আশিয়ানা #পর্ব_১৫ #শারমিন_আক্তার_বর্ষা

0
237

#আশিয়ানা
#পর্ব_১৫
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_____________
কাঠফাঁটা রোদ্দুরে কপোলদ্বয়ের স্বেদজল ঝকমক করছে। রুমাল দিয়ে স্বেদজল মুছে নিয়ে করুণ চোখে রোদেলার দিকে তাকাল উমাইয়া। বিরক্তিকর কণ্ঠে বলল, ‘ এত রোদে ছাঁদে কেন দাঁড়িয়ে আছি?’

রোদেলা করুণ চোখে তাকিয়ে। বলল,
‘ দেখছিস না? জুবিয়া মাথায় মেহেদী বাটা দিয়েছে। ওকে এখানে একা রেখে গেলে আমাদের আস্তো রাখবে?’

ছাঁদের দরজা খুলে এগিয়ে এলো তূর্ণ আর সাদাফ। তূর্ণ তাত্ক্ষণিক বলে উঠল,

‘ আপনারা যদি অনুমতি দেন আপনাদের বন্ধুর পাশে আমি থাকছি।’

রোদেলা ভ্রু উঁচু করে তাকাল। জানতে চাইলো,
‘ আপনি কে?’

জুবিয়া ত্বরিতগতিতে হেঁটে এসে তূর্ণর সামনে দাঁড়াল।
‘ আপনি এখানে আসছেন কেন?’

তূর্ণ খানিক ঝুঁকে এলো জুবিয়ার দিকে। এরপর বলল,
‘ আপনাকে দেখব বলে।’ বলে থামল তূর্ণ। জুবিয়ার মাথার দিকে খেয়াল করে জিজ্ঞেস করল,
‘ মাথায় এগুলো কী দিয়েছেন?’

জুবিয়া রাগে ফুঁসে ওঠে বলল,
‘ আপনাকে দেখলেই আমার মাথা গরম হয়ে যায়। মাথা ঠাণ্ডা রাখার জন্য মেহেদী বেঁটে দিয়েছি।’

তূর্ণ হাসি হাসি মুখে বলল,
‘ শুনুন না জলজ্যান্ত চিড়িয়াখানা। গিফটটা খুলে দেখছেন? কেমন লাগল?’

জুবিয়া ছাঁদ থেকে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলো। উমাইয়া আর রোদেলা পিছু পিছু যাচ্ছে। হঠাৎ সাদাফ

সাদাফ তূর্ণর দিকে রাগী চোখে তাকাল। উমাইয়াকে ছাঁদে যেতে দেখে সাদাফ তূর্ণকে নিয়ে ছাঁদে এসেছে। উমাইয়ার সঙ্গে কিছু কথা বলার জন্য। কথা বলা শুরু করার আগেই তূর্ণ জুবিয়াকে রাগিয়ে দিল।

সাদাফ বলল,
‘ আপনি আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন উমা? আমাকে কী আপনার পছন্দ নয়?’

উমাইয়া ইতস্তত করে বলল,
‘ আপনাকে বকি অপছন্দ করি। কখনো বলেছি?’

সাদাফ আকর্ণ হেসে বলল,
‘ মানে পছন্দ করেন।’

উমাইয়া লজ্জা মিশ্রিত হাসল। এরপর রোদেলার সঙ্গে চলে যেতে নিল। সাদাফ গলা তুলে বলল,

‘ উমা?’

পিছুডাক শুনে ঘুরে তাকাল উমাইয়া। সাদাফ ওষ্ঠকোণে মোহনীয় হাসি ফুটিয়ে তুলল। বলল,

‘ কিছু না!’

________

দুদিন হলো জুবিয়ার দেখা নেই। চতুর্থবার জুবিয়ার ফ্ল্যাটের সামনে থেকে মন খারাপ নিয়ে সাদাফের সঙ্গে বেরিয়ে গেল তূর্ণ। সাদাফ ব্যস্ত চোখে বার কয়েক তূর্ণকে দেখে নিল। ড্রাইভারকে গাড়ি স্টার্ট দিতে বলে সাদাফ সিটের সঙ্গে হেলান দিয়ে বসল। মেয়েটাকে সে দুদিন ধরে দেখছে না। তূর্ণ ভাঙা গলায় বলল,

‘ ভেঙেছে আমার মন। চূর্ণবিচূর্ণ হচ্ছে অনূভুতি। কোথায় আমার প্রিয়শীনি?’

সাদাফ লজ্জা মিশ্রিত হাসল। সাদাফ হাসি হাসি মুখে চোখ পিটপিট করল। সাদাফ তূর্ণর উদ্দেশ্য বলল,

‘ রেস্ট্রন্টে কাজে ব্যস্ত তোর প্রিয়শীনি।’

তূর্ণ ফুঁসে ওঠে বলল,

‘ রেস্ট্রন্টে কাজে মানে? ওনার তো জব চলে গিয়েছিল।’

‘ কাজ আবার হয়েছে।’

এক নিমিষে তূর্ণর মাথা গরম হয়ে গেল। রাগে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,

‘ আমি কতবার ওনার ফ্ল্যাটের সামনে গিয়ে ঘুরে ঘুরে আসলাম। তুই সব জানতিস। কিন্তু আমাকে বলিসনি কেন?’

সাদাফ হাতের ফোনটা উল্টো করে পায়ের ওপর রাখে। এরপর লম্বা এক শ্বাস ফেলে বলল,

‘ তোকে ঘুরঘুর করতে দেখে আমার ভালোই লাগছিল।’

নিমিষে চোখ লাল হয়ে গেল তূর্ণর। হতভম্ব কণ্ঠে বলল,

‘ কোনো মজা হচ্ছে সাদাফ? তুই আমার সাথে এমন কেন করলি?’

সাদাফ বলল,
‘ বলার মুড নেই।’

কলিংবেলের শব্দে ভেতররুম থেকে বেরিয়ে এলো সেহরিশ। দরজা খুললো সে। আকস্মিক সাদাফ আর তূর্ণর আগমন। আশ্চর্য মুখে আপাদমস্তকে তূর্ণ আর সাদাফকে দেখে সেহরিশ বলল,

‘ তোদের জ্বালায় আমি কি ঠিকঠাক করে বাড়িতে থাকতে পারব না?’

আয়েশ করে সোফায় বসে পা দুলাতে লাগল তূর্ণ। সেহরিশ তাদের সাথে বসে জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে। তূর্ণ সেহরিশের শরীরের সঙ্গে ঘেঁষে বসল। মিটিমিটি হেসে বলল,

‘ এখানে জাপানি ফুড এর এক রেস্ট্রন্ট রয়েছে। শুনেছি, সার্ভিস ভাল। খাবারের মান ও ভালো। চল না যাই।’

সেহরিশ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। তূর্ণ সেহরিশের হাত শক্ত করে টেনে ধরল। তারপর তূর্ণ নিষ্পলক চোখে তাকাল। সেহরিশ দাঁতে দাঁত পিষে বলল,

‘ আমি কোথাও যাব না। তোরা যা।’

হকচকিয়ে গেল তূর্ণ। সেহরিশ তার আকাশী নীল রঙের টি-শার্ট ঠিকঠাক করে বেডরুমের দিকে যেতে উদ্যত হলো। তূর্ণ সেহরিশকে দু-হাতে জড়িয়ে ধরে আহ্লাদিত গলায় বলল,

‘ চল না ভাই।’

সেহরিশ রাগে গজগজ করে বলল,
‘ আমায় ছাড়বি নাকি লাণ্থি দিয়ে বের করে দেব?’

সাদাফ বলল,
‘ একদিনের ব্যাপার৷ বাহিরে একটু খেলে তোর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে না।’

সেহরিশ বলল,
‘ আজ নয়।’

রোদেলার দিকে তাকাল জুবিয়া। বিরক্তিমাখা কণ্ঠে বলল,
‘ জোজো কে কেন নিয়ে যাচ্ছি আমরা? রেস্ট্রন্টে ওর কি কাজ? রেস্ট্রন্টের মালিক জোজোকে এলাউ করবেন?’

উমাইয়া মৃদুস্বরে বলল,
‘ জোজোর কথাও চিন্তা করা উচিৎ। ওর বাড়িতে একা থাকতে ভালো না। জোজো তো রাস্তায় থাকতে পারবে না পথচারী কুকুররা ওকে পেলে কামড়াবে। তুই টেনশন নিস না। রেস্ট্রন্টের উত্তর দিকে ফাঁকা জায়গা রয়েছে। জোজো সেখানেই থাকবে।’

জুবিয়া চিন্তামগ্ন গলায় বলল,
‘ আয়ানের বাবা যদি নারাজ হন?’
‘ আমরা কথা বলে, বুঝাব।’ বলল উমাইয়া।

জোজো নিশ্চুপ থেকে রোদেলার সঙ্গে মিশে রইল। রোদেলা জোজোর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। তারপর ধীর গলায় বলল,

‘ জোজো ওখানে গিয়ে কোনো উলট পালট কাজ করিস না। তুই একটা ভুলে আমাদের জব চলে যাবে।’

জুবিয়া একজন কাঁপলের অর্ডার নেওয়ার জন্য এগিয়ে গেল। উত্তরদিকের এক টেবিলে এক ফ্যামিলি বসেছে। তাদের টেবিলে মেনু কার্ড রেখে পাশে দাঁড়াল উমাইয়া। এক মহিলা কার্ড দেখে কিছু অর্ডার দিলেন, উমাইয়া অর্ডার নিয়প চলে গেল। পূর্ব দিকে এক টেবিলে দুজন বাচ্চা ছেলে তার বাবা মায়ের সঙ্গে বসে আছেন। টেবিলের ওপর পাঁচটা গ্লাস রয়েছে তবুও একটা গ্লাস নিয়ে দুজন হাতাহাতি করছে। আচমকা গ্লাসটা মাটিতে পরে যায়। ম্যানেজ আসলেন, রোদেলাকে ডেকে বলল,

‘ ভাঙা কাঁচগুলো উঠিয়ে বাহিরের ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে এসে তারপর ফ্লোরের পানি টুকু মুছে ফেলো।’

রোদেলা উপর নিচ মাথা দুলিয়ে বলল,
‘ এখনই করছি স্যার।’

এক টুকরো কাপড়ের ভাজে কাঁচগুলো রেখে ভালো মতো বেঁধে ডাস্টবিনে ফেলে রেস্ট্রন্টে প্রবেশ করল রোদেলা। ফ্লোরের পানি টুকু মুছতে লাগল। রোদেলার হাতের বা দিকে দেয়ালের বিশাল টিভিতে

উত্তর দিকের টিভিতে একটি গান চলছে। গান শেষ হওয়ার পরপর নিউজ শুরু হলো। সাংবাদিক ওবায়দা হক স্বাভাবিক ভাবে সংবাদ পরিচালনা করছেন। ওনার বক্তব্যের মূল হচ্ছে বিশ্ব বিখ্যাত ইতালির এআই মিউজিক ব্যান্ড। ওয়াবদা এক পলক টেবিলের ওপর কাগজের দিকে তাকাল। এরপর বলতে লাগল,

‘ বিশ্ব বিখ্যাত মিউজিক এআই ব্যান্ডের তিনজন তারকা বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছেন। সকলের মুখে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই দেশে ওনাদের প্রথম কনসার্ট হবে। এই বিষয়ে এআই ব্যান্ডের লিডার সেহরিশ ফাতিন চৌধুরী খোলাসা করে কিছু জানান নি। বহুদিন ধরে এমন একটা দিনের অপেক্ষা করে আছেন ভক্তরা।’

টিভির স্কিনে একপাশে মহিলাটি কথা বলছেন। এবং অন্য পাশে এআই ব্যান্ডের সদস্যদের ছবি জ্বলজ্বল করছে। ছবিটি দেখে বেশ কিছুক্ষণ তব্দা খেয়ে দাঁড়িয়ে রইল রোদেলা। সাদাফ আর তূর্ণকে চিনতে বিড়ম্বনা হলো না তার। ফ্লোর মুছার লাঠি নিয়ে ছুটে গেল জুবিয়া এবং উমাইয়ার দিকে।

উমাইয়া হতবিহ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে। ফিচেল সুরে বলল,
‘ ওরা বাহিরের দেশের সিঙ্গার।’

জুবিয়া বলল,
‘ তূর্ণ একজন বড় সেলিব্রিটি সেজন্য সব সময় তাকে ক্যাপ, সানগ্লাস ও মাস্ক পরা দেখা যেত। প্রথম দিন যখন আমি তাকে সাহায্য করি, একারণেই শপিংমলের সামনে মানুষজন ও সাংবাদিক ভিড় জমায়। আর আমাদের বাড়ির সামনে সব সময় কালো পোশাক পরা দশ পনেরো জন লোক দাঁড়িয়ে থাকে।’

উমাইয়া বলল,
‘ সম্ভবত লোকগুলো তাদের বডিগার্ড।’

জুবিয়া বলল,
‘ এবার বুঝলাম বাড়িওয়ালা খালা কি জন্য তার ছেলের জন্য রাখা ফ্ল্যাট ওদের কাছে বিক্রি করেছে। সেলেব্রিটি হওয়ার ফায়দা উঠিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছে।’

উমাইয়া উসখুস করে বলল,
‘ কিন্তু তারা আমাদের থেকে তাদের পরিচয় লুকালো কেন?’

রোদেলা চোখ ছোটো ছোটো করে সেহরিশের ছবির দিকে তাকিয়ে রইল। বিরবির করে বলল,
‘ কোথায় যেন দেখেছি।’

আয়ান দূর থেকে হাত নাড়িয়ে জুবিয়াকে আওয়াজ দিল। আয়ানের ডাক জুবিয়ার শ্রবণেন্দ্রিয়ে পৌঁছাল না। আয়ান এগিয়ে এসে ওদের সামনে দাঁড়াল। তারপর টিভির দিকে তাকিয়ে প্রফুল্ল গলায় বলল,

‘ তোরাও ওদের ফ্যান? আমি জানতাম না।’

উমাইয়া শুধাল,
‘ তুমি চিনো তাদের?’

আয়ান বলল,
‘ হ্যাঁ। ওদের গান আমার সেই ভালো লাগে। আর গানের সাথে ওদের ডান্স গুলো ফাটাফাটি। ওদের প্রতিটা গান রেকর্ড করেছে।’

জুবিয়া করুণ গলায় বলল,
‘ তোর ফোন কোথায়?’

আয়ান প্যান্টের পকেট থেকে তার স্মার্ট ফোনটি বের করে দিল। স্মার্ট ফোন এতকাল মোবাইলের দোকানে সাজানো দেখেছে। এখন পর্যন্ত কেনার সামর্থ্য হয়নি। এই প্রথম স্মার্ট ফোন হাতে নিল জুবিয়া। কিভাবে ফোন চালাতে হয় তার জানা নেই। আয়ান বলে দেওয়ার পরও জুবিয়া পারছে। আয়ান বিরক্ত হয়ে জুবিয়ার হাত থেকে তার ফোনটা ছিনিয়ে নিল। এরপর রুদ্ধ গলায় বলল,

‘ ফোনে কি দেখতে চাস? আমাকে বল। আমি বের করে দিচ্ছি।’

জুবিয়া টিভির দিকে তাকাল। সাদাফ ও তূর্ণকে দেখিয়ে বলল,

‘ ওদের সম্পর্কে জানতে চাই।’

আয়ান এআই ব্যান্ডের ভক্ত। তাদের সম্পর্কে সব কিছুই তার জানা আছে। মুখের কথায় জুবিয়া বিশ্বাস করবে না। তাই আয়ান সোজা গোগোলে চলে এলো। এআই ব্যান্ড লিখে সার্চ দিল। মুহূর্তেই শতশত খবর সামনে এলো।

এআই মিউজিক বয় ব্যান্ড এর সদস্য সাদাফ। পুরো নাম সাদাফ কাসানো। জাতীয়তা বাংলাদেশী। এআই ব্যান্ডের সিঙ্গার, সং রাইটার এবং ড্যান্সার। গায়ের রং ফর্সা৷ উচ্চতা ৫ফুট এগারো। বয়স ত্রিশ। পরিবার একটা এক্সিডেন্টে মারা গেছেন। সে এতিম।

মাহাবুব তূর্ণ। সে সিঙ্গার এবং মেইন ড্যান্সার। গায়ের রং উজ্জ্বল ফর্সা। বারবি চুল। উচ্চতা পাঁচ ফুট দশ। বয়স আটাশ। পরিবারের সদস্য শুধু বাবা এবং মা।

আয়ান ফোন পকেটে রাখল। জুবিয়া আর উমাইয়ার মুখপানে তাকিয়ে বলল,

‘ কি হয়েছে? তোদের মুখ এমন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে কেন?’

জুবিয়া তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল। বজ্রকণ্ঠে বলল,
‘ তুই আগে থেকে জানতি ওরা সিঙ্গার। আমাদের বলিসনি কেন?’

আয়ান অবাক কণ্ঠে বলল,

‘ আমি কি বলতাম? তোরা কাজ আর পড়ালেখার বাহিরে কখনো কিছুর দিকে ইন্টারেস্ট দেখিয়েছিস? তোদের তো গান বাজনা কোনো কালেই পছন্দ ছিল না।’

জুবিয়া উচ্চস্বরে চেঁচিয়ে উঠল,

‘ আমার সামনে থেকে যা।’

উমাইয়া ফ্যালফ্যাল চোখে রোদেলার দিকে তাকাল। করুণ গলায় বলল,

‘ তাদের আমরা চিনি না। তাই বলে আমাদের বোকা বানালো।’

রোদেলা এগিয়ে এলো। উমাইয়ার হাতে হাত রেখে বলল,

‘ একতরফা চিন্তাভাবনা করে তাদের ভুল বুঝিস না। তাদের না বলার পিছনে কোনো কারণ থাকতে পারে।’

উমাইয়া অসহায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ডুঁকরে ওঠে বলল,

‘ আমাকে মিথ্যে কেন বলল?’

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here