন্য সিঁড়ির দিকে পা দিবে তার আগেই কড়া উচুঁ গলায় তাকে ডাক দেওয়া হলো। ভ্রূকুঞ্চিত করে পিছনে ফিরে মাধবীকে আর অনামিকা দেখতে পেলো। কাশফি দ্বিধান্বিত হয়ে সায় দিয়ে সামনে এসে দাড়ালো।

“ঠিক কি এমন করে এই বাড়ির ছেলেকে হাতিয়ে নিয়েছ?”

“জ্বি— ?!”

“এই যে কৌশিক কে হাতের মুঠোয় রেখে সব নিজের নিজের করতে উঠে পড়ে লেগেছো?”

মাধবীর ধমকের সুরে কাশফি থমকালো না বরং দীর্ঘশ্বাস ফেলে শান্ত কণ্ঠে বলার চেষ্টা করলো,
“এক্সকিউজ মী?”

“বুঝতে পারছো না নাকি বুঝতে চাইছ না?”

“আপনার কথা ঠিক বুঝিনি।”
কাশফি মাধবীকে কিছু ডেকে সম্মোধন করার প্রয়োজন বোধ করলো না। এদিকে অনামিকার মুখে এমন ভাব ভঙ্গি যেনো কাশফির পাশে দাড়াতেই তার বমি পাচ্ছে। মাধবী মুখে ভরা জ্বলন্ত বিষ কাশফির গায়ে ঢেলেই যেনো শান্তি পেলো।

“বাবা তো মামুলী চাকরি করে আর তোমার মা দেহ’ব্য’ব/সা করে যে টাকা কামিয়েছে সেটা দিয়েই তো আজীবন চলেছ এখন টাকা ফুরিয়ে যাবে বলেই কি মায়ের পথে হাটা?!”
কাশফির বুকে চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করলো, মাধবী এসব জানলো কি করে? তার মাকে কখনো পছন্দ না করলেও মৃত মানুষটার নামে অপবাদ টুকু গিলতে কষ্ট হলো। তরতর করে অতীতের ভয় জেঁকে ধরলো তাকে, এই বুঝি সবাই প্যাথেটিক কাশফিকে আবার না জেনেই জাজ করবে? এই বুঝি তার ট্রমাটিক চাইল্ডহুড নিয়ে সবাই উপহাস করবে, তার নামের পাশের বিশেষ তকমা কি তারাও জেনে গিয়েছে?
Always Unwanted…

“আশ্চর্য! আপনি আমার বাবা মাকে কেনো টানছেন?!”

“শিক্ষা কার থেকে পেয়েছ সেটা সর্ট আউট করে তোমার উত্তর সোজা করে দিচ্ছি।”

কাশফির কণ্ঠস্বর কাপলো, চোঁখজোড়া জ্বলছে খুব। ঠোঁট কামড়ে কায়েসকে সামনে বসা দেখে নিজের কণ্ঠ নামিয়ে নিজেকে বেশ কন্ট্রোলে রেখে বললো,
“আপনার শিক্ষা ভালো হলে আমার শিক্ষা নিয়ে আজে বাজে মন্তব্য কখনোই করতেন না!”

“একজন প্র’স্টি/টি/উ’টের মেয়ে আমাকে পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করছে? Unbelievable!”

কাশফি না চাইতেই কন্ঠের ভঙ্গুর দুর্বলতা লুকাতে পারলো না। সে চিৎকার করে চেঁচিয়ে উঠলো,
“যা করিনি তার দোষ দিলেন মানলাম, কিন্তু আপনি বারবার আমার মাকে টেনে কেনো আজেবাজে কথা বলছেন?!”

কিন্তু মাধবী দমার পাত্র নয়, সে কিছু বলবে তা নয় আগুনে ঘি ঢালতে অনামিকা তার খালার তালে তাল মিলিয়ে বললো,
“বাদ দাও এসব ঈশিতা, তোমার বডি কাউন্ট বলো।”

কাশফির মুখ হা হয়ে এলো, অপমানে গা রি রি করছে, আজ পর্যন্ত তাকে তার ব্যক্তি সম্মান নিয়ে কখনো কেউ প্রশ্ন করেনি যেখানে তার বাবা সর্বদা সম্মান কে বড় চোখে দেখে এসেছে সেখানে সে কখনও নিজের সম্মান নিয়ে প্রশ্ন করার মতো কিছুই করে নি। শেষ পর্যন্ত কিনা এই জায়গায় এসে দাঁড়াতে হলো।

“আপনি একজন মহিলা হয়ে আরেক মহিলা কে এমন কটু কথা কি করে জিজ্ঞেস করতে পারেন?”

অনামিকা সম্পূর্ন কথা শেষ হতে দিলো না, কাশফির উপর থেকে নিচে তাকিয়ে মুখ বেজার করে বললো,
“Come on, জোভান শিকদার কেও তো যথেষ্ট নাচিয়েছো। যা ফিগার কম মানুষকে তো নাচায়নি বোধহয়।”

কাশফি ছেড়ে দিলো না কাঠ কাঠ জবাব দিলো অনামিকার মুখের উপর,
“বাহিরের মানুষ হয়ে ঘরের মানুষদের ব্যাপারে নাক গলানো সাজে না।”

রাগে অনামিকা কাশফির মুখে চড় মারার জন্য হাত তুলে কিন্তু মাধবী থামিয়ে কাশফির দিকে চোখ পাকিয়ে রুক্ষ কণ্ঠে বললো,
“অনামিকাকে আমি কৌশিকের জন্য পছন্দ করে রেখেছিলাম কিন্তু তুমি এসে সব বরবাদ করে দিয়েছো। আবার তাকে বাহিরের মানুষ বলার সাহস হয় কি করে তোমার?!”
মাধবী কাশফীর থেকে মুখ ফিরিয়ে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকা কায়েসের দিকে চেয়ে আবর্জনা দেখার মতো ভাবমূর্তি করে নাক সিটকায়।

“এলে তো এলে তাও কোথা থেকে না কোথা থেকে বস্তির আপদ ঘাড়ে নিয়ে। ফ্রিতে পাচ্ছো তো সব কিছুই, তাহলে সাবাড় করতে আপত্তি কিসের না?”

কায়েসের প্রতি এমন কিছু বলায় কাশফির দম বন্ধ হয়ে আসলো। Unwanted অনুভূতি চেপে ধরলো তাকে। এই অনুভূতি কতটা জ’ঘ’ন্য, কতটা ভয়াবহ সে জানে, ধারণা আছে তার। তাই এমন ট্রমা তার আদরের ভাইটার জন্য কখনো কামনা করে না।
দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ার পূর্বে চোখ মুছে নেয় তারপর ভয়ার্ত অবস্থায় গুটিসুটি মেরে বসে থাকা কায়েসের কাছে এসে হাঁটু গেঁড়ে বসলো। আলতো হাতে কায়েসের নিরব কান্নায় ভিজে যাওয়া মুখশ্রীতে হাত বুলিয়ে বললো,
“ভয় পেয়েছিস?”

কায়েসের ফুলিয়ে রাখা ঠোঁট কাপলো, সে কান্না কোনো রকম দমিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“ওরা তোমাকে এমন কেনো করলো বুবু? ওরা কি আমাকে ও মারবে?”

কাশফি উত্তর দিলো না সম্পূর্ন কথা পাল্টে নিলো,
“শোন, বুবু তোকে এক নতুন জায়গায় নিয়ে যাব। তুই যাবি তো?”
কায়েস দ্রুত মাথা নাড়ালো। কাশফি ভাইকে স্বাভাবিক করার জন্য মিথ্যে হাসি মুখে একে লিয়া কে কিছুক্ষণ দেখে রাখতে বললো। উপরে উঠে রুমে এসেই হাত হতে আংটি খুলে কৌশিকের টেবিলের উপর রেখে দেয়।

সূক্ষ্ম ব্যথা অনুভব হলো কোথাও কিন্তু সে তোয়াক্কা করলো না। তার জানা আছে যে তার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুলটা ছিল কৌশিক মির্জা তারপর কৌশিক মির্জার প্রতি জন্মানো অনুভূতিতে গা ভাসানো ছিলো তার দ্বিতীয় ভুল। এটা হবারই ছিলো…
কৌশিকের রুম থেকে তার আসার সময় আনা লাগেজ, কায়েসের লাগেজ আর মোবাইলটা হাতে নিয়ে এনে মাধবীর সামনে ধরলো,
“কৌশিক মির্জার দেওয়া কিছুই নিজের সাথে নিচ্ছি না, যা সাথে নিয়েছি আমার সামান্য চাকরি করা বাবার ঘর থেকে আনা।”

কারো দুদণ্ড কথা শোনার জন্য আর এক মুহুর্ত দাড়ালো না কাশফি, কায়েস কে কোলে তুলে দুটো লাগেজ টেনে দ্রুত প্রস্থান করলো। তার চোখে পানি টলমল, এই মুহূর্তে কি করবে কোথায় যাবে কোনো ধারণা নেই তার। গাড়ি ছাড়া একা সবকিছুর ভার টেনে মির্জা বাড়ির গেইট পেরিয়ে চলে গেল কাশফি।
ভয়ার্ত দৃষ্টিতে লিয়া তার ভাবির চলে যাওয়ার দিকে চেয়ে মাধবীর উদ্দ্যেশ্য বললো,
“তুমি আগুন নিয়ে খেলছ মা। একেবারেই অনুচিত হয়েছে!”

***

জোভান সকালে হালকা নাস্তা করে বেরোনোর পর আর বাসায় ফিরেনি, মাত্রই বিকেলের দিকে অফিস থেকে বেরিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য গাড়িতে বসলো। বিরস মুখে গাড়ি স্টার্ট করার আগে একটা বাচ্চার খিলখিলিয়ে হাসার শব্দ শুনে পাশে ফিরেই স্টোর থেকে কাশফি আর কায়েস কে বের হতে দেখলো।

এই মুহূর্ত জোভানের কাছে যেনো স্বপ্নের মতো মনে হলো, কাশফির চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে আছে। কায়েস কি কি যেনো বলছে এতেও তার অনুভূতি শূন্য হয়ে আছে। কাশফির এমন হাল দেখে জোভানের রাগ গিয়ে পড়লো কৌশিকের উপর হয়ত সেই কিছু ঘটিয়েছে।
কোনো রকম গাড়ি ফেলে দৌড়ে এসে কাশফির সামনে হাজির হয়ে দাড়ালো,
“ঈশিতা!”
কাশফি প্রথমে ঘাবড়ে গিয়ে তার ব্যাগ শক্ত করে ধরলো, জোভানকে দেখার পর বেশ কিছুটা আশ্চর্য হয়ে মুখ হা করে রইলো। চোঁখে মুখে তুমুল অস্থিরতা লেপ্টে জোভান নরম কণ্ঠে নিজের দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করলো,

“তুমি কি ঠিকাছো, ঈশিতা?!”

#চলবে..

Note: আজকের পর্ব পড়ে নিরাশ হবেন না, পরবর্তী পর্বে আপনাদের সন্তুষ্ট করে দিব। তাড়াতাড়ি রেসপন্স করলে কাল পরশুর মধ্যেই আরেকটা পর্ব পেতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here