নীলের_পরি (৬)

0
191

#নীলের_পরি (৬)

নীল লন্ডনে আছে তিন বছর প্রায়। এই তিন বছরের মাঝে সে একটি দিনের জন্য ও বাংলাদেশে ফিরে যায় নি। ইচ্ছে করে নি এমন নয় কিংবা যাওয়ার কোনো স্পেস ছিল না এমনটা ও নয়। ফিরে যায় নি শুধুমাত্র তার পরির জন্য।
পরির সামনে নিজেকে সামলে রাখা যে খুব ই কঠিন।
কিন্তু এই হাজার হাজার মাইল দূরে সরে থাকা টা ও খুব কঠিন। তাতে কি তার পরি তো ভালো থাকবে এটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই তো বুকে হাজারো পাথর চাপা দিয়ে লন্ডনে ই পড়ে আছে। লন্ডন তার জন্য লাকি দেশ ই বটে। লন্ডনে আসার পর নিজ হাতে যে বিজনেস গড়ে তুলেছে তা সত্যি অবিশ্বাস্য ই বটে। প্রধান কারণ ছিল পরির থেকে দূরে থাকা। সারাদিন ব্যস্ততার মধ্যে কাটলে ও রাত টা নির্ঘুম ই কেটে যেত নীলের। এত শত ক্লান্তির মাঝে কয়েক টা ঘন্টা ও ঘুমাতে পারত না নীল। ঘুম যেন পরির মাঝেই স্তব্ধ হয়ে গেছে। তাই শুরু হয় কষ্ট ভুলে থাকার জন্য রাত জেগে ও কাজ করা। যার ফলে আজ তিন বছর পরে নীলের বিশাল কোম্পানি। নীল পরির থেকে দূরে গেলে ও পরির প্রতিটা কদমের খবর সে রাখত। একদিন আগে বাংলাদেশ থেকে খবর পেয়েছে পরি কে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তা ও ওর রা সকে ল নে শা খো র ফুফাতো ভাই প্রান্তের সাথে। নীল এক মুহূর্ত দেরি না করে তখনি বাংলাদেশে ফেরার ব্যবস্থা করে।
ফ্লাইটে উঠার আগে জানতে পারে এই বিয়ে তে পরি ও রাজি নয়। আর পরির ফুপির সমস্ত কারসাজির ও খবর পেয়ে যায় নীল। ফ্লাইট ৪ টার সময় ল্যান্ড করতেই নীলের লোকেরা খবর দেয় আজ কেই পরির বিয়ে। এ কথা শুনে নীল তখন পাগল প্রায়। যদি একটু ও ভুল হয়ে যায় তো সে তার পরি কে সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছিল না নীল। নীল কে শান্ত করে নীলের বিজনেস ইনভেস্টার অথার্ৎ নীলের বন্ধু অনিক। মাথা ঠান্ডা করে নীল পরিকল্পনা সাজায়। এয়ারপোর্ট থেকে বাসা তে ব্যাক না করে সোজা গাড়ি নিয়ে চলে যায় পরির বাড়িতে।
আর তারপর সমস্ত টাই মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে সম্পূর্ণ হয়। যার ফলে আছ পুরোপুরি ভাবে পরি তার।
পুরো পৃথিবীকে বলতে পারবে পরি আমার স্ত্রী। আমার সহধর্মিনী।

নীল ফ্রেস হয়ে আসতেই দেখে পরি এখনো ঘুমিয়ে আছে।
নীল ঘড়িতে টাইম দেখে নিল ১১টা ৪০ বাজে। পরি কে ফ্রেস হতে হবে আর তাছাড়া খাওয়া দাওয়া ও করতে হবে। তাআ হাফসা কে বলল,”পরি কে জাগিয়ে তুলতে হবে তুই বরং খাবার নিয়ে আয়।”

হাফসা মৃদু হেসে মাথা ঝাঁকিয়ে খাবার আনতে চলে গেল।
হাফসা চলে যেতেই নীল পরির মাথার কাছে বসল। এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ চেয়ে রইল। কি আছে এই মেয়েটার মাঝে?
যার কারণে বাকি সবাই কে পানসে মনে হয়। এত মায়া কেন এই মেয়েটার মধ্যে? নীল এইসব ভাবতে ভাবতেই হাফসা খাবার নিয়ে এল। হাফসা সাইট টেবিলে খাবারটা রেখে ভ্রু কুঞ্চিত করে বলল,”ভাইয়া তুই এতক্ষন ধরে কি করলি। মেয়েটা তো এখনো ঘুমে আছে!”

নীল বোকা হাসি দিয়ে বলল,”এই তো এখনি জাগিয়ে দিব।
তুই যা।”

হাফসা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,”আচ্ছা। কিন্তু ভাইয়া তুই ও তো কিছু খাস নি? আর তাছাড়া নিচে তোর বন্ধুরা ও অপেক্ষা করছে। ওরা তো এখানেই ডিনার করবে তাই না?”

নীল হেসে বলল,”ইস এতো দিন তো আমার একটু ও খেয়াল রাখলি না। যেই না পরি এসেছে আর তুই খেয়াল রাখা শুরু করে দিয়েছিস।”

হাফসা মেকি হাসি দিয়ে বলল,”তা না হলে এই পাগল মেয়ে টা আমার একটা চুল ও রাখবে না। এতদিন তো তুই ওর ভালোবাসা ছিলি। আর আজ থেকে তো বর। এখন তো একদম ই ছাড় দিবে না আমায়।”

হাফসার কথাতে নীল হেসে উঠে। তারপর বলে,”সমস্যা নেই এখন আর তোর চুল ছিড়বে না। হাজার হোক তুই তো ওর ননদিনী তাই না।”

নীলের কথাতে হাফসা হালকা হাসে তারপর বলে,”তাহলে ভাইয়াদের গিয়ে কি বলব?”

নীল মাথা টা তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছতে মুছতে বলল
,”তেমন কিছু বলতে হবে না ওরা জানে আমি পরিকে খাইয়ে তারপর আসব। আর ওদের খেয়ে নিতে বলিস। না খেতে চাইলে অপেক্ষা করতে হবে আর কি। আমি তাড়াতাড়ি ই আসবো। তুই এখন যা।”

হাফসা মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানাল। তারপর মৃদু হেসে চলে গেল। হাফসা চলে যেতেই নীল ধীর কণ্ঠে পরি কে ডাকতে লাগল। বেশ কয়েকবার ডাকার পর পরির ঘুম হালকা হলো। নীল পরি কে উঠে বসতে সাহায্য করছে।
নীল কে দেখেই পরির মনে হাজারো প্রশ্ন উঁকি দেওয়া শুরু করল। আচ্ছা নীল কেন তাকে বিয়ে করল? তাছাড়া নীল কে তো সে কখনোই তার ভালোবাসার কথা জানায় নি।
যদি ও পরির ভাবে নীলের উচিত ছিল পরির ভালোবাসা বোঝা। কিন্তু কি জানি বুঝেছিল কিনা। যদি বুঝেই থাকে তো তখন কেন কিছু বলে নি? আর নীল ও যদি তাকে ভালোবেসেই থাকে তো কখনো বলে নি কেন? তাছাড়া সবসময় কেন ইগনোর করত তাকে? এত সব প্রশ্নের একটা ও উত্তর খুজে পেল না পরি। বাজে অনুভূতি হচ্ছে তার।

নীল মৃদু স্বরে ডাকল। “পরি তুমি খেয়ে নাও একটু। তারপর ফ্রেস হতে যাবে ঠিক আছে?”

পরির প্রচন্ড ক্ষধা পেয়েছে তাই আর বারন করল না।
নীল নিজ হাতে পরি কে খাইয়ে দিতে লাগল আর পরি পরম আয়েশে নীলের হাতে খেতে লাগল। নীল পরি কে খাইয়ে দিতে লাগল আর মুচকি হেসে ভাবল,সত্যি ই মেয়েটা পাগলি একটা।

চলবে….
কলমে~ফাতেমা তুজ নৌশি

সুপারস্টার তানজিদ হাসানের গোপন বিয়ের গল্পটা পড়েছেন?
https://www.facebook.com/100076527090739/posts/285599244000977/?app=fbl

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here