ডাহুক_নদীর_তীরে (পর্ব-১৯)
হালিমা রহমান
আজকে খুব গরম পড়েছে।একদম ঘাম ঝড়ানো গরম।কার্তিকের শুরুতে এতো গরম পড়ে?কে জানে! আবহাওয়ার দিকপাল খুঁজে পাওয়া যায় না এখন।ইরফান শার্টের উপরের বোতামটা খুলে দেয়।গরম লাগছে খুব।ছোট হোটেলের একপাশে কাজ করছিলো সোনাই।ওকে ডাক দেয় হাত নেড়ে।
_” এই সোনাই,এদিকে আয়।”
দৌড়ে আসে সোনাই।বিনয়ী ভঙ্গিতে বলেঃ” কিছু লাগব ভাই?”
_” ফ্যানটা আরেকটু বাড়ায় দে তো ।”
_” আর বাড়ব না, ভাই।এর স্পিড কম।”
_” ধুর।তাইলে আমাকে একগ্লাস ঠান্ডা পানি খাওয়া।আছে নাকি?”
মাথা চুলকায় সোনাই।ইতস্ততভাবে বলেঃ” আসলে এইটাও নাই ভাই।”
_” তাইলে তোর ভাইরে একগ্লাস ঠান্ডা কোকাকোলা খাওয়া।এইটা আছে? “__ইরফানের বদলে রাফায়েত ফরমায়েশ দেয়।
রাফায়েতের প্রশ্নে ইতিবাচকভাবে মাথা নাড়ায় সোনাই।ব্যস্ত গলায় বলেঃ” এখনি দিতাছি, ভাই।”
সোনাই একছুটে চলে যায়।রাফায়েত আবারো বিরিয়ানীর প্লেটে হাত দিলেও ইরফান দেয় না।ভাবলেশহীন চোখে সামনের রাস্তার দিকে চেয়ে থাকে।ওই যে ওখানে,ঠিক ওখানে রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতো তথা।ভার্সিটি বা টিউশনি থেকে ফেরার পর এই হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে খাবার কিনতো।আর ইরফান হোটেলের ভিতর এককোনে বসে চুপিচুপি প্রেয়সীকে দেখতো।কি সুন্দর ছিল তখনকার দিনগুলো! স্বপ্নময় অদ্ভূত সুন্দর কিছু মুহূর্ত ছিল।আজও সব আছে শুধু তথাই নেই।মোটে আট-নয়দিন হয়েছে তথাকে দেখে না ইরফান।অথচ মনে হয় যেন কত বছর,কত যুগ কেটে গেছে। আচ্ছা তথা কি আগের মতোই আছে?এখনও কি ছেলেদের সাথে কথা বলার সময় কপাল কুঁচকে ফেলে? খুশি হলে মুচকি হাসে?কিছুক্ষণ পরপর কপালের একপাশে পড়ে থাকা ছোট চুলগুলোকে অবহেলায় কানের পাশে গুজে দেয়?কে জানে!
তথা যাওয়ার পর থেকে এদিকে এতোদিন আসেনি ইরফান।অবশ্য সময় কোথায়?তাছাড়া, ভালোও লাগে না এদিকে আসতে।সবটা কেমন যেন খালি খালি লাগে।আজ রাফায়েতের কথায় এসেছে। শুক্রবার বলে আসতে পেরেছে,নাহয় অন্যদিন হলে তাও পারতো না।
_” ইরফান, মেয়ে কেমন দেখলি?”
বিকালের কথা মনে পড়তেই মুহূর্তে মেজাজ খারাপ হয়ে যায় ইরফানের।কপাল কুঁচকে বলেঃ” তুই কার কাছে শুনলি?”
_” আঙ্কেলের কাছে।বিয়ের দাওয়াত পাব নাকি?”
_” না।ওই মেয়ে বিবাহিত।”
_” কি!”—রাফায়েতের হাতের লোকমা পড়ে যায় প্লেটে।অবাক চোখে চেয়ে থাকে সে বন্ধুর দিকে।
ইরফান ভাবলেশহীনভাবে বলেঃ” মেয়ের জামাই আছে।ওর ফুফাতো ভাই আশিকের সাথে বিয়ে হয়েছে পনেরো দিন আগে।”
_” মানে কি! বিয়ে হলে আবার তোরা দেখতে যাবি কেন?মেয়ে যে বিবাহিত তা তোদেরকে বলেনি আগে?”
বিরক্তিতে তেতো হয়ে যায় ইরফানের ভিতরটা।এই ছেলের মাথায় কি বুদ্ধি নেই?মেয়ের বাবা জানলে কি আর ওদেরকে মেয়ে দেখতে দিতো?
_” জিনিয়া পালিয়ে বিয়ে করেছে।আত্মীয়ের মাঝে আত্মীয় পছন্দ করেন না তৌকির আঙ্কেল।তাই পালিয়ে বিয়ে করেছে দুজনে।”
_” জামাই কি করে?”
_” বিদ্যুৎ অফিসে চাকরি করে।”
_” তো পরিবারকে জানাবে কবে?”
_” আমি কি এতোকিছু জানি রাফাইত্তা?আমারে মেয়ে ঘরের মধ্যে আটকে এতোটুকুই বলেছে।বলেছে ওকে জোর করে বিয়ে করলে, পরেরদিনই জামাইয়ের সাথে পালিয়ে যাবে।মানে চিন্তা কর,কেমন আক্কেল মেয়ের।ও বিবাহিত জানার পরেও আমি জোর করে বিয়ে করব! আমি কি সিনেমার হিরো যে জোর-জবরদস্তি করে বিয়ে করব?বেয়াক্কেল মেয়ে।ইচ্ছে করেছে ঠাটিয়ে দুটো চড় মেরে চলে আসি।ফাজিল কোথাকার।”
ইরফানের কথা শুনে খাওয়া রেখে কুটকুট করে হাসে রাফায়েত।এক চুমুক পানি খেয়ে বলেঃ” কি ব্যাপার, ইরফান? মেয়েরা তোকে শুধু রিজেক্ট করছে কেন?বাংলাদেশের মেয়েরা তোকে বয়কট করলো নাকি?”
রাফায়েতের কথা বুঝতে পারে না ইরফান।কপাল কুঁচকে প্রশ্ন করেঃ” মানে?”
_” সুন্দর,স্মার্ট,কর্মঠ ইরফান সাদিক খালি রিজেক্টই হচ্ছে।আজকে তাকে রিজেক্ট করলো জিনিয়া, কিছুদিন আগে তথা।আল্লাহ মালুম আর কতো মেয়ে তোকে রিজেক্ট করার জন্য বসে আছে।”
বাম পায়ের চটি জুতো খুলে রাফায়েতের হাঁটুর দিকে উড়িয়ে মারে ইরফান।নিচু গলায় রাফায়েতকে কিছু অশ্রাব্য গালি দেয়।ছেলেটার মুখের ভাষা মাশাল্লাহ রেকর্ড করে রাখার মতো।শুনলে শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যায়।
_” ভাই,এই যে ঠান্ডা।”
_” রাখ এখানে।”—সোনাইকে ফরমায়েশ করতেই ইরফানের চোখে পড়ে মাহাদীকে।সোনাইয়ের দিকেই আসছে সে।
_” সোনা ভাই,দুই প্যাকেট বিরিয়ানি দিয়ো তো।আর্জেণ্ট লাগবে।একটু তাড়াতাড়ি দিয়ো।”
মাহাদীর মুখটা কেমন শুকনো ঠেকছে।মোটাসোটা ছেলেটার চোয়াল ভেঙে গেছে। চোখদুটোর নিচেও একটু কালির আভাস পাওয়া যাচ্ছে।মাহাদীর পরিবর্তন খট করে চোখে বাজে ইরফানের ।যেচে মাহাদীর সাথে কথা বলে সে।
_” কি খবর ছোট ভাই? শরীর ভাল?”
এতোক্ষণ হয়তো ইরফানকে চোখে পড়েনি মাহাদীর।ইরফানের কথা শুনতেই বিনয়ী ভঙ্গিতে সালান দেয় সে।
_” আসসালামু আলাইকুম, ভাই। ভালো আছি।আপনি ভালো আছেন?”
_” এই তো আলহামদুলিল্লাহ। দাঁড়িয়ে আছো কেন? বসো। এই চেয়ারটাতে বসো। বাড়ির সবাই ভালো আছে?”
চেয়ার টেনে বসতে বসতে মলিন মুখে মাথা নাড়ে মাহাদী।
_” না,ভাই।আম্মু অসুস্থ।রুবি আপাও অসুস্থ।”
_” কি হয়েছে?”
_” রুবি আপার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে।অপারেশন করতে হবে।এই টেনশনে মা আজ দুইদিন যাবৎ অসুস্থ। বিছানা থেকে শরীর উঠাতে পারে না।”
_” আহা রে।কান্নাকাটি করে লাভ আছে?আন্টিকে শক্ত হতে বলো।”—-রাফায়েতের সহানুভূতির কন্ঠ কানে আসে।
_” সবাই বুঝায়।কিন্তু আম্মু বুঝেই না।তথা আপুর চিন্তায়ও আম্মু অর্ধেক শেষ।”
_” কেন কি হয়েছে তথার?কোনো বিপদ নাকি?”—ইরফানের অস্থির কন্ঠ কানে আসতেই মনে মনে হাসে রাফায়েত।
হায়রে ইরফান! এ আর মানুষ হলো না।
_” তথা আপুর খবর পাচ্ছি না আমরা।যতবার ফোন দেই, ততোবার শুধু ফোন বন্ধ দেখায়।”
ইরফানের ভিতরটা তেতো হয়ে আসে।হৃৎপিন্ডে শক্তিশালী এক ভূমিকম্প হলো যেন।কি বললো মাহাদী?ফোন বন্ধ দেখায়? হ্যাঁ, সত্যিই তো ফোন বন্ধ তথার।কাল রাতে, আজ সকালে,বিকালে কতবার কল করলো ইরফান।প্রতিবার সেই ঘ্যানঘ্যানে যান্ত্রিক স্বরটা একই কথা বলেছে।ইরফান উদ্বিগ্ন স্বরে প্রশ্ন করেঃ” কবে থেকে ফোন বন্ধ পাচ্ছো?আমিও আজকে ফোন দিলাম, কিন্তু প্রতিবার বন্ধই বললো।”
_” আম্মুর সাথে শেষ কথা হয়েছিলি সেই দুই তারিখে।এরপর আর কথা হয়নি।তথা আপুর যেই ডিরেক্টর,উনি নাকি খারাপ লোক।আমাদের গ্রামের তো,আম্মু চিনে।আম্মু তথা আপুকে বলছিল ঢাকা চলে আসতে।আপু কথা শুনে নাই।পরে আম্মু রাগারাগি করে কল কেটে দিয়েছিল। পরেরদিন থেকে আর যোগাযোগ করতে পারেনি।আম্মু সকালবেলা থেকে যতবার কল করেছে ততোবার ফোন বন্ধ বলেছে। এখন পর্যন্ত ফোন বন্ধ।”
_” ডিরেক্টর যে খারাপ,এটা আগে জানতো না?”
_” আম্মু মনে হয় ডিরেক্টরের নাম শুনে নাই আর।শুনলে যেতে দিতো না।”
_” তোমার বাবা কি বলছে? উনি কি পঞ্চগড় যবেন নাকি?তথার তো খোঁজ নেওয়া দরকার।বিপদ-টিপদও হতে পারে।”
_” রুবি আপু অসুস্থ না থাকলে হয়তো যেতো।আম্মুও অসুস্থ, আপুও অসুস্থ। আব্বু কি করে যাবে?”
কথায় যুক্তি আছে।ইরফানের মনটা কেমন অস্থির হয়ে উঠছে।বিপদ না হলে এতোদিন যাবৎ কারো ফোন বন্ধ হয়?তথার বিপদই হয়েছে।নিশ্চিত গুরুতর কোনো বিপদ হয়েছে।ইরফানের হাসফাস লাগে।শ্বাস আটকে আসে।ইরফানের সর্বস্ব জুড়ে একটা কথাই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে_মেয়েটা ভালো নেই,একটুও ভালো নেই।
_” মাহাদী,এই নেও।”
মাহাদী উঠে দাঁড়িয়ে খাবারের প্যাকেট হাতে নেয়।পকেট থেকে টাকা বের করতে করতে ইরফানকে উদ্দেশ্য করে বলেঃ” আসছি, ভাই।আসসালামু আলাইকুম।”
_” ওয়া আলাইকুম আসসালাম।”
মাহাদীর গমন পথের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকে ইরফান। মাথাটা ধরে গেছে মুহূর্তেই। আচ্ছা তার এখন কি করা উচিত?পঞ্চগড় যাওয়া উচিত না?অবশ্যই যাওয়া উচিত। সে তো তথার একনিষ্ঠ প্রেমিক।সে না গেলে কে যাবে?কার এতো দায় পড়েছে যে তথাকে খুঁজতে সেই পঞ্চগড় ছুটে যাবে?ঠান্ডা খাবারের প্লেটটাকে সামনের দিকে ঠেলে দেয় ইরফান।পাগল পাগল লাগছে নিজেকে।রাতটুকু কখন শেষ হবে?
_”ইরফান,ইরফান।”
_” হুম।”
_” টেনশন করিস না।তথার কোনো বিপদ হয়নি।”
_” আল্লাহ তোর কথা কবুল করুক।”
_” হ্যাঁ, তুই চিন্তামুক্ত থাক।বিপদের আশঙ্কা থাকলে নিশ্চয়ই তথার কাকা নিজে মেয়ের খোঁজে যেত।তাই না?ইরফান,ইরফান।”
_”হু?কি বলছিলি?”
রাফায়েত বিরক্ত হয়।ইরফানের কানে কি কথা ঢুকছে না?মুহূর্তের মাঝেই কেমন অমনোযোগী হয়ে গেল।হতচ্ছাড়া বদমায়েশ কোথাকার।রাফায়েত বিরক্ত মুখে বলেঃ” বলছি তুই চিন্তামুক্ত থাক।যাদের মেয়ে তারাই টেনশন করুক। ”
_” তাদের চিন্তার আশায় আমি বসে থাকব?তুই আমাকে চিনিস না?”
_” কি করবি তুই?”
চেয়ারে হেলান দেয় ইরফান।নির্দ্বিধায় বলেঃ” আমি কাল শ্যামলী থেকে হানিফ পরিবহনের একটা বাসে উঠব।তারপর পঞ্চগড় যাব তথার খোঁজে।ডাহুক নদীর কাছেই একটা জমিদার বাড়ি আছে।তথা সেখানেই আছে।তুই যাবি নাকি,ডাহুক নদীর তীরে? ”
***
রাত পৌনে বারোটা বাজে।শহরাঞ্চলে এটা খুব বেশি রাত নয়।কিন্তু গ্রামের জন্য এই রাত পৌনে বারোটাই অনেক কিছু।সারাদিনের খাটাখাটুনির পর মানুষগুলো নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে।কার্তিকের শুরু হওয়ায় রাতের দিকে একটু ঠান্ডা পড়ে।খুব সকালে কুয়াশার মতো একটু ঘোলাটে দেখায় সবকিছু।এই সময়টা খুব ভালো লাগে মামুনের।খুব ঠান্ডাও না,খুব গরমও না।ফুল স্পিডে ফ্যান ছেরে কাঁথা গায়ে দিয়ে শুয়ে থাকার মজাই আলাদা এখন।
রাতের স্বপ্নময় সুখনিদ্রাকে বয়কট করে, জমিদার বাড়ির পিছন দিকে হাঁটছে মামুন।ভারী কেডসের নিচে শুকনো পাতা ভাঙে মরমর করে।আশেপাশে গাঢ় অন্ধকার।একটুখানি চাঁদ আছে আকাশে তবে খুব বেশি আলো নেই।ডানপাশে ফেলে আসা আমগাছের নিচু ডালে একটা পেঁচা বসেছিল।সেদিকে নজর দেয় না মামুন।অভ্যস্ত পায়ে হেঁটে চলে আরো সামনে।জমিদার বাড়ির পিছনে অনেক গাছ।আম,জাম,করমচা,কাঁঠাল,অর্জুন,ঝাউ,দেবদারু
ইউক্যালিপটাস —কি নেই সেখানে।বিশাল বিশাল বয়স্ক গাছ সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে।
মামুনের নাকে ভেসে আসে তীব্র হাসনাহেনার ঘ্রাণ।কোথায় যেন একটা গাছ হয়েছে।রাতেরবেলা বেশ ঘ্রাণ পাওয়া যায়। আশেপাশের কোনোকিছু বিচলিত করতে পারে না মামুনকে।দশ মিনিটের মাথায় পৌঁছে যায় অর্জুন গাছের কাছে।অর্জুন গাছের সামনে চার দেয়ালের একটা জীর্ণ ঘর আছে।দেয়াল ফাটা,দরজায় মরচে ধরা তালা ঝুলানো।মামুন সেই ঘরের সামনে যেয়ে দাঁড়ায়।এটাই সেই জায়গা, যেখানে জমিদার বংশের সবাইকে গনকবর দেওয়া হয়েছে।তবে পুরো জায়গাটা এখন সমতল।আহমেদ ইউসুফ পরবর্তীতে এই জায়গাটাকে কবরস্থানের মতো যত্ন করতে পারতো।কিন্তু করেনি।দেখা গেল তার কোনো আগ্রহই নেই এ বিষয়ে। মামুন পকেট থেকে ফোন বের করে ইউসুফের ফোনে কল দেয়।দু’বার রিং হতেই ফোন ধরে ইউসুফ।
_” বলো মামুন।”
_” আপনি কি এখন আসবেন স্যার?”
_” হ্যাঁ। ট্রাক এসেছে?”
_” না স্যার।”
_” আচ্ছা।আসছি আমি।দশ মিনিট সময় লাগবে। ”
_” ওকে স্যার।”
ফোন রেখে দেয় মামুন।পকেট থেকে চাবি বের করে।গোডাউনটা এখানেই।মামুন এদিক-ওদিক হালকাভাবে চোখ বুলায়।আশেপাশে অন্ধকারে বেশি কিছু চোখে পড়ে না।তবে উপরে তাকালে নিশ্চিত অবাক হতো মামুন।কারণ,নারিকেল গাছের উপর থেকে একজোড়া তীক্ষ্ম চোখ চেয়ে আছে তার দিকে।
***
মোবাইলটা পকেটে পুরলো ইউসুফ।ট্রাউজারের পকেটে রিভলবারটাও ঢুকিয়ে নিলো।দরজা খুলে বের হওয়ার আগে আয়নায় একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। ঠিক তখনই। তখনই দরজার ঠকঠক আওয়াজ হল।মৃদু আওয়াজ।ইউসুফ অবাক হয়।এ সময় আবার কে এলো?
দরজা খুলে বাইরে তাকাতেই আকাশ থেকে পড়ে ইউসুফ।তথা দাঁড়িয়ে আছে বাইরে।পরনে ধবধবে সাদা রঙের সুতির শাড়ি। চুলগুলো ছেড়ে রাখা।ইউসুফের পেটে ডান হাত দিয়ে মৃদু ধাক্কা দেয় তথা।আদুরে স্বরে আবদারের ভঙ্গিতে বলেঃ” চাঁদ দেখতে যাবেন?আকাশে আজ কাঁচির মতো একফালি বাঁকা চাঁদ জেগেছে।দেখবেন?
নিশিরাত বাঁকা চাঁদ আকাশে….”
গুনগুন করে গান গেয়ে ভিতরে ঢুকে তথা।তথার আচরণ বুঝে আসে না ইউসুফের।হতভম্ব গলায় বলেঃ” আপনি ঠিক আছেন, কামিনী ফুল?”
_” উঁহু। আমার কঠিন অসুখ হয়েছে।একদম মরণ অসুখ।এক হাতুড়ি ডাক্তারের উপর পা পিছলে গেছে। এখন কি করি বলুন তো?”
চলবে