#যাতনা_আমার (পর্ব- ২৬)
#সানজিদা_ইসলাম_সূচনা
সেদিন নিধিকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো ভোর রাতের দিকে। দিকশূন্য হাড়িয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছিলো মির্জা বাড়ির লোকেরা। নাভান ইশান সবাই পুলিশের সাথে মিলে নিধির নাম্বার ট্রেক করে তাকে খুজে পেয়েছিলো শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে একটা পরিত্যক্ত বাড়িতে। গ্যাং রেপ হয়েছে নিধি। একেবারে বিধ্বস্ত অসংখ্য কামড়ের দাগ সহ মুমূর্ষু অবস্থায় অর্ধ উলঙ্গ ছিলো নিধি। সেদিন ইশান আর নাভানের সাথে থাকা ইনায়া, নিজের গায়ের ওড়না দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলো নিধির পুরো শরীর। আজ পাঁচ দিন হয়েছে সেই ঘটনার। নিধি এখনো হসপিটালে ভর্তি রয়েছে। পুরো মির্জা বাড়ি যেন পাতালপুরীতে ডুবে গেছে। একদম নিস্তব্ধ হয়ে গেছে সব। মিষ্টি একটা মেয়ের সাথে এমন কেন হলো? উত্তর জানা নেই কারোই। আয়েশা মির্জা ক্ষণে ক্ষণে আওয়াজ ভেঙে কাঁদছেন। সোহানা আর নাহিদ মির্জা নিশ্চল। পাথর বনে গেছে দু’জনেই। তাদের মনে শুধু একটাই চিন্তা। তাদের সামনের পথ কঠিন হবে। মেয়ের পাশে থেকে এই কটু সমাজ থেকে তাকে বাঁচাতে হবে। তার নিজের মধ্যে বাঁচার প্রেরণা জোগাতে হবে। না হলে এই দৃষ্টি কটু সমাজ তাকে বাঁচতে দেবে না। হসপিটালের দ্বিতীয় তালার শেষের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ইশান আর নাভান। শেষদিকে বিশাল বড়ো বারান্দা। রেলিঙের উপর হাত দিয়ে নিচে রাস্তায় তাকিয়ে আছে নাভান। তাদের দুজনের মন প্রচুর থমথমে। আসন্ন পরিস্থিতি যে অনেক খারাপ হতে চলেছে তাদের পরিবারের জন্যে। হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হয় ফাহাদ আর জায়ান। দুজনের মুখ অত্যন্ত গম্ভীর হয়ে আছে। নাভান একবার পিছুফিরে তাদেরকে দেখে। অতঃপর আবার চোখ যায় সামনে রাস্তায়। জায়ান ইশানের হাতে ধরা একটা ফাইল বিনা বাক্যে নিয়ে দেখতে থাকে। ফাহাদ নিশ্চুপ হয়ে আছে। নিরবতা ভেঙে ইশান বলতে থাকে।
-” মেডিকেল রিপোর্ট বলছে ওরা সাতজন ছিলো। ”
এইটুকু শুনেই ফাহাদের চোখ ভিষন লাল হয়ে যায়। ইশানেরও কন্ঠ রুখে যায়। ভেতরটা কেঁপে উঠে তার। জায়ান ইশানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
-” সাথে অনেক ড্রাগস পুস করা হয়েছে নিধিকে। এরজন্য দুইদিন অচেতন ছিলো। সাথে অনেক পাশবিক নির্যাতনের শিকারও হয়েছে। ”
ফাহাদ গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
-” জানতে পারলে কিছু ওর থেকে? ”
-” জ্ঞান ফিরার পর থেকে কান্নাকাটি করছে। কারো কোনো কথাই শুনছেনা। ডাক্তার নিষেধ করেছে, আপাতত সেসব বিষয় নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস না করতে। আসলে, আমি ভেবেছি নিধি ইচ্ছে করে হয়তো এমন করছে। কারণ? ওর মধ্যে বয়সের থেকেও ম্যাচুরিটি কম। কখন কি করে চলে নিজেই বুঝে না। সত্যিটা দেখার পর আমার সত্যিই ভালো লাগছে না। অসহ্য লাগছে সব কিছু। ”
পুরো করিডরে চারজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের দীর্ঘশ্বাস ছেয়ে গেলো। নাভান এবার জায়গা ত্যাগ করে ফাহাদের কাছে আসে।
-” আমাকে জানোয়ার গুলোকে খুজতে হেল্প কর প্লিজ। ওই পিশাচ গুলো কে যতক্ষণ না মারতে পারবো, আমার শান্তি নেই। আমি এখনো ভাবতে পারছি না আমার মিষ্টি বোনটার সাথে এমনটা হয়ে গেছে। ”
রক্তচক্ষু নিয়ে নাভান কথা বললো। ফাহাদ আশ্বাস দেয় তাকে। নাভান এবার ডাক্তারের সাথে কথা বলতে তার চেম্বারে যায়। ইশানও তার পিছু নেয়। ফাহাদ এবার জায়ানের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর মুখে জিজ্ঞেস করে,
-” আস্তানাটা কার খোঁজ পেলি? কাদের সেখানে আসা যাওয়া? ”
জায়ান এবার চুল গুলো হাত দিয়ে পিছনে ঠেলে শান্ত স্বরে জবাব দেয়,
-” তোর কি মনে হয়? এতো বড়ো ক্রাইম করে ওরা এখন ডেরার দিকে ফিরবে? হয়তো খুব কম সময় তারা সেখানে যেতো। এবার নিশ্চিন্তে ওরা এই ডেরা বাদ দিয়ে দিবে। এ কয়দিনে লোক লাগিয়েও কোনো খবর পেলাম না। কে বা কারা সেখানে যাতায়াত করে। এমনকি এখানে আগেও এমন হয়েছে বলে শুনিনি। ওরা রেপ করে মেরে ফেলেনি। যেখানে নিধির ফোন সারা বিকাল বন্ধ ছিলো। সেখানে, ওরা যাবার আগে ফোনটা অন করে রেখে গেছে। স্ট্রেঞ্জ? আমার কেন যানি মনে হচ্ছে এটা কোনো প্ল্যান করে করা হয়েছে। ”
ফাহাদ ভ্রু কুঁচকায়। অতঃপর চিন্তিত মুখ করে বলে ওঠে,
-” মির্জাদের সাথে কাদের শত্রুতা থাকতে পারে? মাথায় ঢুকছে না। ”
হঠাৎ করে কেবিন থেকে নিধির চিৎকার শুনে দুই ভাইয়ের ভাবনার গত হয়। ভেসে আসছে কেউ ক্ষনে ক্ষনে শান্ত স্বরে নিধিকে বুঝিয়ে যাওয়ায় প্রয়াস চালাচ্ছে। ফাহাদ আর জায়ান দুজনেই কেবিনে ঢুকলো। কেবিনে ঢুকেই নিধিকে দেখে ফাহাদের বুকটা মুচড়ে উঠলো। বিধ্বস্ত মুখ নিধির। ফর্সা ত্বক গলায়, গালে কালসিটে কামড়ের দাগগুলি জ্বল জ্বল করছে। ভেতরে সিংহের মতো গর্জে উঠে ফাহাদ। জানোয়ার গুলো এই সুন্দর মুখটাকেও বাদ রাখেনি। জায়ান আড়চোখে খেয়াল করে নিধির পাশে বসা ইনায়া কে। যে অস্থির হয়ে নিধিকে সামলাতে ব্যস্ত। নিধি ফাহাদ আর জায়ানের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে শুয়ে পরে ইনায়ার কোলে মুখ গুঁজে শান্ত হয়ে যায়। ইনায়া তাদের দিকে তাকাতেই ফাহাদ তাকে ইশারা করে সেখান থেকে উঠে যেতে। ইনায়া করলোও তাই। নিধি এবার বালিশ আঁকড়ে শুয়ে রইলো। ইনায়া মাথায় কাপড় টেনে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। ফাহাদ এবার আলতো হেটে নিধির পাশের চেয়ারটায় বসে। জায়ানও বিনা বাক্যে রুমের বাইরে চলে যায়। ফাহাদ আলতো স্বরে দুইবার ডেকে উঠে নিধিকে।
কোনো উত্তর করে না নিধি। আলতো হাতে নিধির হাত স্পর্শ করে ফাহাদ। নিধি কেঁপে ওঠে মুখ তুলে সামনে তাকায়। কাছ থেকে নিধির মুখটা দেখে রাগ আরো বেড়ে যায় ফাহাদের। তবুও শান্ত গলায় বললো,
-” জানি যেটা হয়েছে খারাপ হয়েছে। তবুও বলছি নিজেকে মানাও। মেনে নাও। নিজেকে শক্ত করে নাও প্লিজ। কি থেকে কি হলো, আমাকে না বললে কিছুই করতে পারবোনা। তোমার স্টেটমেন্ট প্রচুর দরকার। ”
-” আমার সাথে যেটা হয়েছে, তা কি করে মেনে নেবো মেয়র সাহেব? আমার তো নিজের শরীরের প্রতি ঘিন্না লাগছে। মন চায়ছে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেই। ”
বলেই ডুকরে কেঁদে উঠে নিধি। ফাহাদের কলিজাটা ছিন্ন হয়ে যায় যেন। সবকিছু ভুলে নিধিকে এক ঝটকায় তুলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে নেয় ফাহাদ। আদুরে বিড়ালের মতো ফাহাদের সাথে মিশে যায় নিধি। নিধির ক্ষত গুলো চোখে পরতেই ফাহাদের মাথার শীড়া গুলো দপ করে জ্বলে উঠে।
-” প্রমিজ করছি নিধি। একটা কেও ছাড় দিবো না। একটা কেও নাহহ। ”
কান্নারা বাঁধ ভেঙে আসে। ফাহাদের বুকে মুখ মিশিয়ে কান্না মেশানো কন্ঠে বারবার একই কথা আওড়াতে থাকে।
-” আমি অপবিত্র হয়ে গেছি ফাহাদ। অনেকগুলো অপবিত্র স্পর্শ আমার গায়ে লেগে আছে। যে গুলো আমি চাইলেও ভুলতে পারবোনা। আমি নষ্ট। ”
ফাহাদ আরো জোরে জড়িয়ে ধরে থাকে নিধিকে। পেশিবহুল হাতে রগ গুলো ফুলে ফেঁপে উঠছে যেন। কিন্তু সে নিশ্চল, অবিচল। এখন সে চাইলেই কিছু করতে পারছে না। সময় লাগবে প্রচুর।
খালি করিডোরের দুই পাশের দুই দেয়াল ঠেসে দাড়িয়ে আছে ইনায়া আর জায়ান। বলা বাহুল্য, এতোক্ষণ পর্যন্ত জায়ান নিজ থেকে ইনায়াকে কোনো প্রশ্ন করেনি। একেবারে শান্ত প্রকৃতি যেন। ইনায়ার একটু অবাক লাগলো এই ছেলের তো চুপ থাকার কথা না? পরক্ষণেই আবার ভেবে নেয় সেই রাতের কথা। যাক, এই যাত্রায় হয়তো জায়ান বুঝেছে? ইনায়া ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। জায়ান চোরা চোখে ইনায়াকে লক্ষ্য করছে। মুখটা খুব মলিন হয়ে গেছে। নিধির সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনায় তার উপর প্রচুর প্রভাব ফেলেছে। জায়ান দীর্ঘশ্বাস ফেলে। আজ যদি ইনায়া তার জায়গায় থাকতো? কথা ভাবতেই ভয় পেয়ে উঠে জায়ান। এই মেয়ের একা একা চলাফেরা, হলেও হতে পারতো। তবুও তো একবার বেঁচে গেছিলো। তারপরও ইনায়ার শিক্ষা হয়নি। সেই দিন শেষে টিউশনি করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরা। জায়ানের ভাবনারা গত হয় হঠাৎ ইনায়া কথা বলায়।
-” পুরুষ মানুষ এমন কেন বলেন তো? তাদের কাছে শুধু চাহিদাটাই বড়ো। একটা কোমল মেয়ের মন বোঝার সময় তাদের নেই। শুধু একটা জলজ্যান্ত শরীর পেলেই হলো। ”
ইনায়ার দৃষ্টি বারান্দা পেড়িয়ে মেঘলা আকাশে দিকে। যার মনটাও তার মতন ভিষণ ভারি। উপর পাশের দেয়াল ঘেঁষে জায়ান শান্ত চোখে বিপরীত পাশের ইনায়ার দিকে তাকায়। অন্য দিকে তাকিয়েই এতোক্ষণ কথা বলছিল ইনায়া। জায়ান গম্ভীর ঘন স্বরে বলে,
-” সব পুরুষ শরীর না, মনও খুঁজে বেড়ায়। তেমন, সব মেয়েই পুরুষের ভালোবাসা খুঁজে নিতে পারে না। ”
ইনায়া জায়ানের পানে ফিরে। মুখের ভাব গতি সেই আগের মতোই।
-” তাহলে, এই সমাজে দু’ জাতিই সমান দোষী? ”
-” একজনের দোষ কি করে বলবো বলো? সমাজ টাকে তিন ভাগ করোনা। একটা পুরুষ খারাপ হওয়ার মূল চাবিকাঠি নারী। আবার একটা নারী কলঙ্কিত হয় পুরুষ জাতিই দারা। আর মাঝখানে পরে থাকি আমরা। ”
ইনায়া দৃষ্টি আবার আগের জায়গায় নিবদ্ধ করে। ছলছল হয়ে ওঠে চোখ জোড়া। পৃথিবীটা বড্ড নিষ্ঠুরতম। এখানে শান্তি কই? নেই যেনো কোনো কিছুই। আছে শুধু গোলকধাঁধা। নেই কোনো উত্তর কারো কাছে। কারণ তারা নিজেরাই এই নিষ্ঠুরতম পৃথিবী সৃষ্টি করেছে। শুধু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলে মানুষ। জায়ান ইনায়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ব’লে,
-” তুমি আর আকাশটা যেন এখন একই, গুমোট অশান্ত প্রবল জড়ো হাওয়া। তোমার কাজল কালো চোখ দিয়ে অশ্রু আর তার কালো মেঘ গুলো বৃষ্টি হয়ে নামার পালা। ”
ইনায়া আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো স্থির চোখে। আসলেই, আকাশ টা আজ তার মনের মতোই কালো মেঘে ভিড় করেছে। পরিবেশটাও প্রবল বাতাসের তীব্র বেগ। হঠাৎ করেই ইনায়ার চোখ দিয়ে অশ্রুকনা গুলো ঝরতে লাগলো। তখনই ধরনীর বুকে বৃষ্টি হয়ে নামে, আকাশের কালো মেঘ গুলো। ইনায়া সেখানে তাকিয়ে ম্লান হাসে। আসলেই, আকাশটা আজ তার মতোই।
,
,
,
,
,
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। কিন্তু আকাশের বুক চিরে বেরুনো কান্নারা আজ থেমে নেই। অঝোরে পরছেই শুধু। জায়ান চলে গেছে অনেক্ক্ষণ আগে। ইনায়া গেইটের দারপ্রান্তে দাড়িয়ে আছে। অপেক্ষা একটা সিএনজি অটোরিকশা পেলেই হবে। গায়ের শুভ্র রাঙা ওড়না টা ভালো করে জড়িয়ে নেয় সে। হঠাৎ সেখানে নাভানের আগমন। ইনায়া একপলক সামনে তাকিয়ে দেখে শুধু, খুব সুদর্শন, তার নাম মাত্র স্বামী কে।
-” তোমাকে ড্রপ করবো ইনায়া? যেতে পারো আমার সাথে। ”
নাভানের এমন কথায় ইনায়া শান্ত চোখে তার দিকে তাকায়। বৃষ্টিটা বাড়ছে আবার। দুজনের গায়ে ছিটাফোঁটা পরে হালকা ভিজিয়ে দিচ্ছে। ইনায়া চুপ থেকে বলে ওঠে,
-” তার দরকার নেই। আমি একাই যেতে পারবো। আপনার কষ্ট করতে হবেনা। ”
নাভান আর কোনো কথা বলতে পারলো না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো ইনায়ার পাশে। কয়েক মুহূর্ত কেটে যাওয়ায় পর হঠাৎ ইনায়া বলল,
-” আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়া বিষয়টা সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন করতে যে এতো সময় হবে, তা আমি জানতাম না। ”
নাভান প্রশ্নবিদ্ধ চোখে ইনায়ার দিকে তাকায়। সন্ধ্যার এই বৃষ্টির রাতে। দুজনেই আলতো হাওয়ায় কেঁপে উঠলো। সোডিয়ামের মৃদু আলোয় দুজনের ভেজা মুখ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ইনায়া ঠোঁট নাড়িয়ে আবার বলে ওঠে,
-” আমাদের ডিভোর্সের বিষয়টার কথা বলছিলাম। মনে হয় মামুনি আপনাকে পেপারটা দিয়েছেন। আমি কোনো কন্ডিশন রাখিনি। আপনি ভালো করে পেপার টা পড়ে সিগনেচার করবেন। ”
-” খুব তাড়া তোমার, তাইতো? ”
ঘন স্বরে বলে ওঠে নাভান। ইনায়া ম্লান হাসে। তারপর কঠিন চোখ করে এর উত্তরে বলে,
-” আসলে কি বলেন তো? যেই সম্পর্কে প্রাণ নেই। তাকে শুধু নাম মাত্র বাচিয়ে রাখার মানে কি? আপনার কথাটা শুনে আমার হাসি পাচ্ছে মিস্টার। এই সম্পর্কের পরিস্থিতি আপনিই তৈরি করছিলেন। এর শেষ পরিনতি না হয় আমারা দু’জনে শেষ করবো। ”
নাভানের মুখে এবারও কথা নেই। বড়ো লোকদের যে কথার মাধ্যমে ঘায়েল করতে পারে। সে নাভান শাহরিয়ার মির্জা আজ নিশ্চুপ। একটা ছোট মেয়ের সাথে কথা বলতে গিয়ে সে গুলিয়ে ফেলছে। ইনায়া এবার একটা অটো দার করায়। ঝটপট পায়ে উঠে পরে সে। অতঃপর সামান্য মুখটা বের করে শান্ত গলায় নাভান কে বলে,
-” কলেজের পাশের কফিশপে দেখা করবেন কাল। সম্পর্কের সমঝোতা সেখানেই হোক। ”
নাভান হাসে। ঠোঁট কামড়ে মিষ্টি হেসে বলে ওঠে,
-” খুব গুছিয়ে কথা বলতে পারো তুমি। ”
-” কি করবো বলেন? ক্ষণে ক্ষণে পরিস্থিতি তা শিখিয়ে দিয়েছে। তাহলে, সেই কথাই রইলো। আর ডিভোর্স পেপারটা আনতে ভুল করবেন না। ”
কথা বলে ইনায়া সোজা হয়ে বসে। অটো টা ধিরে সুস্থে চলতে শুরু করে। নাভান চুপচাপ তাকিয়ে রইলো সেখানে। কেমন অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। মনে মনে একটা কথা ভাবতে থাকে। আসলেই কালকে শেষ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
চলবে…………….
( ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। )