#প্রহর_শেষে_তুমি_আমার
#পর্ব ১৮
#মেঘকন্যা
( প্রাপ্ত বয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত)
মিরা দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিলো। ঠোঁটের হাসি আরো একটু চাওড়া হলো।কিছুক্ষন নীরবতায় কেটে গেলো।মিরা তাশফীককে বলল,,
-”আগে কখনও প্রেম করেছেন?”
-”আজ কাল তো সব এমন।তবে আমি নই।প্রেমের ধারে কাছেও নেই।”
-”হুম তাহলে খুব ভালো”
তাশফীক ভ্রু কুঁচকে বলল,
,-”ভালো কেনো?”
-“কারণ আমার ইচ্ছা ছিল,যে আমার ব্যক্তিগত পুরুষ হবে,,আমি যেনো তার জীবনে প্রথম এবং শেষ নারী হতে পারি।”
-“ওহ?””আমি তোমার ব্যক্তিগত পুরুষ?”
মিরার চোখে চোখ রেখে বলল তাশফীক।
-“তা নয়তো কি?আপনার উপর শুধু আমার অধিকার।আপনার সব কিছুতে আমার রাজত্ব।আপনি আমার। একান্ত মিরার।”
অকপটে বলে দিলো মিরা। তাশফীক এখনো মিরার দিকে তাকিয়ে আছে।মিরার দৃষ্টি ও তাশফীকের মাঝে নিবদ্ধ। তাশফীক বলল,,
-“যদি আমি কখনো অন্য করো হয়ে যাই? যদি আমার উপর অন্যকারো অধিকার তৈরি হয়?”
মিরার হাসি মাখা ফেস মুহূর্তেই বদলে গেলো।আকাশের রঙের মতো মিরার ফেসের রঙ পরিবর্তন হলো।মুখ খানা ছোট হয়ে গেলো। তাশফীক নিজেকে নিজেই বকা
দিলো।কি প্রয়োজন ছিল এমন কথা বলার? দুজনের মাঝেই নীরবতা তৈরি হয়
মিরা ও তাশফীক হাঁটতে হাঁটতে একটা আইস ক্রিম পার্লার এর সামনে এসে পৌঁছাল। এই আইস ক্রিম পার্লারে আগেও এসেছে তারা।তাশফীক বলল,,
-“আইস ক্রিম খাবে?”
মিরা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,,
-“পার্টনার হিসেবে আপনাকে চাই।”
তাশফীক একটা হাসি দিল।দুজনেই সেই আইস ক্রিম পার্লারের সামনে গেলো।তাদের মতো নিওলি ম্যারিড কাপল এই পারলার এর ওনার। তাশফীক ও মিরা এগিয়ে যেতেই তাদের দিকে তাকিয়ে
ভেতরে অবস্থান করা মেয়ে টা বলল,,
-“কেমন আছেন? ভাইয়া যে আজকে শুধু এই বোনকে নিয়ে এসেছেন?আপনার আরেকটা বোন কই?”
তাশফীক হেসে বলল,,
-”তারমিন বাসায়।আমি গিয়েছিলাম শাশুরির বাড়িতে।”
মেয়েটার পাশে থাকা তার স্বামী তাশফীকের উদ্যেশ্যে বলল,,
-“ভাইয়া বিয়ে করলেন কবে?ভাবি কোথায়?”
তাশফীক বলল,,
-“করেছি বেশ কয়েক দিন।এই যে আমার সাথেই আপনাদের ভাবি।
মিরা লজ্জা পেলো। মেয়েটা মিরার দিকে তাকিয়ে উৎসুক কণ্ঠে বলল,,
-”লাভ ম্যারেজ?হায় কি সুন্দর!কে প্রথমে প্রপোজ করেছিলেন?”
মিরা কিছু বলল না। তাশফীক হেসে বলল,,
-“উহু। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ! ফ্যামিলি গত ভাবে হয়েছে।”
মেয়েটা হেসে বলল,,
-“হাও কিউট! বাট ব্যাপার টা ইন্টারেস্টিং।বোন থেকে বউ!”
মিরা কিছু বলল না। তাশফীক হেসে নিজের জন্য ভেনিলা ও মিরার জন্য চকলেট আইস ক্রিম নিয়ে আসে।দুজনেই আইস ক্রিম খেতে খেতে হাঁটতে থাকে। তাশফীক মিরার দিকে নিজের আইস ক্রিম এগিয়ে দেয়।মিরা একটু খেলো।
তাশফীক দেখলো মিরার ঠোঁটে আইস ক্রিম লেগে আছে। পকেট থেকে রুমাল বের করে মিরার ঠোঁট এর পাশে ছুঁয়ে দিলো।আইস ক্রিম পরিষ্কার করে দিলো। মিরার কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা মিলল না।
তাশফীক মিরার দিকে তাকিয়ে বলল,,
-“মিরা।”
-“হুম।”
-“একটা কথা মাথায় এসেছে।বলতে পারো ছন্দের মতো। আমি বললে তুমি শুনবে?
-“আপনি বলবেন?একটু আগে বলেছিলেন সেরকম?”
-“হুম।কেনো বলতে পারি না?তুমি শুনবে কি না বলো?”
-” হুম।”
-“””””নিকষ কালো রাত
পাশাপাশি হাঁটছে এক জোড়া যুবক যুবতী
ক্ষণে ক্ষণে বইছে মৃদু বাতাস
যুবতীর চুল থেকে ভেসে আসছে মিষ্টি এক সুবাস!””””
মিরা ভেতর ভেতর খুশি হলো।মুখে তা প্রকাশ করলো না।মিন মিন করে বলল,,
-“ভালো হয়েছে।”
তাশফীক উদাসীন কণ্ঠে বলল,
-“শুধু ভালো হয়েছে ?”
-“বেশ হয়েছে।তবে কবি কবি ভাব কবে থেকে ফুটে উঠলো আপনার মাঝে?”
-“তা ঠিক জানি না।”
_____________
দেসিং টেবিলের সামনে বসে কানের দুল খুলছে মিরা। এইতো কিছুক্ষণ আগে বাসায় এসেছে তারা।বাসায় এসেই একদম ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসেছে মিরা। অর্নামেন্ট গুলো খুলে আগে একটু শাওয়ার নিতে হবে।
তাশফীক বিছানায় বসে মিরার কার্যকলাপ দেখছে।সে ফ্রেশ হয়ে এসেছে একটু আগে।বাইরে এতো ধুলো বালি যে ফ্রেশ না হলেই নয়।তবে সে মিরার মতো রাত বিরাত শাওয়ার নিতে পারে না। ঠান্ডার সমসা।অবশ্য সে মিরাকে না বলেছে কিন্তু মিরা তো মিরাই কোনো কথা শুনবে না।
মিরা শাওয়ার নিয়ে ওয়াশ রুম থেকে বের হলো। বাসন্তী রঙের একটা ওয়ান পিস পড়েছে সে।সাথে প্লাজু।গোসল করার ফলে মুখে বিন্দু বিন্দু পানি জমেছে। গলা ও পিঠের কাছের কিছু অংশ ভিজে গায়ের সাথে লেপ্টে আছে।ফরসা গলায় পানির বিন্দু গুলো বেশ অন্যরকম লাগছে। চুল গুলো টাওয়াল দিয়ে পেছানো।মুখে অন্যরকম এক স্নিগ্ধতা বিরাজ করছে।
মিরা তাশফীকের দিকে তাকায়। তাশফীক তার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে এতক্ষণে মিরার খেয়াল হয় সে গায়ে ওড়না নেয় নি।উফ মিরার নিজের উপর রাগ হলো।হুম তারা হাসব্যান্ড ওয়াইফ কিন্তু তাদের সম্পর্কও তো সেই পর্যন্ত পৌঁছায় নি।আর লজ্জা নারীদের ভূষণ।মিরা পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে দেখলো তাশফীকের পায়ের নিচে ওড়না। তাশফীক বেডে হেলান দিয়ে আধশোয়া অবস্থায় বসে আছে।পা গুলো লম্বা করে রেখে এক পায়ের উপর আরেক পা দিয়ে রেখেছে।
তাশফীকের দিকে তাকালো।মিরার অবস্থা বুঝতে পেরে বাকা হাসলো।মিরা এদিক সেদিক তাকিয়ে চুলের টাওয়াল নিজের গায়ে রাখলো। ড্রেসিং টেবিলের সামনে যেয়ে চুল গুলো চিরুনি করলো। মিরা চুল চিরুনি করে ঠোঁটে লিপ জেল দিলো। আয়নায় দেখতে পেলো তাশফীক আগে মতো করে তার দিকে তাকিয়ে আছে।তাকিয়ে আছে তো তাকিয়ে আছেই। মিরা হাস ফাঁস করে বেডের দিকে এগিয়ে গেলো
মিরা তাশফীকের দিকে তাকিয়ে ওড়না টা একটু টেনে ধরলো।এক পাশ মিরা টেনে ধরতেই অন্য পাশ তাশফীক টেনে ধরলো। মিরা মুখ কাঁদো কাঁদো করে বলল,,
-“ছাড়ুন।”
-“ছাড়ার জন্য তো ধরি নি।”
বলে তাশফীক মুহূর্তেই এতো জোরে ওড়না টান দিলো যে মিরা তাশফীকের উপর পড়লো।মিরার হাত গিয়ে ঠেকলো তাশফীকের বুকে।মিরা হকচকালো। দুজনের চোখা চোখি হলো।মিরার কোমরের দিকে চেপে ধরলো তাশফীক।বাকা হেসে মিরার মুখে ফু দিলো।মিরা চোখ পিট পিট করলো। তাশফীক মিরাকে আরো একটু চেপে ধরলো।মিরার দিকে ঝুঁকলো তাশফীক।মিরার বুকের ভেতর ড্রিম ড্রিম শব্দ হলো।
তাশফীক মিরার কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে ফিস ফিস করে বলল,,
-”লিপ থেকে তো লিপ জেল উঠেই যাবে। তবে লিপ জেল দেয়ার মনে কি বউ?”
মিরাকে বেডে শুইয়ে দিলো তাশফীক।মিরার আঙ্গুলের মাঝে আঙ্গুল গুজে বেডের সাথে চেপে ধরলো।মিরার শরীর জুড়ে শিহরণ খেলে গেলো।মিরার অনুভব করলো তার গালে ঠোঁটের স্পর্শ।মিরা কেঁপে উঠলো।তার কাপুনি টের পেলো তাশফীক। গালে চু”মু এঁকে ফিস ফিস করে বলল,,
-”এখন থেকে ঠোঁট ফাটা রোধে লিপ জেল এর প্রয়োজন হবে না বউ।”
বলেই মিরার গলায় মুখ ডুবলো তাশফীক। গভীর ভাবে চু”মু খেলো।ছোট করে অজস্র চু”মু খেলো।মিরার যেনো হাত পা অনবরত কাপছে।চোখ গুলো বুঝে আসছে।
তাশফীক মিরার দু গালে হাত রাখলো।।মিরার ঠোঁট জোড়া মুহূর্তেই নিজের করে নিলো।মিরা আবেশে চোখ বন্ধ করে নিলো।কয়েক মিনিট পর মিরাকে ছেড়ে দিলো তাশফীক। কাঠ কাঠ কণ্ঠে বলল,,
-“রেসপন্স উইথ মি মিরা।”
বলেই মিরার ওষ্ঠ চেপে ধরলো। তাশফীকের হাতের ছোঁয়া গুলো তীব্র হলো।মিরা কেঁপে উঠল। শরীর জুড়ে অদ্ভুত অনুভূতি হলো।মিরার দু হাত গিয়ে ঠেকলো তাশফীকের চুলে।মিরা তাশফীকের চুল খামচে ধরলো। দীর্ঘ এক চু*ম্ব*ন মুহূর্ত কেটে গেলো।মিরাকে ছেড়ে দিলো তাশফীক।মিরার লজ্জায় দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিলো। তাশফীক হাসলো। তাশফীক মিরাকে লজ্জা দিতে বলল,,
–“ইজন্ট ইট এন আমেইজিং ফিলিং? ডিড ইউ ফিল ইট?”
মিরা লজ্জায় আরো একটু আড়ষ্ট হলো।মুখ পুরো লাল হয়ে গেলো।লজ্জায় যেনো তাকাতেই পারছে না মিরা। তাশফীক মিরার অবস্থা বুঝতে পেরে বলল,,
-“বললে না তো কেমন ফিল হলো?”ইনজয় করো নি বুঝি?”
মিরার যেনো ম*রি ম*রি অবস্থা।মিরা যেনো রুম থেকে বের হতে পারলেই বাঁচে। তাশফীক যেনো মজা পাচ্ছে। তাশফীক বলল,,
-“এখন এতো লজ্জা?সামনে তো আরো কতো কিছু পরেই আছে।”
মিরা যেনো আবার কেঁদেই দিবে।মিরা কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলল,,
-“তাশফীক ভাই?”
তাশফীক বলল,,
-“চুমু খাওয়ার পর ও আমাকে ভাই বলবে?ভাইকে কে চু”মু খায়?”
-“আপনি খুব খারাপ।”
-“তাহলে একটু খারাপ দিক প্রকাশ করি?”
মিরা মুখ ফুলালো। তাশফীক মিরার গায়ে ওড়না জড়িয়ে দিলো।মিরার কপালে চু”মু খেয়ে বলল,,
-”বউ তুমি এতো লজ্জাবতী কেনো?”
মিরা তাশফীকের বুকে মাথা লুকালো। তাশফীক তাকে জড়িয়ে ধরলো।মিরা তাশফীকের বুকে মাথা ঠেকিয়ে মুচকি হাসলো। তাশফীক বলল,,
-“বউ দেখি মুখ লুকিয়ে হাসছে।তাহলে কি ভেবে নিবো বউ আমার চু”মু ইনজয় করেছে।”
মিরা তাশফীকের বুকে *ঘুষি দিলো ।তাশফীক হো হো করে হেসে উঠলো।মিরা তাশফীক থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বেড সাইড টেবিল থেকে পানি পান করলো।যা হলো এতোক্ষণ।উফ!মিরা লাইট অফ করে তাশফীকের পাশে গা এলিয়ে গেলো।বেশ কিছুক্ষণ পর নিজেই তাশফীকের কাছে গা ঘেঁষে তাশফীকের বুকে মাথা রাখলো। তাশফীক বউ কে জড়িয়ে নিলো। তাশফীক বলল,,
-’আমার বুকে মাথা রাখতে লজ্জা করে না বউ?”
-“আমি ঘুমাবো।কোনো কথা নয়।আপনিও ঘুমিয়ে যান।”
-“চু”মু খাওয়ার পর দেখি বউ আমাকে শাসন করছে।”
-“আহা।আপনি কিন্তু বেশি করছেন।”
-“রাগ কমেছে ?”
-“হুম”
-“চু”মু এতো দ্রুত কাজ করবে তা আমার জানা ছিল না। যাই হোক এখন থেকে বউ রাগ করলেই চু”মু থেরাপি চলবে।”
-“আপনি চুপ করুন।”
– “এখন থেকে একটাই স্লোগান চলবে,,
বউয়ের রাগ ভাঙবে না যতক্ষণ
চু”মু থেরাপি চলবে ততক্ষণ !
বউ রাগ না কমিয়ে যাবে কই?
চু”মু থেরাপি ঝড়ের গতিতে কাজ করবেই!
মিরা বলল,,
– “কি সব বলছেন আপনি?
তাশফীক হেসে উঠলো। বলল,,
-“আচ্ছা আর বলবো না।”
তাশফীক মিরার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,
-“মিরা।”
-“হুম।”
তাশফীক মিরার চুলে চু”মু খেয়ে বলল,,
-“তাশফীকের উপর শুধু মিরার অধিকার। তাশফীক শুধু মিরার।তাই মিরার কোনো ভয় নেই।কেউ চাইলেও তাশফীককে নিতে পারবে না। তাশফীকের উপর অধিকার তৈরি করতে পারবে না।শেষ নিঃশ্বাসের আগ পর্যন্ত তাসফীক শুধু মিরার।”
চলবে??????
( আসসালা মুআলাইকুম।কেমন আছেন সবাই?আজ কিন্তু বড় করে লিখেছি।সবাই কিন্তু সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করবেন 🥹 গল্প ভালো লেগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।ভালোবাসা নিবেন সবাই ❤️❤️)