#চিত্তসন্ধি
পর্ব ৫১
লেখা: #Azyah
মিশা আর নাসির উদ্দিন আজ উইকে ফিরে যাচ্ছে। এয়ারপোর্টে দাড়িয়ে আছে আদর,মেহতাব আর রায়হান।নাসির উদ্দিন গতবার মেয়ের সাথে যাওয়ার সময় বেশ চিন্তায় থাকতেন মেহতাবকে নিয়ে।আজ হাসি খুশিভাবেই যাচ্ছেন।ছেলে বিয়ে করেছে।একা নয়।নিজের সাথে আদরেরও খেয়াল রাখবে এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।যথেষ্ট দায়িত্ববান ছেলে তার।
নাসির উদ্দিন আদরের সামনে এসে বললেন,
“মা তোমরা দুইজন দুইজনের খেয়াল রেখো।সাবধানে থাকবে।আর আমার ছেলে তোমার সাথে রাগারাগি করলে আমায় কল করে নালিশ করতে এক মুহূর্ত দেরি করবে না।”
বিদায় মুহূর্তে সবাই যেখানে খারাপ লাগায় জর্জরিত ছিলো।সেখানে হেসে উঠলো নাসির উদ্দিনের কথায়।সবার থেকে বিদায় নিয়ে ভেতরে চলে গেছে তারা। রায়হান চেয়ে আছে তিন নম্বর গেটের দিকে। মিশাও বারবার পিছ ফিরে দেখছে।মনের মধ্যে চাপা একরাশ বেদনা মেহতাব ঠিকই ধরতে পারলো।
রায়হানের কাধে হাত রেখে বলল,
“চল”
রায়হান মলিন গলায় বললো,
“ফ্লাইটটা টেক ওফ করার পর যাই?”
মেহতাব আজ বিনাবাক্যে রায়হানের কথা মেনে নিয়েছে।নিজের দুর্বলতাকে লুকিয়ে কাটকাট হয়ে দাঁড়িয়ে।
এয়ারপোর্টএ দিয়ে ফিরে আসছে তারা।মুখটা লটকে আছে আদরের।চুপিচুপি অশ্রু গড়িয়ে যাচ্ছে। রায়হান তার খারাপ লাগা পাশে রেখে আদরের দিকে চেয়ে আছে।অথচ মেহতাব আর রায়হানের কান্না করার কথা।
রায়হান বলে উঠলো,
“কাদছেন কেনো ভাবি?”
“মিশা আর আংকেল চলে গেলো যে।আমি একা হয়ে গেলাম না?”
রায়হান হাসছে। অল্পদিনের পরিচয়ে মায়া হয়ে গেলো তাদের প্রতি?এটা ভালোই বটে।বললো,
“মেহতাব আছেতো”
মেহতাবের দিকে আরচোখে তাকিয়ে আদর।সে নির্বিকার গাড়ি চালাচ্ছে।কোনো হেলদোল, প্রতিক্রিয়া নেই। দৃষ্টি সরিয়ে আদর বললো,
“উনিতো সারাদিন ক্লিনিকে থাকবেন”
এবার মেহতাব উত্তরে বললো, “নেক্সট মান্থ থেকে তুমিও ক্লিনিকেই থাকবে”
আদর ভেবে চিন্তে বললো, “আজ থেকেই চলেন।আমি একা বাসায় কি করবো?”
সামনের পথ চেয়ে মেহতাব বললো, “বাড়িতে এখন তুমি নতুন অনেককিছু জানার ও বোঝার আছে। আপাদত রিল্যাক্স এ থাকো।আর জয়তুন খালা আছেন।”
আদরকে বাড়িতে নামিয়ে ক্লিনিকের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছে মেহতাব।তারপরও মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে।একা কিভাবে থাকবে আদর?মানিয়ে নিতে পারবেতো তার বাড়ির পরিবেশে?মেয়েটা এমনেতেই নির্বোধ।
__
দুপুর দুইটা,
খাবার সেরে ঘরে এসে বসেছে আদর।জয়তুন খালা মাত্রই তার বাড়ি গেলেন।আবার আসবেন বিকেলে।আদরের ইচ্ছে হলো পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখতে।যেমন চিন্তা তেমন কাজ।ঘরের বাইরে পা বাড়ানোর আগে মনে পড়লো নিজের ঘরটাই এখনও ঠিকমতো দেখা হয়নি।পেছন ফিরে প্রথমেই চলে হেল্প বারান্দায়।এখানে আগেও আসা হয়েছে।একটা সোফা আর টি টেবিল রাখা।একটা রাখার মানেও আদরের বুঝতে বেগ পেতে হলো না।কিন্তু এখনতো মেহতাব একা নয়।সেই সূত্রে এখানে আরো একটি সোফা থাকা উচিত। পড়ন্ত বিকেলে দুজন মিলে চায়ের আড্ডায় কথা বিনিময় করা যাবে।হাটতে হাটতে চলে গেলো ড্রেসিং টেবিলে রাখা ছবিটির দিকে।পুরনো সাদা কালো ছবি প্রিন্ট করা ফ্রেমে। মেহতাবের মায়ের ছবি।
ছবির দিকে চেয়ে আদর বললো,
“আপনার ছেলেটা অনেক ঘাড়ত্যাড়া,নিরামিষ।আপনি থাকলে হয়তো এমন হতো না তাই না?কিন্তু এখনও যেমন আছে তেমনও অনেক ভালো।শুধু আমার সাথে কথা বলে না ঠিক মত।”
ছবির সাথে কথা বার্তা শেষে ঠিক জায়গায় রেখে দিল আদর। আলমারি খুলে লজ্জায় পরে গেছে।একপাশে মেহতাবের প্রত্যেকটা কাপড় গোছানো।ভালোভাবে ভাজ করা।অন্যপাশে আদরের কাপড় এলোমেলো।লজ্জাবোধ করে কাপড়গুলো সামান্য গুছিয়ে রেখে দিলো।বুক শেলফ এর দ্বারে কাছেও যায়নি।সোজা রুম ত্যাগ করেছে।পুরো বাড়িতে চারটা ঘর।একটা মেহতাব এর,বাকি দুটো মিশা আর নাসির সাহেবের।আরেকটা গেস্টদের জন্য। দোতলা বাড়িটি বিশাল না হলেও পরিপাটি সৌন্দর্যে ভরপুর।
__
নিজের কাছের একস্ট্রা চাবি দিয়ে ঘরে ঢুকেছে মেহতাব।কারণটা তার কাছে অদ্ভুতভাবে জানা।আদর ঘুমোচ্ছে।ক্লিনিকে কাজ করার সময় তাকে ঠিক এই সময়টাতে ঘুমোতে দেখেছে।ঘরে প্রবেশ করে তার চিন্তা সত্য প্রমাণিত হলো।এলোমেলো ভঙ্গিতে সারা বিছানা দখল করে শুয়ে আছে।পর্দা টানা। আবছা অন্ধকারে।মৃদু আলো পর্দা ভেদ করে আদরের সারাদেহে পড়ছে।তার গায়ের ওড়না অনেকখানি সরে গেছে।পায়ের অনেকাংশ দৃশ্যমান।গরমে তেলতেলে চেহারা।এই মুখটা দেখলে সকল রাগ,ক্লান্তি হাওয়ায় উড়ে যায়।মেহতাব হাতের ব্যাগ পাশে রেখে আদরের কাছে চলে গেলো তৎক্ষনাৎ।সেতো আদরের অগোছালো রূপেও বিমোহিত।সামান্য ঝুঁকে নেশাতুর চোখে আদরের পুরো মুখশ্রীকে নিজের মধ্যে ধারণ করছে।কোনো চিন্তাভাবনা বিহীন আলতো ঠোঁটে ঠোঁট স্পর্শ করেছে।
শুকনো ঢোক গিলে অত্যন্ত ধীর কণ্ঠে বললো,
“অনেকদিন তৃষ্ণার্ত ছিলাম আদর।মাঝেমধ্যে এভাবে তোমার অজান্তে তৃষ্ণা মিটিয়ে নেবো।তুমি টেরও পাবে না”
সাথেসাথে উঠে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।আজ জলদি ফিরেছে।আদরের জন্য টেনশন হচ্ছিলো বলেই আগে বাড়ীতে ফিরে এসেছে।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আদরকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে আর ডাকলো না। জয়তুন খালা থেকে জেনে এসেছে তাদের খাওয়া দাওয়া শেষ।নিজেই নিজের খাবার গরম করে খেতে বসেছে।
মিনিট দশেক পর ঘুম ভাঙলো আদরের।বেডের পাশে মেহতাবের ব্যাগ দেখতে পেয়ে কপালে ভাজ পড়লো।দ্রুত চোখ ফিরিয়েছে ঘড়ির দিকে।নাহ!এটা তার আসার সময় না।বিছানা ছেড়ে দ্রুত পা বাড়িয়েছে ঘরের বাইরে।খাবার টেবিলে মেহতাবকে খেতে দেখে আরো ভরকে গেলো।
অতি দ্রুত পায়ে সামনে দাড়িয়ে বললো,
“আপনি?”
মেহতাব একবার আদরের দিকে চেয়ে আবার খাবারে মনোনিবেশ করেছে।উত্তরে বললো,
“হুম আমি”
“এখানে কি করেন?”
“আমার বাড়ি আমি আসতে পারবো না?”
থতমত খেয়ে আদর উত্তরে বললো, “আসলে সেটা বোঝাই নি।আপনি এই সময়?”
“তাড়াতাড়ি এসেছিলাম ভাবলাম তুমি একা ঘরে ভয় পাবে।কিন্তু এখানেতো ঘটনাই উল্টো হয়ে গেলো।পরেপরে ঘুমাচ্ছিলে।”
“কোনো কাজ ছিলো না।জয়তুন খালা সব করে দিয়ে গেছেন।তাই আর কি”
মেহতাব খাবার প্লেট তুলে নিয়ে বললো, “সমস্যা নেই।চা খাবে?”
“এখন?”
“হ্যাঁ”
“আমি বানাচ্ছি।আপনি ঘরে গিয়ে বসেন।”
অপরাহ্নের শুরু।দুপুরে যে ইচ্ছেটা জেগেছিল হুট করে সেটা পূর্ণতা পাবে ভাবেনি আদর।চা আর তার প্রিয় মানুষ।বসার স্থান পরিবর্তন করে জমিনে পা গুটিয়ে বসেছে মেহতাব। নিত্যদিনের মতোই আকাশ দেখায় মত্ত।আদর পাশে এসে বসলে নজর নামায়।স্মিথ হাসি ছুঁড়ে দিয়ে চায়ে মনোযোগ স্থাপন করেছে।আদরও তার পাশে পা গুটিয়ে বসলো।পিঠ ঠেকিয়েছে দেয়ালে।চায়ের কাপে শব্দ বিনিময়ের পর্ব শুরু করবে এখন।
“আপনি আন্টিকে অনেক ভালোবাসেন তাই না?”
আদরের প্রশ্নে সামান্য আশ্চর্য্য হলো বটে। বিস্মিত সুরে জিজ্ঞাসা করলো,
“আন্টি?”
“মানে আপনার আম্মু”
দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে মেহতাব বললো, “মা হয় আমার।তার প্রতি অনুভূতি থাকা স্বাভাবিক না?”
মেহতাবের দিকে গোলগোল চোখে চেয়ে আদর আবার বললো,
“অবশ্যই অনুভূতি থাকা স্বাভাবিক।কিন্তু ভালোবাসা কম না বেশি সেটা জানতে চাইলাম”
শক্ত জমিনে হুট করে নিজের মাথার ঠায় করে নিলো আদরের কোলে।অতি দ্রুত ঘটে যাওয়ায় আদর হতবাক।আদরের হাত নিজের মাথায় রেখে বললো,
“আমি আমার অনুভূতিগুলোকে কোনো নাম দিতে চাই না।আমার মার জন্য আমার মধ্যে যা আছে সেটা সবার কাছে ভালোবাসা হতে পারে।আমার কাছে সেটা এক অনুভূতির রাজ্য। যার কোনো নাম নেই। পরিচয় পেলেই পরিচয় হারানোর ভয় থাকে”
মেহতাবের স্বভাবে আদর আগেই অবগত।মুখ থেকে একটা স্পষ্ট শব্দ বের করবে না।কতই না কাতরেছে সে মুখ থেকে একটাবার ভালোবাসার স্বীকারোক্তি পাওয়ার জন্য?বিয়ে অব্দি করে ফেললো।অথচ মুখ দিয়ে ভালোবাসি শব্দটা এই পর্যন্ত বের করেনি।
“আপনি এমন কেনো?কি হয় মুখ ফুটে সব বলে দিলে।উজাড় করলে নিজের মনের মধ্যে চেপে রাখা সব কথা?”
“পারি না” সোজাসাপ্টা উত্তর তার।
“চেষ্ঠা করেন।আমার সাথে অন্তত চেষ্ঠা করেন”
বুজে থাকা নেত্রজুগল আদরের পানে ফিরিয়ে মেহতাব বললো,
“তোমার মাথায় এতসত কথা বোঝার বুদ্ধি হয়নি!”
মেহতাবের কথায় ঘোর অপমান। এইটাই অপদার্থ ভাবে সে তাকে?সুন্দর একটা সময় একটা বাক্যে নষ্ট করে দিলো যেনো।তিক্ত কণ্ঠে বলল,
“এতটাই অধম ভাবেন আমাকে তাহলে বিয়ে করেছেন কেনো?”
বলার সাথে মেহতাবের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে চাইলো।রাখতে দেবে না মাথা তার কোলে।তবে ব্যর্থ।মেহতাব উল্টো ঘুরে দুই হাতের সাহায্যে কোমর পেচিয়ে ধরেছে।মুখ গুঁজেছে আদরের পেটে।গরম নিঃশ্বাস অনুভব করতে আদর নড়চড় থামিয়ে দিলো।
ভারী কণ্ঠে মেহতাব বললো,
“তুমি আমার প্রয়োজন।তাই বিয়ে করেছি।চাইলে আমার সাথে থাকতে হবে না চাইলেও আমার সাথেই থাকতে হবে।”
“হ্যাঁ প্রয়োজনইতো। ভালোতো আর বাসেন না!” অভিমানী সুরে বলল আদর।
“তুমি বাসো?”
মেহতাবের উল্টো প্রশ্নে আদর চুপ বনে গেলো।ভালো বাসে সেটা মুখে বলার সাহস তারও নেই। অদ্ভুত রকমের এক পরিস্থিতিতে তারা দুজনই।মেহতাব কোনো উত্তর না পেয়ে বললো,
“এবার বুঝলে?কেনো আমি কিছু বলি না? তুমিওতো পারছো না আমার প্রশ্নের জবাব দিতে?”
“এভাবে আমরা সারাজীবন একে অপরের অপরিচিত রয়ে যাবো!”
আদরের মলিন কণ্ঠে হৃদয়ে ছ্যাত করে উঠলো মেহতাবের।সময় না নিয়ে উঠে বসেছে।আদরকে উল্টো ঘুরিয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরতেই সময় নেয়নি। ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে কানের সামনে গভীর স্বরে বলল,
“কে বলেছে অপরিচিত রয়ে যাবো হুম?এত তাড়াহুড়ো কিসের তোমার?অনেকটা সময় পড়ে আছে সামনে।আমরা না চাইতেই যেটা পেয়ে যাই সেটার মূল্য বেশিদিন থাকে না। সময়ের সাথে,ধৈর্য্য ধরে কোনোকিছুর দিকে আগালে সেটার ঘোর সারাটা জীবন থেকে যায়।আমার দিকে আগাও আদর!আমার তোমাকে দরকার!অনেক বেশি দরকার।”
আদর তাচ্ছিল্যের সুরে উত্তর দিলো, “দরকার?আমার কোনো কথা শুনেন না!আমার কথার গুরুত্ব দেন না।এড়িয়ে যান!কিভাবে আগাবো আপনার দিকে?”
আদরের চুলে মুখ গুজেছে মেহতাব।অদ্ভুত সুন্দর ঘ্রাণ ভেসে আসছে।ঘ্রাণ শুকতে শুকতে বললো,
“আমি তোমার সব কথা শুনি,বুঝি।যেটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত সেটা দেই।”
“মিথ্যে!একদম বোঝেন না”
“আমার দুর্বলতার গভীরতা পরিমাপ করতে জানলে শুধু সুযোগ নিতে চাইতে!”
অল্পতে কেদে ফেলে আদর।এই মুহূর্তে ভালোবাসা কাতর হয়ে কেদে ফেললো। কাদো কাদো স্বরে বলল,
“আমি এসব গভীরতা বুঝি না!আপনি এখনও আমার সাথে বসের মতন বিহেভ করেন।আমি কি এখন আপনার ইম্প্লয়!”
মেহতাব হাসে।বাধন হালকা করে জিজ্ঞেস করে, “তাহলে কি তুমি আমার?”
“জানি না!”
“বলো”
“নাহ!”
“অনেক অভিযোগ তোমার আমার প্রতি?”
“নাহ আপনার উপর অভিযোগ করার আমি কে?কোনো অধিকার আছে আমার?”
“নেই?”
তেজী কণ্ঠে আদর বলে উঠে, “নাহ!”
আদরের মুখ টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে পুনরায় প্রশ্ন করলো,
“আজ যদি অধিকার দেই?”
ব্যাকুল প্রেমিক পুরুষের চোখে একরাশ আবেগ। চশমাবিহীন চোখগুলো ধাঁধানো।সেখানে চোখ পড়লে একরাশ দুর্বলতা ঘিরে ধরবে।তাই চোখ সরিয়ে নিলো আদর।একদম ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।মোহে ফেলে অশক্ত করার চেষ্ঠা।ঠোঁট কামড়ে অন্যদিকে চেয়ে রইলো আদর।আজ সেও আকাশ,বাতাস, প্রকৃতি দেখবে।একদম গুরুত্ব দিবে না মেহতাবকে।
আদরের চুল কানের পেছনে গুঁজে দিয়ে আবার প্রশ্ন করে বসে,
“উত্তর দিচ্ছ না কেনো?”
নিজের ভাবমূর্তি বজায় রেখে উঠে দাঁড়িয়েছে আদর।এখানে বসে থাকলে দুর্বল হয়ে পড়বে।সিদ্ধান্ত নিলো সেও এখন থেকে মেহতাবের মতন মুড নিয়ে থাকবে।
আদরের ওড়না টেনে মেহতাব বলল,
“কই যাও?”
“কাজ আছে!”
মেহতাবও উঠে দাঁড়িয়েছে। কোমড় টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়েছে চোখের পলকে।নাকে নাক ঘষে বললো,
“আমারও কাজ আছে তোমাকে দিয়ে।”
“কি কাজ?”
ঘোর লাগানো কণ্ঠে মেহতাব ফিসফিস করে বললো, “আদরকে দেখলে আমার আদর আদর পায়।কিন্তু তুমি?এমন প্রতিক্রিয়া দাও যে আমার সব ইচ্ছেরা পালায়।”
সামনে দাড়ানো মানুষের মোহময় নেত্র আর গভীর শব্দযুগলে আতকে উঠে আদর। চোখ নামিয়ে ফেলে। দুহাতের সাহায্যে ধাক্কা দিয়ে সরে যাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টায়।না পেরে বললো,
“ছাড়েন আমাকে! হুটহাট কাছে টানেন আবার হটাৎ দূরে ঠেলে দেন।পেয়েছেন কি আমাকে?”
মেহতাব হেসে উঠলো।বললো,
“দূরে ঠেলে দিলেও কাছেই আমি টানবো।কেননা মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণটাই তুমি আমার।আমি যা ইচ্ছে করতে পারি।তোমার সমস্যা?”
কপাল কুঁচকে উত্তর দেয় আদর, “বাহ রে!নিজের কেনা সম্পত্তি পেয়েছেন?”
“নাহ! আমার একান্ত ব্যক্তিগত বউ পেয়েছি”
চলবে…
[মন ভালো না থাকলে লিখাও ভালো হয় না।পর্ব ছোট আর এলোমেলো হওয়ার জন্য দুঃখিত।অনেকদিন চেষ্ঠা করে লিখছি।]