#হৃদয়ে_রক্তক্ষরণ
#পর্বঃ৩৬
#লেখিকাঃমেহের_আফরোজ
❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ❌
[পর্বটি রোমান্টিক এবং ভা**য়ো*লেন্স হবে,চাইলে স্কিপ করতে পারেন।]
“হৃদয়ের বুদ্ধিগুলো নির্জনের বেশ মনে ধরলো।কু**টিল হেসে নিধির দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ডার্ক কুইন,পাখি দু’টো এনে ভালোই করেছো।কোয়েল পাখি আমার ভীষণ পছন্দ।’
“নির্জনের এহেন বাক্য শুনে ভীষণ খুশি হলো নিধি।”
“খিলখিল করে হেসে বললো,
‘হুম,আমারও ভীষণ পছন্দ।সব ধরণের পাখি আমার বেশ পছন্দ।যাক আপনার পছন্দের সাথে আমার পছন্দের বেশ মিল আছে।”
“নির্জন মুচকি হেসে নিধির গালে আলতো করে স্লাইড করে বললো,
‘মিল থাকাটাই তো স্বাভাবিক।আমরা তো একে-অপরের জন্যই তৈরি হয়েছি, তাই না ডার্ক কুইন?’
“নিধি নির্জনকে জড়িয়ে ধরে বললো,
‘হুম, ঠিক বলেছেন.. হিহিহি।”
“নির্জন নিধির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
‘এখন কি শুধু পাখির দিকে খেয়াল রাখবে?আমার দিকে রাখবে না?আমার শরীর টা খুব ক্লান্ত লাগছে।’
“নির্জনের মুখে এহেন কথা শুনে,নিধি বললো,
‘ওহ সরি,আপনি বসুন।আমি আপনার জন্য ঠান্ডা পানি আনছি।’
বলেই নিধি দ্রুত পায়ে রুম থেকে চলে গেলো।”
“নিধির যাওয়ার পানে তাকিয়ে পৈ**শা*চিক হাসি দিলো নির্জন।
অতঃপর খাঁচায় আবদ্ধ পাখি দু’টোর কাছে গিয়ে,খাঁচার দরজা খুলে, দু’টো পাখির গলা একসাথে চেপে ধরে ঘাড় কাত করে হিং**স্র স্বরে বললো,
‘তোরা তো শেষ।আমার প্রিয়তমার হাতের আদর খাওয়ার শখ চিরতরে মিটিয়ে দিবো।’
বলেই পাখি দু’টোকে ছেড়ে দিয়ে, চশমাটা খুলে টেবিলে রেখে বিছানায় টানটান হয়ে শুয়ে পড়লো নির্জন।”
“পাখি দু’টো কি বুঝলো কে জানে,নির্জন চলে যাওয়ার পর ক্ষুদ্র একজোড়া প্রাণী খাঁচার একপাশে সন্তর্পণে মিশে রইলো।”
“রাতে নির্জন এবং নিধি একসাথে খাওয়া-দাওয়া করলো।নিধি ওর শাশুড়ির রুমে গিয়ে, সায়রা বেগমের পাশে বসে একা একাই অনেক কথা বলেছে।কিন্তুু সায়রা বেগম নিস্তব্ধ,নিশ্চুপ হয়ে শুধু শ্রবণ করেছেন।প্রিয় বৌমার সাথে কিঞ্চিৎ শব্দ করে মনের কথাটুকু বলার সাধ্য তার নেই।”
“রাত সাড়ে ১০টায় বেলকনিতে দাঁড়িয়ে রিমঝিম বৃষ্টির তালে তাল মিলিয়ে হাত দু’টো মেলে দিয়েছে নিধি।প্রেয়সীর অর্ধভেজা হাতে বিন্দু বিন্দু পানির কণা লেপ্টে আছে।সেদিকে হিং**স্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নির্জন।
আকাশের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মনে মনে আওড়ালো,
‘তোমাকে তো বলেছিলাম,আমার প্রেয়সী যখন সম্পূর্ণ আমার হয়ে যাবে,তখন তাকে তুমি ছুঁতে পারবে না।কিন্তুু, তুমি কথা শুনলে না কেনো?এর জন্য তো তোমার শাস্তি পাওয়া উচিত।কিন্তুু কিভাবে দেবো?”
“নির্জনের ভাবনার মধ্যে ‘হৃদয়’ বলে উঠলো,
‘তাকে শাস্তি দেওয়া তোমার সাধ্যের বাইরে।তুমি কি কিছুক্ষণ আগের কথা ভুলে গিয়েছো?তোমার প্রিয় রমনী ওই ক্ষুদ্র পাখি যুগলকে আদর করেছে।তুমি তোমার প্রেয়সীকে শাস্তি না দিয়ে ওই মহাকাশের বৃষ্টি কণাগুলো কে শাস্তি দেওয়ার ভাবনায় বিভোর হয়ে আছো?রিয়েলি, শেইম অন ইউ নির্জন।”
“হৃদয়ের কথায় নির্জনের ভাবনা পরিবর্তিত হলো।কু**টিল হেসে ‘হৃদয়’ কে বললো,
‘মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য থ্যাংকস।এখনই তাকে শাস্তি দেওয়া হবে,ডোন্ট ওয়ারি।’
বলেই নিধির হাত ধরে মুচকি হেসে বললো,
‘ডার্ক কুইন জানো,আমার বৃষ্টিতে ভিজতে খুব ভালো লাগে। চলো না,ছাদে গিয়ে দু’জনে আজ বৃষ্টিতে ভিজি।সেই সাথে রোমান্টিক কিছু মুহূর্ত উপভোগ করি।”
“নিধি মুচকি হেসে বললো,
‘হুম, সেটাতো ভিজতেই পারি।বৃষ্টিতে ভিজতে আমিও খুব পছন্দ করি।কিন্তুু ঠান্ডা-জ্বরের সমস্যার কারণে মা কখনোও ভিজতে দেয়নি।তবে আপনার সাথে একটু ভিজতেই পারি।”
“নিধির সম্মতি পেতেই,নির্জন বাঁকা হেসে তৎক্ষনাৎ ওকে কোলে তুলে নিয়ে, ঠোঁট জোড়ায় আলতো কা**মড় দিয়ে বললো,
‘আজ শুধু আকাশের বৃষ্টিতে নয়,আমার বর্ষনেও ভেজাবো তোমার সর্বাঙ্গ।’
বলেই রুম থেকে বেরিয়ে সিড়ি বেয়ে ছাদে উঠে নিধিকে নামিয়ে দিলো।”
” দু’জনেই দেখলো,ছাদে বৃষ্টি পড়ছে, আর প্রতিটি ফোঁটা ছাদের ফ্লোরে যেনো টুপটাপ শব্দ করে আ**ঘাত করছে। যেন আকাশের বিশাল হৃদয় থেকে ঝরে পড়ছে এই নরম ফোঁটাগুলো, যা ছাদে এসে এক মৃদু ছন্দের সৃষ্টি করছে। ফোঁটাগুলো একে-অপরের সাথে মিলেমিশে ছাদ বেয়ে নিচে গড়িয়ে পড়ছে। বাতাসে ভেসে আসছে সেই বৃষ্টির ঠান্ডা সুবাস, আর চারপাশে যেন এক শান্ত, নির্মল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির স্পর্শে ছাদের গা ভিজে চকচক করছে, আর প্রতিটি ফোঁটা যেন নীরবে নিজের গল্প বলে যাচ্ছে, মনের এক অদৃশ্য সুরে।”
“কালো রঙের সালোয়ার-কামিজ পরিহিত নিধির শরীর যেন ধীরে ধীরে ভিজে চুপচুপে হয়ে গেলো।
সেদিকে তাকিয়ে নির্জন তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে, বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা কে হিং**সা করে কবিতা আওড়ালো,
“তোমার গায়ে লাগে যে ফোঁটা,
তার কী ভাগ্য!
সে তোমায় ছুঁয়ে যায় অবিরাম,
আমার চেয়ে কাছে আসে প্রতিক্ষণ।
তোমার চুলের মধ্যে হারিয়ে যায় সে,
তোমার ত্বকে মিশে যায় নীরবে,
আর আমি কেবল দূর থেকে দেখি,
কীভাবে সে তোমার সান্নিধ্য পায়।
বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে যদি একবার
তোমায় ছুঁতে পারতাম,
তোমার ঠোঁটের ওপর নিঃশব্দে ঝরে যেতাম,
তোমার স্পর্শে হারিয়ে যেতে চাই,
তোমার পৃথিবীর একটুখানি হতে চাই।” ~মেহের~
“নির্জনের কবিতা আবৃত্তি নিধি এতক্ষণ শুধু মুগ্ধ হয়ে শুনছিলো।নিধির মনে হলো বৃষ্টির সাথে যেন পুরো পৃথিবী নিস্তব্ধ হয়ে গেলো নির্জনের সেই কথাগুলোর মাঝে।মুচকি হেসে নির্জনের শার্টের ৩টি বোতাম একেক করে খুলে,লোমশ বুকে ঠোঁট জোড়া ছুঁইয়ে মৃদুস্বরে বললো,
‘বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে ছুঁয়ে দিতে হবে কেনো?আমি তো আপনার ব্যক্তিগত প্রেয়সী।আমাকে সবদিক থেকে ছোঁয়ার অধিকার আপনার আছে।”
“নিধির সরলতায় আরও একবার দুষ্টু হাসি ফুটে ওঠে নির্জনের উজ্জ্বল শ্যামরঙা মুখস্রিতে।সেতো আকাশ কে বলেছিলো,তার প্রেয়সী তার হয়ে গেলে এই বৃষ্টির পানি তাকেও ছুঁতে পারবে না।অথচ নির্জনের শরীরেও বৃষ্টির বিন্দু বিন্দু ফোঁটা বিদ্যমান।কেউ কথা রাখেনি।সবাই ছলনাময়ী।’
ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেললো নির্জন।”
“নির্জনের সেই তপ্ত শ্বাস আঁছড়ে পড়লো নিধির ভেজা কপালে।বৃষ্টির স্নিগ্ধ পরশ এবং প্রিয়তমর তপ্ত নিঃশ্বাস, সবকিছু মিলিয়ে নিধির অনুভূতি গুলো যেনো বেশামাল হতে লাগল।”
“নিজের অবাধ্য অনুভূতিগুলো কে বার কয়েক ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলে, নির্জনের মনের ভেতর দৃঢ়ভাবে গেঁথে দিতে চাইলো নিধি।”
“প্রেয়সীর তীব্র আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ন্যানো সেকেন্ড বেগ পেতে হলো না নির্জনের।এই মুহূর্তে তার চোখেও গভীর আকাঙ্ক্ষা, আর নিধি সেই চাহনিতে নিজেকে পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছে। বৃষ্টির ফোঁটাগুলো তাদের গায়ে ঝরে পড়ছে, কিন্তুু তাদের মন যেন একে-অপরের মাঝে ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে।”
“নির্জন এবার আরও কাছে এগিয়ে এসে, নিধির কোমরে নিজের হাত রাখে, বৃষ্টিতে ভেজা কাপড়ের ওপর দিয়ে তার ত্বকের উষ্ণতা অনুভব করে। নিধি কিছুটা কাঁপে, কিন্তুু সেই কাঁপুনিটা বৃষ্টির ঠান্ডা থেকে নয়, বরং নির্জনের স্পর্শে জেগে ওঠা আবেগের কারণে।”
“নির্জনের হাত ধীরে ধীরে নিধির পিঠ বেয়ে নিচে নামে, তার দুটি হাত সালোয়ার-কামিজের ভেজা কাপড়ের উপর দিয়ে নিধির কোমরটা আলতোভাবে জড়িয়ে ধরে। নিধির নিশ্বাস ভারী হয়ে আসে, সে নির্জনের আরও কাছে চলে আসে, যেনো তাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব আর নেই।”
“নির্জন এবার নিধির কপালে আলতো চুমু খায়, তারপর তার নাকের ডগায় ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। নিধি তার চোখ বন্ধ করে ফেলেছে, যেন পুরো পৃথিবী এই মুহূর্তে তাদের জন্য থেমে আছে। নির্জন এবার নিধির ঠোঁটের খুব কাছাকাছি এসে ফিসফিস করে বলে,
“তোমার ছোঁয়া ছাড়া আমি যেন অসম্পূর্ণ, তোমার গায়ের এই ফোঁটাগুলো আমার থেকে বেশি সৌভাগ্যবান।এই মুহূর্তে এই ফোঁটাগুলো কে আমার ভীষণ হিংসা হচ্ছে।’
বলেই, নির্জন ধীরে ধীরে নিধির ঠোঁটের ওপর বৃষ্টির ফোঁটা গুলো দুই আঙ্গুল দিয়ে মুছে দিয়ে চুমু খায়,তাদের মাঝে থাকা সমস্ত বৃষ্টি যেন সেই মুহূর্তে এক হয়ে যায়, তাদের প্রেমকে আরও গভীর করে তোলে।”
“নির্জন নিধিকে আবারও কোলে তুলে নেয়।অতঃপর প্রেয়সীকে সন্তর্পণে নিচে নিয়ে যায়।ততক্ষণে লজ্জায় কয়েক দফা মিইয়ে গেছে নিধি।প্রেয়সীকে বিছানায় বসিয়ে টাওয়াল দিয়ে আপাদমস্তক মুছে দেয় নির্জন,সেই সাথে দু’জনে নিজেদের ড্রেস ও চেঞ্জ করে নেয়।অতঃপর নিধিকে আবারও জড়িয়ে নেয় নিজের বক্ষগহ্বরে।ধীরে ধীরে একে-অপরের অনুভূতি মিশ্রিত তপ্ত শ্বাস অনুভব করতে থাকে।দু’টি শরীর,দু’টি হৃদয় মিলে মিশে যায় অন্ধকার ভালোবাসার এক তীব্র দহনে।”
——-
“নিস্তব্ধ রাত পেরিয়ে যখন ধরনীতে কিছুটা আলোর রেখা ফুটে উঠবে,তখনই নির্জনের মুখে এক পৈ**শা**চিক আনন্দের ছাপ দেখা গেলো।নির্জনের লোমশ বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে নিধি।ওর শরীর স্বাভাবিক তাপমাত্রার তুলনায় অধিক তপ্ত হয়ে আছে।নিধির নাসারন্ধ্র থেকে বেরিয়ে আসা মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণ নিঃশ্বাসে নির্জনের বক্ষগহ্বর আগ্নেয়গিরির লাভার ন্যায় যেন উত্তপ্ত হতে লাগল।তবুও নির্জন তার প্রেয়সীকে কিঞ্চিৎ পরিমাণ সরালো না।বরং বুকের সাথে প্রগাঢ় ভাবে মিশিয়ে নিলো।বার কয়েক মনে মনে আওড়ালো,
‘ইয়েস, আ’ম সাকসেস।’
ভেবেই নিধির তপ্ত কপালে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে, ওকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে তড়িৎ গতিতে বিছানা থেকে নেমে টেবিলের ড্রয়ার থেকে থার্মোমিটার নিয়ে এলো।অতঃপর চেক করে দেখলো, নিধির শরীরের তাপমাত্রা ১০৪° ডিগ্রি ফারেনহাইট।
প্রিয় রমনীর এহেন অসুস্থতায় ভীষণ খুশি হলো নির্জন।তার মনের মধ্যে অদ্ভুত এক আনন্দের জলরাশি বয়ে গেলো।এই আনন্দানুভূতি শুধু তার ‘মন’ আর ‘হৃদয়’ অনুভব করতে পারবে।”
“নিধির চোখের কোণে নোনা জল এবং লালচে মুখস্রি দেখে নির্জনের চোখে-মুখে যখনই খুশির ঝিলিক দেখা গেলো, তখনই ভেতর থেকে ‘মন’ হিং**স্র স্বরে বলে উঠলো,
‘নির্জন তুমি হাসছো?এদিকে তোমার নিরুপমাকে শাস্তি দিতে গিয়ে তুমি নিজেই বোকামি করে ফেলেছো।’
‘নির্জন উত্তেজিত স্বরে বললো,
‘কি বোকামি?’
“মন তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো,
‘তোমার প্রিয় মানবীর পুরো শরীরে জ্বরের মতো উষ্ণ তাপমাত্রা ওতপ্রোতভাবে লেপ্টে রয়েছে,যা তার শরীরের প্রতিটি কোণায় তীব্র অনুভূতির মিশ্রণ সৃষ্টি করেছে।যেটা সৃষ্টি করা শুধু তোমার অধিকার।আমার কথা কি তুমি বুঝতে পেরেছো?”
“মনের কথা বুঝতে পেরেছে নির্জন।মুহূর্তেই চোখ-মুখ কুঁচকে বললো,
‘হুম।ঠিকই তো,এটা তো ভেবে দেখিনি।জ্বরের মতো উষ্ণ তাপমাত্রার সাহস হলো কি করে,আমার ডার্ক কুইন কে স্পর্শ করার?জ্বর কে এখনই শাস্তুি পেতে হবে।’
‘বলেই নিধির কপালে হাতের উল্টো পিঠ ঠেকিয়ে দেখলো,নিধির কপাল অতিরিক্ত তপ্ত হয়ে আছে।নির্জন তৎক্ষণাৎ কিচেনে গিয়ে একটি মাঝারি সাইজের পাত্রে পানি নিয়ে সফট কাপড় দিয়ে নিধির পরিধানরত কাপড় খুলে একে একে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মুছতে শুরু করলো।”
“এদিকে নিধি তো বেহুশ প্রায়।যেখানে ঠান্ডা-জ্বরের ভয়ে বৃষ্টি থেকে সে সবসময় দূরে থাকে,আজ সেই বৃষ্টি যেনো তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো।আর এটাই ছিলো নির্জনের পক্ষ থেকে নিধির প্রাপ্য শাস্তি।যখন নিধি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি বিলাশ করছিলো,তখনই নির্জন ডেভিল হেসে এই পৈ**শা*চিক পরিকল্পনা করে এবং সফলও হয়।”
“এদিকে নির্জন যতই পানি দিয়ে নিধির শরীর মুছিয়ে দিচ্ছে, ততই যেনো শরীরের তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছিয়ে দেওয়ার পরে কিছুক্ষণ ঠান্ডা হয়ে,আবারও নিধির শরীর পূর্বের ন্যায় তপ্ত হয়ে উঠছে।নির্জন ২-৩বার থার্মোমিটার দিয়ে চেক করে দেখলো, জ্বরের তাপমাত্রা এখনও ১০৪°ডিগ্রি ফারেনহাইট।এইবার মেজাজ বিগড়ে গেলো নির্জনের।”
“ভেতর থেকে ‘মন’ হিং**স্র স্বরে বলে উঠলো,
‘দ্রুত গতিতে ফ্রিজ থেকে বরফ খন্ড এনে তার শরীরে ঘঁষতে থাকো।এটাই জ্বরের জন্য উত্তম শাস্তি হবে।সেই সাথে তোমার প্রেয়সীরও চিরতরে শিক্ষা হয়ে যাবে।”
“মন বলতে না বলতে নির্জন দ্রুত পায়ে ফ্রিজ থেকে বরফ খন্ড এনে নিধির হাত-পায়ে এবং পুুরো শরীরে ঘঁষতে থাকল।আর জ্বরকে বিড়বিড় করে ইচ্ছেমতো বকতে থাকল।এদিকে জ্বরে টালমাটাল নিধির তো কাঁপতে কাঁপতে বেহাল দশা।”
“কিয়ৎক্ষণ পর নির্জন আবিষ্কার করলো নিধির শরীর কিছুটা শীতল হয়েছে।কু**টিল হেসে ‘মন’ কে থ্যাংকস জানিয়ে,ঘুমের ঘোরে নিধিকে কোনোরকমে মেডিসিন খাইয়ে দিলো।কিছুক্ষণ পর কিচেনে গিয়ে রেডিমেট থাই স্যুপ রান্না করে, নিধির মাথা আলতো করে উঁচিয়ে চামচ দিয়ে একটু একটু করে খাইয়ে দিলো।নিধি কিছুটা খাবার বমি করে ফেলে দিলো।সেগুলো খুব সুন্দর করে পরিষ্কার করে, নিধির কপালে হাত দিতেই,আবারও মেজাজ বিগড়ে গেলো নির্জনের।নিধির জ্বর আবারও বেড়েছে।
নির্জন রেগেমেগে মন কে বললো,
‘দেখেছো,বরফ দিয়ে ঘষা-মাজার পরেও সে আমার ডার্ক কুইনের সাথে মিশে আছে?”
“মন কিছু বলতে যাবে,তার আগেই ‘হৃদয়’ বলে উঠলো,
‘রিল্যাক্স নির্জন।এতটা উত্তেজিত হয়ো না।যেহেতু তাকে
মেডিসিন এবং খাবার খাইয়ে দিয়েছো,সেহেতু কিছুক্ষণ পর ধীরে ধীরে তার শরীরের তাপমাত্রা কমে আসবে।তবে বরফ দিয়ে তার শরীরে মাসাজ করার বিষয়টি সবচেয়ে ইউনিক হয়েছে।সত্যি, তুমি একজন ইউনিক পারসন।আ’ম প্রাউড অফ ইউ নির্জন।
আর এখন তাকে কম্ফোর্টার দিয়ে ঢেকে দিয়ে,খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরো।তোমার শরীরের উষ্ণতায় ধীরে ধীরে তার শরীরের কম্পন কমে আসবে।আর মেডিসিনের প্রভাবে তার শরীর থেকে ঘাম নির্গত হয়ে,তাপমাত্রা কমে আসবে।”
“হৃদয়ের কথা মতো নির্জন নিধিকে কম্ফোর্টারে ঢেকে দিয়ে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।যেন দুটি শরীরের হাড় এক হওয়া বাকি ছিলো।প্রায় আধা ঘন্টা পর নিধির কম্পন ক্রমাগত হ্রাস পেলো।ধীরে ধীরে বিন্দু বিন্দু ঘাম সৃষ্টি হলো।
নিধির ঘর্মাক্ত কপাল দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো নির্জন।খুশি হয়ে আলতো করে প্রেয়সীর কপাল এবং অধরে চুম্বন করলো।কিছুক্ষণ পর নিধির মাথা বুকের সাথে মিশিয়ে নিজেও ঘুমের রাজ্যে পারি জমালো।”
———–
“কারো মাঝে দুঃখ,কারো মাঝে সুখ।
নিধির জীবন টা দুর্বিষহ হলেও,খুব সুখে আছে তারই ছোট বোন তোহা।তোহার কাছে মাহির একজন আদর্শবান পুরুষ এবং স্বামী।তোহাকে স্বাধীনতা দেওয়া থেকে শুরু করে ওর ছোট ছোট পছন্দ গুলোর গুরুত্ব দেয় মাহির।শত ব্যস্ততার মাঝেও এখনও প্রতিদিন বিকাল বেলা নিয়ম করে এক ঘন্টা কথা বলে তোহার সাথে।তাদের কথপোকথন দেখলে মনে হবে,তারা এখনও প্রেম করছে।অথচ রাতের বেলা প্রিয়তম অর্ধাঙ্গের সাথে দেখা হবে তোহার।’
‘কথাগুলো ভেবে জানালার পর্দা ভেদ করে আসা সকালে পূর্বাকাশে ওঠা সূর্যরশ্মির দিকে তাকিয়ে, মুচকি হাসলো তোহা।আকস্মিক পেছন থেকে মাহির জড়িয়ে ধরে তোহার ঘাড়ে নাক ঘষে বললো,
‘এমন মিটিমিটি হাসছো কেনো স্বপ্নচারিনী?গতকাল রাতের কথা ভেবে?’
“ব্যাস, শুরু হয়ে গেলো রোমান্স।
তোহা মাহির কে একটু দূরে সরিয়ে দিয়ে বললো,
‘গতকাল রাতে কি এমন করেছেন, যে সেগুলো ভাবতে হবে?’
“মাহির তোহার গালে আলতো করে চুমু দিয়ে বললো,
‘বুঝেছি, আবার রিপিট করতে হবে।’
বলেই তোহার গলার কাছে আসতে নিলে তোহা মাহিরের মুখ সরিয়ে উত্তেজিত স্বরে বললো,
‘এই না না না..।আমি এমনি অন্য কথা ভাবছিলাম।যাইহোক,অনেক বেলা হয়ে গেছে,আমি এখন উঠে ফ্রেশ হবো।আমার অনেক কাজ আছে।আপনিও ফ্রেশ হয়ে নিন।’
বলেই তোহা উঠতে নিলে,মাহির ওর হাত টান দিয়ে কাছে টেনে বললো,
‘আগে ২২বার চুমু দাও তারপর যেতে দিবো।’
“মাহিরের এহেন আবদারে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো তোহা।কপট রাগ দেখিয়ে বললো,
‘একবার বলেন ২০-৩০বার আই লাভ ইউ বলতে,আবার বলেন ২২বার চুৃমু দিতে; এগুলো কেমন স্বভাব?’
“মাহির ভ্রু জোড়া কুঁচকে বললো,
‘তুমি যতগুলো ওয়ার্ড বলবে,চুমুর সংখ্যা তত বাড়বে।’
” মাহিরের কথা শুনে শুকনো ঢোক গিললো তোহা।এই কয়েকদিনে এই ঘাড় ত্যাড়া লোককে ও বেশ চিনে ফেলেছে।সে দমে যাওয়ার পাত্র নয়।তাই হার মানলো তোহা।
অবশেষে তোহা যখনই মাহিরের কপালে চুৃুৃুমু দিতে যাবে,তখনই মাহির তোহার ঠোঁট জোড়ায় আঙ্গুল দিয়ে বললো,
‘এত তাড়াহুড়ো করছো কেনো?আমি
কি এতো ফাস্ট দিতে বলেছি?আগে তোমার জন্য একটা কবিতা শোনাই,তারপর দিও।’
বলেই দুষ্টু হেসে মাহির শুরু করলো,
“স্বপ্নচারিনীর জন্মদিন”
তোমার জন্মদিনে,প্রিয় স্বপ্নচারিনী,
আনন্দে ভরুক দিন,সুখের সুরে বেঁধে;
আমার হৃদয়, শুধুই তোমার প্রেমে,
তোমার হাসির আলোয়,জ্বলুক নতুন চমক।
তোমার চোখের দীপ্তি,প্রেমের দীপের মতো,
প্রতি মুহূর্তে,তোমার সাথে কা**টানো স্বপ্ন;
তোমার সান্নিধ্যে,বাজুক সুখের সুর,
আমার ভালোবাসায়,থাকুক তোমার পুঁজি।
জন্মদিনের এই দিনে,তোমার জন্য প্রার্থনা,
আমার প্রণয়, সজীব করুক চিরকাল;
তোমার দিন হোক রঙিন,সুখের আলোয় ভরা,
তোমার মুখে থাকুক হাসির প্রতিটি রেখা।
এই জন্মদিনে,তুমি চিরকাল সুখী থাকো,
আমার ভালোবাসায়,জীবন রঙিন করে চলো;
স্বপ্নচারিনী,আজকের দিনে,আনন্দের প্রীতি,
তোমার জীবনে আসুক সুখের নিখুঁত স্মৃতি।” ~মেহের~
বলেই মাহির তোহার গালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে বললো,
‘হুম, এইবার তুমি শুরু করো।”
“তোহা কয়েক সেকেন্ড মাহিরের দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে বললো,
‘আমি তো নিজেই আমার জন্মদিনের কথা ভুলে গিয়েছিলাম,অথচ আপনি মনে রেখেছেন?এটা সত্যি সারপ্রাইজ ছিলো।আচ্ছা, আমার গিফট কোথায়?”
“মাহির মুচকি হেসে বললো,
‘আগে চুমু দাও, তারপর গিফট দিবো।’
‘তোহা মুচকি হেসে যখনই মাহির কে চুমু দিতে যাবে,ঠিক তখনই তোহার ফোন বেজে উঠলো।’
“মাহির মন খারাপ করে বললো,
‘ধুর. আমার রোমান্টিক সিন এই ফোনটাও সহ্য করতে পারে না।অসহ্য।’
“তোহা সেদিকে কর্ণপাত না করে, ফোনে হাত দিয়ে দেখলো নিধি ফোন করেছে।তোহা হাসি মুখে ফোন রিসিভ করতেই,নিধির দুর্বল কন্ঠস্বর শুনতে পেলো।অপরপাশ থেকে নিধি অসুস্থ স্বরে তার জ্বরের বিষয়টি জানালো।”
“বোনের অসুস্থতার কথা শুনে নিমিষেই মন খারাপ হয়ে গেলো তোহার।নিধিকে কয়েকটি স্বান্তনার বানী শুনিয়ে ফোন রেখে দিয়ে, মাহির কে সবকিছু বললো।”
“সবকিছু শুনে মাহির বললো,
‘এক কাজ করা যায়,তুমি আর আমি গিয়ে আপুকে দেখে আসি।তাছাড়া তুমিও তো যেতে চেয়েছিলে।এই সুযোগে না হয় ঘুরে আসা হবে।সেই সাথে নির্জন ভাইয়ার সাথেও ভালোভাবে পরিচিত হবো।”
“মাহিরের সাথে তোহাও তাল মেলালো।”
“নিধি তোহাকে ওর জ্বরের বিষয়টি বাবা-মাকে জানাতে নিষেধ করেছে।তাহলে তারা শুধু,শুধু টেনশন করবে।তোহাও নিধির কথা মতো ওর বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়নি।বিকালের দিকে মাহির এবং তোহা নিধিকে দেখতে এলো।”
“নিধির অসুস্থতার কারণে নির্জন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিধিকে যথাযথ সময় দিয়েছে।সেই সাথে নিধির কষ্ট গুলোও উপভোগ করেছে।আর বেলকনিতে ঝুলিয়ে রাখা পাখিগুলোর কাছে গিয়ে ওদের কয়েকবার ওয়ার্নিং দিয়েছে,যেন কিচিরমিচির না করে।কিন্তুু অবুঝ পাখিগুলোর কিচিরমিচির যেনো আরও দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছিলো।”
“বিকালে হালকা নাস্তা করার পর,তোহা নিধির মাথার কাছে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বিভিন্ন কথপোকথন করছিলো।এদিকে মাহিরও নির্জনের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো।মাহির বকবক করলেও, নির্জন বেশিরভাগ সময় নীরব থেকেছে।এতে মাহির কিছু মনে করেনি।”
“এদিকে তোহাকে নিধির মাথায় বারবার হাত বুলিয়ে দেওয়া দেখে গায়ে কাঁটা দিচ্ছে নির্জনের।মনে মনে আওড়ালো,
‘একে তো আমার ডার্ক কুইন কে পাখিগুলো দিয়ে অন্যায় করেছো, আর এখন তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ঘোর অন্যায় করলে।এর শাস্তি তুৃৃমি এখনই পাবে।’
ভেবে ডেভিল হাসি দিয়ে,তোহা কে বললো,
‘শালিকা, আপনি এই নুডলস খেয়ে নিন।ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো।আমি আপনাদের জন্য কিচেন থেকে চা নিয়ে আসছি।’
বলেই সেখান থেকে চলে গেলো নির্জন।”
“এদিকে তোহা হাসি মুখে নিধির সাথে কথা বলে নুডলস খেয়ে,হাত ধোঁয়ার জন্য বেসিনের সামনে যেতেই স্লিপ কে**টে টাইলসকৃত ফ্লোরে পড়ে গিয়ে চি**ৎকার করে উঠলো,
‘ও মা গো….’
‘তোহার চিৎ**কার শুনে মাহির তাড়াহুড়ো করে ডাইনিং রুমে গিয়ে তোহাকে ফ্লোরে পড়া অবস্থায় দেখে দ্রুত পায়ে ওর কাছে গিয়ে কোমরে হাত বুলিয়ে উত্তেজিত স্বরে বললো,
‘কোথায় ব্যথা পেয়েছো তুৃমি? কিভাবে পড়ে গেলে?’
“কোমরে প্রচন্ড ব্যথা পাওয়াতে তোহা ‘উহঃ’ শব্দ ছাড়া আর কিছুই করতে পারলো না।”
“এদিকে নির্জন কিচেন থেকে চা এর ট্রে হাতে নিয়ে এসে বিস্ময়ের স্বরে বললো,
‘একি!এইসব কিভাবে হলো?’
“মাহির মলিন স্বরে বললো,
‘ভাইয়া,তোহা মনে হয় খুব ব্যথা পেয়েছে।আমি ওকে হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি।প্লিজ কিছু মনে করবেন না,আমরা আরেকদিন আসবো।’
বলেই তোহা কে কোলে তুলে নিয়ে, সদর দরজা দিয়ে তড়িৎ গতিতে বেরিয়ে গেলো মাহির।”
“এদিকে মাহিরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে নির্জন তো হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে।তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বললো,
‘ আবার এখানে আসলে এর থেকেও ভ**য়া*বহ শাস্তি দেওয়া হবে।এখন তো সয়াবিন তেল দিয়ে ফ্লোরে ফেলেছি,এরপর পে**ট্রোল দিয়ে আ**গুন ধরিয়ে দিবো।যত্তসব মেলোড্রামা।”
——–
“তোহার এমন চিৎ**কার শুনে, নিধি দুর্বল পায়ে বিছানা থেকে নামতেই,ওর আবার মাথা ঘুরে উঠলো।ও আবারও বিছানায় বসে পড়লো।নির্জন নিধির কাছে এসে ওর এমন অবস্থা দেখে, ওকে শুইয়ে দিয়ে ইনোসেন্ট ফেইস করে তোহার পড়ে যাওয়ার ঘটনা বললো।তোহার এহেন দশার কথা শুনে নিধির মন ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো।মুখে এবং মনে মনে অনেক দোয়া করলো তোহার জন্য।”
“রাত ৯টায় নিধির জ্বর কিছুটা কমলে,নিধি ঘুমিয়ে পড়ে।নিধি ঘুমিয়ে পড়তেই, নির্জন প্রচুর খুশি হয়ে বেলকনিতে খাঁচায় আবদ্ধ থাকা পাখি দু’টো কে নিয়ে কিচেনে চলে যায়।”
“নির্জন একটি পাখি কে খাঁচা থেকে বের করে,টেবিলে রেখে এক হাতে শক্ত করে সেটার ডানা চেপে ধরে।আগে থেকে যাচাই করে নেওয়া ছু**রিটা যেন তার হাতের সাথে মিশে যায়, ঠান্ডা, ধা**রালো, আর নির্মম।
নির্জন প্রথমে পাখিটার দিকে ঘাড় কাত করে তাকিয়ে, ঠোঁটের কোণে অদ্ভুত এক বি**কৃত হাসি ফুটিয়ে তোলে। পাখিটার শরীর ছটফট করতে থাকে, কিন্তুু নির্জনের শক্ত হাত থেকে পালানোর কোনো উপায় নেই।”
“প্রথম কো**পটা সে সরাসরি পাখির গলায় বসায়,কিন্তুু একবারে পুরোপুরি কা**টে না।ছু**রিটা গলার মাঝখানে আটকে যায় এবং সেই মুহূর্তে পাখিটার আ**র্তনাদ চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।পাখিটা জোরে ফিসফিস করে চিৎ**কার করে ওঠে, র**ক্তের ধারা ফি**নকি দিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে,নির্জনের মুখেও লাগে সেই উষ্ণ র**ক্তের স্পর্শ।তবে সে থামে না,ছু**রিটাকে আরও জোরে চেপে গলা পুরোপুরি কা**টতে শুরু করে।পাখিটার ছোট শরীর ঝাঁকুনি দেয়, কিন্তুু নির্জন তখনও ঠান্ডা,স্থির।গলা কা**টার পরেও পাখিটার শরীর ছটফট করে,যেন মৃ**ত্যু তাকে ছিনিয়ে নিচ্ছে,কিন্তুু নির্জনের সেই পৈ**শা*চিক শান্তি ভা**ঙে না।”
“এরপর সে পাখিটার ডানা দু’টোকে ধরে হ্যাঁচকা টানে আলাদা করতে শুরু করে। প্রথমে একটা ডানার হাড় ভে**ঙে যায়, পাখিটার হাড়ের ফাঁটল শোনা যায়।তারপর মাংস ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে হাড়ের শ্বেত রঙা কাঠামো। আরেকটা ডানাও একইভাবে ছিঁড়ে ফেলে নির্জন, প্রতিটা টানে যেন সে আরও র**ক্তা*ক্ত করতে চায় পাখিটার দেহ। মেঝেতে পড়ে থাকা র**ক্তের ছিঁটা ধীরে ধীরে ঘন হয়ে মিশে যায়,গা শিরশির করা ধাতব গন্ধে কিচেন ভরে ওঠে।”
“এরপর সে পাখিটার পা দুটো ধরে ছু**রি চালাতে শুরু করে, কিন্তুু এবার সে কা**টে না, বরং ছু**রিটা নিয়ে ত্বকের নিচে আলতো করে কে**টে র**ক্ত বের করে দেয়। পাখিটার শরীর তখনও ঝাঁকুনি দিয়ে উঠছে, যেন জীবনের শেষ মুহূর্তেও বাঁচার চেষ্টা করছে। নির্জন এই য**ন্ত্রণা উপভোগ করতে করতে পাখিটার পা দু’টো আস্তে আস্তে মাংস থেকে আলাদা করে। ছু**রি দিয়ে টু*করো টু*করো করে পা কে**টে ফেলে, মাংস,হাড় সব একত্র হয়ে যায়।”
“অতঃপর দ্বিতীয় পাখি টাকে খাঁচা থেকে বের করে প্রথমে সেটার ডানা দু’টোকে এক টানে ছিঁড়ে ফেলে,তারপর পা দু’টোকে মাঝখান থেকে টান মে**রে আলাদা করে ফেলে।অতঃপর ধা**রালো ছু**রি দিয়ে গলাটা ভাগ করে ফেলে।মৃ**ত্যু য**ন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে পাখিটি অনেক আগেই প্রাণ হারায়।নিজের কার্য নিখুঁত ভাবে সম্পন্ন করে পৈ**শা*চিক হাসি দিয়ে নির্জন হিং**স্র স্বরে কবিতা আওড়ালো,
—–
“র**ক্তমাখা অভিশাপ”
যে পাখি দু’টো,প্রাণের চেয়ে প্রিয় ছিলো,
আজ তোমরা আমার হাতে,র**ক্তে চুবানো;
প্রেমের নামে ম**রেছে,আজকের এই রাত,
ম**রেছো তোমরা,আর র**ক্তের চিহ্ন রেখে গেছো।
তোমাদের শিহরণ,আমার ঘুম ভা**ঙালো,
প্রিয়তমার জন্য,আজ তোমরা জীবন বিলালে;
হিং**স্রতা আমার,তোমাদের কপালে,
মৃ**ত্যু তোমাদের,অভিশাপের য**ন্ত্রণা পায়।
অভিশাপ এখন,তোমাদের ভোরের আলো,
আমি কা**টছি তোমাদের,হিং*সার কলঙ্কে;
প্রেমের নীলে,আজ আমি নিক্ষেপ করেছি,
তোমাদের র**ক্তে,ভরিয়ে দিয়েছি হিং*সা।
অন্ধকারে,র**ক্তের খেলা কেমন নিষ্ঠুর,
মৃ**ত্যু হয়ে,তোমরা একাকার;
তোমাদের মৃ**ত্যুর স্বরে,শুনি হিং*সার গান,
এটাই নির্জনের,চিরন্তন প্রতিশোধের মান। ~মেহের~
#চলবে..
(সবার জন্য ভালোবাসা অবিরাম।আর এক দিন পর পর গল্প আসবে।গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।)