প্রহর_শেষে_তুমি_আমার #পর্ব ৬ #মেঘকন্যা ( ছদ্মনাম)

0
134

#প্রহর_শেষে_তুমি_আমার
#পর্ব ৬
#মেঘকন্যা ( ছদ্মনাম)

-“তোরা থাম তো।এতো কথা বলছিস কেনো?মেয়েটাকে জ্বালাতন করিস না।দেখনা চেহারার কি অবস্থা।মনে হচ্ছে বোম হয়ে আছে।যে কোনো সময় ফুটে যাবে।”
বলেই জোরে হাসতে লাগলো আরহান।

-”দেখুন আপনারা কিন্তু আপনাদের লিমিট ক্রস করছেন।আমি কিন্তু অথরিটিকে কে বিচার দিতে বাধ্য হবো।”(মিরা)

-”কিছু হবে না তাতে।কিছু করতে পারবে না তুমি।এই ভার্সিটির ট্রাস্টি আমার পরিচিত।” (আরহান)

– “তাই বলে কি পুরো ভার্সিটি কিনে নিয়েছেন নাকি?যা মন চায় তাই করবেন ?”(মিরা)

-“মেয়ে তুমি বড্ড বেশি কথা বলো।”( আরহান)

-” আপনারা কি পড়া লিখা করতে আসেন নাকি রাগিং ?দোষ আপনাদের না দোষ পরিবারে যে, আপনাদের শিক্ষা দিতে পারে নি।”(মিরা)

– “এই মেয়ে পরিবারের দিকে ভুলেও তাকাবে না।তাদের নিয়ে একটাও কথা না।”(আরহান)

-”কথা তো বলবোই।আপনাদের মতো মানুষের না আছে কোনো পরিবার না আছে কোনো পারিবারিক শিক্ষা।”( মিরা)

আরহান ফুঁসে উঠলো।হাত মুস্তি বদ্ধ করলো। মিরার দিকে তাকিয়ে বলল,,

-”তুমি এবার বাড়াবাড়ি করছো।মুখ সামলে কথা বলো”

-”আর আপনারা যা করছেন তা কি খুব ভালো? আপনারা বুঝি লিমিট ক্রস করছেন না? বাড়াবাড়ি বুঝি আপনারা করছেন না?”(মিরা)

-”বাড়াবাড়ির দেখলে কি? আমরা বাড়াবাড়ি করলে তখন বুঝতে পারবে বাড়াবাড়ি কতো প্রকার কি কি?”( আরহান)

-“ভয় দেখাচ্ছেন?” (মিরা)

-“কেনো?তুমি ভয় পেয়েছ নাকি?”(আরহান)

-”আসলেই ব্যবহারে বংশের পরিচয়।”( মিরা)

আরহান বাকা হেঁসে বলল
-”ভেবে ছিলাম আজ লাস্ট।তোমাকে আর কষ্ট দিবো না।কিন্তু না তোমার লাইফ যদি আমি হেল না করেছি আমার নাম ও আরহান চৌধুরী না।তুমি ভুল করেছো আমার ফ্যামিলি নিয়ে কথা বলে।এবার তুমি মজা বুঝবে। বি রেডি ফর এভরি থিং।”

মিরা আরহানের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় কণ্ঠে বলল,,
-”আপনার যা করার করুন।আমি ভয় পাই নাকি?”(মিরা)

বলেই মিরা ও সিমরান ভার্সিটি থেকে বের হয়ে গেল।এমন ড্রেস নিয়ে ক্লাস তো করা যাবে না তার উপর না আছে ক্লাস করার মুড।

“””””””””””””””””

ভার্সিটির থেকে এসেই একদম গোসল করে খাবার খেলো মিরা। বেশ কিছুক্ষণ এফবি স্ক্রল করলো। তারমিনের রূমে গিয়ে দেখলো তারমিন কোচিং এ গিয়েছে।মামনি ও নিজের রুমে ঘুমিয়ে আছে।মিরা রূমে এসে পায়চারি করতে লাগলো।বেশ কিছুক্ষণ পর বেডে গা এলিয়ে দিলো।টানা ঘুম দিলো মিরা।ঘুম থেকে উঠে দেয়াল ঘড়িতে দেখলো আটটা বেজে পনেরো মিনিট। উফ এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিল মিরা। ক্ষিদে ও পেয়েছে খুব।মিরা বেড থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বের হতে নিলেই তাশফীকের সাথে ধাক্কা লাগলো। তাশফীক দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করতে নিয়েছিল অন্যদিকে মিরা বের হতে নিয়েছিল।মিরা পড়ে যেতে নিলে তাশফীক তার কোমর পেচিয়ে ধরলো। মিরা তাশফীকের শার্টের কলার আঁকড়ে ধরলো।চোখ মুখ খিচে বন্ধ করলো।এই মনে হয় পরে কোমরটা গেলো।কিন্তু না পড়লো না।বার কয়েক ঢোক গিলে নিজের অবস্থান জানার চেষ্টা করল।চোখ খুলে দেখল এক খানা চোখ তাকে পর্যবেক্ষণ করছে।নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে দাড়ালো মিরা।

-’এই মেয়ে চোখ কি আকাশে তুলে হাঁটছিলে?”

মিরা তাশফীকের দিকে তাকিয়ে বলল,,

-”আপনিও কি চোখ আকাশের দিকে তুলে হাঁটছিলেন নাকি?”

-”ঠিক ভাবে কথা বলো।”

-”আপনি বলতে পারবেন।আর আমি বললেই দোষ।নিজের বেলায় ষোলো আনা,,অন্যের বেলায় এক আনাও না।”

-“ইদানিং মনে হচ্ছে না তুমি বেশি কথা বলছো?”

-“মুখ আছে কথা বলবোই। বোবা হয়ে থাকবো নাকি?”

-”যত্ত সব অ”প”দ আমার কপালে।”

বলেই হনহনিয়ে রুমে চলে গেলো তাশফীক।আজ কাল বাসায় এসো ও কোনো শান্তি নাই।একেতো এতো কাজ করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় এলো তার উপর আবার এই আপদ।মেজাজ টাই একদম বিগড়ে গেলো। রুমে এসে ফ্রেশ হতে চলে গেলো তাশফীক।

মিরা ভেংচি কাটলো।তাকে আপদ বলল। নিজে একটা বদ।তাকে উল্টো আ”প”দ বলল। হুহ।
নিচে যেতেই দেখতে পেলো বসার ঘরে চা খাচ্ছেন সায়মা বেগম। পাশেই বসে আছে তারমিন ।কোনো বিষয় নিয়ে তারা কথা বলছিল।সায়মা বেগম মিরাকে দেখে প্রশ্ন ছুড়লেন

-”তোর কি ভার্সিটিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে?”

মিরা প্রথমে একটু ভাবলো কি বলবে।সত্য কথা বললে সে নিশ্চয়ই মিরাকে নিয়ে টেনশন করবে।কিন্তু সে চায় না এসব।নিজের বিপদ নিজে হ্যান্ডেল করতে চায়।অযথা কেউকে জ্বালিয়ে কি প্রয়োজন?

-”কোথায় হারিয়ে গেলি ? বল কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা?”

-”আরে মামনি কোনো সমস্যা হচ্ছে না।তুমি শুধু শুধু চিন্তা করছো।”

-”আমি শুধু শুধু চিন্তা করছি না।আমাকে রুবি বলল তোর পরনে সাদা ড্রেস একদম রঙিন হয়ে গিয়েছিল।আমার থেকে কিছু লুকাস না।যা হয়েছে সত্যি সত্যি বল।”

-”মামনি কিছু হয়নি।আর আমরা নিজেরা মিলে ভার্সিটিতে রং নিয়ে খেলা করেছিলাম তাই এমন হয়েছে।”

-”যাহ বাবা এতো দিন জানতাম ভার্সিটিতে মানুষ পড়তে যায়।এখন দেখি মানুষ রং খেলতে যায়। উফ কি দারুন বিষয়।”

সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলল তাশফীক। মিরার ফেস বাংলার পাঁচের নেয় হয়ে গেলো।এই লোককে এই সময় আসতে হলো?।আর এই লোকের কি খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নেই।সব সময় পিছে লেগেই থাকে। অসহ্যকর!

-”আমি কথা বলছি মামনির সাথে।আপনি কেনো মাঝখানে কথা বললেন?”

-”এই মেয়ে আমি কি তোমায় কিছু বলেছি?তোমার নাম উল্লেখ করে কিছু বলেছি?বলি নি ?তাই তো?তাহলে নিজের গায়ে কেনো নিচ্ছ?নিজের কাজে মন দাও।”

-”আপনি আমাকে বলেন নি তো কাকে বলেছেন?আর এই মেয়ে কাকে বলছেন?আমার এতো সুন্দর নাম কি মুখে নিতে কষ্ট হয়? অবশ্য আপনার মতো মানুষের মুখে আমার এতো সুন্দর ঝাকা নাকা নাম মানায় না। হুহ!”

তাশফীক ভ্রু কুঁচকে বলল
-”আমার মতো লোক কি হুম?কি বুঝাতে চাচ্ছ তুমি।”

তাশফীক মনে মনে নিজের রাগ সংযত করার চেষ্টা করলো।এই মেয়ে বেশি বেড়ে যাচ্ছে।আগে তো এমন করে কথা বলতো না।

-”আপনার মতো গোমড়া মুখো।মুখে তো কোনো হাসি নেই।না আছে কোনো রস কষ।”

বলেই মিরা মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো কিচেনে।এই লোকের সাথে কথা বলা মানে সময় নষ্ট।তাশফীক কাঠ কাঠ কণ্ঠে বলে গেলো,”রুবি আমার জন্য এক্ষুনি এক গ্লাস লেবুর শরবত নিয়ে এসো।দেরি যাতে না হয়। কাম ফাস্ট।”

বলেই হন হনিয়ে চলে গেলো।সায়মা বেগম ও তারমিম একে অপরের দিকে তাকিয়ে রইলো। তাশফীক যা রাগ এই বুঝি মিরার সাথে রাগ দেখিয়ে কথা বলবে।কিন্তু না উল্টো মিরা তাকে চান্স না দিয়ে কতো গুলো কথা শুনিয়ে চলে গেলো।তার ছেলের মুখ দেখার মতো হয়েছিল।সায়মা বেগম ছেলে ও ছেলের বউয়ের কাণ্ড দেখে হেসে দিলেন।

চলবে?????

(আসসালা মুআলাইকুম।কেমন আছেন সবাই? ধন্যবাদ সবাইকে এতো বেশি সাপোর্ট করার জন্য।আমাকে এতো বেশি ভালোবাসা দেয়ার জন্য।এভাবেই আমার পাশে থাকবেন।ভালো লেগলে অবশ্যই লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।ভালোবাসা নিবেন পাঠকগণ ❤️❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here