প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার #লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান) #পর্ব_০৬

0
112

#প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০৬

“ওহ তাহলে তুমিই সেই সো কলড পাত্রী যাকে আমার
পছন্দের পুরুষের জন্য দেখা হয়েছে। হাহ্ না আছে সুন্দর রূপ, না আছে কোনো ক্লাস। জাত তো সেই ফকিরের। তো কী করে সারোয়ার ভাইয়াকে নিজের বশে করে রেখেছো হুম? না মানে তোমাকে পাত্রী হিসেবে ছাড়তেই চাইছে না সে। এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল। এখনো পাত্রী হিসেবে চয়েজড আছো দেখছি। ছিঃ আমি এত সুন্দর হয়েও লাভ হলো না।”

শেহরীনা অবাক চিত্ত নয়নে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে অচেনা মেয়েটির দিকে। হঠাৎ কোথার থেকে এসেই নিজ মনে বকে ফেলল মেয়েটা। অথচ মেয়েটাকে সে কখনো দেখে অব্দি নেই। বান্ধবীর প্রতি হওয়া অপমান সহ্য করল না ইপশিতা,জাফরান আর ফারদিন। ফারদিনের রাগ তো আকাশচুম্বী। সে তাদের ঠেলে মাইমুনার মুখোমুখি হয়ে কড়া গলায় জবাব দেয়।

“দেখেন মিস কে না কে আপনি। হুট করে এসেই আমাদের বান্ধবীর উপর ব্লেইম দিয়ে নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন। সো ভালো আপনার জন্য এটাই হবে সরি বলে আপনার অভদ্রতার ক্ষমা চাওয়া। অপরিচিত মেয়েকে পরিচয় না দিয়েই অপমান করার কোনো রুলস নেই। আপনি যদি এখনি ক্ষমা না চান তবে আমি একজন আইনের আওতায় পড়া ছেলে হওয়ার স্বার্থে আপনাকে জেলে পাঠাতে পারি অ*শ্রা*ব্য গা*লাগা*লের জন্য।”

মাইমুনা হাতে মোড়ানো টিস্যু পেপার পিস্ত করে চেপে রইল। ফারদিনের কথার অপমানে তার গাঁ-পিত্তি জ্বলে উঠল। সে মুখ থেকে ‘আ’ মূলক উচ্চারণ করার পূর্বেই হঠাৎ এক পূর্ব পরিচিত মুখের দেখা পেল ফারদিন। তার ঠোঁটের কোণায় ভেসে উঠল চমৎকার হাসি। সে তার নিজের বাহু দিয়ে অসভ্য মেয়েটার কাঁধ ধাক্কিয়ে পাশ কেটে পরিচিত মুখের দিকে এগিয়ে গেলো। তাকে জড়িয়ে ধরে ফারদিন আহ্লাদী কণ্ঠে বলে উঠে।

“সারোয়ার ব্রো তুমি কবে শহরে এলে? তুমি তো সচরাচর শহরে থাকো না। তার চেয়ে বড় কথা বিদেশ থেকেও বা কবে আসলে?”

সারোয়ার তার কোর্টের ইউনিফর্ম পরে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে সে কোর্টের থেকে সোজা ভার্সিটি এসেছে। ফারদিনের কথায় মৃদু হাসল সে। তার দাঁড়ির কারণে হাসিটা সাধারণ লাগল। তবে গালের একপাশ ডেবে যায় এই যেনো এক মুগ্ধকর দৃশ্য। ঢোক গিলল শেহরীনা। এই সেই পাত্র যাকে সে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে তার এই ভার্সিটির মধ্যে কী কাজ? শেহরীনা ও কৌশলে ঘটনা কী জানতে ফারদিনের কাছে এগিয়ে গেল। ফারদিন এখনো সারোয়ার এর কাঁধ জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ইপশিতা গোলগোল চোখ করে ‘সারোয়ার’ নামক ব্যক্তির আপাতমস্তক পরখ করল। লোকটার বেশভূষায় আধুনিকতার ছাপ সুস্পষ্ট। মুখেও এক আলাদা ধাঁচ। যেনো অন্য এক প্রকৃতির স্বভাবে অভ্যস্ত পুরুষ। ইপশিতা কে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকালো শেহরীনা। হ্যাংলার মত কোনো মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকার যে বিশ্রী ব্যাপার! সে পা দিয়ে পাড়া দিলো ইপশিতার পায়ে। এতে শব্দ করে ‘উহ’ করে উঠল সে। শেহরীনাও তৎক্ষণাৎ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে যায়। ইপশিতার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ফারদিন জিজ্ঞেস করে।

“কী-রে তোর ভেতর কী শেয়ালের আত্মা ভর করছে? দিনদুপুরে উহ উহ করে চেঁচাতে লাগলি।”

ইপশিতা জবাব না‌ দিয়ে খালি চোখ রাঙাল। দ্বিতীয়বার চোখ রাঙায় শেহরীনাকে। সে তো মোটেও পাত্তা দেয়নি। সারোয়ার গলা ঝেড়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করল। তারা তার দিকে তাকাতেই সে মৃদু গলায় বলে,

“আমি আমার বোনের ননদ মাইমুনাকে নিতে এসেছিলাম। আমার বোন সাজিয়া তার ননদকে আনার জন্য অনুরোধ করেছে তাই চলে আসলাম। এসে আমার খালাতো ভাই ফারদিনের সাথেও দেখা হয়ে গেল। ফারদিনের মা আমার মায়ের ছোট বোন। তো ফারদিন ব্রো বিয়ে সাদি কবে করছো?”

ফারদিন লাজুক মুখ করে জাফরান কে জড়িয়ে ধরে বলে,
‘ভাই মেয়ে রাজি হলেই বিয়ে পাক্কা করে ফেলবো।’

“ওরেব্বাস তো মেয়ে কে?”

ইপশিতা উৎসুক দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে। তার শীতল চোখের চাহনী একপলক শেহরীনার দিকে গিয়ে ঠেকে। পরক্ষণে নিজের মনকে বুঝ দিয়ে শক্ত খোলসের ন্যায় নিজেকে স্থাপন করে দাঁড়িয়ে রইল অধীর আগ্রহ মনে শুনার জন্যে। ফারদিন এবার অস্থির চিত্ত কণ্ঠে বলে,

“ভাই বলব সময় করে। এখন সেই উপযুক্ত সময় আসেনি। আমি জানি না এখনো মেয়েটার মনে আমার জন্য ফিলিং আছে কি-না। যদি থাকে তাহলেই সম্পর্ক আগাবে। বাই দ্যা ওয়ে ব্রো বিয়ের কথা আমার ছাড়ো। তোমারটার কী খবর হুম! খালাব্বুর থেকে শুনছিলাম মেয়ে দেখতে গিয়েছিলে। তাও আবার মেয়ের বাবার থেকে এক সপ্তাহ সময় ও চেয়ে নিলে। তাহলে পছন্দ হয়েছে মেয়ে?”

ফারদিনের কথায় আচমকা নিজের পরণের জামা শক্ত করে চেপে ধরল শেহরীনা। সে শুধু নাম আর পদবী বলে ছিল। তাই তারা সারোয়ার কে দেখেও চিনেনি। সেই সময় পুরো নাম ছাড়া একটা নাম ‘সারোয়ার’ বলেছিল দেখে সবাই বিয়েতে সম্মতি দেয়নি। এমুহুর্তে স্বয়ং সারোয়ার দাঁড়িয়ে আছে তার সামনেই তার নামে বদনামি শুনবে। ঢোক গিলতে গিয়েও আটকে পড়ে শেহরীনা। সারোয়ার পুরোপুরি দৃষ্টি মেলে ধরে রাশপূর্ণ ভীতু মেয়েটির দিকে। তার চোখজোড়া বলে দিচ্ছে সে ভীষণ ভয়ে তিক্ত হয়ে আছে। কেনো সারোয়ার তার নামে বদনাম ছড়াবে বলে? ভেবেই হাসি পেল সারোয়ার এর। সে মাথার চুল নেড়ে ইউনিফর্ম টান টান করার সহিতে বলে উঠে।

“এখন কী আর আগেরকার সময় আছে বল! বয়স বেড়ে ত্রিশের কৌটায় চলছে। তোর ভাবী মরার পর অন্য কাউকে ঠাহর করিনী। কেউ একজন কে যদিও করতে চেয়েছিলাম। তবে প্রত্যাখ্যান পেয়ে সেখানেই সমাপ্তি টানলাম।”

শেষ কথার ধাঁচে সেই পাত্রীকে ইঙ্গিত করা হয়েছে তা বেশ বুঝতে পেরেছে শেহরীনা। কেননা পাত্রী সে নিজেই। সারোয়ার চোখের দৃষ্টি সেই শ্যামাঙ্গিণীর থেকে সরিয়ে ভার্সিটির গেটে দাঁড়িয়ে থাকা মাইমুনাকে দেখে গলা উঁচিয়ে ডাক দেয়। মাইমুনা ডাক শুনে বুকে থুথু দিয়ে ভদ্র নম্র চালচলনে সারোয়ার এর কাছে গেলো। শেহরীনা ঝাঁঝালো চোখের দ্বারা ভস্ম করে দিতে চাইছে মেয়েটাকে। এতটা সহজে তাকে যেতে দেবে না সে। তাকে অপমান করেছে মেয়েটা তাহলে সেও কেনো পিছপা হবে। মাইমুনা শেহরীনা দিকে তাকায়। মেয়েটার দৃষ্টি দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার মনে কোনো কু পন্থা চলছে। ঢোক গিলে আমতা আমতা করে সারোয়ার এর বাহু ধরে টান দিয়ে দিয়ে গাড়ির দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সেই সাথে অবিকল উম্মাদনায় বলছে।

“আরে রাস্তায় পাগলের সাথে কথা বলতে নেই। চলো চলো গাড়িতে বসে যায়। এতো আরামদায়ক হাওয়া ভেতরে। চলো আসো আমার কাজ ছিল তাই এসে ছিলাম কাজ শেষ এখন।”

ফারদিন মেয়েটার কাণ্ডে বিরক্ত হলো। প্রথম দেখাই গলদ অভদ্র মেয়ে হিসেবে চিনল কিন্তু এখন সারোয়ার এর মুখ থেকে মেয়েটার আসল পরিচয় জেনে তার গাঁ গুলিয়ে এলো। খুবই গাঁ ঘেঁষা নারী সে। যার দিকে তার শুকনের ন্যায় দৃষ্টি পরে তার পিছু সে সহজে ছাড়ে না। সারোয়ার এর মাইমুনার হাত চেপে ধরে টানাটানি মোটেও পছন্দ হলো না। শেহরীনা মুখ বাঁকিয়ে সেই স্থান ত্যাগ করল। মনে মনে বিড় বিড় করে বলে,
‘আগেও জানতাম সব পুরুষই বেইমান। আবারো প্রমাণ হয়ে গেল।’
কথাটা নিম্ন কণ্ঠের হলেও সারোয়ার এর মত উঁচু বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এর কানে কথাটা ঠিকই পৌঁছে গেল। এক ঝটকায় মাইমুনাকে দূরে সরিয়ে ভদ্র গলায় হুমকি দিলো।

“আরেকবার বেহায়াপনা করার চেষ্টা করলে সোজা এটেম টু হ্যারাসমেন্ট এর কেইসে তোমাকে জেলে ঢুকিয়ে দেবো। আর আমাকে চিনো তুমি। হ্যারাসমেন্ট এর মত কেইসের ফেইক রিপোর্ট ফাইল করানো আমার বাঁ হাতের খেলা।”

মাইমুনা ছিটিয়ে গেল এক চটে দূরত্ব বজায় নিলো সারোয়ার এর কাছ থেকে। শেহরীনা দৃশ্যটা দেখে মজা পেল বেশ। তবুও তার মনের আক্রোশ মেটাতে সেও বাঁকা হেসে বলে,

“আপনার প্রেমিকা নামক বোনের ননদকে সামলে রাখবেন মিস্টার সারোয়ার। নাহয় ভার্সিটির মত পবিত্র শিক্ষা প্রাঙ্গণে এসে সাধারণ ব্যক্তিগণের উপর ঝাঁজ দেখানোয় আজ ক্ষমা পেয়েছে পরবর্তীতে ক্ষমা নাও পেতে পারে।”

“চিন্তা করবেন না মিস। আমার অপ্রেমিকার কুৎসিত ব্যবহারের কারণে আমি নিজ দায়িত্বে ক্ষমা চাইছি। সে যেহেতু আমার বোনের ননদ তাহলে আমারো বোনের মতই। প্রেমিকা আমি যাকে তাকে বানাই না। যিনার চেয়ে উত্তম হলো বিয়ে করে আপন বউয়ের সাথে চুটিয়ে প্রেম করা। আমি সেই প্রেমিকার অপেক্ষায় আছি। তাহার মত এক পয়সার প্রেমিকার নয়।”

মাইমুনার অপমান তাচ্ছিল্যতায় মুখখানা লাল হয়ে গেল। রেগেমেগে সে ভার্সিটির প্রাঙ্গণ ত্যাগ করল। বিষয়টা খারাপ দেখালেও সারোয়ার এর কাছে মোটেও বড়সরো ব্যাপার লাগেনি। তবে শেহরীনার একটু আধটু খারাপ লাগল। তবে তৃপ্তি পেল মনের ঝাঁঝ মিটিয়ে। ফারদিন পরিবেশ ঠান্ডা করতে সারোয়ার কে ড্রিঙ্কস এর অফার করল তাদের বন্ধুমহলের সঙ্গে। সারোয়ার একটুখানি বিরতি নিয়ে ফারদিনদের কাছ থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায়। তার ফোনে খলিল বকর এর মেসেজ এসেছে। সে তার সাময়িক সমস্যার কারণে আটকে পড়েছে কুমিল্লায়। এতে খানিক বিরক্ত বোধ করল সারোয়ার। তার কাছে সময়ের মূল্য অত্যাধিক। অতীত হওয়া সময়গুলো সামনে টেনে এনে কাজে লাগানোর মত পুরুষ সে নয়। বর্তমান কে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে শিখেছে নিজ প্রচেষ্টায় সারোয়ার। তাই শেষাক্তে মেসেজ করে দেয়।
‘দুঃখিত জনাব সারোয়ার এর কাছে সময়ের মূল্য অনেক। ত্যাড়াবাকা কাজের জন্য সে ছুটে কাজে যায় না। প্লিজ কাইন্ডলি আপনি অন্যকে হায়ার করবেন! রাখছি আল্লাহ হাফেজ।’
মেসেজ পাঠিয়ে সন্তপর্ণে পেছন ফিরতেই শেহরীনার মুখোমুখি হলো। শেহরীনা সবাইকে পাঠিয়ে দিয়েছে কৌশলে। ফারদিন অবশ্য তার কাজিন সারোয়ার এর জন্য অপেক্ষা করতে চেয়ে ছিল। তবে শেহরীনা তাকেও পাঠিয়ে দিলো এই বলে যে, ‘ আমি ওয়াশরুম থেকে এখনি চলে আসব। তারপর সারোয়ার স্যার কে নিয়ে ক্যান্টিনে চলে আসতে পারব। তোরা যাহ্ ড্রিঙ্কস অর্ডার করে রাখ।’
এতে ফারদিনও দ্বিমত করল না চলে গেল। শেহরীনার কাজল আঁকা চোখের ভ্রুয়ের দিকে তাকিয়ে সারোয়ার তার অভিমত প্রকাশ করল।

“আপনাকে গাঢ় নয় সূক্ষ্ম কাজল আঁকায় বেশ মানায়। সেদিন পাত্রীবেশে রুপটা মন্দ ছিল না। ভালো লেগেছিল আমার তবে অপ্রিয় একটাই ছিল সেটা হলো আপনার ওষ্ঠজোড়া ভীষণ শুষ্ক। শুষ্ক ত্বক চর্মরোগের বিশেষ লক্ষণ। সবসময় ঐ ওষ্ঠজোড়ায় লিপস্টিক নয় লিপবাম অথবা লিপজেল ইউজ করবেন। এট্রাকট্রিভ লাগবে তখন।”

“ছিঃ পাভার্ট। একজন মেয়েকে একদিনের দেখায় কীসব কথাবার্তা বলছেন নিজেও বুঝতে পারছেন?”

“সাধারণ কথাই এক দম্পতির মাঝেই হয়ে থাকে। বখাটে পনা আমার ধাঁচে নেই।”

“বখাটের চেয়েও নিকৃষ্ট কথাবার্তা বলেন আপনি। সোজা পয়েন্টে চলে যান কেনো?”

“কারণ ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে তারিফ করা আমার স্বভাব নয়। যা আমার প্রিয় তা আমার প্রিয়, যা আমার অপ্রিয় তা আমার সবসময় অপ্রিয়ই থাকে। অপ্রিয়ে রঙ ছড়ানোর দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে মিস শেহরীনা।”

“মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ মিস্টার। আপনাকে কিন্তু আমি রিজেক্ট করেছি অনেক আগেই।”

“এক পাক্ষিক মতে কিছুটি হয় না। দুপাক্ষিক মতও জরুরি। আমার জানামতে আপনার বাবা অবশ্য রাজি এতে।”

“এক কথা কান দিয়ে শুনে রাখুন না ঐ ভদ্রলোক কে আমি বাবা মানি আর না আপনাকে আমি গ্রহণ করব। এই যে আপনি বললেন না আপনার অপ্রিয় কথন। আমিও বলছি এবার আমার কাছে এই গোটা আপনিই অপ্রিয়।”

“মাশাআল্লাহ তবে জমবে #প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার জমজমাট ভাবে ইন শা আল্লাহ।”

চলবে…….

রিজওয়ান প্যান্টের বেল্ট খুলে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে। মাথার সুন্দর করে সেট করা চুলগুলো এলোমেলো করে দেয়। দরজার কাছে গিয়ে অরনিয়ার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,

“একপাও ওখান থেকে সরাবি না। নাহলে আজ তোর কপালে দুঃখ আছে মৃত্তিবউ।”

অরনিয়ার কলিজা কামড়ে উঠে। সে বুঝে ফেলেছে রিজওয়ান কোনো কারণে রেগে গিয়েছে ভীষণ। নাহলে সে কখনো রাগ জেদ ব্যতীত মৃত্তি বউ বলে ডাকে না। ডাকলেও তার মন মর্জি। যখনি তার মাথায় রাগ চাপে তখনি সে ‘মৃত্তি বউ’ বলে সম্বোধন করে। অরনিয়া ভয়ে পায়চারী করছে রুমে। একবার ভাবছে রুম থেকে পালিয়ে তার নিহাদ আপুর বাচ্চার কাছে চলে যাবে। আরেক বার ভাবছে না যা হবে দেখে নেবে। কিন্তু তার শরীর ভীষণ দূর্বল আজ। পাঁচ রুমের টাইলার্স মুছে তার কোমরে ব্যথা চলে এসেছে। এক কোমরের ব্যথা আরেক ব্যথা পিরিয়ডের প্রথম দিনের। সব মিলিয়ে তার নিচের অংশটুকু অবশ প্রায়। যেনো কেউ তার নিচের অংশ জ্বালিয়ে ছাই করে দিয়েছে। তার আকাশ কুসুম ভাবনায় ধরাম করে দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ হলো। অরনিয়া ভয়ে পুনরায় দেওয়ালের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। রিজওয়ান হাতে কেরোসিন এর বোতল আর গ্যাস লাইটার এনেছে কিন্তু কেনো? অরনিয়া ঢোক গিলে বলে,

“শুনেন আমি কী কিছু করেছি? আমায় মাফ করে দিন। আর কিছু করব না। আপনার কথার খেলাপ হবো না। প্লিজ! আমি বেখেয়ালে এখান থেকে সরে গিয়ে ছিলাম সত্যি। প্লিজ মাফ করুন।”

রিজওয়ান টাইলার্সের উপর কেরোসিন এর বোতল আর গ্যাস লাইটার রেখে অরনিয়ার কাছে গেল। তার বলা প্রতিটা শব্দ বাক্য মনযোগ দিয়ে শুনেছে সে। তাই মুচকি হেসে অরনিয়ার মোলায়েম গালে হাত দিয়ে চেপে ধরে মৃদু আঙ্গুল এর চাপ দেয়। অরনিয়ার চোখজোড়া জ্বলে উঠে। লোকটার চেহারায় হিংস্রতা স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। সে এই মুহূর্তে আফসোস করছে। তার উচিৎ ছিল পালিয়ে যাওয়া। রিজওয়ান বাঁকা হেসে বলে,

“চাইলেও পালাতে পারতে না মৃত্তি বউ। তুমি আমার অদৃশ্য পিঞ্জিরায় বন্দি। কোনো ভাবেও আমায় ঠেকিয়ে চলতে পারতে না।”

আমার নতুন গল্প আপনাদের প্রিয় জুটি নিয়ে বইটই এ আসতে চলেছে আমার লেখা গল্প পাবলিশ হবে ২৬ তারিখ আর দাম মাত্র ৪০টাকা। সবাইকে পড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি 🥰।
প্রথমবার লিখা আমার পাণ্ডুলিপি।
আসছে~~~~
(লাইক এন্ড ফলো করে নিন।
আমার ই-বুক লিঙ্ক https://link.boitoi.com.bd/vgNA

আর আমার পেইজ লিঙ্ক
https://www.facebook.com/tasmihaalraiyan)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here