#যাতনা_আমার
#সানজিদা_ইসলাম_সূচনা
#পর্ব: ১২
(কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ।)
সময় নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলছে। সে কারও অপেক্ষায় থাকে না। দেখতে দেখতে ইনায়ার মির্জা বাড়ি ছাড়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে। কাল সে এই বাড়ি থেকে বিদায় নেবে। গত পাঁচ দিন ধরে ইনায়া সোহানা মির্জাকে নানান ভাবে বুঝিয়ে রাজি করাতে পেরেছে। সোহানা শেষমেশ বাধ্য হয় ইনায়ার কথা মানতে। কিন্তু সোহানা নিজের কাছেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, ইনায়ার জীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি ইনায়ার সঙ্গে থাকবেন। কারণ বাইরের জগৎ টা বড়োই নিষ্ঠুর। বাবা-মা ছাড়া এক বাচ্চা মেয়ের জীবনের ধাপ, কাটা তারের বেড়ার ন্যায়।
নিজের কাপড়চোপড় লাগেজে গুছিয়ে রাখছিল ইনায়া। প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস সে সঙ্গে নিয়ে যাবে। নিপা একটু পরপর এসে ইনায়া কে এটাসেটা দিয়ে যাচ্ছে। ইনায়া সাদরে গ্রহণ করছে তা। নিপার সাথে তার ভাব বেশি না থাকলেও তিনি তাকে অনেক স্নেহ করেন। মায়ের মতোই তার সব কিছুতে খেয়াল রাখত নিপা। ইনায়া সব গোছানো শেষে বেড সাইড টেবিল থেকে নাভানের ছবিটি হাতে নেয়। ছবিতে হাস্যজ্বল নাভানের মুখটা অনেক স্নিগ্ধ লাগছিল ইনায়ার কাছে। ইনায়া এক ধ্যানে নাভানের ছবিতে তাকিয়ে থাকে। নাভানের চোখ যেন তার দিকেই নিবদ্ধ। ইনায়ার বুক থেকে হাহাকার বেড়িয়ে আসে। তার স্বামী যাকে ইনায়া আজ পর্যন্ত নিজের মুখটাই দেখাতে পারেনি। নাভান হয়তো ভালোই আছে দূর দেশে। নিজের পছন্দের মেয়ের সাথে। হয়তো তার প্রতিটি রাত কাটে পরনারীর বক্ষপিঞ্জরের মুখ লুকিয়ে। ইনায়া কেঁপে উঠে তৎক্ষণাৎ। ক’জন নারী পারে স্বামীর সাথে অন্য মেয়েকে দেখতে? তার মতো যেন অন্য কেউ এই পরিস্থিতির শীকার না হয়। ইনায়া এবার হু হু করে কেঁদে উঠে। তার ভেতরের যন্ত্রণা সে ছাড়া অন্য কেউই বুজতে পারবে না। কি হতো একটু সুখী হলে সে। ইনায়ার হঠাৎ অদিতির কথা মনে হয়। রাগে ঘৃনায় ভেতরটা ফুঁসছে প্রায়। না কখনো তাদের মাফ করবেনা ইনায়া, কখনো না। হঠাৎ দরজায় নক হওয়ায় ইনায়া নিজেকে ধাতস্থ করলো। ছবিটি জায়গা মতো রেখে চোখমুখ মুছে নেয় হাত ধারা। দরজা খুলতেই নিধি কে দেখতে পায়। নিধি ইনায়ার চোখমুখ ভালো করে পরোক্ষ করে মিনমিনে স্বরে বলে,
-” মা ডাকছে ভাবি। তার রুমে গিয়ে দেখা করতে বলেছেন। ”
ইনায়া সহসা মাথা নাড়ায়। নিধি মলিন মুখে চলে যায়। ইনায়া ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে ভালো করে পানি দিয়ে, সোহানা মির্জার রুমের দিকে এগোয়।
অফিসের পনেরো তালার এক বিশাল বড় কেবিনের সোফায়, পায়ের উপর পা তুলে আর এক হাত চোখের উপর রেখে আধ শোয়া হয়ে আছে নাভান। শরীর টা ভাল নেই তার। এক সাপ্তাহ পরে বাংলাদেশে ফিরার কথা থাকলেও, অফিশিয়াল কাজের জন্য বেশ কিছুদিন পরে যাবার সিদ্ধান্ত নেয় নাভান। অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ মিটিং তাকে অ্যাটেন্ড করতে হবে। না থাকলেই নয়। অন্য দিকে অদিতির জন্যও নাভান প্রচুর বিরক্ত। এই মেয়ে কিছুতেই তার পিছু ছাড়ছে না। অফিসে অদিতির ঢোকা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে নাভান। তারপরও বিভিন্ন ভাবে তাকে পেরেশান করছে অদিতি। সাফরান ধীর পায়ে নাভানের সামনে এসে দাঁড়াল অতঃপর গলা খাকড়ি দিয়ে বলে ওঠে,
-” স্যার একজন আপনার সাথে দেখা করতে চায়ছে। বলল অত্যন্ত জরুরি কোনো কথা আছে আপনার সাথে। ”
নাভান একই ভাবে বসে থেকে গম্ভীর গলায় বলে,
– ” আমার ভালো লাগছে না সাফরান। কালকে আসতে বল উনাকে৷ ‘
-” আসলে সে লিও স্যার। ”
নাভানের ভ্রু কুঁচকে যায়। সে ইশারায় সাফরান কে আসতে বলে। লিও কি কারনে আবার তার সাথে দেখা করতে এসেছে? নাভান এবার সোজা হয়ে বসল। সাফরান কে মেসেজ করলো লিও কে এক ঘন্টা পরে পাঠাতে। টেবিলের উপর রাখা কফির মগ টা নিয়ে মুখ লাগাতেই বিরক্তে চোখ মুখ কুচকে যায় তার। সেটা আবার জায়গা মতো রেখে, মোবাইলটা হাতে নিয়ে সোহানা মির্জা কে কল লাগায় নাভান। সেদিনের পর থেকে মায়ের সাথে কথা হয়নি তার। কেন জানি এক জড়তা কাজ করছিল। নিধির সাথে কথা বলে বাড়ির বর্তমান পরিস্থিতির সম্পর্কে অবগত হয়েছে সে। যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশে ফিরতে হবে। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে কল দেওয়ার পরেও ফোন তুলে না সোহানা। নাভান তারপরও লাগাতার কল দিতে থাকে। এদিকে ইনায়া সোহানা মির্জার ঘরে বসে আছে অনেক্ক্ষণ যাবত। সোহানা গোসলে গেছেন তাই সে চুপচাপ বসে রইল। হঠাৎ করে ফোন বেজে উঠায় পাশে তাকাল ইনায়া। সোহানার ফোন বেজে উঠছে। ইনায়া কয়েক বার গিয়ে সোহানাকে ডাকলোও। কল আসছে বারবার। হয়তো কোনো ইম্পর্ট্যান্ট কল হবে। ইনায়া এবার জোরেই বলে ওঠে,
-” মামনি গুরুত্বপূর্ণ কল হবে হয়তো। বারবার ফোন আসছে। ”
সোহানা এবার প্রতিত্তোরে বলে ওঠে,
-” রিসিভ করে বলে দে আমি ব্যস্ত আছি। ”
ইনায়া চোখমুখ কুঁচকে ফোনটা হাতে নেয়। হঠাৎ করে অন্যের ফোনে কি বলা যায়। নাম্বার টা দেখে ভ্রুকুটি কুঞ্চন করে ইনায়া। এটা তো বাংলাদেশের বলে মনে হচ্ছে না। সোহানা বলায় অন্যথায় ইনায়া ফোন রিসিভ করে সালাম দেয়। হঠাৎ কোনো মেয়ের গলায় সালাম শুনে অবাক হয় নাভান। ফোনের ওপাশে তো সোহানা বা নিধির গলার মতো লাগছে না। কে হতে পারে? নাভান কিছু বলতে যাবে তখনই ফোনের ওপাশ থেকে ইনায়া সুরেলা গলায় বলে ওঠে,
-” মামনি একটু ব্যস্ত আছেন। একটু পরে কল বেক করবেন তিনি। ”
নাভান হতভম্ব হয়ে যায়। সোহানা কে মামনি ডাকে কে? তারা তো কেউই নয়। তাহলে কে? ওই মেয়েটা নয় তো? হঠাৎ করেই ইনায়ার কথা মনে হয় নাভানের। কেমন জানি অস্থিরতা অনুভব করে সে। নাভান নিরুত্তর, হালকা একটা ডুক গিলে শান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করে,
-” আপনি কে? মা কোথায়? ”
চকিতে ইনায়ার চোখ বড়সড় হয়ে যায়। এই কন্ঠ খুব চেনা। মাত্র কয়েক মুহূর্ত শুনলেও,নিজের মনের ভিতর তার কথা যত্নের সহিত লুকায়িত আছে। কারণ তার মুখের কিছু বানী ইনায়ার জীবনের কষ্ট, দুঃখ, বেদনা বুকের ভিতরের অজস্র হাহাকার সব কিছুর জন্যই দায়ী। যে কথা গুলো সে ভুলতে পারবে না কখনো। ওষ্ঠযুগল কম্পিত হয় বারংবার। ঝাপসা চোখের নেত্রপল্লব ঝাপটায় ইনায়া। সে কম্পিত কণ্ঠে আস্তে করে বুলি আওরায়।
-” আমি কে? হয়তো আপনার স্ত্রী। হয়তো বা না। ”
নাভান হকচকিয়ে যায় অনেকটা। কপাল বেয়ে তার চিকন ঘামের রাশি দেখা দেয়। এসির মধ্যেও ঘামছে নাভান। ইনায়ার সাথে এমন ভাবে কথা হয়ে যাবে ভাবতে পারেনি সে।
-” চিনতে কি করে পারলে? আগে তো কোনোদিন সামনাসামনি দেখা হয়নি আমাদের। না কথা হয়েছে কখনো। মনে রেখে কি লাভ? যেখানে আমি অন্য কাউকে পছন্দ করি বলে, চলে গিয়েছিলাম।”
ইনায়া তাচ্ছিল্যের সুরে হেসে বলে উঠল,
-“তাই তো! আগে তো কথা হয়নি কখনো। আসলে জানেন কি? আমারা মেয়েরা পরম স্বামী ভক্ত হই। আবার স্বামীর সাথে অন্য কাউকে সহ্যও হয় না। জানেন কেন? কারন হলো তিন কবুলের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের জন্য। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটাই এরকম। হঠাৎ করেই দুজন অচেনা মানুষকে, ইহজন্মের জন্য গভীর মায়ায় জড়িয়ে দেয় এক পবিত্র বন্ধনে। সেখানে তৃতীয় জনের কোনো স্থান নেই। আমি বোধ হয় সম্পর্কের মায়ায় জড়িয়ে গিয়েছিলাম। আপনার নামে তিন কবুল বলার পরেই আমার আপনার প্রতি অদ্ভুত টান,মায়া কাজ করছিল। হয়তো আপনার বেলায় তেমনটা হয়নি। যাইহোক, জলদিই বাড়ি ফিরে আসুন। আসা করি বাড়ি ফিরে আমাকে দেখতে পাবেন না। আমি অপেক্ষায় থাকব, চিরতরে আপনাক মুক্তি দেবার জন্য। ”
কথাটা বলে ইনায়া ফোনটা রেখে দেয়। ভেতরটা গুমরে উঠলো প্রায়। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়ে তার। যেখানে নাভানের তাকে মনেই নেই সেখানে তার স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দেওয়া বোকামির কাজ। ইনায়া নিজের প্রতি রুষ্ট হয় প্রচুর। তাকে এইসব মায়া কাটাতে হবে। ইনায়া আজকে নিজের কাছেই নিজেকে ছোট প্রমানিত করেছে। ইনায়া ঠোঁট চেপে কান্না কাটকে ঘড় থেকে বেরিয়ে যায়। অন্যদিকে হতবাক হয়ে থাকে নাভান। মেয়েটা ইনায়াই ছিল। কান থেকে ফোন নামিয়ে নির্লিপ্ত বসে থাকে নাভান। মাকে শিক্ষা দিতে গিয়ে এইটুকু বাচ্চা মেয়ের মন না ভাঙলেও পারত নাভান। জীবনের এই পর্যায়ে এসে নিজেকে নিজের ধিক্কার দিতে মনে চায়ছে নাভানের। সে পারতো বিয়ে না করে কানাডায় চলে আসতে। কিন্তু সোহানার প্রতি তার রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে গিয়ে। আজ এই পরিস্থিতি হয়েছে। নাভান প্রচুর হাসফাস করতে থাকে। কেমন একটা অস্থিরতা তাকে ঘিরে ধরেছে। ইনায়ার কান্নারত কন্ঠ তাকে বারবার পীড়া দিচ্ছে। নাভান সেই প্রথম দিনের মতো তা ভুলার চেষ্টা করে।
গভীর রাত, বাড়িটা পাতালপুরীতে ডুবে রয়েছে। নিস্তব্ধ সব কিছু। যে যার রুমে শুয়ে গভীর নিদ্রায় আছে। শুধু ক্ষণে ক্ষণে আওয়াজ ভেসে আসছে আয়েশা মির্জার রুম থেকে। ইশান আর নিধি আয়েশা মির্জার সাথে বসে গল্প করছে। আজকাল আয়েশা মির্জার রাতে ঘুম হয় কম। শরীরটাও আজকাল খারাপ যাচ্ছে তার। তারপরও মনে একটু শান্তি আছে নাভান আসবে বলে। তার মনে হচ্ছে বাড়িতে এবার সুখ আসবে। নাভান এলে সোহানাকে ঠিক মানিয়ে নেবে।
-” আচ্ছা দাদি, মা কি সত্যিই চলে যাবে? আমি তো এই বাড়ি ছাড়া কোথাও থাকতে পারি না। আর মাকেও ছাড়তে পারব না। কি করা যায় এখন? ”
নিধির কথায় আয়েশা আর ইশানের নজর তার দিকে পরে। নিধি অবুঝের মতো জিজ্ঞেস করে। ইশান মাথা হালকা নাড়িয়ে নিধির মুখ পানে তাকায়।
-” ভাই আসলে বড়মার রাগ ঠিক কমে যাবে। কিন্তু তোর এই একটা জিনিস বুঝতে পারছিনা। আজ বাদে কাল তোকে তো পরের ঘরে যেতেই হবে। তখন তো এই বাড়ি ছাড়াই থাকতে হবে। ”
-” মোটেই না, আমি এই বাড়ি ছাড়া কোথাও থাকতে পারব না। যাব না পরের বাড়ি। ”
মুখ কুঁচকে বলে নিধি। ইশান আয়েশা মির্জার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙচিয়ে বললো,
-” বুঝলে গিন্নি, তিনি নাকি পরের বাড়ি যাবে না। তাকে কি সারাজীবন বাপের বাড়িতে বসিয়ে রাখবে? ”
আয়েশা মির্জা মৃদু হেঁসে বলে ওঠে,
-” মেয়েদের আসল বাড়ি হচ্ছে স্বামীর ঘর। বাবার বাড়িতে তো দুদিনের মেহমান। সব মেয়েদেরকেই বাবার ভিটা ছাড়তে হয়। ”
-” আমি ছাড়ব না। দরকার পরলে ঘর জামাই এনে রাখব। আর দাদি, দুদিনের জন্য শুধু বাপের ঘরের মেয়েরা মেহমান হয় না স্বামীর ঘরের মেয়েরাও হয়। যেমন, আমার ভাবি। আর বিয়ের পর আমিো ভাবির জায়গায় থাকতে পারি। ”
ইশান এবার তেতে উঠে। চোখে মুখে ঝাঁজ এনে বিরক্তর সহিত ব’লে,
-” আমরা কোনো ঘর জামাই বাড়িতে রাখব না। আর রইল ভাবির কথা? তোর ভাইয়ের ভাগ্য ভাল ইনায়ার কোনো ফ্যামিলি মেম্বার নেই। তারা ঠিকই কোনো এ্যাকশন নিতো। তোর সাথে যদি এমন ঘটে, তোর জামাইরে চান্দের দেশের সাথে মুলাকাত করিয়ে আনবো। তবুও তোকে বিয়ে বসতেই হবে। ”
নিধি এবার বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে হাতের বালিশ দিয়ে ইশানকে দুইটা বারি দেয়।
-” দরকার পরলে তোমাকে বিয়ে করে এই বাড়িতে সারাজীবন থেকে যাব। কিন্তু অন্যের ঘরে যাব না। ”
-” হুহ্, আমার এমন দুর্দশা কখনো হবে না যে, তোর মতন এমন গাঁধি কে বিয়ে করতে হবে। আমার বউ হবে একদম বড় গিন্নীর মত। তাইনা? ”
ইশান কথাটা বলে আয়েশা মির্জার দিকে তাকায়। আয়েশা কিছু বলতে যাবে, আগেই ইশানের ফোনটা বেজে উঠে। নিধিও আর কোনো জবাব দিতে পারল না। ইশান নিধির মাথায় একটা চাটি মেরে, ফোন নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে নিজের ঘরের দিকে যায়।
-” এতরাতে কার কল হতে পারে দাদি? কাজের জন্য তো কেউ এতো রাতে কল দিবে না। ”
নিধির কথায় আয়েশা মির্জা তার দিকে তাকায়। নিধির মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে কুটিল হেঁসে টেনে বলে উঠল,
-” হয়তো আমার সতিন। বুঝলি নিধি, ইশানকে শীগ্রই বিয়ে করাতে হবে। আগে নাভানের ঝামেলা শেষ হোক। তারপর ইশান কে ধরবো। ”
দাদির কথাটা মোটেও ভালো লাগে না নিধির। মলিন মুখখানা গম্ভীর করে সে। দাদির কথায় ঘোর আপত্তি জানায় রিনরিনে গলায় বলে ওঠে,
-” একদম না ইশান ভাইয়ের আর কি বয়স? সবে মাত্র সাতাশ বছর? ভাইকে আরও দুই তিন বছর পরে বিয়ে করাবে। এর আগে বল আমাকে কবে বিয়ে দিতে চাও? ”
আয়েশা মির্জা তখন কথাটা বলে, চোখ থেকে চশমা খুলে টেবিলে রাখছিলেন। নিধির কথা শুনে তিনি ঝাপসা চোখে তাকালেন। কয়েকবার পলক ফেলে নরম স্বরে বললেন,
-” হয়তো তোর মা চাইবেন আরও পাঁচ বছর পরে। কিন্তু, আমি বাবা তোর বিয়ে দু-তিন বছরের ভিতরেই দিতে চাই। বলা তো যায়না, কবে জানি ও পারের টিকেট কাটি। এর আগেই তোর বিয়ে দেখে যাব। ”
নিধি এবার মুচকি হেঁসে খুশি মনে বলে,
-” তাহলে হিসাব ঠিকঠাক। তুমি এখন ঘুমিয়ে পরো দাদি। কালকে আবার ভাবির সাথে আমাকে হোস্টেলে যেতে হবে। ”
কথাটা বলে নাচতে নাচতে নিধি রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। আয়েশা মির্জা হতভম্ব হয়ে তার যাওয়ায় দিকে তাকিয়ে থাকে।
চলবে…………………….
( গল্পের মধ্যে চরিত্র অনেক গুলো থাকায়, সবাইকে এক পর্বে রাখা হয়ে উঠেনা। অনেকে গল্প পরে একটা লাইকও দেন না। আপনার একটা লাইক আমাকে পরবর্তী পর্বে লেখার জন্য উৎসাহ দেয় প্রচুর। আর যারা আমার গল্প কপি পোস্ট করছেন, তাদের লাইক কমেন্ট আমার থেকে বেশী। গল্পের রেসপন্স ও কমে যাচ্ছে। 🙄)