#বাদশাহ_নামা
#পর্বসংখ্যা_২৮
#আ_মি_না
৪৮. ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলো জাযীব এবং আসওয়াদ। জাযীবের দিন কাটতে লাগলো বাবার আভিজাত্যপূর্ণ আদরের ছায়ায় আর আসওয়াদের আদরের আশ্রয়স্থল হলো মা আর দাদাজানের নিকট। মায়ের কোল আর দাদাজানের সঙ্গ হয়ে উঠলো আসওয়াদের অতি প্রিয়। আরও একজনের নির্ভেজাল ভালোবাসা পেতে শুরু করলো সে, সালিম।
সালিম তার এই অদ্ভুত দর্শন চাচাতো ভাইটির ওপর খুবই স্নেহ অনুভব করতেন। তার মা বাবা এবং অন্যরা যখন জাযীব কে নিয়ে ব্যাস্ত তখন সালিম ছুটতেন অন্দরমহলে, যেখানে হুজায়ফা আদনান তার ছোট নাতি এবং নাতির মায়ের জন্য আলাদাই এক বসবাসের যোগ্য স্থান সেপারেট করে দিয়েছিলেন প্রাসাদ থেকে, যেন তার নাতির অদ্ভুত দর্শনের কারণে তাকে বা তার মাকে বিপাকে পড়তে না হয়। সালিম রোজ গিয়ে একবার করে তার ছোট্ট ভাইটিকে দেখে আসতেন। অদ্ভুত এক আকর্ষণ তাকে সেখানে টেনে নিয়ে যেতো।
আসওয়াদ বড় হওয়ার সাথে সাথে হুজায়ফা আদনান আসওয়াদের প্রতি তার খেয়াল আরও বাড়িয়ে দিলেন। আসওয়াদ চার বছরে পড়লে তিনি আসওয়াদের প্রাথমিক জ্ঞানের জন্য একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ করলেন, আর তাকে বলে দিলেন তার ছোট নাতিকে শিষ্টাচার শেখাতে। একজন শেহজাদা কে শেহজাদা হয়ে উঠতে গেলে ঠিক কি কি বৈশিষ্ট্য আর গুনাবলির প্রয়োজন সে সব কিছু আসওয়াদ কে শিক্ষা দিতে লাগলেন আসওয়াদের জন্য নির্ধারিত শিক্ষক। দাদাজানের ছত্রছায়ায় ধীরে ধীরে শৈশব থেকে একজন বলিষ্ঠ মানসিকতার মানবে পরিণত হতে শুরু করলো আসওয়াদ। কিন্তু স্বভাব চরিত্রে হয়ে উঠলো দুরন্ত।
প্রাসাদের অন্দর মহল জুড়ে তার দৌড় ঝাপ, লাফালাফি আর চিৎকার চেচামেচির শব্দ। কখনো কখনো তার দুরন্তপনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠতেন এলানর। ধরে বেধে ছেলেকে পাঠিয়ে দিতেন দাদাজানের কাছে। কিন্তু দাদাজানের কাছে গেলে আসওয়াদ শান্ত, ঠিক পড়ন্ত বিকেলের ঢেউহীন শান্ত বিলের ন্যায়।
হুজায়ফা আদনান অধিকাংশ সময় রাজকার্জে ব্যাস্ত থাকতেন। রাজ পরিষদে বসে রাজ কর্মচারী এবং সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গ দের কে নিয়ে আলোচনায় মত্ত থাকতেন তিনি৷ ছোট্ট আসওয়াদ দাদাজানের পাশে গিয়ে বসতো, সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনতো সে। যেন সে নিজেও সাম্রাজ্যের একজন অতীব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি, এইসমস্ত আলোচনা না শুনলে তার চলবেই না!
রোজ রোজ আসওয়াদ এই আলোচনায় অংশ নেওয়ায় হুজায়ফা আদনান নিজের সিংহাসনের পাশেই আদরের নাতির জন্য একটি মিনি সিংহাসনের ব্যাবস্থা করে দিলেন। তারপর থেকে সেই নজরকাড়া সিংহাসনে বসার জন্যই হোক, বা দাদাজানের সঙ্গ কিংবা সাম্রাজ্যের আলোচনার জন্যই হোক, আসওয়াদ প্রত্যেকদিন নিয়ম করে রাজ পরিষদে যেতে শুরু করলো। এখন তাকে অন্দর মহলে পাওয়াই যায় না। সকাল বেলা মায়ের কোল ছেড়ে উঠে সমস্ত দিন দাদাজানের সাথে থেকে বিকেল বেলা টা সালিমের সাথে লড়াই লড়াই খেলে ক্লান্ত অবসন্ন দেহটা নিয়ে সন্ধ্যায় ফিরতো আবার মায়ের কোলে। এলানর নিজের ছেলের এমন পরিবর্তনে খুশি হলেন অনেক, কিন্তু সেই সাথে কোনো এক অজানা আশঙ্কায় দুরুদুরু করে উঠলো তার বুক!
হুজায়ফা আদনানের সাথে সময় গুলো দারুণ কাটতে লাগলো আসওয়াদের। সাম্রাজ্যের আলোচনা শেষে নাতিকে নিয়ে হুজায়ফা বসতেন নিজের খাস কামরায়। নিজের হাতে নাতিকে অক্ষরজ্ঞান দিতে শুরু করলেন তিনি। প্রখর মেধার অধিকারী আসওয়াদ অন্যদের তুলনায় বেশ দ্রুতই আয়ত্ত করে নিতে শুরু করলো দাদাজানের দেওয়া সমস্ত পাঠ। আর সারাটা সময় দাদাজান কে উদ্ভট উদ্ভট প্রশ্ন করে ওষ্ঠাগত করে ফেললো দাদাজানের কানের মাথার প্রাণ৷ মাঝে মাঝেই আসওয়াদ তার পড়াশোনার মাঝখানে উদাসীন হয়ে হুজায়ফা কে প্রশ্ন করে বসতো তার বাবা কেন তাকে তার বড় ভাইয়ের মতো আদর করে না, কাছে টানে না! হুজায়ফা তখিন তাকে কাছে টেনে নিয়ে বোঝাতেন তাদের দুই ভাইকে একা সামলানো তার বাবার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না তাই আসওয়াদের দায়িত্ব তিনি নিজের হাতে উঠিয়ে নিয়েছেন, নইলে বাবা তাকে কত্ত ভালোবাসা! আর সে যদি নিজেকে যোগ্য করে তুলে বাবার সামনে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে তবে তার বাবা তাকে আরও ভালোবাসবেন। দাদাজানের উত্তর শুনে খুশি হয়ে যেতো আসওয়াদ, নতুন উদ্দমে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে সে দ্বিগুন উৎসাহে পড়া শুরু করতো। আর হুজায়ফা আদনান আদরের নাতির অগোচরে চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলতেন।
বয়স টা আরও একটু বাড়লে আসওয়াদের জন্য সৌর্ড চালানোর মাস্টার রেখে দিলেন হুজায়ফা আদনান। প্রথম দিন যখন হুজায়ফা আসওয়াদ কে তার শিক্ষকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তিনি বললেন যে, ইনি আজ থেকে তাকে সৌর্ড চালানো শেখাবেন, কৌতুহলী আসওয়াদ দাদাজানের কনিষ্ঠ আঙুল ধরে নাড়িয়ে গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
— আচ্ছা দাদাজান, আমাদের সাম্রাজ্যে তো কত শত অস্ত্র আছে, ছোট্ট রিভলভার থেকে শুরু করে এ কে ফোর্টি সেভেন, দোনলা বন্দুক থেকে শুরু করে বোমা সবকিছুই যখন আছে তখন আমরা কেন পুরোনো আমলের মতো সৌর্ড ফাইট শিখবো?
হুজায়ফা আদনান আসওয়াদের প্রশ্নে মৃদু হাসলেন, তারপর বললেন,
— এটা দেমিয়ান বংশের ঐতিহ্য। আর তাছাড়া তুমি একজন শেহজাদা, তোমাকে নিজের আত্মরক্ষার জন্য সকল ধরণের কলাকৌশল শিখে রাখা জরুরি। টিকে থাকতে গেলে ইন্টেলিজেন্সি এবং ট্যালেন্টের সাথে সাথে টেকনিক্স অ্যান্ড স্কিলসও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোনো দিক থেকে নিজেকে অপূর্ণ রাখা যাবে না। নিজেকে সব দিক থেকে পরিপূর্ণ করে তুলতে হবে তোমাকে, বুঝেছো?
দাদাজানের শেষোক্ত প্রশ্নের উত্তরে বুঝদারের মতো মাথা নাড়ালো আসওয়াদ, আর সেদিন থেকে শুরু হলো তার তলোয়ার বাজি৷ ধীরে ধীরে অস্ত্রচালনায় দক্ষ হয়ে উঠতে শুরু করলো আসওয়াদ। আর খুব অল্প সময়ের ভেতরে নিজের সৌর্ড মাস্টার কে বিস্ময়ের চরম সীমায় পৌছে দিয়ে সমস্ত রকমের কলা কৌশল আয়ত্ত করে নিলো সে।
.
শিরো মিদোরির জঙ্গলের ওপর ছিলো আসওয়াদের চরম কৌতুহল। রোজ ঘুমানোর আগে কামরার জানালা দিয়ে কৌতুহলী দৃষ্টিতে জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে থাকতো সে। কান পেতে শুনতো জঙ্গল থেকে ভেসে আসা হায়েনা, বাঘ আর নেকড়ের করুণ আর্তনাদ। বার বার তার মন চাইতো ওই গভীর জঙ্গল টা ঘুরে দেখতে, সমস্ত জঙ্গল টা এক্সপ্লোর করতে। কিন্তু এলানরের কড়া বারণ!
কিন্তু বয়স টা আটের ঘরে পড়লে একদিন দিনের বেলা দাদাজানের সাথে দেখা করার নাম করে এলানরের চোখ ফাকি দিয়ে আসওয়াদ চলে গেলো শিরো মিদোরির জঙ্গলে। প্রাসাদ থেকে অতি গোপনে, নরবে নিভৃতে বের হয়ে সে চলে গেলো ব্লু জোনের কাছে। ব্লু জোনের এপাশে দাঁড়িয়ে থেকে সে দেখতে পেলো জঙ্গলের ভেতরে অদ্ভুত ধরণের কিছু মানুষ হেটে বেড়াচ্ছে, কিন্তু তাদের পরিহিত অদ্ভুত ধরণের পোশাকের কারণে তাদের চেহারা দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। আসওয়াদ যতদুর জানতো রেড জোনের ভেতরে শুধুমাত্র রাজপরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কেউ আসতে পারে না, তবে এটা কে?
কোমরে বাধা দাদাজানের হাতে তৈরি ছোট খাট ধাতব সৌর্ড টায় ঝনঝন শব্দ তুলে কৌতুহল নিয়ে গুটি গুটি পায়ে সেদিকে এগিয়ে গেলো আসওয়াদ, তারপর ব্লু জোন পার হয়ে ঢুকে গেলো রেড জোনে৷ সেখানে তখনও গুটি কয়েক মানুষ এখানে ওখানে হাটা চলা করছে। আসওয়াদ শব্দ করতে করতে এগিয়া যাওয়া মাত্রই তাদের ভেতর থেকে একজন হঠাৎ করেই চলে এলো আসওয়াদের সামনে।
ভয়ঙ্কর বিদঘুটে চেহারা, মুখ থেকে মাংস খসে খসে পড়ে যেখানে সেখানে ছিদ্র হয়ে গেছে, সেখানে সাদা সাদা কড়া পোকা কাইকুই করছে। তীব্র দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না।
ভয়ঙ্কর দর্শন চেহারা টা আরও এগিয়ে এলো আসওয়াদের দিকে৷ কিন্তু সাহসী আসওয়াদ ভয় পেলো না। এই অদ্ভুত জীব টাকে দেখা মাত্রই তীক্ষ্ণ দৃষ্টির ওপরে থাকা তীর্যক ভ্রু জোড়া কুচকে নিয়ে বীর দর্পে কোমর থেকে সৌর্ড টা এক টান দিয়ে খাপ থেকে খুলে এনে ধারালো দৃষ্টিতে সেই অদ্ভুত মানব সদৃশ জীব টার দিকে তাকিয়ে গর্জে উঠে বলল,
— শিরো মিদোরির শেহজাদা নামীর আসওয়াদ দেমিয়ান কে ভয় দেখাতে চাও! এত বড় সাহস তোমার! এক্ষুনী নতজানু হও, নইলে আজ আমার হাতেই তোমার প্রাণ যাবে!
সেই মানব সদৃশ অদ্ভুত জীব টি আসওয়াদের স্বর্ণোজ্জল চোখ জোড়ার দিকে কিছুক্ষণ মনোযোগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো অতঃপর মৃদু হেসে আসওয়াদের সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়ে, মাথা নত করে আনুগত্যের সাথে বলে উঠলো,
— এই অধম কে ক্ষমা করবেন শেহজাদা, আমি আপনাকে চিনতে পারিনি।
আসওয়াদ দ্বিগুণ তেজ নিয়ে বলে উঠলো,
— কে তুমি? তোমার পরিচয় দাও! আর এই শিরো মিদোরির জঙ্গলে তুমি কি করছো?
— আমি এ জঙ্গলে বসবাসকারী ঘেউল দের সরদার। আমার নাম সিলিপিল। আমি এ জঙ্গলেই থাকি আমার সহজাত ভাইদের নিয়ে। আপনাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করার কারণে আমি অনুতপ্ত শেহজাদা! আমাকে ক্ষমা করবেন!
আগের মতো করেই উত্তর দিলো সিলিপিল। আসওয়াদ কিছুক্ষণ সিলিপিলের নতমুখের দিকে তাকিয়ে, চোখ জোড়া সিলিপিলের দিকে রেখেই ধীরে ধীরে সৌর্ড টা নামিয়ে আবার কোমরে থাকা খাপে ঢোকাতে ঢোকাতে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
— ঠিক আছে, এবারের মতো ক্ষমা করে দিলাম। দ্বিতীয় বার আর তোমাকে আমি ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দিবো না।
সিলিপিল পিচ্চি আসওয়াদের এমন বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা আর কড়া শাসনে চমৎকৃত হলো। আসওয়াদ কে সে প্রস্তাব দিলো জঙ্গল টা ঘুরে দেখানোর। সিলিপিলের সে প্রস্তাব মুহুর্তেই লুফে নিলো আসওয়াদ। তারপর সারা দিন টা সিলিপিলের সাথে জঙ্গলের একাংশে ঘুরে ঘুরে কাটিয়ে দিয়ে সন্ধ্যায় প্রাসাদে ফিরলো। কাউকে জানতে দিলো না নিজের এই নতুন অভিজ্ঞতার কথা। কিন্তু তার পর থেকেই তার দৈনন্দিন রুটিনে যুক্ত হলো জঙ্গলের গিয়ে টৈ টৈ করে বেড়ানো।
.
আসওয়াদ আর জাযীব দুজনেই এক সময় পা দিলো কৈশরে। জাযীব বাবার আদরে আদরে আদরীনি হয়ে প্রাসাদে দিন কাটাতে লাগলো, ছেলে এখনো ছোট বলে আরহাম নিজের আদরের ছেলের হাতে ধাতব সৌর্ড দিলেন না। আরও বড় হওয়া পর্যন্ত উডেন সৌর্ড দিয়ে তার সৌর্ড প্রশিক্ষণ চালিয়ে নিতে লাগলেন। আর অন্যদিকে আসওয়াদ শাণীত ধাতব সৌর্ড নিয়ে দাদাজান সহ সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষ ব্যাক্তিদের অবসর সময়ে তাদের সাথে সৌর্ড ফাইট অনুশীলন করে করে হয়ে উঠতে থাকলো দক্ষ থেকে দক্ষতর। শারীরিক শক্তি তেও সে অন্য সবার থেকে অস্বাভাবিক ভাবে এগিয়ে রইলো।
সৌর্ড প্রাকটিসের পাশাপাশি দাদাজানের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠতে থাকলো তার পার্থিব জ্ঞান। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে শুরু করলো সে। সারাটা দিন সৌর্ড ফাইট করে, দাদাজানের সাথে রাজনৈতিক এবিং অন্যান্য আলোচনা শেষে তুখোড় মেধাবী আসওয়াদের রাত কাটতো দাদাজানের নিজস্ব লাইব্রেরি তে। গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্বের নানা প্রান্তের ভারী ভারী শক্ত বই গুলো পড়ে নিজের মেধা ও মননের বিস্তর বিস্তার ঘটতে শুরু করলো তার। মায়ের সাথে এখন তার কালে ভদ্রে দেখা হয়। কারণ অন্দর মহল থেকে অনেক আগেই তার কামরা শিফট করে নিয়ে আসা হয়েছে দাদাজানের কামরার পাশে৷ যেন দাদাজানের সার্বক্ষণিক সঙ্গি হিসেবে তার সাথে থাকতে পারে।
ব্যাস্ততার কারণে এখন তার আর জঙ্গলে নিয়মিত যাওয়া হয়না৷ গত কয়েক বছরে সিলিপিলের সাথে তার সম্পর্ক বেশ ভালো রকমের হয়ে গেছে। বয়সে সিলিপিল তার থেকে বড় হলেও আন্ডারস্ট্যান্ডিং টা দারুণ। কিন্তু নিয়মিত না যাওয়ার কারণে সে সম্পর্কে সামান্য ভাটা পড়েছে।
বাবা আরহাম, ভাই জাযীব এবিং চাচা আজলান ছাড়া আর সবার সাথেই আসওয়াদের অন্য রকম সম্পর্ক। তার দিনের কিছু সময় কাটে সালিম এবং দেমিয়ান বংশের বাইরের কিছু ভাই দের সাথে। তন্মধ্যে সালিমের পর তার সবচেয়ে বেশি আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিলো যাদের সাথে তাদের মদ্যে জায়ান সাদি ছিলেন অন্যতম। বয়সে সালিম এবং জায়ান সাদি একই ছিলেন। আসওয়াদ তাদের থেকে বয়সে বেশ খানিক টা ছোট হওয়া সত্বেও আসওয়াদের নেতৃত্ব দানকারী শক্ত ব্যাক্তিত্ব তাকে অন্য সবার থেকে এগিয়ে রাখতো। কোনো এক দুর্নিবার কারণে সালিম একজন শেহজাদা হওয়া সত্বেও আসওয়াদ কে মান্য করতেন এবং তার চাইতে বেশি স্নেহ করতেন। এত মানুষের ভেতরে থেকে তাদের নেতৃত্ব দিতে দিতে আসওয়াদের শাসন ক্ষমতা এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেকের প্রাধান্য আরও শাণিত হচ্ছিলো দিনে দিনে। হুজায়ফা আদনান নাতির এমন আত্মিক উন্নয়নে প্রচন্ড খুশি ছিলেন।
বেশ কয়েক দিন পর একদিন সালিম কে সাথে নিয়ে শিরো মিদোরির জঙ্গল ঘুরতে বেরোলো আসওয়াদ। এখন আর তার কারো অনুমতির প্রয়োজন হয় না৷ কেউ আর তার জন্য চিন্তাও করে না, কারণ সবরকমের সমস্যার মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা তার তৈরি হয়ে গেছে। সালিম কে সাথে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরে ঘুরতে ঘুরতে আসওয়াদ চলে এলো এক অদ্ভুত জায়গায় যেখানে সে আগে কখনো আসেনি, সিলিপিল তাকে কখনো নিয়ে আসেনি এ জায়গায়।
চলবে……
( পর পর চারদিন গল্প দিলাম, আগামী দুই দিন গল্প দিতাম নাহ! 😒 আমার অনেক কাজ)