প্রেমসুধা #সাইয়্যারা_খান #পর্বঃ২১

0
202

#প্রেমসুধা
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ২১

হতভম্ব, বাক হারা পৌষ। তায়েফা নিজেও চমকে তাকিয়ে আছে। হুংকার ছেড়ে চিৎকার করে উঠে তৌসিফ,

— বড় ভাই!

তড়িৎ বেগে ছুটে এসে ধরলো পৌষ’কে। নিজের কাছে বাহুতে টেনে নিয়ে আলতো হাতটা ওর মাথায় রেখে র’ক্ত চক্ষু নিয়ে তাকালো তৌফিকের দিকে। হিসহিসিয়ে শুধু বললো,

— কাজটা ঠিক করলেন না।

তৌফিক জানে তৌসিফ ঠিক কি করতে পারে কিন্তু তাই বলে এই মেয়েকে ও ছেড়ে দিবে না ও। আজও পৌষ’কে জারজ হিসেবেই মেনে আসছে তৌফিক। বিয়ের সময় তৌসিফ পৌষ’কে দেন মোহর হিসেবে যা দিয়েছে তা কল্পনা অতীত। গত এক সপ্তাহ ধরে নিজের নামের অর্ধেক সম্পত্তি ও তৌসিফ পৌষ’কে দিতে চাইছে। তৌফিককে জানাতেই এক বাক্যে না করে দেয়। তৌসিফের কি হয়েছিলো আল্লাহ মালুম। ঐ প্রথম ভাইয়ের কথার উপর দিয়ে গিয়ে সে নাকোচ করেছে। তার কথা একটাই। জীবনে তো আপাতত পৌষ বাদে কেউ নেই। তৌসিফের কিছু হলে কেউ যাতে পৌষ’কে এই বাসা থেকে তাড়াতে না পারে তাই তৌসিফ পৌষ’কে নিজের অর্ধেক জীবিত থাকতেই দিতে চায়। তৌফিক রাজি না কিছুতেই। আজ সকাল সকাল গার্ডেনে হাঁটতে গেলেই তৌফিক কথা তুলে। তৌসিফকে বলে যাতে সিদ্ধান্ত বদলায় কিন্তু তৌসিফ তা করবে না। রেগে তখন বাড়ীর ভেতরে ঢুকে যায় তৌফিক। ওর বউ ওকে কি বলেছে তা তায়েফা জানে না কিন্তু এতটুকু জানে তৌফিক ভাবছে তৌসিফ’কে হয়তো পৌষ ই এসব পাঠ পড়িয়েছে নাহলে কেন তৌসিফ চাইবে তার সম্পত্তির মালিকানা পৌষ’কে দিতে। কথা কাটাকাটির এক পার্যায়ে না পেরেই পৌষ’কে চর মে’রে দিলো তৌফিক। তায়েফা কোনমতে টেনে তৌফিককে নিয়ে নিচে চলে যায়। ওরা যেতেই মিনু দরজা লাগিয়ে দিলো। ভয়ে ওর বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে। সোহা নিজের রুমে দাঁড়িয়ে দেখেছে সবটা। মিনু’র দুঃখী মুখ দেখেই সোহা বললো,

— নাস্তা খেয়েছিস?

মিনু মাথা নাড়লো। ওর আজ পৌষ’র হাতের নাস্তা খাওয়ার ইচ্ছে ছিলো। ভালো লাগে খেতে। সোহা রুম থেকে বের হতে হতে বললো,

— আয় আপা নাস্তা দিচ্ছি।

ছোট ছোট পা ফেলে সোহার পিছন পিছন গেলো মিনু। কাজের বুয়া একজন বাকি পরটা গুলো ভেজে রাখলো। তাদের খারাপ ই লাগলো। এত সুন্দর হাসি খুশি মেয়েটা’কে এভাবে থাপ্পড় মা’রাটা মোটেও ঠিক হয় নি বড় মামা’র।
.
পৌষ’কে বিছানায় বসিয়ে ওর গালে হাত দিতে নিলেই পৌষ ব্যথায় কুঁকড়ে উঠলো। তৌসিফের চোখ মুখ শক্ত অথচ দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে নিজেও ব্যথিত। তুলা দিয়ে ঠোঁটের কোণাটা মুছে দিতে নিলেই “উপফ” শব্দ করে পৌষ। তৌসিফ ওর হাতটা ধরে নরম করে। হাতেই চুমু দিয়ে নরম স্বরে বললো,

— আ’ম সরি হানি। এক্সট্রিমলি সরি।

পৌষ কথা বলে না। তার কান্না থেমে থেমে চলছে এখন। ফুঁপিয়ে কাঁদছে এখন। প্রতিবাদী পৌষ’র এহেন রুপ মোটেও কাম্য নয়। বিনা কারণে তাকে কেন মা’রা হলো তার উত্তর চাই তার। তৌসিফ ওর গালে মলম লাগাতে নিলেই কেঁদে উঠে। ব্যথায় টনটন করা গালে হাত লাগানো যাচ্ছে না। তৌসিফের মন চাইলো কারো বুক খাবলে নিতে এখন। ওর নিজের বুকেই অসহ্য পীড়া হচ্ছে। তবে কি ভালোবাসা হলো?
পৌষ ভাঙা গলায় বললো,

— ব্যথা।

— আমি অনেক ধীরে ধীরে করব পৌষরাত। একটু লাগাতে দাও।

বহু কষ্টে মলম লাগাতেই পৌষ উঠে দাঁড়ালো। তৌফিক সাথে সাথে হাতটা ধরে জিজ্ঞেস করলো,

— কোথায় যাচ্ছো?

— আপনার ভাই এর কাছে।

বলেই নিজের গালে আঙুল দিয়ে ইশারা করে দেখিয়ে বললো,

— এটার কারণ কি? আমার অন্যায় আমাকে জানাতে হবে।

পৌষ’কে টেনে নিজের কাছে নিলো তৌসিফ। ভালো গালটাতে হাত দিয়ে বললো,

— আমাকে সামলাতে দাও।

— নিজের জন্য যথেষ্ট আমি।

— জানা আছে আমার।

— ছাড়ুন। উত্তর আমার চাই ই চাই। কোন সাহসে গায়ে হাত তুললো আমার? কি পেয়েছে আমাকে? আমি আমি…

বলতে গিয়েই কেঁদে ফেললো ও। তৌসিফের সহ্য হয় না এই মেয়ের কান্না। সঙ্গে সঙ্গে বুকে টেনে নিতেই ওর পিঠের দিকের কাপড় আকড়ে ধরলো পৌষ। কাঁদতে কাঁদতে ই বললো,

— আমি তো না জায়েজ না এখন। আপনি না বললেন? তাহলে কেন মা’রলো? কি করেছে পৌষ? তাকে জিজ্ঞেস করুন তার কোন ভরা ভাতে ছাই দিয়েছি আমি?

— হুশ! হানি, তুমি কিছু করো নি। তোমার ব্যথার থেকেও হাজার গুন আফসোস ব্যথা দানকারী করবে।

পৌষ সাময়িক সময়ের জন্য থামলেও ওর ভেতরের ঝর থামে নি। উত্তর তার চাই ই চাই। অপরাধ কি তাকে বলতে হবে।
তৌসিফ ওকে বিছানায় বসিয়ে নরম স্বরে বললো,

— তুমি থাকো আমি নাস্তা নিয়ে আসি।

— কেন? নাস্তা এখানে কেন আসবে? আমার কি পা নেই যে উঠে যেতে পারব না?

ফোঁস করে শ্বাস ফেললো তৌসিফ। মাথা নেড়ে বললো,

— চলুন ম্যাডাম।

পৌষ উঠে যেতেই তৌসিফের চোখ দুটো ক্রমশ লাল হয়ে উঠলো। মাথাটা তার এখনও ঝিমঝিম করছে। বড় ভাই এর আজকের আচরণ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না তৌসিফ।

খাবার টেবিলে একদম নীরব ভাবে বসা পৌষ। টেবিলে পাউরুটি দেখে ওটা নিতে নিলেই তৌসিফ এসে বুয়াকে ডাক দিলো। বুয়া’কে দেখেই গম্ভীর কণ্ঠে তৌসিফ জিজ্ঞেস করলো,

— পৌষরাত না পরটা ভেজেছে। নিয়ে আসো।

বুয়া এনে দিতেই তৌসিফ নিজে প্লেটে নিলো। সেখান থেকে ছিড়ে ডিম দিয়ে পৌষ’র মুখের সামনে ধরতেই চোখ তুলে তাকালো পৌষ। তৌসিফ ইশারায় ওকে খেতে বললো। মুখ খুলে খেয়ে নিলো পৌষ। সোহা বাঁকা চোখে দেখলো সেদিকে। বিতৃষ্ণায় ওর মন ভরে উঠলো। এসব আদিখ্যেতা ওর পছন্দ হলো না বরং সে খুশিই ছিলো যখন পৌষ’কে সবার সামনে চড় মারা হলো। যেই পরিমান বাড় বেড়েছিলো এই মেয়ের জন্য একদম উচিত শিক্ষা ছিলো আজ।
একটু খেয়েই পৌষ উঠে গেলো। তৌসিফ ডাকলেও শুনলো না। সোজা রুমে ঢুকে বিছানায় উঠে বসলো। তৌসিফ নিজের খাওয়ায় মন দিলো। খেতেও যেন আজ ভালো লাগলো না। পৌষটা পাশে থাকতে থাকতে অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন। কফিটাও টেবিলে দিতো সে। বুয়াকে ডেকে তৌসিফ বললো,

— আমার কফি আর পৌষরাত যেভাবে চা খায় সেভাবে বানিয়ে রুমে পাঠাও।

বলেই টিস্যু দিয়ে হাত মুছে উঠে পরলো। রুমে যেতেই দেখলো পৌষ পা গুটিয়ে বিছানায় বসা। এখন পর্যন্ত সে শান্ত ই আছে। তৌসিফ কেন জানি মানতে পারলো না। এত শান্ত পৌষ সে চায় না। ঐ ছটফট করা বউটাই তার চাই। নিজেও বিছানায় উঠে পৌষ’র মুখোমুখি হলো তৌসিফ। আশ্চর্য হয়ে গেলো ওর গালের দিকে তাকিয়ে। এক সাইড হঠাৎ ই ফুলে উঠেছে। তৌসিফ ভেবে পেলো না ঠিক কতটা জোরেই না আঘাত পেয়েছে। রাগে ওর কপালের শিরা ফুলে উঠলো। সাইড ড্রয়ার থেকে একটা পেইন কিলার নিয়ে পানির গ্লাসটা পৌষর সামনে দিয়ে বললো,

— মুখ খোলো।

পৌষ মুখ সরিয়ে নিলো। তৌসিফ জানে কাজ হবে না তাই আলতো হাতে পৌষ’র ভালো গালটা ধরে নিজের কাছে ফিরিয়ে বললো,

— ব্যথা চলে যাবে হানি। প্লিজ কথা শুনো।

— শুনব না।

— আচ্ছা ঠিক আছে। এটা খাও।

— খাব না।

— একটু।

— এক ফোঁটা ও না। আপনার ভাই কেন মা’রলো আমাকে? জবাব দিন আমাকে। আমি মানব না। কি ভেবেছে পৌষ’র মা-বাবা নেই বলে ওকে সবাই আঘাত করবে? এতই সোজা। জোর করে বিয়ে দিলো এখন জোর করে মে’রে যায় আমাকে। আমি থাকব না আপনার সাথে। আমাকে এতিম খানায় দিয়ে আসুন।

চোখে মুখে কান্নার ছাপ দেখে তৌসিফের বুকে চাপ সৃষ্টি হলো। দাঁতে দাঁত চেপে ও পৌষ’র মুখে পেইন কিলারটা দিয়ে পানি খাওয়ালো। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,

— তুমি তার আফসোস দেখবে হানি। আই প্রমিজ টু ইউ।

বলেই পৌষ’র হাতের উল্টো পিঠে ঠোঁট ছোঁয়ালো। চোখ দুটো মুছিয়ে দিতে দিতেই চা হাতে মিনু দরজায় নক করলো। তৌসিফ আসতে বলতেই মিনু চায়ের ট্রে টা রেখে নিচু স্বরে বললো,

— বড় আপা….

— শু। গো নাও।

কথা না শুনেই ওকে যেতে বললো তৌসিফ। মিনু চলে যেতেই চায়ের মগটা পৌষ’র হাতে দিলো তৌসিফ। চা অনেক আদরের পৌষ’র কাছে। শ্রেয়া কত বলতো ঠোঁট কালো হয়ে যাবে তবুও গিভ আপ করে নি পৌষ। ওর ভালো লাগে চা খেতে।
পৌষ’র সাথে তাল মিলিয়ে কফির মগে চুমুক দিলো তৌসিফ। কি মনে করে বললো,

— এক সিপ নেই হানি?

পৌষ অবুঝ নয়নে তাকাতেই ওর মগ থেকে এক চুমুক খেলো তৌসিফ। পৌষ সমতায় বিশ্বাসী তাই তো ঝট করে নিজেও তৌসিফের মগ থেকে চুমুক বসাতে নিলেই ওয়াক ওয়াক করে উঠলো। এত স্ট্রং ব্লাক কফি বাপের জন্মে সে খায় নি। তৌসিফ হাসলো। মুখটা একদম প্যাঁচার মতো করে রেখেছে পৌষ। তৌসিফের হাসি পেয়ে গেলো। ড্রয়ার থেকে একটা চকলেট দিয়ে বললো,

— চুষতে থাকো।
.
বিছানায় তখনও পৌষ বসা। তৌসিফ রেডি হচ্ছে। মনোযোগ দিয়ে ওকে দেখতে ব্যস্ত পৌষ। আঙুলে আঙুলে গুনছে ঠিক কয় পদের স্কিন কেয়ার তৌসিফ করতে পারে। পারফিউম ও একটা লাগায় না। একটা ঘঁষে ঘঁষে লাগায়, একটা খালি বডিতে লাগায়, তারপর পোশাকের উপর দুটো লাগায়। এত সব কম পরে বিঁধায় কানের পিছনে আর হাতে লাগায় আরেকটা। আশ্চর্যের বিষয় হলো হ্যান্ড ক্রিমটা ও বাদ রাখে না। তৌসিফ পকেটে ওয়ালেট ভরতে ভরতে বললো,

— আজ ভার্সিটি তো অফ। রেস্ট নাও। কিছু লাগলে বুয়াদের বলবে নয়তো একটা মিস কল দিলেই হবে আমাকে। ছাদে যেও মন চাইলে।

বলতে বলতে পৌষ’র একদম কাছে এসে থুতনিতে চুমু দিয়ে নরম স্বরে বললো,

— আই উইল কাম সুন হানি।

এতটা কাছে আসাতে তৌসিফের ঘ্রাণে ম-ম করে উঠলো পৌষ’র চারপাশ। ঘ্রাণ সামলে উঠতে উঠতে কখন যে তৌসিফ গেলো তা টের ই পেলো না। শরীর খারাপ লাগাতে লাইট অফ করে শুয়ে পরলো ও। হালকা হালকা শীত ও লাগছে তাই রিমোট দিয়ে এসিটা ও অফ করে দিলো। ক্রমশ ই তাপমাত্রা বাড়তে লাগলো। এক সময় কুঁকড়ে উঠলো পৌষ। অন্ধকার রুমটাতে কেউ তাকে দেখতে এলো না৷

___________________

হক বাড়ীতে হৈ হৈ রৈ রৈ লেগে আছে। পৌষ’কে আনতে যাবে তারা। হেমন্ত একবার বলেছে শুধু গতরাতে যে পৌষ’কে আনতে যাবে সেই থেকে লেগে আছে বাচ্চাদের হুরো পাসরি। বাবা’র চাপা উত্তেজনা ও দেখেছে হেমন্ত। মা আর চাচি তো সেই থেকে ভেবে রেখেছে কি রাঁধবে। বাড়ীর বড় মেয়ে হওয়াতে সকলের আদরের ও। পরিস্থিতির কবলে পরে হয়তো সেদিন তৌসিফের হাতে তুলে দিতে তারা বাধ্য ছিলো কিন্তু কেউ ই চাইতো না এমনটা হোক। সম্পর্কের খাতিরে তৌসিফকে না করা হয় নি। এতদিন দেখে না কেউ। তাই তো সকাল হতেই লেগে পরেছে ওরা। হেমন্তের দুই কাঁধে ঝুলছে ইনি,মিনি। বারংবার তোতলানো গলায় বলেই যাচ্ছে,

— হেমু বাই আপি আতে না ত্যান?

হেমন্ত ইনি’কে টেনে কোলে তুলে বললো,

— দুটো মিলে চুল টেনে দে। তাহলেই আনব।

ছোট ছোট হাতের থাবা পরছে তখন হেমন্তের চুলে। ভালোই লাগে। মাথা টা ব্যথা করছিলো। এখন শান্তি লাগছে। চৈত্র’কে দিয়ে ও আজ কাজ করিয়েছে। সুযোগের সৎ ব্যবহার করছে হেমন্ত। শ্রেয়া এতক্ষণ কিছু না বললেও এবার বলে উঠলো,

— আপনি এমন করছেন কেন? নিয়ে আসুন না পৌষ’কে।

হেমন্ত এক পলক বৌ’কে দেখলো। মৃদু হেসে বললো,

— আগে আমার সেবা করুক। খাটাখাটুনি আছে অনেক।

— কিসের খাটুনি এত তোমার?

পেছন থেকে বাবা’র গলা শুনেই তাকালো হেমন্ত। অসন্তুষ্ট গলায় তিনি বললেন,

— নিয়ে এসো যাও।

— তুমি যাও আব্বু।

— আশ্চর্য! আমি কিভাবে?

— যেভাবে বিয়ে দিলেন।

— হেমুর মা দেখো তোমার ছেলে কত বড় ঢপবাজ হয়েছে। কাল থেকে ঘুরিয়ে এখন আমাকে বলে যেতে।

খুন্তি হাতে বেরিয়ে এলো হেমন্তের মা। ছেলের দিকে তাকিয়ে মায়া মায়া চোখে বললেন,

— যা না বাবা। কতদিন দেখি না আমার মেয়েটাকে।

আড়মোড়া ভেঙে হেমন্ত বললো,

— কল ধরছে না তৌসিফ তালুকদার। ধরলেই যাব।
.
অফিসে ঢুকেই নিজেদের কেবিনে ঢুকলো তৌসিফ। ওর পিএ সাথে সাথে ঢুকলো পিছনে। গায়ের কোর্ট টা না খুলেই তৌসিফ গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

— বড় ভাই এর সাথে হওয়া দুটো শিপ এর ডিল এখনই ক্যান্সেল করে দাও সাথে যেই কম্পানি ওনাকে স্পনসর করবে তাদের হুশিয়ারী দাও যে তার সাথে এই কাজে থাকলে আমি তাদের সাথে করা সব ডিল ক্যান্সেল করে দিব। আর হ্যাঁ, আজকের বন্দরের সব জাহাজ শুধু আমার গুলো ঢুকবে। আমার নামে ভাইয়ের একটা শিপ ও ঢুকবে না। যা আসবে ফেরত পাঠাবে।

পিএ ইমু চমকে তাকালো। নিজের ভাইয়ের সাথে এমন করবে তাও কি না তৌসিফ তালুকদার ভাবা যায়? যে নিজের ভাই বাদে কিছু বুঝে না সে করবে এই কাজ! তোতলানো গলায় ইমু শুধু বললো,

— স..স্যার যদি আরেকবার ভাবতেন…

— জাস্ট ডু ইট ফুল!

একদম হাবিলদার ইয়েস স্যার এর মতো ইমু পরি কি মরি করে বের হলো। এক দৌড়ে গেলো ম্যানেজারের কাছে। পরপর দৌড়ালো এমডির কাছে। আজকের জাহাজ ভিরতে না দেয়ার জন্য এরপর ছুটলো চট্টগ্রামে থাকা তাদের এমডিকে কল করতে। হায়! কত জ্বালা! এই চিকন দেহটা নিয়ে কতদিকে যাবে ইমু। এমনিতেই শরীরে রসকষ নেই তার মধ্যে এত খাটুনি। জীবনটা আর চলে না। একটা বউয়ের শূন্যতা ওকে কতটা পুড়ায় তা কি বুঝে তৌসিফ তালুকদার? নিজে বিছানা তো বউ দিয়ে গরম থাকে তাই আরেকজনের কষ্ট বুঝে না৷ কাল কত করে ছুটি চাইলো। শা’লা দিলোই না।

#চলবে….

গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here