#গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি
#পর্ব২৩— প্রাপ্ত বয়স্ক দের জন্য উন্মুক্ত।
#Raiha_Zubair_Ripti
রাত দশটার কাছাকাছি সাদমান এর সামনে রাগী দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। সামনেই অপরাধীর ন্যায় দাঁড়িয়ে সাদমান। শাফায়াত পারছে না সকলের সামনে সাদমান কে ছাঁদ থেকে ফেলে দিতে। এই সাদমান এর জন্য ই শাফায়াত কে রুয়াত ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। বলেছে ঐ ড্রিংকস সাথে করে না নিয়ে আসলে ঘরে ঢুকতে দিবে না। শাফায়াত জোর করে ঘরে ডুকতে চাইলেই রুয়াত এটা ওটা ছুঁড়ে দিচ্ছে তার দিকে। এই রাত বেরোতে এমন টা আরো বেশি বাড়লে বাড়ির সবার সামনে রুয়াতের মাথা হেঁট হয়ে যাবে। তাই উপায়ন্তর না পেয়ে শাফায়াত ছাঁদে এসেছে। এসেই সাদমান কে কয়েক ঘা লাগিয়েছে। হতচ্ছাড়ার জন্য আজ তাকে এই দিনটাও দেখতে হলো।
সাদমান কে এখনও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শাফায়াত রাগী গলায় ধমক দিয়ে বলল-
-“ রাস্কেল এখনও দাঁড়িয়ে আছিস কেনো। মহুয়া দে। এটা ছাড়া আমাকে রুমেই ঢুকতে দিচ্ছে না রুয়াত।
সাদমান গুটিগুটি পায়ে টেবিলের নিচ থেকে মহুয়ার একটা বোতল বের করে সাদমান এর হাতে দিলো। তারপর মিনমিন সুরে বলল-
-“ সরি ব্রো। বুঝতে পারি নি রুয়াত খেয়ে ফেলবে। এখন এটা খেলে তো আরো কন্ট্রোল এর বাহিরে চলে যাবে।
শাফায়াত বোতল টা কেঁড়ে নিয়ে যেতে যেতে বলে-
-“ সেটা তোর ভাবা লাগবে না। যা অকাজ করার সেটা তো করেই ফেলছিস। সামলাতে হলে তো আমার নিজেকে সামলাতে হবে।
সাদমান আড়চোখে তাকালো রজনীর দিকে। রজনী কেমন রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। এমন চাহনি দেখে সাদমান চোখ ছোট ছোট করে বলল-
-“ এভাবে তাকাচ্ছেন কেনো।
-“ আপনি এসব কখন কিনলেন?
-“ আপনার অগোচরেই কিনেছি।
-“ তো সাবধানে রাখতে পারলেন না?
-“ সাবধানেই তো রেখেছিলাম। বুঝবো কি করে রুয়াত বসা থেকে উঠে এসে খেয়ে নিবে।
রজনী তপ্ত শ্বাস ফেলে চলে গেলো। নাইমুর সাদমানের কাঁধে হাত দিয়ে বলে-
-“ ধূর বেটা গিল্টি ফিল করছিস কেনো। যা হয়েছে ভালোই তো হয়েছে৷ শাফু বাবুকে আজ তার বউ ঘর থেকে বের করে দিয়েছে মহুয়ার জন্য জাস্ট ভাব!
শাফায়াত রুমের সামনে এসে দরজায় কড়া নেড়ে বলে-
-“ রুয়াত দরজা খুলো এনেছি।
রুয়াত রুমের ভেতর থেকে বলে উঠলো-
-“ সত্যি এনেছেন? নাকি আবার ঐ লেবুর পচা পানি নিয়ে এসেছেন?
-“ সত্যি মহুয়া এনেছি।
রুয়াত দরজা খুললো। হালকা মাথা বের করে বলল-
-“ কই দেখান আমাকে বোতল।
শাফায়াত হাতে থাকা বোতল টা উঁচু করে দেখালো। রুয়াত দরজা সহকারে একটু ফাঁক করে শাফায়াত কে রুমের ভেতরে আসতে দেয়। শাফায়াত রুমের ভেতর ঢুকে। রুয়াত দরজা আটকিয়ে দেয়। শাফায়াত পেছন ফিরে বোতল টা রুয়াতের দিকে বাড়িয়ে দিতে নিলে শাফায়াত এর হৃৎস্পন্দন থেমে যায়। এই মেয়ে এটা কি পড়েছে! শাফায়াত এর সাদা শার্ট পড়েছে। শার্ট টা হাঁটুর কিছুটা উপর অব্দি। পা গুলো দেখা যাচ্ছে। শরীর ভেতরে থাকা লাল ইনার টা স্পষ্ট। চুল গুলো ছাড়া। মারাত্মক আকর্ষণীয় লাগছে। মাথা ঘুরে যাবার উপক্রম। শাফায়াত ঠোঁট কামড়ে ধরে। রুয়াত মহুয়ার বোতল টা কেঁড়ে নিয়ে বিছানায় বসে। শাফায়াত জিজ্ঞেস করে-
-“ এটা কি পড়েছো তুমি রুয়াত? আমার শার্ট কেনো পড়েছো?
রুয়াত মহুয়ার বোতল খুলতে খুলতে বলে-
-“ আমি নায়েকা সেজেছি। ঐ যে নায়েকা রা হিরোর শার্ট পড়ে না? আমিও আমার হিরোর শার্ট পড়েছি। আমাকে সুন্দর লাগছে না?
বসা থেকে উঠে দু হাত মেলে দিয়ে বলল রুয়াত। শাফায়াত কেশে উঠলো। রুয়াত মুখ গুমরা করে মহুয়ার বোতলে চুমুক দিয়ে বলল-
-“ আমার প্রশংসা করতে বললেই আপনার কাশি আসে। ফোন আসে। একটু প্রশংসা করেন। আমি আকাশে উড়বো।
শাফায়াত সোফায় মাথা হাত দিয়ে বসলো। রুয়াত বোতল নিয়ে বিছানা ছেড়ে শাফায়াত এর কোলে বসলো। শাফায়াত এর শরীর৷ বরফের ন্যায় জমে গেলো। রুয়াত বোতলে চুমুক দেওয়ার সময় গাল বেয়ে মহুয়ার পানি এসে রুয়াতের বক্ষে অবস্থান করছে। শার্ট টা ভিজে যাওয়ার দরুন বুকে লেপ্টে রইলো। কেমন নেশা ধরে যাচ্ছে শাফায়াত এর। রুয়াত বোতল টা শাফায়াত এর দিকে বাড়িয়ে বলে-
-“ খাবেন?
শাফায়াত না করলো। সে এখন নিজেও মহুয়া খেলে রুয়াতের সাথে সাথে সেও মাতলামি করা শুরু করে দিবে। শাফায়াত রুয়াত কে এতো খেতে দেখে মানা করলো। কিন্তু রুয়াত রুয়াত শুনলো না। ফের খাওয়া শুরু করলো। আস্ত এক বোতল খেয়ে শেষ দিলো। পুরো শরীর শার্ট ভিজে গেছে। শরীর দিয়ে মহুয়ার গন্ধ। রুয়াত বোতল টা টি-টেবিলের উপর রেখে শাফায়াত এর ললাটে কামড় বসিয়ে দিলো। শাফায়াত দাঁত চেপে সহ্য করলো। রুয়াত শাফায়াত কে চুপ থাকতে দেখে শাফায়াত এর গাল টা চেপে নিজের মুখের কাছে আনলো। রাগী গলায় বলল-
-“ সমস্যা কি আপনার? বারবার মুখ ফিরিয়ে নেন কেনো? বউয়ের রুপে আকর্ষণ নেই?
শাফায়াতের এবার ঘোর লেগে গেলো। রুয়াতের গোলাপি ভেজা ঠোঁট জোড়া দেখে। নেশা ধরে যাচ্ছে। আপনা-আপনি হাত চলে গেলে রুয়াতের শার্ট ভেদ করে উন্মুক্ত কোমড়ে। রুয়াত কেঁপে উঠলে এই ছোঁয়ায়। শাফায়াত চেপে এনে চোখ বন্ধ করে রুয়াতের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিতে গেলেই রুয়াত ওয়াক করে পেট থেকে উল্টে সব বের করে দেয়।
আকস্মিক এমন আওয়াজে চোখ মেলে তাকায় শাফায়াত। রুয়াতের পুরো শরীর সাথে নিজের ও বু’মিতে জড়িয়ে গেছে।
শাফায়াতের অনুভূতি তে ভাঁটা পড়লো। সব কিছু সাইডে রেখে যখনই সে রুয়াতের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাইলো তখনই রুয়াতের এমন এক কাণ্ডে শাফায়াত এর রাগ চরমে।
রুয়াত কাঁদো কাঁদো মুখ করে অপরাধীর ন্যায় বলল-
-“ অ্যাম সরি স্যার। আমি ইচ্ছে করে করি নি। হুট করে পেট মোচার দিয়ে সব বেরিয়ে আসলো…
কথাটা বলেই মুখ চেপে ওয়াশরুমে দৌড় দিলো রুয়াত। বুমি করছে। শাফায়াত এগিয়ে আসলো ওয়াশরুমে। রুয়াতের অবস্থা বেহাল। শাফায়াত রুয়াতের মাথায় হাত দিয়ে বলল-
-“ বলেছিলাম এতো খেতে না। শুনেছো আমার কথা? শুনলে এমন টা হতো?
রুয়াত কেঁদে দিলো। ওয়াশরুমে থাকা আয়নার দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ টেস্ট কেনো এতো খেতে? টেস্ট দেখেই তো খেলাম।
শাফায়াত দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে রইলো।
-“ এখন তো আবার গোসল করতে হবে। রাতের মধ্যেই দু বার গোসল করলে সকালে তোমায় খুঁজে পাওয়া যাবে?
রুয়াত ঠোঁট উল্টে বলল-
-“ আমি গোসল করবো কেনো? একটু আগেই গোসল করেছি। আর করবো না।
রুয়াত বেরিয়ে আসতে চাইলে শাফায়াত হাত টেনে ধরে।
-“ লুক অ্যাট। পুরো শরীরে বুমি লেগে আছে। গোসল না করে উপায় আছে?
কথাটা বলে ঝর্ণা ছেড়ে দিলো শাফায়াত। পুরো শরীর ভিজে গেলো রুয়াতের। মুহূর্তে শরীর প্রতিটি ভাজ আকর্ষণীয় হয়ে উঠলো আরো। শাফায়াত পড়লো ফের বিপাকে। একটু আগেই ধপ করে নিভে যাওয়া অনুভূতি গুলো আবার জেগে উঠলো। রুয়াত শরীরের উপর আসা পানি গুলো হাত দিয়ে ঠেকিয়ে বলছে-
-“ বন্ধ করেন। আমি গোসল করবো না।
শাফায়াত শুনলো না। রুয়াত তাল সামলাতে না পেরে পড়ে যেতে নিলে শাফায়াত ধরে ফেলে।
দুজনে পানিতে ভিজে একাকার। শাফায়াত এর শরীরের পানি রুয়াতের শরীরের উপর পড়ছে। রুয়াতের চোখ ঘোলাটে হয়ে আসছে। আলতো করে হাত টা শাফায়াত এর মুখে রাখলো। তারপর মুচকি হেসে বলল-
-“ আপনাকে দেখলে কেমন নেশা ধরে যায় শাফু। ইচ্ছে করে টুপ করে খেয়ে ফেলি। খাব?
শাফায়াত রুয়াত কে সোজা করে দাঁড় করালো। অন্য দিকে ঘুরে বলল –
-“ চেঞ্জ করে নাও। আমি ওদিকে ঘুরে আছি।
রুয়াত পড়নের শার্র টা খুলে ফেললো। পেছন থেকে শাফায়াত কে জড়িয়ে ধরে বলল-
-“ শেষ চেঞ্জ করা। জামা তো নেই কি পড়বো এখন?
ঠিকই তো কি পড়বে রুয়াত এখন?
-“ আচ্ছা ওয়েট করো আমি আনতেছি।
কথাটা বলে শাফায়াত পেছন ফিরলো। রুয়াত শুধু ইনার আর শার্ট টা কোমড়ে বাঁধা দেখে জোরে জোরে শ্বাস নিলো। নাহ্ আর পারা যাচ্ছে না। শাফায়াত তুই শেষ আজ। মেয়েটা আজ তোকে দিয়ে সকল অঘটন গুলো আজ করিয়েই ছাড়বে। শাফায়াত আর অনুভূতি আটকে রাখতে পারলো না। রুয়াত কে পাঁজা কোলে করে নিয়ে বিছানায় এসে শুইয়ে দিলো। রুয়াত কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলে পড়লো ওষ্ঠদ্বয়ে। পুরো শরীর ঝিম ধরে গেলো দুজনের। শাফায়াত পাগলের মতো ঠোঁটে নিজের অধিকার খাটাতে লাগলো। ঠোঁট ছেড়ে এবার গলায়,বুকে, গালে চুমু খেতে লাগলো। রুয়াতের তো শ্বাস বেড়িয়ে আসার উপক্রম। শাফায়াত কে দেখে মনে হচ্ছে সে কয়েক মাসেী ক্ষুধার্ত এক প্রাণী। তীব্র অনুভূতি নিয়ে যখন রুয়াতের ইনারের ফিতা টা টেনে খুলতে নিবে তখনই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ আসে। শাফায়াত এবার পারে না তো সব কিছু লণ্ডভণ্ড করে দিতে।
দরজার বাহির থেকে সাদমান বলে উঠল-
-“ ব্রো রুয়াত ঠিক আছে?
সাদমানের কন্ঠস্বর কানে আসতেই শাফায়াত মনে মনে বিশ্রী ভাষার একটা বকা দিতে ভুললো না। শাফায়াত এর গলার আওয়াজ না শুনে সাদমান ফের বলে উঠে-
-“ হেই ব্রো। ঘুমিয়ে পড়েছো নাকি?
শাফায়াত এবার রেগে বলে উঠল-
-“ হ্যাঁ আমি ঘুমিয়ে পড়ছি। এখন যাবি এখান থেকে?
-“ রুয়াত ঠিক আছে?
-“ আমি রুয়াত দুজনেই ঠিক আছি। এখন যা এখান থেকে ভাই আর বিরক্ত করিস না। এবার আমি সত্যি নিজে কি করবো জানি না।
সাদমান ভাবলো রুয়াত হয়তো বেশি মাতলামো করে ফেলছে সেজন্য শাফায়াত রেগে আছে। তাই চলে গেলো। রুয়াত এতক্ষণ চুপচাপ ছিলো। এবার শাফায়াত এর গলা জড়িয়ে ধরে টেনে কাছে আনলো। শাফায়াত পূনরায় তার কাজে ব্যস্ত হলো। নিজের পড়নের ভেজা শার্ট টা ফ্লোরে ছুঁড়ে দিয়ে রুয়াতের উপর উঠে পড়লো। দুজনের নিঃশ্বাসের শব্দ ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে। শাফায়াত পুরোপুরি ভাবে রুয়াতের মাঝে মিশে যেতেই রুয়াতের ওষ্ঠে হাসি ফুটলো। শাফায়াত যখন পুরোপুরি উত্তেজনায় মত্ত হলো তখন রুয়াত চোখ খিঁচে শাফায়াত এর পিঠে খামচি বসিয়ে দিলো। শাফায়াত এর সেদিকে হুঁশ নেই। সে তার কাজ করতে ব্যস্ত। রুয়াত দাঁতে দাঁত চেপে শাফায়াত এর দেওয়া ব্যথা গুলো ফিল করতে লাগলো। শাফায়াত এর দেওয়া এই ব্যথা গুলোর থেকেও শাফায়াত কে কাছে পাওয়ার মনোবাসনা যে ছিলো বেশি।
#চলবে?
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/