#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory
পর্ব-১৫
লিহানের রুমের দরজা বেশ ভদ্র ভঙ্গিতে খুলে সুন্দর ভেতরে গেলো। বেশ সুন্দর করে লিহানকে জিজ্ঞেস করল ,
-তুই কি স্পৃহাকে পছন্দ করিস ?
সুন্দরের প্রশ্নের ধরন লিহানের কাছে কেমন যেন সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। সোজা ভাবে সে উত্তর দিল ,
-নাহ্। তোমার বউকে আমি কেন পছন্দ করব ? তাছাড়া আমার সব মেয়েদেরই যে ভালো লাগে তা না।
-তুই একদম শিওর হয়ে বলছিস?
– এতে শিওর এর কী হলো ভাইয়া?
সুন্দর লিহানের কাঁধে হাত রেখে বলল ,
-দেখ তুই আমার ছোট ভাই ! তোর জন্য আমি সবকিছু করতে পারি । তুই যদি স্পৃহাকে থেকে আমার চেয়ে বেশি ভালবাসিস তাহলে আমি নিরবে তোদের মাঝখান থেকে চলে যাব । ভালোবাসার জিনিস জোর করে আটকে রাখতে নেই । তুই আমাকে তোর মনের কথা জানাতে পারিস।
সুন্দর তো এমন নরম ব্যবহারের মানুষ না ! লিহানের বিষয়টা সুবিধাজনক লাগছে না।
পূর্বে যা বলেছিল সে কথাটি পুনরায় বলল ,
স্পৃহার প্রতি তার কোন অনুভূতি নেই। সুন্দরকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল ,
-আমাকে এ ধরনের কোন কথা বলোনা।
“আচ্ছা ” বলে সুন্দর বেরিয়ে যেতে গেলেও আবার ফিরে এসে লিহানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
-আশিক আমার বন্ধু।
লিহান বিস্ফোরিত দৃষ্টি তে তাকালো সুন্দরের দিকে । নিজের অস্বাভাবিক ব্যবহার প্রকাশ করেও নিজেকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক রেখে বলল ,
-আশিক কে ?
সুন্দর আবারও বলল,
-বললাম আমার বন্ধু হয়। কলেজের একসাথে পড়াশোনা করেছি ।
-তো তুমি তার কথা আমাকে বলছো কেন।
-ভাব কেন বলছি ! টাইম দিলাম।
লিহান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল ,
-আমি কিছুই বুঝতে পারছি না ভাইয়া । কী বলতে চাইছো তুমি।
-আমি তোর কোন খারাপ চাইবো না
আশিক আমাকে আজ একটি ভিডিও ফুটেজ দেখিয়েছে। সেখানে তুই তোর ভালোবাসার কথা জানিয়ে স্পষ্ট করে বলেছিলি । স্পৃহা তোর প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা । আমি চাইনা তোদের পথের কাঁটা হয়ে থাকতে। স্পৃহা নিজেও আমাকে ভালোবাসে না । কিছুক্ষণ আগেও আমার খুব রাগ হয়েছিল তোর উপর । কিন্তু যখন আমি স্পৃহার উপর নিজের রাগ দেখালাম তার কিছুক্ষণ পরে আমি অনুভব করি সে আমাকে নয় বরং তোকে পছন্দ করে । তাই আমি নিজে এখান থেকে সরে এসেছি।
.
.
.
.
হাতে ব্যথায় স্পৃহার শরীরে জ্বর চলে এসেছে। তাছাড়া এখন দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়ে গিয়েছে, অথচ তার পেটে কিছুই পড়েনি। বন্ধ ঘরে পানির জন্য অপেক্ষায় রইলো স্পৃহা। কিছুক্ষণ পরে সুন্দর আর লিহান রুমে প্রবেশ করে। সুন্দরকে হালকা করে চোখ খুলে দেখে ফিসফিসিয়ে বলে ,
-পা…নি…
স্পৃহার এমন বিদ্ধস্ত অবস্থায় দেখে লিহান তার কাছে যায় । সুন্দরের দিকে তাকিয়ে বলে ,
-ভাইয়া ,কী হয়েছে ওর ?
তখন লিহানের চোখ পড়ে স্পৃহার হাতের কাটা লেখার ওপর। সুন্দরের দিকে তাকিয়ে বলে ,
-এসব কী???
তারপরে হাত ধরে দেখতে যাবে তখনই সুন্দর বলে ,
-এগুলো নিয়ে পড়ে ভাবা যাবে । তুই আগে পানি নিয়ে আয়।
স্পৃহার যে পানি পিপাসা লেগেছে তা মনে পড়তেই লিহান দৌঁড়ে যায় পানি আনতে।
পানি নিয়ে ফেরত আসতেই লিহান দেখে ,সুন্দর স্পৃহাকে পানি দিয়েছে । লিহানকে আসতে দেখে সুন্দর লিহানের দিকে তাকিয়ে বলে ,
-আমার ঘরেই বোতলে পানি রাখা ছিল । তাই ভাবলাম তোর আসতে দেরি হচ্ছে , আমিই বরং দেই
-ভালো করেছ। ও তো মনে হয় কিছুই খাইনি । এখন একটু খাওয়ার ব্যবস্থা করি।
-আচ্ছা আমি ব্যবস্থা করছি,তুই এসব ভাবিস না । এখন তুই আমাকে বল,
তোর আর স্পৃহার তো সব ঠিকঠাক হয়ে গেল ।পরবর্তী প্ল্যান কী?
-বিয়ে!
অনেকক্ষণ ধরে দুই ভাই নিজেদের সুখ দুঃখ নিয়ে আলাপ আলোচনা করলো। সুন্দর যে ধরনের সাইকো! এখন এমন স্বাভাবিক হয়েছে তা ভাবতেই লিহান এর ভালো লাগছে ।সুন্দর ছোট ভাইয়ের কথা ভেবে এবং সবকিছু বুঝে নিজেই পিছিয়ে এসেছে , এটা অনেক বড় ব্যাপার!
হঠাৎই সুন্দর সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,
-অনেক মজা হলো। এখন বলতো তোদের কাহিনী, আমিও একটু শুনি। আশিক কে পেলি কী করে?
– আরিয়ান আছে না? ও নিয়ে গিয়েছিল ।
-শুনলাম ,আমার মারার জন্য নাকি সুপারিশ করেছিলি।
-বিশ্বাস করো ভাইয়া, আইডিয়া টা আরিয়ানের ছিল।
-কিন্তু তোর তাতে রাজি হওয়া ঠিক হয়নি। অন্য একটা মেয়ের জন্য আমাকে মারতে চাইলি! যাই হোক,এখন তুই খুশি তো?
-অনেকককক!
.
.
তারপর বেশ কিছুক্ষণ লিহানের প্রেমে পড়ার ঘটনা ,সে কথা কার সাথে শেয়ার করেছিল তা, তার বেস্ট ফ্রেন্ড আরিয়ানের সম্পর্কে সকল কথা শুনতে থাকে। ততক্ষণে স্পৃহা খাওয়া-দাওয়া করে ফিরে আসে। শান্ত হিমশীতল দৃষ্টি রেখে সুন্দর তাকে বলে ,
-আপনার জন্য একটি সুখবর রয়েছে। বলব?
-বলুন
-আর কিছুদিন পর আপনার ১৮ বছর হলে আমার আর আপনার আবার বিয়ে করার কথা ছিল । কিন্তু এই বিয়েটা আমার সাথে আপনার হচ্ছে না। বরং সেদিন আপনার সাথে আমার সব সম্পর্ক শেষ হবে এবং লিহানের সাথে আপনার নতুন জীবন শুরু হবে।
বড় ভাইয়ের মুখ থেকে বিয়ের কথা শুনে লাজুক হাসি হাসলো লিহান। সুন্দর কে বললো,
– স্পৃহা কি তাহলে বাড়ি ফিরে যাবে?
সুন্দর স্পৃহার দিকে যেভাবে তাকিয়ে ছিল ওভাবে তাকিয়েই লিহানকে বলল ,
-না ও এখানেই থাকবে । আমি অন্য রুমে চলে যাচ্ছি।
নিজেদের মধ্যে কথা শেষ করে সুন্দর তার প্রয়োজনীয় জিনিস রুম থেকে নিতে লাগলো । লিহানও তার রুমে ফিরে গিয়েছে।
এবার স্পৃহা মুখ খুলল,
– নতুন কী খেলা খেলছেন আবার?
সুন্দর তখন স্পৃহার কাছে গিয়ে বলে ,
-আমি খুব দুঃখিত স্পর্শিয়া আদনান স্পৃহা! এতদিন আপনাকে জোর করে নিজের কাছে রেখে দেয়ার জন্য । আজ থেকে আপনি মুক্ত……
(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:15
আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻
Eije ei vor belate apnader jonne etto koshto kore golpo likhlam,tar jonne special care koiren👀 Ar Apnara koshto payen na episode ta pore🥲
Halka kore tension korte paren je ekhon Oder ki hote pare ta niye🙂ghumaite gelam tahole🙃
(Amar mon kharap holei apnader comment pori,trust me kichu comment ache ja pore hashte hashte amar pet betha hoye jay😜)
N.B.- Don’t copy
.
.
.